না পাওয়া ভালোবাসার কষ্টের গল্প ২০২৪

 ভালোবাসার কষ্টের ফেসবুক স্ট্যাটাস

ভালোবাসার কষ্টের ফেসবুক স্ট্যাটাস

গল্প-হাজার_তারার_মাঝে_তোমাকে_খোজা

--তন্নী আমাকে জড়িয়ে ধরে খুব

কান্না করছিলো

আর বলছিল,

আমার কিচ্ছু চাই না,

শুধু একটু

ভালোবেসো তাহলেই চলবে।

আমি : - আচ্ছা ঠিক আছে অনেক

ভালোবাসবো তোমায়, এখন বাসায়

যাও, রাত হয়ে এলো।

তাহলে একবার ভালোবাসি

বলো।

আমি : হ্যা, অনেক ভালোবাসি

তাহলে আমার কপালে একটা চুমু

দাও।

(আমি ওর কপালে ছোট্ট করে একটা

চুমু দিলাম)

আমি :- হইছে,,,? এবার যাও....

---- আচ্ছা যাচ্চি আর আমার

ফোনটা আজ রাতের জন্য নিয়ে

যাও, কালকে তোমাকে একটা নতুন

ফোন কিনে দেব.....

যাও কোথাও দেরী করবে না কিন্তুু

সোজা মেসে চলে যাবে, বেশী

রাত জাগবে না,,,,,,

আমি : - আচ্ছা,,,,,

( তাকে বিদায় দিয়ে আবার রওনা

হলাম আমার ঠিকানায়)

,,

পরের দিন,,,,অনেকবার মানা করার পরও

ও আমাকে একটা ফোন কিনে দিলো,

সাথে অনেক জায়গায় ঘুরালো।

পাগলীটা যখন আমার সাথে

পার্কে বসে আইসক্রিম খাচ্ছিলো,

তখন ওকে খুব খুশি দেখাচ্ছিলো,

( মনে মনে ভাবলাম, এতক্ষন হয়তো

অন্য প্রমিকারা হয়তো রেষ্টুরেন্টের দামি

খাবার খাচ্ছে)

আসলেই তন্নী মেয়েটা অন্যরকম, আমার

প্রতি ওর তেমন কোনো চাওয়া পাওয়া নেই,

একটাই চাওয়া অনেক ভালোবাসতে

হবে।

হ্যা আমি ওকে আমার জীবনের

থেকেও বেশী ভালোবাসি।

,,,

,,,

রাত ১১টা ৪৫ মিনিট,,, হঠাৎ

তন্নীর ফোন,

রিসিভ করলাম,

---- খেয়েছ?

আমি :- হ্যা, খেয়েছি, তুমি?

--- খেয়েছি, আজ একটু আমার বাড়ির

নিচে আসবে তোমাকে দেখতে খুব

ইচ্ছে করছে,

আমি : -আচ্ছা একটু wait করো, যাচ্ছি।

( মহারানীর হুকুম কি আর করবো?)

গিয়ে দেখি পাগলীটা

বেলকুনিতে দাড়িয়ে আছে,

আমাকে দেখে মুসকি হাসি দিলো,

---রাগ করেছো, কি করবো বলো

তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করলে

আমি কি করবো?

আমার তো ঘুমই

আসছিল"""""""""''না,

তোমাকে দেখলাম এখন ঘুম আসবে,

ঠিক আছে সোনা এখন যাও,

আর হ্যা, গিয়েই

ঘুমিয়ে পড়বে, বেশী রাত জাগবে

না।

আমি : -আচ্ছা ঠিক আছে, শুভ

রাত্রী।

( এভাবেই কেটে যাচ্ছিল আমাদের

ভালবাসার দিন গুলো, অনেক সুখী

ছিলাম আমরা)

,,

,,

হঠাৎ একদিন তন্নী অসুস্থ হয়ে

পড়লো,

আজ তিনদিন হলো ওর সাথে দেখা

হয় নি, কথাও হয় নি, ( ফোন দিলে ওর

মা রিসিভ করে,

আমাদের সম্পর্কের

কথা ওর মা বাবা কেউ জানতো

না)

তন্নী হাসপাতালে ছিল,

ওর এক বান্ধবীর সহযোগিতায়

তিনদিন পর ওকে দেখার সৌভাগ্য

হলো,

কিন্তুু কথা বলার ভাগ্যটুকু হয় নি,

ও তখন ঘুমিয়েছিল, জানালার

বাইরে থেকে

দেখলাম,পাগলীটাকে দেখে

বুকের মধ্যে কেমন জানি মোচড়

দিয়ে উঠলো,

চোখ মুখ কালো হয়ে গেছে, অনেক

শুকিয়ে গেছে মেয়েটা, খুব কষ্ট

লাগছিল ওকে দেখে, ইচ্ছে করছিল

ওর কপালে আলতো করে একটা চুমু

দিতে,

খুব ইচ্ছে করছিল ওকে জড়িয়ে ধরে

আদর করে শান্তনা দিতে,

সব ঠিক হয়ে যাবে....

কিন্তুু ভেতরে যাওয়ার সাহস

পাইনি,

ওর মা ছিল, ( কি পরিচয়ে ওকে

দেখতে ভেতরে যাবো,

তাছাড়া

পাগলীটা আমাকে দেখলেই

পাগলামী শুরু করে দেবে)

এক নজর দেখে মেসে চলে আসলাম।

ওকে দেখার পর থেকে কেমন যেন

অস্থির অস্থির লাগছিল, মনে হচ্ছিল

কি যেন হারিয়ে ফেলছি আমি,

রাতে গলা দিয়ে কিছু নামলো না,

শুয়ে পড়লাম,

অনেক রাত পার হয়ে গেল,

দুচোখের পাতা এক করতে পারছি

না।

খুব টেনশন হচ্ছে ওর জন্য,

সারারাত আল্লাহকে ডাকলাম,

--- আল্লাহ্ তুমি ওকে সুস্থ করে দাও,

ওকে পাওয়া আমার শত জনমের

ভাগ্য, ওর মতো করে আমাকে আর

কেউ ভালোবাসবে না।

ও আমার কাছ থেকে হারিয়ে

গেলে আমি নিজেকেই হারিয়ে

ফেলবো,

প্লিজ আল্লাহ্ আমার

সারাজীবনের ভাল কাজের

বিনিময়ে তুমি ওকে সুস্থ করে

দাও....

ভোর বেলার দিকে চোখের

পাতাগুলো ভারি হয়ে আসলো,

সকাল ৭ টায় ঘুম থেকে উঠলাম,

তাড়াতাড়ি করে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।

না খেয়েই হাসপাতালের দিকে

রওনা হলাম।

গিয়ে আবার সেই জানালার

পাশে দাড়ালাম,

কিন্তুু ওকে দেখলাম না,

বেডটা খালি পড়েছিল...

বুকটা ধক ধক করে উঠলো,

সারা হাসপাতাল খুজলাম

পাগলীটাকে, পেলাম না....

পরে এক ডাক্তারের কাছে জানতে

পারলাম,

আজ ভোরবেলা তন্নী আমাকে

চির একা করে, স্বার্থপরের মত তার

আসল ঠিকানায় চলে গেছে,

তার নাকি ক্যান্সার ছিল........

,,

সারাদিন কিভাবে ছিলাম আমার

মনে নেই, পাগলের মত কেদেছি

সারাদিন,

আমার বুদ্ধির পর থেকে আমি যা

চেয়েছি, তা কখনই পাইনি।

ভেবেছিলাম সব কিছুর বিনিময়ে

আল্লাহ আমাকে তন্নীকে

দিয়েছে, আমার আর কিছু চাই না।

কিন্তুু আল্লাহ যে এভাবে আমাকে

নিঃস্ব করে দিয়ে তন্নীকেও

কেড়ে নেবে কখনই ভাবিনি,,,

তার মারা যাওয়াটা আমি মেনে

নিতে পারিনি।

,,

,,

বিকেলে তন্নীর জানাযার নামাজ 

হবে,

জানাযায় গেলাম কিন্তুু ওকে শেষ

বারের মত দুচোখ ভরে দেখার

সুযোগটাও আল্লাহ আমাকে করে

দিলো না।

ওর কবরে তিন মুঠো মাটি দিয়ে,

সেই পরিচিত জায়গা দিঘির

পাড়ে গেলাম,

এখানেই আমরা প্রতি শুক্রবার বসে

গল্প করতাম, গত শুক্রবারেও আমরা

এখানে বসে সময় কাটিয়েছি।

বাদামের খোসা গুলো এখনও পড়ে

আছে,

প্রতিটি খোসাতে ছিল তন্নীর

হাতের স্পর্শ,

খুব কান্না পাচ্ছিল আমার, খুব...

হাতে কয়েকটা বাদামের খোসা

নিয়ে,

মেসের পথে রওনা হলাম....

আজকে কেন জানি চেনা

রাস্তাগুলো অচেনা মনে হচ্ছে,

কিছুক্ষন হাটার পর আর ধাপ ফেলতে

পারছি না, খুব কষ্টে করে হেটে

চলেছি,

হাটছি আর পাগলীটার স্মৃতিগুলো

মনে করে কাদছি,

বুকের বাম পাশে অজানা এক তীব্র

ব্যাথা,

সন্ধার পর মেসের ছাদে উঠে

আকাশের দিকে মুখ করে মৃত মানুষের

মত নিজেকে এলিয়ে দিলাম,

,,

চলে গেলাম ভাবনার জগতে,

আজকের পর থেকে আর কেউ আমাকে

মাঝরাতে ফোন দিয়ে বলবে না,

একটু আমার বাসার নিচে আসবে?

তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে।

সারারাত জেগে থাকলেও কেউ

বলবে না, তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে

পড়ো কিন্তুু.....

আর কেউ বলবে না, আমার কপালে

একটা চুমু দেবে,

কোনোদিন হয়তো আর কারো মুখ

থেকে শুনতে পাবো না, আমাকে

একটু জড়িয়ে ধরবে......?

শরীরের কোন অঙ্গই যেন কাজ করছে

না,

হয়তো তারাও তন্নীর জন্য

শোকাহত,

,,

কোথাও যেন শুনেছিলাম, মানুষ

মরে গেলে নাকি আকাশের তারা

হয়ে যায়,

মিটিমিটি চোখে আকাশের

দিকে তাকালাম, দেখি আকাশে

তারার মেলা।

"""আমি সেই লক্ষ কোটি তারার

মাঝে আমার পাগলীটাকে খুজতে

থাকি........"""

কিন্তু আপসোস এমন করে কে আর ভালোবাসবে

আমায়।


সমাপ্ত


এমন আরও একটি কষ্টের গল্প পড়ুন