গল্প:আত্নার খেলা | রহস্যময় গল্পের লিংক

 রহস্যময় মায়াজাল

রহস্যময় মায়াজাল

আত্নার খেলা...👹

পর্ব: ০১


---বাড়িতে কেউ আছেন?

ডাক শুনে যথারিতী ঘর থেকে বের হলাম। বাইরে দেখি একজন মধ্যবয়স্ক লোক। বয়স ২৫/৩০ হবে। 

---কেন ডাকছেন? কাকে চাই? (আমি)

---এ বাড়িতে হ্নদয় কার নাম? তার সাথে দরকার ছিল।(অচেনা লোক)

---আমি হ্নদয়। আপনি কে? (আমি)     

---আসলে আমার নাম আজিজুল ইসলাম। সকলে রিপন বলেই ডাকে।(অচেনা লোক)

---তা আমাকে ডাকছেন কেন?(আমি)

---একমাত্র আপনি নাকি কাজটা করতে পারবেন। এমন এলাকার লোকে বলল। তাদের কাছ থেকেই আপনার ঠিকানা নেওয়া।(রিপন)

---তা কাজটা কি শুনি?(আমি)

---আমাদের এলাকায় একটা অশরিরীর উপদ্ভব দেখা  দিয়েছে। অনেকে নাকি তার হতে মরেছে। যারা মরেছে তাদের লাশ পাওয়া যায়নি। অনেকেই নাকি পিশাচটাকে দেখেছে। আপনি কিছু একটা করুন। নাহলে আমরা সবাই মারা যাব। আপনি আমাদের বাচান। (রিপন)

---বাচানোর মালিক আল্লাহ। আপনি গ্রামটার নাম বলে যান। আমি দেখছি কি করা যায়। (আমি)

---গ্রামের নাম রামগিরি। (রিপন)

---ঠিক আছে আপনি আসতে পারেন।(আমি)

---দয়াকরে আসবেন।(রিপন)

---ঠিক আছে। আমি যাব।(আমি)

লোকটা চলে গেল। আপনাদের তো আমার পরিচয় দেওয়া হলো না। আমান নাম তো শুনলেন, তারপরেও বলি আমার নাম রাকিবুল ইসলাম হ্নদয়। সকলে হ্নদয় নামেই জানে। একাই থাকি। রিক্সা চালাই। রহস্য ভেদের একটা ইচ্ছা আমাকে গোয়েন্দা করে তুলেছে। সাথে তান্ত্রিক ও। কিন্তু বড় মাপের কিছুই হতে পারি নি। 

আমার গ্রামের নাম রামটেপা। রামগিরি দুই গ্রাম পরেই। 

আমার মনের মধ্যে একটা অজানা আনন্দ কাছ করছে। হয়তো নতুন কোন রহস্য ভেদ করতে পারবো তাই।সারা রাত ব্যাগপত্র গুছাতেই লাগল। অনেক কিছু প্রয়োজন হয় এসব কাজে। আমার সাথে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড আকাশ আর তাকবির আছে। ওরা বড় লোকের ছেলে বটে। কিন্তু কথায় বলে না বন্ধুত্ব সবার সাথেই হতে পারে। গল্পে ফেরা যাক। তিনজনে আমার রিক্সা নিয়ে রওনা দিলাম। রামগিরি গ্রামে পৌছালাম। একটু সন্দেহজনক কিছু নজরে এলো।  তাকিরের কথায় তা নিয়ে মাথা ঘামালাম না। মনযোগ দিয়ে গ্রামটা দেখতে লাগলাম। অপরুপ সুন্দর গ্রামটা। মনে কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু গ্রামের কার মুখে হাসি নেই। সবাই মনমরা। মনে হয় কারো শান্তি নেই মনে। কোথাথেকে রিপন নামের ছেলেটা এসে হাজির হলো বুঝতে পারলাম না। 

---আপনি এসেছেন। তাহলে আর চিন্তা নেই। আপনারা আমার সাথে আসুন। (রিপন)

---ঠিক আছে চলুন। (তাকবির)

---আচ্ছা রিপন বাবু। এখানে সবাই মনমরা হয়ে আছে কেন? (আকাশ)

রিপন কিছুটা থমকে থেকে বলল। 

---আমাদের গ্রামটা অনেক সুন্দর। দাদা মশায়ের হুকুম চলতো এই গ্রামে। একসময় দাদা মশায় মারা গেলেন আর গ্রামে ঝগড়া বিবাদ বেড়ে গেল। মানুষ মানুষকে মারতে লাগে। তখন থেকেই এই অবস্থা। তার ভিতর আবার এই অশরিরী। (রিপন)

---বুঝলাম।(আকাশ)

---আচ্ছা রিপন ঐ লোকগুলো কি করছে। ( কিছু লোক দেখিয়ে বললাম তারা যেন কি কাটছে বা ভাঙ্গছে)

---বলতে পারবনা। তবে তারা প্রতিদিন একই জায়গাই একই কাজ করে।(রিপন)

---কি এমন কাজ করে। তাকবির শোন। (আমি)

---হুম, বল। (তাকবির) 

---(কানে কানে বললাম) ঐ লোক গুলোর উপর নজর রাখবি। তারা কে?  কি করে প্রতিদিন? কোথায় যায়?  আর কোথায় থাকে? বুঝলি। (আমি)

---ঠিক আছে। (তাকবির)

---আচ্ছা রিপন কেউ কি কখনো আত্নাটার দেখা পেয়েছে? (আমি)

---গ্রামে দুজন দাবি করে তারা দেখেছে। কিন্তু দুজনের বর্ননা একটুও মেলে না। এসে গেছি। এটায় আপনাদের ঘর। আমি এখন আসি। একটু পর দাসী এসে খাবার দিয়ে যাবে। (রিপন)

---ধন্যবাদ। (আমি)

রিপন চলে গেল।  আমাদের ঘরটা একটু নির্জন জায়গাই মনে হয়। এক প্রকার সুবিধায় হলো। কাজে কেউ ব্যঘাত ঘটাতে পারবে না। আকাশ আর তাকবিরকে ডেকে কাছে আনলাম।

---তাকবির তোকে যা বলেছি তাই করবি। কালকের মধ্যে আমার সংবাদ চায়। আর আকাশ...।

---থামলি কেন বল। আমি কি করব? (আকাশ)

---তুই এখন যাবি। এ গ্রামের কোথায় কি আছে তার খবর আনবি। সন্দেহজনক কিছু নজরে আসলে আমাকে ফোন করে জানাবি। আর আমি যাব তাদের কাছে যারা আত্নাটাকে দেখেছে বলে দাবি করেছে। আমাকে রহস্য ভেদ করতেই হবে। (আমি)

---ঠিক আছে। যাথারীতি খবর পাবেন। (দুজনে একসাথে)

তারপর তিনজনেই বেরিয়ে পরলাম।  এভাবে একঘন্টা কেটে গেল। যারা আত্নাটা দেখার দাবি করেছে তাদের থেকে আমার কোন লাভ হলো না। দুপুর গরিয়ে গেছে।

তাই আমি বাসায় ফিরে এলাম। আসার পথে খালের পারে কিছু একটা দেখলাম। আমাকে দেখেই দৌড় দিল। কিছু বুঝলাম না। কে সে? যে দৌড় দিল। একটু পর আকাশ ফোন করল।

---কোন খবর পেলি? (আমি)

---তেমন কিছুই পায় নি। তবে কেউ মনে হয় আমাকে ফলো করছিল। (আকাশ)

---জানি, কিন্তু কে হতে পারে। দ্বারা তাকবির কল করছে। কনফারেন্স করি। (আমি)

---হ্নদয়। (তাকবির)

---বল। (আমি)

---আমাকে বাচা। অনেক বড় বিপদে আছি। লোক গুলো মানুষ ছিল না। তারা হারিয়ে যাওয়া লোক গুলির আত্না। তারা এখন এক ভয়ানক আত্নার গোলাম। তাদের পিছু নিয়ে এখানে এসে ফেসে গেছি। পারলে বাচা আমাকে। (ভয়ে ভয়ে বলল তাকবির)


---তুই এখন কোথায়। (আকাশ)

---বলতে পারব না। (তাকবির)

---তুই তারাতারি ওখান থেকে বাইরে আয়। তারপর দেখছি কি করা যায়। (আমি)

---ভাই মাফ করে দিস। এখানে অনেক বড় রহস্য আছে। আমি জানি তুই পারবি। ভালো থাকিস। বিদায় বন্ধু।(করুন কন্ঠে বলল তাকবির)

---কি সব বলছিস পাগল হয়ে গেছিস। (আমি)

---হ্যালো হ্যালো হ্যালো হ্যালো।  (আমি আর আকাশ এক সাথে)

ফোন কেটে গেছে। আমি আকাশ কে তারাতারি আমার কাছে বললাম। আকাশ আর আমি তাকবিরকে খুজতে বের হলাম। এর মাঝে দাসী খাবার নিয়ে এসেছিল।

সন্ধ্যা হয়ে গেছে। কিন্তু তাকবিরকে কোথাও পাওয়া গেল না। অবশেষে ঘরে ফিরে এলাম।

---কাদিস না আকাশ কাদিস না। আত্নাটা যেই হোক ওকে আমি মজা বুঝাবো। (আমি)

---শুধু মজা না। একে আমি মেরেই ফেলবো। আমার বন্ধুকে মেরেছে। ( বলেই কাদতে লাগল আকাশ)

---আমার মনে হয় কি, আত্নাটা ওদের মারছে না। (আমি)


---কি বলতে চাইছিস বুঝলাম না। (আকাশ)

---দেখ যদি আত্নাটা ওদের মারতো তাহলে ওদের দেহটা পাওয়া যেত। আত্নাটা ওদের মারছে না। শুধু ওদের আত্নাটা বের করে ওদের দিয়ে কাজ করাচ্ছে।( আমি)

---তুই কি পাগল হয়ে গেছিস। যদি এদের না মারে তাহলে আত্না কেমনে বের কববে? (আকাশ)

---তোর কথাও ঠিক। কিন্তু ওদের যদি মেরে ফেলত,,,,, (আমি)

---কি হলো থেমে গেলি কেন? (আকাশ)

জানালার দিকে তাকিয়ে।

---চুপ, আস্তে কথা বল। বাইরে কেউ আছে।(আমি)

আকাশ বসা থেকে উঠে দাড়াল।

---(আস্তে আস্তে) কে হতে পারে?  আত্নটা নয় তো? (আকাশ)

আমি দ্রুত গিয়ে জানালার পর্দা সরিয়ে ফেললাম। কিন্তু সেখানে কেউ নেই। আচর্যের বিষয়। কি হচ্ছে এসব। 

---আত্নটা আমাদের আসার কথা আগে থেকেই যানত। ও আমাদের সাথে খেলা করছে। (আমি)

এর মাঝে বিদ্যুৎ চলে গেছে। পুরো ঘর অন্ধকার। কিছু দেখা যাচ্ছে না। বাইরে মেঘ ধরেছে। তার জন্য চাদের আলো ও নেই। এর মাঝে কেউ বলে উঠল।


---সত্যি বলেছিস খেলা,খেলা। হা হা হা। (এক ভয়ানক কন্ঠের হাসি)#ভৌতিক_গল্প_ও_রহস্যময়_কাহিনী

---কে কে ওখানে। (আমি)

---যাসনা ভাই। আত্নাটা খুব ভয়ানক। (আকাশ)

---চুপ কর।  আমাকে দেখতে দে। কে ওখানে? কথা বলছেন না কেন?(আমি)

আবার সেই ভয়ানক কন্ঠ। রড কাটতে যেমন আওয়াজ হয় সেই রকম আওয়াজ।

---ওখানে কাকে খুজিস? আমিতো এখানে রে। (ভয়নক কন্ঠ) 

পিছনে ঘুরেই আমি আর আকাশ হতভাগ। ফোনের আলোয় যতটুক দেখা যাচ্ছে তাতে বোঝা যাচ্ছে এই টা রিপন। ভয়ানক চেহারা করে আছে। চোখ দুটো বড় বড়, কিছু দাত মুখ ভেদ করে বেরিয়ে আছে, মাথার এক অংশে কিছুই নেই। পোকা মজকটাকে খাচ্ছে।

তা দেখে আকাশ প্রায় জ্ঞান হাড়িয়ে ফেলেছে।

---কে আপনি? আমাদের কাছে আর গ্রামের লোকের কাছে কি চায়? কেন করছেন এইসব।(আমি)

---কি ভেবেছিস? আমি শুধু গ্রামকে গ্রাস করব? না, রে,

ভুল ভাবছিস। (রিপন) 

---তাহলে কি চায় আপনার? কেন এসেছেন?.(আমি)

---আমি এই পুরো দুনিয়ার দখল চায়। তার জন্য তোর আত্নার দরকার আমার। কিন্তু এখন নয়। তোর সময় আসার দেরি আছে। প্রস্তুত থাকিস। হা হা হা,,,,,,(রিপন)

---আমরা কি করেছি? কে আপনি? (আমি)

---......

---কি হলো কিছু বলছেন না কেন?(আমি)

এমন সময় বিদ্যুৎ চলে এলো। বুঝতে পারলাম আত্নাটা চলে গেছে। পিছন ফিরে দেখি আকাশ মেঝেতে পড়ে আছে। তার গালে আঘাতের চিহ্ন। বুঝতে বাকি রইলনা আত্নাটা আকাশ কে আঘাত করেছে। আকাশকে তুলে খাটে শুইয়ে দিলাম। এমন সময় দরজায় কে যেন টোকা কাটছে। 

---কে? দরজার পাশে কে?(আমি)

---আমি রিপন। আপনাদের খাবার নিয়ে এসেছি। (রিপন)

এবার ভয়ের মাত্রা কিছুটা রেড়ে গেল। ভয়ে ভয়ে দরজা খুললাম। (((ভাববেন না যে গোয়েন্দা আর তান্ত্রিক বলে ভয় পায় না। আমি বস্তবে অনেক সাহসি। গল্পে মাঝামাঝি)))

---আপনাদের খাবার। খেয়ে নিন। আর হে অশরিরীর ব্যাপারে কোন খবর পেলেন?(রিপন)

---না,তেমন কিছু পায় নি। (আমি)

---আচ্ছা, খবর পেলে জানাবেন। আমি এখন আসি। খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন। বেশি রাত জাগা ভালো না।(রিপন)

---ঠিক আছে। আপনি যান। (আমি)

---ঠিক আছে। (রিপন)#Kalponik_F__ 😊

রিপন চলে গেল। আমি দরজা লাগিয়ে দিলাম। দিকে আকাশের জ্ঞান ফিরেছে। আচর্যের বিষয় হলো এখন ওর গালে কাটা চিহ্ন নেই। ঐ ব্যাপারে কিছু না বলে। খাবার খেতে দিয়ে ওয়াস রুমে চলে গেলাম। 

সাওয়ার চালু করে ভাবতে লাগলাম। কে হতে পারে আত্নাটা? কেন সে এসব করছে? কি লাভ তাতে?

লোকদের কেন বশ করছে?

এরকম হাজারো প্রশ্ন মনের ভিতর আসতে লাগল। হঠাৎ তাকবিরের কথা মনে পরায় চোখের কোন থেকে পানি পড়তে লাগল। মনটা খারাব হয়ে গেল। মনের মধ্যে একধরনের জিদ জন্ম নিতে শুরু করল। আত্নটাকে একটা মজা দেখাতে হবে। 

 তাকে বুঝাতে হবে দুনিয়া দখল করা সহজ না। 

---কি রে কি হলো?  দরজা খোল। ১১ টা বেজে গেছে ২ ঘন্টা ধরে কি করিস। আমার খুব ভয় করছে। হ্নদয়, হ্নদয়। (আকাশ)

---হ্যা, আসছি। পাচ মিনিট। (আমি)

জামা কাপড় বদলে ওয়াস রুম থেকে বেড়িয়ে এলাম।

খাওয়া দাওয়া সস্পর্ন করে শুয়ে পড়লাম।

শুয়ে শুয়ে হাজার রকমের ভাবনা মাথায় আসছে। কিছুতেই ঘুমাতে পারছি না। তাকবিরের চেহারা চোখের সামনে বাসছে। আবার চোখের কোণ থেকে পানি পড়তে লাগল।। ৩:৫০ বাজে।  চোখটা লেগে এসেছে। একটু খানি ঘুম দিলাম। ৪:২০ এ উঠে নামাজ পড়তে হবে। না ঘুমালে নামাজ পড়তে পারবো না। তাই এলার্ম দিয়ে রাখলাম। ৪:২০ এ এলার্ম এর শব্দে ঘুম ভাঙ্গে। উঠে ওজু দিয়ে এসে নামাজ পরে নিলাম। বাইরে খুব বৃষ্টি হচ্ছে তাই মসজিদে যেতে পারিনি। আকাশ কে ডাক দিলাম কোন সাড়া নেই। তাই আবার ডাক দিলাম। না এবার ও সাড়া নেই। এমন সময় পুরো ঘর রাতের মতো অন্ধকার হয়ে গেল। আবার সেই ভয়ানক কন্ঠ।

---হা হা হা। কি হলো?  ভয় পেয়ে গেলি? (ভয়ানক কন্ঠ)

---কে আপনি? আমার বন্ধু কোথায়? না হলে কিন্তু খারাব হয়ে যাবে।(আমি)

---আমাকে ভয় দেখাচ্ছিস। তোর বন্ধুদের মেরে ফেলেছি। যা পারিস করে দেখা। তোকে ৩ দিন সময় দিলাম। এই তিনদিনের ভিতর আমি গ্রাম থেকে আরও ৫ জনকে নিয়ে যাব পারলে তাদের বাচা। হা হা হা।(ভয়ানক কন্ঠ)


এবার কাউকে দেখা যায়নি। শুধু আওয়াজ শোনা গেল। তারপর পুরো ঘর স্বভাবিক হয়ে গেল। আলো চলে এসেছে। আমি মেঝেতে হাটু পেড়ে কান্না করতে লাগলাম। একটু পর নিজেকে স্বভাবিক করে নিলাম আর মনে মনে ভাবতে লাগলাম,, এটা শুধু আমার একার লড়াই। এ লড়ায়ে আমাকে জিততে হবে। হাড়লে চলবে না। একে আমি বন্ধি করব। একে মজা দেখাব।


আত্নার খেলা...👹

পর্ব: ০২


একটু পর নিজেকে স্বভাবিক করে নিলাম আর মনে মনে ভাবতে লাগলাম,, এটা শুধু আমার একার লড়াই। এ লড়ায়ে আমাকে জিততে হবে। হাড়লে চলবে না। একে আমি বন্ধি করব। একে মজা দেখাব। ছাড়বো না ওকে। তাই মনে মনে জিদ নিয়ে আত্নাটার খবর নিতে বের হলাম। কোথাও তেমন প্রমান পেলাম না। একেক জন একেক কথা বলে। হঠাৎ করে পিছনে ঝোপের আড়ালে কি যেন নড়ে উঠল। একটু পর দেখি রিপন ওখান থেকে বের হচ্ছে। আমাকে অন্য মনস্ক করতে সে আমাকে উল্টা পাল্টা প্রশ্ন করতে লাগল। আমি বুঝতে পারলাম আমাদের এখানে ইচ্ছাকৃত ভাবেই আনা হয়েছে। আমি রিপনকে আমার কাছ থেকে চলে যেতে বললাম। সে কথা না বাড়িয়ে চলে গেল। তার উপর নজর রাখার জন্য একটা ছোট জাদু করলাম। এবার আর চিন্তা নেই। আমি আবার প্রমান খোজার কাজে লাগলাম। কারো কাছে কোন প্রশ্নের সঠিক উত্তর পেলাম না। হতাশ হয়ে ফেরার পথে এক পাগলকে দেখতে পেলাম। মনে হয় সে নিশাচর। রাতে এখানে ওখানে ঘুড়ে বেড়ায়। তাই তাকে জিগ্গাস করলাম। 

---চাচা, আপনি আমার কিছু কাথার জবাব দিতে পারবেন? (আমি)

---হ, পারমু কি কইবা, কও। (পাগল(

---চাচা আপনি হয়ত জানেন যে গ্রামে,,,(আমি)

আমাকে আটকে দিয়ে বলল

---ঐ আত্নার কতা কইতাছাও না। ওরে তো প্রতিদিন এই বট গাছের নিচেই দেহি। কিছু সৈন্য-পৈন্য নিয়া বইসা থাহে। হেদিন কা কি হয়ছে শুনবা? (পাগল)

--হে বলুল আমি শুনব। (আমি)

---হোন তালি। হে দিন রাতে আমি ঐ গেরাম থাইকা এম্মিক আসতেছিলাম। তহন দেহি ঐ আত্ন গোরে পিছনে একজন মানুষ আছিল। তাগোর সঙ্গে লোক টা গেল। আমি আবার ওগোর পিছনে যায়। ওরা কি যেন খুজতাছিল। একটু পর ওরা লোকটাকে নিয়ে,,,,,,,,,,(পাগল)

---কি হলো চাচা বলুন,(আমি)

পাগলটার শরিরে হাত পরার সাথে সাথে আমি আতকে উঠি। সে মারা গেছে। তখন মন আবার খারাব হয়ে গেল। বড় একটা প্রমান ছিল সেও মারা গেল। 


দুপুর গড়িয়ে এলো। তাই বাসায় গেলাম। রুমে গিয়ে একটা চিরকুট। তাতে লেখা,

---কোন লাভ হবে না। প্রমান পাবি না। আজ একজন যাবে আমার সাথে। আর তুই শুধু শুধু বেচারা পাগলটার জীবন নিয়ে নিলি। তাই তোকেও আজ রাতে শাস্তি পেতে হবে। অপেক্ষায় থাকিস। আজকে রাতে একজন কিন্তু যাবে আমার সাথে। আাবার বলছি। পারলে বাচা তাকে। ----

চিরকুট পড়ে মাথা খারাব হয়ে গেল। কাকে নেব সে? রাগে বশে চিরকুট ছিড়ে টুকরা টুকরা করে ফেলে দিলাম। তার পর গোসল করতে গেলাম। ২.১২ মিনিটে গোসলখানা থেকে বের হলাম। বের হয়ে দেখি আমার টুকরো করা কাগজ গুলো মাটিতে নেই। খাটের উপর আর একটা চিরকুট। তাতে লেখা:-

---রাগ দেখিয়ে লাবব নেই। আমাকে আটকাতে পারবি না। ৩ দিন সময় অাছে তোর কাছে। যা খুশি কর। আমি আমার কাজ সঠিক ভাবে করব। হা হা হা হা।------

ভাবতে লাগলাম কে এসেছিল? কি করে এসেছিল?

কিছুই বুঝতেছিনা। তাই বাইরে গেলাম দরজা লাগিয়েছি কিনা দেখতে। না দরজা তো ভিতর থেকেই লাগানো। আর কিছু না ভেবে খাবার খেতে গেলাম। খাবার খাওয়াতে মন বসছে না। কাল পর্যন্ত তিন বন্ধু একসাথে খাবার খেয়েছি। সৃতি গুলো মনে পড়তেই চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগল। এবার একটা কিছু করতেই হবে। শার্ট পড়ে বেরিয়ে পরলাম। গ্রামের কিছু বাড়িতে দাগ কাটলাম। যেন আত্নাটা না আসতে পারে। 

সন্ধ্যার দিকে বাসায় আসলাম। অনেক দুর পর্যন্ত গুড়েছি তাই শরির ক্লান্ত। একটু বিশ্রাম নেব ভাবসি। তখনি বিদ্যুৎ চলে গেল। মোবাইলের লাইট জালানোর সাথে সাথে সামনে একটা বিভস্ব চেহারা দেখে পিছন দিকে পড়ে গেলাম। চোখ দুটো নেই,মাথাটা হাতের উপর, ৩,৪ ইন্চি লম্বা নখ,গাল দুটো বিভস্ব ভাবে কাটা। আমাকে বলতে লাগল।


---ভয় পেয়ে গেলি নাকি। আমিতো ভেবেছিলাম। তুই খুব সাহসি। কিন্তু তুইতো খুবই ভিতু। হা হা হা। (আত্না)

কি ভয়ানাক কন্ঠ। লোহাতে লোহা ঘসলে যেমন শব্দ হয় ঠিক যেন তেমন কন্ঠ। আবার বলতে লাগল।

---কি ভেবেছিস আমি কিছু করতে পারবো না। তুই মন্ত্র পড়লি আর আমি চলে যাব। ভুল ভেবেছিলি। আর বলেছিলাম তোকে আজ শাস্তি দেব। প্রস্তুত হয়ে যা। বলার সাথে সাথে নিজেকে মেঝেতে পরা আবিষ্কার করলাম। এদিকে বিদ্যুৎ চলে এসেছে। কতক্ষণ পড়েছিলাম জানি না। 


ঘড়িতে দেখি ১১.৪২ বাজে। হঠাৎ দরজায় টোকার শব্দে একটু বিভ্রত হলাম। কে হতে পারে এত রাতে। দেখতে গেলাম। দরজা খুলে দেখি আমার দুইজন বন্ধু দাড়িয়ে আছে। মাহবুব আর সুজন। আমি ওদের এখানে আসার কারন জানতে চাই। ওরা কিছু না বলে ভিতরে চলে আসে। 

---কিরে তোদের আসার কারন জানতে পারি? (আমি)

ওরা একটু আচর্য হয়ে।

---মজা করিস না। অনেক রাত হয়ছে। কিছু থাকলে খেতে দে। (সুজন)

---মজা, আমি মজা করব কেন? তোদের কে আসতে বলছে তাই বল। (আমি)

---দেখ একদমই মজা করবি না। আরে তুই তো ফোন করে আসতে বললি। (মাহবুব)

---কি? আমি। ও মাই গড। তোরা চলে যা। তোরা থাকিস না।(আমি)

---তুই কি পাগল হলি নাকি। আসা মাত্ররই যেতে বলছিস।(সুজন)

---তোরা বুঝবি না। তোরা যা। তোদের জীবনের ঝুকি নিস না। যা তোরা (আমি)

---কি হয়েছে আগে তাই বল। (মাহবুব)

---আকাশ আর তাকবির হয়ত মারা গেছে। এক আত্না ওদের নিয়ে গেছে। তাই তোরা চলে যা। আমি চায় না তোদের কিছু হোক। (আমি)

এমন সময় নজর পরল মাহবুবের হাতের উপর। কোন কিছু দিয়ে হয়ত কেটে গেছে।।

---এই মাহবুব তোর হতে কাটল কি করে? (আমি)

---ও এইটা ঐ ভাঙ্গা টিলার কাছে যে একটা পুরানো বট গাছ আছে ঐ গাছের ডাল পরেছিল। তখন কেটে গেছে। (মাহবুব)

---তোরা চল আমার সাথে। (আমি)

---কোথায়? (দুজন একসাথে)

---ভাঙ্গা টিলার কাছে। না হলে মাহবুব মারা যাবে। (আমি)


এমন সময় কে যেন আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল। ধাক্কাটা খুব জোরালো ছিল। আমি পায়ে ব্যাথা পেলাম। ওদের বলালাম "শোন আমি তোদের সাথে যেকে পারব না। আমি তোদের তাবিজ দিচ্ছি আর তোদের শরীর বন্ধ করে দিচ্ছি। আত্নাটা তেদের কিছু করতে পারবে না। শুধু ওখানে কি হয় তা খবর নিয়ে আসবি। তোদের এটা করতেই হবে। "


এমন সময় রিপন ঘরে প্রবেশ করে। তাকে দেখে আমি চমকে যাই। তাকে খুব ক্লান্ত মনে হচ্ছে। 

---হ্নদয় ভাই তারাতারি চলুন। আপনার দুই বন্ধু ওখানে কি যেন করছে। মনে হয় কাউকে মারছে। তারাতারি চলুন। (রিপন)

রিপনকে একটু হালকা মনে হচ্ছিল। 

---আমি যেতে পারবো না। উনারা দুজন তোমার সাথে যাবেন। আর তোদের যা বলেছি ঠিকঠাক করবি। মনে থাকে যেন। এখন তারাতারি যা। (আমি)


ওরা চলে যায়। এদিকে আমি মন্ত্র পড়তে থাকি। যাতে ওদের উপর নজর রাখতে পারি। প্রায় ১ ঘন্টা পর ওরা তিনজন ফিরে এলো।


---কি হলো. কোন খবর পেলি। আকাশ আর তাকবির তো ওখানে ছিল। (আমি)

আমার কথা শোনার পর রিপন কেদে দিল। এমন ভাবে কাদছে যেন ওর বাবা মরা গেছে। ওর কান্না দেখে সুজন আর মাহবুব ও কান্না করতে লাগল। 

---আরে কিছু বলবি তো। কি হয়েছে?( আমি)

---রিপন মারা গেছে। আকাশ আর তাকবির মেরেছে। ওরা আমাদের উপর হামলা করেছিল। কিন্তু আমার মননে হলো ওরা ওদের মধ্যে নেই। ওরা কারও বশে আছে। কেউ ওদের কন্টোল করছে। (মাহবুব)


বুঝতে বাকি রইলনা যে ওরা ঠিক কি করেছে আকাশ আর তাকবিরের সাথে। 

এমন সময় বিদ্যুৎ চলে যায়। আমি তারাতারি সবাইকে আমার পিছনে আসার জন্য বললাম। ওরা দুজন আমার হাত ধরেছে আর রিপন আমাদের পিছনে দাড়িয়ে আছে। 

আমাদের সামনে অনেক গুলো আত্না। তার এক কনে দাড়িয়ে আছে আকাশ আর তাকবির। সব আত্নার আকার গঠন ভিন্ন। কারো হাত নেই,কারো মাথা নেই, কারো মুখ ব্লেড দিয়ে কাটা, কারো শরীরের থেকে পা বড় তো কারো পা নেই। সাবার মাঝ ৭ টি আত্না কিছুটা স্বাভাবিক। ৫ জনকে চিনতে পারলাম না কিন্তু বাকি দুইটা আমার বন্ধু। তাদের মাঝে একজন বলল,

---তোর হাতে আর দুদিন সময় আছে। পারলে আমাকে আটকা। দুদিন পর হবে তোর শেষ দিন। 

রিপন আমার কাছে চলে আয়। (আত্নাটা)


রিপনকে বলার সাথে সাথে রিপন এক আলাদা রূপ ধারন করে। যা খুবই ভয়ংকর। রিপনকে দেখে সুজন আর মাহবুব আমাকে অন্য দিকে টান দেয়। আমি এমনিতেই ঠিক ভাবে দাড়াতে পারছি না। তার উপর আবার এক আঘাত। 

রিপন আমাদের দিকে চোখ বড় করে তাকায়। সুজন আর মাহবুব ভয় পায়। আমি কোন রকমে উঠে দাড়ালাম। তারপর বলতে লাগলাম

---তোর বিনাশ একমাত্র আমার হাতে। তোকে আমি একবারে মুছে ফেলব এই দুনিয়া থেকে। (রেগে গিয়ে বললাম)

আমি যেই মন্ত্র পড়তে যাব ওমনি বিদ্যুৎ চলে আসে। আত্নারা চলে গেছে। ঘড়িতে তখন ২:০৫ বাজে। সারা রাত তিনজনের একজনের চোখেও ঘুম নেই। ওরা দুজন রেগে গিয়ে আমাকে বলতে লাগল:-


---তুই আমাদের এভাবে ফাসাবি জানতাম না। কেন তুই আমাদের ফোন কররে আসতে বললি?(মাহবুব)

---এসব আত্নাটার খেলা। আমি তোদের আসতে বলি নি। এসব ঐ আত্নাটা করেছে। ঐ তোদের আসতে বলেছে। দুদিন রিপনের বেশ ধরে এসেছিল। আজ ও রিপন সেজে এসেছিল। আমাকে এখানে রিপনের বেশেই গিয়ে ডেকে এনেছে। এসব আত্নাটার চাল। আমাদের ও মারতে চাই। পুরো দুনিয়ায় রাজ করতে চাই। আমি বেচে থাকলে সে তা পারবে না। আমাকে আগামি পরশু পূর্নিমার রাতে হত্যা করতে চাই যাতে ওর শক্তি বেড়ে যায়। আমাকে এ লড়াই জিততেই হবে। এখন তোরা যদি আমার পাশে থাকতে চাস তো থাক না হলে সকালে ট্রেন ধরে সোজা ঢাকা চলে যা। এখানে তাকলে তোদেরও ছাড়বে না। (আমি)

---তুই চিন্তা করিস না। এ লড়াইয়ে আমরা তোর সাথে আছি। কি করতে হবে তাই বল? (সুজন)

---হে দোস্ত, পৃথিবী কে বাচাতে আমরা তোর সাথে আছি। কি করতে হবে?(মাহবুব)

---আমিতো হাটতে পারবো না। কাল সকালে আমার গ্রামে যাবি। আমার রিক্সা নিয়ে। আমার গ্রামে গিয়ে রিয়াজ চাচাকে বলবি হ্নদয় পাঠিয়েছে। আর বলবি ৩০৬৩। সে তোদের একটা ব্যাগ দিবে তা খুলে দেখবি না। দুপুরের আগে আমার কাছে নিয়ে আসবি। কোন ভুল যেন না হয়। (আমি)


ফজরের আযান দিচ্ছে চারদিকে। আমরা তিনজন অজু দিয়ে নামাজ পড়ে নিলাম। ভোরেই ওদের দুজন কে পাঠিয়ে দিলাম।,,,,,,,


আত্নার খেলা...👹

পর্ব: ০৩ ও শেষ 


ফজরের আযান হচ্ছে চরদিকে। আমরা অজু করে নামাজ পড়ে নিলাম। ওদের দুজনের কাছে কিছু জিনিস দিয়ে পাঠিয়ে দিলাম। আমার মন বলছে রাস্তায় ওদের জন্য বিপদ অপেক্ষা করছে। তাই ওদের তাবিজ পড়িয়ে দিলাম। ওরা গ্রামে আসার পথে একটা ডাল ভেঙ্গে পড়ে রাস্তার মাঝখানে। ওরা বুঝতে পারে আমার কথা মতো বিপদ শুরু হয়ে গেছে। ওরা এসব পরোয়া না করে গ্রামে পৌছায়। গ্রামে ভিতরে এসে ওদের নিজেদের একটু হালকা মনে হয়। কারন গ্রামটা বন্ধ করা। আর গ্রামে রিয়াজ চাচা থাকে। সেই গ্রামের একমাত্র ভরসা। আমি তার একজন শিষ্য। ওরা দুজন পুরো গ্রামে কোথাও রিয়াজ চাচাকে পায় না। ওরা কাউকে জিগ্যেস করলে শুধু তার বাড়ির দিকে যেতে বলে। মন মেজাজ খারাব হয়ে যায় ওদের দুজনের। তাই আমাকে ফোন করে। 


---হুম বল? পেলি চাচাকে? (আমি)

---না, গ্রামের কেউ চাচাকে দেখেনি আজ। কোথায় গেছে কেউ বলতে পারছে না। (সুজন)মহ

---আজ পূর্নিমার রাতের আগের দিন। তাই কেউ তার খবর জানে না। (আমি)

---তো এখন কি করবো। ১০ টা বেজে গেছে। আর মাত্র তিন ঘণ্টা। (সুজন)

---তোরা গ্রামের পাশের বড় কবরস্থানে যা। সেখানে প্রবেশের পূর্বে নিজেদেরকে প্রবিত্র করে নিবি। না হলে মারা পরবি। আর চাচার কাছে কোন কথা না বলে শুধু বলবি ও পাঠিয়েছে। বুঝলি? (আমি)

---ঠিক আছে। (সুজন)

---আর শোন চাচাকে কিন্তু তোরা দেখতে পাবি না। তোরা কবরস্থানের শেষ কবরটাতে শুধু তিনটে টোকা মারবি। তারপর যা বলেছি তা বলবি। মনে থাকবে তো। আর কবরস্থানে প্রবেশের পর ব্যাগ না পাওয়া পর্যন্ত পিছে দেখবি না। (আমি)

---ঠিক আছে। (সুজন)


আর কথা না বাড়িয়ে ফোন কেটে দিলাম। ওরা কথা মতো নিজেদের অজুর দ্বারা প্রবিত্র করে নিল। তার পর কবরস্থানে প্রবেশ করল। কবরস্থানে পা রাখার সাথে সাথে পুরো কবরস্থানে অন্ধকার নেমে আসল। ওরা সামনে এগোতে থাকে। ওদের পিছনে যেন জড় শুরু হয়ে গেছে। আর আজব আজব শব্দ আসছে। কৌতুহল জাগছে দেখের জন্য। কিন্তু আমার কথামতো ওরা পিছনে দেখছে না। অবশেষে ওরা কবরস্থানের শেষ প্রান্তের কবরটার কাছে পৌছায়। কবরটাতে প্রথম টোকা দেওয়ার সাথে সাথে জোড়ালো বাতাসের কারনে পিছন দিকে পড়ে যায়। আবার উঠে এসে দ্বিতীয় টোকা দেওয়ার সময় ভয় ভয় করছিল ওদের। সুজন সাহস করে দ্বিতীয় টোকা দেয়। সাথে সাথে মাটি কাপতে শুরু করে। সুজন তাই তাড়াতাড়ি তৃতীয় টোকা দেয়। সব আবার শান্ত হয়ে যায়। এবার কবরের ভিতর থেকে আওয়াজ আসে "কে তোরা?"। আসলে আওয়াজটা কবরের ভিতর থেকে না, কবরের উপর থেকে আসছিল। 

ওরা উত্তর দেয় ''''"ও পাঠিয়েছে''""'। এবার ওরা দুজন চাচাকে দেখতে পাচ্ছে। চাচা ওদের সাথে নিয়ে কবরস্থান থেকে বেড়িয়ে যায়। কবরস্থান থেকে বাহিরে আসার পর চাচা ওদের বলে।


---ও কেমন আছে? (চাচা)

---জী, ভালো আছে। (মাহবুব)

---ও যেন ওদের নিয়ে তবেই আসে। আর ওকে বলো খেলাই জিততেই হবে। (চাচা)

---ঠিক আছে। (সুজন)


তারপর চাচা ওদের ব্যাগটা বের করে দেয় আর বলে "" এ গ্রাম পেরোনোর পর খুব সাবধান থেক"'

কথাটা বলেই চাচা উধাও। তার কোন হদিস নেই। ঘড়িতে দেখে ১২ বেজে গেছে। আর মাত্র এক ঘন্টা বাকি। এক ঘন্টার মধ্যে তাদের পৌছাতে হবে। রাস্তায় আরও কত যে বিপদ পার হতে হবে। তাই তারা সময় নষ্ট না করে বেড়িয়ে পরে। মাঝ রাস্তায় রিক্সা খারাব হয়ে যায়। তারা রিক্সা রেখেই হাটা শুরু করে। ঘড়িতে দেখে ১২ :১৮ বাজে। তাই তারা আরও দূত চলা শুরু করে। এর মাঝে আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যায়। চারদিক অন্ধকার হয়ে আসছে। পথঘাট কালো হয়ে গেছে। ওরা সাহস নিয়ে এগতে থাকে। ওদের পিছন থেকে হ্নদয় ডাকছে। 

মাহবুব পিছনে তাকাতে চাইলে সুজন না করে। আর বলে '''এটা একটা ফাত। আত্নাটার একটা খেলার অংশ। তাই পিছনে তাকানো যাবে না।"""।


এবার সুজনের কথা মতো সামনে এগোতে থাকে মাহবুব।

আর আমি ওদের বিপদ বুঝতে পেরে আসতে আসতে বাড়িটা থেকে বেড়িয়ে ওদের দিকে এগতে থাকি। তখন ঘড়িতে ১২: ৪৫ বাজে। আমার দু মিনিট হাটার পর দেখি ওরা বস্তাটা কাধে করে দৌড়ে আসছে। ওরা আমার কাছে আসতেই ওদের ঘরে ভেতর যেতে বললাম। আমি ধিরে ধিরে ঘরের দিকে আসতে শুরু করলাম।প্রায় ৫ মিনিট পর ঘরে প্রবেশ করলাম। ওদের হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে সুরক্ষিত জায়গাই রাখলাম। আর ওদের গোসল করে আসতে বললাম। ওরা গোসল করে এল। আমি বাড়িটাকে বন্ধ করলাম। দুপুর ২:৩০ মিনিটে প্রস্তুতি নিলাম লড়াই জেতার জন্য। আজ রাত হবে আত্নাটার শেষ রাত। তাকে আজ উচিৎ শিক্ষা দিব। 

ব্যাগটা কাদে নিলাম। ওরা আমার সাথে যেতে চাইল।


---আমরা তোর সাথে যাব। (সুজন)

---এটা আমার একার লড়াই। আমি একাই লড়তে চাই। (আমি)

---আকাশ আর তাকবির আমাদেরও বন্ধু ছিল। আমারও লড়াই করবো। (মাহবুব)

---দাড়া, দাড়া। আকাশ তার তাকবিরের কথা চাচা বলেছিল। (সুজন)#ভৌতিক_গল্প_ও_রহস্যময়_কাহিনী

---আরে হ্যা। আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম। (মাহবুব)

---কি বলেছিল, বলত? (আমি)


---চাচা বলেছিল, আকাশ আর তাকবিরকে নিয়ে যেন তুই গ্রামে ফিরিস। (সুজন)

---আরও বলেছিল তুই যেন খেলা জিতে তবেই গ্রামে যাস। (মাহবুব)

---চাচা যখন বলেছে তাহলে আমাকে তো জিততেই হবে। তোরা এখানেই থাক। (আমি)

---মাহবুব এখানে থাকবে আমি তোর সাথে যাব। তুই বললেও যাব না বললেও যাব। (সুজন)


সুজনের জিদের কাছে হার মানলাম। আমরা দুজন যাব। এর মধ্যে ৫ টা বেজে গেছে। সুজন আমার সাথে যাবে তাই ওকে আগে সুরক্ষিত রাখতে হবে।

---শোন সুজন, তুই কখনো আত্নাদের চোখের দিকে তাকাবি না। তাকালে তুই ওদের বসে চলে যাবি। আর ভুলেও জ্ঞান হারাবি না। জ্ঞান হারালে তুই কিন্তু মারা যাবি। তাই আবার বলছি তুই আমার সাথে যাস না। (আমি)

---যা হয় হোক। তবুও যাব। তোর শরীর ভাল না। আমি তোর সাথে যাবোই। (সুজন)

---ঠিক আছে। তবে চল। (আমি)

---al the best.(মাহবুব)


তারপর চলে আসলাম সেই টিলার কাছে। যেখানে মাহবুবের হাত কেটে ছিল। 


---একটা কথা জানার ছিল।(সুজন)

---কি কথা?(আমি)

---বস্তাটার ভিতরে কি এমন আছে যার জন্য আত্নাটা ভয় করবে? (সুজন)

---এর ভিতরে কিছু তন্ত্র বিদ্যার দ্রব আছে। আর কিছু শক্তিধর আত্না আছে। যাদের কাল চাচা মুক্তি দিত। আমি তাদের আজ মুক্তি দিব। তাদের দিয়ে আমার কাজ করাব। {মাথা উঠিয়ে } কি রে এমন কেন করছিস?

---কারন ও এখন আমার কবলে। (ভয়ংকর এক কন্ঠ)

এমন কথায় আমি আচর্য হয়ে যায়। তখন চারদিকে তাকিয়ে দেখি অনেক গুলো আত্না। আমি মন্ত্র পড়া শুরু করলাম। তার পর বন্ধি আত্নাদের মুক্তি দেওয়ার পালা। এমন সময় কে যেন আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল। আমি উঠে দেখি আকাশ। আমি দৌড়ে গিয়ে ওর চোখ বেধে দিলাম। আকাশ পড়ে গেলো মাটিতে। কারন যতক্ষণ চোখ খোলা থাকবে ততক্ষণ সে আত্নাটার বশে থাকবে। আমি আবার মন্ত্র পড়া শুরু করলাম। এবার তাকবির আমাকে মারতে শুরু করল সাথে সুজন ও। আমি অনেক কষ্টে উঠে দাড়ালাম।

বন্ধি আত্নাগুলো মুক্তির জন্য আমার অপেক্ষা করছে। আমি দৌড়ে গিয়ে বস্তাটা ছিটকে ফেলে দিলাম। আত্নাগুলো মুক্তি পেলো। আত্নাগুলো লড়ছে। খারাব আত্নাদের কাছে আমার পাঠানো আত্নাগুলো হেরে গেল। আর কিছু আত্না ভয়ে পালিয়ে গেল।

---এবার কি করবি। কই যাবি তুই।(আত্না)

---তোকে না শেষ করে কথাও যাব না। (আমি)

---তোর তো সাহস খুব বেড়েছে। তোকে তো এইবার মরতেই হবে। কিন্তু আজ না কাল। (আত্না)


বলেই একটা ওট্ট হাসি দিতে লাগল। আমি এই সুজকে তাকবিরের চোখ বেধে দিলাম। সাথে সুজন এর ও। আমি একটা মন্ত্র পরে ফু দিলাম একটা লাঠিতে। তারপর আবার লড়তে শুরু করলাম। আকাশ মাটিতে পরে আছে। তাকবির আর সুজন আমার দিকে আচ্ছে। আমি মন্ত্র পড়ে ওদের বন্ধি করে রাখলাম। আর আত্নাটা এই সুজকে আমাকে আঘাত করে বসে। 

তারপর আমি মনে মনে ভাবলাম আমি বোধ হয় হেরে গেলাম। এই রাতের পর আমি আর দিন পাব না। এখানেই আমার মৃত্যু। 

এমন সময় আত্নাটা চিৎকার করতে লাগল। আমার চোখ বেয়ে পানি পরছে। হঠাৎ আত্নাটা বলতে লাগল আমি আবার আসবো। তদের দুজনকে আমি দেখে নেব। 

কি হচ্ছে এসব? আমি কষ্ট করে মাথা উঠিয়ে দেখি রিয়াজ চাচা। ভাবলাম উনি এখানে কি করে?

আজ উনি আমার জীবন বাঁচিয়েছেন।

চাচা বলতে লাগল

---বেচে আছ তাহলে। (চাচা)

---একটুর জন্য। আত্নাটা কি চলে গেছে?(আমি)

---হ্যা, তবে কিছু দিনের জন্য। সে আবার আসবে। তুমি তাকে মারবে। আকাশ আর তাকবির কোথায়? (চাচা)

---ওখানে আছে। আমি ওদের দন্ধি করে রেখেছি। (আমি)

----চল। ওদের আগে বাচাই। (চাচা)


.......সমাপ্ত........


লেখক: R H Hridoy


সব ধরনের গল্প পড়ুন আমাদের ওয়েব সাইটে।


রহস্যময়-ঘটনা পুড়ুন।