রোমান্টিক ভালোবাসা গল্প
- আমি তোর কাছে বাচ্চা চাইছি এটা কি আমার
অপরাধ (নীরা)
- অপরাধ ই তো ! বিয়ের আগে বাচ্চা চাস সরম
করেনা তোর ? (আমি)
- একটা থাপ্পর দিবো ! যাতে বিয়ে হয় সেই জন্যই তো বেবি চেয়েছি । আর সরম করবে কেনো আমি তোকে ভালোবাসি তুই আমাকে ভালোবাসোস । কিন্ত পরিবার না মানলে কি করব বল !
তোকে ছাড়া আমি বাচবো না বলে দিলাম । আমি আমার কথা বলে দিয়েছি । আমি শুধু তোকে
চাই যেকোনো কিছুর বিনিময়ে । যদি না পাই
দেখিস গলায় দড়ি দিয়ে মরবো তবুও অন্য কাউকে বিয়ে করবো না (নীরা)
এই বলে নীরা হন হন করে চলে গেলো ।
কিছু বলার সুযোগ ও দিলো না । মেন্টাল একটা ।
যা বলে তাই করে ।
পরিবার থেকে বিয়ে ঠিক করেছে তাই আমার উপর বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছে । কিন্ত আমি
ওকে বিয়ে করবো কিভাবে । আমি যে বেকার
তেমন শিক্ষিত ও না যে একটা চাকরি খুজে
বের করবো এত তাড়াতাড়ি । বিয়ে করে
খাওয়াবো কি ঘোড়ার আন্ডা ।
- আমার বাবা নেই । আম্মু একটা গারমের্নস এ
চাকরি করে কোনো মতন দুই মা ছেলের পেট চালাই । এত সবের মধ্যে আমি নীরাকে কি করে
বিয়ে করি ।
- সে ধনীর ঘরের মেয়ে না হলেও মোটামোটি তাদের টাকা পয়সা ভালোই আছে বলতে
গেলে মধ্যবিত্ত । কিন্ত আমাদের তো নূন আনতে
পানতা ফুরোয় সেটা ওকে কি করে বুজাই ।
- নীরা তো যত্তসব আকামের কথা বলেই
যাচ্ছে । কত বুজাই আর । একদিন বলে
চল পালিয়ে যাই । টাকা পয়সা যা লাগে সব
আমি বাসা থেকে নিবো । অন্যদিন বলে -
চল কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করে ফেলি ।
- আর আজকে কি বলল সেটা তো দেখতেই
পাচ্ছেন । ওর নাকি বেবি চাই । বলেন তো
বিয়ের আগে কেউ এসব করে !
হঠাৎ ফোনটা বাজতে লাগলো । জানি নীরা
কল দিসে তাই কল টা রিসিব করলাম।
- হ্যা বল (আমি)
- বলছি বাবু একটা কথা বলি (নীরা)
- (নিশ্চয়ই উল্টাপাল্টা কথা বলবে তাই বাবু বলতাসে দেখি কি বলে ) (মনে মনে )
- হমম বলো বাবু (আমি)
- দেখো আমি একটা বুদ্ধি বের করছি এটা করলে
আব্বু আমাদের দুজনকে ঠিকিই মেনে নিবে (নীরা)
- (তোর মাথায় তো সব আকামের বুদ্ধী গাধী)(মনে মনে বললাম )
- ওহ্ আচ্ছা কি বুদ্ধী শুনি বাবু (আমি)
- আমি এখানে সব ব্যাগ ট্যাগ গুছিয়ে নিয়েছি আর এক বছরের খরচ চালানির মতো টাকাও নিয়ে নিসি । আমরা এখান থেকে দুরে কোথাও
চলে যাবো । গিয়ে বিয়ে করে একবছর পর একটা কিউট বেবি সহ ফিরে আসবো ।ব্যাস
দেখবে আব্বু তখন নাতী- নাত্নীর মুখের দিকে
তাকিয়ে আমাদের দুজন কে মেনে নিবে । (নীরা)
নীরার কথা শুনে হাসবো না কাদবো কিছুই বুজতে পারছিলাম না । যদি কোনোদিন সুযোগ পাই তাহলে ওকে পাবনায় নিয়ে গিয়ে একবার ভর্তি করিয়ে দিয়ে আসবো । হঠাৎ নীরার ধমক !
- ওই কি হলো চুপ করে আছো কেনো (নীরা)
- না মানে খুব সুন্দর আইডিয়া তো আচ্ছা
বাবু আমি তোমাকে বাসায় গিয়ে জানাবো
ঠিক আছে (আমি)
- কুত্তা যদি এবার রাজি না হস তাহলে দেখিস
বিষ খেয়ে সুইসাইড করবো আর তোকে
ফাসিয়ে দিয়ে যাবো তখন তুই জেল খাটিস (নীরা).(রেগে)
টু টু টু - যাক বাবা ফোন টা কেটে দিলো ।
এটা মেয়ে নাকি অন্য কিছু যখন তখন মরার
হুমকি দেয় ।
আর কিছুক্ষন সেখানে দাড়িয়ে থেকে বাসায়
আসলাম । আজ শুক্রবার আম্মুর অফিস ও বন্ধ তাই আম্মু বাসায়।
গিয়ে দেখি আম্মু চুলারপাড়ে তরকারি রান্না
করতাসে । আমি ও চুলার পাড়ে গেলাম।
আম্মুর পিছে ঘুর ঘুর করতে লাগলাম ।
আম্মু বুজতে পারছে যে তার গুনোধর ছেলে কিছু বলতে চায় । তাই তিনি জিজ্ঞেস করলেন
- কিরে বাপ কিছু বলবি (মা)
- হ্যা মা একটা কথা বলার ছিলো (আমি)
- কি কথা বল (মা).
কিছুক্ষন চুপ থেকে বুকে সাহস নিয়ে বললাম?
- আম্মু আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি
তাকে বিয়ে করতে চাই (আমি)
- কি বললি তুই !
-মধ্যবিত্ত
(প্রথম পর্ব ০১)
-মধ্যবিত্ত
(পর্ব ০২)
- আম্মু রান্না করছিলো আর আমি তার পিছে
ঘুর ঘুর করছি । যে করেই হোক আজকে নীরার
কথা আম্মুকে বলবই ।
- মেয়েটাকে আমি ও তো ভালোবাসি । কিন্ত এভাবে পালিয়ে বিয়ে করতে চাইনা আমি ।
- কিরে বাপ কিছু বলবি (মা)
- হ্যা মা একটা বলার ছিলো (আমি)
- কি বলবি বল ! (মা)
কিছুক্ষন চুপ থেকে বুকে সাহস নিয়ে বললাম !
- আম্মু আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি আর তাকে বিয়ে করতে চাই (আমি)
- কি বললি তুই ! ( মা )
ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো ।
এখন মনে হয় খুন্তি দিয়ে এমন ছ্যাকা দিবে
বিয়ের সাদ মিটে যাবে । আল্লাহ্ বাচাও (মনে মনে)
- কিরে চুপ করে আছিস কেনো বল !( মা )
- না মানে কি বলমু ? (আমি)
- মারমু এক থাপ্পর ! সত্যি করে বল ব্যাপার কি ?
কোন মেয়েকে ভালোবাসিস (মা)
- না মানে মা ! আমাদের পাশের এলাকাতেই
থাকে মেয়েটা ! (আমি)
- তুই যে বিয়ে করতে চাস ! বিয়ের
পর বউ কে খাওয়াবি কি ! সারাদিন তো টো টো
করে ঘুরে বেড়াস ! কাজের বেলায় তো আন্ডা কোনো কাজই হয়না তোর দ্বারা ! নাকি বিয়ের
পর ও বউ কে মায়ের কামাই খাওয়ানির সখ আছে । (মা) (কড়া গলায় বললেন)
কথাটা শুনে একটু খারাপ লাগলো ।
তাই মুখ ঘোমড়া করে চুলারপাড় থেকে ঘরে
চলে আসলাম ।
জানি একটু পড়ে আম্মু নিজেই আসবে।
তখন আর একটু মন খারাপের ড্রামা করলেই
আম্মু গলে যাবে । তখন বিয়েটাও মেনে নিবে
হয়তো দেখা যাক কি হয় !
যতই হোক মায়েরা কখনো ছেলেদের উপর রাগ
করে থাকতে পারেনা । ছেলেদের মন খারাপ
থাকলে মায়ের মনে শান্তি থাকেনা।
কিছুুক্ষন পরেই আম্মু হাজির । আম্মুকে দেখেই
মুখে সেডনেস ভাব টা বাড়িয়ে দিলাম । আর অন্যদিক মুখ করে বসে রইলাম ।
আম্মু এসে আমার পাশে বসে কিছুক্ষন
আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে লাগলেন !
- তোরে তো আমি ও কবে থেকে চাইতেছি বিয়া দিমু
কিন্ত তুই তো টো টো কম্পানির মেনেজার ।
তোর কাছে কোন মেয়ে বিয়ে বসবে ।
আমি বলি কি বাবা এবার কিছু কাজ টাজ কর
তোর পছন্দের মানুষের লগেই তোরে বিয়ে দিবো।
(মা)
কিচ্ছুক্ষন চুপ থেকে মা বললাম -
- মা ওর পরিবার ওরে অন্য কোথাও বিয়ে দিতে
চায় । আমাদের ব্যাপার টা ওর পরিবার ও জানে
না । মেয়েটা আমারে না পাইলে মরে যাবে
বিষ খেয়ে তুমি কিছু একটা করো (আমি)
(কান্না কান্না ভাব ধরলাম - যাতে না বুজতে পারে
তার গুনোধর ছেলে কত বড় ড্রামাবাজ)
- আচ্ছা বাপ তুই মেয়েটাকে একবার
আমাদের বাড়িতে নিয়ে আয় দেখি । কেমন মেয়ে
তোর মতো বান্দরের জন্য জীবন দিতে চায়
নিশ্চয়ই মাথার তার ছিড়া ( মা ) (হাসতে হাসতে)
মনে হয় বুঝে ফেলছে । তার ছেলে ড্রামাবাজ ।
তাই হাসতে হাসতে চলে গেলো । আমি তো বোকা
বনে গেলাম ।
- মোবাইল টা হাতে নিয়ে তার ছিড়া মেয়েটাকে
কল দিলাম থুক্কু নীরা বাবুকে কল দিলাম ।
বলছি দুপুর তিনটায় দেখা করতে । এটা আর
বলি নাই যে বাসায় নিয়ে আসমু ।
যদি হিতে বিপরীত হয় তখন দেখা যাবে যে
ব্যাগ ট্যাগ নিয়ে সোজা বাসায় এসে উঠেছে ।
তাই আগে থেকে সাবধান থাকা ভালা ।
দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষে আম্মু
জিজ্ঞেস করলো ~
- কিরে বাপ মেয়েটাকে আনতে যাবি কখন (মা)
- মা বাইরে যেই ঠাডা পড়া রৌদ উঠছে ।
এখন গেলে ওমলেট হয়ে যামু ! তাই তারে বলছি
তিনটা বাজলে দেখা করতে । (আমি)
- আচ্ছা বাপ মেয়টা দেখতে কেমনরে ! (মা).
- হমম ! একেবারে তোমার মতো দেখতে ।
সুন্দর নাক টা বোচা হিহি (আমি)
- কি বললি আমার নাক বোচা ( মা )(রাগি সুরে)
- না না তোমার নাক বোচা হবে কেন !
আমি বলছি মেয়েটার নাক বোচা ( আমি)
- হইসে অনেক নাটক করসোস যা নামাজ
পড়তে যা আসার সময় মেয়েটাকে নিয়ে আসিস
আমি খাবার রেডি করি । (মা)
- হি হি আচ্ছা ! (আমি)
তারপর জুম্মার নামাজ পড়ে গেলাম মাঠে ।
এই মাঠে বিকাল বেলা সবাই খেলা ধুলা হাটা হাটি করে আড্ডাও মারে । আমিও প্রতিদিন আড্ডা দেই । এখান থেকেই মেন্টাল টার সাথে প্রেমের শুরু ঘটে । কিছুক্ষন পরেই দেখি নীরা নেভি
কালার বোরখা পড়ে হাজির ।
- বাবাহ্ ! হঠাৎ ভদ্র হয়ে গেলা নাকি ! (আমি).
- লাথি দিমু একটা ! ভদ্র তো ছিলাম ! খারাপ ছিলাম কবে (নীরা)
- ভদ্র ছিলা কবে সেটাই ভুলে গেছি (আমি)
- দেখ মেজাজ গরম করবি না ! কি ডিসিশন
নিলি সেটা বল (নীরা)
- এখনো কোনো ডিসিশন নেই নাই পরে নিমু (আমি)
- পরে কবে নিবি যেদিন আমার আরেক ছেলের
সাথে বিয়ে হয়ে যাবে সেদিন (নীরা)
- হমম তখন নিলেই ভালো হবে মনে হয় (বিড়বিড় করে) (আমি)
- কি বললি ! (নীরা)
- কিছু না চলো (আমি)
- কোথায় ! (নীরা)
- এক জায়গায় যাবো চলো (আমি)
- কোথায় যাবি সেটা বল (নীরা)
আমি কিছু না বলে নীরা কে টেনে টুনে বাসার
সামনে নিয়ে আসলাম ।
- নীরা এবার রাগী গলায় বলল !
- কার বাড়ি এটা (নীরা)
- কেনো তোমার শশুর বাড়ি (আমি)
নীরা ভুত দেখার মতো চমকে উঠলো ।
- কিহ্ এটা তোদের বাড়ি ! তাহলে এখানে
কেনো নিয়ে এলি (নীরা)
- কেনো আবার ! তোমার শাশুরী মা তোমাকে
দেখতে চাইছে তাই ( আমি)
- কিহ্ ! না না আমি যাবো না আমি বাসায় যাবো (নীরা)
- মারবো একটা ! আম্মু তোরে দেখতে চাইছে
তাই নিয়ে আইছি ! ( আমি)
- এ্যা এ্যা এ্যা না ! না ! কুত্তা তুই আমাকে
আগে বলিস নাই কেন তাহলে আমি প্রস্তুতি
নিয়ে আসতাম !
( যাক বাবা বাচছি জানতাম আগে থেকে বললে ব্যাগ ট্যাগ গুছিয়ে চলে আসতো ) (মনে মনে)
- এত প্রস্তুতি নিতে হবে না চলেন তো ? ( আমি)
ঠেলতে ঠেলতে নীরা কে ভেতরে নিয়ে গেলাম ।
উফ ফ হাপিয়ে গেছি মেয়েটাকে নিয়ে । এত
ঢং করতে জানে বাবা । মন ডায় চায় দেই একটা
লাথি ! কুত্তী একটা !
ভেতরে যেতেই আম্মু নীরাকে দেখে টাসকি
খেলো !
- নীরা তুই (মা )
- আ - আ - আন্টি তুমি (নীরা).
- তোমরা একে অপরকে চিনো ? নাকি (আমি)
গল্প-মধ্যবিত্ত
(শেষ পর্ব ০৩)
-লেখাঃইমরান
- নীরা তুই (মা )
- আ - আ- আন্টী তুমি ( নীরা)
আমি কিছুটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম !
- তোমরা দুজন একে অপরকে চিনো (আমি)
- হ্যা চিনবো না কেনো ও তো তোর আব্বুর
বন্ধুর মেয়ে (মা )
- কিহ্ (আমি)
আমার মনে হলো মাথায় বাশ মারছে কেউ । ভন ভন করতাসে ওইদিকে নীরা চুপসে গেছে ! কিছু
বলছে না । এতদিন কত বক বক করলো ।
এহন বকবকানি গেলো কই কুত্তীর !
আম্মুকে দেখলাম কিছুক্ষন চুপ করে রইলো ।
হয়তো সব কিছু বুজে উঠার চেষ্টা করতাসে ।
কিছুক্ষন পরে আম্মু বলল :
- নীরা - মা এদিকে আয় বস (মা)
সোফায় গিয়ে বসলো ! আমি এক জায়গায় দাড়িয়ে ছিলাম । শুধু ভেবলার মতো তাকিয়ে
ছিলাম তাদের দিকে । কি বলবো কথাই খুজে
পাচ্ছিলাম না । বাপের বন্ধুর মেয়ের সাথে লাইন মারতাছিলাম অথচ জানিই না এটা বাপের বন্ধুর মেয়ে ।
আম্মু নীরার হাতে হাত রেখে বলতে লাগলো !
- হেরে পৃথিবীতে আর কোনো ছেলে পাস নাই
আমার এই বাদরটারেই পছন্দ হলো তোর ! (মা)
(আমি তো অবাক ! মা হয়ে ছেলের প্রেমের বারোটা বাজাচ্ছে )
নীরা আম্মুর দিকে তাকিয়ে হেসে বলল :
- আন্টি তোমার ছেলে তো মর্ডান বাদর ।
তার বাদরামি গুলা অনেক ভালো লাগে । তাই
তোমার বাদরের গলায় ঝুলছি (নীরা)
আম্মু আর নীরা দুজনেই হাসতাছে আমার দিকে
তাকিয়ে আমি রাগে ফুলতাসি কিছু কমুনা ! খালি দেখমু । আমি মর্ডান বাদর তাইনা । পড়ে বুজামু
মর্ডান বাদরের বাদরামী কারে বলে ।
- তা বুজলাম কিন্ত তোর আব্বু যদি না মানে
তখন (মা)
- না মানলে তোমার বাদরকে নিয়ে দূরে
কোথাও পালিয়ে যাবো । তবুও এই বাদর
ছাড়া অন্য কোনো বাদরের গলায় ঝুলমু না (নীরা)
- ধুর পাগল মেয়ে এসব কি বলিস ! তোর
আব্বুর সাথে আমি কথা বলমু । চিন্তা করিস
না । আমার বিশ্বাস তোর আব্বু মেনে নিবে । (মা)
- আচ্ছা না মানলে যেটা বলছি সেটাই করবো
মনে রেখো ! আমার শুধু তোমার বাদরকে চাই (নীরা)
- ওই চুপ লজ্জা সরমের মাথা খাইসোস ।
মায়ের সামনে কেউ এসব বলে (আমি)
- তুই চুপ - মায়ের সামনে বলবো না তো
কার সামনে বলবো । রাস্তার লোকের সামনে (নীরা)
(কি মেয়েরে বাবাহ্ আমার বাড়িতে এসে আমাকেই ধমক দিলো । এটারে বিয়ে করলে জীবন তেজপাতা বানিয়ে দিবো শিওর । )
-আরে তোরা জগরা শুরু করলি কেন থাম তো (মা)
- আন্টি তোমার ছেলেকে কিছু বলবা ! কারনে
অকারনে আমাকে ধমকায় । আর অনেক বকাও
দেয় । সেদিন ও আমাকে কতগুলা বকা দিছে
আমি রাতে কানছি অনেক । (নীরা)
( আল্লাহ্ কত্তবড় মিথ্যাবাদী নিশ্চয়ই এটা আগের
জম্মের পাপের ফল। কি দেখে যে ভালোবাসতে গেলাম । জিবনটা তামা তামা বানায় দিলো । )
- ওই ওই মিথ্যা বলবি না আমি আবার কখন
বকলাম । মিথ্যা বললে আল্লাহ্ ঠাডা ফালাইবো দেহিস (আমি)
- দেখলে আন্টি তোমার ছেলে আমাকে অভিশাপ
দিচ্ছে । যাতে আমি মরে যাই । আর ও বেচে যায় । তুমি কিছু বলছো না কেনো (নীরা)
- থামবি তোরা ! (মা)
আম্মু ধমক দিতেই চুপ মেরে গেলাম । কিছু
বললাম না । কুত্তীটা তখন হাসতাছিলো ।
ইচ্ছে করতাছিলো । জুতা খুলে মুখে মারি । না থাক জুতা ব্যাথা পাবে । আমার জুতার ও দাম আছে ।
- বাবারে বাবা - দুইটা মিলে এখন ই আমার
ঘর মাথায় তুলে ফেলসোস । বিয়ে দিলে কি হবে
আল্লাহ্ ভালো জানে । (মা)
- আন্টি শুধু একবার বিয়ে টা হোক ওর সব
বাদরামী ছুটিয়ে দিবো (নীরা)
- ওই কি বলিস চুপ থাক (আমি).
- তুই চুপ থাক । আমি আন্টিকে বলছি তোরে
বলি নাই নাক গলাবি না চুপচাপ খাড়ায় থাক(নীরা)
- আবার শুরু করলি ! তোরা । আলোক
যা হাত মুখ ধুয়ে আয় খেতে বস । নীরা
মা আয় তুই ও খেয়ে নিবি ( মা )
আমি রাগি চোখে নীরার দিকে তাকিয়ে ছিলাম ।
- আন্টি দেখো তোমার ছেলে আমার দিকে
কিভাবে তাকিয়ে আছে । মনে হচ্ছে চোখ দিয়ে
গিলে খাবে ( নীরা)
আম্মু চোখ গরম করে আমার দিকে তাকিয়ে
ঝাড়ি মারলো । আমি ও দিলাম দৌড় । সোজা
কলের পাড়ে চলে আসলাম ।
এই মেয়েটা আমারে নাস্তানাবোদ করে ছাড়লো।
এত ড্রামা করে কেমনে আল্লাহ্ জানে ।
কিন্ত মাঝে মাঝে ভালোও লাগে । ভালোবাসার
পাগল কাকে বলে তা নীরাকে না দেখলে
বুজতাম ই না ।
নীরা তো প্রায়ই বলে ।
- তুই ছাড়া অন্যকাউকে বিয়ে করবো না
কেনো জানিস !
আমি যখন জিজ্ঞেস করতাম কেনো !
তখন সে আমার হাতে হাত রেখে বলতো
- ভালোবাসলাম তোকে । ফ্যামিলির চাপে যদি
অন্যকাউকে বিয়ে করি । হয়তো ফ্যামিলি
আর আমি খুশিতেই থাকবো । কিন্ত একবার
ভেবে দেখ । চোখের সামনে থেকে ভালোবাসা
হারিয়ে গেলে একটা মানুষ জীবন্ত মরে যায় ।
হয়তো তারা কষ্ট টাকে প্রকাশ করবে না ।
কিন্ত তাদের ফেলা প্রতিটা দীর্ঘশ্বাস জীবনে অভিশাপ হয়ে ফীরে আসবে । হয়তো যে কষ্ট টা .
সে পেয়েছে তার হাজার গুন বেশি কষ্ট পাবে ।
আর আমি চাইনা আমার জন্যে তোর একটা
কষ্টের নিশ্বাস পড়ুক । আমি শুধু তোর ছিলাম তোরই থাকতে চাই । আর কাউকে মেনে নিবো না ।
এসব কথা শুনে মাঝে মাঝে আমি ওকে পাগল
বলে ক্ষেপাই । আর ও মুখ ঘোমরা করে বসে
থাকে । তখন আমার ই রাগ ভাঙাতে হয় ।
যাক সেসব ভেবে আর লাভ নেই । হাত মুখ ধুয়ে
খেতে গেলাম । খাওয়া দাওয়া শেষে নীরা আর
আমি দুজনে আম্মুর থেকে বিদায় নিলাম ।
নীরাকে বাসায় পৌছে দিয়ে আমিও খেলতে
গেলাম মাঠে । সন্ধ্যায় বাসায় ফিরতেই
আম্মুর তাড়া ।
- তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নে (মা)
- কেনো (আমি)
- নীরাদের বাসায় যাবো । নীরা আর
তোর বিয়ের কথা পাকাপাকি করতে (মা)
- কিহ্ সত্যি (আমি) (অবাক হয়ে)
- তা নয় তো কি মিথ্যা । যা তাড়াতাড়ি রেডি হো (মা)
তারপর আর দেড়ি না করে একটা ভালো
হালকা আকাশী কালারের পান্জাবি পড়ে তৈরি
হয়ে নিলাম । আম্মু ও তৈরি হয়ে নিলো ।
অবশেষে আমরা নীরাদের বাড়িতে গেলাম ।
প্রথমেই নীরার আব্বু - আম্মু সালাম দিলাম ।
তারপর বসলাম । নীরার বাবা - মা আম্মুর সাথে
কথা বলছে আমি শুধু মাথা নাড়িয়ে জী , হ্যা হমম করছি । কি করমু শরম করে । প্রথম প্রথম তো ।
কিছুক্ষন পর নীরাকে আনা হলো ।
বাবাহ্ আজকে খুব সুন্দর লাগছে । চুল গুলো মেলে শাড়ি পড়ে । খুব সুন্দর করে সেজেছে ।
মনে হয় আমাকে ক্রাস খাওয়াইতে চায় ।
নীরা আমার দিকে তাকিয়ে হুট করে চোখ মেরে বসলো ।
আল্লাহ্ এটারে একটু সরম দান করো ।
আমি একটু চোখ গরম করে রাগ দেখানির
বৃথা চেষ্টা করলাম ।
হঠাৎ করে নীরার বাবা বললেন -
- জানো বাবা আমি আর আমার স্ত্রী তোমাদের
মতই লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করেছিলাম । আমাদের.সম্পর্কটাও পরিবার থেকে মেনে নেয়নি । কিন্ত তোমার বাবা আমার পাশে দাড়িয়ে ছিলেন। সকল প্রকার সাহায্য করেছিলেন । এমনকি
আমাদের বিয়েটাও পযন্ত তোমার বাবা করিয়ে
দিয়েছিলেন । অনেক কষ্ট করেছিলো তোমার বাবা
আমাদের জন্য জীবনে । মৃত্যুর আগে তাকে
কথা দিয়েছিলাম ! কখনো যদি সুযোগ পাই তাহলে তার এই রিন আমি শোধ করে দিবো । অথচ দেখো আল্লাহর রহমতে আজ সেই দিন হয়তো এসে পড়েছে । আমি যদি জানতাম আমার মেয়ে আমার ই বন্ধুর ছেলেকে ভালোবাসে তাহলে কখনই এই সম্পর্কে অমত করতাম না ।
আজ যখন তোমার মা আমাকে তোমাদের সম্পর্কের কথা বলল । তখন আমি খুব খুশি
হয়েছিলাম । কারন কেনো জানো ।
তোমার মা আমার মেয়েকে নিজের মেয়েই ভাবে ।
আর প্রত্যেকটা বাবাই চায় তার মেয়ে এমন একজনের বাড়ির বউ হয়ে যাক যেখানে তাকে
নিজের মেয়ের মতই দেখা হবে ।
আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের স্বপ্নটা শুধু পরিবারেই মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে । আর আমি
জানি তুমিই পারবে আমার পাগল মেয়েটার
দায়িত্ব নিতে । কারন এতদিন সহ্য করতে পেরোছো হাসিমুখে । ইনশাআল্লাহ্ আগামীতেও
পারবে এটা আমার বিশ্বাস । (নীরার-বাবা)
অবশেষে খুব সাধারন ভাবেই আমার আর নীরার.
বিয়েটা হলো । প্রথম বার বাসর ঘরে যাইতাছি
সবাই দোয়া করবেন । যাতে তার ছিড়া পাগলীটাকে সারাজীবন সামলাতে পারি ।
---সমাপ্ত