গল্প:যমজ | হাস্যকর মজার গল্প ২০২৪

দারুন মজার গল্প

দারুন মজার গল্প

 এক গ্রামে দুই 😝যমজ ভাই ছিলো। একজনের নাম কালু, আরেকজনের নাম ধলু। নাম কালু আর ধলু হলেও দুইজনই দেখতে কালো। আর কালুর নামের মতো তার কাজকর্মও সব কালো। এলাকার এমন একটা বাসা নেই, সে চুরি করতে ঢুকেনি। দা, বটি, চামচ থেকে শুরু করে সে বড়বড় জিনিসও চুরি করতো। মাঝেমাঝে ধরা খেয়ে মারও খেতো, আবার অনেক সময় পালিয়ে যেতো।

ধলু কিন্তু ভালো। ভাই এর মতো সে চুরি করে না, চুরি সমর্থনও করে না। ভাইকে সে নিষেধ করে এসব চুরি ছেড়ে দিতে। নিষেধ করাটাই স্বাভাবিক। কারণ মাঝেমাঝে লোকে তাকে কালু মনে করে মারধর করে। এটা কি মেনে নেওয়া যায়? 

এইতো সেদিন রাতে তার ভাই কালু ঘর একটাতে ঢুকে তাদের মুরগি চুরি করছিল। মুরগি যখন খক্ করে উঠে, তখন বাসার সবাই "চোর চোর" বলে বের হয়ে আসে। কালু মুরগির মুখটা চেপে ধরে যাতে চিৎকার করতে না পারে। তারপর ঐ অবস্থায় দৌড়াতে থাকে। দৌড়াতে দৌড়াতে সে দেখে মুরগিটা মারা গেছে নিশ্বাস নিতে না পারে। মরবেই তো, মুখটা যদি চেপে ধরে, তাহলে কি পাছা দিয়ে নিশ্বাস নেবে মুরগিটা?

 মুরগিটাকে মরতে দেখে কালু আফসোস করে বললো,

-ওরে মুরগি, তোরে এতো কষ্ট করে চুরি করে আনলাম, আমার কষ্টের কোনো দাম দিলি না তুই?'

কালুর মনে হলো, মুরগিটা হঠাৎ জিন্দা হয়ে তাকে বলছে,

-তোকেও একদিন আমার মতো মরতে হবে। এর শাস্তি একদিন তুই পাবি।'

কথাটি বলেই মুরগিটা আবার মরে গেল। কালু ভয় পেয়ে গেল। মুরগি কী করে কথা বললো? তাও আবার মরা মুরগি। ভূত/তূত হয়ে গেল না তো মুরগিটা? ভয় পেয়ে হাত থেকে সে মরা মুরগিটা ফেলে দিলো। ততক্ষণে পাড়ার অনেকগুলো লোক চলে এসেছে তার খুব কাছে। তাকে চিনতে পেরে ওরা চিৎকার করে বললো,

-ওরে কাইল্লা চোরা, আজ তোর একদিন কী, আমাদের সতেরো থেকে আঠারো দিন।'

মুরগির মায়া ত্যাগ করে, লুঙ্গিটা একটু উপরে তুলে কালু এমন দৌড় দিলো, ওরা তার লুঙ্গির বাতাসও নাগাল পেল না। একজন তখন আফসোস করে বললো,

-শালার চোরগুলো এতো দৌড়াতে পারে কী করে?'

আরেকজন বললো,

-পালিয়ে যাবি কোথায়? আজ তোকে তোর ঘর থেকে তুলে আনবো।' 

 সবাই কালু চোরার ঘরের দিকে যেতে লাগলো। ঘরে গরম লাগছিল বলে ধলু তখন ঘর থেকে বের হয়েছে শরীরটা একটু ঠাণ্ডা করার জন্য, তখন সবাই এসে তাকে ধরলো। চারজন তার চারটা হাতপা ধরে, আরেকজন মাথা ধরে তাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন সে চিৎকার করে বলতে লাগলো,

-তোমরা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো?'

একজন বললো,

-তোকে আজ উপরে পাঠায় দিবো, শালার মুরগি চোর।'

-আমি মুরগি চোর না, তোমরা ভুল করছো, আমি কালু না, আমি ধলু।' চিল্লাতে লাগলো ধলু। তার মুখে একটা ঘুষি বসিয়ে একজন বললো,

-চুরি করে এখন ধলু সাজছিস তাই না? এই সবাই ওকে এখানেই আছাড় মার।'

লোকটার কথা শুনে যারা ধলুকে ধরেছিল তারা তাকে আছাড় মারলো। ধলু মুরগির মতো খক্ করে উঠলো। কোমরটা মনে হয় ভেঙে গেছে। কাঁদতে কাঁদতে সে বললো,

-ভাই একটু আস্তে আছাড় মারতে পারোনি তোমরা?'

তার কথা শেষ হতেই সবাই আবার কিল, ঘুষি, লাথি চালাতে লাগলো তার উপর। বেচারার হাড্ডি সব ভেঙে দিলো, কাপড় সব ছিড়ে দিলো। তারপর ওকে ছেড়ে দিয়ে সবাই চলে গেল। বেচারা ধলু উঠে ঘরের দিকে হাঁটতে লাগলো।

ঘরে এসে সে দেখলো, তার ভাই কালু মনের সুখে নাচতেছে। ধলুর এই অবস্থা দেখে কালু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,

-এ কী রে ভাই, তোর এই অবস্থা কী করে হলো?'

ধলু কাঁদতে কাঁদতে বললো,

-চুপ। তুই আমাকে ধরবি না। তোর কারণেই হয়েছে এসব। তুই চুরি করলি, সবাই আমাকে তুই ভেবে মেরে কী অবস্থা করেছে দেখ। আমি পরিশ্রম করে টাকা আয় করি, তারপরও মার খেতে হলো। 

-ইশ! আয় ভাই, তোকে তেল মালিশ করে দিই। 

-লাগবে না তোর তেল মালিশ। কতবার বলেছি এসব চুরি ছেড়ে দে। 

-না না, চুরি তো ছাড়া যাবে না। চুরি আমার রক্তে মিশে গেছে।'

.

.

কালু আর চুরি ছাড়েনি। সেদিনের পর তার চুরির জন্য ধলুকেই মার খেতে হয়েছে আরও কয়েকবার। এর আগে তো অনেকবার মার খেয়েছে। আজ আবার এক বিধবা মহিলার শাড়ি চুরির দায়ে মার খেতে হলো ধলুকে। শাড়ি চুরি করে পালিয়ে যায় কালু, আর পাবলিকের সব মার হজম করে ধলু। আফসোস করে সে বলে,

-আল্লাহ, তুমি কেন আমার চেহারাটা কাইল্লা চোরার মতো করে দিলা?'

একদিন রাগে, অভিমানে ধলু এলাকা ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু ধলু যে এলাকায় গিয়ে হাজির হয়, সেই এলাকায় আগে থেকেই তার ভাই চুরিতে পি.এইচ.ডি ডিগ্রী অর্জন করে নিয়েছে। এলাকায় ভাতের ডেকচি সুদ্ধ চুরি করে নিয়ে গেছে কাইল্লা চোরা। এলাকার লোক এখন তাকে খুঁজছে। যেদিন ধলু ঐ গ্রামে যায়, সেদিনই সবাই মিলে তাকে ধরে মারতে থাকে। বেচারা এই এলাকায় এসেও শান্তি পেল না। সেদিনই ধলু অন্য এলাকায় যায়। ঐ এলাকায় গিয়েও একই অবস্থা। আবারও এক দফা মার চললো তার উপর। মার খেয়ে ধলু চিৎকার করে বললো,

-ওরে কাইল্লা চোরা, তুই কি একটা এলাকাও বাদ রাখিসনি? সব এলাকায় চুরি করেছিস?

.

.

এদিকে নিজের এলাকায় কাইল্লা চোরার জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে। দেখলেই মেরে ফেলবে। তাই সে নিজের এলাকা ছেড়ে অরেকটা দূরের এলাকায় চলে আসে, এই এলাকায় এখনও সে তার চুরিবিদ্যা প্রয়োগ করেনি। প্রথমদিনেই বাজিমাত করার জন্য সে একটা ঘরে হানা দিলো। দেখলো, বাড়ির সবাই ঘুমোচ্ছে। সে চুরি করার জন্য জিনিস খুঁজতে লাগলো। মনে মনে গালি দিচ্ছিল সে এই বাড়ির সবাইকে,

-শালার এমন ফইন্নি বাড়িও থাকে, চুরি করার মতো কিছুই নেই?'

কিন্তু কিছু একটা না নিয়ে সে যাবে না। কিছু না নিয়ে গেলে তার চুরিবিদ্যাকে অপমান করা হবে। ঘরের গেরস্তকে দেখলো, লুঙ্গি পরে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে। কালু ওর পাশে গিয়ে লুঙ্গিটা টান মেরে খুলে নিলো। তারপর দৌড় দিলো লুঙ্গিটা নিয়ে। গেরস্তের ঘুম ভেঙে গেল তখন। কালুকে তাড়া করার জন্য "চোর চোর" বলে বের হয়ে এলো সেও। কিন্তু নিজের লুঙ্গিটা নেই দেখে সে আবারও ঘরে ফিরে এলো। চোরকে তাড়া করার সময় নেই এখন। এখন শুধু লুঙ্গি হারিয়েছে, চোরের পেছনে তাড়া করলে সব হারাতে হবে.....

.

.

.

.

গল্প-যমজ

পর্ব - ১

_________পর্ব:-০২___________

.

কয়েকদিনেই গ্রামের সবার কাছে কালু নিজেকে চোর হিসেবে চিনিয়ে দিলো। লোকের বদনা থেকে শুরু করে গরু, ছাগলও বাদ রাখেনি চুরি করতে। পারলে সে লোকের টয়লেটও চুরি করে নিয়ে যেতো। তবে টয়লেট চুরির চিন্তা তার মাথায় যে আসেনি, তা কিন্তু নয়। হাতে গ্লাভস লাগিয়ে টয়লেটের সবকিছু পার্ট পার্ট করে খুলে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা করছে সে ইদানীং।  

.

তার এমন অত্যাচারে গ্রামটার সব লোক অসহ্য হয়ে উঠেছে। একদিন গ্রামের সকলে মিলে একটা মিটিং-এ বসলো। সবাই মিলে পরিকল্পনা করতে লাগলো এই চোরকে কী করা যায়। একজন উঠে বললো,

-এই চোরকে ধরার পর বাঁচিয়ে রাখা যাবে না। আমাদের ঘরের এমন কোনো জিনিস নেই এই শালার চোর চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে না। প্রতিটা ঘরে বদনা চুরি হয়েছে। নতুন বদনা কিনতে কিনতে বাজারেও ঘাটতি দেখা গেছে বদনার। বলি শালার চোর, তোর হাগু করার সময় কয়টা বদনার পানি লাগে? এতগুলো বদনা দিয়ে তুই কী করবি?'

আরেকজন উঠে বললো, কথা কাব্য পেজ

-আরে বদনা তো তাও প্রয়োজনে আসবে ওর। কিন্তু মেয়েদের ব্লাউজ দিয়ে এই শালা কী করবে? আমার বউ বাইরে ব্লাউজ শুকাতে দিয়েছিল, কিন্তু কিছুক্ষণ পর এসে দেখে ব্লাউজটা নেই।'

এভাবে একজন একটা একটা করে অভিযোগ তুলতে লাগলো। শেষে আরেকজন উঠে বললো,

-আরে ভাই, ও তো তোমাদের তবুও ইজ্জত নিয়ে যায়নি। আমার তো প্রথম দিনেই শরীর থেকে লুঙ্গি খুলে নিয়ে গেছে। কতবড় চোর ভেবে দেখো। আমি লুঙ্গিটা পরে ঘুমাচ্ছিলাম। হঠাৎ ও এসে টান মেরে নিয়ে গেল! ভাগ্যিস, আমার জায়গায় আমার বউ ছিল না। 

-না, না, এমন চোরকে বাঁচিয়ে রাখা যাবে না। মেরে ফেলতে হবে।' অনেকগুলো কণ্ঠ একসাথে বলে উঠলো। সবাই কালু চোরাকে মারার জন্য উঠেপড়ে লাগলো। শুধু একবার ধরতে পারলেই হবে।

.

.

একদিন কালু চোরা ঠিকই ধরা পড়লো। সবাই যে তাকে ধরার জন্য পরিকল্পনা করেছে, তা সে জানতো না। লোকের ঘরে ঘরে দামি জিনিসগুলোও বাইরে ফেলে রাখতো, শুধু ওকে ধরার জন্য। ও চুরি করতে গেলেই ধরে ফেলবে। এই ফাদটা কালু বুঝতে পারেনি। এক ঘরের দামি একটা জিনিস বাইরে পড়ে থাকতে দেখে সে চুরি করতে গেল। তখনই কোথা থেকে যেন কয়েকজন এসে তাকে ধরে ফেললো। লুঙ্গিটা উপরে তুলে সে পালাতে চাইলো, তখন দেখলো, একজন তার লুঙ্গি ধরে আছে। টান মেরে সে কালুর লুঙ্গিটা খুলে নিলো। তারপর হাসতে হাসতে বললো,

-কোথায় পালাবি বাছা? আমার শরীর থেকে লুঙ্গি টান মেরে নিয়ে গেছিলি না? আজ তোরটাও খুলে নিলাম। সবাই মিলে আজ তোকে আলুভর্তা বানাবো।'

কালু সবার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকাতে লাগলো। এটা তো সে ভাবেনি। এখন কী হবে? সে দেখলো ঝাঁকে ঝাঁকে লোক আসতে লাগলো তাকে মারার জন্য। সে কিছু বলার আগেই সবাই মিলে তাকে মারতে লাগলো। লাঠিসোঁটা, ইট, পাথর যে যা পেয়েছে তাই দিয়ে সবাই মারতে লাগলো কালুকে। এতদিনের জমে থাকা রাগটা সবাই আজ মিটিয়ে নিচ্ছে। এতো মার খাওয়ার পর কালু আর বেঁচে থাকলো না। দেহটা এদেরকে দিয়ে পরকালে চলে গেল। মরার আগমুহূর্তে কালু ভেবেছে, সেদিনের মুরগিটা অভিশাপ দিয়েছে বলে তাকে এভাবে মরতে হচ্ছে। তারপর সবাই মিলে কালুর দেহটাকে কবর দিয়ে আসলো। 

.

.

এদিকে ধলু বেচারা সব এলাকায় মার খেতে খেতে এই এলাকায় এসে হাজির হলো, যে এলাকায় কালুকে মারা হয়েছে। ধলু চিন্তা করলো, এই এলাকায়ও হয়তো তার ভাই চুরি করেছে। এখন এই এলাকায় ঢুকলেই সবাই তাকে আবার মারবে। কিন্তু রাত হয়েছে, সে এখন কোথায় থাকবে? ভাবতে ভাবতে সে কবরস্থানে চলে এলো। এটাই নিরাপদ জায়গা। এইখানে কেউ তাকে মারতে আসবে না। নতুন একটা কবর দেখা গেল কবরস্থানে। কবরটার উপর গিয়ে সে শুইয়ে পড়লো। কাঁদতে কাঁদতে সে কবরের উদ্দেশ্যে বললো,

-কবর রে, তুই দুইফাক হয়ে যা, আমিও ঢুকে পড়ি তোর ভেতর।'

কবরস্থানের পাশ দিয়ে তখন হেঁটে যাচ্ছিল দুই লোক। তারা থমকে দাঁড়ালো। একজন আরেকজনকে বললো,

-এই কবরস্থান থেকে কারও শব্দ শোনা গেল না?'

-হ্যাঁ, তাই তো...'

হালকা আলোতে তারা দেখলো, কালুর কবরের উপরের কী একটা যেন শুয়ে আছে মানুষের মতো। কবরের দিকে লাইটের আলো ফেললো ওরা। সাথেসাথে ধলু উঠে বসলো। হায়রে! এই কবরস্থানে এসেও শান্তি পেল না সে। ধরা খেয়ে গেল। কিন্তু লোক দুইটার অবস্থা তখন দেখার মতো। একজন আরেকজনকে ভয়ে ভয়ে বললো,

-ভাইরে, কালু চোরা কবর থেকে উঠে এসেছে। ও আত্মা হয়ে ফিরে এসেছে। এখন আমাদের কাউকে ছাড়বে না। 

-চল ভাই পালাই, এখানে থাকলে প্রথম আমাদেরকেই মারবে ও।' বলেই আর অপেক্ষা করলো না, পালিয়ে গেল দৌড়াতে দৌড়াতে। তাদেরকে দৌড়াতে দেখে ধলু ভাবলো, ওরা হয়তো আরও লোক আনতে গেছে তাকে মারার জন্য......

.

.

গল্প-যমজ

_________পর্ব:-০৩+ শেষ 

যে লোক দুইটা কালুর কবরে ধলুকে দেখে ভয়ে পালিয়ে এলো, তারা গ্রামে প্রচার করে দিলো কালু চোরা আবার ফিরে এসেছে আত্মা হয়ে। তাদের কথা কেউ বিশ্বাস করলো না। নিজ চোখে দেখার জন্য সবাই কবরস্থানে এলো। তাদেরকে দেখে ধলু ভয়ে কাঁপতে লাগলো। যা ভেবেছিল সে, তাই হয়েছে। লোক দুইটা সবাইকে নিয়ে এসেছে তাকে মারার জন্য। এখন কী হবে? পালিয়ে যাওয়ার উপায়ও নেই। ওদের পা ধরে ক্ষমা চাইতে হবে। 

.

ধলু ক্ষমা চাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ালো। তখন সবাই তার দিকে লাইটের আলো ফেললো। ধলু কেঁদে কেঁদে ওদের দিকে ক্ষমা চাইতে দৌড়ে গেল। সবাই তখন "ওরে বাপরে" বলে পালাতে শুরু করলো। কেউ স্যান্ডেল খুলে পালালো, কেউ লুঙ্গি তুলে পালালো, কেউ হোঁচট খেতে খেতে পালালো। এসব দেখে ধলু অবাক হয়ে গেল। কী হলো এটা? সবাই তাকে মারতে এসে পালালো কেন? নাকি এখানে কোনো ভূত/তূত দেখে পালিয়ে গেল। ভূতের কথা মনে পড়তেই ধলুও ভয় পেতে শুরু করলো। পেছনে ফেরার সাহস হলো না তার। সেও "ওরে বাপরে" বলে পালাতে শুরু করলো। 

গ্রামবাসীরা পেছনে আলো ফেলে দেখলো কাইল্লা চোরার আত্মাও পেছনে তাড়া করে আসছে। এখন কী হবে? তাকে মেরে বড্ড ভুল করেছে ওরা। এখন সে আত্মা হয়ে তাদের মারতে এসেছে। যে যেদিকে পারে, ছুটে পালিয়ে গেল ওরা। 

ধলু রাতটা থাকার জন্য একটা জায়গা খুঁজছিল। বাইরে কিছুতেই একা থাকা যাবে না। যেকোনো মুহূর্তে ভূত এসে তাকে মেরে ফেলতে পারে। তাই ধলু ঠিক করলো একটা বাসায় রাতটা কাটাবে। কিন্তু এই চেহারায় কারও বাসায় ঢুকলে তো ওরা তাকে কালু ভেবে মারতে শুরু করবে। এখন কী করা যায়? 

-পেয়েছি! চেহারায় মাটি মেখে তারপর যেতে হবে।' ভাবতেই ধলুর মুখে হাসি ফুটে উঠলো। নিজের বুদ্ধির প্রশংসা করতে লাগলো সে মনেমনে। তারপর দেরি না করে মুখে ভেজা মাটি মেখে একটা বাসার দরজায় ঠোকা দিলো। ঘরের গিন্নি ভেতর থেকে জিজ্ঞেস করলো,

-কে?'

-আমি ধলু...'

ওরে মাগো, কালু চোরার আত্মা নাম পাল্টিয়ে এসেছে তাদের মারার জন্য। এখন কী হবে? ভয়ে কাঁপতে লাগলো গিন্নি। তার স্বামী এসে জিজ্ঞেস করলো, 

-কী হয়েছে? এভাবে ভয়ে কাঁপতেছো কেন?'

-তো কাঁপবো না। বাইরে কালু এসেছে।

-কী বলো? এখন তো আমার পেটে চাপ শুরু হয়ে গেছে। 

-খবরদার এখানে ছেড়ে দেবে না।

-তো কী করবো? বাইরে গেলে তো কালু আমাকে মেরে ফেলবে? কতো করে বলেছি ঘরের ভেতর বাথরুম করার জন্য। তুমি রাজি হলে না। এখন বুঝো মজা! আমি কিন্তু ছেড়ে দিচ্ছি, আমার কোনো দোষ নেই। এ্যা..এ্যা..এ্যাহহহ!!'

সাথে সাথে গিন্নি নাক চেপে ধরলো। দরজার ফুটো দিয়ে গন্ধটা এসে লাগলো ধলুর নাকে। হুহ! এই বাসায় আর থাকা যাবে না। অন্য বাসায় যেতে হবে। 

আরেকটা বাসায় এসে দরজায় ঠোকা দিলো ধলু। সেই বাসারও গিন্নি দরজার ওপাশ থেকে জিজ্ঞেস করলো,

-কে?

-আমি ধ...' নামটা বলতে গিয়ে থেমে গেল। না, এই নামটা বলা যাবে না। নামটা একটু পরিবর্তন করতে হবে। তাই সে আবার বললো,

-আমি ধলাৎকার।'

এই গিন্নিটা একটু কানে কম শুনে। ধলাৎকার না শুনে, সে 'বলাৎকার' শুনলো। তারপর শুরু হলো কেলেঙ্কারি। কাঁদতে কাঁদতে গিন্নিটা বললো,

-ভাই আমি বিধবা মহিলা। আমার এতবড় সর্বনাশ করতে এসো না, বলাৎকার করতে এসো না। আমি সমাজে মুখ দেখাতে পারবো না।'

কী আর করা! ধলু অন্য বাসায় এলো আশ্রয়ের আশায়। দরজায় ঠোকা দিতেই ওপাশ থেকে একজন পুরুষ জিজ্ঞেস করলো,

-কে?'

ধলু এবার নিজের নামটা না বলে, অন্য নাম বললো,

-আমি কাশেম?'

-কোন কাশেম? কোনো কাশেমকে আমি চিনি না।

-আমাকে চিনবেন না। আমি একটু আশ্রয় চাই।

-কিন্তু তুমি মানুষ তো? নাকি আত্মা?'

আত্মার কথা শুনে ধলুর ভয় বেড়ে গেল। সে ভয়ে ভয়ে বললো,

-না ভাই, আমি মানুষ। তাড়াতাড়ি দরজা খুলুন, বাইরে ভয় করতেছে আমার।'

লোকটা দরজা খুলে ধলুকে মুখে মাটি মাখা অবস্থায় দেখে জিজ্ঞেস করলো,

-কী ব্যাপার, এসব কী?

-কিছু না ভাই। মাটির মেকআপ এটা। ত্বকের জন্য উপকারী। আপনিও শুরু করতে পারেন কাল থেকে।'

লোকটা আর কিছু বললো না। মনেমনে সে ভয় পাচ্ছে। এটা কালুর আত্মা না তো। হাত পায়ের রং তো কালো, কালুর রংও এরকম ছিল। যদি সত্যি সত্যি এটা কালুর আত্মা হয়, তাহলে তো রক্ষা নাই। একটু খাতির যত্ন করলে হয়তো কালুর আত্মা তাকে ক্ষমা করে দেবে, এটা ভেবে সে বললো,

-আপনি আমার এখানে আরামে থাকুন। আমি কিন্তু খুব ভালো মানুষ। কখনও কারও ক্ষতি করি না, কাউকে একটা ঠোকাও দিইনি কখনও। কালুকেও কখনও ঠোকা দিইনি।'

সর্বনাশ! এই লোকটা দেখি কালুকে চিনে। এই লোকের সামনে ভুলেও নিজের চেহারা দেখানো যাবে না। নিজেকে সামলিয়ে ধলু বললো,

-তা তো দেখতেই পাচ্ছি, আপনি ভালো মানুষ। আমাকে একটু জায়গা করে দেন। ঘুমাবো।'

লোকটা ধলুকে জায়গা করে দিলো। শুইতে শুইতে ধলু জিজ্ঞেস করলো, 

-আপনার বাসায় আর কেউ থাকে না?

-আমি আর রাজা থাকি।

-রাজা কই?

-ঐ তো।' বলে একটা বিড়ালের দিকে ইশারা করলো লোকটা।

ধলু মনেমনে বললো,

'শালার বিলাই, তুই বিলাই হয়েও এতো সুন্দর, খানদানি নাম পেলি। আর আমি কী পেলাম?'

বিড়ালটা মনে হয় ধলুর মনের কথা বুঝতে পেরেছে। কটমট দৃষ্টিতে তাকালো ধলুর দিকে। যেন বলতে চাইছে,

'আমাকে তুই গালি দিলি? দাঁড়া, আজ তোকে দেখে নেবো।'

.

.

ধলু ঘুমিয়ে পড়েছিল। হঠাৎ উপর থেকে তার মুখে পানি পড়ায় ঘুমটা ভেঙে গেল। ধলু তার আশ্রয়দাতার উদ্দেশ্যে বললো,

-ও ভাই, বাড়িতে বৃষ্টি পড়ে নাকি?'

ডাক দিয়েই সে ভাবতে লাগলো, 'কী ব্যাপার বৃষ্টির পানি এমন নোনতা আর বাজে গন্ধ কেন হবে?'

তখনই সে শুনলো রাজা নামের বিড়ালটা "ম্যাও ম্যাও" করে মাচার উপর দিয়ে চলে যাচ্ছি। এদিকে তার মুখে যে মাটির মেকআপ ছিল তা ধুয়ে মুছে গেছে রাজার নলকূপের পানিতে। ধলুর ডাক শুনে একটুপর তার আশ্রয়দাতা এলো,

-কী হয়েছে ভাই, কী হয়েছে?' এটা জিজ্ঞেস করতে গিয়ে আর জিজ্ঞেস করা হলো না, কাইল্লা চোরার চেহারাটা সামনে দেখে জোরে চিৎকার দিয়ে উঠলো। তারপর দরজা খুলে পালিয়ে গেল। ধলু ভাবলো, লোকটা হয়তো সবাইকে ডাকতে গেছে। এখানে আর থাকা যাবে না। এখনই পালাতে হবে এখান থেকে। মুখটা হাত দিয়ে মুছে, সেও বেরিয়ে এলো বাসাটা থেকে....

.

.

.

_____পর্ব:-০৪(শেষ পর্ব)______

.

পরদিন গ্রামে এক সাধু বাবা ডাকা হলো গ্রাম থেকে কাইল্লা চোরার আত্মা দূর করতে। সাধু বাবা সারা গ্রামে একবার চক্কর দিয়ে এসে একটা বটগাছের নিচে এসে দাঁড়ালেন। লম্বা লম্বা দাড়িতে হাত বুলিয়ে গ্রামবাসীর উদ্দেশ্যে বললেন,

-এই গ্রামে পাপ লেগেছে পাপ, ধ্বংস করে ছাড়বে...'

কিছু জনতা ভয়েভয়ে প্রশ্ন করলো,

-এখন উপায়?

-ভয় নেই, আমি তো আছি। তবে টাকা একটু বেশি খরচ হবে। এই আত্মাটা গ্রাম থেকে তাড়াতে আমাকে অনেক কষ্ট করতে হবে, তাই আমার ফিও একটু বেশি।'

সাধুবাবার কথা শোনে একজন বললো,

-বাবা, আপনি যতো টাকা চান, আমরা দেবো। তবুও এই আত্মাটাকে গ্রাম থেকে দূর করুন। আত্মাটা আমার খুব সমস্যা করতেছে। 

-কেন? কী করেছে তোমাকে?

-লজ্জার কথা কী বলবো বাবা? ঘুমানোর সময় কখনও আমার লুঙ্গি খুলে যায় না। কিন্তু আজ সকালে ঘুম ভাঙতেই দেখি আমার লুঙ্গিটা গলায় চলে এসেছে। আমি নিশ্চিত বাবা, এটা কাইল্লা চোরার আত্মার কাজ।

-তুমি ঠিক ধরেছো, এটা আত্মাটার কাজ। এভাবে সে সবাইকে জালাবে।'

সাধু বাবার কথা শেষ হতেই একজন মহিলা বললো,

-হ্যাঁ বাবা, গতরাতে তো ও আমাদের বাসায় এসেছিল নাম পাল্টিয়ে, আমার স্বামী তো...' 

পরের ইতিহাসটা আর বলতে দিলো না মহিলার স্বামী। কারণ এতে তার ইজ্জত জড়িয়ে আছে। স্ত্রীকে বাধা দিয়ে স্বামী বললো,

-ঐ আর কি বাবা, আমি একটু ভয় পেয়েছিলাম।'

এবার সাধু বাবা বললেন,

-এবার বুঝো, এখন থেকেই আত্মাটা সবাইকে জালাতন শুরু করেছে। ওটাকে তাড়াতে ফি একটু বেশি লাগবে।'

তখন আরেকজন উঠে বললো,

-আমরা সবাই টাকা দিতে রাজি বাবা। আপনি কাজ করুন। নয়তো আমাকে আত্মাটা মেরে ফেলবে। গতরাতে আমাকে মারতে গেছিল আত্মাটা মুখে মাটি মেখে। আমি জিজ্ঞেস করায় আরও বলে কি না ওটা নাকি মাটির মেকআপ। আমি তখনই সন্দেহ করেছিলাম ওটা কাইল্লা চোরার আত্মা। কিন্তু আমার রাজা, রাজা মানে আমার বিড়ালটা ঠিকই চিনেছে ওকে। পশুপাখিরা নাকি এসব খারাপ আত্মা দেখলেই চিনে। আমার রাজাও চিনেছে, কিন্তু কীভাবে সেটা আমাকে বলবে? তাই মাঝরাতে আত্মাটার মুখে মুতে দিয়ে মাটির মেকআপটা সরিয়ে দিয়েছে। যাতে আমি চিনতে পারি। রাজার কারণেই এ যাত্রায় আমি বেঁচে গেলাম। পরেরবার কী হবে জানি না। আপনি তার আগেই আত্মাটা দূর করুন গ্রাম থেকে। আমরা সবাই টাকা তুলতেছি।

-বেশ! আমি তাহলে সাধনা করে কাইল্লা চোরার আত্মাটা ডাকতেছি।'

-বাবা, কী বলেন? ও এখানে আসলে তো আমাদের ছাড়বে না।'

সাধু বাবার কথায় জনতা ভয় পেয়ে গেল। সাধু বাবা তাদের অভয় দিয়ে বললেন,

-ভয় নেই, তোমাদের কিছুই করবে না। আমি ওর সাথে কথা বলে চলে যেতে বলবো।'

.

.

এরপর সাধুবাবা চোখ বন্ধ করে ধ্যানে বসলেন। ওদিক থেকে ধলু সবাইকে বটগাছতলায় দেখে সব সত্যি স্বীকার করার জন্য আসছিল। যেভাবে হোক আজ সবার ভুল ভেঙে দিবে সে। তাকে আসতে দেখে জনতা কাঁপতে লাগলো। কয়েকজন ভয়েভয়ে সাধু বাবাকে বললো,

-বাবা, ও আসতেছে... বাবা ও কাছে চলে এসেছে।'

-আরে কী হয়েছে, ধ্যানের সময় ডিস্টার্ব করো কেন মশায়?' সাধু বাবা একটু রেগে গেলেন। তখন একজন ধলুর দিকে ইশারা করে সাধু বাবাকে বললো,

-বাবা, কাইল্লা চোরার আত্মা চলে এসেছে।'

ধলুকে দেখে আত্মা ভেবে সাধু বাবাও ভয় পেয়ে গেলেন। তাড়াতাড়ি করে উঠে পালিয়ে যেতে চাইলেন উনি। আত্মার সামনে পড়ে এভাবে নিজের জানটা হারাতে চান না উনি। বেঁচে থাকলে এরকম অনেক টাকা আয় করা যাবে। কিন্তু একটা জিনিস বুঝে উঠতে পারছে না সাধু বাবা, তার এমন ভণ্ড ধ্যানে কী করে আত্মাটা চলে এলো?


.

সাধু বাবা আর পালাতে পারলেন না, তার আগেই ধলু এসে তার পা ধরে বললো,

-বাবা, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন বাবা, এখানে সবচেয়ে আপনাকে ভালো লোক মনে হচ্ছে, দাড়িগোঁফ আছে। সবাইকে একটু বলুন আমাকে না মারতে।'

দাড়ির কথা শুনেই সাধু বাবা তার নকল দাড়িটা ঠিকঠাক করে নিলো। পালিয়ে যেতে চাওয়ার সময়, তার নকল দাড়িটা ডানপাশে একটু উঠে গিয়েছিল। সেটা ঠিক করে ধলুকে বললেন,

-বেশ! তার আগে বলো তুমি এই গ্রাম থেকে চলে যাবে। আমি এই গ্রামে এসেছি আত্মা দূর করতে। তোমার মতো অনেক আত্মাকে বশ করেছি। প্রয়োজনে মেরেছি। তুমি যদি এই গ্রাম থেকে না যাও, তাহলে তোমার অবস্থাও ওসব আত্মাদের মতো হবে।'

সাধু বাবা এখন আর ভয় পাচ্ছেন না। কেন ভয় পাবেন? আত্মা স্বয়ং তার পা ধরে ক্ষমা চাচ্ছে, এটা তো গর্বের বিষয়। সাধু বাবা বুক ফুলিয়ে সবার দিকে তাকালেন, যেন বলতে চাইলেন, 'দেখলে তো আমার কেরামতি! যেই সেই বাবা না আমি। স্বয়ং আত্মা পর্যন্ত ভয় পায় আমাকে।'

কিন্তু ধলুর পরের কথায় সাধু বাবা হতাশ হলেন। ধলু বললো,

-বাবা, আমি তো আত্মা না।'

-কী বললা তুমি? তুমি আত্মা না? আমার সামনে মিথ্যে কথা?'

-হ্যাঁ, বাবা ও মিথ্যে বলছে। ও আত্মা। ওকে আমরা মেরে গতকাল কবর দিয়েছিলাম। কিন্তু রাতে দেখি, ও আবার কবর থেকে উঠে বসেছে।'

জনতার কথায় ধলু বুঝলো কেন ওরা তাকে আত্মা মনে করছে। কালুর মৃত্যুর কথা শুনে সে খুশি হলো, কিন্তু কষ্টও পেল। ভাই বলে কথা। সবার মিথ্যে ধারণাটা ঠিক করে দেওয়ার জন্য ধলু হেসে বললো,

-আপনারা ভুল করছেন, আপনারা যাকে মেরেছেন ও আমার ভাই কালু, আর আমি ধলু।'

জনতা এবার ক্ষেপে গেল। ক্ষেপে গিয়ে বললো,

-দেখলেন সাধু বাবা, ও কতবড় মিথ্যেবাদী চোর! মরার পরও খারাপ রয়ে গেল। ও যদি ধলু হয়, তাহলে দেখতে এমন কালো কেন? ও আসলে কালুর আত্মা। আপনার সামনে বাঁচার জন্য এরকম করতেছে।'

জনতার কথা শোনে সাধু বাবার বুকটা আরেকটু ফুলে উঠলো। তিনি বললেন,

-হ্যাঁ, তাই তো দেখতেছি। আমি না থাকলে যে আজ কী হতো! যাইহোক, ও যতক্ষণ মিথ্যে বলবে, ততক্ষণ ওকে ধরে সবাই মারতে থাকো। আর তোমরা যে টাকাগুলো তুলেছো, ওগুলো আমাকে দিয়ে দাও, আমার আবার একটু তাড়া আছে, চলে যেতে হবে।'

-কিন্তু বাবা, আপনি চলে যাওয়ার পর যদি ও আবার আমাদের মারে?

-আরে মারবে না। আমি দূর থেকেই কন্ট্রোল করবো আত্মাটাকে।

-আচ্ছা বাবা...'

.

.

সাধু বাবা টাকা নিয়ে চলে যেতেই জনতা ধলুকে মারতে শুরু করলো, আর বলতে লাগলো।

-শালার আত্মা, যতক্ষণ গ্রাম ছেড়ে যাবি না, ততক্ষণ তোকে মারতে থাকবো।' 

বেচারা ধলুর আর মার খাওয়ার শক্তি নাই। যে শক্তিটুকু তার গায়ে অবশিষ্ট ছিল, সেই শক্তি দিয়েই সে বললো,

-ভাইরে, আমাকে আর মেরো না। আমি এখনই চলে যাচ্ছি এই গ্রাম ছেড়ে।'

ধলুর কথায় জনতা মার থামিয়ে বললো,

-তাহলে চলে যাও।'

-যাচ্ছি, তোমরা দুইমিনিট চোখ বন্ধ করো। এরই মধ্যে আমি চলে যাবো।

-কেন? চোখ বন্ধ করবো কেন?

-আমি তো আত্মা। আর আত্মা তো সবার সামনে উধাও হতে পারে না...

-ঠিক আছে, আমরা চোখ বন্ধ করলাম।' বলেই সবাই চোখ বন্ধ করলো। একজন চোখ বন্ধ করে নিজের লুঙ্গিটা শক্ত করে ধরে থাকলো, যাতে কাইল্লা চোরার আত্মা উধাও হওয়ার সময় তার লুঙ্গিসহ উধাও না হয়।

 সবাইকে চোখ বন্ধ করতে দেখে ধলু যেন আবার সব শক্তি ফিরে পেয়েছে। এমন এক দৌড় দিলো, জনতা চোখ খুলে আর তাকে দেখলো না। 

দৌড়াতে দৌড়াতে ধলু তার ভাইয়ের কবরের পাশে এসে থামলো। তারপর কবরের দিকে তাকিয়ে আফসোস করে বললো,

-ভাইরে, তুই মরে গিয়েও আমায় শান্তি দিলি না....

.

.

(সমাপ্ত)

.

.

এমন আরও পর্বের গল্প পড়ুন।