নীতি শিক্ষামূলক গল্প
(শারীরিক সম্পর্ক করার পর)
আমি এই স*মাজেই বা মু*খ দেখাবো কি করে,
দরজা ধাক্কানো আর মিতুকে রাগী সুরে ডাকার আওয়াজ বেড়ে যেতে লাগল।
- মিতু মাথায় হাত দিয়ে এটার সমাধান খুজে বেরাচ্ছি, কি করলে সব ঠিকঠাক করা যাবে।
একটুপর সমাধান খুজে পেয়ে মাথার উপড়ে ফ্যানটার দিকে তাকিয়ে অট্ট হাসিতে মেতে উঠল। আর বলতে লাগলো, হ্যা এই ফ্যানই আমার সবকিছুর সমাধান।
-একটা ও*ড়না ফ্যা*নের সাথে বে**ধে দি*য়ে ওড়*নার ফা*সটা গ*লার সা*থে সেট করে ফেলল মি*তু।
মিতুর গ*ঙ্গানোর আওয়াজ পেয়ে মিতুর বাবা জোরে জোরে দরজা ধাক্কিয়ে ভে*ঙ্গে ফেলল।
দরজা ভে*ঙ্গে ভিতরে ঢুকে দেখে মিতু গলায় ওড়না পেচিয়ে আ**ত্ন*হ*ত্যা করেছে।
- রাকিবের কাছে মি*তুর মৃ**ত্যুর খবর পৌছালো এবং রাকিব খবর পেয়ে একটুও কষ্ট পেলনা,
কারন রাকিবতো এখন আরেকটা নতুন মিতুকে খুজাতেই ব্যস্ত,
.
-প্রায় বছর খানিক পর রাকিব কে বিয়ে দেওয়ার জন্য মেয়ে দেখা হচ্ছে।
রাকিবের বন্ধুরাও মেয়ে দেখার কাজে ব্যাস্ত।
- মোনালিসা নামের একটি মেয়েকে সবার খুব পছন্দ হল, মেয়েটি দেখতে খুব সুন্দর রাকিবেরও পছন্দ হয়েছে খুব।
বিয়ের কথা পাকা করা হল, ছেলে এবং মেয়ের মতামতেই বিয়েটা দেওয়া হয়েছে।
-বাসর ঢুকেই রাকিব একটু হতভম্ব হয়ে গেল, কারন মেয়েটি কার সাথে যেন ফোনে কথা বলছিলো।
রাকিব তাকে জিজ্ঞাসা করলে বলে তার একটা বান্ধবীর সাথে কথা বলতেছিল।
কিছুদিনের মধ্যেই রাকিব মেয়েটিকে খুব ভালোবাসে ফেলে, মেয়েটি রাকিবকে খুব ভালোবাসে।
এভাবে ভালোই দিনকাল চলতে থাকে রাকিবের...
.
দুই বছর পর...
রাকিবের বউ মোনালিসা প্রেগ*নে*ন্ট, রাকিব বাবা হতে চলেছে।
মোনালিসাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, কিছুক্ষন পর রাকিবের কোলে একটি ফুটফুটে কন্যা শন্তান দেখা যায়, হ্যা মোনালিসার কন্যা শন্তান জন্ম হয়েছে।
- রাকিব তার মেয়ের নাম রেখেছে টুশি, টুশি এখন ৩য় শ্রেনীতে পড়ে।
রাকিবের বউ মোনালিসা প্রতিদিন টুশিকে স্কুলে দিয়ে আসে এবং নিয়ে আসে।
প্রতিদিনের মতো আজকেও মোনালিসা টুশিকে স্কুলে ঠিকি দিতে গেছে কিন্তু আর ফিরেনি আসেনি।
-পরে জানতে পারা যায় মোনালিসার একটি ছেলের সাথে প*রকিয়া ছিল, মো*নালিসা তার সাথেই পালিয়ে গেছে।
.
এদিকে রাকিবও প্রায় ভুলেগেছে মোনালিসাকে। টুশির কথা ভেবে রাকিব আর বিয়ে করেনি।
- টুশি এখন ক্লাস ১০ এ পড়ে, কিছুদিনপর টুশির S.S.C পরিক্ষা।
তাই রাকিব একমাসের জন্য অফিস ছুটি নিয়েছে,
টুশিকে রাত জেগে পড়ানো, টুশির খাওয়ার ব্যাবস্হা সব রাকিব করছে, টুশিকে কোন কাজই করতে দেয়না।
টুশিও মন দিয়ে পড়ালেখা করছে।
-আজ টুশির প্রথম পরিক্ষা, তাই রাকিব টুশিকে স্কুলে দিতে গেছে,
টুশি দেখতে অনেক সুন্দর, টুশির দিকে কয়েকটা ছেলে কেমন ভাবে তাকাচ্ছিলো,
এভাবে তাকাতে দেখে রাকিবের কেমন খারাপ লাগলো, তাই রাকিব স্কুলের বাইরে দাড়িয়ে আছে টুশির পরিক্ষা শেষ হওয়ার অপেক্ষায়।
টুশি ছাড়া তো রাকিবের আর কেউ নেই, তাই টুশিকে খুব ভালোবাসে রাকিব।
-রাকিবের সাদা-কালো চুল আর চোখে একটা পুরোনো চশমা।
রাকিব ছেলেদের দিকে তাকাচ্ছে আর ভাবছে সেও একসময় এই ছেলেদের মতোই খুব মডেলিং ছিলো।
কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে এসব মডেলিং আর ভালো লাগেনা।
রাকিবের বড়লোক বন্ধুরাও আর রাকিবের খবর নেয়না।
খুব জানতে ইচ্ছে করছে আমার বড়লোক বন্ধুরা কেমন আছে তাদের দেখতেও ইচ্ছে করছে খুব।
পাশ থেকে কেউ একজন বলে উঠলো,
- কিরে রাকিব কেমন আছিস?
-- আরে বন্ধু রনি তুই, তুই এতোদিন কোথায় ছিলি?
- আমিতো দেশের বাইরে থাকি, আর তুই এখানে কি করছিস, তোর এই অবস্থা কেনো? কলেজের সবথেকে স্মার্ট ছেলেটার এই অবস্থা হবে ভাবতে পারিনি।
-- আমার মেয়ে টুশি পরিক্ষা দিচ্ছে তাই আরকি বসে আছি।
- ও আচ্ছা ঠিক আছে, থাক আমাকে বাসায় যেতে হবে, আর ভালো থাকিস।
-- আচ্ছা যা।
রনি গাড়িতে উঠে চলে গেল। আমি সেখানে বসে ভাবছি,
কলেজে সাইকেল না নিয়ে আসতে পাড়া, প্রতিদিন পুরাতন একটা ময়লা শার্ট পড়ে আসা ছেলেটা আজ গাড়িতে করে যাচ্ছে, চোখের কোনে পানি জমে এলো।
.
টুশির পরিক্ষা শেষ টুশিকে নিয়ে বাসায় এলাম।
এভাবে প্রতিদিন টুশিকে নিয়ে যাওয়া আসা করি, টুশির S.S.C পরিক্ষা শেষ হয়ে গেলো,
তাই টুশিকে বিয়ে দেওয়ার জন্য একটা ভালো ছেলে খুজছি,
কিছুদিন পর...
- অফিসে বসে বসে মোবাইল চালচ্ছিলাম, কেউ একজন ভিডিও মেসেজ দেওয়ায়, মেসেজটা অপেন দেখেই যেন হাত পা কাপতে শুরু করলো।
নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস করতে পারছিনা, আমার মেয়ে টুশির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
-চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়তে লাগলো, টুশি কোন ছেলের সাথে লুকিয়ে সে** ভিডিও বের করবে ভাবতে পারিনি।
তারাতারি করে বাসায় এসে টুশির রুমে ঢুকে দেখি টুশি বি**ষ খেয়ে আ*ত্ন*হ*ত্যা করেছে।
বিছানার পাশে একটা চিরকুট পেয়ে পড়তে শুরু করলাম,
"আমাকে ক্ষমা করে দিও বাবা, আমি একটা ছেলেকে ভালোবাসতাম, আর ভালোবাসার প্রমাণ দিতে গিয়ে আমাকে এতোটা নিচে নামতে হয়েছে। আমি ভাবিনি ছেলেটা আমার ভিডিও ফা*স করে দিবে, আমাকে ক্ষমা করে দিও বাবা"
.
টুশিকে মাটি দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করে ফাকা রাস্তা দিয়ে হাটছি, কিছুক্ষণ পর একটা পুকুরপাড়ে এসে বসলাম।
- আজ মিতুকে খুব মনে পড়ছে,
আমি চোখ থেকে দাগ পড়া চশমাটা খুলে রাখলাম, একটা সিগারেট ধরিয়ে টানছি।
কিছুক্ষণপর ভেজা ভেজা চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি, আজ চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে,
-ফিরে এসেছে, হ্যা ফিরে এসেছে তবে মিতু নয়, মিতুর সাথে করা আমার অন্যায় আমার পাঁ*প।
## প্রকৃতির নিয়ম বড়ই অদ্ভুদ, আপনি আজ অন্যকে ঠকাবেন। তো কাল হোক কি পরশু হোক বা কোনো একদিন ঠিক প্রকৃতি অপনাকে সেটা উপহাড় সরুপ ফিরিয়ে দিবে।।
সমাপ্ত