স্ত্রী প্রেগনেন্সির সময় | স্বামী স্ত্রীর ভালবাসা

 স্বামী স্ত্রীর ভালবাসার গল্প

স্ত্রী প্রেগনেন্সির সময়

আমার স্ত্রীর প্রেগনেন্সির নয় মাস চলছে। তাকে এত খারাপ অবস্থায় আগে কখনো দেখনি। বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে শুধুমাত্র তার শরীলটা ভালো থাকার জন্য। 


একটা কথা কি জানেন..


পরের মেয়েকে বিয়ে করে বউ করে ঘরে তুলে আনলে শত কাজ করলেও কাজ ঠিক হয় না। আরো ভালো হইলেও তাদের কাজে ভুল থাকেই থাকে। 


আমি বুঝতে পারি আমার স্ত্রী আমার বাড়িতে থাকলে তাকে আদর করে মুখে লোকমা তুলে কেউ খাইয়ে দিবেনা। জোর করেও কেউ খাইয়ে দিবেনা। আমি থাকি অফিসে। অফিস শেষ করে বাসায় এসে আমার সর্বোচ্চ সবটুকু দিয়ে তাকে কেয়ার করি। যত্ন করি। তবুও আমার কেন জানি মনে হয় আরো বেশি যত্নশীল রাখার দরকার। আমি বাড়িতে থাকলে তাকে কে কতটুকু যত্ন করে সেটা আমি নিজ চোখে দেখি আর অফিসে চলে গেলে তাকে কে কতটুকু যত্ন নিবে সেটাও আমি ভালো মতেই জানি। শাশুড়ি মা যত ভালো মানুষই হোক না কেন একদিন দুইদিন আদর করে খাওয়াইবে তিনদিনের মাথায় কাজ না করলে ঠিকি দেখতে পারবে না। উল্টাপাল্টা কথা শুনাবে। সেটা আমার মা হোক বা অন্যান্য ছেলেদের মা হোক সবাই দিনশেষে এক। 


এটা হান্ড্রেড পার্সেন্ট সত্যি যে.. তারা কখনো পরের মেয়েকে নিজের মেয়ের মত করে দেখেনা। এই কারণে হয়তো পুত্রবধূরা শাশুড়ি কেও দিনশেষে দেখতে পারেনা। 


আমার স্ত্রীর অসুস্থার কথা আজ রীতিমত শুনি। যেভাবে পারি তাকে নিজের সবটুকু দিয়ে ভরসা দেই। বসতে পারলে উঠতে পারেনা। পেটে খিধা পেট ভরে খাইতে পারেনা। কতরাত তৃপ্তি মজিয়ে ঘুমাতে পারেনা। ডান হাত আর ডান পা সারাক্ষণ বিষ করে। হাত পা অবশ হয়ে থাকার কারণে যখন কান্নাকাটি করে বিশ্বাস করেন আমার আর এক মুহূর্তও ভালো লাগেনা। 


পরশু দিন খুব খারাপ অনেক কান্নাকাটি করতেছে। আমিও কতদিন হইয়া গেল তাকে দেখতে যাই না। আমাকে পাষাণ আর কঠিন কঠিন কথা বলে তার অভিমানের জিদ মিটায়। একটা কথা যখন বললো ‘আমি এত কষ্ট কইরা বাচ্চা জন্ম দিমু আর তুমি দূর থেইকা বাবা হইবা যাইবা’ এই কথাটা শুনে কলিজাটা মুচড় দিয়ে উঠলো।


কাল যখন তাকে দেখতে গেলাম, বিশ্বাস করেন তাকে এত বেশি আনন্দিত দেখলাম যে আমার বিন্দুমাত্রও মনে হয়নি সে অসুস্থ। 


তাকে হাসিখুশি দেখে প্রশ্ন করলাম..


তুমি না অসুস্থ, তোমার সব খারাপ লাগা পেট ব্যথা, হাত ব্যথা, পা ব্যথা, আবার ফোনে কান্নাকাটি করা এই সবকিছু কই গেছে? 


তার উত্তরে সে কাছে এসে করুণ ছলছল চোখে আমার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে বললো.. 


বিশ্বাস করো তুমি আসার পর আমি একদম সুস্থ হয়ে গেছি। কালকেও আমি সারাদিন সারারাত হাত/পা বিষে ঘুমাইতে পারিনাই। দিনে সারাদিন ঠিকমত খাইতে পারিনাই, বসতে পারলে উঠতে পারিনাই, দাঁড়াইয়া থাকতে পারিনাই। হাটতেও পারিনাই আর আজকে আমি একদম সুস্থ। তুমি পাশে থাকলে আমি সব সময় সুস্থ থাকি। ভালো থাকি। আনন্দে থাকি। সব যেন আল্লাহর নেয়ামত। 


স্ত্রী প্রেগনেন্সির সময়।❤️


স্বামী স্ত্রীর ভালবাসার গল্প পড়ুন।