তারা-তারি বিয়ে করার নিন্জা টেকনিক | বিয়ে করার নিয়ম

 বিয়ে নিয়ে ফানি স্ট্যাটাস

বিয়ে নিয়ে ফানি স্ট্যাটাস

তানিয়া আর ওর দুইবাচ্চা নিয়ে আব্বার সামনে হাজির হলাম।


আব্বাকে দেখেই আমরা দুইজন আব্বার পা ছুঁয়ে সালাম করলাম। আমাদের দেখাদেখি বাচ্চা দুইটাও আব্বার পা ছুঁয়ে সালাম করলো।


আব্বা আমাদের দেখে আকাশ থেকে পড়ার মতো অবস্থা হয়ে জিজ্ঞেস করলো ঘটনা কি?


আমি আমতাআমতা করে বললাম " আব্বা ও হচ্ছে তানিয়া। আজ থেকে ৮ বছর আগে ওর সাথে আমার প্রেম ছিল। কিন্তু ওর আব্বা ওকে জোর করে অন্য যায়গায় বিয়ে দিয়ে দেয়। এতদিন খুব সুখেই স্বামীর সংসার করছিল। এই দুইটা ওর ছেলে। কিন্তু হঠাৎ স্বামী অন্য একটা মেয়েকে চুরি করে বিয়ে করে। তাই সেই স্বামীকে তালাক দিয়ে বাপের বাড়ি চলে আসে। কাল আমি এক বন্ধুর মারফতে এসব জানতে পারি। তাই ওকে নিয়ে আসছি আপনার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া জন্য। আব্বা আমি ওকে বিয়ে করতে চাই। কিন্তু ও রাজি হচ্ছিল না। কারণ ওর দুইটা বাচ্চা আছে। আমি বলছি বাচ্চাসহ আমি ওকে মেনে নিতে চাই। তাই আপনার কাছে নিয়ে আসছি। আপনি হুকুম দিলে আজকেই ওকে আমি বিয়ে করতে চাই আব্বা"। 


আব্বা আমার কথা শুনে হাসলেন তারপর বললেন " মানুষের ছেলেদের এতদিন চুরি করে বউ নিয়ে আনতে দেখছি। আর আপনি দেখি তার থেকে একধাপ এগিয়ে। দুইটা বাচ্চাসহ নিয়ে আসছেন।


ইতিমধ্যে বাচ্চা দুইটা আব্বাকে দাদুভাই দাদুভাই বলে ডাকা শুরু করেছে। এসব দেখে আম্মা মুখে কাপড় দিয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে।


আমি কোনোরকমে বললাম " আব্বা, বাচ্চাদের নিয়ে কোনো কথা বলবেন না। আর আজকাল বাচ্চাকাচ্চা মানুষ করতে প্রচুর খরচ। আপনি একবার চিন্তা করে দেখেন। দুইটা বাচ্চা মানুষ করতে আমার কতো টাকা খরচ হবে? সেখানে আমি দুইটা বাচ্চা রেডিমেড পাচ্ছি। কোনো খরচ নাই আব্বা।


আব্বা ঠ্যাস করে একটা থাপ্পড় দিয়ে বললো " তোমার কোনোদিন আক্কেল হবে না? চিন্তা করে দেখছিলা একবার কি বলতেছ?


আব্বা আমার বয়স পঁয়ত্রিশ চলে। কতদিন ধরে আপনাকে বলছি আমার একটা বিয়ে দিতে। কিন্তু আপনি দেন নাই। একা একা আমার ঘুম আসেনা আব্বা। কেমন একা একা লাগে। আমার সব বন্ধুবান্ধব বিয়ে করে বাচ্চাকাচ্চার বাপ হয়ে দুধাপ এগিয়ে গেছে। সেখানে আমার বিয়েই হয়নাই। আমি তানিয়াকে বিয়ে করতে চাই। আর বাচ্চাদুইটাকে আমার খুব ভালো লাগছে। সন্তান হিসাবে মেনে নিতে আমার কোনো সমস্যা নাই। 


আব্বা আবার একটা থাপ্পড় দিয়ে বললেন " ওরে গাধার বাচ্চা গাধা। তাই বলে তোরে বাচ্চাসহ বিয়ে করতে হবে? দেশে কি আর কোনো পাত্রী নাই?"


আব্বা হুজুর আমিও ঠিক এতদিন এই কথাই বলছিলাম। দেশে এতো পাত্রী থাকতে আপনি আমার বিয়ে দেন না কেন। দাদাজান বিয়ে করছে ২১ বছর বয়সে। আপনি বিয়ে করছেন ২৪ বছর বয়সে। আর আমার বয়স ৩৫ চলে। আমি জানি আপনি আমার বিয়ে দিবেন না। তাই আমি তানিয়াকেই ওর বাচ্চাসহ বিয়ে করতে চাই।


আমার এসব কথা শুনে আব্বা হঠাৎ বুকে হাত দিয়ে শুয়ে গেলেন। আমি আর আম্মা ছুটে গেলাম আব্বার কাছে। বুঝলাম আব্বার হার্টের ফালুদা বানিয়ে দিয়েছি। আমি ৯৯৯ কল দিয়ে সাথেসাথেই এম্বুলেন্স ডাকলাম। 


আমি আর আম্মা এম্বুলেন্সে বসে আছি। আব্বাহুজুর বুক হাত দিয়ে শুয়ে। এম্বুলেন্সে উঠার আগে বাচ্চাসহ তানিয়াকে ওর বাবার বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি। আম্মা বসে বসে কাঁদছেন। 


হঠাৎ আব্বা উঠে বসে বললেন আমার কিছু হয়নাই। আমি ঠিক আছি। মেয়েটা কোথায় ?  


আব্বার কথা শুনে আমি আকাশে থেকে পড়ার মতো অবস্থা। মানে কি এসবের। তবুও আমতাআমতা করে বললাম "ওকে ওর বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি আব্বা"। 


আব্বা আমার কথা শুনে বললেন " এক মাসের মধ্যে তোমার বিয়ের ব্যবস্থা করতেছি। তবুও ঐ মেয়েকে বিয়ে করা যাবে না।


কিন্তু আব্বা আপনি এইভাবে অভিনয় করে আমাদের ভয় দেখালেন কেন? 

আব্বা বললেন " এছাড়া আমার কোনো উপায় ছিল না। তোমাকে আমি ওভাবে বিয়ে করতে দিবো না। তাই অভিনয় করেছি।


আজ আমার বিয়ে হয়েছে। আব্বা খুব সুন্দরী একটা মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়েছে। সব ববন্ধুদের থেকে আমার বউ সুন্দরী। 


বাসার রাতে ঢোকার আগে তানিয়া কে মেসেজ দিয়ে বললাম " বন্ধু তোর প্ল্যানিং কাজে দিয়েছি। তোর কথাই ঠিক। আব্বা এক মাসের মধ্যেই বিয়ে দিলো। তোকে খুব মিস করতেছি। এমন টাইমে তুই বিদেশ গেলি। দেশে এলে তোর বোনের ছেলে দুটোকে নিয়ে বাসায় আসিস। আব্বাকে চমকে দিবো"।