স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প | স্বামীকে ফেলে অন্য কারো সাথে চলে যাওয়ার পর

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প


স্ত্রী‌: মনে মনে অনেক খুশি আজকে সে তার স্বামীর কাছে যাচ্ছে। খুব সুন্দর করে সেজেছে, যাতে স্বামী তার এতো সুন্দর চেহারাটা দেখে, আগের সব কিছু ভুলে যায় এবং তাকে বুকে টেনে নেয়। এই আশা নিয়ে সব গুজ গাজ করে রওনা হলো। আর মনে মনে ভাবতে লাগলো আমার স্বামী সব থেকে ভালো মানুষ, আমি সেদিন বুঝতে পারিনি। অনেক কষ্ট দিয়েছি উনাকে। উনি আমাকে কতটা ভালোবাসতেন আমি সেদিন বুঝতে ও পারিনি কিন্তুু, এখন আমার বুঝে এসেছে। উনি ছাড়া আমার পৃথিবীতে আপন বলতে কেউ নেই। সেই ছোট বেলা বাবা-মাকে হারিয়েছি। তার পর খালা আমাকে নিজের মেয়ের মতো করে বড় করেছেন। উনি আমার গায়ে কোন দিন হাত তুলে নাই। মা-বাবার পরে উনি ঐ আমার সব কিছু ছিল। খুব আদর যত্ন করে আমাকে বড় করেছেন। একদিন খালা ও চলে গেল এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে।
যদি সেদিন খালা আমাকে একটু শাসন করতেন। তাহলে আমি এতো  বদ-মেজাজী হতাম না। সে দিন আমার সব থেকে আপন জনকে ছেড়ে আসতাম না।
আমি যানি আমার স্বামী আমাকে ক্ষমা করে দিবেন, উনিতো আমাকে অনেক ভালোবসতেন।
আমি উনার দুই পায়ে পরে ক্ষমা চাইবো। বাকি জীবনটা স্বামীর সেবা-যত্ন করে ঐ কাটিয়ে দিব। এসব চিন্তা করতে করতে কখন, যে স্বামীর বাড়ির কাছে চলে এলো। এসে গেটে দাঁড়িয়ে আছে তার স্বামীর জন্য, কিন্তুু ডাকতে সাহস পাচ্ছে না। যে ভাবে স্বামীকে ফেলে গিয়ে ছিলো। কোন পুরুষ ঐ এটা সজ্য করতে পারবে না। অনেক সময় দারানোর‌ পরে গেটের দারোয়ান বের হলো।
দারোয়ান টা অনেক টা বয়সকো ছিল তাই খেয়াল করতে পারে নাই মনে হয়।

গেটের দারোয়ান: মা তুমি কেমন আছো। আমি অনেক সময় তোমাকে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছো দেখে বের হলাম। ধূর থেকে বুঝতে পারিনি তুমি যে এটা। আসো মা ভেতরে আসো, তুমি জানো না মা তুমি যাবার পর, স্যার এর কি হয়েছিলো। উনি খুব রেগে থাকেন কাউকে ভালো মন্দ কিছু জিজ্ঞেস করে না। গেট খুলতে একটু দেরি হলে খুব রেগে যান। সে দিন আমি নামাজ পড়তেছিলাম তখন স্যার আসলো গাড়ি নিয়ে। অনেক খন গাড়ি নিয়ে স্যার বসে ছিল, আমি না আসলে গেটে আসলো তখন আমি দওরে এসে গেট খুলি। আমার মাথায় টুপি পারা দেখে স্যার বুঝতে পারে আমি নামাজ পরতে ছিলাম। তাই কিছু বলে নাই। কিন্তুু অনেক রেগে আছিলো। হয়তো সে দিন আমার চাকরিটা হারাতাম? মা তুমি যানো না আমাদের বাসার কাজের মেয়েটা তোমার কথা জিজ্ঞেস করেছে বলে, স্যার তাকে এই বাড়িতে থেকে বার করে দিয়েছে। যাবার আগে তাকে একলখ টাকা দিয়ে বলেছেন: তোমার বিয়ের বয়স হয়েছে তুমি এই টাকা নিয়ে বিয়ে করো, কিন্তুু তোমার বিয়ের পর তোমার স্বামীকে কোন কষ্ট দিওনা। তাকে ছেড়ে কোন সময় যেওনা। কথা বলতে বলতে কখন যে স্যার এসে পড়েছে বুঝতে পারিনি।‌‌ স্যার আস্তেই আমি গেট খুলে দিলাম। স্যার এসে ঐ মামুনিকে দেখে খুব রেগে উঠলো।____

স্যার: দারোয়ান কাকা এই মেয়ে এখানে কেন এসেছেন। আর তুমি এই মেয়েকে এই বাড়িতে ঠুকতে কেন দিয়েছ। ওকে বলো এখান থেকে চলে যেতে। আমি তাকে সহ্য করতে পারেছি না।

গেটের দারোয়ান: ওকে আমি দেখছি আপনি যান স্যার। আপনি ভিতরে যান স্যার। আমি মেয়ে টাকে বুঝিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছি? স্যার ভিতরে গেলো।
এই মেয়ে কাঁদছো কেন? আমি যানি তুমি আমার স্যারকে একা রেখে চলে গিয়ে ছিলে। তখন স্যার প্রতিদিন মদ খেতো। আমি স্যারকে বললাম আমি আপনার বাবার বয়সী এসব খাওয়া ভালো না। আপনি এসব  কখন ও খেতেন না, তাহলে কেন এখন এসব খান। উনি বললেন যখন আমার স্ত্রী আমাকে ছেড়ে চলে গেলো, তখন আমার এতো কষ্ট হলো, আমার দুনিয়ারতে বেছে থাকতে মন চাচ্ছিল না।
আমি সুনছি মদ খেলে নাকি মানুষ কষ্ট ভুলে যায়। তাই আমি প্রথম দিন মদ খেলাম, কিন্তুু দারোয়ান কাকা তোমায় আমি বুঝাতে পারবো না। দিন দিন আমার কষ্ট ভারতে থাকলো। যখন ভাবতাম আমার স্ত্রী আমাকে ফেলে তার প্রেমিক এর সাথে চলে গেছে। তখন আমার এই দুনিয়ায় বেছে থাকতে ইচ্ছা করতো না। আমার কি অপরাধ ছিল! দারোয়ান কাকা কেন আমার সাথে ঐ এসব হচ্ছে বলবে। এভাবে প্রায় এক মাস এর বেশি হয়ে গেল। একদিন একটা খুব সুন্দরী মেয়ে আসলো স্যার এর খবর নিতে।
আমাকে বললো দারোয়ান কাকা: আমায় আপনি চিনতে পেরেছেন। আমি বললাম না মা আপনাকে আমি চিনতে পারিনি। তখন মেয়েটি বলল আমি আপনার স্যার এর বাবার বন্ধুর মেয়ে, সেই ছোট বেলা এসেছিলাম এখানে। আঙ্কেল  আন্টি এক্সিডেন্টে মারা যাবার পর আসছিলাম। পরে আর আস্তে পারিনি। আমার বাবা আর আপনার স্যার এর বাবা দুই জন খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আমার বাবা ছিলেন আপনার স্যার বাবার কম্পানির ম্যানেজার। আর এখন আমার বাবার বয়স হয়েছে, তাই উনার ম্যানেজার  এর চাকরিতে আমি জয়েন করছি। কিন্তুু আপনার স্যার এর কি হয়েছে উনি তার অফিসের কর্মচারীদের এই মাসে কোন খবর ঐ নেন নাই। অনেক বার বাসায় নুটিশ পাঠিয়েছি তার কোন খবর ঐ নাই। হাজারটার বেশি কল দেওয়া হয়েছে, কোন রিপ্লাই নাই কি হয়েছে উনার।
আমি বললাম মা আমার স্যার এর খুব বড় একটা সমস্যা হয়েছে। তাই উনি অফিসে যাইতে পারে না।
আমি তাকে আগের সব কথা কিছু খুলে বললাম মেয়েটাকে। মেয়ে টা আমার কথা শুনে বললেন। ছোট বেলায় থেকে নাকি মেয়েটি স্যারকে পছন্দ করতেন। তার বাবা ও নাকি চেয়ে ছিল তাঁতের বিয়ে হোক, কিন্তুু হঠাৎ করে স্যার বিয়ে করে ফেলায় মেয়েটা খুব কষ্ট পায়। তার বাবা সব কিছু বলার আগেই স্যার বিয়ে করে ফেলে। শুনেছি স্যার এর বাবা ও নাকি চেয়ে ছিল, তারা দুই বন্ধু বিয়াই হতে। মেয়ে টাকে আমি স্যার এর কাছে নিয়ে গেলাম। তখন ও স্যার বেহুঁশ হয়ে বিছানায় পরে আছে। মেয়ে তার বাবাকে ফোন করে বলল তারা তারি যেন ডাকতার পাঠায় বাড়িতে।
ডাকতার এসে বললো: এভাবে চলতে থাকলে তাকে বাঁচাতে পারবে না কেউ। সে যতি আবার ও মদ পান করে তাহলে তার দুনো কিডনি নষ্ট হয়ে যেতে পারে, সে মারা দেতে‌ পারে। মেয়েটা তার বাবাকে ফোন করে বললো: বাবা আর কতদিন তুমি অফিস এর কাজ গুলো দেখো আমি উনাকে ভালো করি, প্লিজ বাবা না করো না। তার বাবা তার কথা রাজি হয়। মেয়েটা স্যার এর শেবা-জত্ন করে স্যারকে ভালো করে। এবং মেয়ে টির বাবা স্যারকে বলে যে, তোমার বাবা ও চেয়ে ছিল আমার মেয়ের সাথে তোমার বিয়ে হোক। আর আমার মেয়ে তোমাকে খুব পছন্দ করে। ও খুব লক্ষ্মী একটা মেয়ে, আমি চাই বাবা তুমি আগের সব কিছু ভুলে গিয়ে, আমার মেয়েকে নিয়ে সুখে থাকো।
স্যার প্রথমে রাজী ছিল না, পরে ভাবলো বাবা-মা বেঁচে থাকলে হয়তো তাকে ভুল পথে যেতে দিতনা। আর স্যার ও বুঝতে পেরেছে ওর মতো মেয়ে ঐ স্যার এর জন্য ঠিক আছে। যে শুধু স্যারকে ভালোবাসবে, এই জন্য স্যার ঐ মেয়েকে বিয়ে করেছে। এই সপ্তাহে তাদের বিয়ে হবে।

মা আমি স্যারকে এই প্রথম এতো খুশি দেখেছি। এমন কি তোমাকে বিয়ে করে ও স্যার খুশি থাকতে পারেনি। তুমি স্যারকে শুধু মাত্র টাকা পয়সার জন্য বিয়ে করে ছিলে। সে ছোট বেলা থেকেই কষ্ট করে আসছে দয়াকরে মা তুমি আর তাকে কষ্ট দিওনা। তাদের বিয়ে টা ভেংগে যায় এমন কোন কিছু করো না।

এই মেয়ে কাঁদছো কেন কিছু বলো। আর কোন দিন এখানে এসো না মা। তুমি একটু বুঝতে চেষ্টা করো। এখন তুমি যাও এখান থেকে স্যার চলে আসলে আবার সমস্যা হবে।
তুমি চলে যাও আর কোন দিন এই বাড়িতে এসো না। স্যার এখন আর আগের মতো নেই। এখন সে বুঝে কি করলে তার ভাল হবে। তাই তাকে আর ধোঁকায় ফেলার চেষ্টা করুনা। যাও এবার...

দারোয়ানের কথা শুনে মেয়েটা কাঁদছে, কিন্তুু কোথাও যায়নি। তার আর কোনো যাওয়ার যায়গা ও নাই স্বামী ছাড়া। কাঁদতে কাঁদতে গেটের বাহিরে ঐ ঘুমিয়ে গেছে মেয়েটা।
হয়তো স্বামীর কাছে একটু আশ্রয় এর আশায় পরে আছে।

প্রথম পর্ব এখানে ক্লিক করে পড়ুন।