বাসর রাতের গল্প | বাসর রাতের কাহিনী

বাসর রাতে আদর

বাসর রাতে আদর

 -গল্পঃ_পিরিয়ড_নিয়ে_বাসর_ঘরে -পর্ব_০১ থেকে ৪ পর সমাপ্ত

সম্পূর্ণ পর্ব দেওয়া রয়েছে।

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল। 

পর্ব_০১

পিরিয়ড নিয়ে বাসর ঘরে বসে আছি আমি। খুব অস্বস্তি লাগছে আমার। কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।

অচেনা একটা ছেলেকে কথাটা বলবো কিভাবে। সেই লোকটা কি না ভাববে। অথবা আমার ইচ্ছার কতটুকু মুল্যায়ন করবে।যদি এই অবস্থায় পুরুষত্ব ফলাতে চায়।


উফ কিছুই ভাবতে পারছি না।।যত সময় গড়িয়ে যাচ্ছে ততই আমার টেনশনের তাপমাত্রা বাড়তেছে।। কি এক অপ্রত্যাশিত ঝামেলায় পড়লাম।


বিয়েটা আমার পারিবারিক ভাবে হয়েছে। মধ্যবিত্ত এবং ছোট একটা পরিবারের সদস্য ছিলাম আমি। বাবা ও মায়ের আদরের একমাত্র মেয়ে। ছোট বেলা থেকে খুব পরিপাটি পরিবেশে বড় হয়েছি। এতো আদরের মাঝেও কেনো জানিনা অর্নাস ১ম বর্ষ আসতেই, বাবা মায়ের কাছে ভারি হয়ে গেলাম। বসতে হলো বিয়ের পিড়িতে।


কলেজে থাকা কালিন প্রেমে জড়িয়ে ছিলাম একবার।। ছেলেটির ভালোবাসার মাঝে চাহিদার ব্যাপক আগ্রহটা আমাকে একে বারেই নিরাশ করে তুলেছে। তাই এই বিষয় নিয়ে আর ভাবা হয়ে উঠেনি।অবশ্য আমার বন্ধু বান্ধবীদের অনেক ভালো খারাপ প্রেমলীলা খুব কাছে থেকেই দেখেছি আমি।


যাইহোক যেই ছেলেটির জন্য অধীর আগ্রহে ফরমালিটি রক্ষার জন্য সেজেগুজে বসে আছি, তাকে বিয়ের আগে দেখা বা কথা বলার সৌভাগ্য হয়ে উঠেনি আমার। আম্মু জোর করায় শুধু একবার মনের বিপরীতে ফটো দেখেছিলাম। খুব রাগ হয়েছে বাবা মায়ের উপর।

কারন আমি এখনো বিয়ে টা কোনো ভাবে মেনে নিতে পারছি না। এক প্রকার জোরের মুখে বাধ্য হয়ে বিয়ে টা করতে হয়েছে আমাকে। 


এখন পর্যন্ত ছেলের বাড়ির পরিচিত বলতে শুধু ছেলের মা। কারন বিয়ের আগে অনেক বার দেখতে হয়েছে। সেই সুবাদে একটু পরিচিত। আর আমার বরের নাম টা জানি। খুব সুন্দর না হলেও আমার পছন্দসই নাম ওর। মিঃ নেয়ামত। আর আমি হলাম নেহা। এই মিঃ নেয়মত সালা কথা নেই বার্তা নেই সেজেগুজে বিয়ে করতে 

চলে গেলো আমাকে।। খুব রাগ হচ্ছে ওর উপর। কিন্তু এই অবস্থায় আমার কোনো বুদ্ধি কাজ করছে না।


যাইহোক এবার একটু শান্ত ভাবে বসে থাকি। দেখি মিঃ নেয়ামত এর কখন ঘরে আসার সময় হয়। হটাৎ করে দরজায় খট করে শব্দ হলো। আমার ভিতরটা চমকে উঠলো। মিঃ নেয়ামত সাহেব চলে এসেছেন মনে হয়।

একটু নড়েচড়ে ঠিক হয়ে বসলাম। যেনো বলি হওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। 


দরজায় শব্দের বেশ কিছু সময় পার হয়ে গেলো। অথচ কেউ ঘরে আসলো না। 


ব্যাপার কি.? তাহলে শব্দটা কিসের হলো?? তাহলে মিঃ নেয়ামত এখনো আসেনি। উফ অসহ্য লাগছে আমার। খুব রাগও হচ্ছে সালার হ্যাংলার উপর। ছবিতে দেখে যতটুকু বুঝতে পারছি হ্যাংলা। লম্বা,ফর্সা আর বড় চুলে আবৃত। গালে ঠোঁটের পাশে ছোট একটা তিলক। যা পুরো মুখটাকে সুন্দর করে তুলেছে। যার মায়াবী চোখে অগাধ খাদ, যা নিবিড় মায়াময়।


এমন দেখতে ছেলে হলেও আমার কিছু যায় আসে না। কিন্তু পরক্ষণেই চুপসে গেলাম। ইশশ বাসর ঘর বলে কথা। কি যে ভাবতেছি, না জানি ভাবনা গুলো আমার উপরই প্রতিফালিত হয়।।


আবারও হটাৎ করে ভয় টা বাড়তে লাগলো। এরই মধ্যে আমার ঘুমের ভাবটা চলে আসলো। প্রায় ঘুমো ঘুমোই হয়ে আসছিলাম। হটাৎ স্বজরেই দরজা টা খুলে গেলো। আমি আতঙ্কে জেগে উঠলাম।।


দেখলাম মিঃ নেয়ামত তাড়াহুড়া করে দরজাটা লাগিয়ে দিলো। ওকে দেখে মনে হলো যুদ্ধ জয় করে ফিরলো। এদিকে ওকে দেখে কাক ভেজা মনে হচ্ছে।। আর হাতে একটা কিছু দেখা যাচ্ছে।


তার মানে বাহিরে বৃষ্টি হইতেছে।। আর মহা সাহেব কিছু আনতে গিয়ে কাকভেজা হয়ে এসেছে। ওদিকে ওকে এমন দেখে আমাকে সত্যি সত্যি আতঙ্কে ফেলে দিলো। আমি চুপচাপ হয়ে বসে পড়লাম। 


ও আমার দিকে এগিয়ে আসতেছে।। আমার হৃদকম্পন দ্বিগুন হতে লাগলো। কাছে এসে হাতের জিনিস গুলো ডেস্কে রেখে দিলো।খুব শান্ত ভাবে আমার সমনা সামনি বসলো। আমার অস্বস্তিটা আরো বেড়ে গেলো। কাছে এসে কিছু না বলে হাত দুটো খুব আলতো করে ধরলো।


উনার কান্ড দেখে আমার মনের ভাবনা গুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে লাগলো। আমি কিছু না ভেবেই হাতটা খুব আস্তে করে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলাম। আর তাতে সে হাতটা আরো শক্ত করে চেপে ধরলো।


এই বার আমার খুব বিরক্ত লাগছিলো। আর হাতটাও ছাড়িয়ে নিতে ইচ্ছে করেছিলো। কিন্তু কিছুই করতে পারছিলাম না আমি। হটাৎ আমার চিন্তায় ছেদ করে মিঃ নেয়ামত বলে উঠলো..........👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ> আমি জানি তোমার খারাপ লাগতেছে। কিন্তু কি বলো তো সেই ছোট বেলা থেকেই এই রাত টা নিয়ে কত চিন্তা করে আসছি৷ আর আজকে কোনো কথা খুঁজে পাচ্ছি না??


খুব শান্ত আর মায়াবী চাহনি নিয়ে কথা গুলো বললো।। কেনো জানিনা এবার আমার মনটা কেমন হালকা হয়ে গেলো। কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার সে আমাকে বলতে লাগলো...........👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>একটা কথা বলবো রাখবে? 


আমি হ্যা সূচক মাথা নাড়ালাম। তারপর সে আমাকে বললো.......👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>তোমাকে সারাজীবন খুশি রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবো, তুমি সারাজীবন আমার পাশে থাকবে তো??


আমি একটু অবাক হয়ে গেলাম। তার কথায় কি বলবো ভেবে পাচ্ছি না। তবুও মাথা নাড়ালাম হ্যা থাকবো।


তারপর কেনো জানিনা মিঃ নেয়ামত আমার হাত ছেড়ে দিয়ে উঠে দাড়ালো। এরপর কিছু উপহার আমার হাতে তুলে দিলো। আমি স্বাভাবিক ভাবে সেগুলো নিলাম। এবং একপাশে রেখে দিলাম।। 


সত্যি কথা বলতে এখন পর্যন্ত উনাকে ছিনতে পারছি না আমি। কেমন ছেলে উনি। হয়তো আমার ভাবনা ঠিক, আবার হয়তো না। আর এতক্ষণ আমি একটা কথাও ওর সাথে বলেনি। চুপচাপ ওর দেওয়া গিফট এর দিকে তাকিয়ে আছি।। হটাৎ করে মিঃ নেয়ামত আমার সামনে একটা ন্যাপকিনের প্যাক দিয়ে বললো....👇👇

মিঃ নেয়ামতঃ>যাও ফ্রেশ হয়ে আসো?? 

 

আমি থথথথথ হয়ে গেলাম।।বিস্ময়ে আমার চোখ দুটো ছানাবড়া হয়ে গেলো। আমি ওর দিকে অবাক চাহনিতে তাকিয়ে রইলাম।। আবারো সে প্যাকটা একটু নেড়ে আমার দিকে এগিয়ে দিলো। 


আমার প্রশ্ন গুলো অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে লাগলো?? নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।। সত্যিই বিস্ময়ে হতবাক হয়ে ভাবিছে যে, মিঃ নেয়ামত কি ভাবে জানলো আমার পিরিয়ড সম্পর্কে। আর তাকে কেনোই বা এতটা শান্ত দেখাচ্ছে। তাহলে কি আমার ভাবনা গুলো আসলেই মিথ্যা। তাহলে কি আমি ভুল ভাবছিলাম। তাহলে কি ও অন্য আট দশটা ছেলের মতো না। 


আমার তো মনে হচ্ছে অন্য মন মানসিকতার ছেলেদের মতো না। নাকি শুধু মাত্র ক্ষনিকের ভালো মানুষি দেখানো হচ্ছে।। কিছুই ভাবতে পারছিলাম না।। অনেক প্রশ্ন আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। 


যাইহোক একটু লজ্জা লাগলেও নতুন এক জনের কাছ থেকে ন্যাপিকের প্যাক টা নিলাম। প্যাক টা হাতে নিয়ে যেই মাথা তুলেছি। তখনই দেখি হ্যাংলা টা আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। ভীষণ লজ্জা ফেলাম আমি।


কি বজ্জাত ছেলে।। লজ্জা সরমের মাথা খেয়েছে। মনে হয় জীবনে মেয়ে দেখেনি। আমি বাথরুমে যাওয়ার জন্য একটু নড়ে উঠলাম। তখনই মিঃ নেয়ামত সজাগ হয়ে আমার রাস্তা ছেড়ে দিলো। যেনো এতক্ষণ ঘোরের ভিতর ছিলো।


আর কিছু না ভেবে আমি ওয়াশ রুমে চলে গেলাম।প্রায় ১৫ মিনিট পর আমি ফ্রেশ হয়ে রুমে যাওয়ার জন্য দরজা খুললাম। সাথে সাথে কেউ একজন আমার চোখ দুটি ধরে আমাকে আড়াল করে নিলো। 

ভয়ে আমি চিৎকার দিয়ে উঠলাম। তখনই আরেক হাত দিয়ে আমার মুখটা চেপে ধরে বলে উঠলো........👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>এই আমি, চুপ করো প্লিজ চুপ?? 


ইশশশ বদমাইশ ছেলেটা করছে টা কি? আমাকে মেরে ফেলবে নাকি। ওর কথায় আমি চুপ হয়ে গেলাম।

এরপর ও আমাকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বললো,

আমি এগিয়ে যাচ্ছিলাম।। হটাৎ করে হ্যাংলাটা আমার কানের কাছে মুখ এনে বলে উঠলো...........👇👇


-গল্পঃ_পিরিয়ড_নিয়ে_বাসর_ঘরে -পর্ব_০২

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল। 


ইশশশ বদমাইশ ছেলেটা করছে টা কি? আমাকে মেরে ফেলবে নাকি। ওর কথায় আমি চুপ হয়ে গেলাম।

এরপর ও আমাকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বললো,

আমি এগিয়ে যাচ্ছিলাম।। হটাৎ করে হ্যাংলাটা আমার কানের কাছে মুখ এনে বলে উঠলো...........👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>যাক তুমি তাহলে বোবা না। চিৎকার অন্তত দিতে পারো? 


আমি তখন বললাম.......👇👇


আমিঃ কিহ? কি বললেন আপনি। আমি বোবা? এই আমাকে আপনার বোবা মনে হয়। আমার চোখ 

ছাড়ুন বলছি??


তখন মিঃ নেয়ামত আমাকে বললো.........👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>এই সরি সরি আমি বুঝে গেছি। বুঝে গেছি। আর একটু চলো না প্লিজ তারপর তোমার

চোখ ছেড়ে দিবো??


আমি বললাম.......👇👇


আমিঃ>কি বুঝেছেন আপনি হ্যা?? 


মিঃ নেয়ামত বললো....... 👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>না মানে, তুমি ঠিকই তো আছো। এই যে কথা বলতে পারো। আসলে সরি টা গ্রহণ করে চলো না আর একটু?? 


ইশ কি সুন্দর করে কথা বলে হ্যাংলা টা। আসলে রাগে খুব বিরক্ত হয়ে গেছিলাম আমি। তাই একটু রাগ ঝাড়লাম আরকি। তাছাড়া বাসর রাত তো দূরের কথা অন্য কোনো রাতেও এমন করতাম না।


আসলে হ্যাংলাটা কি চাইছে,কি করতেছে কিছুই বুঝতে পারছি না। আজ সারারাত কি এভাবে জ্বালাতন করবে নাকি। ধুরর ভাল্লাগে না। এবার মিঃ নেয়ামত সাহেব আমাকে নিয়ে থেমে গেলেন। তারপর আস্তে করে চোখ ছেড়ে দিয়ে বললেন.........👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>এবার চোখ খুলো? 


এইবার আমি চোখ দুটি খুললাম। চোখ দুটো খুলে আমি নিস্তব্ধ হয়ে গেলাম। কি ভাবে সম্ভব। আমি বিস্ময়ে অস্থির হয়ে গেলাম। তাহলে কি এটাই মিঃ নেয়ামত। এই রকমই নেয়ামত। 


এত বড় সারপ্রাইজ করবে বলে এই রকম করেছে। নাহ তার সম্পর্কে আমার ধারনা ঠিক নয়। নামের সাথে কাজের যথেষ্ট মিল দেখতে পাচ্ছি। তবুও দেখি না পরে কি হয়। হয়তো ক্ষনির ভালো থাকার চেষ্টা, হয়তো না। 

এক অদৃশ্য ভালো লাগা কাজ করতেছে আমার, মিঃ নেয়ামত এর উপর। আমি তার দিকে ফিরে তাকালাম।আর বললাম..........👇👇


আমিঃ>আপনি এত সব জানেন কি ভাবে। আর এত তাড়াতাড়ি কি ভাবে করলেন এতকিছু?


কথাটা বলতে গিয়ে অনন্দে পানি চলে আসলো আমার চোখে। নেয়ামত আমার কথার উত্তর না দিয়ে আমাকে আলতো করে ধরে বললো...........👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>চলো কেক টা কাটা যাক?? 


আসলে আজ আমার জন্মদিন।। এতো ঝামেলার মাঝে দিনটির কথা আমার মনেই ছিলো না। নেয়ামত পনেরো মিনিটের মধ্যেই এক অমায়িক ভালোবাসা দিয়ে ঘরটা সাজিয়েছে। আর ওয়াল ব্যানারে ছোট করে লেখা...👇


💖তোমার মন খারাপের দেশে রাখবো ভালোবেসে💖

 ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

        ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

              ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

আর বড় করে লেখা...👉👉❤❤হ্যাপি ব্যার্থডে টু ইউ নেহা উইশ অনলি ফর ইউ বাই মি ❤❤


মনে হয় জন্মদিনে এর চাইতে বড় গিফট কেউ কাউকে দিতে পারে না। নিমিষেই আমার মনটা আনন্দে ভরে উঠলো।তারপর শুধু মাত্র আমি আর নেয়ামত কেক টা কাটলাম। ও হালকা ভাবে আমাকে মুখে উইশ করলো। তারপর আমাকে কেক টা খাওয়াই দিতে লাগলো। 


আমার চোখ দুটি হটাৎ করে ছলছল করতে লাগলো। এই বুঝি বৃষ্টি নামবে। আমি কোনো মতে নিজেকে সামলে নিয়ে ওকেও কেক টা খাওয়াই দিলাম। 


ওর চোখে মুখে একটা প্রাপ্তির নেশা। নেয়ামত আমাকে জড়িয়ে ধরলো,কিছুই বললো না। জানিনা কেনো 

আমি তাকে কিছুই বলতে পারলাম না। শুধু নিজের মনকে আষ্টপিষ্টে বাঁধতে চেয়েছিলাম আমি। কিন্তু কেনো। এর উত্তর হয়তো কারো পক্ষেই দেওয়া সম্ভব নয়।। আমি নেয়ামত এর বুক থেকে মুখটা উঠিয়ে ওর দিকে চেয়ে বললাম...........👇👇


আমিঃ>আপনি এতকিছু জানলেন কিভাবে। আমার জন্মদিন, আমার ভালো লাগা আর অন্যান্য বিষয় গুলো??


এবার কোনো কথা না বলেই নেয়ামত আমার কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিলো৷ আমি কিছুটা শিওরে উঠলাম। তারপর সে আমাকে বললো..........👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>খুব ঘুম পাচ্ছিলো তোমার তাইনা। দেখেছিলাম তখন ঘুমে একদম নুইয়ে পড়ছিলে৷ 

চলো ঘুমাবো এখন৷ আমারও খুব ঘুম পাচ্ছে??


এ কথা বলে নেয়ামত বিছানা ঠিক করতে গেলো। একি হ্যাংলাটা পাঁচ মিনিটের মধ্যে ঘুমিয়ে গেলো। আমি খুব ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করলাম। সে তো ঘুমিয়ে গেছে। ধুরর ভাল্লাগে না। ফাজিল ছেলে একটা। এর মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়লো।


রাগে নিজের মাথার চুল গুলো ছিড়তে ইচ্ছে করতেছে। কিন্তু কি আর করার..আমার এখন ঘুমাতে হবে। তবে সকল কিছুর মাঝে একটা বিষয় ভেবে ভালো 

লাগছে যে, বিয়ে নিয়ে আমার ভাবনা সকল বিষয় গুলো আস্তে আস্তে মিথ্যা প্রমানিত হচ্ছে। আমার ভাবনার উল্টো দিক গুলো ঘটতে চলেছে। চোখ বুঝে কেনো জানিনা মা-বাবাকে ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছে করছে।


এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম বুঝতে পারিনি। হটাৎ করে আমার ঘুম টা ভেঙে গেলো। ঘুম ভেঙে বিস্ময়ের সম্মুখীন হলাম।। দেখি অবাক চাহনি নিয়ে নেয়ামত আমার দিকে তাকিয়ে আছে।


চোখে চোখ পড়তেই নেয়ামত চোখ সরিয়ে নিলো। তার মানে নেয়ামত এতক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো৷ ভীষণ অবাক হলাম আমি। আমার জেগে উঠা দেখে নেয়ামত অপ্রস্ততে পড়ে যায়। আমার চোখে কিছুতেই ধরা দিতে চায় না। তারপর আমাকে বললো......👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>নেহা চলো ছাদে যাই?? 


ওর প্রশ্নে অবাক হলাম। এতো রাতে ছাদে যেতে চাইছে। বুঝতে পারলাম খুব রোমান্টিকতা ভর করেছে তার উপর। কথাটি শুনে আমি কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। শুধু তাকিয়ে ছিলাম তার দিকে। হটাৎ সে আমাকে চমকে দিয়ে কোলে তুলে নিলো।৷ তারপর হাঁটতে শুরু করলো ছাদের দিকে।


আমি অবাক হয়ে নেয়ামত এর চোখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। আর তাকে জানার চেষ্টা করলাম। আমি কেনো। যে কোনো মেয়ে তার সেই মায়াবি চোখে হারিয়ে যাবে এক নিমিষে। এতে বিন্দু মাত্র সন্দেহ নেই। 


এখন পর্যন্ত প্রতিটা মহুর্ত তোমার সাথে কাটাতে আমার নতুন করে ভাবতে হয়েছে। কি আছে তোমার মাঝে। আমার এমনটা মনে হয়..মনে হয় যে তার সাথে আমার যুগ থেকে যুগন্তরের পরিচিত।


যদিও সে ছিল আমার কাছে অনেকটা অপরিচিত!মাত্র কয়েক ঘন্টা আগেও। কথা গুলো ভাবতে ভাবতে ছাদে চলে এলাম। ছাদে এসে ও আমাকে কোল থেকে নামিয়ে দিলো। এরপর কিছু বলার জন্য আমার কাছাকাছি আসলো। আর আমাকে বললো......👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>নেহা একটা কথা বলবো?? 


আমিঃ>জ্বি বলেন?? 👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>তুমি ডাল, আমি ভাত। তোমার সাথে গল্প করবো আজ সারারাত?? 


আমিঃ>সারারাত এত কি গল্প করবেন শুনি??


নেয়ামত আমাকে কিছু একটা বলতে যাবে।।কিন্তু হটাৎ করে তার মোবাইল বেজে উঠলো। তারপর ফোনের ওপাশ থেকে কেউ একজন তাকে কিছু একটা বললো। নিমিষেই তার হাসিখুশি চেহারার মাঝে এক অস্ফুট মলিন আভা ফুঁটে উঠলো। যেটা কিছুতেই আমার 

চোখে আড়াল করতে পারলো না সে। তাকে একটু চিন্তিত দেখাচ্ছিলো। তাই আমি বললাম..........👇👇


আমিঃ>কিছু হয়েছে কি? সব ঠিক আছে তো? 


আমার কথায় এক অমায়িক হাসি দিয়ে বললো...👇


মিঃ নেয়ামতঃ>আরে নাহহ। কি ভাবছো তুমি, কিছুই হয়নি। সবকিছু ঠিক আছে?? 


আমি তাকে বললাম........👇👇


আমিঃ>না মানে এত রাতে ফোন আসলো। তাই বলেছিলাম আর কি?? 


আমার কথা শুনে উনি শব্দ করে হেসে উঠলো। তারপর ওর দুই হাত দিয়ে আমার গালে ধরে শান্ত লাজুক গলায় বললো...........👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>বাহহ ১ম রাতেই বরকে সন্দেহ করছো।

তোমার বর শুধুই তোমার, আর কারো না?? 


এ কথাটা বলে আবারো আমার কপালে আলতো করে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিলো। শেষ রাতের স্নিগ্ধ চাঁদের আলো,,একটু দখিনা বাতাসের ছোঁয়া এবং নেয়ামত এর ভালোবাসার স্পর্শ আমাকে মাতাল করে তুলেছিলো।


এক মহুর্তে মনে হয়েছিলো নেয়ামতকেও জড়িয়ে নেই আমার পরম স্নায়ুস্রোতে। নেয়ামত আবারো আমাকে বললো........👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>চলো ওদিক টাতে একটু হাঁটা যাক?? 


নেয়ামতের কথায় আমার ঘোর কাটলো। মাথা নাড়িয়ে সায় দিয়ে ওর সাথে আমিও হাঁটতে শুরু করলাম। ছাদের উপর সাজানো ফুল বাগান দেখে আমার শেষ রাতের ভালোবাসা যেনো আরেক বার পুর্নতা ফেলো।


আমি বিস্ময়ে ওর দিকে ফিরে তাকালাম।। চাঁদের স্নিগ্ধ আলোয় আমি স্পষ্ট দেখলাম,নেয়ামত চোখ নেড়ে এক অজানা অনুভূতি প্রকাশ করলো......👇👇


যাতে স্পষ্ট নেয়ামত এর মনের কথা পড়তে পারছিলাম আমি। চোখ দুটি একটা কথাই বলেছিলো....হ্যা নেহা আজ থেকে এই ফুল-ফুলের সুভাস সবই তোমার।। প্লিজ যত্ন করে আগলে রেখো এই ভালোবাসার প্রতীকী গুলো কে।। তবে এর মাঝে একটা কথা শুধু তোমারই জন্য। এই প্রতীকী ভালোবাসার মাঝে সবচেয়ে সুন্দর্যময় প্রতীক কিন্তু আমার এই লক্ষী বউয়ের লক্ষী চাহনি। নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারলাম না। নিজের মনের সাথে কিছুতেই আপোষ করতে পারলাম না। পারিনি প্রকৃতির এই বাস্তব মায়াকে কাটিয়ে উঠতে। দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম....হ্যাংলা,, বাদর ছেলে মিঃ নেয়ামতকে।। এই মহুর্তে মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে দামী সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা এটাই যা অষ্টপিষ্টে বেঁধে রেখেছে আমাকে।


নিজের অজান্তে চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ছিলো।।তবে অদ্ভুত ছেলে মিঃ নেয়ামত এটাও বুঝে ফেললো। বলে উঠলো.........👇👇


-গল্পঃ_পিরিয়ড়_নিয়ে_বাসর_ঘরে -পর্ব_০৩

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল। 


আমি বিস্ময়ে ওর দিকে ফিরে তাকালাম।। চাঁদের স্নিগ্ধ আলোয় আমি স্পষ্ট দেখলাম,নেয়ামত চোখ নেড়ে এক অজানা অনুভূতি প্রকাশ করলো......👇👇


যাতে স্পষ্ট নেয়ামত এর মনের কথা পড়তে পারছিলাম আমি। চোখ দুটি একটা কথাই বলেছিলো....হ্যা নেহা আজ থেকে এই ফুল-ফুলের সুভাস সবই তোমার।। প্লিজ যত্ন করে আগলে রেখো এই ভালোবাসার প্রতীকী গুলো কে।। তবে এর মাঝে একটা কথা শুধু তোমারই জন্য। এই প্রতীকী ভালোবাসার মাঝে সবচেয়ে সুন্দর্যময় প্রতীক কিন্তু আমার এই লক্ষী বউয়ের লক্ষী চাহনি। নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারলাম না। নিজের মনের সাথে কিছুতেই আপোষ করতে পারলাম না। পারিনি প্রকৃতির এই বাস্তব মায়াকে কাটিয়ে উঠতে। দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম....হ্যাংলা,, বাদর ছেলে মিঃ নেয়ামতকে।। এই মহুর্তে মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে দামী সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা এটাই যা অষ্টপিষ্টে বেঁধে রেখেছে আমাকে।


নিজের অজান্তে চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ছিলো।।তবে অদ্ভুত ছেলে মিঃ নেয়ামত এটাও বুঝে ফেললো। বলে উঠলো.........👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>ঝরতে দাও চোখের পানি। তাকে আটকিও না৷ তাহলে আমাদের ভালোবাসার 

মাঝে ঘাটতি থেকে যাবে?? 


কথাটা বলে আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। জানিনা কতক্ষণ দুইজনে এভাবে ছিলাম। শুধু মনে হচ্ছে যে সময়টা ছিলাম, সেই সময়টা যেনো অতি দ্রুত শেষ হয়ে গেলো।


মনের অজান্তেই বাবা মায়ের সিদ্ধান্তকে আরো একবার স্যালুট দিতে ইচ্ছে করছে। হয়তো তাদের জন্যই মাত্র কয়েক ঘন্টার পরিচয়ের অচেনা এক জনের বুকে মাথা রেখে সর্বশ্রেষ্ট জায়গা মনে হচ্ছে।


তাদের জন্যই আমার ভালোবাসার শুন্যের কোটা আজ পুর্ণ মনে হচ্ছে। ভাবতেই রাতের এক মুঠো চাঁদ কে 

গ্রাস করে নিলো টুকরো মেঘ মালা। অন্ধকার গাড়ো হয়ে আসছিলো।।। তাই মিঃ নেয়ামত আমাকে দেখিয়ে বলে উঠলো......👇👇 


মিঃ নেয়ামতঃ>চাঁদ আমাদের সাথে লুকোচুরি খেলছে। চলো রুমে চলে যাই?? 


কথাটা বলেই আবারও আমাকে কোলে নিয়ে রুমে চলে আসলো। আমাকে ঘুমাতে বলে সে বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ালো। মিঃ নেয়ামত! সত্যিই নেয়ামত। প্রতিটা মুহুর্ত তাকে নতুন করে চিনেছি,নতুন করে দেখেছি,নতুন করে ভাবনাতে আটকে রেখে দিয়েছি। 


আমি জানি ও কিছু একটা নিয়ে চিন্তায় করছে।। তবুও আমাকে এক ফোঁটা বুঝতে না দিয়ে আমাকেও সামলে নিয়েছে। এ যেনো আমার জীবনে নতুন এক শিক্ষা। আমি সামন্য বিষয় নিয়েও ঘাবরে যেতাম। নেয়ামতের বোধশক্তি আমাকে নতুন করে জাগ্রত করলো।


|||

যদি আপনাদের ভালোবাসা না পাই তাহলে হয়তো গল্প লিখা আর হবে না😞😞


যাইহোক সারাদিনের ব্যস্ততার কারনে আটকাতেই চোখ জোড়া ধরে আসলো৷ আমি ঘুমিয়ে গেলাম,,নেয়ামতকে রেখেই। এতটুকু সময়ে ওকে যতটুকু জানলাম তাতে এটা আমি ঠিকই বুঝেছিলাম যে... আজকের রাতে ওর চোখের পাতা কিছুতেই এক হবে না।


রংধনুর রঙ...রৌদ্রের স্নিগ্ধ আলো চোখে পড়তেই ঘুমটা ভেঙে যায় আমার। চোখ খুলে একটুও অবাক হলাম না আজকে। কারন আমি জানতাম নেয়ামত এখানে থাকবে৷ হ্যা সত্যি নেয়ামত তার মায়াবী চোখ দুটো দিয়ে আমাকে দেখেছিলো। প্রতুষ বেলায় যতটুকু বুঝেছি আমি, ছিলো না সেই চোখে বিশেষ অঙ্গের প্রতি আকর্ষন। ছিলো না সামন্যতম লুলুপ দৃষ্টি,, শুধু ছিলো পরম ভালোবাসায় জড়ানো কিছু স্নিগ্ধ আবেশ।


সকালে নেয়ামত গুড মর্নিং বউ কথাটা বলেই চায়ের কাপ এগিয়ে দিলো আমার দিকে। আমার কেনো জানিনা ভীষণ লজ্জা লাগতেছে ওর দিকে তাকাতে। 


বুঝলাম বিষয় টা লক্ষ করে মিঃ নেয়ামত মুচকি মুচকি হাসছে। তারপর চায়ের কাপ টা হাতে নিয়ে আবার অবাক হলাম আমি। আমি মিঃ নেয়ামতকে বললাম.👇


আমিঃ>একি চা কোথায়?? 


মিঃ নেয়ামতঃ>থাকবে কি করে বলো। আমি তো আর চা করতে পারি না। শুধু দেখালাম। যদি পারতাম তাহলে এভাবে এনে খাওয়াতাম??


রাত থেকে এতো ভালোবাসা পেয়েছি কিনা। তবে আমি ভালোবাসায় পুর্ণ। আমার ভাবনার মাঝে আমিও একটু মুচকি হেঁসে উঠলাম। তারপর ও বলেলো......👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>খুব ইচ্ছে হয় প্রতিদিন বউয়ের হাতের মিষ্টি চায়ের সাথে ঘুমটা ভাঙতে?? 


ওর এই কথা শুনে মুচকি হেসে বিছানা থেকে নেমে আসলাম। আর আমি বললাম.....👇👇


আমি> রান্না ঘরটা কোন দিকে?? 


বলেই বাহিরে যেতে চাইছিলাম।। ভালোবাসার মানুষের আবদার পুরন করতে। আমার অজান্তেই আমার মন বলে উঠলো.. প্রত্যেকটা সকাল তোমার বউয়ের হাতের মিষ্টি চায়েই শুরু হবে তোমার মিঃ নেয়ামত। কিন্তু নেয়ামত আমার হাতটা ধরে কাছে টেনে বললো..👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>এখন লাগবে না পাগলী, যাও ফ্রেশ হয়ে আসো। বাহিরে আম্মু তোমার জন্য অপেক্ষা করছে??


কথাটা শুনে ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকালাম।।ইশ সাতটা বেজে গেছে। বাহিরে মা অপেক্ষা করছে। আর কথা না বাড়িয়ে, ওকেও কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফ্রেশ 

হতে চলে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে বাহিরে আসলাম। বাহিরে এসে দেখি আমার শ্বাশুড়ি মা বসে আছে। আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমাকে দেখে আমার দিকে এগিয়ে এসে বললো......👇👇


শাশুড়ি মাঃ>আয় মা আমার কাছে আয়। এখানে বস?? 


এই কথা বলেই আমাকে বসিয়ে দিয়ে দুই কাপ চা নিয়ে হাজির হলেন। তারপর আমার পাশে বসে বললো...👇


শাশুড়ি মাঃ>নে মা চা টা খেয়ে নে.? না হলে থান্ডা

হয়ে যাবে?? 


আমি চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে খাওয়া শুরু করলাম। শাশুড়ি মা আমাকে বললো.......👇👇


শাশুড়ি মাঃ>কিরে মা কোনো অসুবিধা হচ্ছে না 

তো তোর??


আমি বললাম........👇👇


আমিঃ>জ্বিনা মা, আমার কোনো অসুবিধা 

হচ্ছে না?? 


মায়ের সাথে চা খাচ্ছিলাম, আর এদিক ওদিক তাকিয়ে মিঃ নেয়ামত কে খুঁজছিলাম। ব্যাপার টা মনে হয় শ্বাশুড়ি মা লক্ষ করেছিলো।। তাই শ্বাশুড়ি মা আমাকে বললো.........👇👇


শ্বাশুড়ি মাঃ>কিরে মা কাউকে খুঁজছিস। জানি তো নেয়ামত কে খুঁজছিস??


আমি লজ্জা পেয়ে গেলাম☺। লজ্জায় মুখ ফুঁটে কিছু বলতে পারছি না। শুধু লজ্জার মাথা খেতে,,হ্যা সুচক মাথা নাড়ালাম। শ্বাশুড়ি মা আমাকে বললো....👇👇


শ্বাশুড়ি মাঃ>কেনো তুই জানিস না। ও তো একটু মিলে গেছে। কালকে শেষ রাতের দিকে আমাদের মিলে আগুন ধরে গিয়েছে। শুনলাম অনেকটা নাকি ক্ষতি হয়ে গেছে??


কথাটা শুনে আমি অবাক ও নিস্তব্ধ হয়ে গেলাম।। তার মানে সেই জন্যই নেয়ামত কে তখন ওমন দেখাচ্ছিলো। মুহুর্তে আমার ভিতরটা মুচড়ে উঠলো। নিমিষেই মলিন হয়ে গেলো আমার মুখ।। আমার অবস্থা বুঝতে পেরে শ্বাশুড়ি মা আমাকে বললেন.......👇👇


শ্বাশুড়ি মাঃ>কিরে তুই জানতিস না?? 


আমি বললাম......👇👇


আমিঃ নাহহ মা। আপনার ছেলে এমন কিছু 

বলেনি?? 


তারপর শ্বাশুড়ি মা আমাকে বললেন.......👇👇


শ্বাশুড়ি মাঃ>নেয়ামত এমনই। তুই কোনো টেনশন করিস না, সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে?? 


আমি আমার শ্বাশুড়ি মাকে দেখে অবাক হচ্ছি।। কারন দুই মা ছেলে অন্য রকম ধাতুতে গড়া। যা আমাদের আট দশটা পরিবারের চেয়েও অনন্য। আবারও শ্বাশুড়ি মা আমাকে বললেন...........👇👇


শ্বাশুড়ি মাঃ>শোন তোকে কিছু কথা বলি। জানিস ছোট বেলা থেকে নেয়ামত কে কোলে পিঠে করে মানুষের মতো মানুষ করেছি। কখনো তার গায়ে কোনো ফুলের টোকা পড়তে দেইনি। অনেক কষ্টের পরে নিজেকে নিজে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ছোট বেলায় তাকে শিখিয়ে ছিলাম। নিজে চেষ্টা করো, নিজের পথকে নিজের মতো করে তৈরি করো। যে কাজ দশ জনে পারে না, সে কাজ তুমি নিজে চেষ্টা করবে। কোনো বিষয়ে টেনশন করবে না। যেটা হওয়ার সেটা শ্বাশত নিয়মেই হবে। তুমি চাইলেও আটকাতে পারবে না। তার চেয়ে ভালো দুর্দিনে ধৈর্য ধারন করে তার মোকাবেলা করবে। 

হয়তো নেয়ামত ছোট বেলা থেকে আমার কথ গুলো মেনে আসছিলো। মা রে আমার ছেলে বলে বলছি না, নেয়ামত সত্যি একজন খাঁটি ছেলে??


শ্বাশুড়ি মা এই কথা বলে আবার আমার হাতটি জড়িয়ে ধরলো আর বললো..........👇👇


-গল্পঃ_পিরিয়ড_নিয়ে_বাসর_ঘরে_পর্ব_০৪ #শেষ_পর্ব

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল। 


শ্বাশুড়ি মা এই কথা বলে আবার আমার হাতটি জড়িয়ে ধরলো আর বললো..........👇👇


শ্বাশুড়ি মাঃ>কথা দে মা, কখনো আমার ছেলেকে কষ্ট দিবি না? 


দেখলাম কথা গুলো বলতে গিয়ে চোখের কোনায় পানি জমাট বেঁধে গেছে। কিন্তু গড়িয়ে পড়লো না। বুঝলাম উনারা অন্য জাতের মানুষ। আমিও কেঁদে দিলাম। কি বলবো বুঝতে পারলাম না। ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমি শ্বশুড়ি মাকে জড়িয়ে ধরলাম। মনে হলো আমার মাকে জড়িয়ে ধরেছি।


কারন আমার মায়ের বুকেও একই রকম শান্তি। এরপর শ্বাশুড়ি মা আমাকে বললো........👇👇


শ্বাশুড়ি মাঃ>চল মা, তোকে পুরো বাড়িটা চিনিয়ে দেই.। আজ থেকে সংসারের সব দায়িত্ব তোর৷ কারন তুই তো আমার বউমা না, তুই আমার মেয়ে। এটা তোরই ঘর বাড়ি, তুই তোর মতো করে সাজিয়ে নিস। শোন মা এই শহরে আমাদের আপন বলতে তেমন কেউ নেই। তাই তোদের বিয়েটা ঘরোয়া পরিবেশে শেষ করেছি। তাই এখানে আমাকে ছাড়া কিছু বলার মতো আর কাউকে পাবিনা। তাই কিছু লাগলে অবশ্যই আমাকে বলিস মা?


আমার বিস্মিত হওয়ার মাত্রা বুঝি অতিক্রম করলো। এত অমায়িক পরিবার একমাত্র সৃষ্টি কর্তা ভাগে রাখলেই সম্ভব।। আমি আর আমার শ্বাশুড়ি মা পুরো বাড়িটা ঘুড়ে বেড়ালাম।


এর মধ্যে অনেক গল্প হলো আমাদের।। তিনি নেয়ামত এর পছন্দ অপছন্দ সব কিছু আমাকে জানালেন। এক মুহূর্তে আমি ভুলেই গেছি যে, আমি এক অচেনা পরিবারের নতুন সদস্য। তারপর আমি শ্বাশুড়ি মাকে বললাম.....👇👇


আমিঃ>মা মিলের অবস্থা টা কি হলো। একবার 

জানলে হতো না? 


শ্বাশুড়ি মাঃ>না রে মা। তোকে বলছি না কোনো টেনশন করবি না। নেয়ামত সব সামলে নিবে। চল আমরা দুপুরের রান্নাটা শেষ করি। তোকে সব দেখিয়ে দেই?? 


আমি হ্যা সুচক মাথা নেড়ে শ্বাশুড়ি মায়ের সাথে হাঁটতে শুরু করলাম রান্না ঘরে। প্রায় ২ ঘন্টা পর রান্না শেষ করে ফ্রেশ হয়ে রুমে চলে আসলাম। 


পুরো রান্নার সময়ে শ্বাশুড়ি মায়ের মুখের মজাদার সেই গল্প আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছে যে.👉রান্না ঘরের ছায়ায় মারার নি। মনে হচ্ছে এই রান্নার কাজ আমার কত বছরের অভ্যাস। 


যাইহোক ঘরে বসে আছি। হটাৎ নেয়ামত এর কথা মনে পড়ছিলো। সালা হ্যাংলা সেই কখন গেছে এখনো আসার কোনো নাম গন্ধ নাই। জীবনে এই প্রথম কোনো ছেলেকে এতটা মিচ করছি। 


গল্পের মাঝে বিরক্ত করার জন্য আমি দুঃখিত। 

দয়াকরে এমন আরও গল্প পড়তে আমাদের ওয়েব সাইটের সাথে থাকুন ধন্যবাদ।

রুমের ভিতরে সবচেয়ে সুন্দর করে সাজানো বুকসেল্ফ ছিলো একটা। তাই একটু এগিয়ে সেখানে গেলাম। বই গুলো দেখছিলাম। বেশ কয়েকটি বই আমার পছন্দের ছিলো। হটাৎ করে আমার চোখ গেলো একটা নীল রঙের ডাইরীর দিকে। ডাইরীর কিছু যায়গায় হাতের ছোঁয়া দেখা যাচ্ছিলো। মনে হয় অনেক দিন পর কেউ ডাইরীতে হাত দিয়েছে। আগ্রহ নিয়ে ডাইরীটা খুললাম দেখতে লাগলাম। 


ডাইরীর প্রথম পাতায় কোনো লেখা ছিলো না৷ তারপর থেকে লেখা....👇👇

পনেরো দিন নেহার ছবি দেখে আসতেছি। কিভাবে তার সৌন্দর্যের বর্ণনা দিবো তা আমি ভেবে পাচ্ছি না। খুব কাছ থেকে মন ভরে আজকে তাকে দেখলাম। আগেই বললাম তার সৌন্দর্য আমার কাছে বর্ণাতীত। তাই কি মায়াবী তাকে লেগেছিলো তা শুধু আমি জেনে ছিলাম।


বাসর রাতে প্রথম দেখায় নেহা একটু অবাক হয়ে ছিলো আমাকে দেখে। কারন রাতে বৃষ্টি,কাকভেজা হয়ে ভিজে খুব কষ্ট করে তার জন্য একগুচ্ছ গোলাপ আর প্যাড নিয়ে এসেছিলাম। তার হাতে দেওয়ায় সে ভীষণ অবাক হয়েছিলো। তা আমি বুঝতে পারছিলাম। ওর চোখ আমাকে প্রশ্ন করছিলো আমি কিভাবে জানলাম...তার পিরিয়ডের কথা। 


আসলে সেইদিন বিয়ের হওয়ার পর থেকে গাড়িতে বসে আড় চোখে দেখেছিলাম তাকে। কিন্তু সে জানালা দিয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে ছিলো।৷ আমার দিকে একটুও নজর ছিলো না ওর। 


অবশ্য এর ফাকেই ওকে কয়েক বার পেট চেপে ধরতে দেখেছি। আমি বুঝতে পারছিলাম ওর খুব কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আমি কিছুই বলতে পারছিলাম না।


যাইহোক অবশেষে সেই দিন বাসায় আসার পর আমার পকেটে থাকা কাবিনের নকল কপিটা বের করতে গিয়ে আমার চোখ পড়ে যায় তার জন্ম তারিখের উপর। আমি ভীষণ খুশি হয়েছিলাম।। কেননা আজকের রাতে একটা হলেও সারপ্রাইজ দিতে পারবো নেহাকে।


আর কিছু না ভেবেই আমার বন্ধু রংধনুর রং।।আর সেই সব ব্যাবস্থা করে দিয়েছিলো। ধন্যবাদ বন্ধু তোকে রংধনুর-রং। বিয়ের দিন আমার কাছে সবচেয়ে খুশির মুহূর্ত ছিলো নেহার সারপ্রাইজ হওয়া। যা ছিলো বিয়ের রাতে বড় পাওয়া আমার কাছে।


তারপর ডায়রির পাতাটায় আর কিছু লেখা ছিলো না। শুধু তার চার পৃষ্ঠা পরে লেখা ছিলো....👇👇👇


       ❤যদি মন খারাপ হয়, তাহলে বই পড়❤

       ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~


সালা বুদ্ধু কোথাকার। লেখা কি ছিড়ি। আয় না বাসায় আয় আজকে। কথাগুলো ভাবতে ভাবতে মহারাজ হ্যাংলা হাজির। আমি তাড়াহুড়ো করে ডাইরিটা রেখে দিলাম।। খুব সাহস নিয়ে ওর কাছে গেলাম।। তারপর বললাম.......👇👇


আমিঃ>কি মিঃ নেয়ামত খুব টেনশন দিতে ভালো লাগে নাহ তোমার। এই কি ভাবো কি নিজেকে হ্যা সব তুমি বুঝবে। তুমিই সব টেনশন নিবে। আমি কি কেউ না তোমার?? 


বলেই ওর বুকে ঝাপিয়ে পড়লাম। হয়তো ও সব বুঝতে পারছিলো। তাই আমাকেও পরম আদরে বুকে আগলে নিলো। তারপর আমাকে বললো............👇👇


মিঃ নেয়ামতঃ>ভালোবাসো আমায়?? 


কথাটা শুনে এবার আমি কেঁদেই দিলাম।। তারপর তার বুক থেকে ছাড়িয়ে নিলাম। দেখলাম বুদ্ধুর মুখটা মলিন হয়ে গেলো। তাই আমি বললাম........... 👇👇


আমিঃ>মন খারাপ হলে বই পড়তে হয়। আর খুব 

বেশি খারাপ হলে বউকে জড়িয়ে ধরতে হয়। 

বুঝতে পারছেন মিঃ হ্যাংলা?? 


সে বিস্ময়ে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে অবুঝের মতো মাথা নেড়ে আমাকে জড়িয়ে ধরলো তার বুকে। বুঝতে পারছিলাম ইহা পরম ভালোবাসার পরম দেয়াল 

                                💖💖💖


*************সমাপ্ত*************


ভুলক্রটি ক্ষমা ও সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ভালো লাগলে

অবশ্যই আমাদের ওয়েব সাইটের পাশে থাকবেন ধন্যবাদ।


এমন আরও অনেক গল্প পড়ুন।