স্বামী স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক
বৃষ্টিঃ তুমি কি বাথরুম থেকে বের হবা...
আমিঃ না হবো না...
বৃষ্টিঃ ওই তুই কি বাথরুম থেকে বের হবি? না বাথরুমের দরজা ভেংগে ফেলব...
আমিঃ না আগে বলো আর মারবে না...
বৃষ্টিঃ আচ্ছা বাবা আচ্ছা! আর মারব না এবার আসো...
আমিঃ নিজের স্বামীকে কেউ বাবা বলে নাকি...
বৃষ্টিঃ আরে ওটা তো কথার কথা বললাম। আমায় এতো ভয় করো কেন...
আমিঃ তোমার মতো গুন্ডি মেয়েকে আমি না যেকেউ ভয় করবে...
বৃষ্টিঃ কি বল্লি তুই আমি গুন্ডি? তুই খালি বের হও বাথরুম থেকে আজ তোর একদিন কি আমার একদিন...
আমিঃ কি করবা বের হলে...
বৃষ্টিঃ কিচ্ছু করবনা শুধু একটু আদর করব ব্যাস... আসো বাইরে...
আমিঃ না আসব না? তুমি মারবে...
বৃষ্টিঃ উফফফফফ সত্যি বলছি মারব না এবার আসো..
আমিঃ প্রোমিস...
বৃষ্টিঃ হ্যা প্রোমিস...
তারপর বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসলাম। কি মেয়ে রে বাবা। আজকে ওর সবচেয়ে অপছন্দের গানটা শুনছিলা ব্যাস খেল খতম হাতে ছুরি নিয়ে মারতে আসলো। তাই বাথরুমের ভিতর গিয়ে লুকিয়ে ছিলাম তখন ধরতে পারলে জানিনা কি করতো হয় আলু টমেটোর মতো কেটে ফেলতো। এতো রাগ যে কোথায় পায় কিচ্ছু জানিনা। বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে ঘরে শুয়ে আছি ওমনি আমার গুন্ডি বউ মানে বৃষ্টির
আগমন ..
বৃষ্টিঃ খাবার রেডি আছে আসো খাবে...
আমিঃ আমার খেতে ইচ্ছে করছে না তুমি খেয়ে নাও...
বৃষ্টিঃ খেতে ইচ্ছে করছে না মানে কি? সেই কখন খেয়েছো...
আমিঃ আমার ক্ষুদা নেই...
বৃষ্টিঃ ওই তুই আসবি না খুন করে ফেলব তোকে (রেগে গেলে তুই করে বলে)
আমিঃ হ্যা হ্যা হ্যা আসতেছিতো...
বৃষ্টিঃ এই তো গুড বয়....
অতঃপর খেতে গেলাম না খেয়েও রক্ষা নেই। ও যা বলবে তাই করতে হবে একটু এদিক ওদিক হলেই শেষ....
বৃষ্টিঃ এই কি ব্যাপার খাচ্ছ না কেনো...
আমিঃ তুমি খাইয়ে দাও না...
বৃষ্টিঃ কেনো তোমার হাত নেই তুমি খেতে পারো না?
আমিঃ কোথায় হাত নেই তো (হাত দুটো পিছনে নিয়ে বললাম)
বৃষ্টিঃ হয়েছে আর ঢং করতে হবে না নাও হা কর.......
খাওয়া শেষ করে আমি আর গুন্ডিটা শুয়ে আছি আমি বললাম...
আমিঃ জানো পাশের বাসার ভাবিটা না অনেক ভালো...
বৃষ্টিঃ আর আমি খারাপ তাই না...
আমিঃ তুমি তো গুন্ডি...
বৃষ্টিঃ কিইইইইইইইইইইইই
আমিঃ ওরে বাবা রে গেলাম রে। কেউ বাচাও আমারে আমি শেষ এই গুন্ডিটা আমারে মেরে ফেলবে মনে হচ্ছে। এই তুমি আমারে এতো কিল ঘুসি মারলে কি আমি বাচব নাকি....
বৃষ্টিঃ তোরে আমি শেষ করে ফেলব আজ...
আমিঃ কেন আমি কি করলাম আমিতো একটু ভাবির প্রশংসা করলাম...
বৃষ্টিঃ শয়তান, হনুমান, বান্দর বাসায় বউ থাকতে অন্য মেয়ের কথা বলা হচ্ছে...আজ তুই গেলি...
আমিঃ এই গুন্ডি থু থু থুক্কু লক্ষীটি আমার ভুল হয়ে গেছে আমার। আর কিল ঘুসি মেরো না নাহলে মরেই জাবো তো...
বৃষ্টিঃআজ তোকে মেরেই ফেলব। তোর এই বিছানায় থাকার কোন অধিকার নাই নাম এখান থেকে....
বলেই ধাক্কা মেরে বিছানা থেকে ধপাস করে মেঝোতে ফেলে দিলো....
আমিঃ এই বৃষ্টি সোনা আমার... আমার ভুল হয়ে গেছে আর জীবনেও ওই ভাবির কথা বলব না... এবার বিছানায় যাই....
বৃষ্টিঃ না তুই বিছানায় আসতে পারবি না।
আমিঃ এই লক্ষীটি এই শীতের দিনে আমি মেঝোতে থাকব কি করে...যদি ঠান্ডা লেগে জায়...
আমিঃ আর একটা কথা বললে মেঝোতেও জায়গা হবে না। রুমে থেকেই বের করে দিবো এই বলে দিলাম....
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে মেঝোতেই থাকছি কিন্তু....
বৃষ্টিঃ কিন্তু কি?
আমিঃ একটা বালিস আর কম্বল তো দাও...
বৃষ্টিঃ না কিচ্ছু হবে বালিশ ও না কম্বল ও না...পাশের বাসার ভাবি অনেক ভালো তাই না এখন বুঝো ঠ্যালা...
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে বালিস কম্বল ছাড়াই ঘুমাচ্ছি....
অতঃপর শান্ত ছেলের মতো মেঝেতেই শুয়ে পরলাম। কেমন মেয়ে রে ভাই নিজের স্বামীকে কেউ এমন করে। কোন অলক্ষনে যে এই গুন্ডিটার সাথে বিয়ে হয়ে তা আল্লাহই জানেন।কিন্তু গুন্ডিটা তো আমার বুকে মাথা রেখে ছাড়া একটি রাত ও ঘুমাতে পারে না তাহলে আজ কিভাবে ঘুমাবে। আর আমারো তো ওকে ছাড়া ঘুম আসবে না ধুর আর ভাল্লাগেনা। রাত ১ টা বাজে আমার এখন ও ঘুম আসতেছেনা আর আসবেই বা কেমন করে, আমি সিউর গুন্ডিটাও এখনও ঘুমাও নি....
বৃষ্টিঃ এই উঠো...
আমিঃ উমমমমমমমম...
বৃষ্টিঃ উঠো বিছানায় আসো...
আমিঃ কি হচ্ছে কি আমাকে কি শান্তিতে ঘুমাতেও দিবে না...
বৃষ্টিঃ আমার একা একা ঘুম আসতেছেনা চলো বিছানায় গিয়ে ঘুমাবে...
আমিঃ আমি কেন বিছানায় জাবো? তুমিই তো আমাকে বিছানা থেকে ধপাস করে মেঝেতে ফেলে দিলা। আর বল্লা বিছানায় যেন না ঘুমাই? তুমি যাও তো আমাকে ঘুমোতে দাও...
বৃষ্টিঃ তখন রাগের মাথায় ওসব বলে ফেলেছি।
আমিঃ তো এখন কি রাগ টা আছে না কমেছে...কি ব্যাপার কাঁদছ কেনো...
বৃষ্টিঃ..................
আমিঃ বাব্বা গুন্ডিরা আবার কাদতেও জানে দেখছি...
বৃষ্টিঃ..............
আমিঃ আরে আজব তো কান্নার গতি বেড়েই জাচ্ছে দেখছি? ওই পাগলি কান্না টা থামাও বলছি?
না এসবে কাজ হবেনা তাই ওকে কোলে করে বিছানায় গিয়ে আবার শুয়ে পরলাম এতক্ষনে একটু কান্না টা বন্ধ হলো। কি মেয়ে রে ভাই নিজেই বিছানা থেকে ফেলে দিলো আবার নিজেই কাঁদছে
কখন যে কি করে কিচ্ছুই বুঝিনা...
তারপরের দিন বিকেলে গুন্ডিটা অনেক জোরে ডাকছে...
বৃষ্টিঃ আআআআআকাকাকাশশশশশ
আমিঃ কিইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইই?
বৃষ্টিঃ ঐ শয়তান তোকে এত্ত জোরে চিল্লাইতে কে বলছে...
আমিঃ আসলে তুমিও তো জোরে জিল্লাইলা তাই ভাবলাম আমিও...... (কথাটা শেষ না করতেই)
ঠাসসসসসসসাসস....
বৃষ্টিঃ তোরে না বলছি ওই ভাবির সাথে কোন কথা বলবি না...তাও কেন আজ কথা বলছিস তুই...
আমিঃ আরে সারাদিন খালি, কিল ঘুসি, ঠাসসস ঠাসসস, করে মারতেই থাকো। একটু কথা বলছি বলে এমন করে মারবা...
বৃষ্টিঃ হ্যা মারব কারন এত্ত মাইর খেয়ে যখন সোজা হস না তখন মারতেই হবে...
আমিঃ হা হা হা আমি তো সোজাই আছি তোমার চোখের সমস্যা হইছে ডাক্তারের কাছে জাইতে হবে...
বৃষ্টিঃ কি বল্লি তুই আমার চোখের সমস্যা।
দাড়া বলছি...
আমি বাসার বাইরে চলে আসলাম আর গুন্ডিটা উপর থেকে চিল্লায়ে বলতেছে রাতে বাসায় আসবি না তখন দেখব তোরে বাচায় সেটা কে হু...আমি এক কপাল পোড়া কিচ্ছু কইতে পারি না গুন্ডিটার ওপর কারন ওর আব্বা থানার ওসি। বিয়ের আগে অনেক ভালো ভালো আর মিষ্টি মিষ্টি কথা বলতো এখন বুঝতেছি আমার কতো একটা কিউটের ডিব্বারে বিয়ে করেছে কেনো। ধুর বাইরে ভালো ও লাগতেছেনা রাত ১২ টা বাজে....
হঠাৎ করে ফোন আসলো নাম্বার না দেখেই ফোন রিসিভ করলাম...
আমিঃ হ্যালো কে কইতেছেন...
____ চুপ ১০ মিনিটের মধ্যে বাসায় চলে আসবি নাহলে তোরে...টুট টুট টুট
যাহ বাবা ফোন কেটে দিলো। কি আর করার গুন্ডি বউ যখন বলছে তাহলে বাসায় যলদি যেতে হবে...বাসায় এসে দেখি বউ আমার পুরাই পরি। হাতে চুরি, নীল শাড়ি পরেছে জাকে বলে নীল পরী। আমি হা করে তাকায়ে আছি ওর দিকে....
বৃষ্টিঃ এই যে এমন হা করে তাকিয়ে না থেকে আসেন খেতে আসেন? আপনাকে তো আবার খাইয়ে না দিলে হয় না...
কি ব্যাপার রে ভাই বউ আমার হঠাৎ এতো ভালো হয়ে গেল কি করে কোন মতলব আছে নাকি। বউয়ের হাতে খেয়ে ঘুমিয়ে পরলাম দুজোনে....
বৃষ্টিঃ এই তারাতারি রেডি হয়ে নাও ঘুরতে জাবো...
আমিঃ আচ্ছা ঘুরতে জাবো ঠিক আছে কিন্তু বলো আজকে আর কোন মাইর দিবে না। কালকের থাপ্পরের ব্যাথা এখন ও আছে...
বৃষ্টিঃ আচ্ছা ঠিক আছে আজ কোন মাইর দিবো না...
আমিঃ সত্তিই তো?
বৃষ্টিঃ হুম!!!
সারাদিন ঘুরলাম গুন্ডিটার সাথে অনেক ঘুরলাম। আর অনেক দুস্টুমি করেছি কিন্তু আজ একটুকুও মাইর দেয় নাই। তাই সুযোগ বুঝে ওর গালে অনেক গুলো পাপ্পি বসে দিয়েছিলাম তাও কিচ্ছু বলেনি....
বৃষ্টিঃ আচ্ছা তোমার কাঁধে একটু মাথা রাখি?
আমিঃ হুম রাখো....
কি ব্যাপার আজ হঠাৎ এতো ভদ্র হয়ে আছে ক্যানো...
বৃষ্টিঃ ঐ এমন করে কি দেখা হচ্ছে হু...
আমিঃ পরী কে দেখছি। আমার গুন্ডি নীল পরী...
বৃষ্টিঃ হইছে আর পাম দিতে হবে না...
আমিঃ আচ্ছা আজকে একটুকুও রাগলে না কেনো...
বৃষ্টিঃ এমনি!
আমিঃ এমন করে থাকবা সব সময়....
তারপর বাসায় চলে আসলাম বউ টাকে আজ অসম্ভব সুন্দরী লাগছে তাই আবার একটা দিলাম পাপ্পি। আর তখনই একটা শব্দ হলো ঠাসসসসসস মনে হচ্ছে আবার মাইর দিছে। না আর এমন অত্যাচার সহ্য হচ্ছে না তাই রাগ করে ছাঁদে চলে গেলাম। কি পাইছে আমারে আমি কি মাইর খাওয়ার মেশিন নাকি যে সব সময় এমন ভাবে মাইর দিবে। কিচুক্ষন পর দেখলাম গুন্ডিটাও ছাদে আসতেছে আমায় ডাকলো কিন্তু আমি গেলাম না....
বৃষ্টিঃ এই তুই আসবি নাকি নাকি আবার...
আমিঃ আবার কি হুম আবার কি? আবার মারবে তাই না। এই যে কাছে আসলাম নাও মারো আমাকে মারো। আরে আমিতো মানুষ না আমিতো রোবট মারলেও লাগে না আমার। আমি জানি আমি একটু দুস্টুমি করি তাই বলে..কি হলো নাও মারো দাড়িয়ে আছো কেনো....
বলেই রুমে চলে আসলাম। রুমে শুয়ে আছি ওমনি....
বৃষ্টিঃ এই উঠো চলো খাবে... আমি খাইয়ে দিচ্ছি...
আমিঃ না আমার খিদে নেই... তুমি খেয়ে নাও...
বৃষ্টিঃ চলো না প্লিজ...
আমিঃ বল্লাম না আমি খাবো না। আর কালকেই আমি চলে যাব...
বৃষ্টিঃ কই যাবে তুমি হু...
আমিঃ জানিনা কোথায় যাবো। যেদিকে দুচোখ যায় সেদিকে যাবো। কাল থেকে কেউ আর তোমাকে এতো জ্বালাবে না আর ডিস্টার্ব করবে না...
ওমনি বুকে জড়িয়ে ধরে বলতেছে...
বৃষ্টিঃ তোমাকে আমি অনেক মারছি তাই সোনা। প্লিজ তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যেও না। তুমি না থাকলে আমি মরেই জাবো। আর কখন ও মারব না প্রোমিস
আমিঃ থাকতে পারি একটা শর্ত আছে...
বৃষ্টিঃ কি...
আমিঃ তুমি এতদিন জত মাইর দিছো এখন থেকে প্রতিদিন ততগুলা পাপ্পি দিবা। আর না দিলে আমি গেলাম....
বৃষ্টিঃ এই না না জেও না প্লিজ এই নাও উম্মাহহহহ....!!!
- পাঠক পাঠিকা গণ আপনারা এবার আসুন গুন্ডিটার পাপ্পির নেশা পাইছে....!!!😂
বিঃদ্রঃ গল্পটা কেমন হয়েছে সবাই কমেন্ট করে জানাবেন ধন্যবাদ 🥰
____________________সমাপ্ত____________________
গল্পের নামঃ গুন্ডি বউ
লেখকঃ MR.SHADOW
→ সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন ❤️
আল্লাহ হাফেজ 💝