গল্পঃ__মাস্তানি | ভালোবাসার গল্প

 রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প

রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প

গল্পঃ__মাস্তানি (পর্ব__০১)

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল। 


অনার্স থার্ড ইয়ারের ক্লাস করবো বলে ক্লাস রুম খুঁজতে লাগলাম। কিন্তু কেউ আমাকে হেল্প করছে না। কারন সবাই আমার ঢিলে ঢালা পোশাকের দিকে তাকিয়ে আছে।। আমার কাপড়ের দিকে তাকিয়ে কেউ কোনো কথা বলছে না৷ কারন সবার কাছে আমি একটা ক্ষ্যাত।


তাই নিজেই খুঁজতে লাগলাম,অনেক চেষ্টার পর নিজেই ক্লাস রুম খুঁজে ফেলাম। তাড়াতাড়ি রুমে ঢুকতে গিয়ে একটা মেয়ের পায়ে সামান্য পাড়া দিয়ে ফেললাম। তাই মেয়েটা আমাকে বললো...........


মেয়েটাঃ>>এই ক্ষ্যাত, বেয়াদব ছেলে একটা? দেখে চলতে পারিস না?? 


আমি মেয়েটির এমন ব্যাবহার দেখে তার মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। মেয়েটি আমাকে বললো..........


মেয়েটিঃ>>ছাগলের মতো তাকিয়ে আছিস কেনো?? কোথায় থেকে যে আসে এসব। যত্তসব, সকাল 

সকাল এসব ক্ষ্যাত মার্কা ছেলেদের দেখে গা জ্বলে যায়। মুঢ টাই নষ্ট করে দিলো। জানিনা আজকের দিনটা কেমন যায়?? 


আমি কিছু না বলে মুচকি হেঁসে ক্লাস রুমে চলে গেলাম। কারন এখানে কথা না বলাটাই শ্রেয়।। কথা বললে না জানি আবার কি শুনতে হবে আল্লাহ ভালো জানে।

আর তাছাড়া আজ প্রথম দিন।। তাই কিছু না বলে সহ্য করে রইলাম। 


ক্লাসে ঢুকে একদম শেষ দুইটা বেঞ্চের আগে বসলাম। কিছুক্ষণ পরে দেখলাম সেই মেয়েটা আমার দুই বেঞ্চ আগে বসেছে। তার মানে দুইজন একই ক্লাসে।


যথারীতি সময়ে ক্লাস শুরু হলো। ঠিক তখনই দেখলাম আমার পিছনের বেঞ্চের একটা ছেলে ওই মেয়েটার 

গায়ে কাগজ ছুড়ে মারলো। কিন্তু আপসোস সেই দোষটাও আমার গাড়ে এসে পড়লো।। তখনই মেয়েটি স্যারকে বলতে শুরু করলো........... 


মেয়েটিঃ>>স্যার এই ছেলেটা আমার গায়ে কাগজ 

ছুড়ে মেরেছে?? 


স্যারঃ>>কোন ছেলে?? 


মেয়েটিঃ>>ওইযে ওই ছেলেটা। চোখে গোল চশমা পড়া?? 


আমি কিছু বলার আগে স্যার এসে আমাকে যা তা বলে গেলো৷ আমাকে কোনো কথা বলার সুযোগ দিলো না। স্যার চলে গেলো,আমিও ধপ করে বেঞ্চে বসে পড়লাম।

 

পরের দিন.....


ক্লাসে বসে আছি সেই বেঞ্চটাতে।। স্যারের লেকচার খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতেছি। আর সেই মেয়েটি আজ বসেছে ফাস্ট বেঞ্চে। কিছুক্ষণ পর স্যার বললো.......... 


স্যারঃ>>আচ্ছা বলো তো তোমরা,, যারা শিক্ষিত তারা বেশি মূর্খ?? কথাটা কি সত্যি? যদি সত্যি হয়, তাহলে কারনটা কি?? 


স্যারের কথা শুনে ক্লাসের সবাই কেমন চুপ হয়ে গেছে।। স্যার সবার দিকে একবার করে তাকালো। আর আমিও সবার দিকে একবার তাকালাম। ঠিক তখনই স্যার সেই মেয়েটিকে বললো.......... 


স্যারঃ>>আচ্ছা নিধি, তুমি তো ক্লাসের ফাস্ট গার্ল। সো এই কথাটার লজিক টা কি? তুমিই বলো.?? 


তখন দেখি নিধি মেয়েটি চুপ হয়ে গেলো।। নিধি আমতা আমতা করতে শুরু করলো। এরপর স্যার অনেকের কাছে কথাটার ব্যাখ্যা জানতে চাইলো। কিন্তু সবাই কেমন যেনো চুপসে গেলো। ঠিক তখনই আমি কিঞ্চিত হেসে উঠলাম। তবে এই ব্যাপারটা স্যারের চোখে এড়ালো না।। তাই স্যার সবাইকে চুপ থাকতে বললো। আর আমার দিকে এগিয়ে এসে বললো........


স্যারঃ>>এই ছেলে নাম কি তোমার? 


আমিঃ>>জীবন আহমেদ? 


স্যারঃ>>হাসছো কেনো? বেয়াদব ছেলে পড়াশোনা তো করবে না, ক্লাসে বেয়াদবি করবে৷ বলোতো, আমি মনে করি শিক্ষিত মানুষই মূর্খ হয় বেশি? কথাটি কি সত্য? যদি সত্য হয় তাহলে কারন কি?? 


স্যারের প্রশ্ন শুনে আমি মাথাটা নিচু করে ফেললাম। তখনই স্যার আবার আমাকে বলে উঠলো.........


স্যারঃ>>জানিতো পারবে না, কেনো আসো ক্লাসে। যত্তসব বেয়াদব ছেলে?? 


এবার আর চুপ করে থাকতে পারলাম না। স্যারকে বলতে শুরু করলাম...........


আমিঃ>>জ্বি স্যার আমিও আপনার মতো মনে করি শিক্ষিত ব্যাক্তিরাই সব চাইতে বেশি মূর্খ?

|||

কারন শিক্ষিত ব্যাক্তিরা সাধারন থাকতে চায় না৷ তারা চায় অসাধারন হতে। আর এই অসাধারনের রাস্তায় দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে এক সময় তারা তাদের অবস্থান, তাদের ব্যাক্তিত্বকে হাড়িয়ে ফেলে?? তখন তারা শুধুই তাদের অর্থটাকে প্রাধান্য দেয়??

|||

আর সেক্ষেত্রে যে কম জানে, বা জানে না সেই জ্ঞানী। কারন তারা হলো সাধারন। আর সাধারন সবাই হতে পারে,,এটা একটা আর্ট। তাই তারা তাদের ধর্মীয় আচার-আচরণ বিধি-বিধান মেনে চলে। সৃষ্টি কর্তার ভয়ে সঠিক পথে কাজ করে??

|||

অপরদিকে যারা বেশি জ্ঞানী তারা সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করে। ফলে তারা তাদের ধর্মকে ভুলে যেতে বসে। এর কারনে তারা অবশ্যই মূর্খ???


আমি কথাগুলো এক নাগাড়ে বলে শেষ করলাম।। কথা গুলো বলার পর সবার দিকে তাকালাম। দেখলাম সবাই আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। আর তখনই স্যার বলে উঠলো..........


স্যারঃ>>বাহহ আমি তোমাকে কি ভাবছিলাম,আর তুমি তার সম্পুর্ণ বিপরীত। সত্যি তুমি বেয়াদব না, তুমি অনেক ভালো ছেলে। দোয়া করি সফলকাম হও.???


মুচকি হেসে বসে পড়লাম।। হঠাৎ নিধির দিকে তাকিয়ে দেখি নিধি আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। হয়তো ভাবতেছে আমি ছেলেটা কেমন।


কলেজ শেষ করে যখন বের হলাম,তখনই অপুর্ব নামের একটা ছেলে এসে আমার সাথে বন্ধুত্ব করলো। এতোদিন কেউ আমার পাশে বসতো না। আর আজকে একটা বন্ধু ফেলাম।


পরের দিন.......


ক্লাসে বসে আছি। কিছুক্ষণ পর অপুর্ব আসলো।এরপর দুজন কিছুক্ষণ গল্প করলাম।। হুট করে অপুর্ব আমাকে বললো...... 


অপুর্বঃ>>আচ্ছা তোর বাসা কোথায় রে?? 


আমিঃ>>কেনো.?? 


অপুর্বঃ>>আরে আমরা এখন বন্ধু না, বল না? ?


আমিঃ>>থাক সে সব। শোনা লাগবে না??


কি দরকার সে-সব মনে করে। আমি তো এক অন্ধকার জগতের মানুষ। সভ্যতার মাঝে এসে বাঁচার চেষ্টা করতেছি। তাই ওই সব কথা ভেবে কোনো লাভ নেই।।

এসব কথা ভাবতে ভাবতে ক্লাসে স্যার চলে আসলো।এবং ক্লাসে এসে কিছুক্ষণ পর সবাইকে উদ্দেশ্যে করে একটা প্রশ্ন করলো.........


স্যারঃ>>জ্ঞানই হলো শিক্ষা, নাকি শিক্ষাই হলো জ্ঞান?? 


স্যারের প্রশ্ন শুনে ক্লাসের সবাই চুপ হয়ে গেলো। তখনই নিধি উঠে বললো..........


নিধিঃ স্যার,আমি মনে করি দুইটাই একে অপরের সাথে জড়িত। শিক্ষার মাঝেই তো জ্ঞান লুকিয়ে থাকে। একজন ব্যাক্তি শিক্ষার মধ্যে থেকেই জ্ঞান অর্জন করে।। তাই শিক্ষা ও জ্ঞান দুইটাই একে অপরের সাথে জড়িত??


স্যারঃ>>হুমমম,,আর কেউ আছে কিছু বলার??


আমিঃ স্যার উনি যে ধারনা টা দিলেন সেটা সম্পুর্ণ ভুল। কারন শিক্ষার মাঝে জ্ঞান যদি লুকিয়ে থাকতো তাহলে যারা শিক্ষা গ্রহণ করে নাই তারা কি জ্ঞানী না। অথবা তাদের মাঝে কি জ্ঞান নেই? আসলে স্যার আমরা বলি পড়া লেখা করে মানুষের মতো মানুষ হয়। কথাটা কিন্তু একটা দিক দিয়ে ভূল..???

|||

কথাটা কি এমন হলে হতো না যে,,মানুষ হয়ে পড়া লেখা করো,,,??

|||

আসলে কথাটা বলার কারন হলো,, আমরা জন্ম গ্রহন করার পরেই কি বিদ্যালয়ে আসি!! আসি না?? তাই প্রথমে পরিবার ও সমাজ হয়ে উঠে শিক্ষাঙ্গন। এর থেকে যদি আমরা শিক্ষা অর্জন করতে পারি। তাহলে সেটাই প্রকৃত শিক্ষা। 

|||

বই ছাড়াও মানুষ কিন্তু শিক্ষিত হয়। তার বহু প্রমানও রয়েছে আমাদের সমাজে৷ এতে বুঝা যায়, শিক্ষা শুধু কলেজ কিংবা মাদ্রাসায় অর্জন হয় না। শিক্ষা মাঠে গাঠে সমাজে বৈঠকে অর্জন হয়। জন্ম থেকে মৃত্যু 

পর্যন্ত মানুষের শিখার কোনো শেষ নেই??


কথা গুলো বলে নিধির দিকে তাকালাম। নিধি আমার দিকে তাকিয়ে চোখ বড় বড় করে দেখছে। শুধু নিধি 

নয় ক্লাসের সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।। ঠিক তখনই স্যার বললো.......


গল্পঃ__মাস্তানি (পর্ব__০২)

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল। 


কথা গুলো বলে নিধির দিকে তাকালাম। নিধি আমার দিকে তাকিয়ে চোখ বড় বড় করে দেখছে। শুধু নিধি 

নয় ক্লাসের সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।। ঠিক তখনই স্যার বললো.......


স্যারঃ>>বাহহ কি সুন্দর উত্তর। গুড বয়.?? 


স্যারের কথা শুনে মুচকি হাসলাম।। মনে মনে বললাম,, স্যার আমি মটেও গুড বয় না। আমার মতো খারাপ ছেলে আর পাবেন না। যার কোমরে থাকে সব সময় পিস্তল গোজা। মানুষ মারতে যার হাত পর্যন্ত কাঁপে না। সে কখনো গুড বয় না স্যার। ক্লাস শেষ করে বাহিরে চলে আসতেই নিধি আমাকে ডাকলো.......


নিধিঃ>>এই জীবন.??


নিধির ডাক শুনে দাঁড়ালাম। তখনই নিধি আমার কাছে আসলো। আর এসে আমাকে বললো........ 


নিধিঃ>>সরি.?? 


আমিঃ>>ওকে বায়.?? 


আমি কোনো কথা না বলে,, না শুনে নিধির কাছ থেকে চলে আসলাম। একটু দূরে এসে পিছন দিকে তাকিয়ে দেখি, নিধি আবারো আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।আমি একটা মুচকি হেসে সেখান থেকে চলে আসলাম।


পরের দিন.......


নিধিঃ>>এই ছেলে?? 


কলেজে এসে ক্লাসে ঢুকতে যাবো, ঠিক সেই সময় নিধি আমাকে ডাকলো। তার দিকে ঘুরে তাকাতেই সে বলতে শুরু করলো........ 


নিধিঃ>>আপনি তো খুব বেয়াদব। কালকে কথা বললাম অথচ পাত্তাই দিলেন না?? 


আমিঃ>>হুমমম??


নিধিঃ>>আবার হুমম বলছেন। আচ্ছা আমাদের তো সেম ক্লাস। সো তুমি করেই বলতেছি কিন্তু,ওকে?? 


সামান্য হেসে ক্লাসের ভিতরে গেলাম। সমস্ত ক্লাসে চুপচাপ থাকি আমি। কারো সাথে কোনো কথা বলি না। একদম শেষর দিকে বসি।। যথারীতি সময়ে স্যার ক্লাসে আসলো। আর এসেই বললো..........


স্যারঃ>>আগামী সাপ্তাহে আমি তোমাদের সাপ্তাহিক পরীক্ষা নিবো৷ আশাকরি সবাই এখন থেকে ভালো ভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করবে?? 


এই কথা বলে স্যার আমার কাছে আসলো। আর এসে আমাকে বললো.......... 


স্যারঃ>>আচ্ছা জীবন, তোমার বাসা কোথায়?? 


আমি চুপ করে রইলাম, কিছুই বললাম না।। আমার চুপ থাকা দেখে স্যার আমাকে আবারো জিজ্ঞেস করলো....


স্যারঃ>>কি হলো বলো, তোমার বাসা কোথায়?? 


আমিঃ>>স্যার আমি একটু বাহিরে যাবো?? 


স্যারঃ>>ওকে যাও?? 


এরপর স্যারের কাছ থেকে বাহিরে চলে আসলাম। কারন আমি জানি, যদি আমি বাহিরে না চলে আসতাম নয়তো আমাকে স্যারের কথার উত্তর দিতে হতো। আর আমি চাইনা কেউ আমার সম্পর্কে জানুক। আমি চাইনা কেউ জানুক আমি একজন প্রফেশনাল কিলার। ফেলে আশা দিন গুলোর মতো আমি চাইনা আর লাঞ্চনা। 


কিছুক্ষণ পরে বাহিরে থেকে আবার ক্লাসে আসলাম। এসে সোজা বেঞ্চে গিয়ে বসলাম। কিছুক্ষণ পর দেখি নিধি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। সবার কছেই তো আমি একটা ক্ষ্যাত। তাহলে হটাৎ করে নিধি কেনো আমার দিকে তাকিয়ে থাকে।। তখনই স্যার সবাইকে উদ্দেশ্যে করে একটা প্রশ্ন করলো...........


স্যারঃ>>আচ্ছা বলো তো তোমরা? আমরা সবাই জানি প্রত্যেকটা মানুষ মরনশীল। আমাদের মহান রবের নির্ধারিত সময়ে মরতেই হবে। কিন্তু আমরা মানুষরা তাহলে কেনো এতো বাহাদুরি করি। কেনো দুই দিনের দুনিয়াতে এতো কিছু করি??


স্যারের প্রশ্ন শুনে ক্লাসে কেমন জানি নিরবতা ভর করেছে। কিছুক্ষণ পর সবাই যে যার মতো লজিক নিয়ে স্যারের সামনে তুলে ধরছে৷ আর আমি আমার যায়গায় চুপ করে বসে সব দেখতেছি।। একটু পর অপুর্ব স্যারকে বললো...........


অপুর্বঃ>স্যার নিধি তো ক্লাসের ফাস্ট গার্ল। তাই আমরা সবাই উত্তর টা ওর কাছ থেকেই জানতে চাই?? 


তখনই সবাই এক সাথে হ্যা বলে উঠলো। এরপর নিধি দাঁড়িয়ে স্যারকে প্রশ্নের উত্তর দিতে লাগলো......


নিধিঃ>>স্যার আমরা সবাই জানি জন্মালে মরতে হবে৷ কিন্তু মানুষ সেটা ভুলে যায় তার সমাজের কু-ব্যাবস্থার মধ্যে পড়ে। মানুষ ভুলে যায় তার অবস্থানকে। তাই তারা দুনিয়ার মায়ায় পড়ে সব কিছু ভুলে যায়??


স্যারঃ>>হুমমম,,আর কেউ কিছু বলবে??


স্যারের কথাটা শেষ হতেই অপুর্ব আমার হাতটা তুলে ধরলো। আমি অবাক দৃষ্টিতে অপুর্বের দিকে তাকিয়ে রইলাম। ঠিক তখনই স্যার আমাকে বললো.........


স্যারঃ>>হুমম জীবন এবার তাহলে তুমি বলো??


কিছুক্ষণ চুপ করে রইলাম।।আশেপাশে ১ বার তাকিয়ে নিলাম। সবার মাঝে নিরবতা ভর করছে। কিন্তু নিধি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তখনই আমি বলতে শুরু করলাম.......


আমিঃ স্যার আমরা জানি মানুষ মরনশীল। এটাই জানি আমাদের কোনো এক সময় মরতে হবে। কিন্তু আসল কথা হলো আমরা বাহাদুরি করি কেনো?

|||

মহান আল্লাহর ইচ্ছায় যে কোনো মুহুর্ত এই মায়ার ভূবন ছেড়ে চলে যেতে হবে মহান রবের কাছে।৷ সবকিছু জেনেও আমরা অহংকার বাহাদুরি করি। আসল কথা হলো মানুষের মন যত নরম,ততই নিকৃষ্ট।

|||

কারন আমরা উপরে উপরে যত কিছু দেখাই না কেনো। ভিতরে থাকে একে অপরের প্রতি অহংকার,হিংসা, লোভ লালাসা। মুলত লোভটাই আমাদের মনকে নিকৃষ্ট করে তুলে। যার কারনে আমরা ব্যা-বিচারে লিপ্ত হতে থাকি.। এর ফলে আমরা ভুলে যাই আমাদের মরন সংবাদের কথা। যা এক চরম সত্য।

|||

সুতরাং মানুষের মনে সম্পদের অহংকার, লোভ, উপরে উঠার চেষ্টাতে বিভর থাকায়, এই সব কিছুর কারনে আমরা আল্লাহর সঠিক পথ থেকে ধুরে সরে যাই। এবং আল্লাহর বিধি-বিধান সব কিছু ভুলে যাই। ভুলে যাই কি ভালো, কি মন্দ। এই জন্যই আমরা এতো বাহাদুরি করে চলছি??


শেষ করতেই ক্লাসে একটা হাত তালির রোল পড়ে গেলো। ঠিক তখনই নিধির দিকে চোখ পড়লো। মেয়েটা সেই থেকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। হুট করেই আমি দেখলাম সে মুচকি হেসে দিলো। 

আমি মাথাটা নিচু করে ফেললাম।। কিছুক্ষণ পর স্যার আমাকে বললো........


স্যারঃ>>চমৎকার বলেছো জীবন, ভেরি গুড। জীবনে সফলকাম হও?? 


ক্লাস শেষ করে ক্যাম্পাস থেকে বের হতে যাবো এমন সময় আমার কাছে নিধি আসলো আর বললো........


গল্পঃ_মাস্তানি (পর্ব_০৩)

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল। 


শেষ করতেই ক্লাসে একটা হাত তালির রোল পড়ে গেলো। ঠিক তখনই নিধির দিকে চোখ পড়লো। মেয়েটা সেই থেকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। হুট করেই আমি দেখলাম সে মুচকি হেসে দিলো। 

আমি মাথাটা নিচু করে ফেললাম।। কিছুক্ষণ পর স্যার আমাকে বললো........


স্যারঃ>>চমৎকার বলেছো জীবন, ভেরি গুড। জীবনে সফলকাম হও?? 


ক্লাস শেষ করে ক্যাম্পাস থেকে বের হতে যাবো এমন সময় আমার কাছে নিধি আসলো আর বললো........


নিধিঃ>>সরি.??


আমিঃ>>কেনো.?? 


নিধিঃ>>আসলে তোমাকে প্রথম দিন বেয়াদব, ক্ষ্যাত আরো কত কি বলে অপমান করেছি,,তাই?? 


আমিঃ>>হাহাহা?? 


নিধিঃ>>হাসছো কেনো?? 


আমিঃ>আমি যদি ক্লাসে ভালো কিছু না বলতাম,তাহলে কি তুমি আমার কাছে এসে আমার সাথে কথা বলতে। তোমার কাছে আমি একটা ক্ষ্যাত থাকতাম। সো ইটস ওকে,,তুমি তোমার মত থাকো?? 


কথাটা বলে সেখান থেকে চলে আসতে যাবো,,ঠিক তখনই নিধি আমাকে বললো.......... 


নিধিঃ>>তোমার বাসা কোথায়? আর তুমি হুট করে থার্ড ইয়ারে ভর্তি হলে কেনো?? 


নিধির কথাটা শুনে আমি ওর দিকে তাকালাম। তারপর কিঞ্চিত হেসে আমি ঘুরে চলে আসলাম। ফুটপাত ধরে হাঁটতেছি।। আর মনে মনে পুরোনো কথা গুলো ভাবছি।


যেই ছেলের সাথে সাধারন মানুষ কথা বলা তো ধুরের কথা,,তাকাতে ভয় পাইতো। আর সেই ছেলের সাথে এখন কত মানুষ কথা বলছে৷ আসলে কথাটা একদম সত্যি,,,ভালো হতে অর্থের প্রয়োজন হয় না। 


আমি কল্পনাও করিনি জীবনে কখনো আমি ভালো হতে পারবো। তবে আজ মনে হচ্ছে আমি ঠিক রাস্তায় যাচ্ছি। বড্ড মনে পড়ছে আব্বুর কথা।। আব্বুর চলে যাওয়ার সময় শেষের কিছু কথা খুব মনে পড়ছে। 

জোরে হেসে উঠলাম। কারন সবাই আমাকে খারাপ ভাবে।। কিন্তু কেউ কখনো জানতে চায়নি আমি কেনো কি কারনে খারাপ হয়েছি। 


আমাকে সবাই কত ভয় পায়। হয়তো পিছনে কতই না গালিও দেয়। কিন্তু কেউ কোনো দিন জানতে চায়নি আমি কেনো মাস্তান। কেনো আমি মাস্তানি করি।


আসলে আমরা সবাই মানুষ। কিন্তু আমাদের মনুষ্যত্বের অভাব। আমরা পাপীকে ঘৃণা করি,পাপকে নয়। অথচ সঠিক হলো,,পাপকে ঘৃণা করো,,পাপীকে নয়। সঠিক কোনটা আমরা বুঝতেই চাই না।


আগামী কালকে এক্সাম। তাই ক্লাসে মনোযোগ রাখছি। অবশ্য আগে যখন এক্সাম দিতাম তখন মাস্তানি করে পাশ করতাম। কিন্তু এখন সেটা করা যাবে না।


সামনে তাকিয়ে দেখি আজকেও নিধি হা করে তাকিয়ে আছে। কি মেয়েরে বাবা...অপমান করবে,,আবার তাকিয়েও থাকবে? কিছুক্ষণ পরে স্যার আসলো রুমে।

এসে কিছুক্ষণ পর বললো...........


স্যারঃ>>কালকে এক্সাম,,সবাই ভালো রেজাল্ট 

করুক এটাই চাই?? 


অপুর্বঃ>>স্যার সবাই আর কি বলেন,,ভালো তো সব সময় একাই করে একজন! সে হলো নিধি?? 


স্যারঃ>>হুমম তা ঠিক,,নিধির কাছ থেকে কেউ প্রথম স্থান নিতে পারবে না?? 


উনাদের কথা শুনছিলাম, নিশ্চুপ দর্শকের মতো। মনে মনে হাসছিলামও বটে। আমি চাইলে মাস্তানি করে প্রথম কেনো,, কলেজ-টা আমার আয়ত্তে নিতে পারি। ওই ক্ষমতা জীবন আহমেদ এর আছে। কিন্তু সেটা আমি করবো না।


আজ এক্সামের পর ক্লাসে এসেছি। সবাই যে যার মতো গল্প করতেছে। আর আমি চুপচাপ বসে আব্বুর কথা ভাবতেছি। ভাবতেছি মা নামক বিষাক্ত কাল নাগীনির কথা। যে কিনা আমার......ভাবতে ভাবতে ক্লাসে স্যার চলে আসলো। যার কারনে ড্যাসের কথা গুলো বলতে পারলাম না। স্যার ক্লাসে এসেই বললো.......


স্যারঃ>>কালকে এক্সাম শেষ হয়ে গেছে। আজকে তার রেজাল্ট দিতেছি?? 


সবাই চুপ করে আছে।। সবার মনে অস্থিরতা বিরাজ করছে রেজাল্ট নিয়ে। কিছুক্ষণ পর স্যার বললো....


স্যারঃ>>এই সাপ্তাহিক এক্সাম-এ প্রথম হয়েছে জীবন আহমেদ। এবং দ্বিতীয় হয়েছে নিধি?? 


এই কথাটা শুনে ক্লাসের সবাই আমার দিকে তাকালো। আমি আমার মতো চুপ করে বসে থাকলাম। নিধি অরো অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। সবাই হয়তো আশা করেনি এমনটা। কিন্তু সেটাই হলো।। স্যার কিছুক্ষণ পর এসে আমাকে বললো....... 


স্যারঃ>>অভিনন্দন জীবন,,ভবিষ্যতে সফল হও??


সবাই যখন বাহ বাহ দিচ্ছে নিধি তখন তাকিয়ে আছে আমার দিকে। যা আমার খুব অসহ্য লাগছে। এরপরে স্যার আমাকে বললো........... 


স্যারঃ>>জীবন নিশ্চয়ই তুমি সারারাত পড়া লেখা করেছো?? 


আমি চুপ করে রইলাম। কোনো কথা বললাম না। এরপর স্যার আমাকে বললো..........


স্যারঃ>>আচ্ছা তোমার বাবা কি করেন?? 


আমিঃ>>বেঁচে নেই??


স্যারঃ>>ওহহ সরি,,,তোমার আম্মু কি করেন?? 


মা নামের কথা শুনে মাথায় রাগ উঠে গেলো। বহু কষ্টে নিজেকে সামলিয়ে চুপ করে থাকলাম। তখনই স্যার আবার আমাকে জিগ্যাসা করলো.........


স্যারঃ>>কি হলো বলো?


আমিঃ>>বেঁচে নেই? 


স্যারঃ>>তোমার আব্বু আম্মু বেঁচে নেই।। ভেরী স্যাড, সো সরি জীবন। বাট তোমার পড়া লেখার খরচ কে চালায় তাহলে। আর উনারা কি ভাবে মারা গেলেন??


স্যারের কথা শুনে রাগী চোখে উনার দিকে তাকালাম। কিন্তু ওনার মুখটা দেখে কেমন জানি মায়া হলো।

এসব প্রশ্ন আমাকে এই পর্যন্ত যারা করেছে, তাদেরকে রাগের বশে মেরে ফেলেছি। কিন্তু আজ নিজেকে সামলাতে হচ্ছে।।


কিভাবে বলবো আমি স্যারকে,,, আমার পড়া শোনার খরচ আসে মাস্তানি করে?? 

কিভাবে বলবো,, আমি নিজের হাতে আমার সৎ মাকে মেরে ফেলেছি। কিভাবে বলবো,, আমার সৎ মায়ের হাতে আমার নিজের বাবা খুন হয়েছে। তাই এসব প্রশ্ন যারা করেছে তাকেই শেষ করে দিয়েছি সুন্দর পৃথিবী থেকে। তারপর স্যারকে আমি বললাম.........


আমিঃ>>রোড এক্সিডেন্ট করে দুজনেই মারা যায়?? 


স্যারঃ>>সরি জীবন,,,যাই হোক তুমি ভালো করে পড়া লেখা করো। পড়ার খরচ চালাতে কোনো সমস্যা হলে আমাকে বলতে পারো??


স্যারের কথাটা শুনে নিজের অজান্তেই হেসে উঠলাম।। সত্যি হাস্যকর কথাটি। আমার যেই টাকা আছে তাতে এই কলেজ কেনো,, এমন পাঁচ টা কলেজের সবাইকে চালাতে পারবো।সেই ক্ষমতা জীবন আহমেদের আছে।


ক্লাস শেষ করে বাহিরে বের হলাম।। তখনই নিধি এসে আমার সামনে দাঁড়ালো। আমার পুর্বের সেই ঘটনার 

পর আর কোনো মেয়েকে সহ্য হয় না।। মনে হয় সবাই আমার সৎ মায়ের মতোই। তাই বিষাক্ত নারীদেরকে এড়িয়ে চলি। নিধি এসেই আমাকে বললো........  


নিধিঃ>>সরি জীবন??


আমিঃ.........( চুপ করে রইলাম )


নিধিঃ>>আসলে ওই দিন তোমাকে অপমান করার 

জন্য নিজেকে খুব ছোট মনে হচ্ছে। ক্ষমা করে 

দাও প্লিজ??


আমিঃ>>ওকে বাই?? 


এই কথা বলে ওর সামনে থেকে চলে আসলাম।। আমি জানিনা সব মেয়েরা একই রকম কিনা? তবে মেয়েদের দেখলে আমার সৎ মায়ের কথা মনে পড়ে যায়।। 

তখন মাথাটাও গরম হয়ে যায়।।আর সহ্য করতে পারি না কোনো মেয়েকে। 


পরের দিন.......


ক্লাসে বসে আছি, কিছুক্ষণ পর স্যার আসলো। এবং সবার উদ্দেশ্য করে একটা প্রশ্ন করলো......... 


স্যারঃ>>আচ্ছা বলোতো, ধর্ষনের জন্য দায়ী নারীদের পোষাক নাকি ছেলেরা নিজেই?? 


লেকচার স্যার রোজ রোজ কেমন পড়ানো শেষে অদ্ভুত প্রশ্ন করে। আজো তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রশ্ন শুনে 

সবাই চুপসে গেলো। তবে সবার ধারনা এমন প্রশ্নের উত্তর নিধি দিবে। কারন, সে তো ক্লাসের প্রথম। সবাইকে চুপসে থাকতে দেখে,,স্যার নিধিকে বললো....


স্যারঃ>>নিধি তুমি ধর্ষনের জন্য কাকে দায়ী করবে??


নিধিঃ>>আসলে স্যার ধর্ষকের জন্য মূলত ছেলেরাই দায়ী??


স্যারঃ>>কেনো.?? 


নিধিঃ>>কারন,ছেলেদের মন খুব নিকৃষ্ট হয়। ওরা মেয়েদেরকে যেমন নির্যাতন করে।

তেমনই যা ইচ্ছে তাই করায়? এই জন্য শুধু মাত্র ছেলেরা ধর্ষনের জন্য দায়ী??


আমিঃ>>মিস নিধি আপনি কি ধর্ষন হয়েছেন নাকি? অথবা এমন নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন? 

আমাদেরকে খুলে বলুন,তাহলে আমরা সবাই যথেষ্ট বুঝতে পারবো। মুলত দোষ টা ছেলেদের না মেয়েদের?? 


নিধির কথা শুনে মাথায় রক্ত উঠে গেলো। তাই দাঁড়িয়ে কথাটা জোরে বললাম। স্যার সহ,, সবাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাে।। তারপর আমি স্যারকে বললাম......... 


আমিঃ>>আসলে নিধির ধারনা টা সম্পুর্ণ ভূল স্যার। কারো মন কখনো নিকৃষ্ট হয় না, নিকৃষ্ট করে দেয়। নিকৃষ্ট হয় সামজের কিছু অন্ধ বোঝা মানুষদের কারনে। তারা ধর্ষিতার দিকে আঙ্গুল তোলে। কিন্তু একবারো ভাবে না তার পরিবারের সাথে যদি এমন হতো? আর ধর্ষকের জন্য ছেলে মেয়ে উভয় দায়ী। কারন, আমাদের মনটা ঠিক তখনই নিকৃষ্ট পর্যায় থাকে। যখন ফ্যাশনের নামে আমরা, মেয়েরা ছেলেদের শার্ট প্যান্ট ব্যাবহার করি। কিন্তু একবারও ভাবি না এসব শার্ট-প্যান্ট পড়লে তার দিকে কারা লোলুভ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। 

|||

আমরা মুসলিম এর নাম বিক্রি করে বোরকা পড়ি শরীরের সাথে পিটিং করে। আর বলি,, ইসলাম আমার ধর্ম,, পর্দা আমার জন্য। এটা কি পর্দা, ইসলামে কি এই সব পর্দার কথা বলা হয়েছে৷

কিন্তু একবারো ভাবি না এই পোষাকে আমার বাহ্যিক সৌন্দর্য কেমন পর্যায়ে যাবে।

|||

আমরা মেয়েরা এই সমাজে বাস করি৷ কিন্তু একবারও চিন্তা করি না। এই সমাজেই ধর্ষন হয়। তারা পাড়ার মোড়ে,রাস্তায় দিন রাত ভোর টিজ করে বেড়ায়। এখন তাদের সামনে যদি এমন পোষাক পরে কেউ যায়। নিশ্চয়ই সেই ছেলেদের মনটা আরও নিকৃষ্ট হবে। ফলে যা হবার তাই হবে।আমরা ছেলেরা নিজের ধর্মের কথা ভুলে গিয়ে রাস্তায় আড্ডা মেরে বেড়াই।। 

যদি আমরা সৃষ্টি কর্তার ভয়ে পরোপারের জন্য ভালো কাজ করি, নামাজ পড়ি তাহলে এমন ধর্ষক আর হবে না সমাজে। এমন বাজে ছেলে আর হবে না সমাজে। শালীনতা বজায় রেখে পোষাক পরি তাহলে হবে না এই সমাজে কেউ ধর্ষিতা??


আমার কথা শুনে সবাই এক সাথে বলে উঠলো, বাহহহ সুন্দর উত্তর। আমি কথাগুলো বলে দীর্ঘঃশ্বাস ছাড়লাম। মনে পড়লো আমিও তো এই সমাজের একজন খারাপ ছেলে। যার হাতে খুন হয়েছে কত মানুষ। তবে আমি সেটার থেকে বের হওয়ার জন্য এখানে এসেছি। ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টাতে আছি।


ক্লাস শেষ করে আমি সবার শেষে এবং একটু লেট করে ক্যাম্পাস থেকে বের হলাম। ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে একটু দূরে আসতেই দেখি কয়েকটা ছেলে নিধিকে টিজ করছে। আমি সেখানে গিয়ে বললাম......


গল্পঃ_মাস্তানি (পর্ব_০৪)

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল। 


ক্লাস শেষ করে আমি সবার শেষে এবং একটু লেট করে ক্যাম্পাস থেকে বের হলাম। ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে একটু দূরে আসতেই দেখি কয়েকটা ছেলে নিধিকে টিজ করছে। আমি সেখানে গিয়ে বললাম......


আমিঃ>>এখানে কি হচ্ছে?? 


তাদের মধ্যে লিডার টাইপের ছেলেটা আমাকে দেখে বললো.....


ছেলেটাঃ>>সরি ভাই আপনি এখানে যানতাম না, ভূল হয়ে গেছে। ক্ষমা করে দিন?? 


সে এই কথাটা বলে দৌঁড়ে পালিয়ে গেলো। ঠিক তখনই নিধি আমার দিকে তাকালো আর বললো.......


নিধিঃ>>কে তুমি.??


আমিঃ>>মানুষ.?? 


নিধিঃ>>সেটা তো বুঝলাম, কিন্তু ওরা তোমাকে দেখে ভয় পেয়ে চলে গেলো কেনো??


আমিঃ>>আমি কি করে বলবো? 


নিধিঃ>>তোমাকে ওরা ভাই করে বললো, সত্যি করে বলো কে তুমি?? 


নিধির দিকে রাগী চোখে তাকালাম। এতে সে চুপ হয়ে গেলো। আমি আর কিছু না বলে সোজা সেখান থেকে চলে আসলাম। 


হাঁটতেছি আর ভাবতেছি,ওরা কিভাবে চিনলো আমায়। তাহলে কি এখানে ও থাকা হবে না। আমি তো মাস্তানি ছেড়ে দেওয়ার জন্য সবকিছু ছেড়ে এখানে চলে এসেছি। কিন্তু ওরা তো আমাকে ঠিকই চিনতে পারছে। 


গত রাতে সেই লোকটাকে মার্ডার করা হয়েছে। কথাটা ভাবতেই কেমন যেন অনুশোচনা হচ্ছে মনের মধ্যে। আমি আবারও সেই কাজে জড়িয়ে যাচ্ছি কি?? কিন্তু আমিতো ভালো হতে চাচ্ছি। অবশ্য মার্ডার আমি করিনি। আমার লোকজন করেছে।


ক্যাম্পাসে বসে উপরের কথাগুলো ভাবতেছি।। তখনই কোথায় থেকে যে এই নিধি চলে আসলো বুঝতে পারি নাই। আর এসেই আমাকে বললো.....…..


নিধিঃ>>এই জীবন সাহেব,,তোমার ফোন নাম্বারটা 

দাও তো?? 


আমিঃ>>মানে নাম্বার কেনো?


নিধিঃ>>বারে, নাম্বার না দিলে কথা বলবো কিভাবে তোমার সাথে। তোমাকে তো ভালোবাসি আমি??


আমিঃ>>ভালো??


কথাটা বলে উঠে চলে আসতে লাগলাম।। ঠিক তখনই নিধি আমার হাতটি ধরলো। আর বললো.......


নিধিঃ>>আচ্ছা তুমি এমন গোমড়া মুখো কেনো?

কখনো ভালো করে কথা বলোনি কেনো? কি 

হয়েছে তোমার হুমমম?? 


আমিঃ>>হাত ছেড়ে দাও?? 


নিধিঃ>>আগে বলো, তোমার সমস্যাটা কোথায়? তুমি সবাইকে এমন এড়িয়ে চলো কেনো? প্রবলেম কি??


আমিঃ>>আমার প্রবলেম হলো আমি মেয়েদের একদম সহ্য করতে পারি না??


নিধিঃ>>হিহিহিহিহি,,,তার মানে ছ্যাকা খাইছো। ওকে ব্যাপার না,,,আমি তো আছি তোমাকে ভালোবাসার জন্য তাইনা??


আমিঃ>>চুপপ,,আমি জীবনে মেয়েদের সহ্য করতে পারলাম না। আর ছ্যাকা খাইছি তাই না??


নিধিঃ>>তাহলে বলো তুমি এমন কেনো? আর কেনো সহ্য করতে পারো না??


কোনো কথা না বলে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে চলে আসলাম। আরেকটু সময় থাকলে রাগটা কন্ট্রোল করতে 

পারতাম না। তখন খারাপ কিছু করে বসতাম। ক্লাসে এসে সেই বেঞ্চটাতে চুপচাপ বসে পড়লাম। একটু পরেই স্যার আসলো। স্যার এসে স্যারের মত পড়ানো শুরু করলো। কিন্তু সে দিকে আজ আমার মন নেই,,, মনটা নিধিরও নেই। মেয়েটা সেই তখন থেকেই তাকিয়ে আছে আমার দিকে। যা আমার কাছে যথেষ্ট বিরক্তিকর লাগতেছে। কিছুক্ষণ পর স্যার আমাকে বললো......... 


স্যারঃ>>কি ব্যাপার জীবন,,এমন করে বসে আছো কেনো??


আমিঃ>>নাহহহ মানে, কিছু না স্যার??


স্যারঃ>>কি হয়েছে আমাকে বলো??


আমিঃ>>কিছু না স্যার, হটাৎ আব্বুর কথা মনে পড়ে গেলো তো তাই??


স্যারঃ>>ওহহ..??


স্যার আমার কাছে এসে কথাগুলো বলে আবার সামনে চলে গেলেন। আজকেও অদ্ভুত ১টা প্রশ্ন শুরু করলো...


স্যারঃ>>আচ্ছা কে বলতে পারবে,,,মানুষ সুখটাকে নিজের জীবনে পেলে সেটা ছাড়তে চায় না,আবার দুঃখ আসলে আমরা সেখান থেকে বের হওয়ার যুদ্ধে লিপ্ত হই। এটা কেনো করি। সুখ আমরা বারবার চাই কেনো। দুঃখটাকে কেনো চাই না। সুখ দুঃখ তো একে অপরের সাথে জড়িত। তাহলে কেন এমন করি আমরা??


স্যারের প্রশ্ন শুনে আমি প্রথম উঠে দাঁড়ালাম। আর 

বললাম........


আমিঃ>>স্যার,, মানুষ এমন একটা জীব,, যেটা নিজের ভালো বুঝতে পারে। মানে,,আমরা মনে করি নিজে ভালো তো সব ভালো। আর এই নিজেকে ভালো থাকার মধ্যে রাখতে গিয়ে আমরা চরম পর্যায়ে পৌছে যাই। অর্থাৎ একটু সুখের জন্য অনেক কিছুই করতে হয়। যার কারনে দুঃখ টাও আরামের কাছে আসে। সুখ দুঃখের মাঝেই জীবন আমাদের। 

কিন্তু আমরা সুখটাকে বেশি ভালোবেসে ফেলি। তাকে আগলে রাখতে চাই। বরন করে থাকি চাদরে। তখনই ভুলে যায় দুঃখটাকে। তুচ্ছ মনে করি,,, তাই দেখবেন অনেকেই বলে এখন সুখে আছি,,দুঃখ আর আসবে না জীবনে। মূলত ভুলটা সেখানেই। সুখের পরেই দুঃখ আসবেই। সুখের সময় সেটা আগলে রাখার জন্য যেমন কাজ করি। তেমন দুঃখটাকে তাড়ানোর জন্যও সে রকম কাজ করি। আমরা যদি মনে রাখি সুখের পরে দুঃখ আসবেই। আবার দুঃখের পরেই সুখ আসবে। তাহলে জীবনে খারাপ সময়ে পড়তে হবে না। আমরা দুঃটাকে বরন করি না। তাড়ানোর কাজে লিপ্ত হয়ে যাই। ফলে সেটা আমাদের জীবনে জড়িয়ে যেতে থাকে??


স্যারঃ>>হুমমম,,ঠিকই বলেছো তুমি??


ক্লাস শেষ করে বাইরে চলে আসলাম। ঠিক তখনই নিধি আমার পাশে এসে হাটতে লাগলো। আর বললো.....  


নিধিঃ>>তুমি কোন কলেজে পড়তে এর আগে??


আমিঃ>>কেনো.??


নিধিঃ>>তুমি এতো সুন্দর করে কথা বলো,অবশ্যই সেই কলেজটা উন্নত ছিলো। কিন্তু চলে আসলে কেনো সেই কলেজ থেকে? কি হয়েছিলো??


আমিঃ>>কিছু হয়নি??


নিধিঃ>>বুঝতে পারছি,, ঐ কলেজের কোনো একটা মেয়েকে ভালোবাসতে,, সে ছ্যাকা দিয়েছে। ফলে কলেজ ছেড়ে এখানে চলে এসেছো,,তাই না??


আমিঃ>>থাপ্পড় চিনো??


নিধিঃ>>হুমম আগে কত খেয়েছি গালে??


আমিঃ>>আমি দিবো খাবে??


নিধিঃ>>হুমম দাও না,প্লিজ খাবো??


কিছু না বলেই তাড়াতাড়ি চলে আসলাম সেখান থেকে। অন্য সময় হলে থাপ্পড় না এতদিনে খুন করতাম। 

কিন্তু আমি তা করবো না। কারন আমি ভালো হতে চাই। আস্তেআস্তে বের হতে হবে অন্ধকার জগত থেকে। নিজেক সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করার জন্য গড়ে তুলতে হবে। 


পরেরদিন.......


ক্লাসে ব্যাগটা রেখে বাহিরে এসে বসে আছি। একটু পর নিধি আসলো পাশে। কিন্তু সে আজ কিছুই বলছে না। চুপচাপ বসে আছে। তাই আমি নিধিকে বললাম........


আমিঃ>>কি হলো,, আজ কিছু বলছো না যে??


কিছু না বলে নিধি আমার দিকে রাগি চোখে তাকালো। কিন্তু কেনো.? কি করলাম আবার আমি। আমি নিধির এমন তাকানো দেখে বললাম....... 


আমিঃ>>কি হলো,,এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?


কিছু না বলে সে আমার সামনে থেকে চলে গেলো।আর আমি হাবার মতো চেয়ে আছি। কিন্তু আজ তো আমি কিছুই করিনি। না ধাক্কা দিয়েছি,,, না কাগজ ছুড়েছি। তাহলে সে এমন করছে কেনো? ধুরর করলে আমার কি? ক্লাসে চলে আসলাম। তবে নিধির দিকে তাকাতেই দেখি সে মাথাটা নিচু করে আছে।


অন্যদিন হলে তো নিধি আমার দিকে তাকাতো।। কিন্তু আজ কি হয়েছে ওর। সারাটা ক্লাসে সে ওভাবেই ছিলো। আজ একবারও তাকায়নি আসে পাশে। তবে কি সে জেনে গেছে আমি কে? কিন্তু কিভাবে জানবে। তখনি ব্যাগে হাত দিয়ে দেখলাম পিস্তলটা ঠিক আছে নাকি? হুমম সবই তো ঠিক আছে। কিন্তু সে কি জেনে গেলো??


আজ তিন দিন হলো নিধি কথা বলে না।। আমার দিকে ও তাকায় না। যাক ভালোই হয়েছে,,,আমাকে জ্বালানোর বা প্রশ্ন করার মতো আর কেউ নেই। এসব কথা ক্যাম্পাসে বসে বসে ভাবছি। ঠিক তখনি নিধি আসলো আমার কাছে। অামি নিধিকে বললাম........


আমিঃ>>আরে তুমি? তো কি মনে করে আবার?


নিধি......... ( চুপ করে তাকিয়ে রইলো)


আমিঃ>>কি ব্যাপার চুপ করে আছো কেনো?? 


একটু এদিক সেদিক তাকিয়ে,, গম্ভীর মুখে সে আমার দিকে তাকালো। মুখে যতটা সম্ভব রাগ এনে আমাকে বললো..........


নিধিঃ>>কে তুমি..??


প্রশ্নটা শুনে চমকে উঠলাম। সেই সাথে চুপ হয়ে গেলাম।আবার জিজ্ঞেস করলো,, সেই একই প্রশ্ন। আমি চুপ করেই বসে রইলাম। সে আবার আমাকে বললো.........


নিধিঃ>>আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি,,আমার প্রশ্নের উত্তর দাও না কেনো। বলো কে তুমি??


আমিঃ>>আরে কে মানে? আর এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর থাকে নাকি??


আমার কথায় সে কোনো ভ্রু-ক্ষেপ না করে আবারো আমাকে প্রশ্ন করলো.......


নিধিঃ>>তোমার পরিচয় কি? বাসা কোথায় তোমার.??


আমিঃ>>নিধি,,, এসব কি বলছো?? আর আমাকে কেনো এসব বলছো তুমি। আমি বাধ্য নয় তোমার প্রশ্নের উত্তর দিতে??


নিধিঃ>>তাই নাকি,, তাহলে এটা কি। কেনো তোমার ব্যাগে থাকে??


নিধি পিছন থেকে হাত সামনে এনে দেখালো।হাতে যেটা দেখলাম,, সেটা দেখার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। মানে ওর কাছে এটা দেখবো বলে। কিন্তু সে এটা পেলো কোথায়। তারপর আমি নিধিকে বললাম....


আমিঃ>>দাও এটা,,এটা তোমার কাছে কেনো??


নিধির হাত থেকে পিস্তলটা কেড়ে নিয়ে তাড়াতাড়ি করে আমার কোমরে গুজলাম। কিন্তু সে পিস্তলটা পেলো কোথায়। কিছুক্ষণ পর নিধি আমাকে বললো........... 


নিধিঃ>>তোমরা ব্যাগে এটা কেনো??


আমিঃ.........( চুপ করে রইলাম )


নিধিঃ>>কি হলো বলো,,আমাকে বলতেই হবে??


আমিঃ>>নিধি তুমি ক্লাসে যাও??


নিধিঃ>>আগে তুমি আমাকে বলো,এটা কেনো তোমার ব্যাগে? কে তুমি বলো?? কেনো তুমি এখানে আসছো সবকিছু আমাকে বলো?? 


আমিঃ>>নিধি ক্লাসে যাও?


নিধিঃ>>আমার প্রশ্নের উত্তর দাও। না হলে কিন্তু.?? 


আমিঃ>>না হলে কি.??


নিধিঃ>>বুঝতে পারছো না??


নিধির দিকে তাকালাম, ইচ্ছে করছে এখানেই বন্দুকের সব গুলো বুলেট তার মাথার বিতরে চালিয়ে দেই।কিন্তু নাহহ.....


নিধিঃ>>কি হলো বলো, তোমার কাছে এটা থাকে কেনো?? 


আমিঃ >>আসলে পিস্তল থাকে,,নিজেকে বাঁচানোর জন্য??


নিধিঃ>>মানে। কেনো??


আমিঃ>>মানে আমি একজন মাস্তান, যে এলাকাতে থাকতাম সেখানকার টপ মাস্তান আমি। তাই..??


নিধিঃ>>কেনো.??


আমিঃ>>আরে কেনো মানে? মাস্তানি করি তাই মাস্তান??


নিধিঃ>>কেনো মাস্তানি করো? তোমার ফ্যামিলিতে সবাই মাস্তান নাকি??


আমিঃ>>হাহাহাহা,,ফ্যামিলি??


নিধিঃ>>মানে??


আমিঃ>>এই পৃথিবীতে কেউ নেই আমার??


নিধিঃ>>মানে,,,তাহলে মাস্তানি করো কেনো??


আমিঃ>>পরিস্থিতির স্বীকার তাই মাস্তানি করি?? 


নিধিঃ>>কি হয়েছিলো??


কিছুক্ষণ চুপ থেকে দীর্ঘ একটা নিশ্বাস ছাড়লাম আমি। তারপর নিধির দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে পুরোনো স্মৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে লাগলাম..........


গল্পঃ_মাস্তানি (পর্ব_০৫_)

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল। 


কিছুক্ষণ চুপ থেকে দীর্ঘ একটা নিশ্বাস ছাড়লাম আমি। তারপর নিধির দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে পুরোনো স্মৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে লাগলাম..........


সব পরিবারের মতো আমাদের পরিবারেও সুখ ছিলো।।

ছিলো অনেক কিছুই। আমার যখন ১৪ বছর তখন আমার মা মারা যায় ক্যান্সারে। সেদিন খুব কেঁদেছিলাম আমি। সেদিন বুঝেছিলাম মা আসলে কি জিনিস। আব্বুও মাকে খুব ভালোবাসতো। মায়ের মৃত্যুতে আব্বু ভেঙে পড়েছিলো খুব। কিন্তু আমি যখন কলেজে উঠলাম। অর্থাৎ আমার আব্বু আমার মা মারা যাওয়ার তিন বছর পড়ে বিয়ে করে আরেকটা। তিনি ভেবেছিলেন আমাকে একা করবে না, মায়ের অভাব পুরন করবে বলে বিয়ে করেছে। কিন্তু নাহ সেই রকম কিছুই হয়নি।আসলে সৎ মায়েরা আপন হয় না কখনো।

তিনি ছিলেন লোভী একজন মহিলা। 


একদিন কলেজ থেকে বাসায় গিয়ে দেখি,, আমার সৎ মা আব্বুর বেড রুমে অন্য একটা লোকের সাথে একই বিছানাতে। এসব দেখার পর নিজেকে বড্ড অসহায় লাগতো। কিছু বলতে গেলেই আমাকে মারতেন তিনি। 

এমনকি একদিন কলেজ থেকে বাসায় গিয়ে দেখি,, সেই লোকটা রুম থেকে বের হচ্ছে। তার কিছুক্ষণ পর মা-ও বের হয়। তখন আমি মাকে বললাম.........


আমিঃ>>কি ব্যাপার মা লোকটা কে??


সৎ মাঃ>>কেনো??


আমিঃ>>তোমার রুমে সে কি করে??


সৎ মাঃ>>মানে তোকে বলতে হবে কেনো?? 


আমিঃ>>আমি কিন্তু আব্বুকে সব বলে দিবো??


কথাটা বলতেই ঠাসসস করে একটা চড় বসিয়ে দিলো। 

আর বলতে শুরু করলো........ 


সৎ মাঃ>>বেয়াদপ ছেলে, তুই যদি তোর বাবাকে কিছু বলিস তাহলে সেদিন তোকে সহ তোর বাবাকে খুন করবো। যা নিজের কাজ কর??


কথা গুলো শুনে চুপ করে রইলাম। চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়তে লাগলো। তবে একদিন বাবাকে সব বলি...


আমিঃ>>আব্বু ওই মহিলা ভালো না??


আব্বুঃ>>কি? জীবন কাউকে সম্মান দিতে শিখোনি তোমার মা হয়??


আমিঃ>>হুমম মা হয়, তবে সৎ মা??


আব্বুঃ>>কি হয়েছে??


আমিঃ>>উনি তোমার অনুপস্থিতে বাহিরের লোক এনে তোমার বেড রুমে......??


পুরোটা বলার আগেই ঠাসসস করে একটা চড় বসিয়ে দিলো। আর বলতে শুরু করলো............ 


আব্বুঃ বেয়াদপ ছেলে তুমি কি বলছো এসব?? 


সেদিন আমি আব্বুর মুখের দিকে কান্না ভরা চোখ নিয়ে তাকিয়ে ছিলাম। তারপর বললাম........ 


আমিঃ বিশ্বাস না করলে তুমি দেখে নিও??


কথাটা বলে আমি চলে আসলাম আমার রুমে। একদিন রাতে ঘুমিয়ে আছি, তখনই কারো চিৎকারে আমার ঘুম ভেঙে যায়। চিৎকার আসে আব্বুর রুম থেকে। দৌড়ে সেখানে গেলাম। গিয়ে দেখি আমার আব্বুকে সৎ মা আর সেই লোকটা খুন করছে।ছুরি দিয়ে আঘাত করছে বারবার। আব্বুর ক্ষত-বিক্ষত দেহ দেখে আমি চিৎকার করে বললাম......


আমিঃ>>আব্বু..??


সৎ মাঃ>>ওটাকেও ধর??


ওদেরকে ধাক্কা দিয়ে আমি আব্বুর কাছে গেলাম। তখন আব্বু আমাকে বলেছিলো........


আব্বুঃ>>জীবন তুই কোনোদিন রাগের বসে কিছু 

করে বসবি না??


কথাটা বলে তিনি মারা যান। ঠিক তখনই রাগ উঠে যায় 

আমার। খুন করি সেই লোকটাকে আর আমার সৎ মাকে। তারপর থেকে আমি পাল্টে যাই। একটা গ্যাং হয় আমার। লক্ষীপুরের সবাই আমাকে এক নামে চিনে। 

আমাকে ভয় পায়। হয়ে উঠি মাস্তান। সারা এলাকায় মাস্তানি করে বেড়াতাম। কিন্তু প্রায় সময় আব্বুর কথাটা মনে হতো।। তাই ভালো হওয়ার জন্য এখানে এসে নতুন করে ভর্তি হই। 


কিছু না বলে নিধি সেখান থেকে উঠে চলে গেলো।আমি 

অবাক হয়ে তার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। কিন্তু সে কেনো চলে গেলো?? ক্লাসে বসে আছি,, নিধি আমার দিকে বারবার তাকাচ্ছে।। কিন্তু সেই তাকানোর মাঝে আছে একটা ক্ষোভ আর রাগ। কিন্তু আমি কি করলাম। আমি তো নিধির কোনো ক্ষতি করিনি।। বসে বসে এসব ভাবতেছি,, ঠিক তখনই স্যার চলে আসলো। আর এসেই আমাকে বললো...........

 

স্যারঃ>>জীবন তুমি বলো তো,, মানুষ কেনো সার্থপর হয়? যেখানে বলা হয়ে থাকে মানুষ মানুষের জন্য??


আমিঃ>>স্যার মানুষ সার্থপরতা শিখে পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে। যদি কারো সাথে খারাপ কিছু হয়, তখন সে সেখান থেকেই সার্থপর হয়ে যায়??


স্যারঃ>>তাহলে মা বাবা কেনো সার্থপর হয় না?? 


আমিঃ>>স্যার,, মা-বাবা হলো পৃথিবীর সবচেয়ে অমুল্য সম্পদ। যার এই দুটি সম্পদ নেই সে মোটেও ধনী নয় স্যার৷ আর তারা মোটেও সার্থপর হয় না। কারন তাদের মন সন্তানের জন্য সব সময় পবিত্রতায় ভরা থাকে। সন্তান যত বড় ভুল করুক না কেনো, মা-বাবার কাছে সে কিছুই করেনি। এটাই হলো ভালোবাসা স্যার। 

এটাই হলো সন্তানের প্রতি পিতা-মাতার ভালোবাসা। কিন্তু কেনো স্যার এমন প্রশ্ন??


স্যারঃ>>আসলে আমার ছেলেটা আবার ফিরে 

এসেছে তো তাই??


কিছু না বলে মুচকি হেসে বসে পড়লাম।সামনে তাকিয়ে 

দেখি নিধি নেই। কিন্তু কোথায় গেলো সে?? ক্লাস শেষ করে বাহিরে বের হলাম। কেনো জানি না আজ মনে হচ্ছে, এই কলেজে আসা আজকেই শেষ দিন। হয়তো আর আসতে পারবো না। চারদিকে দেখে নিলাম ভালো করে একবার। ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার আগে চারদিকে চোখটা বুলিয়ে নিলাম একবার। ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে আমি অবাক। সামনে দেখি নিধি দাঁড়িয়ে আছে,, আর তার গায়ে পুলিশের পোষাক.......


আমিঃ>>নিধি তুমি??


নিধিঃ>>অবাক হচ্ছো, এটা নাও...??


হাত বাড়িয়ে সে যা দিলো সেটা হলো আমার পিস্তলটা। 

যা আমার ব্যাগেই থাকতো। কিন্তু সে এটা পেল কোথায়। আর তাহলে কি আমার কাছে অন্য একটা। ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে নিধি বললো.......


নিধিঃ>>কি হলো ধরবে না?? 


আমিঃ>>.......(চুপ করে রইলাম)


নিধিঃ>>খুব খুঁজেছি তোমায়। তুমি খুব নিখুঁত মস্তান ও খুনি। অনেক খুঁজে শেষে তোমাকে এখানে পেলাম??


আমিঃ>>.......(চুপ করে আছি)


নিধিঃ>>সেদিন ওই টিজাররা ভাই বলায় খুব সন্দেহ হয় তোমাকে। তারপর থেকে তোমাকে ভালোবাসার ফাঁদে ফেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তুমি পড়োনি। 

কিন্তু রোজ দেখতাম তুমি তোমার ব্যাগের কাছ থেকে নড়তে না। তাই সন্দেহ আরো বেড়ে যায়। 

আর তোমার পরিচয়হীন শহরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, তুমি সেই। মাস্তান জীবন। আর বড় কথা হলো সেদিন তোমাকে ফোনে কথা বলতে শুনেছিলাম। 

শুনেছিলাম কাউকে খুন করবে। আর যাকে খুন করেছিলে সে হলো আমাদের ডিপার্টমেন্টের একজন পুলিশ। তোমার উপর নজর রাখতে তাকে 

আমি পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু তুমি তাকেও মেরে দিলে??


আমিঃ>>বাহ বাহ তাহলে আগে কেনো ধরোনি? কেনো আমার পুরোনো কথা গুলো শোনার পর ধরলে? আমি তো ভালো হতে চেয়েছি??


নিধিঃ>>.......(চুপ করে আছে)


আমিঃ>>আমার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করলা??


নিধিঃ>>হুমমম??


আমিঃ>>প্রমান হয়ে গেলো মেয়েরা সত্যিই নিকৃষ্ট??


কথাটা বলে নিধির হাত থেকে পিস্তলটা কেড়ে নিলাম।। 

সোজা কপাল বরাবর ধরে যেই নটিগার টানতে যাবো ঠিক তখনই কেউ একজন আমার পায়ে গুলি করে। 

পিছনে তাকিয়ে দেখি সাতজন পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। তার মানে এদের মধ্যে কেউ একজন গুলিটা করেছে আমার পায়ে। কিছু মনে নেই আর। যখন জ্ঞান ফিরলো 

তখন দেখি আমি থানার মধ্যে। বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে নিধি। কিছু না বলে চুপ করে মুখের দিকে তাকালাম। আর মনে মনে ভাবলাম......


নিধিঃ তো মিস্টার জীবন, খুব সমাজের হয়ে লেকচার দেন তাইনা? খুবই বুদ্ধিমান ছিলেন তাইনা? কিন্তু 

এখন আর সে সব দিয়ে কাজ নেই। আপনার ফাঁসির ব্যাবস্থা করছি??


হায়রে মানুষ, ভালো হওয়ার সুযোগটুকু দিলো না।।আর তাকে তো বিশ্বাস করেই নিজের মুখে সব বলেছি সব। 

তারপরেও তুই এমনটা করতে পারলি। আসলে বিশ্বাস নিয়ে খেলাটা তোর মতো মেয়েদের কাছে একটা মজার ব্যাপার। আমাকে বলে দিলেই তো হতো। নিজে এসে ধরা দিতাম তোর কাছে। চেয়েছিলাম একটা ভালো মানুষ হবো আগে,তারপর নিজে এসে দরা দিবো। কিন্তু ভালো আর হতে দিলি না। 


তবে এখানে শেষ নয়। আমি যেভাবে হোক এখান থেকে বের হবো। বের হয়ে শুরু করবো আবার মাস্তানি। প্রথম খুন করবো তোকে। কারন তুই আমার বিশ্বাসকে খুন করেছিস।। আর আমি করবো তোর দেহের খুন।।একটু জোরে হেঁসে উঠলাম। হাসিটা ছিলো এক পৈশাচিক হাসি.......


গল্পঃ_মাস্তানি (পর্ব_০৬_)

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল। 


তবে এখানে শেষ নয়। আমি যেভাবে হোক এখান থেকে বের হবো। বের হয়ে শুরু করবো আবার মাস্তানি। প্রথম খুন করবো তোকে। কারন তুই আমার বিশ্বাসকে খুন করেছিস।। আর আমি করবো তোর দেহের খুন।।একটু জোরে হেঁসে উঠলাম। হাসিটা ছিলো এক পৈশাচিক হাসি.......


দীর্ঘ ০৬ মাস পর...... 


পড়ন্ত বিকেলে ছাদের কর্নারে একা দাঁড়িয়ে আছি৷অস্তি যাওয়া সূর্যের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। এই সূর্যের রশ্মি খুব একটা চোখে পড়ছে না।তাই নিথর দাঁড়িয়ে সেটা দেখছি। মাঝে মাঝে মৃদু বাতাস বইছে,,, যার ফলে কিছু পূরোনো সৃতি মনের কোনে উদি দিয়ে উঠছে। যা আমি চাই না সেগুলো মনে করতে। 


কিন্তু মানুষের মন যেমন নরম ঠিক তেমনই লাগামহীন। চাইলেই সব বাধা,, সৃতি মন থেকে মুছে ফেলা যায় না। অথবা না ভেবেও থাকা যায় না। 


মনে পড়তেছে ০৬মাস আগের কথা। মনে পড়ছে নিধির 

বিশ্বাস নিয়ে খেলার কথা। আমি চেয়েছিলাম ভালো হতে। কিন্তু নিধি সেটা আর হতে দিলো না। ইচ্ছে করলে আমি সেদিন তাকে মেরে ফেলতে পারতাম। যেদিন জেল থেকে বের হয়েছিলাম। কিন্তু আমব করিনি। 

আমার সম্পর্কে নিধির বিন্দু মাত্র ধারণা নেই। আমি কতটা ভয়ংকর তাকে আমি হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দিবো। 


ইচ্ছে করলে আমি সবার সামনে আমার মাস্তানি করতে

পারতাম। তবে সেটা করিনি। কারন,সেদিন যদি মেরে ফেলতাম,, তাহলে নিধির অজানা থেকে যেতো আমার সম্পর্কে! তাই মারিনি। নিধিকে দেখিয়ে দিবো আমি কতটা ভয়ংকরআর আতঙ্ক। আজ আমি সমাজে অন্যরকম। সমাজের কাছে এক ভয়ংকর কিলার,এবং আতঙ্ক.....


ছাদে দাঁড়িয়ে এসব কথা ভাবতে লাগলাম।। এমন সময় বাড়িওয়ালার মেয়ে ফিজা ছাদে চলে এসেছে। এই মেয়ের বাড়িতে আসার পর থেকে আমার পিছনে উঠে পড়ে লেগেছে। কি এক অসহ্য যন্ত্রণা বলে বুঝাতে পারবো না আমি। এসেই আমাকে জিজ্ঞেস করলো.....


ফিজাঃ>>কি মিঃ জীবন আহমেদ কি ভাবছেন এমন উদাস হয়ে? এদিকে যে সন্ধ্যা নেমে গেছে প্রায়, 

সেদিকে খেয়াল আছে??


আমার মাথাটা এবার এই মেয়েটা খেয়ে ফেলবে। কারন সে আমাকে শুধু প্রশ্ন করে। তবে মেয়েটা মাশাল্লাহ। চোখের চাহনিতে যে কোনো ছেলে প্রেমে পড়তে বাধ্য। সেই এক নজর কারা দৃষ্টি তার। কিন্তু আমি তো কিলার,,, তাই এড়িয়ে চলি।। বিরক্তিকর ভাব নিয়ে ওর দিকে তাকালাম। আমার এমন তাকানো দেখে ফিজা আমাকে জিজ্ঞেস করলো......... 


ফিজাঃ>>ওভাবে তাকাবেন না জীবন আহমেদ। আচ্ছা আপনার নাম এত বড় কেনো? আমি জীবন আহমেদ বলে ডাকতে পারবো না। আমি ছোট করে জীবন বলে ডাকবো বুঝলেন?? 


আমি কোনো কথা না বলে,, রাগী লুক নিয়ে আবার ওর দিকে তাকালাম।যেদিন থেকে এখানে এসেছি,, সেদিন থেকেই জ্বালিয়ে যাচ্ছে। কোনো নোটিস ছাড়াই হুট হাট করে চলে এসে বকবক করতেই থাকে। যেটা আমার মোটেও সহ্য হয় না। 


এখন মেয়েদের দেখলেই কোমরে গুজে থাকা পিস্তলের মধ্যে হাত বুলিয়ে নেই। আর ইচ্ছে করে এখনই গুলি করে মেরে দেই। কিন্তু না, সবার আগে নিধিকে মারবো। তারপর নিধির পুলিশ টিমকে। 


এই দেশের মধ্যে জীবন আহমেদের গ্যাং বানিয়ে দিবো সব জায়গায়। দেখি নিধি কি করে। এসব মনে মনে ভাবতেছি। হটাৎ দুষ্টু মেয়েটা আবার জিজ্ঞেস করলো...


ফিজাঃ>>ও হ্যালো, হাবার মতো চেয়ে আছেন কেনো??


আমিঃ>>আচ্ছা প্রবলেমটা কি আপনার? আর আমি হাবা মানে 😠😠??


ফিজাঃ>>নীল আকাশের নিচে তুমি আর আমি সাইকেল চালিয়ে ঘুরবো। তুমি চালাবে আর 

আমি বসে থাকবো??


আমিঃ>>কিহহহ.??


ফিজাঃ>>না মানে,,,একটু রোমান্টিক হয়ে গেছিলাম আর কি?? 


আমিঃ>>এই তোর প্রবলেম কিরে?


ফিজাঃ>>এই ছেলে এভাবে কথা বলছেন কেনো হুমম? জানেন আমার বাসাতে কেউ আমাকে বকা দেয় না?রাগি গলায় কথা বলা তো দূরের কথা?? 


আমিঃ>>উফফ.? থাক তোর বাড়ির ছাদে। আমি গেলাম,,যত্তসব??


কথাটা বলে চলে আসতে যাবো, তখনই ফিজা আমাকে বললো........


ফিজাঃ>>এই আমি তোমাকে তুমি করেই বলবো। ওই সব আপনি করে বলা আমার ভালো লাগে না??


আমিঃ>>যা ইচ্ছে..??(ঝাড়ি দিয়ে)


ফিজাঃ>>ওই তুমি মাস্তান নাকি??


কথাট‌া শুনে রীতিমতো চমকে উঠলাম।। সে কি বুঝতে পারলো নাকি আমার ব্যাপারে কিছু? ঘুরে আবার ওর মুখের দিকে তাকালাম। মেয়েটা খুব দুষ্টু টাইপের,, যা বলার বাহিরে৷ খিল খিল করে দুষ্টু হাঁসি হেঁসেই চলেছে। আমি তাকে বললাম.......... 


আমিঃ>>এই মেয়ে কি বললে তুমি.??


ফিজাঃ>>আরে বললাম, মাস্তান নাকি তুমি? খালি বকা দাও। কথা বলো, কিন্তু মায়াহীন ভাবে কেমন বিদঘুটে ভাব একটা। চুপচাপ থাকো,,কি সব ভাবো। আমি কিন্তু রোজ দেখি হুমম.?না মানে বলছিনা তুমি মাস্তান। তুমি মাস্তান হতে যাবে কেনো? আসলে মুভিতে দেখেছি। তারা এমন চুপচাপ থাকে। আর খুন করার প্লান করে??


ইচ্ছে করতেছে এখনই মাথার ভিতরে সব গুলো বুলেট ঢুকিয়ে দেই। কিন্তু আমি যে প্রতিজ্ঞা করেছি আগে নিধিকে মারবো। তাই মারতে চাইলেও মারতে পারি না। 


কিন্তু এখানে কাউকেই বুঝতে দেয়া যাবে না। আমি যে একজন প্রফেশন্যাল কিলার৷ তাহলে এখানেও খারাপ কিছু হতে পারে। রাগটা একটু বেশিই,, তবুও এখানে কন্ট্রল করে থাকতে হবে। হয়তো রাগের কারনে

ফিজা সহ সবাইকে মেরে ফেলতে পারি।।আর কোনো কথা না বলে ফিজার সামনে থেকে চলে আসলাম।


সন্ধ্যা নেমেছে সেই কখন। কিন্তু আমার মনে বয়ে চলছে কালো রাতের এক দুঃস্বপ্ন। চাইলে অনেক কিছু করতে পারি। কিন্তু করবো না। নিধিকে মারবো আগে,,তারপর সবাইকে। এমন ভাবে নিধিকে মারবো মৃত্যুর যন্ত্রনা 

কত ভয়বহ সে বুঝতে পারবে। সে আমার বিশ্বাস নিয়ে খেলেছে। শুদু তাই না,দেশও বাসি এক নামে যুগ থেকে যুগান্তর মনে রাখবে আমার নাম। 


আমিও ঠিক সেভাবে খেলবো।।সে আমাকে ভালো হতে দেয়নি। আমিও তাকে ভালো থাকতে দিবো না।

তার রাতের ঘুম কেড়ে নিবো আমি। রুমে এসে একটা গরম কফি নিয়ে বেলকনিতে এসে দাঁড়ালাম। তখনই একটা ফোন আসে। ফোনটা হাতে নিতেই দেখি,রুদ্রের কল। কল রিসিভ করতেই সে আমাকে বললো.......


রুদ্রঃ>>ভাই, আপনি কোথায়??


আমিঃ>>কেনো??


রুদ্রঃ>>ভাই নিধি আজ রাতে মিশনে যাবে। আপনি খবর দিতে বলেছিলেন না তাই দিলাম??


আমিঃ>>ওকে.? আয় আসকা দিমু হালকার উপর ঝাপসা??( ডিপজল ভাইয়ার ডায়ালগ 😁😁 )


ফিজাদের বাসায় এসেছি ০৪ মাস এর বেশি হয়ে গেছে। এখানে থাকি এটা কেউ জানে না। আমার ঢাকাতে নতুন গ্যাং হয়েছে। যখন ভালো হতে চেয়েছিলাম,,,, 

তখন মানুষগুলো কেমন এড়িয়ে চলতো। আর যখন গ্যাং খুললাম তখন সবাই কেমন যেনো কাছে চলে আসলো।।আসলে গ্যাং এ টাকা ছড়াতেই সবাই কেমন আপন হয়ে গেলো। 


আর এরা এতটাই আপন হয় এই কারনেই,,,তারা জানে আমরা বিশ্বাস নিয়ে খেলা করি না। এই দিক দিয়ে ভালোই। যখনই চুপ থাকি, তখনই মনে পড়ে সৎ মায়ের কথা ও নিধির বিশ্বাস ঘাতকের কথা। তখন ইচ্ছে করে সবকিছু তছনছ করে দেই।আমার গ্যাং এর নাম দিলাম অবিশ্বাসের খুনি।


ভাবতেই অবাক লাগছে,আজ আর একটা মাডার হবে। আজ অনেক দিন পর নিধিকে দেখবো। সেই পুরোনো মুখ পুরোনো অভিনয়ের মেয়ে,, পুরোনো হাঁসি। তবে আমি যাবো অন্যরুপে। আজ তার জীবনের শেষ দিন। এখন যদি সে চিনে ফেলে, তাহলে খেলাটা তো হবে না। নিধিকে নিয়ে খেলবো বিশ্বাস ও ভালোবাসা নামক ব্লু হোয়েল গেম। যেটাতে বুঝিয়ে দেবো যন্ত্রনা কাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি?? 


আমি ভালোর ভালো,, খারাপের খারাপ। আমার কাছে অন্যায়ের নাই কোনো মাফ। তাকে আমি কষ্ট দিয়ে মারবো। তাহলে সে বুঝতে পারবে দুনিয়াতে অচল হয়ে জীবন যাপন করা কত কষ্টের। 


আমি ল্যামপোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে আছি। গায়ে কালো কোট মুখে কিছুটা দাঁড়ি। একটা গোঁফ, দূর থেকেই দেখলাম নিধি নামলো গাড়ি থেকে। কালো রঙের একটা শার্ট পড়া। প্যান্টের হাটুতে ছেড়া ছেড়া স্টাইল। ল্যামপোস্টের মৃদু আলোতে হাটুর ভিতরটা কেমন যেনো স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।


লক্ষ করে দেখলাম নিধি সহ কয়েকজন পুলিশ একটা গলির মধ্যে ঢুকলো। তখনই আমি একটা পৈশাচিক হাঁসি দিলাম। কারন নিধি যাকে ধরতে এসেছে। 

তাকে মেরে দিয়ে ফেলে রেখে এসেছি একটু আগেই। সরিয়ে দিয়েছে সুন্দর এই দুনিয়া থেকে। 


কিছুক্ষণ পর নিধি বাসা থেক বের হয়ে এলো। তারপর চারদিকে একবার তাকালো। আমার দিকে চোখ পড়তেই,,দেখলাম সে আমার মাথা থেকে পা পর্যন্ত ভালো করে লক্ষ করলো।। এরপর নিধি আমার কাছে 

এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলো........ 


গল্পঃ_মাস্তানি (পর্ব_০৭_)

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল। 


কিছুক্ষণ পর নিধি বাসা থেক বের হয়ে এলো। তারপর চারদিকে একবার তাকালো। আমার দিকে চোখ পড়তেই,,দেখলাম সে আমার মাথা থেকে পা পর্যন্ত ভালো করে লক্ষ করলো।। এরপর নিধি আমার কাছে 

এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলো........ 


নিধিঃ>>এই যে শুনুন??


আমি আস্তে আস্তে হেঁটে নিধির কাছে গেলাম। তারপর নিধিকে বললাম........


আমিঃ>>জ্বি বলুন কি বলবেন?? 


নিধিঃ>>আপনি কখন থেকে এখানে আছেন?? 


আমিঃ>>কেনো বলুন তো.??


নিধিঃ>>এখানে একটা খুন হয়েছে। আপনি কি দেখেছেন??


আমিঃ>>হুমম দেখেছি??


নিধিঃ>>কে কে খুন করেছে, বলতে পারবেন.??


আমিঃ>>তা ঠিক জানিনা,,তবে যাওয়ার সময় ওদের গ্যাং এর একজন জীবন বলে ডাকছিলো। ব্যস এই টুকুই শুনেছি??


নিধিঃ>>জীবন..??(চমকে উঠে)


আমিঃ>>জ্বি..??


নিধিঃ>>নাম কি আপনার.??


আমিঃ>>আকাশ.??


নিধিঃ>>মানে.??


কিছু না বলে নিধির দিকে তাকালাম।। অবাক হয়ে নিধি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কোমড়ে থাকা পিস্তলটা নিতে গেলাম। কিন্তু কেনো জানি নিজের অজান্তেই মন বলে উঠলো,, ওকে মারিস না।। তাই নিজের মনের ডাকে সাড়া দিয়ে সেখান থেকে চলে আসলাম। 

কিন্তু ওকে আমি উচিৎ শিক্ষা দিয়ে ছাড়বো।। জানি নিধি এখন কি ভাববে। ভাববে জীবন আহমেদের কথা। যাকে সে ছয় মাস আগে ধরেছিলো প্ল্যানিং করে।। তবে নিধি আর সেই সুযোগ পাবে না। তার আগে ওকে আমি পাঠিয়ে দেবো ওপারে।

প্যান্টের পকেটে দুই হাত গুজে শুলশান রাস্তায় হাঁটছি।। ঠিক তখনই দেখলাম পাশ দিয়ে নিধির প্রাইভেট কার চলে যাচ্ছে।। গাড়ির জানালা দিয়ে মুখ বের করে নিধি একবার আমাকে দেখলো। নিধির গাড়ি দুরে যেতেই,, হাহাহা করে চিৎকার দিয়ে হেঁসে উঠলাম। হাঁসিটা ছিলো এক পৈশাচিক হাঁসি। 


ফিজাঃ>>এই যে জীবন সাহেব??


সকালের উদিয়মান সূর্য এখনো পুর্ব আকাশে উঠেনি।। চার দিকে হালকা কুয়াশাতে ঢেকে আছে। এই যেনো জানান দিচ্ছে শীত আসতে আর দেরি নেই। 

সকালে হুট করেই ঘুম ভেঙ্গে যাওয়াতে ছাদে উঠে পায়চারি করছি। ঠিক তখনই ফিজা এসে উপরের কথাটি বললো। আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি,কোনো কথা বলছি না। চুপ থাকতে দেখে ফিজা বললো......


ফিজাঃ>>কি হলো মিঃ.??


আমিঃ>>কিছু না??


ফিজাঃ>>এতো সকাল সকাল ছাদে কি??


আমিঃ>>এমনি,,আর আপনাকে এতো কথা বলবো কেনো? আপনার বাড়িতে আছি বলে,আপনার সব

যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে। আর এমন জ্বালাতন 

করবেন না??


ফিজাঃ>>আচ্ছা একটা প্রশ্ন করি??


আমিঃ>>জ্বি বলুন??


ফিজাঃ>>এই তুমি আমাকে আপনি করে বলছো কেনো। তুমি করে বলবা। নয়তো ঘাড় ধরে বাসা

থেকে বের করে দিবো?? 


আমিঃ>>আপনার বাসা আপনি যা ইচ্ছে, তাই করতে পারেন?? 


ফিজাঃ>>আচ্ছা তোমার জি এফ আছে?? 


প্রশ্নটা শুনে ফিজার দিকে তাকালাম। মুখটা যথা সম্ভব গম্ভীর করে চেয়ে রইলাম ওর দিকে। আমার এমন তাকানো দেখে ফিজা বললো.........


ফিজাঃ>>নাহ মানে,,মনে হলো আর কি। আচ্ছা তুমি কি করো??


ফিজার কথার উত্তর না দিয়ে ওর কাছ থেকে চলে এসে ছাদের কর্নারে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমার সাথে ফিজাও এসে দাঁড়ালো। তারপর আবার আমাকে বললো.......


ফিজাঃ>>কি হলো বলো.??


আমিঃ>>কাজ করি??


ফিজাঃ>>কি কাজ??


শালি এতো প্রশ্ন করতে পারে। আমার বউ হলে মনে হয় প্রশ্ন করতে করতে আমার জীবন শেষ করে ফেলতো। মাথাটা হ্যাং করে দিছে,,ভাবতেছি রিস্টার্ট দিবো।। বাট মাথা রিস্টার্ট দেয় কোথায়,,আমি জানিনা😁😁।

চুপ করে তার মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। সে আবার একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলো....... 


ফিজাঃ>>বললে না কিন্তু,, তোমার কাজটা কি?? 


আমিঃ>>মানুষ খুন করার কাজ??


ফিজাঃ>>হিহিহিহিহি.??


তার হাঁসি দেখে নিজেকে সামলাতে পারা দায়। ইচ্ছে করছে জড়িয়ে ধরে একটা ভালোবাসার পরশ একে দিতে। কিন্তু তা আমি পারিনি। তারপর নিজেকে কন্ট্রোল করে রাগী কন্ঠে বললাম......... 


আমিঃ>>হাঁসছো কেনো??


ফিজাঃ>>তুমি মানুষ খুন করো?? এটা বিশ্বাস করতে হবে আমাকে হাহাহা। শোনো ছেলে, আমি মেয়ে তবে বোকা না। গাধীও না? আমি তোমার মতো ছেলেকে এক হাঁটে বিক্রি করে,,অন্য হাঁট থেকে নিয়ে আসতে পারবো।। আমার প্রতি সেই ধারণা তোমার আছে?? 


আমিঃ>>কেনো আমি পারি না খুন করতে??


ফিজাঃ>>নাহ পারো না,,তোমার মত ছেলে এমন কাজ করতে পারে না। তুমি তো দেখতে নম্র,ভদ্র বোকা টাইপের ছেলে। কথা বলো একটু ভাব নিয়ে,কিন্তু এমন জঘন্য কাজ কখনই করতে পারো না। আর তুমি তো পারবেই না। সেটা আমার ভালো করেই জানা আছে??


কথাটা শুনে মুচকি হেঁসে উঠলাম।। সেই হাঁসিতে কেমন যেনো মজা পাচ্ছি। মনে মনে বললাম,,,আমি যে কতটা ভয়ংকর সেটা তো জানো না। জানলে তোমার হাঁসি বন্ধ হবে হবে,,রাতের ঘুম খাওয়া দাওয়া সব বন্ধ হবে।।


হয়তো আমার সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই তাই এমনটা ভাবছো। যদি আমার সম্পর্কে তোমার ধারণা থাকতো তুমি হেঁসে হেঁসে কথা বলা তো ধুরের কথা চোখের দিকে তাকাতেই ভয়ে শিওরে উঠতে। 


আমি কোনো কথা না বলে সেখান থেকে সোজা আমার রুমে চলে আসলাম। মাথায় শুধু একটাই চিন্তা নিধিকে মারতেই হবে। সুন্দর পৃথিবীতে তাকে সুখী ভাবে জীবন যাপন করতে দিবো না আমি। তাকে কঠিন যন্ত্রণা সহ্য করে জীবনের সাথে লড়াই করে বাঁচতে হবে। সেই ব্যাবস্থা করবো আমি।


ইচ্ছে করলেই সামনে গিয়ে তাকে গুলি করে মেরে দিতে পারি। পিস্তলের একটা গুলিই তার জন্য যথেষ্ট। খুব একটা কষ্ট করতে হবে না। কিন্তু আমি যে তাকে একটা গুলিতে মারবো না। মারবো পিস্তলের সব কয়টা গুলি দিয়ে। এমন অবস্থা করবো,বেঁচে থাকবে মরা লাশ হয়ে। আর সারাজীবন মনে রাখবে আমাকে। 


রাতের বেলায়.......


বড় রাস্তার পাঁচিলের উপর একা বসে আছি। কারন আমি জানি এই সময় এই রাস্তা দিয়ে নিধি আসবে একা বাসায় যাবে। ফিজাদের বাসা থেকে এই রাস্তাটা অনেক ধুরে।। চারিদকে অন্ধকার, নিস্তব্ধতা,মাঝে মাঝে গাড়ির শব্দ আসছে। ধুর থেকে তখনই দেখি নিধি আসছে।


নিধিকে দেখে মাথার রক্ত গরম হয়ে গেলো। হটাৎ কাল নাগীনিকে দেখে কেমন যেনো রাগ উঠে গেলো আমার। তবে কন্ট্রোল করলাম। কারন, এখনই তো খেলার সময়। নিধি পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। তখনই, আমি নেমে নিধির পাশে গেলাম। গিয়ে তাকে বললাম........ 


আমিঃ>>নিধি.??


আমার কথা শুনে নিধি চমকে উঠলো।হুট করে দাঁড়িয়ে আশে পাশে তাকালো একবার। তারপর আমায় দেখার সাথে সাথে ভয় পেয়ে বললো.........


নিধিঃ তু,,তুমি.??


আমিঃ>>খুব ভয় পাচ্ছো তাইনা.? আসলে আমাকে সবাই ভয় করে, তুমি তাহলে বাদ পড়বে কেনো?? 


নিধিঃ>>নাহ তোমাকে আমি ভয় করি না.??


আমিঃ>>ভয় করবে করবে যখন তোমাকে আদমরা করে ফেলবো তখন। তখন বুঝবে আমি কতটা 

ভয়ংকর আর আতঙ্ক?? 


নিধিঃ>>কিহহহ?? তোমাকে আমি কখনো ভয় করিনি,আর কখনো করবো না?? 


আমিঃ>>হুমম গুড,,চলো হাঁটতে হাঁটতে কথা বলি??


নিধিঃ>>কি.??


আমিঃ>>কেমন আছো?? 


নিধিঃ>>এখন কোথায় থাকো তুমি??


আমিঃ>>কথার উত্তর না দিয়ে উলটো প্রশ্ন?? 


নিধিঃ>>ভালো আছি? কোথায় থাকো তুমি?? 


আমিঃ কেনো,,পুলিশ নিয়ে যাবে নাকি??


নিধিঃ জীবন তোমাকে একটা কথা বলি?? 


আমিঃ>>অবশ্যই, তোমার সাথে কথা বলবো!! অনেক কথা? তুমি বলবে আমি শুনবো? আবার আমি বলবো তুমি আমার কথা শুনে ভয়ে কাঁপতে থাকবে??


নিধিঃ>>আমি তোমাকে ভালোবাসি?? 


আমিঃ>>সাপের খেলা দেখাবার জন্য নাকি??


নিধিঃ>>আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি? আমার জীবনের চাইতে বেশি?? 


এবার আমি চমকে উঠলাম।তারপর নিধির মুখের দিকে

তাকালাম। আমার দিকে অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে। তবে ওর মুখে লেগে আছে একটা ফাঁদ। যে ফাঁদে আগে পা দিয়ে নিজের জীবন থেকে কয়েকটি মাস হাড়িয়ে পেলেছি। ভালো মানুষ হওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছি। কিন্তু এবার আর না।। কিছুক্ষণ কথা গুলো চিন্তা করে নিধিকে বললাম.......... 


আমিঃ>>হাহাহাহাহা,, তাই নাকি মিস নিধি?? 


নিধিঃ>>সত্যি অপুর্ব আমি তোমাকে ভালোবাসি??


আমিঃ>>ঠাসসস, ছিহহহ, তোমার লজ্জা করে না এমন কথা বলতে? তুমি কি ভুলে গেছো আগের কথা গুলো?তুমি ভুলতে পারো কিন্তু আমি সারাজীবনে ও ভুলতে পারবো না??


নিধিঃ>>নাহহ ভুলিনি, আমি যা করেছি সেটা আমার দায়িত্ব ছিলো। আমি তোমাকে সত্যিই ভালোবাসি??


আমিঃ>>দায়িত্ব 😠😠।। ওই কাল নাগীনি দায়িত্ব মানে কি বুঝিস। ভালোবাসিস তাইনা,খুব ভালোবাসিস। আজকে আমি বেঁচে আছি বলে তুই বলছিস আমাকে খুব ভালোবাসিস। কিন্তু তুই যে আমার ফাঁসির ব্যাবস্থা করেছিস,,যদি আমি সেদিন না পালিয়ে আসতাম তাহলে নির্ঘাত আমার ফাঁসি হয়ে যেতো। সেদিন তোর ভালোবাসা কোথায় থাকতো?? 


নিধিঃ>>......... ( চুপ করে আছে ) 


আমিঃ>>তোর আংটি পরানো হাজবেন্ড এর কি খবর? সে কি মারা গেছে নাকি যে, আমাকে বলছিস ভালোবাসি হুমম??


আমার কথা শুনে নিধি চমকে উঠলো। কারন কয়েক দিন আগে নিধির বিয়ের আংটি পড়িয়ে গেছে একটা ছেলে। খবর নিয়ে জানতে পারলাম ছেলেটা চাকরি করে। কিছুক্ষণ পর নিধি আমাকে বললো......... 


নিধিঃ>>তুমি জানো কিভাবে??


আমিঃ>>তোমার রাশি ভালো বাড়ি গিয়ে একটা মিলাদ দিও। তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ ছিলো। বাট পিস্তলটা ভুলে বাসায় রেখে এসেছি। নয়তো 

ভালোবাসি আবার বলার সাথে সাথেই তোমকে উপরে পাঠিয়ে দিতাম। আর এটা তোমার জন্য স্পেশাল সারপ্রাইজ। আর শোনো,এখন এই ঢাকা শহরে আমার একটা মাস্তানির গ্যাং হয়েছে। দেখি তোমার কোন পুলিশ আমাকে থামাতে পারে। আজ থেকে মৃত্যুর দিন গুনতে থাকো। তোমার মৃত্যু খুব নিকটে??? 


কথাগুলো বলে চলে আসার আগে নিধির গালে একটা থাপ্পড় দিয়ে চলে আসলাম। নিরবে হেঁটে নিধির থেকে দুরে চলে আসলাম। নিধিকে মারবো না, তবে মরার মতো করে রাখবো। যাতে আমার নাম মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মনে রাখে।। যা মৃত্যুর চাইতে জঘন্য ও ভয়ংকর। 


এবার আরেক পাগলির জ্বালা শুরু হলো😁😁। নিধির কাছ থেকে চলে এসে ছাদে উঠে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি। তখনই ফিজা এসে আমাকে বললো...


ফিজাঃ>>আকাশ দেখছো বুঝি?? 


আমিঃ>>জ্বি না, সাপের খেলা দেখতেছি?? 


ফিজাঃ>>কোথায় সাপের খেলা দেখো।। মিথ্যা কথা বলো কেনো তুমি? মিথ্যা কথা আমার পছন্দ নয়?? 


আমিঃ>>আচ্ছা,,তুমি এমন কেনো বলতে পারো? আমি যখন ছাদে আসি তখনই তুমিও আসো। আর দেখতেই তো পারছো আকাশ দেখতেছি,,তাহলে জিজ্ঞেস করার কি আছে হুমম??


ফিজাঃ>>তোমাকে আমার খুব ভালো লাগে??


আমিঃ>>মানে??


ফিজাঃ>>মানে তুমি সবার থেকে আলাদা। সবার থেকে অন্যরকম। তোমার মাথা ভর্তি চুলে তোমাকে বোকা বোকা লাগে। তোমাকে রাগাতে ভালো লাগে তাইতো আসি??


আমিঃ>>আমি ছাদে থাকলে আর আসবে না। আর আমি মোটেও বোকা না??


ফিজাঃ>>ওলে বাবালে তাই,,,তা কি করো শুনি??


আমিঃ>>........( চুপ করে তার দিকে তাকিয়ে রইলোম ) 


ফিজাঃ>>এই ছেলে শোনো,,তুমি আমাকে যায় বলো না কেনো, তোমাকে রাগাতে আমার বেশ লাগে। সো তুমি মানা করলেও আসবো??


আমিঃ>>ধ্যাত.??


ফিজাঃ>>হিহিহিহি.?? 


কিছু না বলে চলে আসলাম ফিজার কাছ থেকে।সোজা রুমে এসে দরজাটা ঠাসস করে লাগিয়ে দিলাম।। আজ আব্বুর কথা খুব মনে পড়ছে। আর মনে পড়ছে

বিষাক্ত নারী রুপিদের মুখ। যারা বাইরে থেকে কতটা পবিত্র। কিন্তু ভিতরে বিষে ভরপুর। সৎ মাকে যখন ব্লেড দিয়ে গলার মাঝে টান দিয়েছিলাম সেদিন, একটুও হাত কাপেনি। সেদিন ভয় করেনি। সেদিন কষ্টও হয়নি।


তবে নিধিকে বিশ্বাস করার পর আমার সাথে খেলা করেছিলো।। সেদিন খুব কষ্ট হয়েছিলো আমার। সেদিন কেঁপে উঠেছিলো আমার শরীর,,তবে সে আজো বেঁচে আছে। তাকে মারবো না, মারবো তার সব অহংকারকে। ধ্বংস করে দিবো তার স্বপ্ন গুলোকে। 


পরের দিন......


বিকাল বেলা ছাদে বসে আছি। ঠিক তখনই ফিজা এসে পাশে বসে পড়লো। কি যে সুন্দর ও মায়াবী লাগছে তাকে। যত বার দেখছি,, ততবার মুগ্ধ হয়ে গেছি। 

ইচ্ছে করে একটা ভালোবাসার পরশ একে দিতে। কিন্তু কেনো জানি পারিনা।ঠিক তখনই আমার ঘোর কাটিয়ে ফিজা বললো........


গল্পঃ_মাস্তানি (পর্ব_০৮_শেষ_পর্ব)

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল। 


পরের দিন......


বিকাল বেলা ছাদে বসে আছি। ঠিক তখনই ফিজা এসে পাশে বসে পড়লো। কি যে সুন্দর ও মায়াবী লাগছে তাকে। যত বার দেখছি,, ততবার মুগ্ধ হয়ে গেছি। 

ইচ্ছে করে একটা ভালোবাসার পরশ একে দিতে। কিন্তু কেনো জানি পারিনা।ঠিক তখনই আমার ঘোর কাটিয়ে ফিজা বললো........


ফিজাঃ>>এই জীবন দেখো,আগামী তিন দিন পর,সেরা পুলিশের মধ্যে একজন নিধি আহমেদের বিয়ে??


কথাটা শুনে উঠে দাঁড়ালাম। এরপর ফিজার হাত থেকে পত্রিকাটা টেনে নিয়ে পড়তে লাগলাম। হেড লাইনে বড় বড় করে লেখা আছে কথাটি। কিঞ্চিত হেঁসে উঠলাম। তবে সেই হাসিটা ফিজার কাছে ধরা পড়ে গেলো। আমার এমন হাঁসি দেখে ফিজা আমাকে বললো........ 


ফিজাঃ>>কি ব্যাপার তুমি হাঁসছো কেনো?? 


আমিঃ>>তুমি বুঝবে না?? 


ফিজাঃ>>আমাকে বুঝিয়ে বলো.??


আমিঃ>>কালকে বলবো.??


কথাটা বলেই চলে আসলাম ফিজার কাছ থেকে থেকে। ওদের বাড়ি থেকে বের হয়ে আমার গ্যাং এর সবাইকে কল দিলাম।। কোনো এক গোপন জায়গাতে দেখা করে সব প্ল্যান করে নিলাম।প্ল্যান সব ঠিক আছে।


খেলার আসল মজা তো হবে নিধির বিয়ের পর।। তবে এনন ফিজাদের বাড়ি থেকে চলে আসতে হবে। হাতে সময় যে আর নেই। কিন্তু কেমন জানি মনটা চটপট করে উঠলো। কেনো জানি ফিজার মুখটা বারবার 

মনে পড়তে লাগলো।। হটাৎ করে তাকে আমি অনেক ভালোবেসে ফেলেছি।


ফিজার কথা কিছুতেই ভুলতে পারছি না। জানি না শেষ পর্যন্ত কি হবে। পাবো তো তাকে শেষ পর্যন্ত,, নাকি সারাজীবন তার সৃতি বুকে নিয়ে ভালো ভাবে বেঁচে থাকার অভিনয় করতে হবে। ওহ কিছুই ভাবতে পারছি না,,কেমন যেনো অস্বস্তি লাগতেছে। 


কালকে নিধির বিয়ে?? ভাবতেই অবাক লাগে। মেয়েরা এমন কেনো,,একজন ছাড়ে! আরেক জন ধরে। খুবই দুঃখ জনক। ফিজাদের বাসার ছাদে দাঁড়িয়ে ভাবছি পুরোনো দিনের কিছু কথা।।ঠিক সে সময় ফিজা এসে পাশে দাঁড়ালো। আমি ঘুরে একবার ওর দিকে তাকালাম।।কিন্তু ফিজা আজকে প্রকৃতি দেখতে ব্যস্ত। কিছুক্ষণ পর ফিজা আমাকে বললো.......


ফিজাঃ>>কালকে কি বলতে চেয়েছিলে,,এখন বলো?? 


আমিঃ>>হুমমম.??


ফিজাঃ>>তো বলো.??


চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম। ফিজার দিকে তাকিয়ে দেখি এখনো সে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। চারিদিক নিরবতা ভর করেছে। নিরবতা ভেঙ্গে আমি বললাম.....


আমিঃ>>আমি যখন ইন্টারে পড়া লেখা করতাম, তখন আমি আমার সৎ মাকে নিজ হাতে খুন করেছিলাম। কারন ওই মহিলা আমার নিরীহ বাবাকে খুন করেছে।সে ছিলো অহংকারী আর লোভী। শুধুমাত্র পরকীয়ার জন্য আমার ভালো বাবাকে সে খুন করে। এটা দেখে আমিও তাকে খুন করি। এর পর শুরু হয় আমার মাস্তানি জীবন। বিশ্বাস করো আমি কখনো নির-অপরাধী কাউকে খুন করতাম না। করতাম সমাজের কিছু খারাপ মানুষদের। এভাবেই চলে গেলো দুই বছর। এরপর নিজেকে পরিবর্তন করার সিন্ধান্ত নেই। ভেবেছিলাম ভালো মানুষ হবো। সমাজে আর দশটা ভালো মানুষের মত থাকবো। কিন্তু...??


ফিজাঃ>>কিন্তু কি??(অবাক হয়ে)


আমিঃ>>কিন্তু আরো একটি মেয়ের জন্য হতে পারিনি। নিজের শহর ছেড়ে চলে আসি ঢাকাতে। এখানে এসে নতুন করে সব কিছু শুরু করি। তখনই নিধি নামের কেউ একজন আমার জীবনে আসে। মানে সে আমাকে ভালোবাসি বলতো। আমি তাকে বিশ্বাস করে সবকিছু বলেছিলাম। কিন্তু সে ছিলো পুলিশ তখনই আমাকে ধরে দেয়। তবে জেল থেকে আমি পালিয়ে আসি তোমাদের এখানে। শুরু হয় আবার মাস্তানি জীবন। আমি বোকা না। এই সমাজের কাছে আমি মাস্তান। একটা খারাপ ছেলে। তোমাকে এসব বলছি,তবে ভেবো না বিশ্বাস করেই বলছি। চাইলে সবার কাছে আমার ব্যাপারে বলে দিও। কারন,,আজই শেষ এখানে থাকার। আমি একটু পরেই চলে যাবো। তোমাকে কষ্ট দিয়ে থাকলে আমাকে মাফ করে দিও??


কথাগুলো বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম।ফিজার দিকে তাকিয়ে দেখি সে কাঁন্না করছে।। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বললো........


ফিজাঃ>>যেও না তুমি জীবন??


আমিঃ>>কেনো??


ফিজাঃ>>একটা গল্প শুনবে??


আমিঃ>>হ্যা বলো?? 


ফিজাঃ>>তুমি না বলতে, তুমি যখনই ছাদে আসো ঠিক তখনই আমি কেনো আসি? আর এসেই তোমাকে কেনো জ্বালাই। আসলে তুমি সবার থেকে আলাদা মানুষ। একটা গল্প শোনো? সবার মত আমারো সুখের জীবন ছিলো। মা, বাবা নিয়ে ভালোই ছিলাম আমি। রোজ কলেজে যেতাম আর আসতাম। কিন্তু কয়েকটা ছেলে আমাকে রোজ জ্বালাতো। একদিন কলেজের অনুষ্টান হওয়াতে বাসায় আসতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। বড় রাস্তাতে আসতেই এমন সময় একটা ছেলে আমাকে বললো...??


ওই ছেলেটাঃ>>কি ব্যাপার ফিজা তুমি এ সময়??


ফিজাঃ>>তো..??


ওই ছেলেটাঃ>>তোমাকে আমি ভালোবাসি ফিজা,,তুমিও বাসো না??


ফিজাঃ>>পথ ছাড়ুন? সেদিন সে পথ ছাড়িনি। আমাকে সে সেদিন জোর করে.....??( কাঁদতে কাঁদতে ) 


আমিঃ>>জোর করে কি?? 


ফিজাঃ>>ধর্ষন করে। তারপর থেকে আমি ধর্ষিতা। এই সমাজের চোখে আমি একজন ধর্ষিতা। কেউ আমার পাশে থাকেনি। এমনকি আমার মা বাবাও। তখনই চিনতে পারছিলাম এই সমাজকে। এই সমাজের ভদ্ররুপি মানুষগুলো ধর্ষিতাকে ঘৃনা করে,ধর্ষক কে না। আমার কি দোষ ছিলো বলো? আমি তো তার বাজে প্রস্তাবে রাজি হয়নি আর তাতেই..??( কাঁদতে কাঁদতে ) 


ফিজার কথা শুনে চমকে উঠলাম। বলে কি সে? এতো সুন্দর একটা মেয়ের সাথে এতো কিছু? কখন যে চোখের কোনে পানি চলে এসেছে বুঝতে পারিনি। শুনেছি ছেলেদের কাঁদতে নেই।। কিন্তু আজ না কেঁদে পারলাম না। তারপর আমি ফিজাকে বললাম.........


আমিঃ>>ছেলেটার নাম বলো.??


ফিজাঃ>>কোন ছেলেটার??


আমিঃ>>যে ছেলে তোমাকে....??


ফিজাঃ>>তার আর দরকার হবে না??


আমিঃ>>কেনো??


ফিজাঃ>>শুনেছি তাকে কয়েক দিন আগে খুন করে একটা গলির মধ্যে ফেলে রেখেছিলো কেউ??


কথাটা শুনে চমকে উঠলাম।তার মানে নিধি কয়েক দিন আগে যাকে ধরতে গিয়েছিলো তাকে আগে আমি খুন করেছিলাম। তারপর আমি ফিজাকে বললাম......... 


আমিঃ>>হাহাহাহা,,পাপিদের শাস্তি এভাবেই হয়??


ফিজাঃ>>মানে??


আমিঃ>>মানে ওই ছেলেকে আমিই খুন করেছিলাম??


ফিজাঃ>>কিহহহ..??


আর কিছু না বলে ওর কাছ থেকে চলে আসলাম রুমে। বালিশের নিচে থাকা পিস্তলটি কোমরে গুজলাম ফুল লোড করে। ফিজা হয়তো ভাবছে, আমিও সবার মতো তাকে অবহেলা করে চলে আসলাম। কিন্তু না, আমার যে একটা কাজ আছে।।


পরের দিন.....


আজকে নিধির বিয়ে। চারিদিকে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। ফিজাদের বাড়ি ছেড়ে এখন চলে এসেছি। আসার আগে দেখলাম ফিজা ছাদে দাঁড়িয়ে আছে। হয়তে সে ভাবছে তার পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই। কিন্তু আমিও যে নিরুপায়।। নিধির উদ্দেশ্যে চলে আসলাম। 


নিধির বাড়ির কাছে আসতেই দেখি, চারদিকে পুলিশ।। মনে মনে একটু হাঁসলাম। কারন ঢাকায় আমার যত গ্যাং ছিলো সবাইকে বলেছি এই পুলিশ যেনো একটাও এখানে দাঁড়িয়ে না থাকতে পারে, সেই ব্যাবস্থা করার জন্য। গ্যাং এর ছেলেরা তাই করেছে। তার মানে রাস্তা পরিষ্কার। তবে আরেকটু অপেক্ষা। তারপরেই সব 

ঠিক হয়ে যাবে। হুমম অপেক্ষার প্রহর শেষ। অবশেষে নিধির বিয়ের কাজ সম্পূর্ণ হলো।। নিধি যখন গাড়িতে উঠতে যাবে তখনই আমি গিয়ে তাকে বললাম.......


আমিঃ>>নিধি.?? 


নিধিঃ>>তুমি.??( অবাক হয়ে ) 


আমিঃ>>হুমম। ভয় লাগতেছে তাইনা?? 


নিধি>>পুলিশ.??( চিৎকার করে )


আমিঃ>>হাহাহা,,কেউ নেই??


নিধিঃ>>কেনো এসেছো এখানে??


কিছু না বলেই কোমরে থাকা পিস্তলটি হাতে নিয়ে, ডান পায়ে একটা গুলি করলাম। নিধি ও মাগো বলে

গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো। সাথে সাথে আমি সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললাম........ 


আমিঃ>>কেউ যদি নিধিকে এখন টাচ করে আর আমার কাছে আসে তাকে মেরে ফেলবো??


আমার কথা শুনে কেউ আর এগিয়ে আসেনি। দেখছেন সবাই নিজের চিন্তা করে। এটলিস্ট ওর স্বামী বাঁচাতে আসতে পারতো। কিন্তু সেও দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করতে চায় না।। কিছুক্ষণ পর আরেকটা গুলি করলাম নিধির বাম পায়ে। তখনই নিধ পড়ে গেলো। তারপর আমি নিধিকে বললাম.......


আমিঃ>>নিধি আমি ইচ্ছে করলে তোকে এখানই মেরে ফেলতে পারি। কিন্তু মারবো না তোকে। তুই যতদিন বেঁচে থাকবি ততদিন আমার কথা মনে রাখবি। ভুলতে পারবি না সারাজীবন আমার কথা। তোর স্বামী তোকে অবহেলাতেই রাখবে। পঙ্গু বলে যখন তোকে ডাকবে তখন আমার কথা মনে পড়বে। এটা হলো বিশ্বাস 

নিয়ে খেলার শাস্তি।। আর হ্যা পারলে তোর পুলিশকে বলিস আমাকে ধরে আনতে??


আর কিছু বললাম না।পিস্তলটি ওর হাতের কাছে ফেলে চলে আসলাম। সবাই নিধিকে হসপিটালে নিয়ে যেতে লাগলো। আজ খুব শান্তি পেলাম। আজকে ছাড়তে হবে এই শহর। ছাড়তে হবে গ্যাং। চলে যাবো অন্য শহরে।

যেখানে থাকবে বিশ্বাসের দাম।


ফিজাদের বাড়ির মধ্যে ঢুকছি।আমি জানি ফিজা এখন সেই ছাদেই দাঁড়িয়ে আছে। তাই আমি ছাদে চলে গেলাম। ছাদে গিয়ে আমি গিয়ে ফিজাকে বললাম.......


আমিঃ>>ফিজা.??


ফিজা চমকে উঠে আমার দিকে তাকালো। তারপর আমি ফিজার হাতটা ধরে বললাম....... 


আমিঃ>>চলো.??


ফিজাঃ>>কোথায়??


আমিঃ>>জানি না,,, তবে এই ভদ্ররুপি সমাজের থেকে অনেক দুরে। যেখান বাস করবো আমি আর তুমি। ভালোবেসে থাকবো দুজন একাত্বের মাঝে। বুনবো 

কিছু ভালোবাসার স্বপ্ন। যে স্বপ্নে থাকবে শুধুই পবিত্রতা। বউ হয়ে থাকবে আমার পাশে সারাজীবন??


ফিজাঃ>>জীবন আমি যে ধর্ষ***??


আমিঃ>>হাহাহা,, তো তাতে কি হয়েছে? তুমি কি মানুষ না? অপবিত্র তারাই, যারা বিশ্বাস নিয়ে খেলা করে। তুমি মোটেও অপবিত্র না। তোমার মনে নেই কোনো ছলনার দাগ। নাকি তুমি আমার সাথে যেতে চাইছো না আমি মাস্তানি করি বলে??


এই কথা বলার সাথে সাথে ফিজা আমাকে ঠাসস করে একটা চড় বসিয়ে দিয়ে বললো......


ফিজাঃ>>ফাজিল ছেলে,,আমি কি একবারো বলেছি?? দরকার নেই এ সমাজে থাকার। যেখানে অপরাধীদের মুল্য নেই। আছে শুধু যারা অপরাধ করে তাদের।

আমিও তো চাই, কোন এক রাজকুমার এসে আমাকে

নিয়ে যাক,আজ পেয়েছি। এত সহজে কি ছেড়ে দিই??


ফিজার হাত ধরে চললাম অজানার উদ্দেশ্যে। যেখানে কেউ জানবে না আমাদের কথা।। জানবে না আমদের অপবিত্রতাকে। পৃথিবীর মানুষ বড়ই অদ্ভুত। তারা সমাজে ভালো মানুষ সেজে খারাপদের কথা শোনাতে পিছু পা হয় না। কিন্তু সে কেনো খারাপ হলে এটা নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথা নেই। 


ইচ্ছে করতেছে গিয়ে আবার সেই সব ভালো মানুষরুপি মানুষদের আজ রাতেই সব গুলি করে মারি, কিন্তু নাহ। আজ থেকে ভালো হতে হবে আমাকে। হতে হবে একটা মানুষ। থাকবে না কোনো খুন। থাকবে শুধু ভালোবাসা ফিজার পাশে থাকবো সবসময়।


ফিজার দিকে তাকিয়ে দেখলাম সে কাঁদছে। আমি আর মানা করলাম না। কাঁদুক আজ। সে আমি খুব ভালো করে জানি এটা কষ্টের কান্না নয়।।কান্নাটা হলো সুখের। মানুষ কষ্ট পেলেই কান্না করে তা নয়, আনন্দেও কান্না চলে আসে। চলেছি অজানার উদ্দেশ্যে। ভালোবেসে থাকবো দুজন সারাজীবন এক সাথে। আজ শেষ করলাম আমার এই মাস্তানি জীবন। সবাই দোয়া করবেন বাকি দিনগুলো যেনে সুন্দর ভাবে সঠিক পথে কাটিয়ে দিতে পারি। সবাইকে আসসালামু আলাইকুম। 


আরে দাঁড়ান লাইক কমেন্ট না করে কোথায় চলে যান। 


আপনাদের মতামত পেলে নতুন গল্প শুরু করবো।সবাই কমেন্ট করে মতামত জানাবেন।


*******সমাপ্ত*******


এমন আরও অনেক গল্প পড়ুন।