মা হারা ছেলের কষ্টের গল্প | মায়ের কষ্টের গল্প

মায়ের কষ্টের স্ট্যাটাস

মায়ের কষ্টের স্ট্যাটাস

আম্মারে আর তেমন মনে টনে পড়ে না। শুধু হুট করে বাড়ি ফিরলে নিজের অজান্তে 'আম্মা বইলা ডাইকা উঠি'।


আম্মারে আসলেই আর মনে পড়েনা। শুধু ওয়্যারড্রোবে কাপড় খুজতে গেলে আর কিছুই খুজে পাইনা। 'আম্মু আমার সাদা চেক চেক শার্টটা কই' বলতে যেয়ে শুধু থমকে যাই।


এই যে আমি বাসায় ফিরলাম। ছোট্ট একটা ব্যাগ নিয়ে আসছি এবার হল থেকে। প্রতিবার ইয়া বস্তা বোঝাই করে ময়লা কাপড় আনি। আম্মা বলে আমার কাপড় ধোয়ায় নাকি ময়লা যায় না। সবগুলা শার্ট যত্ন নিয়ে ধুয়ে ইস্ত্রি করে দিতো আম্মা। 

হলে তাই সপ্তাহে দুই-তিনবার করে কাপড় ধুই। ময়লা যায় কিনা তা জানিনা, কিন্তু কষ্টগুলা আর যায়না।


মাঝে মাঝে বন্ধুবান্ধবদের ফোন আসে। 'হ্যালো আম্মু বলো' শুনলেই আমার ফোনের দিকে তাকাই। উহু ফোন আসেনা আম্মার নাম্বার থেকে। আসবে কেমন করে? নেটওয়ার্ক এর বাইরে চলে গেলে কি আর ফোন আসে?


ছয় মাস পরে এসে দুঃখগুলোও ভো/তা হয়ে গেছে। বাইরে যখন বৃষ্টি পড়ে, আমি হলের ডাইনিং এ বসে তখন ভাতের দিকে তাকায় থাকি। আম্মার হাতের খিচুড়ি খাওয়ার জন্য তখন ভেতরটা হাহাকার করে। খিচুড়ির কথা মনে পড়ে, কই আম্মাকে তো আর মনে পড়েনা?


আমি রংপুর থেকে ফেরার পথে প্রতিবার Avenged Sevenfold এর 'Dear God' শুনি।


'Dear God, the only thing I ask of you

Is to hold her when I'm not around

When I'm much too far away'


এই লাইনটায় এসে প্রতিবার আম্মার জন্য চোখ ভিজে যেতো আমার৷ হুহু করতো বুকটা। বুঝতে পারতাম না যে শহর ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট বেশি হচ্ছে নাকি আম্মাকে ছেড়ে যাওয়ার। 


এখন বুঝি। বেশ ভালো করেই বুঝি যেই শহরে মা নেই, সেই শহর শুধুই শহর। 'আমার শহর' না 


আসলেই আর আম্মারে মনে টনে পড়ে না। যেই মানুষটা পুরো অস্তিত্ব জুড়ে, সেই মানুষটাকে আবার আলাদা করে কিভাবে মনে পড়বে? আগে আম্মারে ধরতে পারতাম, ছুইতে পারতাম কপালে আদর দিতে পারতাম। এখন আম্মা থাকে প্রতিটা হাহাকারে, প্রতিটা কান্নায়, প্রতিটা যন্ত্রণায়, প্রতিটা অসুখে। 


এই যে এই ছবিটা। এই ছবিটা আমি ৬ মাস ধরে ঘুমানোর আগে দেখি। প্রচন্ড কষ্টে যখন ঘুম আসেনা, কাঁদতে কাঁদতে যখন চোখ জ্বা/লা শুরু করে তখন এই ছবিটা দেখি আর নিজেরে বুঝ দেই। 


'আম্মা ঘুমাচ্ছে নাহিদ, তুইও ঘুমায় যা' 


ঘুমায় যা! 

📷 Nahid Hasan


এমন আরও অনেক গল্প পড়ুন।