হঠাৎ বিয়ের রোমান্টিক গল্প | বউ নিয়ে রোমান্টিক গল্প

 কম বয়সে বিয়ে | নিউ রোমান্টিক গল্প | রোমান্টিক গল্প স্বামী স্ত্রী

কম বয়সে বিয়ে | নিউ রোমান্টিক গল্প | রোমান্টিক গল্প স্বামী স্ত্রী

"রুদ্র! তোর বয়েস মাত্র ১৫ বছর, আর তুই এই বয়সে বিয়ে করছিস? তাও একটা ১১ বছরের মেয়ে'কে। তোদের বিয়ে কে পড়াইছে আমাকে বলবি বাবা?" 


"কে আবার কাজি সাহেব, মাম্মাম যাও তো, তোমার বউ'মা কে আমার ঘর'টা দেখিয়ে দেও। আমি একটু তোমার জামাই'টার সাথে দেখা করে আসি।"


--ছেলের এমন সোজা সাপ্টা উওর শুনে রুমাইশা'র নাকে'র ডগা লাল হয়। এই ছেলে'কে সে পেটে ধরছে ভাবতেই লজ্জা করছে। নিজের বিয়ে হয়ছিলো ১৫ বছর বয়সে। সেটা না-হয় ঠিক ছিলো, মেয়ে মানুষের ১৫ বছর বয়সে বিয়ে হয়। কিন্তু! তার ছেলে ১৫ বছর বয়সে বিয়ে করছে, তাও একটা ১১ বছরের মেয়ে'কে।


"মাম্মাম আমার কথা কি তুমি বুঝতে পারো নাই? তোমার বউ'মাকে রুম দেখিয়ে দেও যাও। তুমি যখন ১৫ বছরে বিয়ে করছিলা, তখন তো আমি কিছু বলি নাই।" 


"সেটাই তো, তখন তো তোমার ছেলে কিছু বলে নাই। তাহলে তুমি ওকে বকছো কেনো? কিন্তু হয়ছে কি বলবা!"


"তোমার ছেলে বিয়ে করছে আহনাফ, বিয়ে করছে বিয়ে"


"কিহ!"


--আহনাফ বুকে হাত দিয়ে সোফায় বসে পড়ে। বড়'বড় চোখ করে রুদ্রের দিকে তাকিয়ে দেখে কয়েক পলক। রুদ্র বিয়ে করছে! আহনাফ নিজে'কে শান্ত করে বলে,


"রুদ্র মাম্মাম কি ঠিক বলছে! তুমি কি বিয়ে করছো?" 


"তো! বাবাই তোমার কি মনে হয়! শোনো রুদ্র শাহরিয়া কখনো মিথ্যা বলে না। ঐ যে, হুমায়রা আমার মিসেস, মিসেস রুদ্র শাহরিয়া।" 


"হুমায়রা!"


--আহনাফ আরো অবাক হয়, মামাতো বোন'কে বিয়ে করছে সে। হুমায়রা'র বয়স এখন ১১ বছর, আর সে নিজে বিয়ে করছে বুড়ো বয়সে। তার ছেলে বিয়ে করছে ১৫ বছর বয়সে!! এটা যেনো অবিশ্বাস্য। রাহুল নিজের রুম থেকে বের হয়ে এসে দেখে হুমায়রা আর রুদ্র বর বউ সাজিয়ে আছে। রাহুল অবাক কন্ঠে বলে,


"রুদ্র! আজ কি তোর স্কুলে যেমন ইচ্ছে তেমন সাজ খেলা ছিলো নাকি?" 


"উফ শশুর মশায়, আমি আপনার একমাত্র জামাই। আমি হুমায়রা চৌধুরীর জামাই রুদ্র শাহরিয়া।" 


"কিহ! কানের নিচে দিবো দুইটা, বেয়াদব মজা করার জায়গা পাস না? তোদের বিয়ের বয়েস হয়ছে নাকি! হুমায়রা আম্মু আমার কাছে আসো।"


"ভাইয়া রুদ্র সত্যি বিয়ে করছে। তোর মেয়ে'কে আমার এই বাঁদর ছেলে বিয়ে করছে ভাইয়া।"


--রুমাইশার কথায় হা হয়ে যায় রাহুলের মুখ। আহনাফ বিস্ময় নিয়ে এখনো হুমায়রা আর রুদ্র'কে পরখ করছে। তারপর হালকা কন্ঠে বলে,


"এই বয়সে তোমাদের কাজি কিভাবে বিয়ে পড়ালো? আর তুমি বিয়ের কি বোঝো! এসব বিয়ের চিন্তা মাথায় আসলো কিভাবে?" 


"উফ বাবাই তুমি ও না! পারভেজ মামা আমাদের সাথে ছিলো। একজন এসআই থাকলে যে কেউ বিয়ে পড়াবে।" 


"পারভেজ!"


--সবাই আরো অবাক হয়, পারভেজ এই কাজ কিভাবে করতে পারে? দরজা খোলার শব্দে সবাই দরজার দিকে তাকায়। পারভেজ ভিতু হয়ে প্রবেশ করছে। রুমাইশা গিয়ে একটা চড় বসিয়ে বলে,


"এই তুই কোন সাহসে এদের বিয়ে দিছিস? তোর লজ্জা করলো না!! এদের বিয়ের বয়েস হয়ছে? আর হুমায়রা এই টুকু মেয়ের জীবন তুই নষ্ট করছিস।"


"আপু! তুই আমাকে মারছিস কেনো? তোর ছেলে আমাকে হুমকি দিয়ে কাজি অফিস নিয়ে যায়। হুমায়রা'কে কোন ছেলে চকলেট দিসে, তাকে তোর ছেলে মেরে হসপিটাল ভর্তি করায়ছে। তারপর হুমায়রা'কে নিয়ে আমার থানায় আসে। আমাকে হুমকি দিয়ে কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে করে।"


"তাই বলে তুই ওদের বিয়ে দিবি! রুদ্র এসবের মানে কি?"


"কি আবার, হুমায়রা বউ'জান তুমি আমার রুমে যাও তো। এদের কথা শুনলে তোমার বিরক্ত লাগবে। আর দুপুর হয়ছে খাবার দেও।"


"রুদ্র"


"মাম্মাম প্লিজ তোমার এসব ধমক শোনার ইচ্ছে আমার নেই।"


--রুদ্র কারো কথা না শুনে হুমায়রা'র হাত ধরে রুমে নিয়ে যায়। রুদ্র এবার নিউ টেন, আর হুমায়রা ক্লাস সিক্স এদের বিয়ে হয়ছে কেউ শুনলে কি বলবে!! সবাই মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। আহনাফ কাঁপা কাঁপা সুরে বলে,


"আমাকে কম জালাও নি, এখন তুমি ছেলের অত্যাচার সহ্য করো। বলছিলাম আর একটা বাচ্চা নেও, না এখন একটা আদরে বাঁদর হলো তো।"


"ঐ! একদম কথা বলবা না। আমি তোমার ছেলে'কে এমন বানায়ছি নাকি? তোমার মতোই হয়ছে। তুমি যেমন নিজের বয়সের থেকে ছোট মেয়ে'কে বিয়ে করছো! তেমন তোমার ছেলে অল্প বয়সে বিয়ে করছে।" 


"এখন রুদ্র আমার ছেলে তাই না! ভালো হলে তো তোমার হতো।" 


--দু'জনের মধ্যে ঝগড়া লেগে যায়। আর বাকিরা এখনো বোকার মতো বসে আছে। তাদের এসব বিশ্বাস হচ্ছে না। রুমাইশা বিরক্ত হয়ে সবার জন্য খাবার টেবিলে সাজিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পর রুদ্র আর হুমায়রা নিচে আসে। রুদ্র হুমায়রা'কে নিজের পাশে বসিয়ে নিজ হাতে খাইয়ে দেয়। সবার খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়, রুদ্রের কাহিনি দেখে। রুদ্র শব্দ করে হুমায়রা'র কপালে কিস করে। রাহুলের গলায় খাবার আটকে যায়। ঢকঢক করে পান খেয়ে রুমাইশার উদ্দেশ্য বলে,


"বোন! দয়া করে তোর ছেলে'কে আমার সামনে থেকে সরা। আমি শশুর হই! আমার সামনে রোমান্স করতে বারণ কর প্লিজ।"


"শশুর আপনি ও না! কাকে কি বলছেন? আমার মাম্মাম আর বাবাই যখন রোমান্স করে তখন তো আমি বারণ করি না।"


--আহনাফে'র এবার খাওয়া বন্ধ হয়, খাওয়া ছেড়ে উঠে রুদ্রের গালে একটা চড় বসিয়ে দেয়। হুমায়রা কান্না করে দেয়। সেটা দেখে আহনাফ একটা ধমক দেয়। রুদ্র রেগে বলে,


"একদম আমার বউ'কে ধমক দিবা না। আমি ছোট্ট বাচ্চা না ওকে? হুমায়রা আসো এখানে থাকবো না।" 


--রুদ্র সোফায় বসে হুমায়রা'কে ধমক দিয়ে নিজের কোলে মাথা রাখতে বলে। হুমায়রা সুরসুর করে তাই করে, সবার সামনে সে হুমায়রা'কে আদর করে, মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়, কপালে কিস করছে, রাহুল এসব সহ্য করতে না পেরে নিজের রুমে চলে যায়। রুমাইশা মুখটা ছোট করে আহনাফে'র দিকে তাকিয়ে থাকে। আহনাফ কিছুটা ঝাঁঝালো গলায় বলে,


"তোমার ছেলে তুমি সামলাও, নয়তো আমার সাথে রুমে চলো। আমরা ও রুদ্রের মতো রোমান্স করবো।" 


"আহনাফ!"


"হ্যা মাম্মাম যাও, ভুলে ও বাচ্চা নেওয়ার প্লেন করো না। কয়দিন পর নাতিনাতনি হবে তাদের তো মানুষ করবা নাকি?"


"নাতিনাতনি!"


--আহনাফ আর রুমাইশা দুজনের অবাক হয়ে রুদ্র'কে পরখ করে। পারভেজ পাশে জ্ঞান হারিয়ে বসে আছে। রুমে রাহুল আর রিতু দু'জনে জিহ্বা উল্টিয়ে পড়ে আছে। এই ছেলের এসব কথা তারা সহ্য করতে পারছে না। আহনাফ আর রুমাইশা বিরবির করে হলে,


"হতাশ আমি বড়ই হতাশ, এ কি মাল জন্ম দিছি আমি।"


--দু'জনে ধপ করে মেঝেতে পড়ে যায় সেন্সলেস হয়ছে। রুদ্র মুখ বাঁকিয়ে হুমায়রা'র ঠোঁটে ঠোঁট বসিয়ে দেয়। হুমায়রা ছোট ছোট চোখ করে তাকে দেখে। কিছুক্ষণ পর রুদ্র মুচকি হেঁসে বলে,


"হুহ্ তোমরা ভালো থাকলে কিস করতে পারতাম না। হতাশ হবেন না কেউ, আগে আগে দেখো হোতা হে কিয়া। আমাকে বোন কিন্না দিবা না তো! এখন আমার রোমাঞ্চ চোখের সামনে দেখো। বলছিলাম মাম্মাম একটা বোন দেও, দিবা না যখন তখন নাতিনাতনি সামলাও।"