কষ্টের ভালোবাসার গল্প | ছেলেদের কষ্টের স্ট্যাটাস

 খুব কষ্টের ভালোবাসার গল্প

খুব কষ্টের ভালোবাসার গল্প

মা আমার বিয়েটা করাই দিবা? আমার পছন্দের একটা মেয়ে আছে ওর বাবা অনেক অসুস্থ তাই এক প্রকার জোর করে বিয়ে দিয়ে দিবে। প্লিজ মা বাবা কে বলে মেয়েটার সাথে আমার বিয়ে টা করাই দেও। 

" নাই একটা টাকা কামাই করার মুরোদ, আসছে বিয়ে করবে।তোর বাপকে গিয়ে বল বিয়ে করাইতে।  

" আব্বু কে বলতে পারব না দেখেই তো তোমাকে বলতেছি। আর কামাই নাই তাতে কি হইছে। আজ নাই কাল তো হবে সারাজীবন তো আর বসে থাকব না৷ 

" লাজ লজ্জা কি সব দুনিয়া থেকে উঠে গেছে? মায়ের কাছে কি সুন্দর বিয়ের কথা বলতেছো মুখে একটু বাঁধে না? 

"এহহ এমন করে বলছ দুনিয়ায় আমি একা বিয়ে করার কথা বলেছি। আব্বু তো তোমাকে বিয়ে করছে তো তোমরা কি লজ্জা পাও।

" যাবি এখান থেকে বান্দর ছেলে। 


তিহান ছোট বাচ্চার মতো মাকে জড়িয়ে ধরে বলতেছে ও মা দেও না বিয়ে টা করিয়ে। মেয়েটাকে আমার অনেক পছন্দ। খুব ভালোবাসি তোমরা একটু এগিয়ে আসলেই ভালোবাসার পূর্নতা পেতো। প্লিজ মা এমন করো না।  

" তিহান এসব শুনতে আর ভালো লাগছে না। তুই এখান থেকে যা। আগে কামাই কর তারপর নিজে পছন্দের মেয়ের সাথে বিয়ে দিবো।  

তিহান এবার ছোট বাচ্চার মতো কান্না করতে করতে মায়ের পায়ে জড়িয়ে ধরে বলে।  

" মা গো তোমার পায়ে পড়ি আমাকে একটু বোঝার চেষ্টা করো। লাবিবা খুব ভালো মেয়ে অনেক মেধাবি,পরিবার বংশ সব ভালো। একবার তোমরা দেখে আসো প্লিজ মা। ওর সাথে বিয়ে টা ফিক্সড হলেই আমি কাজ খুঁজে নিবো।মা আমি লাবিবাকে অনেক ভালোবাসি ওকে না পেলে আমার মন মানুসিকতা নষ্ট হয়ে যাবে। হৃদয়ের গভীর থেকে মেয়েটাকে আমি ভালোবাসি। 

" আচ্ছা দেখি তোর বাবা কি বলেন।


রাতে খেতে বসেছি তখন বাবার সামনে মা একটু কাশিঁ দিয়ে বলেন তোমার সাথে একটা কথা ছিলো।  

" এতো ভণিতা না করে কি কথা সোজা বলে ফেলো। 

"তিহান একটা মেয়েকে পছন্দ করে। মেয়েটার বাবা অসুস্থ এখন মেয়েটাকে বিয়ে দিয়ে দিবে। 

" তো কি করতে বলছ?

"এখন আমরা বিষয়টা ভাবলে ভালো হতো না? 

"বিয়ে করাতে কত খরচ জানো? 

" আজ হোক কাল করাতে হবে তো।তাই চলো মেয়েটাকে দেখি আসি একটু। 

"সবে তো চব্বিশ বছরে পা রাখল গ্রাজুয়েশন কম্পিলিট করতে এখনো অনেক সময় লাগবে। ওরে তো পালতেছি এখন কি আমি বউ এনেও পালব। 

" আমি কামাই করে খাওয়াব বাবা।বিয়েটা করিয়ে দিলে আমি ওর সব দায়িত্ব পালন করব। 

তিহানের বাবা শক্ত গলায় বললেন "এহহ আসছে কামাই করে খাওয়াবে।খেয়ে এখান থেকে ভাগ যা।এই মুহুর্তে বিয়ে টিয়ে আমি করাতে পারব না।সমাজে আমার একটা স্টাটাস আছে। 


তিহানের গলা থেকে খাবার আর নামছে না। লাবিবাকে হারানোর ভয় তিহান কে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। খাবার শেষ না করেই রুমে চলে যায়। তিহানের মা ডেকে বলেন খাবারের উপর রাগ দেখাস কেন খেয়ে যা।

কিছুক্ষণ পর লাবিবার ম্যাসেজ আসে। 

" কিছু কি করতে পেরেছো? আজ একটা সমন্ধ এসেছে সবার পছন্দ হয়েছে দুই দিনের মধ্যে ডেট ফিক্সড করবে প্লিজ কিছু একটা করো।  

" চেষ্টা করছি কিন্তু বাবা যে শক্ত মানুষ কোনো ভাবেই মানতে চাইবে না। 

"রিলেশনের আগে বার বার বলেছিলাম প্লিজ ভেবে তারপর রিলেশনে আসো বাবা মা মানবে কি না ভাবো।মেয়ে মানুষ যখন তখন বিয়ে কথা উঠতে পারে ম্যানেজ করতে পারবে কিনা ভেবে দেখো। তখন তো বলেছিলে আমি সব ম্যানেজ করে নিবো।আর এখন আমাকে খালি হাতে ফিরে যেতে হবে। 

" আমি চেষ্টা করছি। 

" করো চেষ্টা। কোনো আপডেট থাকলে জানিও আমাকে। 


লাবিবার সাথে কথা শেষ করে তিহান আবার মায়ের পা জড়িয়ে কান্না আরাম্ভ করে। প্লিজ মা তোমার পায়ে পড়ি দয়া করো না আমার উপর মা। লাবিবার বিয়ে টা হতে দিও না দরকার হয় কথা দিয়ে রাখো। 

" এমন বিয়ে পাগলা হলে হয়? তুই ঘরের বড় সন্তান তোর তো একটা দায়িত্ব আছে বাবা। হুট করে বিয়ের কথা বললেই হয়? তোর আরো তিনটা ভাই বোন আছে ওদের ভবিষ্যৎ কি হবে ভেবে দেখছিস। হাজার কান্নাকাটি করো আর যাই করো উনি ত্যাজ্য পুত্র করবেন তাও বিয়ের জন্য রাজি হবে না। তার চেয়ে তুই ঐ মেয়েকে বলে দে বিয়ে করে সংসার সাজাতে।তোর সামনে ভবিষ্যৎ আর এখনো নিজেদের একটা বাড়ি করতে পারিনি। 

"তোমরা সত্যি বিয়ে টা দিবে না? 

" না এখন এসব চিন্তা বাদ দে আরো দুই তিন বছর পর বিয়ে। এখন বিয়ে করার সময় না৷ 


তিহান দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে মায়ের রুম থেকে বেড়িয়ে লাবিবাকে মেসেজ দেয়। তুমি বিয়েতে হ্যাঁ বলে দাও আমি কোনো ভাবেই পারলাম না পরিবার কে ম্যানেজ করতে। ছোট বাচ্চা যেমন বাবা মায়ের কাছে খেলনার আবদার করে, আমিও তোমাকে পাওয়ার জন্য তাদের কাছে তেমন ভাবে আবদার করেছি কিন্তু আর হলো না আমার শখের নারীকে আপন করে পাওয়া। ভালো থেকো মন খারাপ করবে না একদম তোমার জন্য অনেক শুভ কামনা। 

হয়ত আমাদের বিচ্ছেদ হয়ে যাবে কিন্তু ভালোবাসার বিচ্ছেদ হবে না। সারাজীবনের জন্য তুমি আমার শখের নারী শখের নারী হয়েই থাকবে। 


সপ্তাখানিক পর, 

আজ লাবিবার বিয়ে। তিহান চুপচাপ রুমে বসে আছে।আর ভাবছে যদি বাবা মা গিয়ে বিয়ের কথাটা পাকা করে রাখত তাতে কি এমন ক্ষতি হতো। বিয়ে টা তো আটকে যেত। জীবনে হাজার পাওয়ার মধ্যে এই একটা না পাওয়া আমার জীবন দুর্বিষহ করে দিবে। 


_______________সমাপ্ত______________


-গল্পঃনা_পাওয়া

-ইসরাত জাহান এশা


এমন আরও অনেক কষ্টের ভালোবাসার গল্প গুলো পড়ুন।