শিক্ষামূলক নীতি বাক্য | শিক্ষা মূলক কথা | শিক্ষামূলক গল্প

 শিক্ষনীয় গল্প ও শিক্ষামূলক ঘটনা

শিক্ষনীয় গল্প ও শিক্ষামূলক ঘটনা

এক বাবা দেখলেন তার ১১ বছরের ছেলে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। বাবা তার মাথায় হাত দিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলেন-


"কি ব্যাপার, বাছা?"


ছেলেটা উত্তর দিল-

"আমার ধনী সহপাঠীরা কথায় কথায় আমাকে উপহাস করে। আমাকে মালীর ছেলে বলে ডাকে। ওরা বলে যে আমার বাবা মানুষের জন্য গাছপালা জল দেওয়া এবং ফুল ফুটিয়ে উপার্জিত টাকা দিয়েই বেঁচে থাকে।"


বাবা এক মুহূর্ত থেমে গেলেন, তারপর বললেন-


"আমার সাথে এসো,বাবা, কিছু ফুল গাছ লাগাই। এতে হয়তো তোমার মনের দুঃখ কাটবে। এটা তোমাকে আনন্দিত করবে।"


তিনি ছেলেটির হাত ধরে তাকে বাগানে নিয়ে গেলেন, তারপর দুটি ফুলের চারা বের করলেন এবং বললেন-


"এসো,একটা পরীক্ষা করা যাক। আমরা আলাদাভাবে দুটি ফুল চারা লাগাব। আমি একটির যত্ন নেব, আর তুমি অন্যটির যত্ন নেবে। আমি লেকের পরিষ্কার জল দিয়ে খানিক জল দেব কিন্তু তুমি পুকুরের নোংরা জল দিয়ে চারা গাছে জল দেবে। আমরা আগামী সপ্তাহগুলিতে ফলাফল দেখতে পাব"


ফুলের চারা রোপণে বাবার সাথে যোগ দেওয়ায় ছেলে ও আনন্দিত হল। তারা যথাক্রমে তাদের যত্ন নিয়েছে এবং তাদের বেড়ে উঠতে দেখেছে।তবে ছেলেটি খুব আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে। 


পরে বাবা তার ছেলেকে বাগানে নিয়ে এসে বললেন।


"দুটি ফুলের দিকে তাকাও এবং আমাকে তোমার পর্যবেক্ষণ বলো"।


ছেলেটি সাড়া দিল।

"আমার ফুল তোমার চেয়ে ভাল এবং স্বাস্থ্যকর দেখাচ্ছে।তুমি পরিষ্কার জল ব্যবহার করলেও তোমার ফুলের চারাটি তেমন বড় হয়নি বা ফুলগুলোও সুন্দর নয়। এটা কিভাবে সম্ভব?"


বাবা হাসলেন, তারপর বললেন-


"এর কারণ হল নোংরা জল একটি গাছের বৃদ্ধি বন্ধ করে না, বরং এটি বৃদ্ধিতে সাহায্য করার জন্য এটি জৈব সার হিসাবে কাজ করে।দেখো বাবা, কিছু মানুষ আছে যারা তোমাকে জীবনে নামিয়ে দেয়, তোমার স্বপ্ন নিয়ে উপহাস করে, তোমার গায়ে ময়লা ফেলে।

সর্বদা মনে রাখবে যে দরিদ্র ঘরে জন্মানেওটা কোন অপরাধ নয়।বরং রসদ ও সুযোগ সুবিধা পেলে দরিদ্র ঘর থেকে ও সফল ছেলে মেয়ে তৈরী হতে পারে।


সুতরাং, লোকেদের কঠোর,নির্মম শব্দগুলিকে একেবারেই পাত্তা দেবেনা বরং নিজের গতিতে নিজের কাজ করে যাবে। আর তা করলে হাজারো নেতিবাচক কথা এবং কঠোর,নির্দয় কথার মত নোংরা তোমার বৃদ্ধি আটকে রাখতে পারবে না বরং তুমি গাছের মতোই বড় এবং বলিষ্ঠ হয়ে উঠবে।