স্বামী স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক | স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প

 স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা

❤️স্ত্রী : শুনছো?

স্বামী : হ্যা বলো

স্ত্রী : কি করছেন

স্বামী : সূর্যে পানি দিচ্ছি অনেক তাপ তো তাই

স্ত্রী : সব সময় তেরা কথা বলাটা কি খুব জরুরি,, একটু ভালো করে কথা বললে কি হই ।

আমি: অফিস টাইমে কল দিয়ে যদি জিজ্ঞেস করেন কি করছি তাহলে এর চাইতে ভালো উত্তর আর কি দিবো

স্ত্রী : তেরা একটা

স্বামী : হম

স্ত্রী : হাহা তার মানে আপনি একটা তেরা

আমি:.......

স্ত্রী : আচ্ছা শুনেন আসার টাইমে আমার আইস ক্রিম আনতে ভুলবেন না কিন্তু

আমি: 12 মাস ই আইস ক্রিম খেতে হই

স্ত্রী : হ্যা 

স্ত্রী: এখন আইস ক্রিম খাওয়া যাবে না

স্ত্রী: কেনো

স্বামী : কেনো মানে বেবির প্রবলেম হবে 

স্ত্রী : শুধু বেবির কথাই ভাবে বেবির আম্মুর কথা একটুও ভাবে না

আমি: যদি না ভাবতাম তাহলে বেবি টা আসতো কোথা থেকে

স্ত্রী : শয়তান

স্বামী : ওকে এখন ফোন রাখলাম 

স্ত্রী : আইস ক্রিম নিয়ে আসবেন কিন্তু

স্বামী : দেখা যাক

স্ত্রী : আইস ক্রিম না আনলে কিন্ত বাসায় ঢুকতে দিবো না

স্বামী : আমার বাসায় আমাকেই ঢুকতে দিবেন না

স্ত্রী : না দিবো না আর বাসা টাই আমারও অধিকার আছে আপনার একার বাসা না

স্বামী : ওকে ফোন রাখলাম

স্ত্রী : আইস ক্রিম আনতে ভুলবেন না কিন্তু

এই একটা প্রবলেম বসরে 12 মাস তার আইস ক্রিম খেতে হবে,, এমন কি যেই টাইমে মেয়েরা চাটনি খাই ওই টাইমে ও তার আইস ক্রিম চাই ,,যাই হোক অফিস শেষে বাসায় ফেরার পথে পাগলীটার কথা মনে পড়লো কিন্ত আইস ক্রিম তো দেওয়া যাবে না তার চাইতে ভালো চাটনি নিয়ে যাই যেই কথা সেই কাজ,, চাটনি কিনে বাসায় এসে কলিং বেল ও দিতে হলো না কারণ পাগলিটা আমার জন্যে দরজার সামনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করছে,, আমাকে দেখে ঠোঁটের এক কুনে হাসিটা একটু ধোর থেকেই বুঝতে পারছি কিন্ত যখনই দেখলো হাতে আইস ক্রিম এর বদলে চাটনি মায়াবী মুখ টা ক্ষণিকের ভিতরে কালো হয়ে গেলো ,,আর মন খারাপ করে রুমে চলে গেল ,,আমিও আর কিছু বললাম না সোজা ফ্রেশ হয়ে খেতে আসলাম এসে দেখি পাগলী টা নেই আম্মু খাবার বেড়ে দিচ্ছে এইটা দেখে আমারও মন টা খারাপ হয়ে গেলো,, কেননা বিয়ের প্রথম রাত থেকেই শর্ত ছিল আমাকে প্রতিদিন রাতে খাইয়ে দিতে হবে এত দিন শর্ত ঠিক ই ছিল,, আজ প্রথম এমন টা হলো ,,যাই হক পেটে খিদে থাকা সত্বেও আম্মু কে বললাম 

স্বামী : আম্মু আমি বাহিরে থেকে ক্ষেয়ে এসেছি 

আম্মু: অল্প কইটা খেয়ে নে বাবা

আমি: না আম্মু এমনিতেই পেট ভরা,, শুধু একটু পানি দেও

পানি খেয়ে রুমে চলে আসলাম ,,এসে দেখি উনি খাটের এক কুনায় বসে আছে আমি কিছু না বলে চুপ চাপ আমার সাইডে শুয়ে পরলাম 

স্ত্রী আমার কথা কেউ ভাবে না,, সবাই স্বার্থ পর,, বিয়ের আগে কত কি ,,রাজ রানী করে রাখবে,, কোনো অভিযোগ করার সুযোগ দেবে না,, কোনো ইচ্ছেই অপূর্ণ রাখবে না,, কোথায় এখন এই সব কথা ,,

আমি শুনেও না শুনার ভাব দরে আছি,, কে যাবে তার মতো পাগলের সাথে ঝগড়া করতে,,

স্ত্রী : কিপটা মানুষ দেখসি আমার বরের মত কিপটা দেখিনি

স্বমী: সব সময় তো কিনে দেই ,,এই টাইমে না খেলে কি এমন টা হবে শুনি,, মরে যাবে কি ?

স্ত্রী বেবি হাওয়ার টাইমে অনেকেই মারা যাই ,,আমিও যদি মারা যাই ,,খুব বেশি কিছু কি চাইছি,, আইস ক্রিম ই তো ।

আর রাগ সামলাতে না পেরে মানিব্যাগ টা এনে তার হাতে দরিয়ে দিয়ে

স্বামী: যত পারো আইস ক্রিম খাও কিচ্ছু বলবো না বেবির কিছু হোক পরে বুজাবো

স্ত্রী কাকে বুঝাবেন থাকলে তো দরে নেন মরেই গেলাম

আর না পেরে অবশেষে দিলাম গালে একটা বসিয়ে 

অনেক ক্ষন দরে শুনতেছি ,,এত মরার সখ কেনো হম ,,চুপ চাপ ঘুমাও আর একটা কথা বললে খবর আছে ,,

আর কিছু না বলে আমি শুয়ে পরলাম,, একটু ঘার গুড়িয়ে দেখলাম কি করে ,,সে তো কান্না করছেই তার কান্না কে থামাই আমিও আর কি করবো,, একটু পান থেকে চুন খসলেই মরে যাবো মরে যাবো শুরু করে ,,আমি আর কিছু না বলে ঘুমিয়ে পরলাম,, হটাত পাগলির কান্নার শব্দে ঘুম বেঙে গেলো,, কিন্ত এই কান্না টা একটু আলাদা তাকিয়ে দেখি সে মেঝেতে পরে আছে তারা তারি করে তার কাছে গিয়ে 

আমি: কি হইসে তুমার এই কথা বলো প্লিজ 

বউ: ..........

স্বামী : এই সরি আর এমন করবো না প্লিজ কথা বলো 

বউ: ......

অবশেষে রাস্তা না পেয়ে আম্মু কে ডাক দিলাম 

আম্মু আসে 

আম্মু: তাড়াতাড়ি হসপিটালে নিতে হবে গাড়ির বেবস্থা কর

আমি: হমম আম্মু 

হসপিটালে নেওয়ার পর ডক্টর অনেক দেখে শুনে আমাকে জিজ্ঞেস করছেন 

ডক্টর: আপনি তার কি হন

আমি: আমি তার হাসব্যান্ড

ডক্টর: ওহ আপনি একটু আসুন

আমি: হুম

ডক্টর: দেখেন আপনার স্ত্রীর অবস্থা খুবই খারাপ 2 জন থেকে যে কোনো 1 জন কে বাঁচাতে পারবেন হইতো মা নইতো বাচ্চা 

আমি: ডক্টর আমি 2 জন কেই চাই,, যত টাকা লাগে আমি দেবো

ডক্টর: দেখেন এই খানে টাকার কোনো প্রশ্ন নই ,,যদি 2 জন কেই বাঁচাতে যাই তাহলে 2 জনের প্রাণের ঝুঁকি আছে,,2 জন ই মারা যেতে পারে ,,তবোও আমরা চেষ্টা করব 2 জন কেই বাঁচাতে,,এখন বাকিটা আল্লাহ তাআলার হাতে,,

আমি: ডক্টর আমি কি একটু তার সাথে কথা বলতে পারি 

ডক্টর: সে এখন কথা বলার অবস্তাই নেই তবু শেষ বারের মতো ভেবে দেখে নেন ।

ডক্টরের কথা শুনে আমার মাথায় কিছুই কাজ করছে না। 

পাগলীটার সামনে যেতেই হাতের ইশারাই আমাকে ডাক দিলো ।

স্ত্রী : কান্না করছো কেনো

আমি: .....

স্ত্রী তুমি তো সব সময় বাবা হবে বাবা হবে বলতে ,,আজ তাহলে কান্না করছো কেনো ?

আমি: ডক্টর বলেছেন,, যে কোনো এক জন কেই বাঁচাতে পারবেন 

স্ত্রী তুমি বলো আমার বেবি টাকে বাঁচাতে ,,তুমার তো খুব ইচ্ছে বাবা ডাক শুনার,, 

আর আমি তো আপনাকে সব সময় জ্বালাই,, আর আমার জন্যে আইস ক্রিম আনতে হবে না,, আর কেউ কল করে বিরক্ত করবে না ,,কেউ আপনার সাথে ঝগড়া করবে না ।

আমি: ...

স্ত্রী একটা কথা দিবেন

আমি: হুম বলো

স্ত্রী আমার বেবি কে কখনো কষ্ট দিবেন না

স্বামী হুম

স্ত্রী আরেকটা কথা দিবেন 

স্বামী হুম বলো

স্ত্রী আমি মারা যাওয়ার পর আপনি আর বিয়ে করবেন না আমার বেবি টার তাহলে খুব কষ্ট হবে

স্বামী: পাগলী তুমার কিচ্ছু হবে না দেখবে আমরা আবার বাসায় ফিরে যাবো ।

আর কিছু বলতে পারলাম না ,,কান্না করতে করতে চলে আসলাম,

ডক্টর আবার ডেকে পাঠালেন ,,

ডক্টর:তাহলে অপারেশন শুরু করি

স্বামী আমি আমার স্ত্রী কে চাই ডক্টর

ডক্টর: আল্লাহ কে ডাকুন ওনার হাতেই সব আমরা 2 কেই বাঁচাতে চেষ্টা করবো

স্বামী হুম

ডক্টর: ওকে আমরা তাহলে এক্ষনি অপরেশন শুরু করছি

আমি আর হসপিটালে থাকতে পারলাম না চলে গেলাম মসজিদে আল্লাহ তাআলার কাছে চাইতে থাকলাম 2 জন কেই ।।

ঘন্টা 2 1 পর ফোন টা বেজে উটলো আমিও চমকে গেলাম না জানি কিনা কি খবর আসলো 

আম্মু: কুথাই তুই ?

আমি: এইতো আম্মু মসজিদে 

আম্মু: হসপিটালে আই

আমি: কি হইসে আম্মু ?

আম্মু: আই তুই

আমি: আচ্ছা আম্মু আসতেসি 

ফোন রেখে চললাম হসপিটালের দিকে

যত এগোচ্ছি ততো ভয় বাড়ছে অবশেষে হসপিটালে আসলাম ,,আসে দেখি আম্মুর কোলে বেবি,, তাহলে কি আমার পাগলী নেই

এইটা ভেবে আর দাড়িয়ে থাকতে পারলাম না স্তব্ধ হয়ে বসে পরলাম,, ভাবতে পারছি না আর,,

আম্মু: বাবা ছেলে হয়েছে কুলে নে দেখ ঠিক তুর মত হয়েছে

আমি: ........

আম্মু: কিরে বাবা

আমি: আম্মু তার কি অবস্থা 

আম্মু:সেও ঠিক আছে বাবা

নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারলাম না

আম্মু: আল্লাহর রহমতে মা বাচ্চা 2 জনেই ঠিক আছে 

চোখের পানি আর দরে রাখতে পারলাম না ,,বাচ্চা টা কুলে নিয়ে পাগলীটার সামনে গেলাম ,,পাগলী টা আমাকে দেখে অভিমান করে বললো সরি আবারো আপনার লাইফে চলে আসলাম মরতে পারলাম না আমি আর কিছু না বলে জড়িয়ে দরে কান্না শুরু করলাম 

স্ত্রী এইটা কি কান্না করার সময় 

স্ত্রী আম্মু দেখছে তো

আমি: হম 

স্বামী আজ তুমি জা চাইবে মন খুলে চাও আজ যা চাইবে তাই তাই দেবো

স্ত্রী : প্রমিজ 

স্বমী: প্রমিজ

স্ত্রী আইসক্রিম

বড়ো বড়ো চোখ করে তাকালাম 

স্ত্রী জানতাম দিবেন না মিথ্যুক

স্বমী:ওকে বাসায় যাই পরে দিবো!


অন্যরকম গল্প পড়ুন।