বউ শাশুড়ির সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত | শিক্ষামূলক গল্প

বউ শাশুড়ির ভালোবাসা


বউ শাশুড়ির ভালোবাসা

 বিয়ের বয়স সবে মাত্র তিন দিন। ঘরে বসে ফেসবুকিং করছি। আচমকা শ্বাশুড়ি মা ঘরে ঢুকে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, 


মনে করো আমি আর তুমি শপিংয়ে গেছি, এ সময় এক দোকানি তোমাকে বললো, আপা উনি আপনার কি লাগেন? ; 


তখন তুমি কি বলবা ? 


উনার প্রশ্নের ধরণ দেখে আমি পুরাই ভ্যাবাচ্যাগা খেয়ে খেলাম। এ রকম একটা সহজ প্রশ্নের কি উত্তর দিবো ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তারপর বড় একটা নি:শ্বাস নিয়ে বল্লাম, 


: যেটা উত্তর সেটাই বলবো।


: প্যাঁচ মাইরো না, যে উত্তর দিবা সেইটা বলো ?


আমি বুঝতে পারলাম এই ভদ্রমহিলা খুব সহজ মানুষ না। আমি আর এদিক-সেদিক না যেয়ে বললাম,


আমি বলবো, উনি আমার মা।


: তারপর কি হবে জানো ? দোকানি তোমার দিকে আর আমার দিকে ঠিক তিনবার করে তাঁকিয়ে মনে মনে বলবো, এই কাইল্যা বেডির মাইয়া এতো ফর্সা হয় কেমনে?


আমি কি বলি সেটা একটু মনোযোগ দিয়ে শুনো। তোমরা তো এখন আবার মোবাইল ছাড়া আর কিছুর প্রতি মনোযোগ দিতে পারো না।


আমি আলগোছে হাতের মোবাইলটা শাড়ির আঁচলের আড়ালে ঢুকিয়ে নিলাম।


এবার তিনি বলেন,


অনেক বাঙালি শ্বাশুড়ি-বউ প্রচলিত ও তথাকথিত সম্পর্ককে ভেঙ্গে দৃষ্টান্ত তৈরি করতে চেয়েছে। কিন্তু শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত পারেনি। পারার কথাও না। কেননা আমি তোমার মায়ের মতো কিন্তু মা নই। অনুরূপভাবে তুমি আমার কাছে মেয়ের মতো কিন্তু মেয়ে নও। আমরা বিন্দুমাত্র ন্যাকামি না করে কেবলমাত্র বউ-শ্বাশুড়ির সরল সূত্রে বিশ্বাস রেখে আমাদের সম্পর্ককে মধুর করতে চেষ্টা করতে পারি। বাকীটা সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা। কাজেই তুমি দোকানি বলবে, উনি আমার শ্বাশুড়ি মা কিংবা Mother in law.


বুঝতে পারছো আমি কি বলেছি?


: জ্বি মা।


: তুমি পড়াশুনা জানা মেয়ে, যতদিন আমার শক্তি-সামর্থ আছে ততদিন চাকরি করতে পারো। তবে, অফিস থেকে এসে কিন্তু বলতে পারবে না, ‘মা আমি খুব টায়ার্ড, খাবার রেডি করে আমাকে ডাক দিয়েন।’ তাহলে কিন্তু জামাই-বউ দুইজনরে বাসায় ঢুকতে দিমু না। কারণ বাসাডা এখনো আমার নামে।


এরপর সে আমার দিকে তাঁকিয়ে বলেন, হাসতাছ কেন? আমি কি তোমারে কোন হাসির কথা বলছি? 


: জ্বি না মা। 


: এবার লক্ষী মেয়ের মতো আঁচলের আড়াল থেকে ফোনটা বের করে দু’জনের একটা সেল্ফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দাও তো। আর নীচে লিখে দাও, ‘ with my sweet mother in law.’