অনেক কষ্টের গল্প | ভালোবাসার কষ্ট গল্প

 বাস্তব জীবনের কষ্টের গল্প

বাস্তব জীবনের কষ্টের গল্প

হঠাৎ সে আমার সাথে দেখা করতে চাইলো। 

তার সাথে দেখা করতে গেলাম, আমাকে দেখেই সে আমায় জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দিলো।

জিজ্ঞেস করলাম কি হইছে তনু (তার নাম তানিয়া, আমার-ই ভালোবেসে দেওয়া নাম তনু)

-আদিল আমাকে বিয়ের জন্য বাসা থেকে খুব চাপ দিচ্ছে এখন আমি কি করবো। 

আমি মুচকি হেসে বললাম আমাদের কথা বলে দাও তোমার ফ্যামিলিতে, সে বলেছিলো। 

-ওরা মানবে তো আদিল।

আমি হেসে হেসে বলেছিলাম কেনো নয় অবশ্যই। 


এই কথা তার ফ্যামিলিতে বলার পর অনেক মার খেলো বকাঝকা তো আছে-ই, খেয়ে না খেয়ে কান্না কাটি করে অবশেষে তার ফ্যামিলির লোকজনদের রাজি করায় তনু, 

কিন্তু আদিল আর কাউকে রাজি করাতে পারে নি। 

বাবা মায়ের পা জরিয়েও কতো কান্না করেছিলো আদিল কিন্তু কারোর মন এক চুলও গলাতে পারলো না সে, কারণ একটাই মেয়ের বাবা নিম্নবিত্ত। 

বাধ্য হয়ে ৬ মাসের সম্পর্কের সেখানেই ইতি টানতে হলো, ভালোবাসা কি মাস দিন ক্ষণ দেখে হয়, উহু মোটেই না ওটা তো হয় ভেতরের অন্তস্তল থেকে, কাউকে একবার দেখাতেই ভালোবাসা যায় আবার কারোর সাথে বছরের পর বছর থেকেও ভালোবাসা যায় না, ফিলিংস জিনিসটা কি সবার প্রতি আসে? নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করলো আদিল। 

-না সবার প্রতি আসে না কিন্তু যার প্রতি আসে সে-ই হয়তো জীবনে থাকে না।


এখানেই সব শেষ হলে ভালো হতো, কিন্তু না এখানে শেষ নয়, 


খুব ছোট খাটো আয়োজনের মাধ্যমেই মেয়েরটার অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেলো। 

সেদিন ছেলেটার কি কান্না, সেদিনকের বুক ফাটা কান্না সিগারেটের ধোঁয়ার সাথে আকাশে উড়িয়ে দিতে চাইলো আদিল।

কিন্তু সব কষ্ট কি উড়িয়ে দেওয়া যায়, সেদিন চিৎকার করে কান্না করতে ইচ্ছে করছিলো কিন্তু কান্নাটা ভেতরেই চাপা দিয়ে দিলাম, কারণ আমি ছেলে, আমাদের কাঁদতে নেই।


ভালোবাসার মানুষ হারিয়ে পাগলপ্রায় আদিল, একা একা বক বক করে সারাদিন, নাওয়া খাওয়া তো সব ভুলেই গেছে, 


কেটে গেলো দু'দিন, 

স্বামী নিয়ে তনু এসেছে বাবার বাড়ি, যখন তনু চলে যাবে তখন খবর পেলো আদিল, ছুটে গেলো তনুদের বাসায় ততক্ষণে তনু গাড়িতে উঠে গেছে। 

দৌড়ে আদিলও সেই গাড়িতে উঠে বসে, দু'জন দু'জনকে এমনভাবে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে যেনো শত শত লাঠির আঘাতও তাদের আলাদা করতে পারবে না। 

নিয়তি কেনো এমন হলো, কেনো আমাদের দুজনের ভাগ্য এক সাথে লিখা হলো না। 


তনুর বাবা ও স্বামী মিলে দু'জনকে ছাড়িয়ে নিলো, তনুকে নিয়ে ওর স্বামী রওয়ানা হলো নিজের গৃহের উদ্দেশ্যে, এদিকে আদিলকে নিয়ে পুরো গ্রামে সালিশ বসলো। 

ছেলেটা পুরো গ্রামবাসীর চোখে খারাপ হয়ে গেলো।

কি পেলো জীবনে না তো ভালোবাসার মানুষ আর না তো এক মুঠো শান্তি, আদোও কি ভালোবাসার মানুষ ছাড়া সুখী হওয়া যায় , টাকা কি সত্যি সত্যি সুখ এনে দিতে পারে, তাহলে কেনো কোটি কোটি টাকার মালিকের জীবনেও শান্তি নেই? 

জীবনে সব থেকে বড় যেটা সেটা হলো মানসিক শান্তি যেটা টাকায় নয় ভালোবাসায় পাওয়া যায়।


কিন্তু তাও টাকার কাছে হেরে গেলো আমার ভালোবাসা, হ্যাঁ এমনটা অনেক গল্পে দেখা গেলেও আমার সাথে ঠিক এটাই হয়েছে।

খুব ভালোবাসতাম তাকে আর এখনো বাসি সেও আমায় খুব ভালোবাসে।

এক মুহুর্তের জন্যও ভুলতে পারিনি তাকে, হয়তো আর কখনো ভুলতেও পারবো না। 

আজ থেকে বহু বছর পরেও যদি আমায় জিজ্ঞেস করা হয় তাহলে তখনও আমি চিৎকার করে একটা কথা-ই বলবো, 

ভালোবাসি তনু আমি তোমায় বড্ড বেশি ভালোবাসি আর সারাজীবন তোমাকেই ভালোবাসবো।


মা বাবা বলে ওকে ভুলে যেতে, নতুন করে আবার সব কিছু শুরু করতে, আরে কিভাবে ওকে ভুলে যাবো আমি, তাকে নিয়ে যে আমার সব স্বপ্ন সাজানো হয়ে গেছে, চাইলেই কি কাউকে ভুলে সব কিছু নতুন করে শুরু করা যায়? 

হয়তো বা হ্যাঁ আবার হয়তো বা না, তবে আমি পারবো না।

তনু আমার র*ক্তে মিশে গেছে, ভালোবাসি তোমায় তনু খুব বেশি ভালোবাসি। 


পরিশেষে এটাই বলবো যে টাকা দিয়ে মানুষকে বিচার না করে সকল মা বাবার উচিত সন্তান যাকে তার জীবন সঙ্গী হিসেবে, তার সাথেই তাকে বিয়ে দেওয়া হোক, তাতে অন্তত দুটো জীবন সুন্দর ভাবে বাঁচতে শিখবে , এভাবে তীলে তীলে একটা মানুষকে ভেতর থেকে শেষ করে না দিয়ে তাদের সুন্দর জীবন উপহার দিন, ভালোবাসা হারানোর কষ্ট যদি সবাই বুঝতো তাহলে হয় তো পৃথিবীতে এতো বিচ্ছেদ হতো না।

সব শেষে ওই ভাইয়ের জন্য বুকভরা ভালোবাসা ও দোয়া রইলো, আরেকটা কথা ভাইয়া জীবন কারোর জন্য থেমে থাকে না, সময়ও তার নিজ গতিতে চলবে তাই আপনিও থমকে না থেকে পারেন বা না পারেন জীবনটা আবার সাজানোর চেষ্টা করেন।


-ভালোবাসি_তোমায়

-আরেব্বা_চৌধুরী