স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প | কষ্টের স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প ২০২২

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প

প্রতি সপ্তাহে হুজুর বয়ান করেন গত শুক্রবার হুজুর এক জন স্বামী স্ত্রীর বাস্তব ঘটনা বললেন:
একজন ছেলে ও মেয়ে দুজন দুজনকে খুব পছন্দ করেছেন, তাদের বিবাহ ঠিক হয়েছে, মেয়েটির বাবার অনেক যায়গা সম্পদ আছে, তাদের বিয়ের পর মেয়েটির বাবা তাকে একটি জমি দিলো, ছেলেটি গরিব হলে ও অনেক লেখা পড়া করেছেন, তার ও ভালো একটা যায়গায় চাকরি হয়েছে এবং কিছু দিন এর ভিতর তারা সেই যায়গায় পাঁচ তলা একটা বিল্ডিং করেছেন, তারা এখন স্বামী স্ত্রী, দুজন এই বাড়িতে থাকে। প্রায় সময় স্বামী মসজিদে একা একা বসে বসে অনেক কান্নাকাটি করতো, অনেক দিন ধরে দেখে আসছিলেন মসজিদের ইমাম সাহেব: একদিন তাকে জিজ্ঞেস করলো, আপনি প্রতিদিন এভাবে কান্না কাটি করেন কেন, ইমাম সাহেবের জবাবে লোকটি বললো আমার স্ত্রী আমাকে কাজের লোক মনে করে, কাজের লোকদের মতো আচরণ করে, সে শুধু আমাকে হরমাস করে, আর আমার সাথে সব সময় খারাপ ব্যবহার করে, কোন সময় আমার কথা শুনে না। তার কথা মতো আমার চলতে হয়। হুজুর আমি অনেক কষ্টে আছি, আমি এই জীবন থেকে মুক্তি চাই, না পারছি তাকে ছারতে, না পারছি এই জীবন থেকে মুক্তি পেতে। এই জাহান্নামে আর আমার ভাল লাগে না, হুজুর তার এমন কথা শুনে তাকে তাবলীগ জামাতে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন। পরে অনেক বছর পর তার বসের তিন দিনের জন্য, তাবলীগ মাস্তুরাত জামাত ঠিক হলো, পরে তাকে যাওয়ার জন্য তার বস অনুরোধ করলে, সে তার স্ত্রীকে সাথে করে জামায়াতে গেল। লোকটার স্ত্রী ও তার বসের স্ত্রী, মানে মহিলারা এক বাড়িতে আর পুরুষরা মসজিদে থাকা শুরু করলো। একদিন তার বসের স্ত্রী বাসন প্লেট দুইতে ছিলো, এমন সময় লোকটার স্ত্রী এসে দেখলো, তিনি প্লেট দুচ্ছেন, এতো বড় ঘরের মেয়ে হয়েও, তার পরে তাকে জিজ্ঞেস করলো, আপনি এগুলো করছেন কেন, বাড়িতে কোন কাজের লোক জন নেই, এমন কথার জবাবে তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় এসে কাজের লোক জনদের দিয়ে কাজ করায় না, আর আমি এসব সবসময় নিজেই করি, কাজের লোক জনদের দরকার নেই। আর এসব নিজেদের করতে হয়, আর আমরা না করলে আমাদের স্বামীদের করতে হবে, এটা আমি কখনোই দেখতে পারবো না, আল্লাহ পাক ও আমাকে ক্ষমা করবেন না। আমি থাকতে কখনো আমার স্বামীকে দিয়ে এসব করাতে পারবো না। তার স্বামীর বসের স্ত্রীর এমন কথা শুনে, তার বুঝে আসলো। স্ত্রীদের আল্লাহ পাক শুধু মাত্র স্বামীর খেদমত করার জন্য বানিয়েছেন। ঠিক তখনই সে তার স্বামীকে ডেকে পাঠালেন, এবং ঘরের দরজা বন্ধ করে স্বামীর পায়ে ধরে বসে পরলেন, স্বামী এসব দেখে বললেন, কি করছ এসব, উত্তরে: স্ত্রী বলেন আগে বলে আপনি আমাকে ক্ষমা করেছেন, স্বামী বললেন আগে তুমি পা ছারো আমি ক্ষমা করে দিব। স্ত্রী: বললেন আপনাকে আমি সবসময় কষ্ট দিয়েছি, কথায় কথায় মনে আঘাত দিয়েছি, সব সময় কাজের হরমাস করেছি, আপনার কথা কখনো শুনিনি, অথচ আপনার জন্য আল্লাহ পাক আমাকে সৃষ্টি করেছেন, আর আমি আপনাকে এতো কষ্টে রেখেছি, যেই যায়গায় স্ত্রীর দায়িত্ব স্বামীকে খুশি রাখা, সেই যায়গায় আমি আপনাকে কষ্ট দিয়েছি, আগে বলেন আপনি আমাকে ক্ষমা করেছেন, তার পরে আমি মনে শান্তি পাব, স্বামী: তার স্ত্রীর এমন কথা শুনে খুব খুশি হয়েছেন ও স্ত্রীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।
জামায়াত শেষ করে বাড়িতে আসার কয়দিন পর ঐ হুজুরের সাথে দেখা, হুজুরকে সালাম দিলেন, হুজুর সালামের জবাব দিয়ে বলেন, আপনাকে চিনতে পারলাম না, হুজুর না চিনার কারণ হচ্ছে, তখন দাড়ি ছিলোনা লোকটার, জামায়াতে যাওয়ার পর রেখেছেন, তার পরে হুজুরকে বললো আমি ঐ লোক যে মসজিদে বসে বসে কাঁন্না করতাম, হুজুর এবার চিনতে পেরেছে, চিনতে পেরে বললেন তখন অনেক দুঃখী ছিলেন আর এখন এতো খুশি, তখন লোকটা হুজুরকে সব কিছু খুলে বললেন, হুজুর শুনে অনেক খুশি হয়েছেন।

স্বামী স্ত্রীকে আল্লাহ পাক দ্বীনের জন্য কবুল করেছেন, যেই লোকটা জাহান্নামের মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলেন, সে এখন জান্নাতের ভিতরে দিন কাটাচ্ছেন, পৃথিবীর সব স্ত্রীদের আল্লাহ তায়ালা এমন দ্বীনী বুঝ দান করুন। আমীন