গভীর ভালোবাসার গল্প
গল্পঃ_গার্লফ্রেন্ড_যখন_ভাবি (পর্ব_০১)
লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।
বড় ভাইয়ার জন্য বউ দেখতে গিয়ে চোখ কপালে উঠে গেলো😯😯। এটা কে.? এটা তো লাবনি? যাকে চার বছর আগে হারাইছি।
কিন্তু লাবনির সাথে আমার ভাইয়ার বিয়ে কিভাবে 😠😠 কিছই বুঝতে পারছি না।
মেয়েটা আমাকে দেখে রীতিমতো চমকে গেছে। মেয়েটা ঘামতে শুরু করছে সাথে আমিও।
কারন দুজন দুজনকে এখনো অনেক ভালোবাসি। শুধু রিলেশনটাই নেই।
কিছুক্ষণ পর ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি সে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। থাকারই কথা? কারন লাবনিকে যে দেখবে তারই পছন্দ হবে।
ভদ্র চুপচাপ নিরব প্রকৃতির মেয়ে। সেই সাথে রূপবতী তো আছে। কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে উঠেই তার উপর ক্রাশ খাইছিলাম।
কিন্তু সমস্যা ছিলো লাবনি আমার সিনিয়র,,পুরাে এক ইয়ারের। তখন সে সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে।
তার পেছনে ঘুরঘুর করতাম।। যেটা তার মোটেও ভালো লাগতো না। তবে আমিও হাল ছেড়ে দেইনি। প্রতিদিন তার জন্য অপেক্ষায় থাকতাম রাস্তার পাশে। কিন্তু লাবনি ফিরেও দেখতো না। আচ্ছা চলুন অতীতে ফিরে না হলে কিছুই বুঝবেন না। ৪ বছর আগের ঘটনা 👇👇
^^
^^
রাস্তার পাশে প্রতিদিন অপেক্ষা কারার পরেও লাবনির সাথে কোনো কথা বলতে পারতাম না।
মেয়েটা কলেজে এসে মাঝে মাঝে আমার দিকে রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে থাকতো।। তবে বুঝতাম না কেনো তাকাতো। আমি আমার মতো তার জন্য অপেক্ষা করতাম। কলেজেও নজরে রাখতাম।
কিন্তু এভাবে আর কতদিন। বুঝে গেছিলাম মেয়েটির সাথে আমার আর কথা বলা হবে না। তাই ভাবলাম মেয়েটাকে একবার বলেই দেখি কি হয়।
সেদিন সকাল সকাল বের হয়ে রাস্তার পাশে অপেক্ষা করছিলাম। যেহেতু সে আমার সিনিয়র তাই কলেজে বলার কোনো উপায় ছিলো না।। কারন বড় ভাইয়েরা আছেই তাই।
মেয়েটা ধীর পায়ে এগোতে লাগলো।। আমার হার্টবিট বাড়তে লাগলো। মেয়েটা কাছে আসতেই আমি বলে দিলাম........
আমিঃ--আপু I Love You....
বিশ্বাস করেন..মেয়েটা সেদিন আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে ছিলো। আমি প্রথম বার সরাসরি তার চোখের দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে গেছিলাম।
আর কোনো কিছু শোনার অপেক্ষা না করে দিলাম এক দৌড়।
কিন্তু বেশিক্ষন দৌড়াতে পারিনি। আনমনে দৌড়ানোর সময় হটাৎ করে একটা বাইক এসে মেরে দিয়ে যায় আমাকে।। রাস্তার মাঝখানে পড়ে ব্যাথায় কোকাচ্ছি।
অনেকটা কেটে গেছে, সেই সাথে মাথা ফেটে গেছে। উঠতে পারছি না। চোখ বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত শুধু লাবনিকে দেখেছিলাম। আর চোখ খোলার পরেও তাকেই দেখলাম।
মেয়েটা হাসপাতালে নিয়ে আসছে আমাকে। আমার মাথার পাশে বসে বসে কাঁদতেছে। মেয়েটার মায়াবি মুখটা এখনো আমার চোখে ভাসে।
সেদিন কিছু বলতে পারলাম না।। তবে বুঝতে পারলাম মেয়েটাও আমাকে ভালোবাসে। যাওয়ার আগে লাবনি একটা কথাই বলে গেছিলো.......
লাবনিঃ--এরপর থেকে সাবধানে চলবা। আর আপু বলছো কেনো? তাইতো ওভাবে তাকাইছিলাম??
আর আমি তার ওমন চাহনি দেখে সোজা হাসপাতালে।
রিলেশন ছিলো এক বছর। তার বাবার ট্রান্সফার আর তার পরিক্ষার পর অন্য যায়গায় চলে যাওয়া এই দুইটা কারনেই ব্রেকআপ হয়েছিলো আমাদের। এটাই ভাবছেন। না আসলে এসবের কিছুই না।
লাবনি আরেকটা ছেলের সাথে মেলামেশা করতো,যেটা আমার মোটেও ভালো লাগতো না।
অনেকবার মানা করার পরেও সে শুনেনি আমার কথা। একদিন বলে ছিলাম....কি এমন রিলেশন তোমাদের। যার কারনে সেদিন একটা থাপ্পড় মেরে ব্রেকআপ করে দিয়েছিলো। অনেক কষ্ট পাইছিলাম সেদিন।
তার কিছুদিন পর দেখি সত্যিই ছেলেটার সাথে রিলেশন আছে লাবনির। আর কি, আমি ছেড়ে দিলাম এই শহর।
চলে আসলাম ঢাকায়। তারপর কেটে গেছে চার বছর।
লাবনির সাথে এই ৪ বছরে দেখাও হয়নি কথাও হয়নি।
তবে ফেসবুক আইডিটা ছিলো। প্রতিদিন তার
টাইমলাইন ঘুরে আসতাম। আর দেখতাম মেয়েটা ছবি আপলোড দিছে সেই ছেলেটাকে সাথে নিয়ে।
চলুন এবার বাস্তবে যাই। অতিত খুবই বোরিং বাস্তবটা উত্তেজনায় ভরপুর। এতক্ষণ তো চার বছর আগের ঘটনা বললাম। এখন চার বছর পরের ঘটনা👇👇👇
আব্বুঃ--অপুর্ব কেমন লেগেছে তোর??
আমিঃ--আব্বু বিয়েটা ভাইয়ার তাকে জিজ্ঞেস
করলেই পারো??
ভাইয়া আমার দিকে রাগি লুক নিয়ে তাকালো। আমি আপন মনে হাসতে লাগলাম। আমার আর লাবনির সম্পর্কটা ক্রস কানেকশন। প্রথমে বড় আপু তারপর গার্লফ্রেন্ড। তারপর এক্স গার্লফ্রেন্ড আর আজকে ভাবি। হিহিহি....
ভাবি কেনো বললাম জানেন? কারন মেয়েটাকে সবারই পছন্দ হয়েছে।
হঠাৎ আমি তাকালাম লাবনির ঠিক পিছনে,, তার ছোট বোনের দিকে। অনেক বড় হয়ে গেছে। আর লাবনির মতোই সুন্দরি।। মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমিও একদৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে ভাবছি দুই ভাই এক বাড়িতেই বিয়ে করবো।
তবে লাবনির দিকে তাকিয়ে আরেক-টা জিনিস ভাবিয়ে তুললো ছেলেটার কি হলো,যার সাথে লাবনির রিলেশন ছিলো। তাহলে কি ব্রেকআপ হইছে। কাজের চাপে লাস্ট দুই মাস লাবনির প্রোফাইল চেকই করা হয়নি।
সে যাইহোক এসব ভেবে লাভ নেই। কিছুক্ষণ পর আব্বু জুয়েলকে বললো..........
আব্বুঃ--তোরা যা কথা বল আলাদা রুমে??
জুয়েল আবার আমাকে নিয়ে গেলো। বলেন তো কেমন লাগে। আমি রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছি হঠাৎ মেয়েটা আসলো আর আমাকে বললো........
মেয়েটাঃ--ভাইয়া একা দাঁড়িয়ে আছেন যে.??
আমিঃ--কি করবো বলো তাদের সাথে তো আর
যেতে পারবো না??
মেয়েটাঃ--আচ্ছা চলুন আপনাকে পুরো বাড়িটা
ঘুরিয়ে দেখাই??
আমিঃ--আচ্ছা চলো??
এরপর আমি মেয়েটার পেছন পেছন হাঁটতে লাগলাম। মেয়েটা সবকিছু দেখাতে লাগলো। সবশেষে গেলাম ছাদে? ছাদে গিয়ে আমি বললাম.....
আমিঃ--আচ্ছা তোমার নামটা কি??
মেয়েটাঃ--নিলা.??
আমিঃ--তোমার নামটা তো খুব সুন্দর.??
নিলাঃ--জ্বি ভাইয়া। আপনার নামটা কি??
আমিঃ--অপুর্ব ইসলাম.??
নিলাঃ--কি বললেন??
আমিঃ--অপুর্ব ইসলাম??
নিলাঃ--আপনার নামটা আপনার মতোই কিউট আছে??
আমিঃ--আচ্ছা তুমি কোন ক্লাসে পড়ো??
নিলাঃ--ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার??
আমিঃ--আচ্ছা তোমার নাম্বারটা দাওতো??
নিলাঃ--কেনো??
আমিঃ--এমনি দাও.??
নিলাঃ--সরি ভাইয়া নাম্বার দিতে পারবো না??
আমিঃ--আচ্ছা সমস্যা নেই??
নিলাঃ--তবে ফেসবুক আইডি পেতে পারেন??
এতো মেঘ না চাইতেই জল। কথা বলা শেষ করে নিচে নামতেই ধাক্বা খেলাম লাবনির সাথে। তারপর আমি বললাম........
আমিঃ--সরি আমি আসলে দেখি নাই??
লাবনিঃ--ইটস ওকে??
তার হাতের আলতো স্পর্শে মনটাকে আবারও আঘাত করলো।শুকিয়ে যাওয়া ক্ষতটা আবারো ভিজে উঠলো। চোখ দুটি জলে ভিজে উঠার আগেই চলে আসলাম।
এরপর বাসা থেকে বের হয়ে গাড়িতে গিয়ে বসলাম। সবাই কথা বলতেছে ভিতরে।
আব্বু কিছুক্ষন তাকিয়ে ছিলো আমার দিকে,,তবে কিছু বুঝতে পারেনি। তার আগেই চলে এসেছি।
লাস্ট যেদিন তার হাত ধরে হাটছিলাম সেদিন খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছিলো আর বলেছিলো ভালোবাসি! কখনো ছেড়ে যাবো না।
অথচ সেই আজ কত দূরে। আজ অনেক দিন পর সেই আলতো স্পর্শে অনেক সৃতি মনে পড়ে গেলো। চোখটা ভিজে গেছে।
হাহাহা চার বছরেও নিজেকে বদলাতে পারিনি।। এখনো বাচ্চাদের মত কান্না করি। ইমোশনাল গুলা আর গেলো না। গাড়িতে বসে ভাবছি নিলিমার কথা। কিছুদিন পরই সে আমার ভাবি হয়ে যাবে। তখন নিজেকে সামলাবো কিভাবে? বাসায়ই থাকবো না তখনই ভালো হবে।
^^
^^
বসে বসে অতীত আর ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতেছি। হঠাৎ নিলা মেয়েটা এসে ডাক দিলো.......
নিলাঃ--ভাইয়া?
কোনো মতে চোখটা মুছে উত্তর দিলাম.....
আমিঃ--হ্যা বলো??
নিলাঃ--আপনার নাম্বারটা....??
আমিঃ--০১৮ *** ০৮ ৫৫৫..??
নিলাঃ--আমি কল দিবো রাতে??
আমিঃ--আচ্ছা দিও??
তারপর নিলা চলে গেলো।লাবনির তো বিয়ে হয়ে যাবে! আমাকেও বিয়ে করতে হবে। বিয়েতো নিলাকে করবো। আর সেটা একই সাথে একই দিনে। তারপর রোমান্স করবো লাবনিকে দেখিয়ে দেখিয়ে।
আমি কেনো একা থাকবো? সে তো কখনো কষ্ট পায়নি, আমি কেনো পাবো? আমাকে ছেড়ে দেওয়ার পর তার জিবনে অন্য কেউ একজন ছিলো। আর তাকে ছেড়ে দেওয়ার পর এখন তার বিয়ে।। সুতরাং খারাপ থাকার তো কোনো কারনই নাই।
তার একাকীত্ব দূর করার জন্য সব সময় কেউ না কেউ ছিলো। তবে আমি কেনো আজও একা আছি।। কেনো নিজে নিজেই কষ্ট পাচ্ছি। সে পারলে আমি কেনো পারবো না।
সবচেয়ে বড় কথা হলো নিলাকে ভালো লাগছে। নিলাও
আমাকে পছন্দ করে মনে হয়। এই সুযোগে বিয়েটাও সেরে ফেলা যাবে! একাও থাকতে হবে না। কষ্টও পেতে হবে না। একটু পর আব্বু আমকে বলে উঠলো...........
আব্বুঃ--কিরে চলে আসলি কেনো??
আমিঃ--এমনি.??
সবাই গাড়িতে উঠলো।। ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট করলো।
কিছুক্ষণ পর আমার ছোট বোন অরিন বললো........
অরিনঃ--ভাইয়া মেয়ে পছন্দ হইছে তো??
জুয়েলঃ--আমি কি বলবো। তোদের পছন্দ হইছে
নাকি সেটা বললেই হয়??
আম্মুঃ--আমাদের তো অনেক পছন্দ হইছে। কিরে অপুর্ব তোর কেমন লাগছে মেয়েটাকে??
হিহি যে মেয়ের ভালোবাসার জন্য আজও চোখের পানি ফেলি। আর আমাকে বলতেছে মেয়েকে কেমন লাগছে।
তারপর আমি বললাম........
আমিঃ--মেয়ে তো দেখতে সুন্দর আছে আর
ভাইয়ার সাথে মানাবেও ভালো??
আব্বুঃ--তাহলে হয়েই গেলো। রাতে ওদের ফোন
দিয়ে জানাবো বিয়ের কথা??
অরিনঃ--সেটাই ভালো হবে। আমিও একটা ভাবি পাবো? কিরে তুই কবে বিয়ে করবি??
আমিঃ--করবো করবো কিছুদিন পর? আগে সবকিছু গুছিয়ে নেই তারপর? কিন্তু তার আগে তোকে বিয়ে দিয়ে দিবো??
অরিনঃ--আম্মু দেখো কি বলে??
আমিঃ--হাহাহা..??
ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখলাম মিটি মিটি হাসতেছে।।
সবার পছন্দ হইছে অনেক। কোনো ঝামেলা করে লাভ নাই। ভাইয়ার সাথে বিয়ে হচ্ছে হোক। আর এমনিতেও আমি আর ওকে বিশ্বাস করতে পারবো না।
যতই ভালোবাসি না কেনো,বিশ্বাস একবার ভেঙে গেলে আর জোড়া লাগে না। তবে মেয়েটার ছলছল চোখের চাহনি আমাকে কষ্ট কেনো দিতেছে।।
বাসায় এসে রুমে গিয়ে বিছানায় ফোনটা রেখে গোসল করতে ওয়াশ রুমে চলে গেলাম। নিজেকে সামলাতে হবে।এতো ইমোশনাল হলে চলবে না। একটা মায়াজাল আমাকে জড়িয়ে রেখেছে। না পারি ভুলে থাকতে না পারি ফিরতে।।সব রাস্তা যে বন্ধ। নিরব অনুভূতিই বেশি কষ্ট দেয়।
কিছুক্ষণ পর গোসল শেষ করে বাহিরে চলে আসলাম। অনেক বার ভাবলাম, আর ভাববো না তার কথা! তারপরেও পারলাম না। কেনো জানি তার কথাই ভাবতে ইচ্ছা করছে। কেনো যে দেখা হইছে আল্লাহ ভালো জানে। কখনো ভাবিনি এভাবে দেখা হয়ে যাবে।
যাইহোক দেখা হইছে এরপর কথা হবে।। আরো অনেক কিছুই হয়তো হবে। তবে তার আগেই নিলাকে নিজের করে নিতে হবে। যাতে কষ্টটা কমে যায়। আর নিলাকে ভালোবাসতে পারলে তো কথাই নাই।। তখন আর মনে পড়বে না লাবনির কথা।
রাতে খাওয়া শেষ করে ছাদে দাঁড়িয়ে আছি সিগারেট।। জিনিসটা ছাড়া আমি আর আমার গল্পগুলো অসম্পূর্ণ।
প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে মাত্র ধরাইছি
ঠিক তখনই ফোন আসলো। ফোনটা রিসিভ করলাম....
আমিঃ--হ্যালো??☺
ওপাশ থেকেঃ--আসসালামু আলাইকুম??
ওপাশ থেকেঃ--ওয়ালাইকুম আসসালাম??
ওপাশ থেকেঃ--জ্বি চিনতে পারছেন আমাকে??
আমিঃ--সরি কে আপনি??
ওপাশ থেকেঃ--নিলা..??😒
আমিঃ--ওহ সরি তুমি??
নিলাঃ--হুমম.??
আমিঃ--তো কেমন আছো বলো??
নিলাঃ--জ্বি ভালো আপনি??
আমিঃ--হুমম ভালো??
নিলাঃ--আপনি কি ফ্রি আছেন??
আমিঃ--হ্যা কেনো??
নিলাঃ--না মানে কালকে দেখা করতাম একটু।
সময় হবে??
আমিঃ--জ্বি কোথায় দেখা করবে বলো??
নিলাঃ--আচ্ছা সকালে ***** এই যায়গায়
আইসেন??
আমিঃ--আচ্ছা ঠিক আছে??
এরপর আরো কিছুক্ষণ কথা বলে কলটা কেটে দিলাম।
কিন্তু কিছুতেই বুঝতে পারছি না নিলা কেনো কালকে ডাকলো।। নিলা কি একা আসবে নাকি লাবনিও সাথে আসবে। কিছুক্ষন ভাবলাম তারপরেই........
-গল্পঃ_গার্লফ্রেন্ড_যখন_ভাবি (পর্ব_০২)
-লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।
যদি একা আসে তাহলে তো ভালো, আর যদি লাবনিকে নিয়ে আসে তাহলে তো সমস্যা। হয়তো অনেক কিছু গোলমাল হয়ে যাবে।
লাবনিকে একা পেয়ে হয়তো কথা বলার ইচ্ছেটা প্রচন্ড বেড়ে যাবে। বলতে পারবো কি না জানিনা। অনেক কথাই তো জমে আছে। আর কয়েকটা প্রশ্ন যে গুলোর উত্তর না জানলে হয়তো জীবনটা এই রকম কষ্টের মধ্যেই কাটবে।
এখন আর এসব চিন্তা করে লাভ নেই।। যা হওয়ার তা হবেই। দেখাই যাক না কি হয়। একটা রাত পরে দেখা হচ্ছে।। সিগারেট শেষ করে রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।
পরের দিন সকাল বেলায় ঘুম ভাঙতেই খেয়াল করলাম ৮ টা বেজে গেছে! ৯ টায় যেতে হবে। তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।
তারপর হালকা নাস্তা খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম। পাশ দিয়ে রিক্সা চলে গেলো কয়টা। আমি হাঁটছি আর ভাবতেছি যদি সত্তিই ভাইয়ার সাথে নিলিমার বিয়ে হয় তাহলে কি আমি এক বাড়িতে থাকতে পারবো!! নাকি নিজেকে সামলাতে পারবো না😔।
লাবনি কি পারবে সামলাতে।। তার তো কোনো সমস্যা হবে না। কারন একটার পর একটা তার লাইফে আছে। সেখানে আমি থাকলেই কি আর না থাকলেই কি।
এসব ভাবতে ভাবতে চলে আসলাম জায়গাটায়।। কিন্তু কেউ নাই এখানে। নিরিবিলি একটা জায়গাম। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি আরো ৬ মিনিট সময় বাকি আছে।
হালকা রোদ্দুরে হালকা ছায়া ভালোই লাগতেছে আজ প্রকৃতিকে। কিন্তু কেনো জানি মনটা উদাস।।
আবার অস্থিরতা কাজ করছে কে আসবে সেটা ভেবে।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ০৯ঃ০১ বেজে গেছে।
কিছুক্ষন পর তাকিয়ে দেখি শাড়ি পড়া দুইটা মেয়ে আসতেছে। তার মানে লাবনিও আছে।
নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করলাম। মাথা নিচু করে আছি।
দুইজনে এসে আমার সামনে দাঁড়াতেই আমি মাথা নিচু করে ফেললাম। কি করবো! কি বলবো! কিছুই বুঝতে পারছি না। মস্তিষ্ক মনে হয় বিকল হয়ে যাবে এবার. একটু পর নিলা আমাকে বলে উঠলো.......
নিলাঃ--সানভি ভাইয়া আপু আপনার সাথে কথা
বলবে তাই আপনাকে ডাকা??
আমিঃ--কি কথা বলবেন,,বলেন ভাবি??
লাবনিঃ--নিলা তুই একটু ওদিকে যা.??
নিলাঃ--আচ্ছা যাচ্ছি.??
আমিঃ--জ্বি ভাবি বলুন কি বলবেন??
লাবনিঃ--তুমি ভাবি কেনো বলতেছো??
আমিঃ--তো কি বলবো। কয়দিন পরেই তো আপনার বিয়ে আমার ভাইয়ের সাথে। তখন তো ভাবি বলতে
হবে। তাই এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছি আরকি??
লাবনিঃ--হ্যা কয়দিন পর বিয়ে। এখনো তো আর
বিয়ে হয়নি তাইনা??
আমিঃ--হয়নি তবে খুব শিঘ্রই হবে??
লাবনিঃ--আচ্ছা যেটা বলতে আসছিলাম??
আমিঃ--জ্বি ভাবি বলুন??
লাবনিঃ-- I am sorry.. I am sorry for everything.. তোমার সাথে অনেক খারাপ করেছি। আমি তার জন্য মাফ চাইতে এসেছি। আমাকে মাফ করে দিও??
আমিঃ--আরে ভাবি এটা কোনো কথা। আমি আপনাকে অনেক আগেই মাফ করে দিয়েছি আর আপনি যেহেতু আমার ভাবি তাই আর কিছু মনে রাখার দরকার নেই??
লাবনিঃ--দেখো অপুর্ব আমি সত্যিই চাই তোমাকে
কিন্তু এখন আর সম্ভব না??
আমিঃ--জ্বি ধন্যবাদ। তবে সম্ভব থাকলেও আর আমাকে পাবেন না??
লাবনিঃ--ঠিক আছে বেশি কথা বলতে পারবো না নিলা আছে। শুধু এটুকুই বলবো মাফ করে দিও??
আমিঃ--জি ভাবি অবশ্যই??
দুজন নিজেদের চোখের পানি মুছে আবার স্বাভাবিক হয়ে গেলাম। নিলাকে ডাক দিলাম.......
আমিঃ--নিলা এদিকে আসো??
নিলা আমাদের কাছে আসলো। আর বললো........
নিলাঃ--কথা বলা শেষ??
আমিঃ--হ্যা তোমার আপুও না! বিয়েই হয়নি এখনো তার মধ্যেই ভাইয়ার খোঁজ খবর নিতে চলে আসছে। ওহ সরি ভাইয়ার নাম্বারটা তো দিলাম না??
নিলাঃ--হুমম.??
আমিঃ-- নাম্বার টা নাও>>০১৮৫৮৫১৮***(বিঃদ্রঃ এটা আমার নাম্বার লাস্টে ** বসানো ডিজিটাল নাম্বার?
নিলাঃ--আচ্ছা সানভি ভাইয়া শুনুন আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে??
আমিঃ--হ্যা বলো.??
নিলাঃ--আপনি কবে বিয়ে করবেন??
আমিঃ--ভাবতেছি আমি আর ভাইয়া এক সাথে বিয়ে সেরে ফেলবো। দেখি ভালো মেয়ে পাই কিনা??
লাবনিঃ--খুঁজেন পেয়ে যাবেন??
আমিঃ--হ্যাদেখি যদি আপনার মতো কাওকে পাই তাহলে তো ভালোই হতো?? হাহাহা
লাবনিঃ--হুমম.??
আমিঃ--আচ্ছা আমি যাই আমার একটা
কাজ আছে??
নিলাঃ--একটা কথা ছিলো??
আমিঃ--কি কথা বলো??
নিলাঃ--এখন না পরে বলবো??
আমিঃ--আচ্ছা ভাবি আসি তাহলে??
বলেই চলে আসলাম। বুঝতে পারলাম নিজেকে সামলে নিতে কোনো সমস্যা হবে না।
কারন আমি লাবনির চোখে ভালোবাসা দেখিনি।। তার চোখ আজ কথা বলেনি। হ্যা সে কেঁদেছে। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে মেয়েরা ছিচ কাঁদুনি।। অল্পতেই কাঁদে দিতে পারে। আমরা ছেলেরা পারি না।
আমাদের ইমোশন মেয়েদের চাইতে বেশি! কিন্তু আমরা সেটা প্রকাশ করি না। আমরা কাঁদি আড়ালে লুকিয়ে কেউ দেখে না😣😣
হাঁটতে ইচ্ছা করছে না তাই রিকশা নিলাম। সারা রাস্তা ভাবলাম আজকে রাতে বাবাকে বলবো আমি নিলাকে বিয়ে করবো তাদের বাসায় প্রস্তাব দিতে।
আমি একা থাকলে সিওর কিছু একটা ঘটবে।যদি নিলা সাথে থাকে তাহলে নিজেকে অনেকটা সামলে নিতে পারবো।। কারন ওর চোখে স্পষ্ট ভালোবাসা দেখেছি।
বাসায় ঢুকে আগে আম্মুর রুমে চলে গেলাম।গিয়ে দেখি আম্মু আর অরিন বসে আছে রুমে। আমি রুমে ঢুকে আম্মুকে বললাম........
আমিঃ--আম্মু ক্ষুদা লাগছে??
আম্মুঃ--টেবিলে খাবার রাখা আছে খেয়ে নে.??
আমিঃ--তোমার হাতে খাবো। খাইয়ে দিবা??
আম্মুঃ--দেখ পাগল ছেলে কি বলে? এতো বড় হয়ে গেছে এখনো আম্মুর হাতে খেতে হবে??
আমিঃ--তুমি খাইয়ে দিবা কি না সেটা বলো??
অরিনঃ--ভাইয়া তোর জন্য একটা খুশির
খবর আছে??
আমিঃ--কি খুশির খবর??
অরিনঃ--তোকে খাইয়ে দেওয়ার জন্য একটা লোক আনবো ভাবতেছি। ভাবি বানিয়ে বিয়ে করবি??
অরিনঃ--আগে তোর বিয়ে দিবো তারপর আমি করবো??
অরিনঃ--আম্মু এবার কিন্তু ওকে মারবো আমি??
আমিঃ--আম্মু তুমি খাইয়ে দিবা কি না তাই বলো??
আম্মুঃ--আচ্ছা দিতেছি??
অরিনঃ--আমি কি করলাম তাহলে?? আমাকেও খাইয়ে দিতে হবে??
আম্মুঃ--আচ্ছা দুজনকেই খাইয়ে দিবো দাড়া খাবার নিয়ে আসতেছি??
আম্মু রুম থেকে বের হতেই অরিন এর গাল ধরে জোরে টেনে দিলাম। অরিনের সবচেয়ে অপছন্দের কাজ এটা।
অরিন রেগে গিয়ে আমার চুল টেনে দিলো। ভাই বোনের ঝগড়ার মধ্যে মন খারাপ উধাও হয়ে গেলো। আর আম্মুর হাতে খাবার খেয়ে লাবনির কথা ভুলেই গেলাম।
আমার মন খারাপ থাকলে চানাচুর খাই,,নয়তো আম্মুর হাতে খাবার খাই।মন খারাপ কোথায় চলে যায় নিজেও জানিনা। খাওয়া দাওয়া শেষ করে ঘুমালামম একটু।
বিকেলে ঘুম ভাংতেই দেখলাম নিলা কল দিয়েছিলো।
আমি উঠে ফ্রেস হলাম। তারপর ছাদে গিয়ে নিলাকে কল দিলাম। কলটা রিসিভ করতেই নিলা বললো.....
নিলাঃ--হ্যালো??
আমিঃ--হ্যা কল দিয়েছিলে দেখলাম??
নিলাঃ--হ্যা কেনো সমস্যা আছে আপনার??
আমিঃ--সমস্যা কেনো থাকবে??
নিলাঃ--তাহলে?(নিলা)
আমিঃ--কিছু না বলো কি বলবে??
নিলাঃ--না বলবো না??
আমিঃ--কেনো বলবা না??
নিলাঃ--কারন আপনি তখন আমার কল রিসিভ করেন নাই। আমি অনেক রাগ করছি তাই এখন বলবো না??
আমিঃ--আমি তখন ঘুমাচ্ছিলাম তাই রিসিভ করতে পারিনি??
নিলাঃ--আমি জানি না এতো কিছু।। আমি রাগ করছি এখন যদি আপনি রাগ ভাঙাতে পারেন তাহলে কথাটা বলবো নয়তো বলবো না??
আমিঃ--আচ্ছা একটা কথার উত্তর দাওতো??
নিলাঃ--কি কথা??
আমিঃ--তুমি বিয়ে করবা কবে??
নিলাঃ--সেটা আব্বু আম্মু জানে??
আমিঃ--আমাকে বিয়ে করবে??
নিলাঃ--মানে??
আমিঃ--মানে বিয়ে করবে আমাকে। তোমার আপু আর আমার ভাইয়া। আমি আর তুমি,করবে বিয়ে??
নিলাঃ--জানি না??
আমিঃ--আরে রাগ করলা নাকি? আমি তো মজা করতেছিলাম??
নিলাঃ--ওহ। রাগ করিনি আমি ভাবছিলাম সিরিয়াসলি বলছেন??
আমিঃ--আরে নাহ। তোমার তো বিয়ের বয়স হয়নি??
নিলাঃ--কিহ? আমার ১৮ বছর হয়েছে আরো দুই মাস আগেই??
আমিঃ--তারপরেও তুমি তো পিচ্চি এখনো। কেমন জানি বাচ্চা বাচ্চা লাগে??
নিলাঃ--আপনার সাথে কোনো কথা নাই??
আমিঃ--আচ্ছা ঠিক আছে। তুমি বাচ্চা না বুড়ি এবার ঠিক আছে??
নিলাঃ--ধুর রাখলাম বাইই??
বলেই কলটা কেটে দিলো। হাহা মেয়েটাকে রাগিয়ে বেশ মজা পাইলাম। তবে আরেকটা জিনিস বুঝলাম মেয়েটা আমাকে ভালোবাসে।আর বিয়ের প্রস্তাব দিলেও কোনো সমস্যা নাই। যেহেতু আমি জব করি সেহেতু কোনো সমস্যা হবে না।
কথা বলতে বলতে অনেক টা রাত হয়ে গেলো! খেয়াল করিনি। রাতের আকাশ বরাবরই আমার ভালো লাগে।
কেনো জানি অন্ধকার খুব পছন্দ আমার।
সবাই যেখানে দিনের বেলা ঘুরাঘুরি করে আমি সেখানে রাতে ঘুরি। রাতটাই কেনো জানি ভালো লাগে।
পকেট থেকে সিগারেটের প্যাক বের করে কেবল মাত্র সিগারেট ধরালাম ঠিক তখনই অরিন ছাদে চলে আসলো। আমার আমার হাতে সিগারেট দেখে বলতে শুরু করলো..........
অরিনঃ--ভাইয়া তুই আবার সিগারেট খাচ্ছিস??
আমিঃ--আচ্ছা ফেলে দিতেছি??
অরিনঃ--সব কয়টা আমাকে দে.??
আমিঃ--কেনো??
অরিনঃ--দিতে বলছি দে.??
আমি সিগারেটের প্যাকেট টা অরিনের হাতে দিলাম। ও
সব কয়টা সিগারেট বের করে একটা একটা করে সব কয়টা সিগারেট ভেঙে ফেললো। এরপর বললো........
অরিনঃ--এবার টাকা দে.??
আমিঃ--ধর ১০০ টাকা নে.??
অরিনঃ--উহু এক হাজার টাকা লাগবে? একটা ড্রেস দেখছি এক হাজার টাকা শর্ট আছে তুই দিবি এখন?
আমিঃ--কিহ এক হাজার দিতে পারবো না.??
অরিনঃ--দাঁড়া আম্মুকে ডাকতেছি। আম্মুুুউউ.??
আমিঃ--আরে থাম থাম দিতেছি। যাহহ বিকাশ করলাম??
অরিনঃ--আচ্ছা খরচ সহ দিবি??
আমিঃ--আচ্ছা দিতেছি তাও এবারের মতো মাফ কর??
অরিনঃ--আচ্ছা মাফ করলাম। এবার তোর আর
নিলার ব্যাবস্থা আমি করতেছি দাঁড়া??
আমিঃ--মানে??
অরিনঃ--মানে আমি সব শুনেছি। আর এবার তোরও একটা ব্যাবস্থা হয়ে যাবে। টাকা তো আর এমনি
এমনি নিলাম না।। সিগারেট খাওয়ার অপরাধে এক হাজার টাকা নিলে হারাম হয়ে যাবে। তাই একটা
কাজ করে দিয়ে তারপর নিবো??🤪
-গল্পঃ_গার্লফ্রেন্ড_যখন_ভাবি (পর্ব_০৩)
-লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।
বলেই দৌঁড়ে চলে গেলো। আমি মনে হয় এবার গেলাম।
জানিনা কি বলবে। সবার আদর পেয়ে একদম মাথায় উঠে গেছে। আমি সিওর এখন গিয়ে আব্বুকে বলে দিবে আমার আর নিলার কথা।।আল্লাহ এবারের মতো বাচিয়ে দাও।🙏🙏🙏
অরিন নিচে চলে গেলো।।মাথা ঘুরতেছে আমার। ও সব বলে দেওয়ার আগে আমাকে বলতে হবে নয়তো আব্বু অন্য কিছু মনে করবে তখন আবার ঝামেলা হতে পারে।
তাড়াতাড়ি করে নিচে চলে গেলাম।। আব্বুর রুমে গিয়ে দেখি আব্বু আর আম্মু দুজনে বসে আছে। আমি গিয়ে বললাম........
আমিঃ--আব্বু একটা কথা ছিলো??
আব্বুঃ--কি কথা বল??
আমিঃ--আব্বু আসলে কিভাবে যে বলি? সত্তিই
অনেক লজ্জা লাগতেছে??
নিজের বিয়ের কথা নিজেই কিভাবে বলবো বলেন। কে কি করলে সেটা দেখার বিষয় না। আমি কি করলাম সেটাই দেখার বিষয়। লজ্জা তো করবে তাইনা। এরপর
আব্বু বললো......
আব্বুঃ--এতো ভাবার কি আছে যা বলার
বলে দে.??
আমিঃ--আব্বু আসলে আমি বিয়ে করতে চাই??
আব্বুঃ--কি বুঝিনাই আবার বল??
অরিনঃ--বিয়ে করবে বিয়ে। লুকিয়ে লুকিয়ে আর কয়দিন প্রেম করবে??
এবার মনে হয় সব গেলো।কারন আব্বু প্রেম ভালোবাসা একদম পছন্দ করে না। এরপর আব্বু বললো.........
আব্বুঃ--মানে কি? তাহলে কি এতোদিন অপুর্ব তাহলে প্রেম করছে আমাদের না জানিয়ে??
অরিনঃ--কেউ কি জানিয়ে প্রেম করে নাকি??
আব্বুঃ--তা মেয়েটা কে শুনি??
অরিনঃ--নিলা.??
আব্বুঃ--কোন নিলা??
অরিনঃ--আমার বড় ভাইয়ের হবু বউ এর ছোট বোন??
আব্বুঃ--অপুর্ব আমি কখনো ভাবিনি তুই এমন একটা কাজ করবি। যা আমার সামনে থেকে??
আমিঃ--আব্বু আমি প্রেম করিনি শুধু ভালো লাগছে তাই বলতে আসছিলাম যে ভাইয়ার আর আমার বিয়েটা এক সাথে সেরে ফেললে কেমন হয়??
আব্বু ধমক দিয়ে আমাকে বললো.........
আব্বুঃ--চুপ কর বেয়াদব। কথা বলবিনা একদম চুপচাপ নিজের রুমে যা??
আব্বুর কথা মতো রুমে চলে আসলাম।? কিন্তু কেমন জানি লাগতেছে আব্বু কি করবে কে জানে। দেখে
তো খুব রেগে আছে মনে হলো। থাকলে থাকুক তাতে আমার কি। বিয়ের বয়স তো হইছে। আর বেকার তো আর বসে নেই। বিয়ে করাবোই না কেনো।
বিয়ে না করালে পালিয়ে যাবো।। তবুও লাবনির সাথে এক বাড়িতে একা থাকা সম্ভব না। কখন কি ঘটে বলা যায় না।
এখন নিলাই আমার সব?? নিলাকে নিয়েই স্বপ্ন দেখতে হবে। তাকে নিয়েই বাঁচতে হবে। বসে বসে এসব কথা ভাবতেছি এমন সময় অরিন রুমে ঢুকলো। আর বলতে শুরু করলো.........
অরিনঃ--ভাইয়া ব্যাড নিউজ আছে??
আমিঃ--কি ব্যাড নিউজ??
অরিনঃ--আরে তোর বিয়ে হয়ে যাবে এবার??
আমিঃ--মানে??
অরিনঃ--মানে হলো আব্বু আর আম্মুর কথা শুনে যেটা বুঝলাম। সেটা হলো কালকে আব্বু আর আম্মু আবার যাবে ওদের বাসায়। আর তারপর নিলা ভাবির সাথে তোমার বিয়ে ঠিক করবে??
আমিঃ--কিহ? সত্তি??
অরিনঃ--হ্যা সত্তি? তবে আমার মন খারাপ??
আমিঃ--কেনো? তোর তো খুশি হওয়ার কথা একসাথে দুইটা বিয়ে হবে বাড়িতে। আনন্দ করবি মজা করবি??
অরিনঃ--আরে ধুরর রাখ তোর মজা। আমার ইনকাম সোর্স বন্ধ হয়ে গেলো। এখন হাত খরচ কই পাবো??
আমিঃ--মানে কি??
অরিনঃ--মানে আর কি??? তুই সিগারেট খাইতি আর আমি ওখান থেকে ইনকাম করতাম। এখন তো সব
বন্ধ হয়ে যাবে। ভাবি তোকে তো আর সিগারেট খেতে দিবে না??
আমিঃ--আচ্ছা বোন আমার কষ্ট পাসনা। তোকে প্রতি মাসে দু হাজার করে টাকা দিবো??
অরিনঃ--কিন্তু কেনো দিবি??
আমিঃ--আজকে আমার সব কাপড় তুই ধুয়ে
দিবি তাই??
অরিনঃ--আমি পারবো না। এর আগেও তুই বলছিলি কিন্তু টাকা দিস নাই??
আমিঃ--এবার দিবো সত্তি??
অরিনঃ--কসম??
আমিঃ--কসম??
অরিনকে প্যান্ট শার্ট বের করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলাম। উপরের দিকে তাকিয়ে দেয়াল দেখতেছি।
হঠাৎ বা দিকে চোখ পড়তেই পুরনো ডায়রিটা চোখে পড়ে গেলো।
পুরোনো ডায়রিটা বের করলাম।ডাইরির প্রতিটা পাতায় ধুলো জমে গেছে। এটা তো শুধু ডায়রি। আমার মনেই তো ধুলো জমে গেছে।
ডায়রিটা হাতে নিয়ে মুছে আবার রেখে দিলাম জায়গা মতো।কারন ডাইরিটা খুললে আবার লাবনির সৃতিতে জড়িয়ে যাবো। এর চাইতে ভালো নাই খুললাম।
নিজেকে কেনো আটকে রাখবো তার কাছে। লাবনি তো বন্দি নেই। মুক্ত পাখির মতো হাসছে। তবে আমি কেনো বিরহ ব্যাথায় কষ্ট পাচ্ছি এখনো। জানি এর কোনো উত্তর আমার কাছে নেই।। তাই নিজেকে প্রশ্ন করে বৃথা সময় নষ্ট ছাড়া আর কিছুই না।
কি ভেবে আবারো ছাদে গেলাম। গিয়ে নিলাকে কল করলাম।৷ দুই বার রিং হতেই কলটা রিসিভ করলো।
কলটা রিসিভ করতেই আমি বললাম..........
আমিঃ--হ্যালো??
ওপাশ থেকেঃ--হ্যা বলো??
আমি তখনও বুঝে উঠতে পারিনি এটা নিলা নাকি লাবনি। তাই আবার বললাম......
আমিঃ--কি করো??
ওপাশ থেকেঃ--আমি লাবনি??
কথাটা শুনার পর বুঝতে পারলাম!! এইটা লাবনি নিলা নয়। হঠাৎ করে বুকের ভেতর ছ্যাত করে উঠলো। মনে হলো ইমোশন গুলা সব উপরের দিকে উঠে আসতেছে।
একেকটা দির্ঘশ্বাস যেনো সব ইমোশন বের করে দিচ্ছে।
আমি কোনো মতে বললাম.........
আমিঃ--নিলা কোথায়??
লাবনিঃ--আব্বুর রুমে??
আমিঃ--ওহ ওকে একটু ডেকে দাও কথা
আছে ওর সাথে.??
লাবনিঃ--কি কথা আমাকে বলো??
সুযোগ পাইছি এবার। কষ্ট দিছো আমাকে তুমি। এইবার তোমাকে জ্বালাবো আমি। দেখি কতটা সহ্য করতে পারো। আমি কোনো কিছু না ভেবে বলেই দিলাম......
আমিঃ--নিলার সাথে আমার বিয়ে নিয়ে কথা হবে কালকে। তাই ওর সাথে কিছু কথা ছিলো। একটু ফোনটা ওকে দেওয়া যাবে??
লাবনিঃ--নিলার সাথে তোমার বিয়ে মানে? তোমার মাথা ঠিক আছে??
আমিঃ--আমার মাথা হাত পা সব ঠিক আছে??
এবার ওর কান্নামিশ্রিত কন্ঠটা শুনলাম......
লাবনিঃ--অপুর্ব তুমি কি সিরিয়াসলি বিয়ে করবা??
আমিঃ--হুমম বিয়ে তো করতেই হবে তাইনা.? ভাবলাম এক সাথেই করে ফেলি। একসাথে থাকতে না পারলাম বিয়ে তো করতে পারবো তাইনা??
ওর ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্নার আওয়াজটা আমাকে কষ্ট দিতে লাগলো।। তবে পুরনো কথা মনে পড়ে আর কষ্ট লাগলো না।
কতটা পেইন সে আমাকে দিয়েছে। আমার সামনে দিয়ে বাইকে করে ঘুরছে,দেখিয়ে দেখিয়ে প্রেম করছে। তখন তো তার কষ্ট হয়নি আজ কেনো হচ্ছে।
লাবনি তো খুশি থাকার কথা।। সে যেমন ছেলে চাইতো তেমন ছেলেই পেয়েছে।টাকা ওয়ালা হ্যান্ডসাম। বলতে দ্বিধা নেই আমার বড় ভাই আমার চাইতেও দেখতে ভালো আর অনেক রোমান্টিক।
তাহলে কেনো পারছে না সে তাকে নিয়ে সুখে থাকতে।
এসব ভাবতে ভাবতেই ফোনের দিকে তাকালাম আর বললাম..........
আমিঃ--হ্যালো??
লাবনিঃ--আচ্ছা আমি নিলাকে ফোন দিতেছি
কথা বলো??
আমিঃ--আচ্ছা ঠিক আছে??
দুই মিনিট পর নিলার কন্ঠ শুনতে পেলাম.......
নিলাঃ--আবার ফোন কেনো দিছেন??
আমিঃ--একটা কথা জানার ছিলো??
নিলাঃ--কি কথা??
আমিঃ--আমাকে বিয়ে করবা??
নিলাঃ--কি বলেন এগুলা??
আমিঃ--যা বলি তার উত্তর দাও। নয়তো অন্য
মেয়ে দেখতে হবে??
নিলাঃ--অন্য মেয়ের দিকে তাকালে না চোখ
উপড়ে তুলে নিবো??
আমিঃ--হাহাহা তার মানে বিয়ে করবা??
নিলাঃ--আমার লজ্জা লাগতেছে। রাখি বাই??
আমিঃ--আরে শুনো আরেকটা কথা জানার
ছিলো??
নিলাঃ--কি কথা??
আমিঃ--তোমার বয়ফ্রেন্ড আছে??
নিলাঃ--বিয়ের প্রোপোজাল দিয়ে এখন আসছে বয়ফ্রেন্ড আছে নাকি জানতে??
আমিঃ--সরি আসলে আমি জানতাম না তোমার বয় ফ্রেন্ড আছে। আমি মানা করে দিতেছি বাবাকে??
নিলাঃ--বেশি বুঝেন কেনো এতো? শুনেন আমার বয়ফ্রেন্ড নাই??
___________
ফোনটা কেটে গেলো!! লজ্জা পাইছে। আপন মনে হেসে উঠলাম। মনে হয় এবার সত্যিই নিলার প্রেমে পড়ে গেছি
আমি।।
উত্তেজনা কাজ করছে ভিতরে। কি হবে কালকে সেটাই ভেবে। তবে মনে হয় না খারাপ কিছু হবে। কারন ভাইয়ার সাথে লাবনির বিয়ে ঠিক হতে পারলে আমার সাথে নিলার কেনো হবে না।
এতো চিন্তা করে লাভ নেই। এর চাইতে ভালো ঘুমিয়ে পড়ি। যা হয় কালকে দেখা যাবে। পরের দিন সকালে ঘুম ভাঙলো আব্বুর ডাকে........
আব্বুঃ--এইযে উঠেন। সকাল হয়ে গেছে??
আমিঃ--আব্বু এতো সকালে ডাকতেছো কেনো??
আব্বুঃ--৯ টা বাজে এখনো সকাল??
আমিঃ--ওহহ অফিসের সময় হয়ে গেছে??
আব্বুঃ--আজকে অফিসে যেতে হবে না??
আমিঃ--কেনো??
আব্বুঃ--আপনার জন্য মেয়ে দেখতে যাবো উঠেন তাড়াতাড়ি??
আমিঃ--কোন মেয়ে??
আব্বুঃ--আছে একজন?? আমার বন্ধুর মেয়ে? তুই যা করছোস কখন আবার কার সাথে পালিয়ে যাস বলা তো যায়না তাই তোকেও বিয়ে করাবো তোর ভাইয়ের সাথে??
আমিঃ--কিন্তু আমিতো নিলাকে.......??
আব্বুঃ--নিলাকে কি??
আমিঃ--কিছু না??
আব্বুঃ--তাড়াতাড়ি আয় সবাই অপেক্ষা করতেছে
তোর জন্য??
আমিঃ--আচ্ছা তুমি যাও আমি আসতেছি??
আব্বু আবার কি শুরু করলোআল্লাহই ভালো জানে.?? কোন মেয়েকে আবার ধরে আনবে। যাই হোক আমি ডিরেক্ট বলে দিবো আমার পছন্দ হয়নি। নিলাকে ছাড়া কাওকেই বিয়ে করবোনা আমি এটাই ফাইনাল।
গোসল করে রেডি হয়ে বের হলাম। আব্বু আম্মু আর অরিন বসে আছে নিচে। নিচে যেতেই অরিন আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে দিলো।
বোনটাও যা হইছে। সবার আদর পেয়ে একদম দুষ্ট হয়ে গেছে। আব্বু আম্মু আমাকে দেখে বের হতেই অরিনকে বললাম........
আমিঃ--ওই তুই তো বললি নিলার সাথে আমার বিয়ে??
অরিনঃ--আমি শুধু শুনছি তোকে বিয়ে করাবে। আমি ভাবছি নিলার সাথেই করাবে। তাই বলছি। আমি কি জানতাম নাকি যে আব্বুর বন্ধুর মেয়ের সাথে তোর বিয়ে ঠিক করবে??
আমিঃ--ভালো করছোস। আমার লাইফটা শেষ হয়ে যাবে যদি নিলাকে বিয়ে না করতে পারি। মেয়েটাকে অনেক ভালোবেসে ফেলছি??
অরিনঃ--হুম তাতো বাসবেই? আমার বড় ভাইয়ের বউয়ের ছোট বোন বলে কথা ভালোবাসতে হবেনা। তবে আফসোস তোর বিয়ে অন্য কারো সাথে??
আমিঃ--হুহ এতো কথা না বলে চল এখন দেখি
কোন পেত্নির সাথে বিয়ে করায়??
অরিনঃ--হিহিহি চল??
কথা বলতে বলতে গিয়ে গাড়িতে উঠলাম। ড্রাইভার নাই তাই নিজেকেই ড্রাইভ করতে হবে। সবাই গিয়ে পেছনে বসলো। নিজেকে ড্রাইভার ড্রাইভার মনে হচ্ছে। তাই অরিনকে ডাক দিয়ে সামনে আনলাম।। অরিন সামনে এসে আমাকে বললো........
অরিনঃ--কি ব্যাপার??
আমিঃ--কি আর ব্যাপার সবাই পেছনে বসলে নিজেকে ড্রাইভার মনে হয় তাই তোকে সামনে আনলাম??
অরিনঃ--আচ্ছা চল??
আমিঃ--কিন্তু যাবোটা কোথায়??
অরিনঃ--আব্বু ভাইয়া জিজ্ঞেস করতেছে কোথায় যাবে??
আব্বুঃ--কোথায় আবার। সে যাকে ভালবাসে তার বাসায়। লুকিয়ে প্রেম করার শাস্তি স্বরুপ তাকে
বিয়ে করা নো হবে??
আব্বুর কথা শুনে সেই লেভেলের খুশি লাগছে।। মিথ্যা বললো কেনো তাহলে। মজা নিছে আমার সাথে।আমিও শোধ নিবো এর। আমাকে টেনশনে রেখে মজা নেওয়া।
নিলাদের বাসার সামনে এসে গাড়ি থামালাম। তারপর আব্বুর পেছন পেছন বাসায় ঢুকলাম। কেনো জানি আজকে অনেক লজ্জা লাগছে।
বুঝলাম সেদিন ভাইয়ারও সেম অবস্থা হইছিলো।বাসার ভিতর ঢুকে এক জোড়া চোখ খুজতে লাগলাম। কিন্তু কোথাও পেলাম না চোখ জোড়া। আব্বুর সাথে গিয়ে বসলাম সোফায়। কিছুক্ষণ পর নিলার আব্বু আসলো।
নিলার আব্বুকে দেখে আমার আব্বু বলে উঠলো........
আব্বুঃ--কেমন আছেন??
নিলার আব্বুঃ--জ্বি আলহামদুলিল্লাহ আপনি??
আব্বুঃ--জ্বি ভালো। রাতে যা বললাম সেটার ব্যাপারে কথা বলতেই আসলাম??
নিলার আব্বুঃ--মেয়েকে দেখুন তারপর নাহয়
কথা বলি??
আব্বুঃ--হুমম ডাকুন??
নিলার আব্বুঃ--নিলা...এদিকে আয়তো মা??
ভীষণ অস্তিরতা কাজ করছে মেয়েটাকে দেখার জন্য।
মনটা ভিষন ব্যাকুল হয়ে পড়ছে। হঠাৎ দরজা ঠেলে বের হয়ে আসলো নিলা।
কালো শাড়িতে পড়েছে। হালকা মেকআপ আর হালকা লিপস্টিক অন্যরকম লাগছিলো তাকে। ইচ্ছে হচ্ছিলো এখনই হাতটা ধরে ফেলি সারাজিবনের জন্য। বাহিরে কি ঘটছে সেদিকে আমার ভ্রুক্ষেপ নেই। আমি হারিয়ে গেছি নিলাতে। কেউ পারবেনা আর আমায় সামলাতে।
ঘোর কাটলো অরিন এর ডাকে.........
অরিনঃ--এই ভাইয়া??
আমিঃ--হ্যা বল??
অরিনঃ--এদিকে আয়??
আমিঃ--হুমম বল??
অরিনঃ--ভাবিকে নিয়ে রুমে যা কথা বল??
আমিঃ--আচ্ছা??
বুঝতে পারছি না কেনো আবার আলাদা রুমে যেতে হবে। দেখছিলাম তাকে দেখতে থাকি না। কেনো বারবার যেতে হবে আলাদা রুমে। ঘোরটাই কেটে গেলো।
তবে আজকে তো সে নেশার মতো কাজ করছে যতবার দেখতেছি ততবারই মাতাল হয়ে যাচ্ছি। পারফিউমের গন্ধে অবস্থা অনেকটাই খারাপ।
চলে আসলাম আলাদা রুমে। জানিনা আব্বু কি বলছে আমি তো শুধু দেখছিলাম তাকে।
যাই হোক নিলার দিকে তাকিয়ে দেখলাম..সে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে। ভালো করে তাকিয়ে লক্ষ করলাম শাড়ির কুচিটা এলোমেলো হয়ে আছে।
তার মানে নিলা শাড়ি পড়তে জানে না। আমিও তো পড়াতে পারি না কি হবে তাহলে। ধুরো এতো রোমান্টিক হয়ে কি হবে। সে নিজেই শিখে যাবে।
দুজনেই চুপচাপ। এ যেনো নিরবতা পালন করছি এমন কিছু। কি বলবো কি বলা উচিত কিছুই বুঝতে পারছি না।। মেয়েটাও চুপ করে আছে। সব দ্বিধা ভেঙে আমিই প্রশ্ন করলাম.......
আমিঃ--বিয়েটা করতে তুমি রাজি??
সরাসরি প্রশ্ন করায় নিলার মুখটা কেমন যেনো লাল হয়ে গেলো। আমিও বোকার মত সরাসরি প্রশ্ন করে বসলাম..সে বিয়ে করতে রাজি কিনা।
এখন কি বলবো। হার্টবিট অলরেডি অনেকটাই বেড়ে গেছে। এবার আর তাকে প্রশ্ন না করে নিজেই বলতে লাগলাম......👇👇
আমিঃ--তোমাকে সেই প্রথম দিন দেখেই প্রেমে পড়ে গেছি। যেহেতু ভাইয়ার বিয়ে আর মাত্র পনেরো দিন বাকি তাই প্রেম করার সুযোগ নাই।
খুব ইচ্ছা ছিলো প্রেম করে বিয়ে করবো। চলোনা এই বাকি পনেরো দিন প্রেম করি তারপর বিয়ে। যদি
থাকো রাজি বিয়ে ঠিক করবো আজি?
Nila Will You Marry me.....
নিলাঃ--yes i will.....
নিলা কথাটা বলেই লজ্জায় আমার বুকে মুখ লুকালো।
সিওর হয়ে গেলাম সেও আমাকে ভালোবাসে।
নিলাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। হঠাৎ করে অনুভব করলাম মেয়েটা কাদতেছে। ওর কান্নার শব্দ পেয়ে আমি বলতে শুরু করলাম..........
আমিঃ--কি হলো কাদতেছো কেনো? (আমি)
নিলাঃ--জানেন আমিও আপনাকে প্রথম দেখেই প্রেমে পড়ে গেছি.? আমি ভেবেছিলাম পালিয়ে বিয়ে করবো কিন্তু আমাদের তো বিয়ে ঠিক হয়ে গেলো এখন কি হবে???
ও আল্লাহ আমারে উপরে উঠাইয়া নাও। এই মেয়ে বলে টা কি। নিলার কোমড়ে হাত রেখে টান দিতেই আমার বুকের সাথে এসে আটকে গেলো।।এমন সময় দড়জায় টোকা পড়লো। উফফ এখনি আসতে হলো। এরপর নিলার কানে কানে বললাম........
-গল্পঃ_গার্লফ্রেন্ড_যখন_ভাবি (পর্ব_০৪)
-লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।
আমিঃ--তোমাদের বাসায় প্রাইভেসি নাই??
আমার কথাটা শুনে নিলা খিলখিল করে হেসে উঠলো। আমি দড়জা খুলে দেখলাম বাইরে লাবনি দাড়িয়ে আছে। লাবনি আমাকে দেখে কেমন জানি হয়ে গেলো। ঝটপট ভিতরে ঢুকে গেলো।
আর আমিও কিছু না বলে বাইরে চলে আসলাম। হবু বউয়ের সামনে এক্স গার্লফ্রেন্ডকে কি বলবো।
আমি এসে বসলাম আব্বুর পাশে।।তারা কথা বলতেছে আর হাসতেছে।ৃমনে হয় বিয়েটা কনফার্ম। কিছুক্ষণ পর আম্মু আমাকে বললো...........
আম্মুঃ--অপুর্ব তোর মত কি?
আমিঃ--আমি কি বলবো তোমরা যা বলবে
তাই হবে??
আব্বুঃ--তাহলে আর কি আগামি মাসের ১২ তারিখ তোদের বিয়ে??
আমিঃ--আচ্ছা আব্বু আমি আসতেছি আমার
একটু কাজ আছে??
অরিনঃ--আমিও যাবো চল??
আব্বুঃ--আচ্ছা যা.??
সালাম দিয়ে বাহিরে চলে আসলাম। বাহিরে আসতেই অরিন আমাকে বললো............
অরিনঃ--কিরে ভাইয়া তোর কি মন খারাপ??
আমিঃ--না মন খারাপ কেনো হবে। যাকে চাইছি তার সাথেই তো বিয়ে মন খারাপ কেনো হবে??
অরিনঃ--জানিনা বাট মনে হচ্ছে মন খারাপ??
আমিঃ--আরে নাহ মন খারাপ না এমনিই মাথা ব্যাথা করতেছে??
অরিনঃ--তবে যাই বলস না কেনো নিলা ভাবির
চাইতে লাবনি ভাবি দেখতে সুন্দর??
আমিঃ--বলছে তোরে? নিলা দেখতে সুন্দর। লাবনির চাইতে একটু খাটো শুধু আর কিছুনা??
অরিনঃ--ওই হলো। নিজের বউয়ের প্রসংসা আর করতে হবে না??
আমিঃ--হুহ বাদ দে। ভাবতেছি তোর জন্যও ছেলে দেখবো। এক সাথে তিনটা বিয়ে হবে বাড়িতে
খরচ কম হবে??
অরিনঃ--ভাইয়া খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু.। আমি এখন বিয়ে করবো না ঠিক আছে??
আমিঃ--তাহলে ঠিক আছে যখন ইচ্ছা করিস
এখন চুপ থাক??
অরিনঃ--ওকে.??
বাসায় এসে গোসল করলাম। ভালো লাগছে না কেনো জানি। একটা ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে ঘুম দিলাম! কিন্তু বেশিক্ষন ঘুম হলো না।। ফোন কলের শব্দে ঘুম ভেঙে গেলো। তাকিয়ে দেখি নিলার কল........
আমিঃ--হ্যালো??
নিলাঃ--হুমম কি করেন??
আমিঃ--এইতো ঘুমাচ্ছিলাম তুমি??
নিলাঃ--ভাবতেছি??
আমিঃ--কি ভাবতেছো??
নিলাঃ--কত তাড়াতাড়ি কত কিছু হয়ে গেলো তাইনা??
আমিঃ--হুমম অনেক কিছু হয়ে গেছে??
নিলাঃ--সামনে তো আরো অনেক কিছু হবে??
আমিঃ--হুমম এখন বলো কি জন্য কল দিছো??
নিলাঃ--আজকে একটু ঘুরতে বের হবো
তোমার সাথে তাই??
আমিঃ--ভাবিকে নিয়ে আসবা??
নিলাঃ--না। একাই আসবো। আর আপু তো শপিংয়ে গেছে তোমার ভাইয়ের সাথে??
আমিঃ--কিহহ??
নিলাঃ--হ্যা এতো অবাক হওয়ার কি আছে। আর ১৪ দিন পরই তো বিয়ে। এখন থেকে শপিং করবে না তো কখন করবে??
আমিঃ--আমি এই জন্য অবাক হইনি। অবাক হইছি তুমি এখনো শপিংয়ে যাও নাই তাই??
নিলাঃ--আমি কি একা একা শপিংয়ে যাবো নাকি??
আমিঃ--না একা কেনো যাবা? এখন আমার সাথে যাবা রেডি হয়ে নাও তাড়াতাড়ি??
নিলাঃ--সত্যিই নিয়ে যাবেন??
আমিঃ--না মিথ্যা মিথ্যা নিয়ে যাবো। তুমি রেডি হয়ে নাও তাড়াতাড়ি। ৩ঃ ৩০ মিনিটের মধ্যে আসবা??
নিলাঃ--আচ্ছা আপনি দাড়ান টংয়ের দোকানে আমি আসতেছি??
আমিঃ--আচ্ছা তারাতারি আসবা??
নিলাঃ--ঠিক আছে বাই??
রেডি হয়ে মামার দোকানের কাছে গিয়ে দেখি আমার সব বন্ধুরা এক সাথে আড্ডা দিতেছে। কাজের চাপে পড়ে অনেকদিন আড্ডা দেওয়া হয় না।গিয়ে বসলাম ওদের সাথে.....
আকাশঃ--কিরে কি খবর? তোকে তো আর দেখা যায় না??
আমিঃ--হুমম কেমনে দেখবি সারাদিন তো অফিসেই থাকি??
শুভঃ--হুম তা ঠিক তবে বাবার এতো টাকা কি করবি? তোর চাকরি করার কি দরকার??
আমিঃ--শোন ভাই তোদের বাবার টাকা আছে তোরা বসে বসে খা আমারে জ্ঞান দিস না??
আকাশঃ--আচ্ছা ঠিক আছে। আজকে রাত নয়টায় পার্টি আছে তুই আসবি??
আমিঃ--কিসের পার্টি??
আকাশঃ--আমার গার্লফ্রেন্ডের বার্থডে??
আমিঃ--আচ্ছা আসবো??
আমি বাহিরের দিকে তাকিয়ে দেখি নিলা আসতেছে। তাই আমি ওদেরকে বললাম..........
আমিঃ--দোস্ত একটা জিনিস বলা হয়নি।(আমি)
আকাশঃ--কি??
আমিঃ--১২ তারিখ আমার বিয়ে। সবাই আসবি কার্ড পাঠাই দিবোনি??
আকাশঃ--কি বলিস? কেমনে কি??
আমিঃ--আর বলিস না বড় ভাইয়ের জন্য মেয়ে দেখতে গিয়ে এক বাড়িতে দুইটারে পছন্দ হইছে। কি আর করার আব্বা বিয়ে করাইবো এখন??
আকাশঃ--হ ভালো সবাই দেখি বিয়া করতাছে। তুই বিয়ে করলে আর দুইজন বাকি??
আমিঃ--হাহাহা আচ্ছা দোস্ত থাক রাতে কথা হবে। নিলা আসতেছে??
আকাশঃ--অপুর্ব? নিলা মানে??
আমিঃ--তোকে রাতে সব বলবো। এখন যাই বাই??
নিলা এসে দাঁড়িয়ে আছে খেয়ালই করিনি। দৌড়ে গিয়ে রিক্সায় উঠলাম। আর বললাম...........
আমিঃ--সরি অনেক দিন পর বন্ধুদের সাথে দেখা হওয়ার কারনে একটু আড্ডা দিলাম??
নিলাঃ--হুমম ঠিক আছে। তবে এতো কাছে কেনো বসছেন! দূরে যান.??
নিলার কথায় কিছুটা অপ্রস্তুত হলাম।আমি কিছু বলতে পারলাম না আর। একটু বাহিরের দিকে চেপে বসলাম। তার কথায় পুরো বোকা বনে গেছি।
বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছি।হঠাৎ নিলা আমাকে টান দিয়ে ওর দিকে টেনে নিলো। তারপর আমার কাধে ওর মাথা রাখলো। চোখ বন্ধ করে আছে।
কয়েক সেকেন্ড থথথ মেরে কাহিনী বুঝলাম?? তারপর নিলার হাত ধরে তার মায়াবি মুখটার দিকে তাকালাম।
মেয়েটা লজ্জায় এখনো চোখ খুলতে পারছেনা। নিলার এমন কান্ড দেখে আমি বললাম..........
আমিঃ--হইছে এবার চোখ খুলো??
নিলাঃ--না খুলবো না??
আমিঃ--কেনো??
নিলাঃ--আমার লজ্জা লাগে??
আমিঃ--হায়রে এতো লজ্জা আসে কোথা থেকে??
নিলাঃ--জানিনা বাট আমি চোখ খুলতে পারবো না??
আমিঃ--আচ্ছা আমি চোখ বন্ধ করতেছি এবার খুলো??
নিলাঃ--আচ্ছা.??
নিলা চোখ খুলতেই আমি হেসে উঠলাম।। কেমনে এতো লজ্জা পায় বুৃঝি না। আমার হাসি দেখে নিলা বললো....
নিলাঃ--আপনি চোখ বন্ধ করেন নাই কেনো??
আমিঃ--চোখ বন্ধ করলে কি এই লজ্জা মাখা মুখটা দেখতে পারতাম??
নিলাঃ--ধুর আপনার সাথে আর কথাই বলবো না??
রিকশা চলছে আপন গতিতে! আর আমরা আমাদের।ব্যাস্ত শহড়ে প্রিয় মানুষের সাথে রিকশায় বসে এমন খুনশুটিই বা কয়জন করতে পারে।
রিকশা আর কাপল মানেই রোমান্টিক অনুভুতি?? যেটা বাইক কিংবা বড় গাড়িতে পাওয়া যায় না। জ্যামে পড়লেও কোনো সমস্যা নেই। একটু ফাঁকা পেলেই বেরিয়ে যায় রিকশা! এজন্য রিকশাই বেটার। নিলাকে নিয়ে চলে আসলাম শপিং মলে। শপিং মলে এসে আমি নিলাকে বললাম...........
আমিঃ--বলো কি কি কিনবে??
নিলাঃ--বেশি কিছু লাগবে না এখন। অনেক সময় পড়ে আছে তখন আসবো। এখন একটা শাড়ি কিনবো তারপর দুজনে মিলে কিছুটা সময় একসাথে কাটাবো?
আমিঃ--আচ্ছা চলো??
একটা কালো শাড়ি কিনলাম। আর আমার জন্য একটা শার্ট পছন্দ করলো তিনি।কি আর করার কিনতে হলো।
শপিং শেষ করে রেস্টুরেন্টে গেলাম। খুব ক্ষুদা লাগছে। খাবারের অর্ডার দিয়ে বসে আছি নিলাকে নিয়ে। হঠাৎ বা দিকে তাকাতেই দেখি ভাইয়া আর লাবনি।
দুই জনে বেশ হেসে হেসে কথা বলতেছে।তাহলে লাবনি আমাকে দেখলেই চুপচাপ আর মনমরা হয়ে যায় কেনো??এমনিতে তো বেশ ভালোই হাসছে ঘুরছে কথা বলছে সবার সাথে।
নিলা লক্ষ করলো ব্যাপারটা আমি যে ওদিকে তাকিয়ে আছি। এরপর নিলা আমাকে বললো..........
নিলাঃ--আরে আপু আর ভাইয়া না??
আমিঃ--হুম সেটাই তো দেখতেছি??
নিলাঃ--আপনি বসুন আমি আসতেছি??
নিলা এই কথাটা বলে ওদিকে চলে গেলো।। কিছু বলার সুযোগ দিলো না।। ও গিয়ে কি জানি বললো। কিছুক্ষণ পর ভাইয়া ডাক দিলো। তারপর আমি গিয়ে বসলাম ওখানে। ভাইয়া আমাকে বললো.......
ভাইয়াঃ--এখানে কি করিস??
আমিঃ--তুমি কি করো??
ভাইয়াঃ--আমি তো তোর ভাবিকে নিয়ে শপিং করতে আসছিলাম। ক্ষুদা লাগছে তাই এখানে আসলাম??
আমিঃ--আমিও সে কারনেই আসছি??😊😊
খাবার এসে গেছে। নিলা আর ভাইয়া বেশ খুশি। কারন তারা কিছু জানে না তাই? চুপ হয়ে গেছি আমি আর লাবনি। খাচ্ছি কম আর ভাবংছি বেশি। কি একটা গন্ডগোল লেগে গেলো আমার জীবনে।
এক্স গার্লফ্রেন্ড ভাবি হতে চলেছে। আর প্রতিদিন তার সাথেই বারবার দেখা হচ্ছে।
না পারছি নিজেকে আটকাতে।।না পারছি কিছু বলতে।
লাবনিকে ছেড়ে এবার নিলার দিকে তাকালাম। বেশ হাসিখুশি মেয়েটা। মেয়েটার হাসি পাগল করার মতো। এই টানে পড়ে থাকতে চাই। আর চাইনা পুরনো মায়ায় বন্দী থাকতে। পুরনো মলিন সৃতির পাতায় নিজেকে বন্দী রাখতে চাইনা।
লাবনি তো আমার মনের কথা বুঝেনি। বুঝেনি আমার ভালোবাসা। তাহলে কেনো পড়ে থাকবো তাকে নিয়ে।
এখন আমার ইচ্ছা শুধুই তাকে জ্বালানো আর কিছু না।
এখনো এতোটাও নিলার মায়ায় পড়িনি তাই হয়তো পারতেছিনা। তবে পারবো,তাকে দেখিয়ে দিবো। তাকে ছাড়া আমি অঁচল না। অবশ্য দেখানোর খুব বাকিও নাই। বিয়েটা তো কনফার্ম। হটাৎ করে ভাইয়া আমাকে বলে উঠলো..........
ভাইয়াঃ--কিরে খাচ্ছিস না কেনো??
আমিঃ--কই খাচ্ছি তো.??
ভাইয়াঃ--বুঝতে পারছি,,তোরা থাক। লাবনি চলো আমরা অন্য কোথাও যাই??
লাবনিঃ--ওকে চলো.??
অর্ধ কান্না মিশ্রিত চোখে আমার দিকে তাকালো লাবনি।
আমি নিলার হাত চেপে ধরলাম তাকে দেখানোর জন্য।
নিলা চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকালো। আমি আরো শক্ত করে চেপে ধরলাম নিলার হাত। লাবনির চোখে ক্ষোভ! কষ্ট হচ্ছে নাকি জ্বলছে।
যাইহোক লাবনির চোখে জল দেখে মনটা একটু হলেও শান্তি পেলো! জানি না কেনো?? তবে প্রতিশোধ নিতে আমার খারাপ লাগছে না। পৈশাচিক আনন্দ হচ্ছে।
সেও তো করছে।
আমার ভালোবাসা ইমোশন সব নিয়ে খেলছে লাবনি। এখন না হয় কিছুটা সময় আমিও খেললাম।
লাবনি চলে গেছে ভাইয়ার সাথে?? আর নিলা হাত ধরে টানাটানি করছে। তাকিয়ে দেখি বেশ শক্ত করে ধরেছি।
ইশ কাচের চুড়িটা আর একটু হলে হাতটা কেটে যেতো।
লাল হয়ে গেছে। তাকিয়ে দেখি নিলার চোখেও জল।
মেয়েদের চোখে এতো জল কোথায় থেকে আসে কে জানে। ওর চোখে জল দেখে আমি বললাম..........
আমিঃ--সরি সরি। আসলে আমি খেয়াল করিনি। ব্যাথা পাইছো তুমি??
নিলা মাথা নাড়িয়ে বললো.......
নিলাঃ--না.??
অথচ নিলার চোখ দেখে স্পষ্ট বুঝতে পারছি সে ব্যাথা পাইছে। হাতটা আলতো করে ধরলাম। এবার হাতটা কাছে টেনে নিয়ে আলতো করে একটা কিস করলাম।
এবার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেছে নিলার। লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলছে অলরেডি। সত্যি বলতে তার
এই লজ্জা মাখা চেহারা দেখতে আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে।
নিজেকে হারিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে নিলার মাঝে। তার চোখের দিকে তাকালে বুঝতে পারি তার চোখে কতটা গভীরতা আছে। যেখানে আমি একবার পড়ে গেলে যখন তখন হারিয়ে যাবো।
সত্যি কিছু মানুষের চোখ আছে,, যেগুলা অত্যন্ত গভীর এবং মায়া ভরা।। একটা মানুষকে বশ করার জন্য শুধু অবাক করা চোখের চাহনি আর মায়াভরা হাসিটাই যথেষ্ট।। যা নিলার মধ্যে রয়েছে। পাগল করার মতো চাহনি নিলার। হুট করে নিলা আমাকে বললো..........
নিলাঃ--এইযে কোথায় হারালেন আবার??
আমিঃ--তোমার চোখে??
নিলাঃ--কি সব বলেন আপনি বুঝিনা কিছুই??
আমিঃ--আমি প্রেমের ভাষায় কথা বলি। আমাকে ভালোবাসো সব বুঝতে পারবে??
নিলাঃ--ঠিক আছে শিখিয়ে দেন কি ভাবে
ভালোবাসতে হয়??
আমিঃ--শিখাবো??
নিলাঃ--হ্যা.??
আমিঃ--সত্যি শিখাবো??
নিলাঃ--হ্যা শিখান??
আমিঃ--ভেবে বলো শিখাবো??
নিলাঃ--না। আপনার সাথে থাকলে এমনিতেই শিখে যাবো??
আমিঃ--ওহ আচ্ছা তাই নাকি তাহলে তো সাথে
সাথেই থাকা লাগবে??
নিলাঃ--হুমম এবার চলুন সন্ধা হয়ে গেছে বাসায় যেতে হবে??
আমিঃ--হুম আচ্ছা আসো??
বিল দিতে গিয়ে শুনলাম ভাইয়া বিল দিয়ে গেছে। বাহহ ভালো কাজ করছে। কিছু টাকা বেঁচে গেলো।
এরপর বাহিরে এসে রিকশা নিতে গেলাম। ঠিক তখনই নিলা বাধা দিয়ে বললো.........
নিলাঃ--রিকশা লাগবে না হেঁটেই যাবো??
আমিঃ--১ ঘন্টা সময় লাগবে হাঁটলে??
নিলাঃ--তো চলুন এক ঘন্টা হাঁটবো আপনার সাথে। আমার কোনো সমস্যা নেই??
আপন মনে হেঁসে উঠলাম। নিলা মনে হয় প্রেমের ভাষা শিখার চেষ্টা করতেছে। চেষ্টা করতে থাকুক ক্ষতি কি?
ব্যাস্ত রাস্তার পাশে হেঁটে চলেছি দুজন।। নিলার হাতের সাথে আমার হাতের ছোঁয়া লাগছে বারবার। অনুভব করতেছি তাকে। ভিতর কেমন একটা ফিল হচ্ছে বলে বুঝানো যাবে না।
বারবার ছোঁয়া লাগছে কিন্তু হাত ধরিনি। দেখি নিলা কি করে। আমি চাই সে আমার হাতটা ধরুক।। এবার হঠাৎ নিলা আমার হাতটা ধরে ফেললো।
মাথাটা নিচু করে হাঁটছে নিলা।। আমি হাঁটছি উপরের দিকে তাকিয়ে। রাতের আকাশ দেখতেছি আর দুজন হাতে হাত রেখে হাঁটতেছি।।
সত্যি এভাবে রাতের আধারে প্রিয় মানুষকে সাথে নিয়ে হাতে হাত রেখে পথ চলাটা খুবই সৌভাগ্য মনে করি।
আল্লাহ জেনো সেই সৌভাগ্য বান ব্যাক্তিদের মাঝে আমাকেও রাখেন,,সেই কামনা করি।
কতক্ষন হয়েছে জানিনা দুজনে হাঁটতেছি। এখনো হাত ছাড়েনি। নিলা ছাড়েনি আমিও ছাড়িনি। ব্যাপারটা কিছুটা এরকম তুমি না ছাড়লে আমিও ছাড়বো না।
মেইন রোড ছেড়ে এবার বাসার রাস্তায় হাঁটতেছি।।নিলা হাঁটতে পারছেনা।একটু পর পর দাঁড়িয়ে পড়ছে। বুঝতে পারলাম কষ্ট হচ্ছে হাঁটতে। তাই আমি বললাম........
আমিঃ--কি হইছে??
নিলাঃ--পা ব্যাথা করতেছে। হাঁটতে পারছি না??
আমিঃ--রিকশা নিবো??
নিলাঃ--নাহ.??
আমিঃ--তাহলে??
নিলাঃ--কষ্ট হলেও হাঁটবো আপনার সাথে সারাটা রাস্তা। বাকি জীবনটা তো আপনার সাথে হাঁটতে
হবে। এখন থেকেই নাহয় শুরু করে দেই??
আমিঃ--তুমি অলরেডি প্রেমের ভাষা শিখে গেছো??
নিলাঃ--হয়তো। কিন্তু আমি সত্যিই চাই আপনার
সাথে জীবনের বাকি রাস্তাটা পার করতে??
এই বার আর কোনো কথা না বলে নিলাকে কোলে তুলে নিলাম। পুতুলের মতো মেয়েটা বুকে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে চুপচাপ শুয়ে আছে।। লজ্জায় কাঁপছে মেয়েটা কিছুটা ভয়েও। ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলো.........
-গল্পঃ_গার্লফ্রেন্ড_যখন_ভাবি (পর্ব_০৫)
-লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।
নিলাঃ--এটা কি করলেন??
আমিঃ--বাকি রাস্তাটা তো আমার সাথে হাঁটবে। এখন যদি পায়ে ব্যাথা করে তাহলে বাকি রাস্তা কি ভাবে হাঁটবে। তাই একটু সাহায্য করলাম তোমাকে??
নিলাঃ--মানুষ দেখছে তো.??
আমিঃ--এটা মেইন রোড না। আশেপাশে একটাও মানুষ নেই??
নিলাঃ--তারপরেও আমার লজ্জা লাগতেছে। আমি হেঁটে যাবো নামিয়ে দিন আমাকে??
আমিঃ--লজ্জা লাগলে চোখ বন্ধ করে থাকো??
নিলাও চুপ আমিও চুপ। নিঃশ্বব্দে হেঁটে চলেছি আমি।
আকাশে মেঘ জমেছে শুধু বৃষ্টি নামাটাই বাকি।
তুমি চাইলে মেঘ বৃষ্টি ছিল রাজি। শুধু বর্ষণের অপেক্ষা।
হঠাৎ ঝুম করে বৃষ্টি নেমে গেলে খারাপ হতো না। আজ হঠাৎ বৃষ্টিটাকে খুব মিস করতেছি। যদি বৃষ্টি নামতো।
মনে মনে পার্থনা করতেছি যাতে বৃষ্টি নামে।হঠাৎ মেঘের গর্জনে নিলা আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
তারপর শুরু হলো বৃষ্টি আর বৃষ্টি।। মনে মনে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলাম।
নিলা মেঘের গর্জন শুনে ভয়ে চুপসে গেছে।। সেই সাথে অঝড়ে বৃষ্টি। দুজনে ভিজে একাকার। ইচ্ছে করছে নিলাকে একটা কিস করি। কিন্তু না,,বিয়ের আগে কিস করবো না।
আর তো কয়টা দিন।। তারপর না হয় এক সাথে বৃষ্টিতে ভেজা যাবে। হাজার বার কিস করলেও কোনো বাঁধা থাকবে না তখন। কিন্তু আজকে না। আজকে নিজেকে সামলাবো যেই ভাবেই হোক। নিলা আর আমি দুজনেই ভিজে গেছি। মেয়েটা বৃষ্টিতে ভিজে কাঁপতেছে। ঠান্ডা লাগছে মনে হয়।।
সামনে একটা চায়ের দোকান। নির্জন রাস্তা।রাতেরবেলা খুব কম মানুষ থাকে সেখানে।দোকানে গিয়ে দাঁড়ালাম। নিলা ছাড়ছে না আমাকে। নিচে নামিয়ে দিয়েছি কিন্তু এখনো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। দোকানে আরেক জোড়া প্রেমিক প্রেমিকা। তারা এক কাপে দুজনে চা খাচ্ছে।। কিছুক্ষণ পর আমি নিলাকে বললাম........
আমিঃ--নিলা চা খাবে.??
নিলাঃ--না আপনি খান। আমি খাবো না??
আমিঃ--আচ্ছা থাকো আমি চা খাই তাহলে??
নিলাঃ--হুমম.??
আমিঃ--মামা এক কাপ দুধ চা দিন.??
ঝুমঝুম বৃষ্টি আর মামার চা বানানোর টুং টাং শব্দ খুব একটা খারাপ লাগছে না। অন্যরকম অভিজ্ঞতা। চা খেতে খেতে নিলাকে প্রশ্ন করলাম........
আমিঃ--ঠান্ডা লাগছে না??
নিলাঃ--হুমম একটু.??
ফোনটা বের করে দেখলাম অলরেডি ৮টা বেজে গেছে। আকাশকে কল দিলাম......
আকাশঃ--কিরে কই তুই??
আমিঃ--সরি ভাই আমি যেতে পারবো না। তোরা ইনজয় কর। আমার কাহিনি বিয়ের দিন বলবো তোকে??
আকাশঃ--কিন্তু আসবি না কেনো??
আমিঃ--একটু প্রবলেম এ আছি??
আকাশঃ--কি প্রবলেম??
আমিঃ--আরে তেমন কিছু না। তোকে বলবো
বিয়ের দিন??
আকাশঃ--আচ্ছা.??
ফোনটা রাখতেই একটা গাড়ি এসে দাড়ালো দোকানের সামনে। গাড়ির গ্লাস খুলে ভাইয়া ডাক দিলো.........
ভাইয়াঃ--কিরে এখানে কি করিস??
আমিঃ--আরে বৃষ্টির মধ্যে আটকে গেছি??
ভাইয়াঃ--গাড়িতে উঠ.??
শালার এই লাবনির সাথে বার বার দেখা কেনো হয়???নিলা এখনো ছাড়েনি আমাকে। আর মনে হয় ছাড়বেও না।। এমন একটা ছক কষেছে মাথায়। নিলাকে আবার কোলে তুলে নিলাম।
গাড়িরর ভিতর থেকে ভাইয়া আর ভাবি মানে লাবনি দুজনেই দেখছে ব্যাপারটা। লাবনির অবস্থা করুন।
ওর চেহারাটা দেখে হাসি পাচ্ছে।।
নিলাকে গাড়িতে নিয়ে বসালাম।। এখনো জড়িয়ে ধরে রেখেছে আমাকে। তার এখন লজ্জা লাগতেছে না।
ভাই আর তার বড় বোনের সামনে সে আমাকে
জড়িয়ে ধরে আছে।। এমনিতেই তো অল্পতেই লজ্জায় লাল হয়ে যায়। ভাইয়া গাড়ি চালাচ্ছে।
হঠাৎ করে সামনে তাকিয়ে দেখি লাবনি গাড়ির ভিতরে গ্লাসটায় তাকিয়ে আমাদের দেখতেছে। দেখুক তাতে আমার কি। আমি তো ভালোবেসে ফেলছি নিলাকে।
নিলা চোখ বন্ধ করে আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে। আর
ভাইয়া গাড়ি চালাতেই ব্যাস্ত? লাবনি আমাদের দেখছে।
আমি নিলার কপালে হাত রাখলাম। হালকা জ্বর জ্বর মনে হলো। সারা শরির ভেজা তার। শার্টটা খুলে নিজ হাতে নিলার মাথা মুছে দিলাম।
গ্লাসে তাকিয়ে দেখি লাবনির চোখে পানি। বৃষ্টির পানি নাকি! বুঝলাম না কিছুই। কাঁদতে থাকুক। মাত্র তো শুরু। আরো অনেক কাঁদতে হবে। সবকিছুর শোধ নিবো তারপর দুরে সরে যাবো।।
খেয়াল করলাম নিলা কাঁপতেছে.?? কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। বাসার সামনে এসে থামলো ভাইয়া।
তারপর আমাকে বললো........
ভাইয়াঃ--অপুর্ব তুই লাবনি আর নিলাকে বাসায়
নামিয়ে দিয়ে আয়??
আমিঃ--আচ্ছা.??
এই কথা বলে ভাইয়া নেমে গেলো। আমি নিলার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে সামনে গিয়ে বসলাম। লাবনি পাশে বসা নিলা পেছনে। নিলা চোখ বন্ধ করে সুয়ে আছে।
মনে হচ্ছে দুইটা আমার। কিন্তু আমি তো একজনকে চাই। আমি তো নিলাকে চাই লাবনিকে না।
আমি সামনে তাকিয়ে গাড়ি চালাচ্ছি। লাবনি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
হয়তো ভাবতেছে কিভাবে এতোটা কঠোর হলাম।। কিন্তু সে তো জানেনা তার ছেড়ে যাওয়া আমাকে কতটা কষ্ট দিয়েছে। কষ্ট পেতে পেতে আজ আর তার কষ্ট আমাকে কাঁদায় না। তবে কিছু সৃতি আছে যেগুলা মনে পড়লে না চাইলেও চোখে জল চলে আসে।
.....
নিলার বাসার সামনে এসে গাড়ি দাঁড় করলাম।।তারপর আমি গাড়ি থেকে নেমে গাড়ি আনলক করলাম। লাবনি বের হয়ে বাসার ভিতরে ঢুকে দাড়ালো। এবার আমার পালা।
নিলাকে আবারো কোলে তুলে নিলাম। লাবনি তাকিয়ে দেখতেছে আমাদেরকে। নিলার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলাম। মেয়েটা লজ্জা পেয়ে আমার বুকে মুখ লুকালো। বাসার ভিতর এসে নিলাকে নামিয়ে দিলাম। তারপর লাবনিকে বললাম......
আমিঃ--ভাবি নিলা তো বৃষ্টিতে ভিজছে আর শরিরে হালকা জ্বর জ্বর ভাব। একটু মেডিসিন খাওয়াই
দিয়েন ওকে.??
লাবনিঃ--আচ্ছা.??
লাবনি দ্রুত ভিতর ঢুকে গেলো। আমিও নিলাকে বিদায় দিয়ে চলে আসলাম। বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে একটু বিশ্রাম নিলাম। রাতে খাবার টেবিলে বসতেই আব্বু প্রশ্ন করলো.........
আব্বুঃ--দিনকাল কেমন চলে??
আমিঃ--এইতো আব্বু ভালো??
আব্বুঃ--আর আপনার কেমন??
ভাইয়াঃ--আমারো ভালো??
অরিনঃ-- দুজনেরই বিয়ে। ওদের ভালো কাটবে
না তো কি আমার ভালো কাটবে??
আমিঃ--আব্বু ওকেও বিয়ে দিয়ে দাও। দিনকাল ওর ও ভালো কাটুক। ওর এতো কষ্ট আর সহ্য হয়না??
আব্বুঃ--থাম সবাই। আমার কথা শোন.??
আমিঃ--হুমম আব্বু বলো??
আব্বুঃ--বিয়ের তো আর কয়টা দিন বাকি। তো সব কাজ কে করবে??
আমিঃ--অরিন.??
অরিনঃ--আমি মানে??
ভাইয়াঃ--তোর বিয়ের সময় আমরা শোধ করে দিবো ঠিক আছে??
আব্বুঃ--আচ্ছা ডেকোরেশন এর লোক দিয়ে করিয়ে নিবো। কিন্তু কাউকে তো সাথে থাকতে হবে তাইনা?
আমিঃ--কেনো তুমি কি করবা??
আব্বুঃ--আমি কি করবো বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিবো??
আমিঃ--একটা কাজ করা যায়??
আব্বুঃ--কি কাজ??
আমিঃ--তুমি আর তোমার বন্ধুরা মিলে কাজ করবা। আড্ডাও হবে,, কাজও হবে??😜
আব্বুঃ--এতো ভালো কাজ আমার করতে হবেনা? অপুর্ব তুই বাসা সাজানোর কাজটা দেখবি আর
তুই দেখবি রান্নার দিকটা??
আমিঃ--আচ্ছা??
এটা কোনো কথা হলো। নিজের বিয়েতে নিজেকে কাজ করতে হবে। ধুরর ভাল্লাগে না আর। ভাবছিলাম বিয়ের আগে বউকে নিয়া সেই মজা করবো।।।সেটা আর হলো না। কি আর করার কাজে লেগে পড়তে হবে দুই দিন পর থেকে।
তারপর খাবার খেয়ে রুমে এসে শুয়ে পড়লাম।। পরের দিন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে নিলাকে কল দিলাম।
রিং হচ্ছে কিন্তু ধরছে না।আল্লাহ ভালো জানে কি হইছে আবার। কালকে যেরকম ভিজছে বৃষ্টিতে! জ্বর না আসলে হলো।। তিন চার বার কল দিয়েও কোনো রেসপেন্স না পেয়ে উঠে ফ্রেস হলাম।। রুমে এসে দেখি ফোনে দুবার কল করেছিলো নিলা।।এবার রিং হওয়ার সাথে সাথেই কল ধরলাম......
আমিঃ--হ্যালো??
নিলাঃ--কই ছিলেন??
আমিঃ--এইতো ফ্রেস হলাম তুমি কই ছিলে? কল দিছিলাম ধরোনি কেনো??
নিলাঃ--আমিও ফ্রেস হলাম??
আমিঃ--ওহ আজকে দেখা করতে পারব??
নিলাঃ--হুমম পারবো??
আমিঃ--তোমার জ্বর কমছে??
নিলাঃ--না কালকের মতো হালকা,বেশি না।
সমস্যা নাই??
আমিঃ--মেডিসিন নিবা??
নিলাঃ--লাগবো না??
আমিঃ--যা বলছি করবা আর দুপুরে নামাজ
পড়ে এসে সরাসরি দেখা করবো??
নিলাঃ--ঠিক আছে লেকের ধারে আসবেন??
আমিঃ--ওকে.??
নিলাঃ--বাই??
ফোনটা রেখে আবার ঘুম দিলাম।কিন্তু বেশিক্ষণ ঘুমাতে পারলাম না। আম্মু এসে ডেকে গেছে. খাওয়া হয় নাই এখনো। ভালো লাগতেছে না! তাই খাওয়া হয় নাই।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ১২ঃ২৫বেজে গেছে।আজান দিতেছে। নামাজে যেতে হবে। তাড়াতাড়ি গোসল করে পাঞ্জাবি পড়ে বের হয়ে গেলাম।
নামাজ শেষ করে লেকের ধারে গেলাম।। নিলা আসেনি এখনো।। বসে আছি একা একা। ক্ষুদা লাগছে প্রচুর। গতকাল রাতে খাইছি সকাল থেকে কিছু খাওয়া হয়নি।
একা একা বসে থাকতে ভালো লাগতেছে না।।
অপেক্ষা জিনিস টা এতোটা কষ্ট দেয় কেনো কে জানে।
তবুও ভালো লাগছে নিলাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে যাবো।
যেই পরিমান ক্ষুদা লাগছে তাতে বেশিক্ষন না খেয়ে থাকলে মরে যাবো মনে হয়। কারন আমি আবার ক্ষুদা সহ্য করতে পারি না। :-(
বসে বসে পুকুরে ঢিল ছুড়তেছি। নিরব পরিশেষ মানুষ নাই। নাই কোনো কোলাহল। পানিতে ঢিল ছুড়ার সাথে সাথে শব্দ হচ্ছে।।
হঠাৎ পেছনে তাকিয়ে দুরে নিলাকে দেখলাম। নিলাকে দেখে নিজের অজান্তেই মুখে হাসি ফুটে উঠলো।
নিলা আমার পাশে এসে বসলো, ওর হাতে একটা ব্যাগ। জানিনা কি আছে ব্যাগের ভিতর।
আমার কাছে একটা জিনিস আছে।গাছের পাশে লুকাই রাখছি। পাঞ্জবীর পকেট নাই। কিছুক্ষণ পর নিলা আমাকে বলে উঠলো.........
নিলাঃ--পাঞ্জাবীতে আপনাকে ভালো লাগতেছে??
আমিঃ--তোমাকে শাড়িতে ভালো লাগে??
নিলাঃ--আপনার জন্য একটা জিনিস আনছি??
আমিঃ--সেটা তো দেখতেই পাচ্ছি। কিন্তু
জিনিসটা কি??
নিলাঃ--চোখ বন্ধ করেন??
আমিঃ--মেরে ফেলবা নাকি??
নিলাঃ--আপনি চোখ বন্ধ করেন নয়তো দিবোনা??
আমিঃ--আচ্ছা ঠিক আছে বন্ধ করলাম??
নাকে বিরিয়ানির গন্ধ পাইতেছি।কৌতুহল কাটিয়ে চোখ খুলেই ফেললাম। যা ভাবছি তাই।। নিলা বিরিয়ানি রান্না করে আনছে। এরপর আমি বললাম.........
আমিঃ--তুমি কেমনে জানলে বিরিয়ানি আমার প্রিয়??
নিলাঃ-আমি জানিনা তো। আপুকে জিজ্ঞেস করছিলাম কি রান্না করবো সে বললো বিরিয়ানি। তাই আরকি রান্না করলাম??
লাবনি তো জানে আমার বিরিয়ানি পছন্দ। কতশত বার তার সাথে বসে বিরিয়ানি খাইছি। আজকে তার ছোট বোনের সাথে বসে খাবো।। তারপর নিলা আমাকে বলে উঠলো........
নিলাঃ--নেন খান??
আমিঃ--আমি খেতে পারবো না??
নিলাঃ--কেনো??
আমিঃ--তুমি খাইয়ে দিবা??
নিলাঃ--আমি পারবো না??
আমিঃ--তাহলে আমিও খাবো না??
নিলাঃ--ঠিক আছে হা করুন??
নিলা আমাকে খাইয়ে দিতে শুরু করলো।বিরিয়ানি মুখে দিতেই বুঝলাম এটা লাবনি রান্না করছে। তার হাতের রান্না অনেকবার খাইছি আমি।বিরিয়ানিতে সে ঝাল বেশি দিবে। আর যখন প্যাকেট করার সময় লেবুর রস দিয়ে অনেকটা টক বানিয়ে ফেলবে।
এই স্বাদটা কখনো ভোলা যাবে না।। নিলা হেল্প করছে রান্না করতে কিন্তু ঝাল আর লেবুর রস নিলিমা দিছে।
অদ্ভুত একটা স্বাদ। চোখে পানি চলে আসছে। অনেক দিন পর লাবনির হাতের বিরিয়ানি খেলাম আবার।
নিলা আমার দিকে তাকিয়ে বললো......
নিলাঃ--আপনার কি ঝাল লাগছে??
আমিঃ--হুমম। পানি আনছো??
নিলাঃ--হ্যা এই নিন??
বোতলটা এগিয়ে দিলো নিলা। ধরা পড়ে যাওয়ার আগে নিজেকে সামলে নিলাম। বারবার কেনো লাবনির কথাই মনে পড়ে। নিলাকে তো ভালোবাসি তাহলে লাবনির সৃতি কেনো কাঁদায়।।
উত্তরটা আমার অজানা নয়।তবুও বারবার বোকার মত নিজেকেই প্রশ্ন করে বসি। উত্তর তো এটাই হবে যে, কিছু মানুষ আছে যাদেরকে একটা সময় অনেক ভালোবাসা হয়.? কিন্তু মানুষটা বুঝে না। তখন আমরা অনেক কষ্ট পাই। আস্তে আস্তে কষ্টের মাত্রাটা কমে আসে। আমরাও একা পথ চলতে শিখে যাই। বুঝতে পারি ওপাশের মানুষটা আমাকে চায় না। তাহলে কেনো বারবার তার পিছনে ছুটবো। তাকে ভেবে কেনো কষ্ট পাবো।
এই ভাবে একটা সময় আমাদের ভিতর আর তার প্রতি কোনো ফিলিংস থাকে না। সত্যিই কোনো ফিলিংস থাকেনা।
আর কান্না পায় না তার কথা মনে হলে। বরং হাসি পায়, নিজেকে অনেক বোকা মনে হয়। নিজের কর্মকান্ড গুলো নিজের পাগলামির কথা মনে পড়ে তখন সত্যিই আমরা হাসি। কারন তখন আমরা নিজেদের নিয়ে ভাবতে শিখে গেছি! বাঁচতে শিখে গেছি একা একা।।
বাইরে বাইরে আমরা অনেক হ্যাপি হয়তো ভিতরেও।
তবে অনেকটা মৃত মানুষের মতো হয়ে যাই।
আমরা হাসি,খেলি,বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাই,পার্টি করি।
সারাদিন আমরা সব করি। কিন্তু রাত হলে না। সেই মানুষটার কিছু সৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠে।। তখন কান্না পায়না দির্ঘশ্বাস উঠে আসে।।
ঠিক তখন নিজেকে কি বুঝাই জানেন। আজকে অনেক ক্লান্ত লাগতেছে ঘুমিয়ে পড়ি। এভাবেই চলে যায় দিন। কিন্তু এমনও কিছু সৃতি আছে যেগুলা মানুষকে কাঁদায়।
ঠিক সেই সৃতি গুলোর মধ্যে এটা একটা। তাই আমি কাঁদি। তাই তার কথা বারবার মনে পড়ে। হুট করে নিলা আমাকে বলে উঠলো.........
নিলাঃ--কি ব্যাপার খাচ্ছেন না কেনো??
আমিঃ--কই খাইতেছি তো??
নিলাঃ--সেই কখন থেকে দেখতেছি ভাবতেছেন। কি ভাবেন এতো??
আমিঃ--ভাবতেছি কবে এই মেয়েটাকে নিয়ে একসাথে থাকবো। দুজনে মিলে রান্না করবো তারপর খাবো??
নিলাঃ--আর তো মাত্র কয়দিন। এতো তারাহুরো কেনো??
আমিঃ--আমার তো মনে হচ্ছে এখনই বিয়ে
করে ফেলি??
নিলাঃ--আমার মনে হচ্ছে এখন না আরো এক
বছর পর করি??
আমিঃ--কেনো এক বছর পর কেনো??
নিলাঃ--এই এক বছর প্রেম করবো তারপর বিয়ে??
আমিঃ--ঠিক আছে তাহলে আব্বুকে বলি এখন
বিয়ে করবো না??
নিলাঃ--আরে না এমনি বলছি??
আমিঃ--বুঝি বুঝি সবই বুঝি??
নিলাঃ--কি বুঝেন??
আমিঃ--এই যে তুমি ভয় পাইতেছো এক বছরে
যদি অন্য কারো হয়ে যাই??
নিলাঃ--ঘোড়ার ডিম বুঝেন??
আমিঃ--ওইটা আবার কি? খায় না পড়ে??
নিলাঃ--বুঝবেন না কি করে??
আমিঃ--বুঝিয়ে বলো??
নিলাঃ--বিয়ের পর বলবো??
আমিঃ--নাহ এখন শুনবো??
নিলাঃ--বলছি না বিয়ের পর বলবো??
কথাটা বলেই রাগী লুক নিয়ে তাকালো।। হায় হায় মেয়ে দেখি রাগও করতে পারে। রাগলে তো দারুন লাগে নিলাকে। চোখগুলা গোল আলুর মতো হয়ে যায়। বাচ্চাদের মতো লাগে। এরপর আমি নিলাকে বললাম...
-গল্পঃ_গার্লফ্রেন্ড_যখন_ভাবি (পর্ব_০৬)
-লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।
কথাটা বলেই রাগী লুক নিয়ে তাকালো।। হায় হায় মেয়ে দেখি রাগও করতে পারে। রাগলে তো দারুন লাগে নিলাকে। চোখগুলা গোল আলুর মতো হয়ে যায়। বাচ্চাদের মতো লাগে। এরপর আমি নিলাকে বললাম...
আমিঃ--তুমি রাগও করতে পারো??
নিলাঃ--আমি কি এলিয়েন যে রাগ করতে পারবো না??
আমিঃ--না। আসলে আমি ভাবছিলাম তুমি রাগ করতে পারো না??
নিলাঃ--শুনেন আমি অনেক রাগি ঠিক আছে। বিয়ের পর দেখিয়েন??
আমিঃ--আচ্ছা দেখা যাবে কত রাগ আছে তোমার??
নিলাঃ--আচ্ছা এবার সরুন। ঘেষতে ঘেষতে তো একদম কাছে চলে এসেছেন??
আমিঃ--তো আমার বউ আমি কাছে আসবো না??
নিলাঃ--শুনেন এখনো বিয়ে হয়নাই ঠিক আছে??
আমিঃ--আচ্ছা ঠিক আছে হয় নাই। হবে তো তাই না??
নিলাঃ--আগে হোক তারপর কাছে আইসেন??
আমিঃ--বাহহ। কালকে তো এমনভাবে জড়িয়ে ধরে ছিলা যেনো আমাদের ৫-৭ বার বিয়ে হয়েছে। আর আজকে তো চিনতেই পারছো না??
নিলাঃ--আরে কালকের কথা বাদ। ভয় পাইছিলাম
তাই ছাড়িনি। নাহলে আপনার মতো বান্দরকে কে জড়িয়ে ধরবে???
আমিঃ--কি আমি বান্দর??
নিলাঃ--না তো কি? দেখেন হাত ধরে ফেলছেন??
আমিঃ--আচ্ছা ঠিক আছে ছাড়লাম। যাও আর
ধরবো না??
নিলাঃ--হুমমম.??
আমি একটু দুরে সরে বসলাম। এবার নিলা ঘেষতে লাগলো। তাই আমি বললাম.......
আমিঃ--কি ব্যাপার এদিকে আসতেছো কেনো??
নিলাঃ--এমনি ওখানে রোদ তাই এদিকে আসলাম??
আমিঃ--নিলা একটা জিনিস দেখাবো দেখবা??
নিলাঃ--কি??
আমিঃ--ওইযে দেখো মাকড়শা??
নিলাঃ--😵😵😵
নিলা চিৎকার করে উঠেই আমার দিকে আসলো। ওকে দেখে আমিও উঠে দৌঁড় দিলাম। নিলা আমার পেছনে দৌঁড়াইতেছে। আর চিৎকার করতেছে। আমি ভাবলাম আমি কেনো দৌঁড়াইতেছি।। আমি দাঁড়াতেই নিলা এসে জড়িয়ে ধরলো। তারপর আমি বললাম..........
আমিঃ--নিলা ছাড়ো আমাকে??
নিলাঃ--না মাকড়শা??
আমিঃ--আমাদের তো এখনো বিয়ে হয় নাই৷ জড়িয়ে কেনো ধরছো??
নিলাঃ--হয় নাই হবে তো তাইনা??
আমিঃ--আগে হোক তারপর ধইরো??
নিলাঃ--প্লিজ আমি ভয় পাই মাকড়শাকে??
আমিঃ--আরে মাকড়শা নাই তো। আমি এমনি বলছি??
নিলাঃ--না আছে??
আমিঃ--আরে দেখো নাই??
নিলাঃ--তারমানে আপনি মিথ্যা বলে আমাকে ভয় দেখাইছেন??
আমিঃ--হুমম মাঝে মাঝে একটু আধটু মিথ্যা বললে কিছু হয় না??
নিলাঃ--আপনি থাকেন আমি গেলাম??
আমিঃ--আরে ঔষুধ গুলো নিয়ে যাও??
নিলা ঔষধ গুলো নিয়ে দ্রুত হেঁটে চলে গেলো?? পেছন থেকে তার চলে যাওয়া দেখতে লাগলাম। বেশ রাগি মেয়েটা। প্রথমে তো ভেবেছিলাম শান্তশিষ্ট ভদ্র একটা মেয়ে। এখন তো দেখি পুরা উল্টা৷ রাগের ডিব্বা একটা।
আমি একটা রিকশা নিয়ে নিলার পিছনে পিছনে যেতে লাগলাম। মামাকে বললাম আস্তে চালাতে। মামাও
বুঝে ফেললো ব্যাপারটা। আস্তে আস্তে রিকশা চালাতে লাগলো। নিলা একটু পর পর পিছনে তাকিয়ে দেখছে।
আমি বললাম.........
আমিঃ--এইযে মিস রিকশায় উঠেন। এভাবে আর কতক্ষণ হাঁটবেন??
নিলাঃ--আপনার সাথে যাবো না আমি। আপনি একাই যান??
আমিঃ--সত্যিই যাবে না?
নিলাঃ--না.??
আমিঃ--এই মামা জোড়ে টানো তো একাই যাবো??
হঠাৎ নিলা রিকশায় উঠে বসলো। মাঝ খানে ব্যাগ দিয়ে রাখছে। দুবার ব্যাগ সরানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু
সফল হতে পারিনি! প্রতিবার হাত সরিয়ে দিছে। বুঝলাম রাগ করছে। এখন রাগ কিভাবে ভাঙাবো। দেখি হাত ধরে রাগ ভাঙে কি না। নিলার হাত ধরতেই ঝটকা মারলো। এরপর আমি নিলাকে বললাম..........
আমিঃ--এরকম কেনো করতেছো??
নিলাঃ--তো কিরকম করবো??
আমিঃ--এই সামান্য বিষয় নিয়ে এই রিয়েক্ট। ওকে!
মামা রিক্সা থামাও??
রিকশা থেকে নেমে ভাড়াটা দিয়ে বললাম.......
আমিঃ--উনি যেখানে যেতে চায় সেখানে নামিয়ে দিও??
কথাটা বলে সামনের গলি দিয়ে হাঁটতে লাগলাম। সন্ধা হয়ে গেছে বাসায় আসতে আসতে। বাসায় এসে ফোনটা অফ করলাম। রাগ হচ্ছে প্রচুর। সামান্য বিষয় নিয়ে কেউ এতো রিয়েক্ট করে।
যাইহোক দুইদিন আর ফোন অন করবো না। সারারাত ফোন বন্ধ করে রাখলাম। পরের দিন ঘুম থেকে উঠে ফোন অন করে দেখি অনেকগুলা মিসড কল।
নিলা কল দিয়েছিলো। এর মধ্যে আবার লাবনির কলও আছে দেখতেছি। লাবনির নাম্বারে কল ব্যাক করলাম। একটু পর কলটা রিসিভ করলো আর বললো............
লাবনিঃ--হ্যালো??
আমিঃ--হ্যা কল দিছিলেন??
লাবনিঃ--হুমমম??
আমিঃ--কেনো??
লাবনিঃ--এমনি একটা কথা বলার ছিলো??
আমিঃ--কি কথা বলেন??
লাবনিঃ--আসলে আমি চাইনা তুমি নিলাকে বিয়ে করো??
আমিঃ--কেনো??
লাবনিঃ--জানিনা আমি মেনে নিতে পারছি না তোমাদের। তুমি প্লিজ বিয়েটা করবে না??
আমিঃ--তুমিও তো আমার ভাইকে বিয়ে করতেছো আমি কি কিছু বলছি। দেখো সবকিছু ফাইনাল
আর আমিও নিলাকে ভালোবাসি আর ওকেই বিয়ে করবো??
লাবনিঃ--কিন্তু অপুর্ব আমি...
আমিঃ--তুমি আমার ভাবি??😀
লাবনিঃ--অপুর্ব মাফ করা যায় না আমাকে??
আমিঃ--কিসের জন্য??
লাবনিঃ--তোমাকে কষ্ট দিছিলাম এজন্য??
আমিঃ--ভাবি এইটা কোনো কথা বললেন। সেই কবে কি হইছে সেটা নিয়ে এখনো পড়ে আছেন। আমি ওইসব ভুলে গেছি অনেক আগেই??
লাবনিঃ--তুমি বিয়েটা কইরো না প্লিজ??
আমিঃ--ফোন রাখুন নিলা কল দিতেছে??
কলটা কেটে দিলাম। আর লাবনির নাম্বারটা ব্লক লিস্টে রেখে দিলাম। ও এরকম করলে হয়তো সত্যিই বিয়েটা করা হবেনা। রিস্ক নিতে চাইনা কোনো। এরপর নিলাকে কল দিলাম..........
আমিঃ--কি হইছে কল দিয়েছো কেনো??
নিলাঃ--ফোন বন্ধ ছিলো কেনো??
আমিঃ--চার্জ ছিলো না??
নিলাঃ--মিথ্যা কথা??
আমিঃ--মিথ্যা কেনো বলবো??
নিলাঃ--কারন রাগ করে আছেন তাই??
আমিঃ--রাগ তো তুমি করে আছো আমি না??
নিলাঃ--হ্যা আমি রাগ করছিলাম কিন্তু পরে আবার আপনি রাগ করছেন??
আমিঃ--তো কল দিছো কেনো ওইটা বলো??
নিলাঃ--ভালোবাসি তাই??
আমিঃ--হুমম কালকে মামার সামনে রিকশায় বুঝিয়ে দিছো কতটা ভালোবাসো??
নিলাঃ--আরে তখন তো রেগে ছিলাম তাই??
আমিঃ--ভালো করছো। আচ্ছা রাখি আমি পরে কথা হবে??
নিলাঃ--নাহ এখন কথা বলবো??
আমিঃ--ব্রাশ করবো??
নিলাঃ--পরে.? আগে ভালোবাসি বলবেন তারপর??
আমিঃ--পারবো না??
নিলাঃ--তার মানে আপনি আমাকে ভালোবাসেন না??
আমিঃ--জানি না??
নিলাঃ--ঠিক আছে যান রাখেন। কথা বলতে হবে না বাই??
আমিঃ--ভালোবাসি??
নিলাঃ--কাকে??
আমিঃ--আপনাকে??
নিলাঃ--হুহহহ??
আমিঃ--হুহহ কি??
নিলাঃ--আপনার মাথা??
আমিঃ--শুনো আজকে রাতে তোমার বাসায় যাবো আমি??
নিলাঃ--কেনো??
আমিঃ--একটা কাজ আছে??
নিলাঃ--কি কাজ??
আমিঃ--যখন যাবো তখন দেখে নিও??
নিলাঃ--না এখন বলতে হবে??
আমিঃ--আরে বলা যাবে না এখন। সারপ্রাইজ
হিসেবে থাকুক??
নিলাঃ--তো কখন আসবেন??
আমিঃ--সবাই যখন ঘুমাবে তখন??
নিলাঃ--কেনো সবাই ঘুমানোর পর কেনো??
আমিঃ--বুঝো না কেনো??
নিলাঃ--না। কেনো বলেন??
আমিঃ--সারাদিন আর কথা হবে না যা হওয়ার
রাতে। বাই রাখলাম??
ফোনটা কেটে দিয়ে অফ করে ফেললাম।। একটু ভয়ে ভয়ে থাকুক দেখুক কেমন লাগে। বাকিটা রাতে হবে।
সারাদিন ফোন বন্ধ করে রাখলাম।। রাখি একটু চিন্তায়।
তারপর হুট করে সারপ্রাইজটা দিয়ে দিবো।সন্ধা হতেই সব অ্যারেঞ্জমেন্ট করে ফেললাম। তারপর আস্তে আস্তে পা বাড়ালাম নিলার বাসার দিকে।
ওর বাসার সবাই জানে যে এসব আমি করছি। ওরাও হেল্প করছে শুধু নিলা জানেনা। আমি নিলার বাসায় গিয়ে চুপ করে ওর রুমের ভিতর ঢুকে পড়লাম। গিয়ে লুকিয়ে পড়লাম ওর খাটের নিচে।
কি করবো!! আর কোনো জায়গা নাই লুকানোর মতো।
৮ টা বেজে গেছে কিন্তু এখনো নিলা আসেনি! কিছুক্ষন পর নিলা আসলো! এসে বিছানায় বসলো। আমি চুপ করে বসে আছি! কোনো নড়াচড়া করলাম না।
নিলা বারবার জানালার দিকে যাচ্ছে আবার বিছানায় আসছে। বিছানার নিচে এতো🙁:-( কামড়ে সব লাল বানায় দিলো। তারপরেও দাঁত চেপে বসে আছি।
ওখানে কতক্ষন ছিলাম মনে নেই। হঠাৎ ঘুমিয়ে গেলাম।
ঘুম ভাঙতেই দেখি লাইট অফ। ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখি ১১ঃ৪৯ বাজে। নিলার কল আসছিলো অনেক গুলো।। ভাগ্যিস ফোন সাইলেন্ট করা ছিলো নইলে ধরা খেয়ে যেতাম।
আস্তে আস্তে খাটের নিচ থেকে বের হয়ে আসলাম। ডিম লাইটের আলোয় মেয়েটা ঘুমাচ্ছে। আমি লাইট টা অফ করে দিলাম। তারপর জানালার পর্দাটা সরিয়ে দিতেই চাঁদের আলো এসে পড়লো নিলার মুখের ওপর।।
কেমন যেনো নিল সাদা একটা আবরন।। অদ্ভুত সুন্দর লাগছে নিলাকে। আমি ওর পাশে বসে এমন মায়াভরা একটা মুখ দেখতে পারবো ভাবিনি কখনো। আমার জন্য এটা উপড়ি পাওয়া।।
ফোনের দিকে আবার তাকালাম দেখি ১১ঃ ৫৬ বাজে।
নাহ আর দেরি করা উচিত হবে না। নিলা গভীর ঘুমে আছে।। আরো একটু সতর্কতার জন্য আরেকটু চেক করে নিলাম। না সত্যিই ঘুমিয়ে গেছে।।।
নিলাকে কোলে তুলে নিলাম। আস্তে আস্তে মেয়েটা নড়ে উঠলো। এতো কম ওজন হবে ভাবিনি। খুব সহজেই কোলে তুলে ফেললাম। ভালো হয়েছে,বিয়ের পর যখন কোলে নিবো তখন আর প্রবলেম হবে না।
নিলাকে নিয়ে ছাদে উঠলাম। লাবনি ছাড়া সবাই ছাদে আছে। নিলাকে নিয়ে এই অবস্থায় গিয়ে বেশ লজ্জার মধ্যে পড়ে গেলাম। আমি ভেবেছিলাম এখনো কেউ আসেনি।। কিন্তু এখানে তো সবাই আছে। ধুরর কি যে করি না আমি। এরপর আমি বললাম..........
আমিঃ--আসলে ও ঘুমিয়ে আছে তো তাই??
নিলার আম্মুঃ--ঠিক আছে সমস্যা নেই??(মুচকি হেসে বললো কথাটা)
রাত ১২ঃ০১ বাজতেই সবাই চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো
Happy Birthday Princes Nila....
মেয়েটা ভয় পেয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে। আমি কি করবো বুঝতে পারছি না। অবস্থা স্বাভাবিক হতেই নিলা আমাকে ছেড়ে দিলো, তারপর কেক কাটলো। এরপর আমি বললাম..........
-গল্পঃ_গার্লফ্রেন্ড_যখন_ভাবি (পর্ব_০৭)
-লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।
আমিঃ--ভাবিকে দেখছি না যে??
নিলার আম্মুঃ--ওর মাথা ব্যাথা করতেছে তাই ঘুমিয়ে গেছে ওকে আর ডাকিনি??
আমিঃ--ওহহ.??
কিছুক্ষন পর সবাই চলে গেলো। শুধু আমি আর নিলা আছি। নিলা দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। তারপর মারতে লাগলো আমাকে। নিলার এমন কান্ড দেখে আমি বললাম..........
আমিঃ--একি মারছো কেনো??
নিলাঃ--তো কি করবো? আপনি অনেক পঁচা??
আমিঃ--কেনো আমি আবার কি করলাম??
আমিঃ--জানেন কতটা টেনশনে ছিলাম। আর আব্বুর সামনে এসব কি.??
আমিঃ--কোন সব??
আমিঃ--ওইযে কোলে করে আনলেন কেনো??
আমিঃ--তুমি কিভাবে জানলে? ওয়েট তুমি কি
জেগে ছিলে??
আমিঃ--হুমম জেগে ছিলাম। যখন কোলে তুললেন তখন ঘুম ভেঙে গেছিলো??
আমিঃ--তার মানে তুমিও খেলছো??
আমিঃ--তো আপনি এতো সব করলেন আমি কি শুধু চুপ করে শুয়ে থাকতে পারবো না? আর আমার তো ভালোই লাগতেছিলো??
আমিঃ--মানে কি? দাড়াও দেখাচ্ছি মজা??
আলতো করে নিলার হাত ধরলাম। নিলা কেমন শিউরে উঠলো। জোরে একটা টান দিতেই নিলা আমার কাছে চলে আসলো।। অনেকটা কাছে। নিলাকে কোলে তুলে নিতেই বুঝলাম মেয়েটা কাঁপতেছে।
চাঁদের আলোয় আবারো সেই অসম্ভব সুন্দর মেয়েটাকে দেখছি আমি। হঠাৎ ছাদে কারো প্রবেশে। তাড়াতাড়ি নিলাকে নামিয়ে দিলাম আমি।। তাকিয়ে দেখি লাবনি।
ইশশ ছেড়ে দিয়ে কি ভুলটা করলাম। আরেকটু কোলে রাখলে ভালো হতো। লাবনি দেখলে ভালোই হতো!!
বেশ জ্বলতো😐।। এরপর লাবনি এসে বললো.........
লাবনিঃ--কি হচ্ছে এখানে এসব??
নিলাঃ--আপু কিছু না....
লাবনিঃ--চুপ। তুই রুমে যা??
নিলাঃ--কিন্তু...
লাবনিঃ--যেতে বলছি যা.??
একটু ধমকের সুরে বললো লাবনি।আবার কি গন্ডগোল করবে কে জানে। নিলা মাথা নিচু করে চলে গেলো।
এরপর লাবনি আমাকে বললো...........
লাবনিঃ--অপুর্ব কি হচ্ছে এসব??
আমিঃ--কি হবে? একটু প্রেম করছিলাম আরকি??
লাবনিঃ--আমি বলছিলাম বিয়েটা না করতে। আর
তুমি কি করছো??
আমিঃ--দেখো বিয়ে করা না করা আমার পার্সোনাল ব্যাপার। এখন তুমি ও তোমার বোন যদি ইচ্ছে
করো তাহলে বিয়েটা ভেঙে দিতে পারো। তবে আমি তোমাকে বিয়ে করবো না। কারন আমি নিলাকে ভালোবেসে ফেলেছি??
লাবনিঃ--অপুর্ব মনে পড়ে কি? এমন একটা রাত আমাদের কাটানোর কথা ছিলো। তুমি বলেছিলে কোনো এক বার্থডে এভাবে উইস করবে। ভুলে
গেছো সবকিছু??
আমিঃ--ভুলিনি বলেই আমার ইচ্ছাটা পুরন করলাম। শুধু মানুষটা ভিন্ন। আর এসব কথা ব্রেকআপেরর
সময় মনে ছিলো না। ব্রেকআপের পরতো একদিনও জিজ্ঞেস করোনি কেমন আছি আমি। তখন তো একবারো এসব কথা মনে হয় নাই। তাহলে এখন কেনো? তখন অগোছালো ছিলাম তাই.??
লাবনি চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো।। বুঝতে পারলাম কাঁন্না করতেছে মেয়েটা। আমিও কিছু বলবো না আর। যা সত্যি সেটাই বলেছি!! কেঁদে কি লাভ। বুঝতে পারছি না তারও তো বিয়ে হচ্ছে। আমার জ্বলে না তাহলে তার কেনো জ্বলে। বুঝিনা এমন কেনো মেয়েরা।।
লাবনির ওপর আমার খুব রাগ আর বিরক্ত লাগতেছে। তাই ছাদের কোনে গিয়ে একটা সিগারেট ধরালাম। লাবনির এতেও জ্বলে। প্রশ্ন করে উঠলো........
লাবনিঃ--সিগারেট কেনো খাচ্ছো??
আমিঃ--এমনি। এর কারনও কি তোমাকে বলতে হবে নাকি?
লাবনিঃ--না। এমনি জিজ্ঞেস করলাম??
আমিঃ--দেখো লাবনি একটা কথা বলি, আমিও বিয়ে করতেছি আর তুমিও করতেছো তাহলে সমস্যাটা কোথায়? কই আমার তো সমস্যা হচ্ছে না??
লাবনিঃ--জানিনা কিন্তু তুমি অন্য কারো হয়ে যাচ্ছো এটা আমি মেনে নিতে পারছি না??
আমিঃ--হাহাহা। তুমি তো বারবার অন্য কারো হয়ে গেছো। আমি কি বলেছি কিছু??
লাবনিঃ--অপুর্ব পুরনো কথা কেনো টানছো??
আমিঃ--কারন তুমি মনে করিয়ে দিচ্ছো তাই। তোমার প্রত্যেকটা কথা বিষের মতো লাগে আমার। যাই বলো সেই পুরনো কথাই মনে পড়ে যায়। তুমি প্লিজ আর আমাকে কিছু বলো না। তুমিও বিয়ে করো আমিও করি। পুরনো সব শেষ এখানেই। আগে যা হইছে সব ভুলে যাও। নতুন করে শুরু করো??
লাবনিঃ--অপুর্ব তুমি এসব কি বলছো??
আমিঃ--যা সত্যি তাই বলছি। আমি আসি এখন??
আমি ছাদ থেকে নেমে আসতেই লাবনি কেঁদে উঠলো।।
নিজের ভুলের জন্য হারিয়ে ফেলছে আজ আমাকে।
আজ তার চোখের সামনে অন্য মেয়ের সাথে প্রেম করে বেড়াচ্ছি! আর বিয়েটাও তাকেই করবো। সবচেয়ে বড় কথা হলো, মেয়েটা তারই বোন। মেনে নিতে কষ্ট হবেই।
আমিও এটাই চাই!! তার জ্বলুক। জ্বলতে জ্বলতে পুড়ে যাক তার হৃদয়, যেমনটা আমার পুড়েছে। নিচে নামতেই নিলা আমার হাত ধরে ফেললো আর বললো..
নিলাঃ--আপু কি বললো??
আমিঃ--বললো যে রোমান্স একটু কম করতে??
নিলাঃ--ছিহহ কি বলেন এসব??
আমিঃ--সত্যিই ভাবি আমার বেশ ভালো??
নিলাঃ--যান এবার গিয়ে শুয়ে পড়ুন??
আমিঃ--কোথায় শুবো? তোমার রুমে??
নিলাঃ--না সামনের রুমে??
আমিঃ--আজকে তোমার সাথে থাকবো??
নিলাঃ--বিয়ের পর থাইকেন এখন যান??
নিলা কিছুটা ধাক্কা দিয়ে রুমে পাঠিয়ে দিলো আমাকে।
দরজা বন্ধ করার আগে বললাম.........
আমিঃ--নিলা একটা পাপ্পি দিয়ে যাও??
নিলাঃ--হবে না??
আমিঃ--একটা দিবা শুধু??
নিলাঃ--আমি পারবো না??
আমিঃ--তাহলে আমি করবো??
নিলাঃ--না করতেছি??
নিলা আমার ঠোঁটের ওপর হাত রেখে একটা কিস করে দৌঁড়ে পালালো।
কি দুষ্ট মেয়েরে বাবা। একটা কিস করতে বললাম আর উনি কি কিস করলো। এসব বুদ্ধি হূট করে কিভাবে কোথায় থেকে আসে বুঝি না।
মেয়েটার সাথে যতই সময় কাটাচ্ছি ততই তার মায়ায় জড়িয়ে যাচ্ছি। তার কাজগুলো মনে রাখার মতোই। আমিও বা কম কিসে। এক সাথে দুইটা মেয়েকে হ্যান্ডেল করতে হচ্ছে।
লাবনির কথা উঠে আসতেই বুকের মাঝে চিনচিন ব্যাথা করলো। মনে পড়ে গেলো সেই সৃতি গুলা। যেগুলো নিলার সাথে কখনো হবে না। এমন কিছু জিনিস আছে যেটা নিলা কখনো করতে পারবে না।
প্রত্যেকটা মানুষের আলাদা আলাদা বিশেষত্য থাকে! যেটা অন্য মানুষের মাঝে থাকে না। ঠিক তেমনই লাবনির অনেক জিনিস ছিলো যা নিলার মধ্যে নেই।
এতোকিছু না ভেবে ঘুমিয়ে পড়লাম। ভোর হতেই বাসা বের হয়ে আসলাম। বিয়ের আগে শ্বশুড় বাড়িতে
থাকার কথা মানুষ শুনলে খারাপ বলবে তাই। সকাল
৮ টা বাজতেই নিলা কল দিলো........
নিলাঃ--কই আপনি এখন??
আমিঃ--বাসায় কেনো??
নিলাঃ--চলে গেলেন কেনো??
আমিঃ--আরে বিয়ের আগে শ্বশুড় বাড়ি থাকলে মানুষ কি ভাববে! তাই চলে আসলাম??
নিলাঃ--আমি খিচুরি রান্না করতে চাইছিলাম আপনার জন্য। আর আপনি চলে আসলেন??(কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বললো)
আমিঃ--এক কাজ করো। তুমি রান্না করে নিয়ে আসো। আজকে তো বের হতেই হবে। শপিং করতে হবে না! আর দুদিন পর বিয়ে??
নিলাঃ--আচ্ছা ঠিক আছে। রাখি এখন তাহলে??
আমিঃ--আচ্ছা।
মেয়ে মানুষ এতো সহজে কান্না করে কিভাবে? এজন্যই হয়তো ছলনা করতে পারে। চোখের জল তাদের অস্র। খুব সহজেই বিশ্বাস করানোর জন্য এই চোখের পানিই যথেষ্ট আর কিছু লাগে না।
যাইহোক অবশেষে ফ্রেস হয়ে খাওয়া দাওয়া করলাম।
বাড়িতে প্রচুর ব্যাস্ততা।। বাড়ি সাজানো হচ্ছে ডেকোরেশন এর লোক এসেছে আজকে।। হই হুল্লোড় চিৎকার চেঁচামেচিতে পুরো বাড়ি মাথায় উঠেছে।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে পড়ালাম আমি আর ভাইয়া। সব শপিং আজকেই শেষ করতে হবে! এরপর আর সময় কই।
দুইজনে বের হয়ে পড়লাম। বাসার সামনে থেকে লাবনি আর নিলাকে নিয়ে নিলাম। গাড়ির সামনে ভাইয়া আর ভাবি! পিছনে আমি আর নিলা। নিলা খিচুরি নিয়ে আসছে। নিলা খিচুরির টিফিন বের করতেই মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি চাপলো। এই সুযোগে লাবনিকে একটু জ্বালানো যাক। নিলাকে বললাম খাইয়ে দিতে।
ভাইয়া গাড়ি চালাতে ব্যাস্ত।। আর ওদিকে লাবনি লুকিং গ্লাসে আমাদেরকে দেখতেছে। নিলা খাইয়ে দিতেই ওর হাতে আলতো করে কামড় দিলাম। নিলা একটু হাসলো তারপর আবার খাইয়ে দিতে লাগলো। আমি আবারো কামড় দিলাম।
নিলা লজ্জা পাচ্ছে আর আমি মজা নিতেছি। অন্যদিকে লাবনি রাগে ফুলছে। রাগলে লাবনিকে অনেক ভালো লাগে তবে আমার হাসি পায় এখন। লাবনিও তো পারে ভাইয়ার জন্য কিছু রান্না করে আনতে।।।
আমি খাওয়া শেষ করে নিলার আঙুল চুষতে লাগলাম।
লাবনির দিকে তাকিয়ে দেখি চোখ দিয়ে জল বেরুবে বেরুবে অবস্থা। নাহহ আর জ্বালানো যাবেনা।। এরপর সমস্যা হয়ে যাবে।।।
অনেক কিছু কিনলাম। পকেট প্রায় ফাঁকা হয়ে গেলো।
মেয়েদের এতো জিনিস লাগে! সকালে আসছি অথচ দুজনের শপিং এখনো শেষ হয়নি। সন্ধা হয়ে আসলো প্রায়। বিরক্ত লাগে না এদের।
সারাদিন ধরে শুধু ঘুরাচ্ছে। মনে হয় পুরো শপিং মলটাই কিনে নিবে আজকে। অবশেষে সন্ধে ৮ টায় তাদের শপিং শেষ হলো।। দুজনকে বাসার সামনে এনে নামিয়ে দিলাম। যাওয়ার আগে নিলা ডেকে একটা পাপ্পি দিয়ে বিদায় জানালো।
গত কালকের টা আজকে দিয়ে দিলো হিহিহি।। বেচারা ভাইয়াকে কেও কিছু দিলো না।
ভাইয়া আর আমি বাসায় চলে আসলাম।। বাসার কাজ অনেকটা হয়ে গেছে। মাঝ খানে বাকি কালকের দিন! তারপরই বিয়ে। রাতে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। দেখতে দেখতে মাঝখানের দিনটাও ব্যাস্ততার মাঝখানেই কেটে গেলো।
আজকে বিয়ে। অথচ আমার মনেই হচ্ছে না আজকে আমার বিয়ে। ওদিকে সারা বাড়িতে হই হুল্লোড়।
অরিন একটু পরপর এসে জ্বালাচ্ছে অথচ আমার হঠাৎ মনে হচ্ছে জিবনের একটা পার্ট আজকে হারিয়ে ফেলবো।। আজকে তো খুশি থাকার কথা, তবে আমার কেনো জানি কষ্ট হচ্ছে।।।
স্বাভাবিক কিছু! নাকি অস্বাভাবিক কিছু,বুঝার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি। লাবনির কথা খুব মনে পড়ছে। সত্যি খুব ভালোবাসতাম মেয়েটাকে। হয়তো এখনো বাসি তাইতো কষ্ট হচ্ছে। তবে ওর চাইতে নিলাকে বেশি ভালোবেসে ফেলেছি।
যাইহোক যা হওয়ার হয়ে গেছে। এসব ভেবে কাজ নেই।
দুপুর ২ টা বাজতেই রওনা দিলাম?? আধা ঘন্টার রাস্তা মাত্র। পৌঁছে গেলাম খুব তারাতারি। বাড়িটা সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। হয়তো মেয়েটাও আজ সুন্দর করেই সেজেছে। আমার জন্যই সেজেছে। ভাবতেই অবাক লাগছে বিয়ে করতে চলে আসলাম।
ভাইয়া আর আমি একসাথে বিয়ে করতে আসছি সবার কাছে কেমন ব্যাপারটা জানিনা।। তবে আমার লজ্জা লাগতেছে।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে এখন বিয়ের কাজ শুরু হলো। সামনে বসে আছে নিলা আর লাবনি। আর পাশাপাশি আমি আর ভাইয়া। লাবনির দিকে তাকিয়ে দেখলাম চোখে জল আর নিলার চোখে মুখে লজ্জা আর হালকা হাঁসির ছাপ।
দুজনের মনে দুরকম কিছু চলছে বুঝতে পারি??নিলার দিকে তাকিয়ে আরো একবার মুগ্ধ হলাম। চোখ সরাতে ইচ্ছে করছে না তবে কি করবো। এতো মানুষের মাঝে এভাবে তাকিয়ে থাকলে সবাই কি ভাববে?
চোখ নামিয়ে নিলাম। লাবনির দিকে তাকিয়ে দেখলাম কেমন মায়াভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
ইচ্ছে হচ্ছিলো জড়িয়ে ধরে মেয়েটাকে বলি আমিও তোমাকে চাই। কিন্তু জেদটা তখনই নাড়া দিয়ে উঠলো আবারো।
আর নিলাকে ছাড়াও আমার পক্ষে সম্ভব না?? এরকম হাজারো চিন্তা ভাবনা ঘুরতে লাগলো মাথায়। বিয়ের কাজও সম্পূর্ণ হলো। কবুল বলার সময় লাবনির দিকে তাকিয়ে দেখলাম কাঁদতেছে।
সবাই ভাবতেছে একটা কারনে কাঁদছে। কিন্তু আমি তো জানি এই কান্নার অন্য একটা কারন রয়েছে। লাবনির কান্নার ক্ষতটা আমার বুকেও আঘাত করছে।
সে অন্য কারো হয়ে যাবে। যতই জেদ হোক ভালোতো বাসতাম তাকে। কষ্ট আমারো হচ্ছে তবে নিলার দিকে তাকিয়ে সব ভুলে যাচ্ছি বারবার।
👉👉এরপর কি হবে??? বিয়ে তো হয়েই গেলো??
বউ নিয়ে বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। বউকে কোলে করে রুমে নিয়ে যেতে হবে এটাই নাকি নিয়ম।
আগে কখনো বিয়ে করিনি তো তাই জানি না, হিহিহি।
নিলাকে কোলে করে রুমের এসে নামিয়ে দিলাম। সবাই রুমে ঢুকলো আমি বাহিরে বের হয়ে আসলাম। লজ্জা লাগছিলো অনেক তাই। জানি না নিলার কেমন লাগছে এখন। এতগুলা অচেনা মানুষ ঘিরে আছে তাকে।। তার
আমার থাকাটা জরুরি ছিলো।।
এইদিকে আমার তো জ্বলছে একটু একটু লাবনির কথা ভেবে। ওকে নিয়ে তো কত স্বপ্ন দেখেছিলাম। বিয়েটা তো ওকেই করতে চেয়েছিলাম কিন্তু তার একটা ভুল সিদ্ধান্ত সবকিছু বদলে দিলো। আজ সে আমার ভাবি।
চাইলেও আর সেই নাম লাবনি বলে ডাকতে পারবোনা। ডাকতে হবে ভাবি বলে।
তুমিতো ভাবছো আমি নিরব। আমার নিরবতা দেখলে। কিন্তু ভেতরের অস্থিরতা কখনো দেখলে না। বুঝলেও না কখনো আর কখনো বুঝার সুযোগটাও পাবে না।
আমার অস্থিরতা বোঝার একজন পেয়ে গেছি, যেমনটা তুমিও পেয়েছো। ভাইয়া তোমাকে অনেক ভালোবাসবে অনেক।সভালো থেকো তুমি। ভাবতে ভাবতে চোখের কোনে জল এসে গেছিলো।
আসলে যতই ভুলে গিয়ে ভালো থাকার অভিনয় করিনা কেনো।ভালোবাসার মানুষকে কখনো ভুলে গিয়ে ভালো থাকা যায়না।
যেটা শুধুই অভিনয় আর এই অভিনয়ের ভালো থাকার ওপরেই অনেক মানুষ বেঁচে আছে। অনেক সত্য চাপা পড়ে যাচ্ছে এই অভিনয়ের ভালো থাকার ওপর।
আমার সত্যিটাও চাপা পড়ে গেছে। কেউ জানেনা আমি লাবনিকে ভালোবাসতাম।৷ সবাই বের হয়ে যেতেই বন্ধু গুলা আসলো। এসেই রুমে ঢুকিয়ে দিলো।
রাত প্রায় ১২টা বেজে গেছে। দরজা বন্ধ করে গুটি গুটি পায়ে আগানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু আজ হঠাৎ ভয় 😁 লাগছে মেয়েটাকে। কি হবে এসব ভেবে ঘাম ছুটে গেছে আমার😊😊। এর পরেই তো......
-গল্পঃ_গার্লফ্রেন্ড_যখন_ভাবি (পর্ব_০৮_ও_শেষ_পর্ব)
-লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।
রাত প্রায় ১২ টা বেজে গেছে। দরজা বন্ধ করে গুটিগুটি পায়ে আগানোর চেষ্টা করছি, বিড়াল মারতে😁। কিন্তু আজ হটাৎ ভয়😁লাগছে মেয়েটাকে😊। কি হবে এসব ভেবে ঘাম ছুটে গেছে আমার😊😊।
এতোদিন তো খুব কাছে যাওয়ার চেষ্টা করতাম। তাহলে আজ তাকে কাছে পেয়েও ভয় লাগছে কেনো। সব ভয় কাটিয়ে আমি গিয়ে নিলার পাশে বসলাম।। এরপর ওর গালে আলতো করে হাত রেখে বললাম.........
আমিঃ--ওযু করে এসো, নামাজ পড়বো দুজনে??
আমার কথা শুনে মেয়েটা চুপচাপ উঠে গেলো।। আমার উদ্দেশ্য দুইটা। প্রথমত নামাজ পড়বো দুজনে। আর দ্বিতীয়ত মেয়েটার এই মেকআপে ভরা মুখটা আমি দেখবো না! এমনিতেই অনেক ভালো লাগে ওকে।
মেকআপ করে আসল সৌন্দর্যটা ডাকা পড়া মেয়েটাকে আমি দেখতে চাইনা।
নিলা আসতেই আমিও ওযু করে আসলাম।জায়নামাজ নিচে রেখে দুজনে পাশাপাশি দাড়িয়ে নামাজ আদায় করে নিলাম। মনটা ফ্রেস হয়ে গেলো। সব দুঃখ কষ্ট সব অতিত ভুলে নামাজ দিয়ে দুজনের নতুন জিবন শুরু করলাম।। নিলার মাথায় হাত রাখতেই লজ্জায় লাল হয়ে গেলো।কিছুক্ষণ পর আমি নিলার হাত ধরে বলতে শুরু করলাম............
আমিঃ--আজকে কি পাবো ওইটা??
নিলাঃ--কোনটা??
আমিঃ--যেটার জন্য এতদিন অপেক্ষা করেছিলাম??
নিলাঃ--আপনার ইচ্ছা??
আমিঃ--তুমি এমন করলে কি ভাবে হবে??
নিলাঃ--আমি আবার কি করলাম??
আমিঃ--লজ্জা পাচ্ছো কেনো। এতদিন তো খুব মজা নিছো, আর এখন লজ্জা পাচ্ছো??
নিলাঃ--কি বলেন এগুলো??
আমিঃ--দাঁড়াও দেখাইতেছি কি বলি??
বলেই নিলাকে কোলে তুলে নিলাম। নিলা লজ্জায় চোখ বন্ধ করে আছে। ওর চোখের পাতায় একটা কিস করলাম। নিলা শক্ত করে আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে। আমি নিলাকে বললাম.....
আমিঃ--চলো ছাদে যাবো??
নিলাঃ--হুমম চলেন??
তারপর আমি নিলাকে কোলে করে ছাদে নিয়ে গেলাম।
কিন্তু এ কি? ছাদে তো আরো দুজন চলে এসেছে
আগে থেকে। ভাইয়ার বুকে মাথা রেখে লাবনি হাসছে আর কথা বলছে৷ এ দৃশ্য দেখে বুকের ভিতর চিনচিন করে ব্যাথাটা আবার নাড়া দিয়ে উঠলো। আমার
কাছে ও তো নিলা আছে, তবে তার জন্য কষ্ট কেনো লাগছে। আমি নিজেকে সামলাতে হবে। নিজেকে আরো কঠোর করতে হবে।। নিলাকে নিয়ে ছাদে উঠতেই ভাইয়া পিছনে তাকালো। আর বললো.........
ভাইয়াঃ--কিরে তোরা এখানে??
আমিঃ--আমারও তো একই কথা, তোমরা এখানে কেনো??
ভাইয়াঃ--তোর ভাবিকে নিয়ে চাঁদ দেখতে এলাম??
আমিঃ--আমিও তো আমার বউ কে নিয়ে চাঁদ দেখতে এলাম??😊😊
ভাইয়াঃ--হাহাহা, আয় বস??
আমিঃ--নাহ। আমি ওদিকে যাই। তুমি প্রেম করো??
আমাদের দুজনের কথা শুনে লাবনি পিছনে তাকালো।। নিলা আমার কোলে আর লাবনি তাকিয়ে আছে আমার মুখের দিকে। এরপর নিলাকে নিয়ে ছাদের ওপাশে চলে গেলাম। নিলাকে কোল থেকে নামিয়ে দিয়ে ওর কানে কানে বললাম............
আমিঃ--আমাদের ছাদে বাসর করার প্লানটা নষ্ট হয়ে গেলো??
নিলাঃ--তো রুমে চলুন। এখানে ভাইয়া আর আপু আছে। তাদের সামনে প্রেম করা যাবে না??
আমিঃ--কথা খারাপ বলোনি। দেখি ভাইয়াকে পাঠানো যায় কি না??
নিলাঃ--দরকার নেই চলুন তো রুমে। আজকে আপনার পাওয়ার দেখবো! খুব তো বলতেন??
আমিঃ--কি বলতাম??
নিলাঃ--কিছু না চলুন তো??
নিলা কথাটা বলেই এক প্রকার টেনে হিচড়ে রুমে নিয়ে আসলো আমাকে। লাবনি এক সেকেন্ডের জন্য নজর সরায়নি আমার দিক থেকে। মেয়েটার অনেক জ্বলছে হয়তো। তারপর রুমে এসে আমি নিলাকে বললাম.....
আমিঃ--নিলা একটা কথা বলবো??
নিলাঃ--হুমমম বলো, কি বলবে??
আমিঃ--নিলা তুমি দাও কিছু, আমি দিবো কিছু! তাহলে জন্ম নিবে ছোট্ট একটা শিশু??😊😊
নিলাঃ--যাহহহ দুষ্টু কোথাকার। যা মুখে আসছে তাই বলছে। লজ্জা করে না আপনার??
তারপর আমি রুমের দরজা বন্ধ করে দিলাম। নিলা চুল গুলো ছেড়ে দিলো। আমার পছন্দের জিনিস তার এলোমেলো চুল গুলো। আর লোভ সামলাতে পারলাম না। চুলে নিজেকে ডুবিয়ে দিলাম। মাতাল করা গন্ধে পাগল হয়ে গেলাম। নেশার ঘোরে আছি আমি। নিলার গাড়ে কিস করতেই নিলা আমার পিঠে খামচে ধরলো। নিলাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় পেলে দিলাম! তারপর তার কাছে গেলাম। নিশ্বাসের শব্দটা আমার এমন মনে হচ্ছে! তার হার্টবিটের শব্দটা যেনো আমার হৃতপিন্ড থেকে বের হচ্ছে। বাকিটা ইতিহাস!! কি হয়েছে আমি নিজেও জানি না। বিয়ে করিনি তো তাই বলতে পারলাম না।। আপনারা না হয় কষ্ট করে বইয়ের ৪৭৭ পৃষ্ঠা খুঁজে পড়ে নিয়েন ওকে🙃🙃।
পরের দিন সকালে নিলাকে পাশে দেখলাম না। প্রতি টা মেয়ের মতো নিলাও বাসর শেষে গোসল করতে গেছে।
মুসকি একটা হাঁসি দিয়ে ঘুম থেকে উঠলাম।
এমন মুসকি হেঁসে ঘুম থেকে উঠা মানে! আজ সারাদিন ভালো কাটবে। হটাৎ মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি চাপলো। বাথরুমে নক করলাম। নিলা বুঝতে পেরে দরজা খুলে দিলো। আমি ভিতরে ঢুকে যা দেখলাম,, তা আর বলার দরকার নেই।।।
এরপর এক সাথে দুজনে গোসল করে বের হলাম। নিলা একটা কিস করে চলে গেলো। বিয়ের প্রথম দিনেই নিলা বাড়িটাকে আপন করে নিয়েছে, এটাই অনেক কিছু।পাঁচ মিনিট পরে নিলা আবার চলে আসলো। আমি নিলাকে বললাম.......
আমিঃ--কি ব্যাপার চলে আসলে কেনো??
নিলাঃ--আম্মু অনেক পঁচা??
আমিঃ--কেনো আম্মু আবার কি করলো??
নিলাঃ--বকা দিছে। বলে আমি রান্না ঘরে কেনো এসেছি??
আমিঃ--আম্মু এই রকমই। যতদিন সুস্থ আছে ততদিন তোমাকে কাজ করতে দিবে না। কিন্তু তুমি আম্মুর কাজে হেল্প করবে৷ তার সাথে সাথে থাকবে। আম্মু আব্বুর দেখা শুনা করবে। তাহলে তোমাকে সবাই ভালো জানবে৷ আর এটা তোমাকে নিয়ে আমার গর্ব। কারন প্রতিটা স্বামী চায় তার স্ত্রীর নামে ভালো কিছু শুনতে??
নিলাঃ--আচ্ছা ঠিক আছে করবো??
আমিঃ--নিলা একটা গান শুনাবো তোমাকে শুনবে??
নিলাঃ--হুমমম শুনবো শুনান??
তারপর আমি নিলাকে গান শুনালাম। গানটা ছিলো এমন.....👇👇👇
আমিঃ--তোমায় দেখলে মনে হয়, তোমার পেটে আমার বাচ্চা আব্বু আব্বু কয় বুঝি! আব্বু আব্বু কয়?😊😊
নিলাঃ--ডং দেখে বাঁচি না??
তারপর দুজনে সকালের নাস্তা করতে গেলাম। দেখলাম লাবনি খুব চঞ্চল। সেই ৪ বছর আগের মতো চঞ্চলতা আজ দেখতে পাচ্ছি, যেমনটা ছিলো রিলেশনের আগে। হয়তো বিয়ের পর সব সামলে নিয়েছে। মেয়েরা অনেক কিছুই সামলে নিতে পারে। হয়তো সেও সামলে নিয়েছে। খাবার খেয়ে সবাই যার যার রুমে চলে গেলো।
অনেক মানুষ আসলো নতুন বউ দেখার জন্য। এটাই স্বাভাবিক। দুই বউকে সবার পছন্দ হয়েছে।।
^^^
^^^
আর পছন্দ না হলে কার কি। আমার বউ আমার পছন্দ হলেই চলে। কার পছন্দ হলো কার পছন্দ হলো না সেটা দেখার বিষয় না।
সংসার যেহেতু আমি করবো, কারো কোনো মতামতের প্রয়োজন আমি মনে করি না।। লাবনি একটু বেশি সুন্দর এটা সব সময় বলি আমি। তবে নিলাও কম না। এবং কম সুন্দরী হলেও ফেলে দিবো না। চশমা পড়লে খুব কিউট লাগে মেয়েটাকে৷
সারাদিন ব্যাস্ততার মধ্যেই কাটলো। নিলার বাসা থেকে লোকজন আসলো৷ তাদের দেখাশোনা সব তো আমাদের করতে হবে। সন্ধা হতেই ওদের বাড়িতে চলে গেলাম।।
নিলাদের বাড়িতে গিয়ে দেখি,নিলার সব কাজিনরা এক সাথে গোল হয়ে বসে আড্ডা দিতেছে। আমাদের দেখে সবাই এগিয়ে আসলো। গতকাল এত ব্যাস্ত সময় গেছে কারো সাথে পরিচিত হতে পারিনি। আজকে পরিচয় হয়ে যাবে সমস্যা নাই। নিলা আমার হাত ধরে ঘরে নিয়ে গেলো৷।।
বিয়ের প্রথম দিন গুলোর মতো যদি সব সময় হতো। তাহলে কখনও সংসারে দুঃখ থাকতো না। ঘরে ঢুকে শ্বাশুড়ি মাকে সালাম করলাম। ভাইয়াও করলো।
তারপর যার যার মতো নিজেদের রুমে চলে গেলাম??? নিজেদের রুম বলতে আমি নিলার রুমে, ভাইয়া ভাবির রুমে চলে গেলো। মেয়েদের ঘর গুলো এতো ঘোচালো হয় কেনো। তবে নিলার রুমে একটা জিনিস অবাক করার মতো। যা অন্য মেয়েদের রুমে থাকবেই। অথচো নিলার রুমে নেই।
বুঝতে পারছেন কসমেটিকস এর কথা বলছিলাম।। খুব বেশি কিছু নেই, দুই একটা। যেখানে অন্য মেয়েদের রুমে এক বস্তার চাইতে বেশি হবে। সেখানে নিলার রুমে কিছুই নেই।।
যাইহোক না কেনো। না থাকাটাই আমার জন্য ভালো। কারন টাকা বেঁচে যাবে। আরো একটু সিওর হওয়ার জন্য নিলাকে প্রশ্ন করলাম...............
আমিঃ--নিলা তুমি কি কসমেটিকস ব্যাবহার করো না??
নিলাঃ--নাহ। ওসব জিনিস আমার ভালো লাগে না??
আমিঃ--কি বলো তুমি তো পুরাই আলাদা। অন্য মেয়েরা তো কসমেটিকস এর জন্য পাগল।
আর তোমার ঘরে তেমন কিছুই নেই?
নিলাঃ--কোনো এক যায়গায় পড়ে ছিলাম। তোমার যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকো। অন্যের মতো হতে যেও না। তুমি তোমার মতো থাকো।। তাই ওসব ব্যাবহার করি না।আল্লাহ যা দিয়েছে তাতেই সন্তুষ্ট। কৃত্রিম কিছু তৈরি করার ইচ্ছে নাই??
আমিঃ--আলহামদুলিল্লাহ বউ আমার যেমন বুদ্ধিমতি তেমনই রুপবতী??
নিলাঃ--ফ্রেশ হয়ে নেন। খাবার খাওয়ার জন্য ডাকতেছে??
আমিঃ--আচ্ছা??
ফ্রেশ হয়ে এসে খাবার খেতে গেলাম।। সবাই এক সাথে খাওয়া-দাওয়ার পর আমাদের ধরে নিয়ে গেলো ছাদে।
সব কলেজে পড়ুয়া ছেলে মেয়ে। কয়েকটা স্কুলে পড়ে।সবার সাথে পরিচিত হলাম।। তারপর শুরু হলো খেলা।
তারা ডেয়ার দিবে, আর সেটা আমরা করতে হবে?? কি একটা ঝামেলায় পড়লাম বলুন তো? এখন যদি ডেয়ার দেয় ছাদ থেকে লাফ দিতে হবে, তাহলে কি হবে।।
মাত্র একদিন হয়েছে বিয়ে করলাম। কিন্তু তেমন কোনো ডেয়ার ফেলাম না। বরং লাবনিকে জ্বালানোর মতো একটা ডেয়ার ফেলাম। আমার ডেয়ার টা হলো নিজের বউকে লিপ কিস করা।।।
শুনেই মনটা আনন্দে ভরে উঠলো৷ 😁😁
আমি আর কি করবো! নিলাকে কিস করার জন্য রেড়ি হলাম। যদিও সবার সামনে লজ্জা লাগতেছে। তবুও লাবনিকে জ্বালানো যাবে, সেটা ভেবেই নিলার ঠোঁটের কাছে চলে গেলাম।। আলতো করে একটা চুমু খেলাম।
নিলা লজ্জা পেয়ে চলে গেলো। আমিও উঠে আসলাম।
লাবনি যে তাকিয়ে ছিলো সেটা বেশ ভালো করেই লক্ষ করছি আমি। মেয়েটাকে জ্বালাতে এত ভালো লাগে কেনো কে জানে।। যাইহোক রুমে এসে দেখলাম নিলা বিছানায় শুয়ে আছে। আমি কাছে গিয়ে বললাম.......
আমিঃ--কি হলো চলে আসলে কেনো??
নিলাঃ--তাহলে কি করবো??
আমিঃ--সবাই অপেক্ষা করছে যে??
নিলাঃ--আমি যাবো না আর। ছি ছি লজ্জা লাগছে আমার??
আমিঃ--লজ্জা কেনো লাগছে??
নিলাঃ--আপনি তখন কি করলেন??
আমিঃ--কি করছি??
নিলাঃ--জানেন না কি করছেন??
আমিঃ--না তো কি করছি??
নিলাঃ--দাঁড়ান দেখাচ্ছি??
এবার নিলা আমাকে কিস করে বললো........
নিলাঃ--এটা করছেন৷ যান এখন ওদের কাছে??
আমিঃ--যাবো না??
নিলাঃ--তো কি করবেন??
আমিঃ--বউয়ের সাথে থাকবো আর কি করবো??
নিলাঃ--খুব আসছে বউয়ের সাথে থাকবে। বউ নেই আপনার,আপনি সিঙ্গেল ঠিক আছে??
আমিঃ--হুমমম বিবাহিত সিঙ্গেল??
হটাৎ ফোনটা বেজে উঠতেই দেখি লাবনি কল করেছে।
আমি কেটে দিলাম। আবারও কল করেছে,আমি কেটে দিয়েছি। পরের বার ধরলাম.........
আমিঃ--হ্যালো??
লাবনিঃ--এখনই ছাদে আসো,তোমার সাথে কথা আছে আমার??
আমিঃ--কেনো, কি কথা??
লাবনিঃ--আসো বলতেছি??
আমিঃ--নিলা আমি ছাদ থেকে আসতেছি। তুমি থাকো??
নিলাঃ--আচ্ছা??
লাবনির আবার আমার সাথে কি কথা থাকতে পারে.??
দেখি ছাদে গিয়ে কি বলে। মেয়েটা ভালোই জ্বলতেছে।
হাইরে EX তোরে জ্বালাইতে জ্বালাইতে আমার জীবনটা শেষ।
ছাদে গিয়ে দেখলাম কেউ নেই সবাই চলে গেছে। লাবনি ছাদের এক কোনে দাঁড়িয়ে আছে। আমি বেশ অবাক হলাম। এতো তাড়াতাড়ি সবাই চলে গেলো কেনো। নাকি তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কে জানে কি হয়েছে.?? তবে যাই হোক না কেনো এসব লাবনি করেছে এটা সিওর। আমি লাবনির পিছনে গিয়ে দাঁড়ালাম। তারপর বললাম.........
আমিঃ--ভাবি ডেকেছেন??
লাবনিঃ--অপুর্ব আমি তোমার ভাবি না??
আমিঃ--একদিন হইছে বিয়ে হয়েছে, আজকে
এসব কি বলেন??
লাবনিঃ--দেখো অপুর্ব পাইজলামি বাদ দাও। একটু সিরিয়াস হও??
আমিঃ--ঠিক আছে বলেন কি বলবেন??
লাবনিঃ--আমাকে নিয়ে পালাতে পারবে??
আমি লাবনির কথাটা শুনে বেশ অবাক হলাম।। বিয়ের পর সে কেনো আমার সাথে পালাতে চাচ্ছে। তার বর আছে। আর সে বিয়ের ১০ দিন আগে আমাকে বুঝিয়ে বললে হয়তো আমি বুঝতাম।। কিন্তু বিয়ের পর কেনো সে এই কথাটা বললো।
এটা আমি মেনে নিতে পারছি না। এসব কখনো সম্ভব না। আমি নিলাকে ভালোবেসে ফেলেছি৷ তাকে আমি আমার হৃদয়ে যায়গা দিয়ে দিয়েছি।
আমি লাবনিকে নিয়ে পালিয়ে গেলে, তাছাড়া ভাইয়ার কি হবে পরে। পরিবারের সবার কাছে আমাকে ছোট হতে হবে। এট কখনও সম্ভব নয়।
লাবনিঃ--কি হলো চুপ করে আছো কেনো। আমার কথার উত্তর দাও??
আমিঃ--দেখো তুমি যা বলছো তা ঠিক নয়।কারন তুমি বিয়ের ১০ দিন আগে বললেও আমি তোমাকে নিয়ে পালিয়ে যেতাম। কিন্তু এখন আর সম্ভব না। একটা জিনিস চিন্তা করো। আমার ভাইয়া তোমার স্বামী, তোমার বোন আমার স্ত্রী। তাহলে কিভাবে আমি তোমাকে নিয়ে পালিয়ে যাবো বলো৷ এটা আমি
পারবো না। শুধু এটুকু বলবো তুমি ভালো থাকো???
লাবনিঃ--অপুর্ব তুমি আমাকে ভালো থাকতে দিচ্ছো। যখনই তোমাকে ভুলে থাকতে চাই, তখনই আমার সামনে চলে আসো। তাহলে কি ভাবে ভালো থাকবো আমি। নিলার সাথে এমন কিছু করো, যা আমাকে আমার অতিত মনে করিয়ে দেয়। খুব কষ্ট হয় তুমি বুঝো না??
আমিঃ--তো এখন কি করতে হবে বলো৷ কি করলে তুমি ভাইয়াকে নিয়ে সুখে থাকতে পারবে বলো??
লাবনিঃ--পালাতে তো পারবে না,তাইনা??
আমিঃ--হুমম কখনো সম্ভব না??
লাবনিঃ--তাহলে তুমি এই শহর ছেড়ে নিলাকে নিয়ে ঢাকা চলে যাও। যেখানে তুমি থাকো সেখানে নিয়ে
যাও নিলাকে??
আমিঃ--কিন্তু আমি নিলাকে নিয়ে গেলে আব্বু আম্মুর দেখা শোনা করবে কে??
লাবনিঃ--আমি করবো। তুমি জানো আমি কেমন মেয়ে। কখনো কষ্ট পেতে দিবো না আব্বু আম্মুকে??
আমিঃ--ঠিক আছে ভালো থেকো। তুমি যা চাইবে তাই হবে। আর মাফ করে দিও এতদিন জ্বালানোর জন্য??
লাবনিঃ--আমাকেও তুমি মাফ করে দিও। সেদিন যদি ব্রেকআপ না করতাম তাহলে আজ এখানে দাঁড়াতে হতো না। নিজের মনকে অনেক বার প্রশ্ন করলাম সেদিন এমন কেনো করলাম কিন্তু কোনো উত্তর পাইনি??
আমিঃ--হইছে বাদ দাও এসব। আমি যাচ্ছি??
এই বলে ছাদ থেকে চলে আসলাম। ভীষণ কান্না পাচ্ছে মেয়েটার কথা শুনে। খুব ভালো বাসতাম মেয়েটাকে।
সারাদিন যাই করি না কেনো!! দিন শেষে ভাবতাম মেয়েটা ঠিক আছে তো।
কেটে গেলো আরো কয়েক টা দিন। গত কালকে বিয়ের সব ঝামেলা শেষ হয়েছে।
ভাবছি আজ সন্ধায় ঢাকায় চলে যাবো। কাউকে কিছু বলিনি৷ এমনকি নিলাও জানেনা৷
এই কয়দিনে লাবনিকে আর ডিস্টার্ব করিনি। সবকিছু চুপচাপ। আজকে সকালে খাবার টেবিলে সবাই যখন
খেতে বসলো তখন আব্বুকে বললাম..........
আমিঃ--আব্বু আমাকে ঢাকা যেতে হবে??
আব্বুঃ--কেনো??
আমিঃ--আমার ছুটি শেষ তাই??
আব্বঃ--কিন্তু আরো কয়েক দিন তো বাকি ছিলো??
আমিঃ--হ্যা জরুরি কাজ পড়ে গেছে তাই যেতে হবে??
আব্বুঃ--আমি ভাবছিলাম তুই আমার যায়গায় নিজে কাজ করবি??
আমিঃ--আব্বু ভাইয়া আছে, ভাইয়া করবে। আমাকে যেতেই হবে??
আব্বুঃ--আচ্ছা যা আমি আর কি বলবো। তা বউ মাকে নিয়ে যাবি না রেখে যাবি??
আমিঃ--নিয়ে যাবো ভাবছি। এখন তোমরা যা বলবা তাই হবে??
আব্বুঃ--নিয়ে যাওয়াটা ভালো হবে। তুই সেখানে একা থাকবি। এখানে বউ মা একা থাকবে৷ তার চাইতে
নিয়ে যা সেটাই ভালো হবে??
আমিঃ--আচ্ছা ঠিক আছে আব্বু??
অরিনঃ--কবে যাবি ভাইয়া??😥😥
আমিঃ--এই তো আজকে সন্ধায়??
অরিনঃ ওহহহহ??😣😣
লক্ষ করলাম...নিলা আর লাবনি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। নিলা আমার কথায় অবাক হওয়ার কথা।
কারন নিলা কিছুই জানে না। তবে লাবনি কি ভাবতেছে সেটাও আমি জানি৷
লাবনি ভাবতেছে ছেলেটাকে আমি বললাম আর ও সব মেনে নিলো। আসলে আমি এমনই। ও এই পর্যন্ত যত করেছে সব আবদার গুলো আমি রেখেছি। শুধু অন্যায় আবদার গুলো বাদে। সন্ধা হলেই ফিরে যাবো ঢাকায়। আর থাকবো না এইখানে। রেখে যাবো সব সৃতি। রুমে আসতেই নিলা আমাকে বললো......
নিলাঃ--আমরা কেনো যাবো। এখানেই তো ভালো আছি৷ সবাই এক সাথে কত আনন্দ করি৷ কত
মজা হয় সবার সাথে থাকতে??
আমি নিলার হতটা ধরে একটা চুমু খেয়ে বললাম.......
আমিঃ--নিলা আমাদের ঢাকা যাওযাটা খুব দরকার। তুমি না করো না প্লিজ??
নিলাঃ--ঠিক আছে সব আপনার ইচ্ছা??
লাবনির সাথে সারাদিনে আর দেখা হয়নি।।হয়তো আর কথা হবে না। সন্ধা হয়ে গেছে সব কিছু গুছিয়ে নিয়েছি। এবার রওয়ানা দিতে হবে। আজই শেষ হবে লাবনি নামক কালো অধ্যায় টা তার কথাতেই।
লাবনির চোখে স্পষ্ট পানি দেখতে পেলাম। কেউ বুঝতে না পারলেও আমি অন্তত বুঝি।সে চোখের জল লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। কোনো এক কারনে আজ আমার হৃদয়টা ক্ষত-ভিক্ষত। পরাজিত সৈনিকের মতো আত্মসমর্পণ করে নিয়েছি। আজ মনে হচ্ছে লাবনিকে বিয়ে করে নিলেও পারতাম।মেয়েটাকে ভালোবাসতাম খুব।
গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে। চলতে লাগলো আপন মনে আপন ঠিকানায়। চোখের সামনের মানুষ গুলো দুরে সরে যাচ্ছে। স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে সব কিছু। নিলা আমার কাঁধে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে আছে। মেয়েটা নিষ্পাপ
তাইতো তার ভালোবাসা রক্ষা করতে চলে আসলাম
লাবনি নামক অন্ধকার জগৎ থেকে৷ সত্যি আজ থেকে শেষ হয়ে গেলো লাবনি নামক অন্ধকার জগৎ টা..
EX নামক কালো ছায়া আর পারবে না অন্ধকার করতে আমাদের জীবন। তবুও সে ছিলো আছে থাকবে ভাবি হয়ে। তার কথা ভেবে লাভ নাই। সময় নিজের আপন গতিতে চলে।। আর অপুর্ব সেই সময় কে প্রধান্য দিয়ে,, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পছন্দ করে। সো অতিত ব্রেকআপ ------।
এতদিন লাবনির কারনে নিলাকে খুব ভালো বাসতে পারিনি৷ এখন আর কোনো সমস্যা নাই।
জগৎ টা শুধু আমার আর নিলার।। হারিয়ে যাবো দুজন দুজনের মাঝে। অবশেষে ঢাকায় পৌছে গেলাম। বাসায় আসার পর নিলা আমাকে বললো......
নিলাঃ--এই যে অপুর্ব??
আমিঃ--হুমমম বলো??
নিলাঃ--আজ দেখবো তোমার কত জোর??
আমিঃ--মানে??
নিলাঃ--বুঝনা পিডার খাও??
এই কথাটা বলে নিলা আমাকে ধাক্কা দিয়ে খাটের উপর ফেলে দিলো৷ এরপর আমাকে খাটের উপর ফেলে দিয়ে জড়িয়ে ধরলো। আমি নিলাকে বললাম......
আমিঃ--এই কি করছো??
নিলাঃ--দেখো না তুমি কি করছি??
আমিঃ--কি??
নিলাঃ--আজকে তোমাকে এতো আদর করবো কোনো ঘাড়তি রাখবো না??
আমিঃ--ওহহহ আচ্ছা তাই??
নিলাঃ--হুমমমম??
এই বলে আরো জোরে চেপে ধরলো আমায়।। আর চুমু খেতে লাগলো নিলা। আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলাম না। আমিও নিচে থেকে উঠে নিলাকে চেপে ধরলাম। এতক্ষণ নিলা উপরে আর আমি নিচে ছিলাম। এরপর নিলা আমাকে বললো......
নিলাঃ--এই কি করছো??
আমিঃ--তুমি যেটা করছো, আমিও তাই করছি??
লজ্জায় লাল হয়ে গেছে নিলা। এবার আমিও চুমু খেতে শুরু করলাম। এই ভাবে চুমু খাওয়ার পর চলে গেলাম অন্য জগতে। যেই জগতে আমি আর নিলা ছাড়া কেউ নেই। এরপর কি হলো তা আমি নিজেও জানিনা। লাবনির কথা এখন আর মনে পড়ে না। নিলাই আমার সব। আর কিছুই চাই না এই জীবনে।।
দীর্ঘ দুই বছর পর.......👇👇👇
আজ আমাদের ঘর আলোকিত করে এসেছে এক রাজ কন্যা। আমি জানি, আমি কোনো রাজা নই! কিন্তু আমি রাজা না হলেও আমার ঘরে এক রাণী ও রাজকন্যা রয়েছে। ভাইয়ারও একটা ছেলে সন্তান হয়েছে।। তবে এই দুই বছরে একদিনের জন্যও বাড়িতে যাওয়া হয়নি।
আব্বু আম্মু এসে আমাদের দেখে গেছে। আমি আমার মামনিটার নাম দিয়েছিলাম ফারিহা সুলতানা নিশি।
নিলার নামের সাথে নামটা মিলিয়ে রেখেছিলাম🥰🥰
এইভাবে দিন কাটতেছে। সব মিলিয়ে খুব ভালো আছি।
দোয়া করবেন সবাই জেনো সারাজীবন দুজন দুজনকে ভালোবেসে একই সাথে থাকতে পারি।
******সমাপ্ত******