রহস্যময় গল্প
জ্বীন লাভার...☠️👹
পর্ব: ০১
তাশলে আলি বালিবে এটা আমার স্বামীর নাম । কেমন ভূতুরে ভূতুরে নাম যে এই লোকের মা বাবা দিয়ে সেটা আল্লাহয় জানে।
আমার নাম. মেহেরিমা ....
কি সুন্দর নাম আমার আর আমার বরের নাম কিনা ভূতুরে অদ্ভুদ।
(কথা গুলো বলছিলো মেহেরিমা)
মেহেরিমা ভিষন স্মার্ট এই যুগের মেয়ে সে অবশ্য এসব ভূত জ্বীনে ভিলিব করেনা ।
.
মেহেরিমা শুনে ছিলো জ্বীনেদর মধ্যে নাকি সবচেয়ে ইফিস্দ্রিস নামের এক প্রকার জ্বীন নাকি বেশি শক্তিশালি ।
এদের সাথে কেউ পেরে উঠেনা ।
মেহেরিমা বেনারসি শাড়ি পড়ে ফুলসজ্জ্বা ঘরে বসে আছে স্বামীর অপেক্ষাতে ...
.
মেহেরিমার জিবনের আজকে বিশেষ দিন অথচ সে কিসব ফালতু কথা ভাবছে ....
যেদিন থেকে তার বিয়ে ঠিক হয়েছিলো সেদিন থেকে মেহেরিমা এসব জ্বীন ভূতের কথা বেশি বেশি ভাবছে ...
এগুলো সে কেনো ভাবছে তা বুঝতে পারছেনা মেহেরিমা ।
.
বরের নাম পছন্দ হয়নি বলে মেহেরিমা তার বরকে বিয়ের আগে একটুও দেখেনি ...
যদিও তার বিয়ে করার ইচ্ছে ছিলোনা ...
মেহেরিমার ঘর সংসারের প্রতি তেমন টান নেই বললেই চলে ....
সে জব করে স্বাধীন জিবন যাপন করতে চায় ..
মেহেরিমা অনার্স 2য় বর্ষের ছাত্রি ....
.
মেহেরিমার দেখতে চাদেঁর মতো আর গোলাপের মতো ফুটন্ত সুন্দরি ...
কুইন অব সেবা ,হেলেন অব ট্রয় , ক্লিয়োপ্রেটার মতো শতাব্দির থেকে শতাব্দির সেরা সুন্দরিদের মধ্যে একজন ।
এজন্য মেহেরিমার দাদু তাকে একটা তাবিজ পরিয়ে দিয়েছিলো ছোটবেলা থেকে ...
যেনো কোনো অতৃপ্ত জ্বীনের নজরে না পরে ....
মেহেরিমা তখন ভিষন হাসতো দাদুর এসব কান্ড দেখে ...
দাদু বলতো ...
_মেহেরিমা কখনো এটা খুলবেন, এটা তোমাকে কু নজর থেকে রক্ষা করবে ,,,
আমাদের কোনো শখ নেই জ্বীনকে নাত জামাই বানানোর ....
দাদু কেনো এমন অদ্ভুদ কথা বলতো কে জানে ।
.
মেহেরিমা বরের জন্য অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছে ....
মেহেরিমার আরো ছয়টা বিয়ে ভেঙেছে কেনো যেনো ।
বিয়ে ঠিক হবার পর কোনো ছেলে পালিয়ে যায় তো কেই হাড়িয়ে যায় আবার কেউ পাগল হয়ে যায় ..
মেহেরিমার দাদু খুব চিন্তিত ছিলেন বিয়ে নিয়ে ..
হঠাৎ একদিন তাশলে আলি বালিবে নামের লোক এসে চিন্তা মুক্ত করে ...
মেহেরিমা ভেবে রেখেছে যদি আজকে তার বর তাকে ছোয়ার চেষ্টা করে তাহলে ছূরি দিয়ে সোজা পেট ফুটো করে দেবে ...
মেহেরিমা কোমরে একটা আপেল কাটার ছোট ছূরি নিয়েও এসেছে ...
মেহেরিমার কেমন যেনো লাগছে বিয়ে হবার পর ..
চারদিকে কেমন যেনো ঠান্ডা বাতাস ...
বাতাস গুলো তাকে কি যেনো বলতে চায় এমন লাগে মেহেরিমার ....
.
মেহেরিমা ঘুমের মধ্য থেকে দেখলো তার পাশে একটা লোক ঘুমিয়ে আছে ...
লোকটার হাত পা ঠান্ডা খুব ।
মেহেরিমা লোকটাকে দেখে কেমন যেনো চেনা চেনা লাগলো ,,,
মনে হয় আগে কোথাও দেখেছে এমন লাগছে ...
ভালো করে খেয়াল করলো মেহেরিমা ...
মেহেরিমা গ্রামে যখন দাদু বাড়ি যেতো তখন একটা লোক তাকে গাছ থেকে আম পেড়ে দিতো ...
মেহেরিমা লোকটাকে তেমন খেয়াল করতো না ...
একদিন লোকটার হাতে মেহেরিমার হাতের স্পর্ষ হয় ।
লোকটার হাত প্রচন্ড ঠান্ডা ছিলো ...
পরের দিন আম গাছের নিচে একটা ছেলের লাশ পাওয়া গিয়েছিলো ...
চারদিকে রক্ত আর রক্ত ..
ছেলেটার নাড়ি বুড়ি সব বেরিয়ে এসেছিলো ...
এই ছেলেটা একদিন মেহেরিমার জামা ছিড়ে ফেলে ছিলো ..
সেটা অবশ্য কেউ জানেনা ।
ছেলেটার মৃত্যুতে মেহেরিমা ভয় পেয়ে ছিলো ...
আশচর্যের বিষয় হলো ..
যে লোকটা মেহেরিমাকে আম পেড়ে দিতো তাকেও কখনো দেখতে পাওয়া যায়নি ....
এসব মেহেরিমার ছোটবেলার ঘটনা ....
.
মেহেরিমার আত্মা ধক করে উঠলো ...
মেহেরিমার পাশে তার স্বামি থাকার কথা...
কিন্ত মেহেরিমার মনে হচ্ছে তার স্বামি নয় অন্য কিছু তার পাশে শুয়ে আছে ...
.
মেহেরিমা সেই ছোটবেলার লাসের কাফনের গন্ধ পাচ্ছে ।
মেহেরিমার ভিষন ভয় করছে ...
পাশে থাকা লোকটার মুখ ঠিক মতো দেখা যাচ্ছেনা কিন্ত লোকটা শুয়ে শুয়ে মেহেরিমার দিকে তাকিয়ে আছে ...
লোকটা এক সময় বিকট হাসি দিলো ...
দেয়াল ফেটে যাচ্ছে হাসিতে ।
.
মেহেরিমা ভয়ে ঘর থেকে পালানোর জন্য ডোরে ধক্কা শুরু করলো বাট ডোর ওপেন হচ্ছেনা কেনো যেনো....
লোকটা এক সময় মেহেরিমার দিকে হাসতে হাসতে এগিয়ে এলো ..
লোকটা বিকট কন্ঠে কিছু কথা বললো মেহেরিমাকে ..
_মেহেরিমা আমার মেহেরিমা ...
আজ থেকে তুমি আমার হয়েছো ...
গত 100 বছর ধরে তোমার জন্য অপেক্ষা করছি ..
আজকে তুমি আমার হয়ে গিয়েছো চির জন্মের মতো ।
তোমাকে আমার কাছ থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারবেনা...
পুরো পৃথিবী ধ্বংস করে দেবো তবু আলাদা কেরতে দেবোনা তোমাকে আমার থেকে ...
আমি তোমাকে ভালোবাসি ।
.
লোকটা মেহেরিমার খুব কাছে আসতেই মেহেরিমা জ্ঞান হাড়ালো ...
.
মেহেরিমার চোখ গুলো মিট মিট করছে ...
মাথাটা ভারি হয়ে আছে ...
সে অনুভব করলো কে যেনো তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ...
খুব শান্তি লাগছে তার ...
মনে হচ্ছে দুনিয়েতেই তার জন্য আল্লাহ বেহেস্ত দান করেছে ....
মেহেরিমার কানে একটা খুব অমায়িক মিষ্টি কন্ঠ ভেসে উঠলো ....
মেহেরিমার হঠাৎ কিছুক্ষন ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা মনে পড়লো ...
ঘটনা মনে পড়তেই মেহেরিমা এক লাফ দিয়ে বেড থেকে উঠে বসলো ...
ভয়ে তার কলিজা শুকিয়ে আছে ...
মেহেরিমা ভয়ে চিৎকার করলো ...
সে সময় কে যেনো মিষ্ট কন্ঠে বললো ....
_কি করছো তুমি ??
চিৎকার করছো কেনো ??
মেহেরিমা এক নিমিষেই স্বাভাবিক হয়ে গেলো ...
চিৎয় বন্ধ করে চারদিক তাকালো ...
সেই অদ্ভুদ টাইপ লোকটাকে সে দেখতে পেলোনা কোথাও ...
পর লাসের কাফনের গন্ধটাও নেই ,এছাড়া কোনো বিকৃত আওয়াজও রুমে হচ্ছেনা ....
.
রুমে মিষ্টি একটা কন্ঠ ভেসে আসছে সেই সাথে মিষ্ট একটা সুভাসও বাহিত হচ্ছে।
মেহেরিমা বুঝতে পারলো সে সপ্ন দেখেছে ...
খুব বাজে সপ্ন ....
মেহেরিমার হঠাৎ তার সামনে বসে থাকা লোকটার দিকে খেয়াল করলো ...
লোকটা বললো ...
_আমি তাশলে আলি বালিবে তোমার স্বামি ।
আমার সাথে তোমার বিয়ে হয়ে ছে ..
তুমি আমাকে বিয়ের আগে দেখোনো কিন্ত আমি তোমায় দেখেছি বিয়ের আগে ...
অনেকবার দেখেছি তোমায়।
তাই তোমাকে পছন্দ করে বিয়ে করলাম ...
কি হলো কিছু বলছোনা কেনো ??
আমি একা একাই বক বক করে যাচ্ছি ...
মেহেরিমার গলা দিয়ে কথা বের হচ্ছেনা ...
ঘেমে পুরো একাকার হয়ে ভিজে গেছে সে ...
মেহেরিমা গলায় হাত দিচ্ছে বার বার ...
লোকটা হঠাৎ এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিয়ে বললো ..
_পানি খাও ,তোমার নার্ভাস ফিল হচ্ছে , শুরুতে নতুন জায়গায় এমন ফিল হয় পরে ঠিক হয়ে যাবে ..
মেহেরিমা পানি পান করলো ।
মেহেরিমার স্বামি বালিবে গ্লাসটা হাত থেকে নিয়ে বললো ...
_রুমে এসে দেখি বিরাট ঘোমটা দিয়ে বিছানার মাঝখানে শুয়ে আছো ..
তোমাকে কয়েক বার ডাকা সত্বেও তুমি সারা দিলে না ।
কি হয়েছিলো তোমার ??
তুমি কি ঘুমিয়ে পড়েছিলে ???
.
মেহেরিমা তার স্বামিকে সত্যি কথা বললো না ..
_আমি ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে ছিলাম ..
_তুমি আমার কাছ থেকে কিছু লুকিয়ো না .
আমি তোমার স্বামি ,
আমাকে বন্ধু ভাবতে পারো ।
আমি বিয়ের দিন তোমার উপর কোনো জোর বা অধিকার খাটাবো না ।
আমার এসব বিষয় ভালো লাগেনা ।
একটা মেয়ে সব ছেড়ে অচেনা জায়গায় যায় ,,মেয়েটাকে সেদিন অন্তত ছাড় দেওয়া উচিৎ ।
আমি ঠিক করেছি আগে আমরা বন্ধু হবো তারপর ধীরে ধীরে স্বামি স্ত্রি ...
.
মেহেরিমা লোকটাকে যত মন্দ ভেবেছিলো লোকটা তত মন্দ নয় ...
বালিবে আবার বললো ..
_চলো এখন আমরা পরিচয় হয়ে নিই ...
যদিও আমরা একে অপরের নাম জানি ..
তবুও প্রথম থেকে পরিচয় হওয়া ভালো ...
.
আমি বালিবে ,
পুরো নাম তাশলে আলি বালিবে ...
তুমি আমায় যে কোনো নামে ডাকতে পারো ...
_আমার নাম মেহেরিমা ...
পুরো নাম মেহেরিমা ইয়াসমিন মেহুল ...
লোকটা হেসে বললো ,,,আমার নামের মতো তোমার নামও দেখছি অনেক বড় ...
ইউর নেইম ইজ টু লং সো আই কল্ড ইজ মেহেরিমা ...
.
বালিবের মুখে নিজের নাম শুনে কেমন যেনো লাগলো মেহেরিমার ....
লোকটাকে এখনো দেখা হয়নি মেহেরিমার ...
বিকোজ মেহেরিমার মুখে এখনো লম্বা ঘোমটা আছে ..
জ্বীন লাভার...☠️👹
পর্ব: ০২
মেহেরিমার সাথে বালিবে সারা রাত গল্প করেছে .
বালিবে সাধারন একজন বাচাল লোক .
সে প্রচুর কথা বলে ..
মেহেরিমা রাতে সেটা বুঝতে পেরেছে ...
মেহেরিমা কম কথা বলে ...
বেশি কথা মেহেরিমার ভালো লাগেনা ...
মেহেরিমার বাবা বলতো কম যারা কথা বলে তারা বুদ্ধিমান হয় আর যারা বেশি কথা হয় তখন সে গর্ধভ হয় ...
মেহেরিমার কান্না পাচ্ছিলো..
শেষ পর্যন্ত বুদ্ধিমতি সুন্দরি মেহেরিমার কপালে একটা গর্ধভ বর জুটলো ..
মেহেরিমার বাবা আরেকটা কথা বলতো মেহেরিমাকে...
মেহেরিমাকে বলতো...
_তুমি যেমন সুন্দরি তেমনই বুদ্ধিমতি তাই তোমার নাম তোমার সাথে মিলিয়ে রাখা হয়েছে ..
এছাড়া তোমাকে আরেকটা নাম দেওয়া উচিৎ ...আজ থেকে তোমাকে আমি শাহাজাদি বলে ডাকবো..
.
মেহেরিমা ভাবছে বাবার শাহাজাদির কপালে একটা গর্ধব জুটেছে ...
মেহেরিমার ভোরের দিকে বেশ ভালো ঘুম হলো...
.
মেহেরিমা এখনো তার বরের ফেস দেখেনি ...
মেহেরিমা ঘুম থেকে উঠে দেখে তার বর নেই তার সাথে ...
অনেক আগেই উঠে গিয়েছে ঘুম থেকে ...
মেহেরিমা পরক্ষনেই নিজের দিকে খেয়াল করলো...
মেহেরিমার মরার মতো ঘুমায় ...
ঘুমানোর পর তার কিছু খেয়াল থাকেনা ...
মানে জামা কাপড় ঠিক থাকেনা ...
মেহেরিমা ভয়ে ভয়ে নিজের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলো...
.
কারণ তার গায়ে একটা চাদর জড়ানো ছিলো...
.
_যাক বাবা তুমি ঘুম থেকে উঠলে তাহলে আপু...
মেহেরিমার চাচাতো বোন বাহার এই কথা বললো...
মেহেরিমার নিজের কোনো ভাই বোন নেই... একটা ভাই ছিলো যে ছোটবেলায় মারা গিয়েছিলো...
.
ভাইয়ের মৃত্যু কিভাবে হয়েছিলো সেটা মেহেরিমাকে জানানো হয়নি.
.
মেহেরিমাকে বাহার বললো ফ্রেস হয়ে নিচে যেতে ..
ব্রেকফাস্ট সেরে নিতে ..
.
মেহেরিমার হঠাৎ বিয়ে হয়েছে বিধায় সে এখনো নিজের বাড়িতে আছে ..
শশুর বাড়ি এখনো যায়নি মেহেরিমা ...
.
মেহেরিমা নিচে গিয়ে নাশতা খেলো বাট কোথাও স্বামি নামের লোকটার সাথে দেখা হলোনা ..
.
মেহেরিমার চাচিমা জানালো বালিবে তার কাজে কোথায় যেনো গিয়েছে ..
মেহেরিমা ভাবলো যেখানে ইচ্ছে সেখানে যাক তাতে ওর কি ..
.
মেহেরিমা জোর করে 11 টার একটা টিউশনে পড়তে গেলো ...
নতুন বিয়ে হয়েছে বলে তো আর বাড়ি বসে থাকা যায়না ..
.
রাস্তা দিয়ে হাটার সময় সে কিছু মিষ্টি গন্ধ পেলো আর বাতাসের আওয়াজ পেলো ..
বাতাস গুলো মনে হয় মেহেরিমাকে অনুসরন করছে ...
.
আতরের গন্ধ ছিলো এটা মেহেরিমা বুঝতে পেরেছে ...
.
মেহেরিমার কেমন যেনো শীত শীত লাগছে ...
মেহেরিমাকে কেউ অনুসরন করছে এমন ফিল হচ্ছে তার...
.
মেহেরিমা হঠাৎ দেখলো একটা ট্রাক তার দিকে ধেয়ে আসছে ...
সে ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললো ..
চিন্তায় পরে সে বুঝতে পারেনি রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাটছিলো ...
.
মেহেরিমা চোখ বন্ধ করার পর পর ঠান্ডা স্পর্ষ অনুভব করলো ..
কেউ তাকে রাস্তার পাশে নিয়ে এসেছে ...
চোখ খুলে সে একজন সুদর্শন যুবক কে দেখতে পেলো...
_তুমি রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাটছিলে কেনো ??
_আপনি কে ??
লোকটা ধমক দিয়ে বললো ..
_আগে বলো তুমি এভাবে হাটছিলে কেনো ??
_আপনি এভাবে আমায় ধমকাচ্ছেন কেনো ???
_কারণ আমি তোমার স্বামি..
মেহেরিমা অবাক হয়ে গেলো ...
কবুল বলে যার বউ হলে ,
_সারা রাত যার সাথে কথা বললে ,একি বেডে ঘুমালে তাকে চিনতে পাচ্ছোনা .???
.
মেহেরিমা কিছুটা লজ্জা পেলো...
সত্যি কথা বলেছে বালিবে..
_এখন চলো বাড়ি যাবে ..
মেহেরিমা আর বালিবে রাস্তা দিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে হাটা শুরু করলো...
হঠাৎ একটা পাগল এসে মেহেরিমাকে জরিয়ে ধরলো..
ভয়ে মেহেরিমা চিৎকার করতে লাগলো...
পাগলটা মেহেরিমাকে জরিয়ে ধরে আছে তো আছেই ...
হঠাৎ মেহেরিমাকে অবাক করে দিয়ে বালিবে পাগলটা কে ধাক্কা মেরে দূরে ফেলে দিলো...
বালিবের সাথে পাগলের চোখাচোখি হয়...
.
পাগলটা রাগে সেখান থেকে চলে যায়...
মেহেরিমা ভয়ে জরিয়ে ধরলো বালিবেকে ...
মেহেরিমার মাথায় হাত দিয়ে বালিবে বললো ...
_রাস্তায় কি শুরু করেছো ??
.
মেহেরিমা লজ্জা পেয়ে বালিবেকে ছেড়ে দিলো...
রাস্তায় নিরবতা চলছে ..
বালিবে মাঝে মাঝে তাকিয়ে হাসছে আর কি সব ফালতু কথা বলছে...
.
মেহেরিমা র পাগল টা কে দেখে একজনের কথা মনে পড়লো...
রুস্তম স্যারের কথা...
যে সুযোগ পেয়ে মেহেরিমাকে জরিয়ে ধরতো।
মেহেরিমা ভিষন ভয় পেতো রুস্তম স্যারকে ..
মেহেরিমা আর বালিবে রাস্তা দিয়ে হাটছে....
মেহেরিমা রুস্তম স্যার এর কথা ভাবছে...
রুস্তম স্যারের চোখ গুলো কেমন লাল লাল ছিলো ...
দেখে মনে হতো মেহেরিমাকে চোখ দিয়ে গিলে খাবে....
রুস্তম স্যার সব সময় বাজে নজর দিয়ে তাকাতো মেহেরিমার দিকে...
মেহেরিমার গা ঘিন ঘিন করতো রুস্তম স্যারকে দেখে...
.
মেহেরিমা আর বালিবে তাদের বাসায় গেলো...
মেহেরিমা বালিবের সাথে আসার সময় একবারও তার দিকে তাকায়নি....
.
মেহেরিমার মন খারাপ কারণ আজকেই তাকে যেতে হবে নিজের বাড়ি ছেড়ে....
তার স্বামির বাড়ি যেতে হবে বালিবের সাথে....
মেহেরিমা মন খারাপ করে বসে আছে করিডরে....
তার চোখ থেকে পানি পড়ছে...
হঠাৎ সে ফিল করলো কেউ তার খুব কাছে আছে...
কারো নিঃশ্বাস এর ঘন ঘন শব্দ শুনতে পাচ্ছে সে...
.
মেহেরিমা সেই সুভাসও পাচ্ছে....
মন মাতানো সুভাস...
সে এদিক ওদিক তাকালো বাট কাউকে দেখতে পেলোনা...
.
মেহেরিমা কে সন্ধ্যার সময় বিধায় দেওয়া হলো...
চাচা ,চাচিমা ,বাবা ,মা ,দাদু ,দিদা ,বাহার সবাই তাকে জরিয়ে ধরে কান্না করলো...
দাদু মেহেরিমার হাতে একটা তাবিজ দিলো ...
আর খুব সাবধান করে বললো এই তাবিজ যেনো সে না খোলে...
বাবা বললো....
_আমার চাদেরঁ মতো দেখতে শাহজাদি কে একজন শাহাজাদার কাছে বিয়ে দিয়েছি ....
আমার শাহাজাদি তার শাহাজাদার সাথে সুখে থাকবে...
সে কখনোই আমার শাহাজাদির চোখের পানি আসতে দেবেনা...
বালিবেকে আড়ালে নিয়ে গিয়ে মেহেরিমা কে দেখে শুনে রাখার জন্য অনেক কিছু বললেন তার দাদু...
বালিবে মেহেরিমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো...
.
বালিবে ড্রাইভ করছে আর মেহেরিমা পাশে বসে আছে...
জানালা দিয়ে অনেক ক্ষন বাহিরে তাকিয়ে নিজের বাড়ি দেখলো যতদূর দেখা যায় ...
.
মেহেরিমা বাহিরে তাকিয়ে একটা দূর্গন্ধের সুভাস পেলো....
সে সাথে সাথেই বাহির থেকে ভেতরে বালিবের দিকে তাকালো...
বালিবে কোনো কথা বলছেনা সে শুধু ড্রাইভ করছে আর মেহেরিমার দিকে তাকাচ্ছে...
.
মেহেরিমার মন খারাপ বাড়ির জন্য...
মেহেরিমার চোখের পানিতে শাড়ি ভিজে গিয়েছে আর চোখের কাজলও লেপ্টে আছে ...
বালিবে মেহেরিমা কে একটা বোতল দিলো...
মেহেরিমা প্রথমে নিতে চাইলো না বাট বালিবের জোরা জোরিতে বোতল নিয়ে কিছুটা পানি খেলো সে....
পানি খাওয়ার পর মেহেরিমার মন ভালো হয়ে গেলো...
এখন সব ব্যথা ভুলে গিয়ে তাকে স্বভাবিক লাগছে...
বালিবে হঠাৎ মেহেরিমার হাতে নিজের হাত রাখলো...
মেহেরিমার আচমকা ঠান্ডা অনুভব হলো আর সে এক ঝটকায় হাত সরিয়ে নিলো বালিবের....
.
বালিবে কার থামিয়ে দিয়ে মেহেরিমার দিকে তাকালো...
মেহেরিমা কিছুটা ইতস্ত হয়ে অপরাধির মতো নিচে তাকিয়ে রইলো...
_মেহেরিমা ইউর নেম ইজ টু লং সো আই কলড ইউ বউ......
এখন থেকে আমি তোমাকে বউ বলে ডাকবো...
এখন হাত সরিয়ে নিলে নাও তবে আগামীতে তোমার হাত শত বছরের জন্য ধরে থাকবো...
.
_শত বছর মানে ???
_এমনিই কথার কথা...
মানুষ কি আর শত শত বছর বাচতে পারে???
.
বালিবে আবার ড্রাইভ করছে...
রাত হয়ে গিয়েছে বেশ...
মেহেরিমা ক্লান্ত হয়ে ঝিমুচ্ছে আর ভাবছে শশুর বাড়ি আর মধুর হাড়ি কত দূর...
বেশ ক্ষিধেও লেগেছে মেহেরিমার ...
লজ্জায় বালিবে কে বলেনি মেহেরিমা...
.
হঠাৎ বালিবে কার থামালো...
_বউ তোমার তো ক্ষিধে লেগেছে তাইনা??
_মেহেরিমা অবাক হয়ে বললো....
_হ্যাঁ বাট কি করে বুঝলেন ???
বালিবে নরম গলায় বললো....
_আমার বউয়ের ক্ষিধে লেগেছে আর আমি জানিনা...
বালিবে কার থেকে নেমে বললো...
_বউ তুমি ওয়েট করো একটু...
সামনে একটা হোটেল আছে ..
দেখি কিছু পাওয়া যায় কিনা...
মেহেরিমা কিছু বলার আগেই বালিবে তাড়াতাড়ি পাশের জঙগলে ঢুকে গেলো....
মেহেরিমা এতক্ষনে খেয়াল করলো বালিবে কার আর তাকে দুপাশে ঘন জঙগলের মধ্যে রোডে রেখে গিয়েছে...
.
মেহেরিমা কার থেকে নেমে বালিবে কে খুজতে লাগলো...
বালিবে কেনো জঙ্গলের ভেতর ঢুকে গেলো...
এখানে নির্জন জায়গায় আবার হোটেল কিসের....
.
হোটেল যদিও থাকে সেটা জঙ্গলের ভেতর কেনো...
অনেক ক্ষন হয়ে গেলো বালিবের আসার নাম নেই.....
মেহেরিমার টেনশন হচ্ছে হাজার হলেও স্বামি বলে কথা...
.
বালিবে মেহেরিমা কে কার থেকে নামতে নিষেধ করেছিলো বাট তবু নিষেধ অমান্য করে মেহেরিমা নামলো...
.
হঠাৎ মেহেরিমার ধমকা বাতাসের শব্দ পেলো...
আর জঙগলের থেকে কারো খট খট হাসির শব্দ পেলো...
মেহেরিমা মনে করেছিলো এটা মনের ভুল ..
কিন্ত ক্রমশ হাসির শব্দ ভারি হতে লাগলো...
মেহেরিমার বেশ ভয় করছে...
বালিবে এখনো আসছেনা আর এই জায়গা তার কাছে ঠিক মনে হচ্ছেনা...
.
হঠাৎ মেহেরিমা জঙগল থেকে কারো চিৎকারের আওয়াজ পেলো...
বালিবের আওয়াজ করে মেহেরিমা বলে কেউ ডাকছে...
মেহেরিমা ভাবলো বালিবের কোনো বিপধ হয়েছে...
.
মেহেরিমা লেট না করে জঙগলের ভেতর ঢোকার জন্য পা বাড়ালো...
তখনি সে কোমরে কারো হাতের স্পর্ষ পেলো ...
কানে কানে ফিস ফিস করে কেউ বললো...
_মেহেরিমা তোমাকে লাল শাড়িতে হেব্বি লাগছে...
আরেকটু কাছে এসো প্লিজজজজ...
মেহেরিমার ভয়ে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ...
সে কোনো রকম নিজেকে ছাড়িয়ে দৌড়াতে লাগলো...
হঠাৎ সে কারো বুকের সাথে ধাক্কা খেলো...
এটা হলো সেই মিষ্টি সুভাস...
চাদেরঁ আলোতে মেহেরিমা বেশ দেখতে পেলো বালিবেকে...
বালিবে কে দেখেই মেহেরিমা জরিয়ে ধরলো...
_আপনি কোথায় গিয়েছিলেন ??
আমার অনেক ভয় করছে...
বালিবে মেহেরিমার মাথায় আর পিঠে হাত বুলিয়ে বললো...
_এইতো আমি এসেছি...
তোমার জন্য খাবার আনতে গিয়েছিলাম...
তোমাকে না বলেছি কার থেকে বের হবেনা...
কেনো বের হলে বউ ???
বালিবের কঠোর চেহেরা ভেসে উঠলো...
মেহেরিমা পরিষ্কার সেটা দেখতে পেলো...
বালিবে কে মেহেরিমার বেশ ভয় লাগছে...
বালিবের কথা শোনা উচিৎ ছিলো তার...
এভাবে কথা অমান্য করে বালিবে কে রাগানোর কোনো মানে ছিলোনা...
.
বালিবে শক্ত করে মেহেরিমা র হাত ধরে কারে নিয়ে গেলো....
বালিবে একটা প্যাকেট খুলে বিড়িয়ানি বের করে নিজ হাতে মেহেরিমা কে খাইয়ে দিতে লাগলো...
মেহেরিমা প্রথমে খেতে চাইনি বাট বালিবের রাগি লুক দেখে খেতে বাধ্য হলো...
মেহেরিমা এখনো বালিবে কে ভয় পাচ্ছে...
বালিবের চোখ গুলো কেমন যেনো জ্বল জ্বল করছে...
এটা দেখে আরো ভয় লাগছে মেহেরিমার...
.
বিরিয়ানির স্বাদটা যেনো অমায়িক ছিলো...
এমন বিরিয়ানি কখনো মেহেরিমা খায়নি...
বালিবের হাতটাও ইচ্ছে করছে খেয়ে ফেলতে মেহেরিমার ...
বালিবের হাতটা কেমন যেনো মিষ্টি মিষ্টি...
মেহেরিমা খাচ্ছে আর এদিক ওদিক তাকাচ্ছে...
ঘন জঙগলের মাঝে মাত্র তারা দুজন প্রাণি ...
চিকেন বিরিয়ানি খাচ্ছে সে জঙগলের মাঝে....
দাদু বলতো চিকেন জাতীয় কিছু খোলা জায়গায় খাওয়া ঠিক না ...
তাতে অতৃপ্ত কিছু হানা দিতে পারে...
মেহেরিমার বালিবেকে বেশ ভয় লাগছে...
তাই এইকথা বলতে পাচ্ছেনা...
.
বালিবে মেহেরিমা কে অবাক করে দিয়ে বললো....
_ভয় পেয়োনা বউ ..
আমি আছিতো...
আমি থাকতে কোনো কিছুর সাহস নেই এখানে আসার বা তোমাকে আমাকে বালিবে রক্ত করার...
মেহেরিমা অবাক হয়ে তাকালো বালিবের দিকে ...
সে কি করে বুঝতে পারলো মনে মনে কি ভাবছে মেহেরিমা আর বালিবে থাকলে কেউ কেনো আসতে পারবেনা...
.
_বউ এতো ভেবে লাভ নেই...
তোমার মাথা নষ্ট হয়ে যাবে এসব ভাবলে...
তোমার যেটা নিয়ে ভাবা উচিৎ সেটা নিয়ে ভাবো মানে তোমার স্বামিকে কিভাবে সুখে রাখবে সেটা নিয়ে ভাবো....
মেহেরিমা মাথা নাড়ালো....
বালিবে মেহেরিমাকে খাইয়ে দিয়ে পানি খাওয়ালো...
বালিবে কিছু খেলোনা...
মেহেরিমা সেটা খেয়াল করে বালিবে কে খেতে বলতে গেলো কি ভেবে আর বললোনা ...
.
বালিবে অনেক ক্ষন ধরে মেহেরিমার দিকে তাকিয়ে আছে...
মেহেরিমা কিছু বুঝতে পাচ্ছেনা...
সে হঠাৎ নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলো তার শাড়ি ঠিক নেই...
দৌড়ানোর সময় শাড়ি অর্ধেক খুলে গিয়েছিলো আর সামনের আচলটাও ঠিক নেই...
মেহেরিমা বেশ লজ্জা পেলো....
সে নিচে তাকিয়ে আছে...
বালিবে হঠাৎ মেহেরিমার দিকে খুব কাছে আসলো...
মেহেরিমার বেশ লজ্জা লাগছে....
বালিবে মেহেরিমার আচল ঠিক করা সহ শাড়িও ঠিক করে দিলো...
.
মেহেরিমা বালিবের নিঃশ্বাসের শব্দ শুনতে লাগলো...
মেহেরিমার কেমন নিজে নিজেকে নেশা গ্রস্তের মতো এলোমেলো লাগছে...
বালিবে মেহেরিমার চুল ঠিক করে দিলো...
তারপর হাত দিয়ে মেহেরিমার ঠোট মুছে দিলো...
মেহেরিমার ঠোট দুটো নড়ছে...
তার চোখ বন্ধ...
বালিবে মেহেরিমার খুব কাছে এসে যেই মেহেরিমার ঠোটের ছোয়া পেতে চাইলো তখনি মেহেরিমা চোখ অন করলো...
বালিবে একটু দূরে সরে গিয়ে নিজের মাথা চুলকিয়ে ড্রাইভ করতে শুরু করলো....
.
বালিবে একটু পর পর মেহেরিমার দিকে তাকাচ্ছে...
আর মেহেরিমা এতোক্ষনে ঘুমিয়ে পড়েছে...
চাদেরঁ আলোয় মেহেরিমার চেহেরায় জোসনাঁ ছড়াচ্ছে...
আর তার গোলাপি ঠোট দুটো নড়ছে....
বালিবে ড্রাইভ থামিয়ে মেহেরিমার কাছে গেলো আর তার গায়ের সুভাস নিতে লাগলো...
মেহেরিমা ঘুমন্ত অবস্থায় কিছুক্ষন শিহরীত অবস্থায় নড়ে নড়ে উঠছে....
.
হঠাৎ বালিবের চোখ দুটো কেমন যেনো হয়ে গেলো....
ভয়ংকর থেকে ভয়ংকর হতে লাগলো সে..... অন্ধকারের জন্য তাকে এমন দেখাচ্ছে নাকি কে জানে....
জ্বীন লাভার...☠️👹
পর্ব: ০৩
মেহেরিমা বেশ কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে রইলো...তারপর কিসের একটা শব্দে যেনো তার ঘুম ভেঙে গেলো...
সে চোখ মেলে তাকাতেই দেখলো কি যেনো একটা গাড়ির সামনে থেকে পড়ে গেলো....
মেহেরিমা ভয়ে বালিবে কে জরিয়ে ধরলো....মেহেরিমার কানে কিসের যেনো একটা আওয়াজ এলো....
আওয়াজ খুব জোড়ালো শাসালো....
মেহেরিমা বালিবে কে বললো ড্রাইভ থামাতে আর দেখতে গাড়ির সামনে কি পড়লো...
বালিবে গাড়ি থামালো না সে বাতাসের বেগে ড্রাইভ করতে থাকলো...
বালিবে মুচকি হেসে মেহেরিমার পিঠে হাত বুলিয়ে বললো ...
_আমার পরির মতো সুন্দরি শাহজাদি বউ
এতো ভয় পাচ্ছে কেনো...আমার বউ এতো বউ পেলে চলবে ???
কারও এতো বুকের পাঠা নেই আমার বউকে ভয় দেখানোর বাট এক দিক থেকে ভালো হলো...
এই সুযোগে বউ আমার আমাকে নিজে থেকে জরিয়ে ধরলো...
.
বালিবের কথা শেষ হতেই মেহেরিমা ল্জ্জা পেয়ে বালিবে কে ছেড়ে দিলো...
মেহেরিমার বিরাট রাগ উঠলো এই লোকের উপর...
কথা বলার কোনো লেহাজ জানেনা এই গর্দভ টা...
সে ভয় পেয়েই তো তাকে জরিয়ে ধরলো....
সে কি এমন যে তাকে জরিয়ে ধরলে এমন কথা বলতে হবে....
যত্ত সব গর্দভ ঢ্যাড়স....
.
_বউ তুমি কি আমার উপর রাগ করলে ????
_না না ...রাগ করিনি (আপনার উপর এমন রাগ হচ্ছে যে ইচ্ছে করছে ছু মন্তর বলে বোতলে ভরে রাখি ...মনে মনে বললো মেহেরিমা....)
.
মেহেরিমা খেয়াল করলো বালিবে তাদের গাড়ি টা কে একটা জঙগল দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে...
জঙগলের ভেতর একটা সরু রাস্তা আছে...
মেহেরিমার বালিবের সাথে যত ক্ষন ধরে আছে তত ক্ষণ ধরে একটা মিষ্টি সুভাস পাচ্ছে...
মেহেরিমার কেমন যেনো নেশা নেশা লাগছে এই গন্ধে নিজেকে...
.
বালিবে হঠাৎ গাড়ি থামালো...
মেহেরিমার কে বালিবে নামতে বলে নিজে আগে নামলো...
তারপর বালিবে গাড়ির দরজা খোলে দিয়ে বললো...
_বউ নামো এখন...
এই ভূমি আর হাবেলি কে তোমার চরণ স্পর্ষ করিয়ে সার্থক করো...
বালিবে এমন ভাবে বলছে যেনো মেহেরিমা একজন শাহাজাদি...
অবশ্য মেহেরিমা তার বাবার শাহাজাদি...
.
মেহেরিমা নেমে খেয়াল করলো হাবেলি কে...
চাদেঁর আলোয় বেশ একটু বোঝা যাচ্ছে সবকিছু...
চারদিক সব অন্ধকার...
শুধু চাদঁ আছে বলে রক্ষে...
বালিবে মেহেরিমাকে বললো একটু ওয়েট করতে...মেহেরিমা কিছু বলবে তার আগেই বালিবে উধাও...
মেহেরিমা হাবেলির দরজার সামনে দাড়াতেই পেছন থেকে একটা আওয়াজ শুনতে পেলো...
আর সাথে সেই বিটকুটে সুভাস পেলো...
কেউ যেনো মেহেরিমাকে ডাকছে...আওয়াজ টা পাশের জঙগল থেকে আসছে...
মেহেরিমা সেটা অনুসরন করে সামনে জঙগলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো অমনি কেউ যেনো তার হা ধরে ফেললো...
.
মেহেরিমার বুক ধরফর করছে ...হার্ট বিট ক্রমশ বাড়ছে...
মেহেরিমা পেছনে তাকাতেই রাজপত্র দেখতে পেলো মানে বালিবে কে দেখলো...
বালিবে হেসে হেসে বললো...
_যার তার ডাকে ছুটে যেতে হবে নাকি ???
এদিকে এসো আমার কাছে...
_যার তার ডাকে মানে ???
_কিছুনা...
কত ক্ষণ আর বাহিরে থাকবে ভেতরে এসো...
.
মেহেরিমা হাবেলির ভেতরে ঢুকতেই আলো জ্বলে উঠলল....
মেহেরিমা আকস্মিক হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেললো...
তারপর চোখ খুলেই প্রকান্ড একটা ড্রয়িং রুম দেখতে পেলো...
চারদিকে রাজা সম্রাটদের সব ধরণের শপিজ দিয়ে সাজানো...
মেহেরিমার মনে হচ্ছে সে কোনো সম্রাটের বাড়ি এসে পড়েছে...
বালিবে মেহেরিমার কোমরে ধরে বললো...
_কি গো বউ পছন্দ হয়েছে তো তোমার বাড়িটা...
মেহেরিমা কিছু বলতে পারলো না...এতো বিশাল বাড়ি দেখে সে অবাক হয়ছে প্রকান্ড...
.
বালিবে একটা তুরি বাজাতেই কয়েক টা মেয়ে...এলো ...
সবার পরনেই একই রকম পোষাক...
কেমন একটা দাসি দাসি ভাব মুখের মধ্যে...
.
সবাই এসে কোনো কথা বললো না...
চুপচাপ দাড়িয়ে থাকলো আর একজন মেহেরিমাকে ধান ধুবলা দিয়ে বরণ করলো...
মেহেরিমা বালিবের সম্পর্কর কিছুই জানেনা...
তার বাবা মা ভাই বোন আত্মিয়স্বন আছে নাকি নেই তা কিছুই জানেনা...
.
মেহেরিমা এগুলো জানার সময় পায়নি...
তবে ভেবেছে সময় করে বালিবে কে বলবে..
.
একটা মেয়ে কিছু ধুবলা ভুল করে নিচে ফেলে দিলো..
বালিবে এমন ভাবে মেয়ের দিকে তাকালো যে মেয়ে ভয়েই জ্ঞান হাড়ালো...
বালিবে কে দেখে বাকি মেয়ে গুলো ঐ জ্ঞান হারানো মেয়েটা কে নিয়ে চলে গেলো...
বালিবে অন্য একটা মেয়েকে বললো মেহেরিমাকে কামরায় নিয়ে যেতে...
মেহেরিমা কিছু বলবে তার আগেই বালিবে চলে গেলো .....
মেহেরিমাকে দোতলায় নিয়ে গেলো মেয়েটা...
মেয়েটা একটা কথাও বললো না...
মেহেরিমা বালিবের সম্পর্কে কিছু কথা জিজ্ঞাসা করলো তখন মেয়েটা আঙুল দিয়ে কামরা দেখিয়ে রিতিমত দৌড়ে পালালো...
.
মেহেরিমা বেশ আশ্চর্য হলল মেয়েটার আচরণে...একবার ভাবলো মেয়েটা হয়ত বোবা আর মালিকের সম্পর্কে কোনো কথা বলা মানা আছে...
.
তবে এখান কার পরিবেশ বেশ থমথমে...
.
মেহেরিমা কামরায় ঢুকে আরো অবাক হলো...
কামরা বিশাল বড়...
আর খুব সুন্দর করে সাজানো...
কামরার জিনিস পত্র দেখে মেহেরিমার মনে হলো বালিবে বেশ সৌখিন...
এতো সুন্দর কামরা মেহেরিমা কখনোই দেখেনি...
কামরার সাথে বারান্দা আছে...
মেহেরিমা বারান্দায় গিয়ে আরো চমকে গেলো...
কারণ বারান্দা দিয়ে একটা খুব সুন্দর ঝিল দেখা যাচ্ছিলো...
চাদেঁর আলোয় ঝিলটা খুব জ্বল জ্বল করছিলো...
আর ঝিলের মাঝখানে কত গুলো হাসঁ খেলছিলো...
সম্ভবত রাজঁ হাসঁ ...
মেহেরিমার বাড়ির জন্য মন খারাপ করলেও এখন বেশ ভালো লাগছে...
.
মেহেরিমা এখন থেকে বারান্দায় দাড়িয়ে কফি খাবে আর ঝিলের মাঝে রাজ হাসঁ গুলোর খেলা দেখবে...
.
হঠাৎ মেহেরিমা দেখলো ঝিলের মাঝে কে যেনো নামছে...
তখনি মেহেরিমা সুগন্ধিটা পেলো তার সাথে বালিবেকে দেখতে পেলো...
বালিবে বললো...
_বউ কি করছো ???
মেহেরিমা কি সুন্দর একটা দূশ্য দেখছিলো আর বালিবে এসে ডিস্টার্ভ করলো...
.
বালিবে বললল বউ চলো গোসল করে নেবে...
মেহেরিমা বললো সে গোসল করবে না...
বালিবে মেহেরিমাকে গোসল করিয়েই ছাড়বে...
সে বললো...
_তোমার যখন গোসল করতে ইচ্ছে করছেনা তখন আমি করিয়ে দিই...
মেহেরিমা রেগে তাকিয়ে ওয়াস রুমে ঢুকলো টাওয়াল নিয়ে...
বালিবেও মেহেরিমার সাথে ঢুকলো ওয়াসরুমর...
মেহেরিমা রেগে বললো..
_আপনি এখানে কেনো ???
_আমিও গোসল করবো...
_আচ্ছা বেড থেকে আমার শ্যাম্পুর বোতলটা নিয়ে আসুন তো...
বালিবে ওয়াস রুমের বাহিরে বের হতেই মেহেরিমস দরজা বন্ধ করে দিলো...
বালিবে দৌড়ে এসে অনেক বার দরজা ধাক্কা দিলো...
.
_মেহেরিমা আমার সাথে এমন করলে...ভালো হবেনা কিন্তু...
মেহেরিমার খুব মজা লাগছে বালিবেকে গোল খাইয়ে...
_যেমন কুকুর তেমন মুগুর...
গোসল করতে দিন ...ডিস্টার্ভ করবেন না...
.
মেহেরিমা বেশ অনেক ক্ষণ শাওয়ার নিলো...
মেহেরিমা হঠাৎ একটা বিশাল আয়না দেখতে পেলো ওয়াস রুমে...
নিজেকে সে ওখানে দেখতে পেলো...
মেহেরিমার ভেজা শরীর থেকে টুপ টুপ পানি পড়ছে আর ফ্লোরে তার একটা ঝন ঝন শব্দ হচ্ছে...
সে আবার সেই বিটকুটে গন্ধটা পেলো...
মেহেরিমা হঠাৎ দ্বিতীয় একজনকে এখানে অনুভব করলো...
মেহেরিমা হঠাৎ আয়নায় রুস্তম স্যারকে দেখতে পেলো...
পরিষ্কার ভাবে দেখা যাচ্ছে রুস্তমকে...
সেই ফর্সা গোলোমলু চেহেরার মাথায় কুকড়া কুকড়া চুল...
রুস্তম আয়না থেকেই বললো...
_কোথায় পালাবে আমার সুন্দরি শাহাজাদি...
তুমি যেখানে আমি সেখানে সেকি জানোনা...
একি বাধণে বাধা দুজনে সেকি জানো না...
মেহেরিমার ভয়ে কথা বলা বন্ধ হয়ে গেলো...
সে বিশ্বাস করতে পাচ্ছেনা এটা রুস্তম স্যার...
মেহেরিমা একটু দরজার দিকে পা বাড়াতেই আয়নার লোক টা বললো...
_ভেজা কাপড়ে তোমায় ধারুণ দেখাচ্ছে সুন্দরি শাহাজাদি...
একে বারে কোনো স্বর্গের অপ্সরি...
.
মেহেরিমার দম বন্ধ হয়ে আসছে...
সে কোনো রকম ওয়াস রুম থেকে পালালো...
মেহেরিমা রুমে এসে বালিবে কে দেখতে পেলোনা ...
এই সুযোগে সে চেন্জ করে ফেললো...
মেহেরিমা একটা গোলাপি নাইট গ্রাউন পড়লো...
চুল গুলো ভেজা ...
টপ টপ করে পানি পড়ছে...
.
মেহেরিমা হঠাৎ পেছনে বালিবে কে দেখতে পেলো...
মেহেরিমার ভয়ে প্রাণ যায় যায় অবস্থা.....
বালিবে কিছু দেখলো নাতো ...
বালিবে হেসে বললো...
তোমার জন্য ডিনার আনার জন্য বলেছি...
.
বালিবে চলে যেতেই মেহেরিমা বেডে শুয়ে পড়লো...
সে ভাবছে ওয়াস রুমের কথা...
স্যার কি সত্যিই এসেছিলো..
না না এটা কি করে হতে পারে...
স্যার তো নিরুদ্দেশ...
মেহেরিমা ভাবলো সে তো স্যার কে ভয় পায় তাই ভয়টা মনে বসে রয়েছে...
এজন্য রুস্তম স্যারকে সে কল্পনা করছে...
আচ্ছা বালিবে কে এসব বলবে...
না না থাক বলার দরকার নেই...
নিজের বউয়ের পুরোনো ভয়ংকর অতীত জেনে বালিবে হয়ত রাগ করবে...
বালিবে নিজে হাতে মেহেরিমাকে খাইয়ে দিচ্ছে...
মেহেরিমার খাবার গুলো অমৃত লাগছে...
সামনে প্রায় 50 রকমের খাবার...
সেই মেয়ে গুলো এটা ওটা এগিয়ে দিচ্ছে...
কোনো কথা কেউ বলছেনা...
সবাই বালিবে কে ভয় পায় সেটা বোঝা যাচ্ছে...
মেহেরিমা একটুও ভয় পায়না বালিবেকে...ভয় পাওয়ার কি আছে সে তো তাদের মতো মানুষ...
মেহেরিমা রুমে এসে বেডে শুতেই বালিবে এসে ডোর লক করলো...
মেহেরিমা আওয়াজ পেয়ে বেডে উঠে বসে গ্রাউন ঠিক করলো...
মেহেরিমার বালিবে কে সুবিধার লাগছেনা...
বালিবে নেশা গ্রস্তের মতো তাকাচ্ছে মেহেরিমার দিকে...
মেহেরিমা সামনে ফলের ছূরি দেখতে পেলো...
বালিবে তাকে টাচ করলেই সোজা বুকে ঢুকিয়ে দেবে মেহেরিমা...
বালিবে সামনে এগুচ্ছে....
লুক মিঃ তাশলে আলি বালিবে....আমার আরো সময় লাগবে...আমি এসবের জন্য প্রস্তত নই...
আপনিই তো বলেছিলেন আগে বন্ধ হবেন পরে প্রেমিক তারপর স্বামী...
আপনার সৃত্মি শক্তি লোপ পেয়েছে বাট আমার সৃত্মশক্তি প্রখর...
আমার সব মনে আছে...
আমাকে টাচ করতে আসলেই আমি এই ছূরি আপনার পেটের মধ্যে ঢুকিয়ে দেবো...আর আপনার নামে নারী নির্যাতনের মামলা করবো...
মেহেরিমা এক ধমে কথা গুলো বললো হাতে ছূরি নিয়ে...
.
বালিবে চুপচাপ পকেটে হাত দিয়ে মেহেরিমার দিকে তাকিয়ে কথা গুলো বললো...
বালিবে রুমে থাকা সোফায় গিয়ে বসে সামনে থাকা টি টেবিলে দুই পা তোলে দিলো...
মেহেরিমা কিছুটা অবাক হলো বালিবের ব্যাবহারে...
সে এতো কিছু বললো...আর বালিবে একেবারে চুপচাপ শুনলো...
কিছুই বললোনা...
মেহেরিমা বালিবের দিকে তাকিয়ে থাকলো...
বালিবে নিজ মনে জুতোর ফিতে খুললো...
তারপর গায়ের জ্যাকেট টা খুললো...
মেহেরিমার মন ধক করে উঠলো...
মেহেরিমা ভাবছে এই লোক কথা না কাজে করিয়ে উওর দেবে...
.
বালিবে সামনে এগুচ্ছে...
মেহেরিমা পিছুচ্ছে...
বালিবের চোখ গুলো কেমন যেনো দেখাচ্ছে...
বালিবের মুখে একটা ট্যাডি হাসি ছিলো...
.
বালিবে মেহেরিমার খুব কাছে এসে পড়লো তখনই মেহেরিমা বেডে বসে পড়লো...
মেহেরিমা দু চোখ বন্ধ করে নিলো...
মেহেরিমার খুব কাছে বালিবে...
মেহেরিমা বালিবের নিঃশ্বাস শুনতে পাচ্ছে...
মেহেরিমা তাকাতেই দেখলো বালিবের হাতে একটা বালিশ...
আর বালিবে মুচকি মুচকি হাসছে...
মেহেরিমার বুঝতে বাকি রইলো না বালিবে তাকে গোল খাইয়েছে...
.
বালিবে বালিশ নিয়ে মেহেরিমার অপর পাশে শুয়ে পড়লো...
বেডে একদম বেশি অর্ধেকটা জায়গায় হাত পা ছড়িয়ে বেশ সম্রাটের মতো শুয়ে পড়লো...
.
মেহেরিমা দাড়িয়ে দাড়িয়ে ভাবছে এর প্রতিশোধ সে নেবেই...
.
হঠাৎ বালিবে চোখ বন্ধ থাকা অবস্থায় বললো...
_বই গো ঘুমিয়ে পড়ো..
আমাকে গোল দেওয়ার ভাবার সময় আরো পাবে..এখন না ঘুমালে ফজরের নামাজ পড়তে পারবেনা...
এমনিতেই তোমার নামাজ কাযা হয়েছে কয়েক ওয়াক্তের...
.
মেহেরিমা রেগে গিয়ে পাশে থাকা বালিশা বালিবের মুখের উপর ছূরে মারলো...
বালিবে হেসে বললো...
_ধন্যবাদ বউ বালিশ টা দেওয়ার জন্য...
মেহেরিমা নিজের চুলে জোরে টান দিয়ে বেডে শুয়ে পড়লো...
.
মেহেরিমার ঘুম আসছেনা...
বালিবে ঘুমের মধ্যে হাত পা তোলে দিচ্ছে...
মেহেরিমা কে বালিবে ঘুমের মধ্যে জরিয়ে ধরেছে...
মেহেরিমার ধম বন্ধ হয়ে আসছে...
মেহেরিমা একটু একটু করে দূরে সরে যেতে যেতে এক পর্যায়ে ফ্লোরে পড়ে গেলো....
মেহেরিমার কোমরে খুব লেগেছে...
সে দেখলো বালিবে সুযোগ পেয়ে পুরো বিছানা দখল করেছে..
.
মেহেরিমা রেগে নিচেই শুয়ে আছে...সে অভিমান করেছে বালিবের উপর...
সে কিছুতেই উপরে উঠবেনা...
মেহেরিমার চোখ থেকে পানি পড়ছে...
তার খুব কষ্ট লেগেছে...
হঠাৎ মেহেরিমা কারো নরম গরম স্পর্ষ পেলো...
বালিবে তাকে কোলে করে নিয়ে আবার বেডে শুইয়ে দিলো...
আবারও বালিবে মেহেরিমার উপর এক হাত আর পা তোলে দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললো...
.
মেহেরিমা কি হলো বুঝতে পাচ্ছেনা...
মনে হলো সে সপ্ন দেখছে...
মেহেরিমার একা ঘুমিয়ে অভ্যাস...
এখন বালিবের পাশে এভাবে সে ঘুমুতে পাচ্ছেনা...তার উপর বালিবে এমন কান্ড করছে...
ভাবতে ভাবতে মেহেরিমা ঘুমিয়ে পড়লো...
মেহেরিমা সেই ঝিল টাত ধারে বসেছে...
ঝিলের মাঝখানে পদ্মফুল আর রাজ হাসঁ খেলা করছে...পাখির কিচির মিচির শব্দ হচ্ছে ঝিলের পাশে থাকা গাছ থেকে...
চারদিকে কি সুন্দর মিষ্টি সুগন্ধি ভাসছে...
মেহেরিমার মনে হচ্ছে কোনো সপ্ন পুরিতে এসেছে...
মেহেরিমা ঝিলের নীল পানিতে পা ডুবাতেই রাজ হাস বলে উঠলো...
_সুন্দরি শাহাজাদি মেহেরিমা ....এসো আমার কাছে এসো...
আমার কাছে একবার তোমাকে আনতে পারলেই আর কেউ তোমাকে আমার কাছ থেকে নিয়ে যেতে পারবেনা...
তুমি আমার হয়ে যাবে...
.
মেহেরিমা হাসের কথা শুনে অবাক হয়ে গেলো...
হাস কথা বলছে সত্যি সত্যি...
মেহেরিমা পানি তে এক পা দিয়েছে...সে যেনো কোনো হ্যামিয়লনার বাশির আওয়াজ পেয়েছে যার দ্বারা সে সম্মোহিত হয়ে সামনে ঝিলে নামছে...
হঠাৎ করে জোরে বাতাস বইতে লাগলো ...পাখি গুলো জোরে জোরে ডাকতে শুরু করলো...
পদ্মফুল গুলো নইয়ে পড়লো...
ঝিলের পানি কেমন কালো হয়ে গেলো...
চারদিকে কেমন বিস্রি গন্ধ বের হচ্ছে...
মেহেরিমা নিজের সর্বনাশ করতে চলেছে ঝিলে নেমে...
রাজ হাসটা বিরাট একটা আকৃতি নিচ্ছে...
অনেকটা মানুষের...
মেহেরিমা অন্য পা পানিতে দিতেই কেউ ওর হাত ধরে ফেললো...
পেছনে তাকিয়ে আলোর মতো উজ্জল চেহেরার বালিবে কে দেখতে পেলো...
বালিবে বললো...
_তোমার জায়গা ওটা না...
তোমার জায়গা এখানে আমার কাছে...
উঠে এসো ঝিল থেকে...
মেহেরিমার নিঃস্বাশ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে...
মেহেরিমা চোখ খুলতেই নিজেকে বেডে আবিষ্কার করলো...
.
পাশে তাকিয়ে বালিবে কে দেখতে পেলো...
বালিবে ঘুমাচ্ছে...
মেহেরিমা তাহলে সপ্ন দেখেছে সে ভাবলো ...
বাট সপ্নটা বেশ ভয়ানক..
গায়ে কাটা দিয়ে উঠেছে...
মেহেরিমা খেয়াল করলো
সপ্নে বালিবে যে হাত ধরেছিলো এখনো সেই হাত ধরে আছে...
মেহেরিমা বেশ অবাক হলো...
তার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে...
মেহেরিমা আজানের শব্দ পেলো...
অনেক দূরে মসজিদ থেকে আওয়াজ আসছে হালকা...
মেহেরিমা বেড থেকে উঠে সোজা বারান্দায় গিয়ে ঝিল টা কে দেখলো...
এখনো ঝিলে সেই হাস গুলো খেলছে...
মেহেরিমা পেছনে তাকাতেই বালিবে কে দেখলো...
_বউ অযু করি চলো..
তারপর নামাজ পড়বো এক সাথে...
মেহেরিমা আর বালিবে এক সাথে নামাজ পড়লো...
নামাজ শেষ হতেই বালিবে বললো...
_এখনকার জন্য থ্রিপিজ পড়ায় তোমায় কিছু বললাম না বাট এর পর থেকে শাড়ি পড়বে...
বিবাহিতা মেয়েদের শাড়ি পড়তে হয়...
.
বালিবে মেহেরিমাকে নিজ হাতে কফি বানিয়ে দিলো...
মেহেরিমার ফেবারিট ক্রিম কফি...
মেহেরিমা কফি নিতেই বালিবে বললো...
_কি বলেছি মনে আছে তো বউ..???
আমার কথার যেনল নড় চর নস হয়...
আমার কথার অমান্য করলে রাগ মাথায় উঠে পড়ে...
.
মেহেরিমা বালিবে কে উপেক্ষা করে বারান্দায় চলে গেলো...
বালিবে কে সে ভয় পায় নাকি...
মোটেওনা...
স্বামী বলে সব কথা মানবো নাকি...
মেহেরিমাকে যেটা করতে বলা হয় সেটা সে কখনোই করেনা...
যেটা করতে নিষেধ দেওয়া হয় সেটাই করে...
সে কিছুতেই বালিবের কথায় শাড়ি পড়বেনা ....তাছাড়া সে শাড়ি পড়তেও জানেনা...
মেহেরিমা আপন মনে হেসে উঠলো খিল খিল করে...
.
মেহেরিমার বাড়ির জন্য মন কেমন করছে যদিও একটু আগে বালিবে নিজে দাড়িয়ে থেকে বাড়িতে কথা বলিয়েছে...
.
বালিবে কে কোথাও দেখা যাচ্ছেনা...
মেহেরিমা নিচে গেলো...
রাতে বাড়িটাকে যত বড় মনে হয়েছিলো দিনে এর চেয়ে বেশি সুন্দর দেখতে...
মেয়ে গুলো কি সুন্দর নিজের মতো কাজ করছে...কেউ কোনো কথা বলছে না...
কি আজব...
এই মেয়ে গুলো ছাড়া কি আর কেউ নেই এখানে...
পুরো বাড়িটা কেমন খালি খালি...
কেমন যেনল রহস্য লুকিয়ে আছে এই বাড়িতে ...প্রতিটা জিনিস পত্রেও কেমন একটা একটা রহস্য লুকিয়ে আছে...
সবাই যেনো মেহেরিমাকে কিছু বলতে চায়...
.
মেহেরিমা নিচে নেমে সবার আড়ালে সদর দরজার বাহিরে চলে গেলো...
মেহেরিমা সামনে একটা গাড়ি দেখতে পেলো..
মেহেরিমা গাড়ির দিকে তাকাতেই রক্ত দেখতে পেলো...
কালকের ঘটনা তার মনে হলো...
গাড়ির সাথে কি যেনো একটা বারি খেয়ে পড়েছিলো...
গাড়িতে কি যেনো আওয়াজ করছে...
মেহেরিমা গাড়ির দরজা খুলতেই কেমন একটা ভয়ংকর লোককে দেখতে পেলো...
লোকটা বিশাল লম্বা আর মোটা...গায়ের রং সাদা ধবধবে আর মাথার চুল দাড়িও সাদা ধবধবে...গায়ে জোব্বা পরা...
লোকটা খিল খিল করে হেসে দিলো...
মেহেরিমা ভয়ে পেছন দিকে তাকিয়েই কাউকে জরিয়ে ধরলো...
.
মেহেরিমার পিঠে কেউ হাত বুলালো...
_বউ এতো সকালে এখানে কি করো...
???
মেহেরিমা বালিবেকে জরিয়ে ধরেছে সেটা বুঝতে পেরে লজ্জায় তাকে ছেড়ে দিলো...
মেহেরিমা নিজেকে সামলিয়ে বললো...
_এই দেখুন গ্লাসে কিসের যেনো রক্ত...
আপনাকে কাল বলেছিলাম ...
বালিবে মেহেরিমার হাত ধরে এক প্রকার টেনে ভেতরে নিয়ে গেলো...
বালিবে কে দেখে মনে হচ্ছে সে রেগে আছে প্রচন্ড...
মেহেরিমা কি এমন বললল যার কারণে এতো রেগে গেলো সে...
.
বালিবে বললো...
_দেখো বউ ...এখন থেকে আমার কথা ছাড়া বাহিরে পা রাখবেনা...
আর কোনো কিছুতে মন দেবে না...
তোমার কাজ হলো আমি মানে তোমার স্বামীর খেয়াল রাখা...
মেহেরিমা নিচে তাকিয়ে মাথা নাড়ালো...
বালিবে কে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে...সে সবুজ শার্ট আর কালো জ্যাকেট পড়েছে লম্বা...
বালিবে মেহেরিমাকে বসিয়ে নিজে হাতে খাওয়াচ্ছে.....
সামনে প্রায় 30-40 টি ব্রেকফাস্টের ডিস...
সাথে নানা ধরনের মিষ্টি...
মিষ্টি গুলো ভিবিন্ন রংয়ের...
মেহেরিমা এর আগে এতো মিষ্টি দেখেনি এরকম রং বে রংয়ের...
মেহেরিমা খাওয়ার সময় বেশ জোরে কামর দিলো বালিবের হাতে...আশ্চর্য বালিবে কিছুই বললো না..
যেনো কিছুই হয়নি...
.
মেহেরিমাকে বালিবে রুমে নিয়ে এসে বললো...রেস্ট নিতে...বাহিরে যেনল সে না যায়...
মেহেরিমা ভেবে রেখেছে বালিবের আড়ালে সে বাহিরে যাবেই...
গাড়ির উপর রক্তর রহস্য সে জানবেই...
বালিবে যাওয়ার আগে মেহেরিমাকে আচমকা জরিয়ে ধরলো...
মেহেরিমার হঠাৎ রুস্তম স্যার এর কথা মনে পড়লো...
একদিন ক্লাসে একা পেয়ে রুস্তম স্যার যা করেছিলো মেহেরিমার সাথে...
.
সেদিন মেহেরিমাকে রুস্তম ক্লাসে একা থাকতে বলেছিলো...
কি যেনো নোট দেবে...
.
হঠাৎ ক্লাসে একটা বিশ্রি গন্ধ পেলো মেহেরিমা ...
জ্বীন লাভার...☠️👹
পর্ব: ০৪
মেহেরিমা ক্লাস রুমে কিসের একটা গন্ধ পেলো...রুস্তম স্যার ক্লাসে ঢুকতেই ক্লাস রুম বন্ধ করে দিলো ভেতর থেকে...মেহেরিমা নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো....তারপর.....
মেহেরিমা আর কিছু ভাবতে পারলোনা সে বাস্তবে ফিরে এলো....মেহেরিমা ফেসবুকিং করলো কিছুক্ষণ তখন সে বালিবে নাম সার্চ করলো...
আশ্চর্য এই নামে সে কোনো আআইডি পেলোনা...
তাশলে নাম সার্চ করতেই আইডি পেলো বালিবের...
.
.
.
বালিবে চোখে সানগ্লাস পরে গায়ে ব্ল্যাক হাটু পর্যন্ত ব্ল্যাজার পরে একটা পুরোনো ডাক বাংলোর সামনে দাড়িয়ে আছে...
চারদিক অন্ধকার....
কেমন যেনো ভুতূরে পরিবেশ গা কাপানপ...
.
.
.
বালিবে কি সুন্দর ফটো তে হাসি হাসি মুখ নিয়ে দাড়িয়ে আছে...
.
.
.
মেহেরিমার কাছে বালিবে কে অনেক ডেসিং হ্যান্ডসাম লাগছে...এই প্রথম সে বালিবে কে এমন কাছ থেকে দেখছে...
.
.
.
হঠাৎ মেহেরিমা খেয়াল করলো বালিবের পেছনে কিসের যেনো একটা অভয় জঙগলের দিকে....
.
.
.
ক্লিয়ারলি অভয়টা দেখতে পাচ্ছে সে...
মেহেরিমা ভালো করে দেখলো অভয়টা রুস্তম স্যার এর মতো দেখতে...
মেহেরিমার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে তাই লগ আউট করে দিলো আইডি...
.
.
.
বালিবে কে কোথাও দেখা যাচ্ছেনা...
মেহেরিমার সাথে কথা বলার কেউ নেই...
ঐ মেয়ে গুলো সব সময় কাজ নিয়ে ব্যাস্ত থাকে ...তাছাড়া ওরা কখনো কথা বলেনা...মেহেরিমা দুই দিনে ওদের একটা কথাও বলতে শুনেনি...
মেহেরিমা ঘুরে ঘুরে হাবেলিটা দেখছে....হাবেলিটা বেশ পুরোনো আর অনেক সুন্দর...মনে হয় হাবেলি টা কথা বলতে পারে...
.
মেহেরিমা প্রতিটা কামরা দেখলো শুধু দুতোলার কামরা দেখতে পারলোনা...সেখানে বিশাল তালা দেওয়া...
.
.
সে কামরার একটু কাছে যেতেই কিছু আওয়াজ শুনতে পেলো...
আওয়াজ গুলো ভেয়র থেকে আসছে...
মেহেরিমা কান পেতে আওয়াজ শুনছে...
.
.
.
হঠাৎ মেহেরিমা একটা ধমকা হাওয়া পেলো...
পেছনে তাকাতেই বালিবের রাগি চেহেরা দেখতে পেলো সে...
_বই এখানে কি করো ???
তোমাকে বলেছিলাম যেখানে সেখানে যাবেনা...
আমার কথার অমান্য কেনো করলে...
এর শাস্তি তুমি পাবে...
.
.
.
বালিবে মেহেরিমার হাত জোরে চেপে ধরে রুমের দিকে নিয়ে যেতে লাগলো...
_আহহ তাশলে আমাকে ছাড়ুন প্লিজজজ...আমার লাগছে...
বালিবে অবাক হয়ে বললো...
_তাশলে নামে আমায় ডাকলে কেনো ???
এই নামে আমাকে দাদাজান ডাকতো...
.
.
.
আজকে অনেক দিন পর তুমি ডাকলে...
_দাদা জান কোথায় এখন ???
_দুশত বছর আগে অশুভ শক্তির হাতে তিনি মারা গিয়েছেন...
মেহেরিমা অবাক হয়ে বললো ....
মানে ????
বালিবে কথা ঘুরিয়ে বললো...
_আজ সারাদিন তুমি এই রুমে থাকবে...কেউ তোমার রুমে আসবেনা...
এটাই তোমার শাস্তি...
দুঃখিত বউ...
মেহেরিমা কিছু বললো অমনি বালিবে বাহির থেকে দরজা লক করলো...
মেহেরিমা বেশ কয়েকবার দরজা ধাক্কা দিলো...বাট লাভ হলোনা...
.
.
.
মেহেরিমা বারান্দায় ঝিল দেখতে লাগলো...
তার ভীষন কান্না পাচ্ছে...
কি এমন করেছিলো সে যে এমন শাস্তি দেওয়া হলো তাকে....
.
.
.
বালিবে একটু বেশি বেশি করছে তার সাথে...
এভাবে সব সময় চার দেয়ালের মাঝে তাকে বন্ধি করে রাখার মানে কি....???
আর ঐ রুম টা তে কি এমন আছে...
.
.
.
মেহেরিমা রুমে আসতেই বালিবে কে দেখলো...
এই লোক কখন যায় কখন আসে তা বোঝার উপায় নেই...এই লোকের অদ্ভুদ ব্যাক্তিক্ত....
মনে হয় উনি মানুষ না অন্যকিছু...
বালিবে মেহেরিমাকে দুপুরে খেতে বললো...বাট সে পরিষ্কার করে বললো সে খাবেনা...
মেহেরিমাকে বালিবে অবাক করে দিয়ে কোলে তোলে নিলো...কোলে করে এক নিমিষেই ডাইনিংয়ে নিয়ে বসালো...
তারপর নিজের হাত দিয়ে খাওয়ানো শুরু করলো...বালিবে খুব যত্ন করে মেহেরিমাকে খাইয়ে দিলো...
সামনে মনে হচ্ছে বিশাল রাজকীয় ভোজ..প্রায় 50 রকমের আইটেম ছিলো...
মেহেরিমাকে সব গুলো জোর করে খাইয়ে দিলো...
মেহেরিমা এভাবে খেলে কয়েক দিনেও মটু গাবলু হয়ে যাবে...
সে বালিবে কে আটকাতেও পারেনা...
মেহেরিমা দেখলো বালিবে আর সে ছাড়া হাবেলিতে দ্বিতীয় কোনো অস্তিত্ব নেই...ঐ মেয়ে গুলো কেও দেখা যাচ্ছেনা...সবাই কোথায় গেলো....
এমন আজব পরিবেশ সে আগে কখনো দেখেনি...
.
.
.
মেহেরিমা গোসল করে এসে গ্রাউন পড়লো...বালিবে নিজে হাতে শাড়ি পরিয়ে দিলো...
বালিবে আর যায় করুক মেহেরিমার অনেক খেয়াল রাখে এটা মেহেরিমা বুঝতে পারে...
একারণেই সে রুমে বন্ধি থাকার কথা ভুলে গেলো...
.
.
.
বিকালে মেহেরিমা বারান্দায় আবার ঝিলের কাছে গেলো...
ঝিল টা কেমন যেনো মেহেরিমাকে আকর্ষিত করে...মনে হয় ঝিল তাকে ডাকে...
মেহেরিমা ধমকা হাওয়ার আওয়াজ পেলো...সে পেছনে তাকাতেই বালিবের সাথে ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পরে গেলো দরজার সামনে....
মেহেরিমার কোমরে লেগেছে খুব....ওখানে ব্যথাও করছে...আশ্চর্য বালিবের কিছুই হয়নি সে স্ট্রিট দাড়িয়ে আছে...
.
.
.
বালিবে মেহেরিমাকে কোলে করে বেডে শুইয়ে দিলো...
_বউ শাড়িটা তোল ???
মেহেরিমার চোখ কপালে উঠলো...বলে কি এই লোক ??? শাড়ি তোলতে....
_দেখুন আমি এসবের জন্য প্রস্তুত নয়...আমি শাড়ি খুলতে পারবোনা...আমার ...
_What nonsense ...কি সব বলছো ???
পাগল হয়ে গেলে নাকি বউ...আমি কোমর থেকে শাড়ি একটু সরাতে বলেছি যেনো মলম লাগাতে পারি...
.
.
.
.
মেহেরিমা লজ্জা পেয়ে নিচে তাকিয়ে রইলো...বালিবে মলম লাগিয়ে দিলো...মলম লাগানোর সময় বালিবের স্পর্ষে প্রতিবারেই মেহেরিমা শিহরীত হয়ে উঠছিলো আর বালিশ খামছে ধরছিলো....
.
.
.
সন্ধ্যা হতেই মেহেরিমার প্রচুর ঘুম পায়...তার শরীর প্রচন্ড ভারি ভারি লাগে...
মেহেরিমা বেডে বসে বালিবে কে দেখছে আর ঝিমুচ্ছে....বালিবে ল্যাপটপে কাজ করছে...বালিবে কি কাজ করে সেটাও জানেনা মেহেরিমা....
_এভাবে তাকিয়ে না থেকে ঘুমিয়ে পড় বউ...
মেহেরিমা তাড়াতাড়ি করে কম্বল নিয়ে শুয়ে পড়লো....
.
.
.
চারদিকে ঝি ঝি পোকা আর শেয়ালের ডাক...
মেহেরিমার ঘুম ভাঙলো কিছু জোরালো আওয়াজে...
মেহেরিমা বালিবে কে দেখতে পেলো না পাশে...মেহেরিমার ভীষন ভয় লাগছে...সে বালিবে কে খুজতে বাহিরে বের হলো রুমের বালিবের কথা অমান্য করে...
মেহেরিমা আওয়াজ গুলোর উৎস বের করলো সেই দরজার ভেতর...যেখানে তার যাওয়া মানা করেছে বালিবে....
.
.
.
মেহেরিমা আওয়াজ গুলো শোনার জন্য আবারও কান পেতে রইলো...কেমন জঙলি জানোয়ারেে আওয়াজ হচ্ছে ভেতর থেকে...
বাঘ যেনো গর্জন করছে ...মেহেরিমার কেমন ভয় লাগছে...সে খেয়াল করলো চারপাশে কেমন ধবধবে সাদা সাদা ছায়া উড়ে বেরাচ্ছে...আর পুরো হাবেলি নিস্তব্ধ এবং প্রচন্ড কড়া সুভাস বের হচ্ছে...মেহেরিমা কারো পায়ের আওয়াজ পেলো...সে তাড়াতাড়ি রুমে গিয়ে কম্বল নিয়ে শুয়ে পড়লো চোখ বন্ধ করে...
.
.
..
রুমে মেহেরিমা দ্বিতীয় কোনো ব্যাক্তির অস্তিত্ব টের পাচ্ছে...খুব ভয় করছে তার সে মনে মনে তাশলে তাশলে ডাকতে শুরু করলো....
কখন যে ঘুমিয়ে পড়লো সে সেটা বোঝা গেলো না....
মেহেরিমা পাশে বালিবে কে দেখতে পেলো...সে কখন এসে ঘুমিয়েছে সেটা বুঝতে পারেনি...
মেহেরিমা দেখলো বালিবে খুব গভীর ঘুমে আছন্ন...এই সুযোগে সে ঝিলের ধারে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো....
.
.
মেহেরিমা ঝিলের পাশে গেলো বহু কষ্টে...বারান্দা থেকে যত কাছে ঝিল ছিলো আসলে ঝিল বহু দূরে...মেহেরিমা ক্লান্ত হয়ে গেলো...মেহেরিমা দেখলো কি মনোরম পরিবেশ....
চারদিকে ফুলের গন্ধ আর পাখির কিচির মিচির...ঝিলেত পানি খুব স্বচ্ছ আর নীল....মাঝখানে পদ্ম ফুল ফুটে রয়েছে...আর রাজ হাস গুলো অদ্ভুদ ভাবে খেলছে...মেহেরিমার খুব পানি পিপাসা পেয়েছে সে পানি খেতে চাচ্ছে...এটার জন্য তাকে হাবেলি তে যেতে হবে...কিন্তু সে যাবেনা এখন..আজ কতদিন পর সে বাহিরে এসেছে....বালিবে তাকে ঘর বন্ধি করে রেখেছিলো...
এখন সে এখানে কিছু সময় কাটাবে...
.
.
.
মেহেরিমাকে কে যেনো একটা পানির বোতল দিলো...মেহেরিমার খাওয়া পর খেয়াল করলো একটা লোক কালো সানগ্লাস আর কালো লম্বা কোর্ট পরে দাড়িয়ে আছে...
_আপনাকে দেখে খুব ক্লান্ত মনে হচ্ছে...আমার বাংলো এই কাছেই..চলুন কিছুক্ষন রেস্ট নিবেন...
লোকটা এক ধমে কথা গুলো বললো...
.
.
.
মেহেরিমা প্রথমে না বললে লোকটা জোর করে তাকে যাওয়ার জন্য বললো...মেহেরিমা রাজি হলো....
লোকটা একটা টমটম নিয়ে এসেছে....দুটো ঘোড়া দিয়ে বাধানো...অনেক সুন্দর করে টম টম টা সাজানো...মেহেরিমা সেখানে বসলো...লোকটা মাথায় গোল টুপি পড়ে রহস্য জনক হাসি দিলো....
.
.
.
বালিবে মেহেরিমাকে হাবেলি তে তন্য তন্য করে খুজলো...বালিবের প্রচন্ড ভয় লাগছে....মেহেরিমার কিছু হলো নাতো...
সে এতো অপধার্থ যে নিজের বউকে দেখে রাখতে পারেনা...
বালিবে ভাবছে মেহেরিমা কি ঝিলের জঙগলে গেলো নাকি...
ওখানে তো বিপধের উপর বিপধ...
.
.
.
.
বালিবে ঝিলের ধার তন্য তন্য করে খুজলো কোথাও পেলোনা তাকে...
.
.
.
তারপর কিছু পায়ের ছাপ পেলো যা জঙগলের রাস্তার মাঝখানের দিকে ইশারা করে...
বালিবের প্রচন্ড ভয় করছে...
.
.
.
মেহেরিমার খুব অদ্ভুদ লাগছে...লোকটা অনর্গল কথা বলে যাচ্ছে...
আর মেহেরিমাকে কেমন করে যেনো দেখছে...
বেশ শীত লাগছে মেহেরিমার...পরিবেশটা কেমন থমথমে...লোকটা মেহেরিমাকে কিছয় চকলেট দিলো..কেমন অদ্ভুদ চকলেট....কেমন সুভাস বের হচ্ছে...
মেহেরিমা যেই চকলেট মুখে দেবে অমনি বালিবেকে টমটমের সামনে দেখলো...
বালিবের চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে রাগে...
বালিবে দৌড়ে এসে মেহেরিমাকে জরিয়ে ধরলো...
তোমার কিছু হয়নি তো বউ ???
এখানে কেনো এসেছো বউ ???আমারকে না জানিয়ে আসলে কেনো ????
.
.
.
মেহেরিমা বালিবে কে ছাড়িয়ে লোকটার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো...
লোকটা আর বালিবে কেমন করে একে অপরের দিকে তাকালো...
বালিবে বললো..._আমার ওয়াইফে সঙ্গ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ...
মেহেরিমাকে কোলে নিয়ে বালিবে জঙগলের দিক দিয়ে হেটে যাচ্ছে...বালিবে কথা বলছেনা...মেহেরিমার বথশ ভয় লাগছে...
হঠাৎ বালিবে মেহেরিমাকে কোল থেকে নামিয়ে গাছের সাথে চেপে ধরে নিজের ঠোট মেহেরিমার ঠোটে জোরে মিশিয়ে দিলো...মেহেরিমার চোখ বড় বড় হয়ে গেলো...সে এমনটা আশা করেনি বালিবের কাছ থেকে....
.
.
.
অনেক ক্ষন হয়ে গেলো তবুও বালিবে মেহেরিমাকে ছাড়ছেনা উল্টো আরো অন্তরঙ্গ হচ্ছে মেহেরিমার....
বালিবে সোফায় বসে আছে আর মেহেরিমা দাড়িয়ে আছে...মেহেরিমা কিছু বলছেনা...বালিবে হঠাৎ উঠে দাড়িয়ে মেহেরিমাকে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে ধরলো..
মেহেরিমা ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললো..
বালিবে নিজের কোর্ট খুলে শার্টের হাতা কুনই পর্যন্ত ফোল্ড করলো.
মেহেরিমা এটা দেখে দৌড়ে রুম থেকে পালাতে চাচ্ছিলো তখনই বালিবে বাতাসের বেগে মেহেরিমাকে পেছন থেকে ঝরিয়ে ধরলো...মেহেরিমা র নিঃশ্বাস ঘন ঘন পড়ছে..
বালিবে তখনই মেহেরিমার ঘারে গলায় ভালবাসা পরশ একে দিলো...
রাতে মেহেরিমার কি যেনো হয় সব সময় কেমন ঘুম নামে চোখে ...মেহেরিমা বারান্দায় দাড়িয়ে ঝিল দেখতে লাগলো.
তখনই সে খেয়াল করলো কে যেনো ঝিলে নামছে...মেহেরিমা ক্লিয়ারলি দেখলো সকালের ঐ লোকটা ...
তার বেশ অবাক লাগছে এটা দেখে...
মেহেরিমা ভাবলো ওখানে গেলে কেমন হয় ...
বালিবে তো এখন নেই তাই ওখানে যাওয়ায় যায়.
.
.
.
বালিবে সেই গোপন কক্ষে যাচ্ছে...
বালিবের পরনে সাদা ধবধবে পাজামা পান্জাবি...
সে যেতেই সামনের দিকে একটা স্বর্ণের সিংহাসন উদয় হলো...
বালিবে সেখানে বসতেই আরো শত শত লোক সাদা পোষাক পরে হাজির হলো...
সবাই বলতে লাগলো...জয় জয় জ্বীনের বাদশা তাশলে আলি বালিবের জয়...
অতঃপর শুরু হলো বালিবের বিচার সভা...সভায় বালিবের রক্ষিরা একজন একজন করে অপরাধী আনছে আর বালিবে বসে বসে বিচার করছে
তখনি একজন বললো...,জ্বীনের বে তাজ বাদশা এই হলো সেই বেয়াদব জ্বীন যে আমাদের রাণিকে দুদিন আগে ভয় দেখিয়ে ছিলো.
বালিবে উঠে দাড়িয়ে এক তোলয়ার হাতে নিয়ে সেই জ্বীনটার ধর থেকে মাথা আলাদা করে ফেললো...
বাকি সব জ্বীনেরা ভয় পেয়ে গেলো...
.
.
.
বালিবে আবার নিজের আসনে বসলো...
সে বসে আছে কিছু হুরের মতো সুন্দরি পরি তাকে পাখা দিচ্ছে..
.
.
.
তখনই বালিবের দুটো রক্ষি জ্বীন জানালো তাদের রাণি মেহেরিমা হাবেলি থেকে বাহিরে বের হচ্ছে...বালিবে জোরে হুঙ্কার দিয়ে মেহেরিমা যেখানে আছে সেখানে গেলো...
.
.
.
ঝিলের দিকে লোকটা ক্রমশ নেমে যাচ্ছে
.
মেহেরিমা যখনই ঝিলে নামবে তখনই বালিবে তাকে ধরর ফেললো..মেহেরিমা বালিবের দিকে তাকিয়েই বললো তাশলে..সাথে সাথে সে জ্ঞান হাড়ালো..
.
.
.
বালিনে মেহেরিমাকে কোলে নিয়ে বাতাসের বেগে উড়ে গেলো...
.
.
.
ঝিলের লোকটা বালিবে কে দেখে ঝিলে ডুব দিয়েছিলো....এখন সে উঠে এলো ঝিল থেকে...তারপর নিজের রুপে ফিরে এলো...
তারপর জোরে জোরে বলতে লাগলো ...
_তাশলে তুই আমার থেকে সিংহাসন কেড়ে নিয়েছিস...আবার আমার মেহেরিমাকেও কেড়ে নিয়েছিস...
এটা হতে দেবোনা
..মেহেরিমাকে আমি চাই যে কোনো মূল্যে....
মনে রাখিা আমিও ইফিস্দ্রিস জ্বীন রুস্তম..
.
.
.
একই মায়ের পেটে আমাদের জন্ম...
আমার সব জিনিসেই তুই ভাগ বসিয়েছিস.
..কিন্তু এখন আর না...
.
.
.
মেহেরিমা শুয়ে আছে সেন্সলেস অবস্থায়..
বালিবে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে কয়েক বছর আগের কথা ভাবলো.
.মেহেরিমা যখন খুব ছোট তখন গ্রামের বাড়িতে তাদের বাগানে সে খেলতো...
হঠাৎ একদিন বালিবে আর রুস্তুম এই বাগানে আাসে ঘুরতে তখন এক তান্ত্রিক তাদের ধরে ফেলে..
একটা বোতলে ভরে গাছে ঝুলিয়ে রাখে...মেহেরিমা খেলার ছলে সেই বোতলটা ভেঙে ফেলে.
.
বালিবে আর রুস্তম মুক্তো হয়ে যায়...
সেদিন থেক বালিবে রুস্তম মেহেরিমার সাথে থাকতো মেহেরিমার আড়ালে...
.
.
.
মেহেরিমা ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে আর বালিবে রুস্তম তার প্রেমে পড়তে থাকে...
.
.
.
রুস্তম আর বালিবে একটা চুক্তি করে..
বড় ছেলে জ্বীন বাদশা হয়
.রুস্তম বড় জ্বীন আর বালিবে ছোট জ্বীন...
রুস্তম তার সিংহাসন মেহেরিমার বিনিময়ে বালিবে কে দিয়ে দেয়...
কথা ছিলো বালিবে মেহেরিমার থেকে দূরে থাকবে...
.
.
রুস্তম মেহেরিমার ভার্সিটিতে প্রফেসর হয়ে যায় মেহেরিমার মন জয় করতে...
.
.
.
বালিবে ধোকা করে রস্তমের সাথে....বাদশা হয়ে সে শক্তি দিয়ে রুস্তমকে বন্ধি বানিয়ে ফেলে আর মেহেরিমাকে বিয়ে করে ফেলে...
.
বালিবে মেহেরিমার মাথায় হাত রেখে বলে...
নিজের ভাইকে তোমার জন্য ধোকা দিলাম কারণ যুদ্ধে আর ভালোবাসায় সবকিছু জায়েয
.
.
.
মেহেরিমা যদি ওদের প্রাণ না বাচাতো তাহলে আর কিছুদিন গেলেই ওদের প্রাণ চলে যেতো..
ওরা দুজন মেহেরিমার কেনা গোলাম হয়ে গিয়েছিলো সেদিন থেকে...
মেহেরিমাকে দুজনই ভালোবাসে খুব...
বালিবে মেহেরিমাকে ছোটবেলায় আম পেড়ে দিতো...
.
.
একটা ছেলে মেহেরিমাকে ভুলিয়ে জঙগলে নিয়ে গিয়েছিলো..
সেদিন ছেলেটা মেহেরিমার গায়ে হাত দিয়েছিলো আর জামা ছিড়ে ফেলেছিলো...মেহেরিমা ভেবেছিলো আম না দেওয়াে জন্য ছেলেটা তাকে মারছে...
ঘটনা অন্য ছিলো সেটা সে বুঝতে পারেনি..
.
.
.
বালিবে লেট করলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারতো মেহেরিমার ।
মেহেরিমা কে সেদিন বালিবে বাচিয়ে ছিলো...
বালিবে ছেলেটা মেরে নাড়ি ভুড়ি সব বের করেছিলো..
তারপর ফাসি দিয়ে রেখেছিলো গাছে..
.
.
.
বালিবে বুঝতে পাচ্ছে রুস্তম আশে পাশে কোথাও আছে...
সামনে সব জ্বীনেদের নিয়ে একটা উৎসব আছে.
.
.সেখানে রুস্তম ঝামেলা করবে মেহেরিমাকে নিয়ে...
রুস্তমকে বালিবে বোতলে ভরে রেখেছিলো...বাট এখন সে মুক্তো হয়ে গিয়েছে...
.
.
.
বালিবে মেহেরিমার দিকে তাকিয়ে ভাবছে মেহেরিমা যদি জানে তার স্বামী জ্বীন তাহলে কি হবে...
মেহেরিমা ভয় পেয়ে দূরে সরে যাবে...
কখনো বালিবেে মুখ দেখতে চাইবেনা...
বালিবে মেহেরিমাকে জরিয়ে ধরে রাখলো...
সকালে বাহারি সব মিষ্টি দিয়ে মেহেরিমাকে নাশতা করিয়ে দিলো বালিবে..
বালিবে আজকে মেহেরিমাকে বাহিরে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার জন্য হাবেলির বাহিরে বের হলো...তখনই এক ভিখারি রক্ত মাখা হাত নিয়ে মেহেরিমার হাত ধরলো...মেহেরিমা ভয়ে চিৎকার করতে লাগলো...
ভিখারি লোকটা বললো..
_তোর জিবনে অন্ধকার নেমেছে.
.তোর জিবনে দুজন প্রবথশ করেছে...একটা ভালো অন্যটা মন্দ।
একটা তোকে বেছে নিতে হবে...
খুব সাবধান থাক ...
বালিবে আসতেই ভিখারি ভয়ে দৌড়ে পালালো...
বালিবে মেহেরিমাকে বললো পাগলো লোকজন ..
ভয় পেয়োনা আমি আছি
.
কেউ একজন গাছের আড়ালে তাদের দেখছে আর রাগে ফুলছে...
জ্বীন লাভার...☠️👹
পর্ব: ০৫
মেহরিমা কে হঠাৎ কে যেনো কোথায় নিয়ে গেলো...মেহেরিমার যত দূর মনে আছে সে হাবেলির নীচ তলায় একটা কাজে স্টোর রুমে গিয়েছিলো...মেহেরিমা সেখানে গিয়েই জ্ঞান হাড়ায়...
মেহেরিমার জ্ঞান ফিরতেই সে নিজেকে স্টোর রুমের মতো একটা জায়গায় আবিষ্কার করলো...
মেহেরিমা হাত পা নাড়াতে পাচ্ছেনা...
তার ভীষন কষ্ট লাগছে...
সম্ভবত তার হাত পা বাধা আছে...মুখ পর্যন্ত বাধা...
.
হঠাৎ তার সামনে সেই বৃদ্ধা লোক এলো...
বৃদ্ধা মেহেরিমার সামনে বসলো...
মেহেরিমার ভীষন ভয় করছে.
সে কি করবে তা ভেবে পাচ্ছেনা...
লোকটা বললো...
_জ্বীনের বে তাজ বাদশার বেগম কেমন আছেন???
মেহেরিমা অবাক হুয়ে গেলো কথা শুনে...
.
_আমি আপনাকে কয়েকটা গোপন কথা জানাতে চাই.
কথা গুলো অবিশ্বাস্য ভয়ানক ।
আপনি একটা মায়া জালে ফেসেছেন আর এখান থেক আপনিই বের হতে পারবেন...
লোক কিছু বলবে তার আগেই বালিবে এসে হাজির...লোকটা বালিবে কে দেখে ভয় পেয়ে গেলো...
সে মেহেরিমা কে আর কিছু বলতে পারলোনা...
বালিবে মেহেরিমা কে নিয়ে চলে গেলো হাত পায়ের বাধন খুলে..
মেহেরিমা জায়গার বাহিরে যেতেই ভেতর থেকে লোকটার আওয়াজ পেলো চিৎকারের...
মেহেরিমা বালিবের দিকে তাকিয়ে লোকটা কে দেখতে যেতে চাইলো বাট বালিবে যেতে দিলোনা।
বালিবে বললো...তার লোকজন দেখছে বিষয়টা..
মেহেরিমা রুমে এসে তার সাথে ঘটে যাওয়ার ঘটনা গুলো ভাবছে..
কি সব হচ্ছে তার সাথে....কি সব এলোমেলু ঘটনা ঘটছে যার কোনো রকম ব্যাখ্যা করা যাচ্ছেনা..
মেহেরিমা হঠাৎ মিষ্টি সুভাস পেলো আর চোখ মেলেই বালিবে কে দেখতে পেলো..
_তাশলে ডোর ভেতর থেকে লক তাহলে আপনি ভেতরর ঢুকলেন কিভাবে???
মেহেরিমা অবাক হলো এমন দেখে কারণ এই ঘটনার সাথে সে পরিচিত...
বালিবে সব সময় এমন অদ্ভুদ কান্ড করে থাকে...
বালিবে চমকে গিয়ে বললো...অন্য সিক্রেট ডোর আছে...সেটা দিয়ে আমার সুন্দরি শাহাজাদি বউ এর কাছে এলাম...
বালিবে মেহেরিমার কপালে একটা চুমো দিলো...
তারপর কোমরে ধরে নিজের কাছাকাছি নিয়ে এলো...
মেহেরিমার এদিকে খেয়াল নেই সে বৃদ্ধার কথা ভাবছে ...
এই বৃ্দ্ধা কি বলতে চেয়েছিলো...
তার মন বলছে এই মহিলায় পারবে তার মন কে শান্ত করতে...মেহেরিমার মনে অনেক প্রশ্ন ..
একবার এই মহিলা কে সে পেলেই সব রহস্যা ভেদ করা যাবে....
.
বালিবে মেহেরিমার ঘারে চুমো দিয়ে গালে চুমো দিচ্ছে যখনই ঠোটের কাছে যাবে তখনই নিজের অজান্তে সে বালিবে কে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলো.
বালিবে এমন আচরণে কিছু বললো না সে মেহেরিমার দিকে তাকিয়ে ডোর ওপেন করে চলে গেল মেহেরিমা কিছু বলার আগে...
.
মেহেরিমার খুব খারাপ লাগছে এমন করে...সে এমন করতে চায়নি...তবুও এমন হয়ে গেলো...বালিবে গোপন কক্ষে সিংহাসনে বসে আছে ...তাকে হাওয়া দিচ্ছে সুন্দরি পরিরা...
বালিবের মন খারাপ ...এতো দিনেও সে মেহেরিমার কাছাকাছি যেতে পারলোনা...
শ্রেষ্ট সুন্দরি পরিরা যেখানে তার প্রেমে হাবুডুবু খায় আর সেখানে একজন মানুষ কিনা তাকে উপেক্ষা করে....হায়রে আদম জাত বড়ই মূল্যবান...তাদের মন জয় করা সহজ নয়...
বালিবে মেহেরিমার আচরণ সহ্য করতে পাচ্ছেনা...
সামনে থেকে আফিমের পেয়ালা থেকে সে কিছুটা পান করলো...তাতেও রাগ কমছেনা...
আরো বেশি পান করতে লাগলো সে...সভায় সবাই বালিবের কান্ড দেখে অবাক হলো...বালিবে বিচার কার্য ছেড়ে জলসার আয়োজন করতে চাইলো...
জলসায় একটা পরি নাচ করছে ...
বালিবের পরিটাকে দেখে মেহেরিমার মতো লাগলো...যাকে সে ভালোবাসে ..
যার জন্য প্রথিবীতে পরে আছে সে আর তার ভাই
.
আদম জাতের মেয়ের মায়া এতো ভয়াবহ তা জানা ছিলো না....
এই আদম জাতের কারণে কত জ্বীন রা ধ্বংস হয়েছে।
মেহেরিমা বালিবের অস্তিত্ত্বে মিশে রয়েছে...
মেহেরিমা যেদিন বালিবে কে নিজ থেকে আপন করে নেবে আর ভালোবেসে স্বামি বলে মানবে ঐ দিন বালিবের জয় হবে....আর বালিবে তার রাজ্যে ফিরে যেতে পারবে মেহেরিমা কে নিয়ে...
.
মেহেরিমার মন খারাপ সে এটা কি করলো...বালিবে তার কত খেয়াল রাখে...তার জন্য সিমাহীন ভালোবাসা বালির চোখে খোজে পাওয়া যায়...
আর সে কিনা এই ভাবে এগুলোর প্রতিদান দিলো...
মেহেরিমার বালিবে কে কেমন সন্দেহ হয়...রহস্য বলে মনে হয়...যতদিন এই রহস্য ভেদ করা না যাবে ততদিন মেহেরিমা বালিবে কে আপন করে নিতে পারবেনা...মেহেরিমার মনে হয় নিজেকে উৎস্বর্গ করে দিতে বালিবের হাতে....
.
রাতে বালিবে ফিরলো না...সে মনে মনে খুব কষ্ট পেলো...সে খায়নি বালিবের হাতে খাবে বলে...বালিবের হাতে খেয়ে তার অভ্যাস হয়েছে...সে বালিবে কে মিস করতে লাগলো...
.
মেহেরিমা কখন যে কাদতে কাদতে ঘুমিয়ে পড়লো কে জানে...সে চোখ খুলে বেডে আবিষ্কার করলো নিজেকে ...সে তো সোফায় বসেছিলো...
বালিবে কে সোফায় বসে থাকতে দেখলো সে...
কখন এলো বালিবে...
আর মেহেরিমা কে ঘুম থেকে ডেকে তোলেনি কেনো...
বালিবে কে অন্য রকম দেখাচ্ছে.
শরীর কেমন সাদা সাদা দেখাচ্ছে আর চোখ গুলো জ্বল জ্বল করছে...
মেহেরিমা দৌড়ে গিয়ে বালিবে কে জরিয়ে ধরে কাদতে লাগলো
..বালিবে তখনই ধাক্কা দিয়ে মেহেরিমা কে সরিয়ে দিলো...
মেহেরিমা অবাক হয়ে তাকালো...
_তাশলে আপনি এমন করছেন কেনো ???
আপনি রাগ করেছেন ???
ঐ ঘটনার জন্য আমি দুঃখিত..
আমি ভীষন অপরাধী আর ল্জ্জিত ফিল করছি...
.
বালিবে মেহেরিমার কাছে গিয়ে বললো...তাহলে এখন কি করা উচিৎ...
বালিবে কথা গুলো বলেই মেহেরিমা কে কোলে নিয়ে বেডে গেলো...
মেহেরিমা শাড়িতে হাত দিতেই মেহেরিমা কান্না করে দিলো আর বললো...আমি এসবের জন্য রেডি নয়...
বালিবে বললো...
_তাহলে যখন রেডি হবে তখন আমার কাছে এসো আর জরিয়ে ধরো...
বালিবে এক প্রকার রেগেই রুম থেকে চলে গেলো...
মেহেরিমা বসে বসে কাদছে...
সে কেনো কিছুই বুঝতে পাচ্ছেনা কি হচ্ছে তার সাথে...
সে কেনো বালিবে কে মেনে নিতে পাচ্ছেনা...
.
কয়েক দিন হয়ে গেলো মেহেরিমা কে একটুও কাছ থেকে বালিবে লক্ষ্য করছেনা ...
বালিবে মেহেরিমা কে খাইয়েও দিচ্ছেনা...
মেহেরিমা ঠিক মতো খাচ্ছেনা সে বালিবে র জন্য কষ্ট পাচ্ছে...
বালিবে হঠাৎ এতো কঠোর ব্যাবহার করছে কেনো...বালিবে তো মেহেরিমা কে ভালোবাসে...
মেহেরিমার সাথে এখন ঠিক করে কথাও বলেনা...মেহেরিমা ডিসিশন নিয়েছে সে বালিবে কে ভয় দেখাবে...তাই লুকিয়ে সে ঝিলে চলে গেলো...যেনো বালিবে তাকে খোজেঁ কাছে টেনে নেই...
ঝিলে যেতেই কে যেনো মেহেরিমার হাত টেনে ধরলো...
মেহেরিমা পেছনে তাকিয়ে রুস্তম স্যারকে দেখতে পেলো...
আর সেই বিশ্রি গন্ধটাও পেলো...
রুস্ত বেশ জোরে হাসি দিলো...
আর বললো...এবার পালাবে কোথায় সুন্দরি...আমার হাত থেকে তোমাকে কেউ বাচাতে পারবেনা ...
.
রুস্তম মেহেরিমা কে ঝিলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে...এদিকে বালিবে মেহেরিমা কে না দেখে সত্যি ভয় পেলো খুব...
বালিবে তার জ্বীন সেবক দের দিয়ে সব জায়গায় খোজ নিয়েছে বাট কোথাও মেহেরিমাকে পাওয়া যায়নি..
মেহেরিমা রুস্তমের দিকে চমকে তাকালো....রুস্তম মেহেরিমাকে ঝিলের নিচে নিয়ে যাওয়ার সময় রুস্তম আকাশের পর্যন্ত লম্বা রুপ ধারণ করেছিলো...দেখে মনে হচ্ছিলো যেনো মাটি থেকে আসমান পর্যন্ত রুস্তম লম্বা...মেহেরিমা কিছুই বুঝতে পারলোনা....
.
সে বুঝতে পাচ্ছেনা তার সাথে কি হচ্ছে..
রুস্তম স্যার একি রুপ ধারণ করেছে...ঝিলের নিচে সুন্দর একটা মহলে মেহেরিমাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে...
ঝিলের নিচে এমন মহল দেখে মেহেরিমার বুক কেপে উঠেছে...
স্যার কি তাহলে কোনো মানুষ না...মেহেরিমা এই যুগের স্মার্ট মর্ডান মেয়ে সে এসব অলৌকিক ব্যাপার বিশ্বাস করেনা...
.
মেহেরিমাকে একটা বাগানে নিয়ে যায় রুস্তম...
রুস্তম স্যার মেহেরিমার দিকে এক পলক হীন ভাবে তাকিয়ে রইলো...
মেহেরিমার এদিকে কোনো খেয়াল নেই...সে শুধু ভয় পাচ্ছে চার পাশের এমন এমন অবিশ্বাস্য জিনিস পত্র দেখে...ঝিলে পানি থাকার কথা বাট পানি নেই ....
রুস্তম স্যার মেহেরিমার হাত ধরতেই মেহেরিমা ঝটকা দিয়ে হাত সরিয়ে নেয়...
_খবরদার আমার হাত ছোবেন না...
আমাকে এই কোন জায়গায় নিয়ে এসেছেন ???
কে আপনি ???
আপনি মানুষ হতে পারেন না...
রুস্তম গা কাপানো হাসি দিলো..._ঠিক বলেছো আমি মানুষ না...
আমি জ্বীন...
রুস্তম জ্বীনের ভয়ংকর রুপ ধারণ করলো..
মেহেরিমা সব কিছু বুঝতে পারলো....
মেহেরিমা ভীষন ভয় পেয়ে বললো...
আমাকে যেতে দিন স্যার...আমি বিবাহিতা...আমার আর আমার স্বামীর কোনো ক্ষতি করবেন না আপনি..
_তোমার কোনো ক্ষতি আমি করবোনা...আমার সাথে থাকলে তোমার কোনো ক্ষতি হবেনা...উল্টো তোমার স্বামি নামের লোকের কাছে থাকলে ক্ষতি হবে...কারণ সেও আমার মতো জ্বীন...
মেহেরিমার বুকে মোচর দিয়ে উঠলো...কি সব বলছে স্যার...
তাশলে জ্বীন...
_আপনি মিথ্যে বলছেন আমাকে পাওয়ার জন্য...আমি যেনো তাশলে কে ভুল বুঝি আর আপনাকে বিশ্বাস করি...কিন্তু এটা হবেনা কখনোই...
.
.
রুস্তম মেহেরিমার কাছে এসে বললো...আমি সব সত্যি বলছি...
তোমার সাথে যা সব ঘটেছে তা একটু ভেবে দেখলেই বুঝতে পারবে সবটা..ছোটবেলায় তোমার ভাইকে খুন করেছিলো তাশলে...এটাই সত্যি যা তুমি জানতেনা..
_চুপ করুন আপনি...মিথ্যে বলবেন না...
আমি আর নিতে পাচ্ছিনা..
মেহেরিমা কাদছে...
রুস্তম বললো...ওর আসল রুপ জানোনা ...ওর জ্বীনের দেশে প্রচুর দাসি আছে যাদের সাথে ওর অবৈধ সম্পর্ক আছে...
এমন কি ওর বর্তমান আবাসেও প্রচুর দাসি আছে...যাদের সাথে সে তার সম্পর্ক আছে...সে সব মেয়েদের কামনার স্বীকার বানায় ...যেমনটা তোমাকে বানাতে চাচ্ছে এখন...
মেহেরিমা কানে হাত দিয়ে বললো..
চুপ করুন আপনি ...আমি আর সহ্য করতে পাচ্ছিনা...
.
.
.
_মেহেরিমা তুমি আমার উপর ভরসা রাখো...আমি তোমাকে বদ জ্বীনের হাত থেকে বাচাবো...
আমি তোমাকে ভালোবাসি...
মেহেরিমা বাগানে বসে কাদছে...তাশলে এভাবর তাকে ধোকা দিলো...
সে তার ভাইয়ের খুনি এমনকি সে অবৈধ সম্পর্ক রাখে...সবচেয়ে বড় কথা সে জ্বীন মানব সন্তান নয়...
.
কিভাবে কেউ এভাবে কাউকে ধোকা দেয়...
মেহেরিমা কি করেছিলো যার জন্য আল্লাহ তাকে এমন শাস্তি দিচ্ছে...
.
মেহেরিমা হঠাৎ কাধে কারও স্পর্ষ পেলো...
পেছনে তাকিয়ে বালিবে কে দেখতে পেলো....
বালিবে মেহেরিমার গালে হাত দিতেই রুস্তম এসে বাধা দিলো...
দুজনের আসল রুপ বেড়িয়ে পড়লো...দুজন একে অপরকে আঘাত করছে...
রুস্তম চিৎকার করে বলছে আমাে সিংহাসন তুই নিয়েছিস এখন আমার ভালোবাসাকেও নিতে চাস তা হতে দেবোনা..
_জোর যার মল্লুক তার...ক্ষমতা সিংহাসন আমার মেহেরিম আমার ।
দুজনের শরির থেকে আগুন বের হচ্ছে...
মেহেরিমা এসব দেখে জ্ঞান হাড়ালো...
.
যখন মেহেরিমার জ্ঞান ফিরলো তখন সে তাশলে কে দেখতে পেলো....
_তাশলে আমাকে ছোবেন না আপনি...
আপনি কে তা জেনেছি আমি ...
আপনি জ্বীন সন্তান..
আমি আপনার সাথে থাকতে চাইনা...
আমি চলে যাবো আপনার কাছে থেকে...
_আমাকে দেখে ভয় পেয়োনা তুমি...আমি স্বীকার করছি...আমি তোমাকে সত্যিটা বলতে পারিনি ভয়ে...তুমি আমাকে তো ভালোবাসও...
_মানব আর জ্বীন কখনো ভালোবাসতে পারেনা কাউকে...
_আমি জ্বূীন এটাই অপরাধ আমার...আমি কাউকে ভালোবাসতে পারিনা...
.
.
.
_আপনার একটা অপরাধ না..কোনটা বলি আপনি তো অপরাধের উপর ডিগ্রি অর্জন করেছেন...
আপনি বাজে জ্বীন...
আপনার সাথে কত কত জনের অবৈধ সম্পর্ক ...আপনি একটা জঘন্য...
আপনি আমার ভাইকে খুন করেছেন...
মেহেরিমা চিৎকার করে কাদতেঁ লাগলো...
বালিবে অপরাধির মতো বললো...আমি অবৈধ সম্পর্ক রেখেছি...
কিন্তু সেটা অনেক আগে...তোমার সাথে দেখা হওয়ার আগে...
তোমাকে খুব ছোট থেকে ভালোবাসি যখন তুমি আমার জিবন বাচিয়ে ছিলে....তোমার ভাই নিজের নিয়ন্ত্রণ হাড়িয়ে ছিলো তাই তাকে মারতে বাধ্য হয়েছি..তোমার ভাইকে মারার একটা কারণ আছে..
মেহেরিমা কানে হাত দিয়ে বললো....
_আমি কিছু শুনতে চাইনা..
আমি সহ্য করতে পাচ্ছিনা আপনাকে...
আপনি আমার সামনে থেকে যান ...
_আমাকে তোমার কথা শুনতে হবে...
মেহেরিমাকে জরিয়ে ধরলো বালিবে...
মেহেরিমা বালিবে কে দূরে সরিয়ে বললো...
আমি আপনার কথা শুনতে চাচ্ছিনা...আপনি একটা চরিত্রহীন খুনি বাজে জ্বীন...
বালিবের চোখ থেকে পানি পড়ছে...
মেহেরিমা নিজের শাড়ির আচল ফেলে দিয়ে বললো... এই নিন চরিত্রহীন জ্বীন আপনার কামনা বাসনা মিটিয়ে নিন...
এর জন্যই তো আমাকে বিয়ে করেছিলেন যেনো যখন তখন নিজের ইচ্ছে মেটাতে পারুন...
.
বালিবে মেহেরিমার পায়ে ধরে কেদে বললো...এবার থামো প্লিজজজ....
মেহেরিমা বালিবে কে বললো....সত্যিটা গায়ে লাগছে খুব..
তোর মতো চরিত্রহীন জ্বীন কাদতে পারে...জানা ছিলোনা...তোর মতো বাজে খুনিকে কোন মা বাবা জন্ম দিয়েছে কে জানে...তারাও তোর থেকে আরো বেশি ভয়ংকর খারাপ...
বালিবে নিজের পরিবারের নামে এমন কথা শুনে নিয়ন্ত্রণ হাড়িয়ে রেগে মেহেরিমার দুই গালে দুটো থাপ্পর মারে...
.
.
মেহেরিমা গালে হাত দিয়ে বালিবে কে এক পলক দেখে তাশলে নামটা বলে জ্ঞান হাড়ায়...
.
.
.
বালিবে মেহেরিমা কে কোলে নিয়ে বেডে শুইয়ে দেয় আর শাড়ি ঠিক করে দেয়...
বালিবে মেহেরিমার গালে কপালে কয়কটা চুমো দেয়...আর ঠোটে একটা গাড় চুমো দেয়...
বালিবে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় মেহেরিমার... মেহেরিমার থাপ্পর মারা গালে লাল দাগ বসে গেছে
.
বালিবের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে...সে বুঝতে পেরেছে রেগে মেহেরিমা এমন বলেছে..
রাগে সবাই বাজে কথা বলে এটা স্বাভাবিক বিষয়...রাগের কথা ধরতে নেই...
রাতে বালিবে সিহহাসনের কাজ করলোনা...
মেহেরিমার পাশে মেহেরিমার গলায় মুখ গুজে কাদতে থাকলো সে...
মেহেরিমার রাগ অভিমান কি করে ভাঙাবে সে.
মেহেরিমার থেকে দূরে যেতর পারবেনা সে..
মেহেরিমা কে বড্ড ভালোবাসে সে...
মেহেরিমা জেগে উঠলেই চলে যেতে চাইবে ...আর বালিবে কে সহ্য করতে পারবেনা...ঘৃনা করবে শুধু তাকে...
.
.
.
বালিবে কি করবে বুঝতে পাচ্ছেনা সে ...
বাহিরের চাদেঁর আলোতে মেহেরিমার মুখ জ্বল জ্বল করছে...
বালিবে আর দূরে থাকতে পাচ্ছেনা মেহেরিমার থেকে...
.
.
.
নিজেকে কন্ট্রোল করতে হচ্ছে...
বালিবে সামনে কিভাবে কি করে তাদের ভালোবাসাকে সফল করে মেহেরিমা কে নিজের করবে সেটাই ভাবছে....
Writer : Shabnaj Hossain Moon
জ্বীন লাভার...☠️👹
পর্ব: ০৬ ও শেষ
বালিবে মেহেরিমার গলায় মুখ গুজে ঘুমিয়ে পড়লো...
মেহেরিমার ঘুম ভাঙলো মাঝ রাতে..
পাশে তাকিয়ে সে দেখতে বালিবে কে দেখতে পেলো..কি সুন্দর চেহেরা বালিবের..সাত রাজার মানিকের মতো মুখ খানি জ্বল জ্বল করছে বালিবের.
পরক্ষনেই বালিবের করা কাজের কথা মনে পড়লো মেহেরিমার ।
.
.
.
মেহেরিমা বালিবের কাজ থেকে সরে গিয়ে বারান্দায় যায়...
বারান্দা থেকে সে সে ঐ লোকটাকে দেখতে পেলো ...বৃদ্ধা লোকটা তাকে ইশারায় ডাকছে...
মেহেরিমা বুঝতে পাচ্ছে এই একমাত্র লোক যে কিনা বালিবে আর রুস্তম এর হাত থেকে তাকে বাচাতে পারবে....
.
.
মেহেরিমা খুব সাবধানে একটা শাড়ি দিয়ে বারান্দায় বেধধ সুড় সুড় করে নিচে নেমে গেলো...যাওয়ার আগে মনে হলো বালিবে তাকে ডাকছে আর হাবেলি তাকে যেতে নিষেধ করেছে...
মেহেরিমার মনে হচ্ছে কি যেনো হাড়িয়ে যাচ্ছে তার জীবন থেকে..
.
.
.
মেহেরিমা নিচে যেতেই বৃদ্ধা লোক তার হাতে একটা তাবিজ বেধে দিলো...
এই তাবিজ টা বালিবে কে মেহেরিমার কাছে আসতে দেবেনা..
লোকটা মেহেরিমা কে একটা গোপন জায়গায় কথা বলে সেই ঝিলের মধ্যে নিয়ে গেলো...
মেহেরিমার আর বৃদ্ধার মধ্যে কথা ছিলো মেহেরিমাকে তার বাড়ি পৌছে দেবে...
.
.
মেহেরিমা কিছু বোঝে উঠার আগেই রুস্তম তার রুপ দেখিয়ে দিলো..
বৃ্দ্ধার বেশে সে ছিলো ।
মেহেরিমা চিৎকার করার আগেই রুস্তম তাকে নিয়ে ঝিলের মহলে চলে গেলো..
_শয়তান ছেড়ে দে আমাকে তোরা আমাকে কি পেয়েছিস। আর কত দুঃখ দিবি তোরা আমাকে...
_আজ তোমার সাথে আমার মহা মিলন...
তারপর থেকে তুমি আমার...তোমাকে কখনো কষ্ট...
.
.
.
মেহেরিমা চিৎকার করছে তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য...
.
.
.
বালিবে এদিকে মেহেরিমাকে না দেখে পাগল হয়ে গেলো.. সে তার প্রহরি জ্বীন দের মৃত অবস্থায় দেখলো....
তার মধ্যে একটা আঘাত প্রাপ্ত জ্বূীন বালিবে কে সকল ঘটনা খুলে বললো...রুস্তম এসব কিছু করেছে..
আর মেহেরিমা কে নিয়ে গেছে ভুলিয়ে...
বালিবের চোখে আগুন জ্বলছে...
.
.
.
রুস্তম মেহেরিমা কে নিচে ফেলে দিলো..
তারপর ঝাপিয়ে পড়লো তার উপর...
মেহেরিমা চোখ বন্ধ করে আল্লাহর নাম নিচ্ছে...
একটা মেয়ের কাছে তার সম্মাম সবচেয়র বড় সম্পদ.
.
.
.
মেহেরিমার আচল ধরতেই বালিবে এসে রুস্তমের হাত ধরে দূরে ছিটকে ফেলে দিলো...
.
.
.
মেহেরিমা কে বালিবে ধরতেই সেও দূরে ছিটকে পরে গেলো...
মেহেরিমা নিচে পড়ে আছে সে চোখ মেলে বালিবে কে দেখতে পেলো...
মেহেরিমার দিকে রুস্তম তাকিয়ে বললো...আমি মেহেরিমার গায়ে কবজ দিয়েছি যা বালিবে কে আমার মেহেরিমার কাছে আসতে বাধা দেবে...
মেহেরিমা কে আমার হরে কেউ আটকাতে পারবেনা...
.
.
.
বালিবে চিৎকার করে বললো...মেহেরিমা আল্লাহত দোহায় তুমি কবজ খুলে ফেলো...
বালিবে কে কিছু বাজে জ্বীন ঘিরে ধরেছে..
সে কিছুই করতে পাচ্ছেনা মেহেরিমার জন্য..
কারণ রুস্তম একটা আগুনের কুন্ডলি বানিয়ে রেখেছে...বালিবে কিছু করলেই রুস্তম মেহেরিমা কে নিয়ে আগুনের কুন্ডলিতে ঝাপ দেবে...
.
.
.
বালিবে মেহেরিমার কাছেও যেতে পাচ্ছেনা...
মেহেরিমা কবজ খুলে ফেলে দিলে বালিবে নিজেে একটা কবজ মেহেরিমার গায়ে পরিয়ে তাকে সুরক্ষিত রেখে রুস্তম কে উচিৎ শিক্ষা দিতে পারতো...
মেহেরিমা কে বিয়ে করার জন্য সব আয়োজন করলো রুস্তম...
.
.
.
বালিবে অসহায় ভাবে তাকিয়ে থাকলো মেহেরিমার দিকে...
রুস্তম ভাবছে সে জিতে গেছে তাই নিজের কু কর্ম বলতে লাগলো...সে মেহেরিমার ভাইকে নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে মেহেরিমার পরিবারকে মেরে মেহেরিমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্ল্যান করেছিলো...
.
.
.
কিন্তু বালিবে মেহেরিমার ভাইকে মেরে ফেলে সব পরিকল্পনা নষ্ট করে দেয়..
মেহেরিমা রুস্তমের দিকে তাকিয়ে রইলো..
রুস্তম বললো..দুঃখিত প্রিয়তম ...তোমাকে পাওয়ার জন্য এতো কিছু করতেই হলো..
মেহেরিমা বিয়ের মন্ডপ থেকে উঠে দাড়িয়ে কবজ ছূরে ফেলে দিলো.
তখনি বালিবে এসে মেহেরিমার হাত ধরলো..
মেহেরিমা কে দূরে সরিয়ে বালিবে রুস্তমের সাথে যুদ্ধ শুরু করলো...
.
.
.
রুস্তম যুদ্ধে হেরে গিয়ে মেহেরিমার হাত ধরে আগুনে ঝাপ দিলো..
বালিবে মেহেরিমা বলে চিৎকার করলো...
মেহেরিমা আগুনের কাছে গিয়েই জ্ঞান হাড়ালো...
মেহেরিমার জ্ঞান ফিরলে সে বেডে আবিষ্কার করলো নিজেকে...
মেহেরিমা বালিবে কে কান্না করতে করতে জরিয়ে ধরলো..বালিবে মেহেরিমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো...রুস্তম ভাই যখন তোমাকে নিয়ে আগুনে ঝাপ দিলো তখনই পাশে থাকা একটা তোলোয়ার দিয়ে রুস্তমের হাতের দিকে ছূরে মেরে ছিলাম...
.
.
.
রুস্তম একা আগুনে ঝাপ দিয়েছে...
.
.
.
মেহেরিমা কান্না করতে করতে বললো..আমাকে মাফ করে দিন প্লিজজজ .আমি আপনাকে ভুল বুঝেছি...
বালিবে মেহেরিমার মুখে আঙুল দিয়ে বললো...চুপ একদম চুপ ...
মেহেরিমা কে কোলে নিয়ে বারান্দায় চলে গেলো..
_বউ এই দেখো এই চাদঁ টা তোমার থেকে কত কুৎসিত..তুমি আমার কাছে সবচেয়ে সুন্দর...আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি...তাই আমি তোমার সব ভুল ক্ষমা করে দেবো...
আমি তোমাকে জিবনের থেকেও ভালোবাসি বউ..
মেহেরিমা কেদে কেদে বললো...আমার সৌভাগ্য আপনাকে স্বামী হিসেবে পেয়ে...আমিও আপনাকে ভালোবাসি...
বালিবে মেহেরিমার ঠোটে ঠোট মিশিয়ে দিলো...
তারপর মেহেরিমা কে নিয়ে বিছানায় গেলো..
বালিবে তুরি মেরে রুমে প্রচুর ফুল ছড়িয়ে দিলো...
চারদিকে সুভাস বের হচ্ছে।
শুরু হলো জ্বীন সন্তান আর মানব সন্তানের প্রেমের কাহিনী...যুগ যুগ ধরে চলবে এই প্রেমের কাহিনী।
.......সমাপ্ত.......
রহস্যময় সব ধরনের গল্প পড়ুন আমাদের এই ওয়েব সাইটে।