রোমান্টিক গল্প | ভালোবাসার গল্প | প্রেমের গল্প ২০২৩

 গল্প রোমান্টিক

গল্প রোমান্টিক

বিয়ের পরদিন সকাল ঘুম থেকে জেগে পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখি বউ নেই বিছানায়, একটি সাদা কাগজ রয়েছে ভাজ করা। দেয়াল ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি বরাবর ছয়টা বাজে, এত সকাল বেলা যাবে কোথায়?। নিজের মনে প্রশ্নটা করার সঙ্গে সঙ্গেই হৃদপিণ্ড কেঁপে উঠলো। হে খোদা যা ভাবছি তা যেন না হয়, শকুনের দোয়ায় কি গরু মরে?। কাগজটা হাতে নিয়ে ভাঁজ খুলে লিখা গুলো পড়তে লাগলাম। 


আমাকে ক্ষমা করে দিবেন, আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই নি, বাবা-মা জোর করে বিয়ে দিয়েছে। বিয়ের আগে আমি বাবা-মাকে বলেছিলাম আমার পছন্দের ছেলের সঙ্গে বিয়ে না দিলে বিয়ের পরদিন পালিয়ে যাব। বাবা-মা আমার কথা বিশ্বাস করেনি, এখন হয়তো বিশ্বাস করবে কিন্তু করার কিছু নেই। আপনি অনেক ভালো মানুষ আপনাকে কষ্ট দেওয়ার কোন ইচ্ছেই আমার ছিলনা কিন্তু আমি বাধ্য। ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দেবো ভয়ের কিছু নেই, আপনি আমার চেয়েও ভাল কাউকে জীবনসঙ্গিনী করে নিবেন।


কষ্টে আমার বুক ফেটে যাচ্ছে, বুকের বা পাশে হাত দিয়ে চেপে ধরে রেখেছি তবে ব্যথা অনুভব হচ্ছে না, মন বলছে এক্ষুনি আমি হার্ট অ্যাটাক করব কিন্তু সেটাও হচ্ছে না। এই মুহূর্তে হার্ট অ্যাটাক করে মরে যাওয়াটাই ভালো। সমাজে এই মুখ আমি কিভাবে দেখাবো? তার চেয়ে বড় বিষয় রিমি, রিমি যখন জানতে পারবে...... ছি ছি ছি এটা কি হলো আমার সঙ্গে? তাহলে কি শকুনের দোয়ায় সত্যি সত্যি গরু মরে?। 


রিমি আমার আপন চাচাতো বোন। গত এক সপ্তাহ আগে ঠিক এই দিনে আমাকে রেস্টুরেন্টে ডেকে নিয়ে প্রপোজ করে বসে, আমিও গাধার মত প্রপোজাল আক্সেপ্ট করে নি। সারাদিন প্রেমের সাগরে হাবুডুবু খেয়ে রিমির পেছনে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা খরচ করে রাতে যখন আমি বিয়ের প্রপোজাল দিলাম শকুন হাসতে হাসতে বলে, ভাইয়া আমি তো তোমার সঙ্গে প্রাঙ্ক করেছি। রাগের মাথায় কিছু বকা ঝকা দিয়ে ওর পেছনে খরচা করা টাকা ফেরত চাইলাম তখন বলল, তোমার মত ছেলের সঙ্গে কোনো মেয়েই প্রেম করবে না, আর বিয়ে? সেটা তো দূরে থাক। আর যদি বিয়ে করেও ফেলে বিয়ের পরদিন সকালে ঠিক পালিয়ে যাবে রাতে তোমার চেহারা দেখে।


সেদিন রিমিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলাম। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিয়ে করব এবং সংসার করবো, তোর মত শকুনের দোয়ায় গরু মরে না। বাবা-মা'র ঘুম হারাম করে বিয়ে করার জন্য উঠে পড়ে লাগলাম। বাবা-মা রাজি না হওয়াতে আমরণ অনশনে বসলাম। রীতিমতো বাধ্য হয়েই আমাকে বিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমার বউ ওকে তো আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে। একটিবারের জন্যও এমন কিছুই মনে হয়নি যে, বউটা অন্য কাউকে পছন্দ করে। হায়রে আমার পোড়া কপাল এমন সহজ সুলভ আচরণ দেখিয়ে আমার মত গাধাকে ফাঁদে ফেলে দিল এখন আমার কি হবে?। পৃথিবী ছেড়ে পালাতে পারলে বেঁচে যেতাম, অসম্মান হওয়া থেকে। আপাতত বাসা থেকে পালাই। 


সময় বিলম্ব না করে বেরিয়ে পড়েছি বাসা থেকে, যা হবার হবে আমি আর বাসায় ফিরে যাব না। পরিবারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করবো না। এখান থেকে সোজা ট্রেন ধরে চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান গিয়ে পাহাড়িদের সঙ্গে বাকি জীবন কাটিয়ে দিব। যেই ভাবা সেই কাজ সোজা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে চলে এসেছি। নিজের নেওয়া সিদ্ধান্তটা আর একটু ভেবে দেখছি আদৌ কি তা সম্ভব?। বাবা-মার কথা খুব মনে পড়ছে। ঘুম থেকে জেগে যখন তারা ছেলে আর ছেলের বউ কাউকেই পাবে না কি হবে তাদের? বোনটার কথা খুব মনে পড়ছে সারাদিন আমার পেছনে লেগে থাকে আমাকে খ্যাপানোর উদ্দেশ্যে। আমি চলে গেলে কার পেছনে লেগে থাকবে?। আমাদের চার জনের পরিবারে দুঃখ কষ্ট তেমন একটা নেই, দিনের অধিকাংশ সময় অতিবাহিত হয় একে অপরের সঙ্গে রসিকতা করে। এই রসিকতাটা যেন আমাদের রক্তের সঙ্গে মিশে আছে। এটা না করলে আমাদের পেটের ভাত হজম হয়না।


হঠাৎ ফোন বাজতে লাগল স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখি মা কল দিচ্ছে রিসিভ করবো নাকি কেটে দিব ভাবতে-ভাবতে যখন সিদ্ধান্ত নিলাম কেটে দিবো তখন রিসিভ করে নিলাম।


ওই হারামজাদা কই তুই? 


মার ধমক শুনে আমতা আমতা করে বলতে লাগলাম।


ইয়ে.. মানে.. মা আমিতো একটু বাইরে এসেছি।


তুই এত সকাল-সকাল বাহিরে গেলি কেন?


কি বলবো কিছুই মাথায় আসছে না, তাই সবার প্রথম মাথায় যেই বিষয়টা আসল সেটাই বলে দিলাম। তোমার বৌমা বলল বিয়ের পর প্রথম সূর্যোদয় একসঙ্গে দেখবে তাই ওকে নিয়ে বাইরে এসেছি।


গাধার বাচ্চা তুই আমার সঙ্গে ইয়ার্কি করিস? জলদি বাসায় আয়।


মা তুমি কিন্তু নিজেকেই গালি দিচ্ছ এখানে গাধার বাচ্চা আমি হলে গাধাটা কিন্তু তুমি নিজেকেই বোঝাচ্ছ।


ওরে আমার গাধার বাচ্চা রে,,, আগে বল বৌমা কি তোর সঙ্গে আছে?।


হমম হামম।


হুঁ হুঁ করছিস কেন সোজা ভাবে বল?।


হ্যাঁ আমার সঙ্গেই আছে।


বৌমাকে নিয়ে জলদি বাসায় আয়, তোর চাচা এসেছে রিমিও এসেছে তোর বউকে দেখার জন্য।


আচ্ছা আসছি।


জলদি বাসায় আয় আর নয় তো....।


কেল্লাফতে, এর মানে কি তা আমি জানিনা কিন্তু মুখ দিয়ে এই শব্দটাই বের হলো। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে হচ্ছে কিন্তু সেটাও সম্ভব হচ্ছে না। চারপাশে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে তাকিয়ে কয়েকজন হাসছে। এতো জোর গলায় কেল্লাফতে বলে দিয়েছি পাশে থাকা মানুষগুলোর কানে পৌঁছে গিয়েছে। মুখ ফিরে যখন তারা দেখতে পাচ্ছে কথাটা কোন বিয়ের সাজে সজ্জিত অর্থাৎ শেরওয়ানি পায়জামা পরা একটা ছেলে বলল তারমানে কুচতো গারবার হে। যে যার মত মনগড়া কাহিনী বানিয়ে মজা নিচ্ছে।


বাসর রাতে কী ঘটেছে মনে করতে গিয়েই সবার প্রথম মনে পড়ল রুমে প্রবেশ করার পর যখন বিছানায় গিয়ে বসি বউ বলল, টেবিলের উপর থাকা দুধের গ্লাস থেকে দুধ টা খেয়ে নিন। দুধ পান করার পর কি ঘটেছে তা আর মনে নেই। কিন্তু বাসর ঘরে প্রবেশ করার পূর্বে রিমিকে একটা মেসেজ পাঠিয়েছিলাম।


শকুনের দোয়ায় কখনো গরু মরে না, তবে শকুন যেটা খায় সেটা শকুনের জন্য নির্ধারণ করা থাকে। তোর মত মেয়ের চেয়ে কত হাজার গুণ সুন্দরী ভদ্র বউ পেয়েছি আগামীকাল চাচার সঙ্গে এসে দেখে নিস। 


ধুর ছাই কেনযে আবেগাপ্লুত হয়ে এমন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলাম এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। তার উপর কত বড় ডায়লগ শকুনের দোয়ায় গরু মরে না, শকুন যদি রিমির মত হয় গরু না মরে উপায় আছে?। এখন যদি বাসায় না যাই আর রিমিকে বউ দেখাতে না পারি কি হবে আমার? ও মাবুদ সাহায্য করো। উপায় না পেয়ে পরানের বন্ধু পরান কে কল দিলাম।


দোস্ত কঠিন মাইনকা চিপায় পড়ছি...


পুরো ঘটনাটা পরানের কাছে খুলে বলার পর শালার ব্যাটা হাসছে। আচ্ছা বিয়ের পর বউ পালানো কি হাস্যকর বিষয়?। নাকি আমার মত ছেলের বউ পালিয়েছে বলে সবাই আনন্দ পাচ্ছে?। হাসতে হাসতে পরান বলল, এখন কোথায় আছিস তুই?


কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে বসে আছি।


সঙ্গে সঙ্গে একটি ট্রেন চলে আসায় হুইসেল বেজে উঠলো পরান হাসি বন্ধ করে জোর গলায় বলতে লাগল, দেখ দোস্ত বউ পালিয়ে গেছে তো কি হয়েছে? আমরা তো আছি আমরা তো ছেড়ে যায়নি। সুইসাইড কখনোই সমাধান হতে পারে না, এমন কিছু করিস না ভাই আমি এক্ষুনি আসছি।


ধুর শালা তোর কাছে জ্ঞান চাইনি আমি প্ল্যান চেয়েছি। থাকলে বল নয়তো ফোন রাখলাম।


আগে বল তুই সুইসাইড করবি নাতো? 


ধুর শালা।


আচ্ছা শোন শোন, এই মুহুর্তে আমার মাথায় একটাই প্ল্যান আসছে আর তা হচ্ছে, অন্য কাউকে বউ বানিয়ে নিয়ে যাওয়া।


তোর মাথা ঠিক আছে? এখন আমি আর একটা বিয়ে করবো? এই মুহূর্তে আমি মেয়ে কোথায় পাবো বিয়ে করার জন্য?। 


বিয়ে করতে বলছি না জাস্ট অভিনয়। আজ কোনভাবে রিমিকে দেওয়া কথার মর্যাদা অর্থাৎ তোর মান সম্মান কে সামলা। বাকিটা পরে দেখা যাবে। আর মেয়ে নিয়ে টেনশন করিস না তুই, আমার এক বান্ধবী আছে ছোটখাট শর্ট ফিল্ম করে, অভিনয়টা ওকে দিয়েই করানো যাবে। বাসায় আয় আমি তোর বউ রেডি করছি।


তুই আসলেই আমার পরানের বন্ধু পরান।


এই মুহূর্তে এরচাইতে ভালো পরিকল্পনা আর হয় না। এতে করে সাপ মরবে ঠিকই কিন্তু লাঠি ভাঙবে না। পরানের কথামতো এক ঘণ্টার মধ্যেই নতুন বউ রেডি অর্থাৎ ভাড়া করা বউ। আজ একদিনের জন্য চার হাজার টাকা দিয়ে ভাড়া করতে হয়েছে বউকে, আইমিন অভিনয় করার জন্য। আমি কলিং বেল দিতেই সঙ্গে সঙ্গে দরজা খুলে দিল মা। ভেতরে প্রবেশ করতেই জোরে বলে উঠলাম, আমার বউ আজ কাউকেই চেহারা দেখাবে না, জোর করেও লাভ নেই কেউ বিরক্ত করবে না বলে দিলাম।


কথাটা বলেই ভাড়া করা বউয়ের হাত ধরে আমার রুমে চলে যেতে নিচ্ছিলাম। সঙ্গে সঙ্গে মা আমার হাত ধরে বলল, হারামজাদা এই মেয়ে কে? 


কে মানে কি? আমার বউ।


তোর বউ তো ঘরেই তুই আবার কোন মেয়েকে নিয়ে এসেছিস?।


ঘরে মনে??? 


আমরা তো তোর সঙ্গে মজা করছিলাম। আর গত একসপ্তাহ তুই আমাদের অনেক জ্বালিয়েছিস তাই তোকে একটা শিক্ষা দিতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু তুই কোন মেয়েকে ধরে নিয়ে এসেছিস? কে এই মেয়ে?। 


ড্রইংরুমে বাবা চাচা রিমি এবং ছোট বোন সবাই আমার দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসছে। আমার মেজাজ তখন জোয়ালা মুখী যেকোনো মুহূর্তে ফেটে যাবে। মেজাজ না ফাটিয়ে মুখ ফুটে বললাম, এই পরিকল্পনাটা কে করেছিল?।


মা বলল,রিমি আর তোর বোন সবার প্রথম বলেছিল এমন কিছু করতে।


আর তোমরাও তাতে রাজি হয়ে গেলে? এমন রসিকতা তোমাদের রক্তের সঙ্গে মিশে আছে এখন আমার করার কিছু নেই। সকালে বউকে পাশে না পেয়ে চিঠি পড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ি। মান সম্মান বাঁচাতে আমার বান্ধবীকে বিয়ে করে নিয়ে এসেছি। এবার তোমরা কি করবে করো, আমি আমার নতুন বউকে নিয়ে রুমে যাচ্ছি। 


কথা না বাড়িয়ে ভাড়া করে নিয়ে আসা বউকে নিয়ে আমার রুমে চলে এলাম। ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে বসে পড়লাম, ফাজলামোর একটা সীমা থাকা দরকার। এবার তোমাদের কেল্লাফতে। বাহিরে সবাই তখন শক খেয়ে নীরব হয়ে আছে। পরানের বান্ধবী আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে।


আরে আপনি ভয় পাচ্ছেন কেন? ওরা আমার সঙ্গে রসিকতা করেছে এবার ওদের কে ও একটু শিক্ষা দেওয়া উচিত, বেশি না তিরিশ মিনিট। তারপর আপনাকে ছেড়ে দেবো। 


হঠাৎ করে বাহির থেকে কান্নার শব্দ ভেসে আসছে আমার বউ কাঁদছে। কাদুক কিছু সময় শিক্ষা পাওয়া উচিত, স্বামীর সঙ্গে কখনো এমন ফাজলামো করতে নেই। স্বামীকে ছেড়ে অন্যের কথা মানতে নেই, শিক্ষাটা শুরুতেই দিয়ে দেওয়া উচিত। মা এসে দরজা চাপড়াচ্ছে আর বলছে, খোকা লক্ষী ছেলে আমার দরজাটা খোল। কথা শোন আমার।


আমি কারো কোন কথা শুনবো না, তোমরা ভুল করেছো ভুলের মাশুল তোমাদেরকেই দিতে হবে। 


বাহিরে কান্নার শব্দ তখন তীব্র আকার ধারণ করে নিয়েছে, নাহ নতুন বউকে এত কষ্ট দেওয়া যাবে না। ওর কি দোষ? দোষ সব আমার, এমন মা বাবা বোন পেয়েছি। যাই গিয়ে সত্যিটা বলে আসি।


কান্না থামাও আমি এই মেয়েকে বিয়ে করিনি, অভিনয় করার জন্য নিয়ে এসেছিলাম। নিজের মান সম্মান বাঁচাতে। 


বউ আমার চোখের পানি মুছতে মুছতে মুখে মুচকি হাসি ফুটে উঠালো। মা আমার হাত ধরে বলতে লাগলেন।


যা বাবা, যা হয়েছে হয়েছে ভুল করেছি আমরা মাফ করে দে।


সঙ্গে সঙ্গে ভাড়া করা বউ চিৎকার করে কাঁদতে লাগল এবং বলতে লাগল। ছি ছি কি বলছেন আপনি এসব? আপনার বিপদের সময় আমি আপনার পাশে থেকে আপনার হাত ধরে আপনার উপর বিশ্বাস করে আপনাকে বিয়ে করেছি, আর এখন বলছেন আপনি আমাকে বিয়ে করেননি? আপনার বউকে ফিরে পেয়ে মূহূর্তের মধ্যে আমাকে এভাবে ছুড়ে ফেলে দিলেন? হায় আল্লাহ এখন আমার কি হবে? আপনি এত বড় মিথ্যা কথা কিভাবে বলতে পারলেন?।


আমি ধমক দিয়ে বললাম, এই মেয়ে কি বলছো এসব? আমি কখন তোমাকে বিয়ে করেছি?।


বউ আমার আবার চিৎকার করে কান্না করতে লাগলো। সঙ্গে ভাড়া করে নিয়ে আসা মেয়েটা ও চিৎকার করে কাঁদতে লাগল। আমি হাতজোড় করে বলতে লাগলাম। দেখ বোইন এমনিতেই সকাল থেকে অনেক সহ্য করেছি এখন আর নিতে পারছি না, তোমাকে আরও চার হাজার টাকা বাড়িয়ে দিব, তোমার পায়ে ধরি তুমি অভিনয় বন্ধ করো।


মেয়েটা চোখের পানি মুছে হাসতে হাসতে বলতে লাগলো। পায়ে ধরতে হবে না, সবাই যখন মজা নিচ্ছে আমিও একটু মজা নিলাম। যাগ্গে ভালই মজা পেয়েছি পয়সা উসুল আমি এখন যাই। বাড়তি টাকা দিতে হবে না। 


মেয়েটা চলে যেতেই সবার মুখে তখন স্বাভাবিক বিরক্ত ভরা হাসি, সবকিছুই যেন একটু বাড়তি হয়ে গিয়েছে। আমি বিরক্ত হয়ে বলতে লাগলাম। এই বাড়িতে আমাদের মাঝে আর কখনোই এমন রসিকতা করা যাবে না, আজ থেকে সব বন্ধ। হঠাৎ করেই বাবা বুকে হাত দিয়ে কাঁপতে কাঁপতে সোফার উপর পড়ে গেল।


বাবা বাবা কি হয়েছে তোমার? 


মা কাঁদতে কাঁদতে বলল, তোর বাবা বোধহয় হার্ট অ্যাটাক করেছে জলদি আম্বুলান্স ফোন দে।


সঙ্গে সঙ্গে পকেটে হাত দিয়ে ফোন বের করলাম অ্যাম্বুলেন্স কল দিতে। আর বাবা বুক থেকে হাত সরিয়ে হাসতে হাসতে বলল, সবাই যখন মজা নিচ্ছে আমি কেন বাদ যাব? আজ তো শেষ দিন রসিকতা করার।


_ছোটগল্প

_রসিকতা

_রাকিব