ভয়ংকর ভূতের গল্প
গল্পঃ_ভয়ংকর_ভূতুরে
লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহ জালাল।
আমি অপুর্ব ইসলাম।। বাবা মায়ের আদরের বড় ছেলে৷ ছোট থেকেই একটু দুষ্টু টাইপের ছিলাম। এবং পড়া লেখা খুব অমনোযোগী ছিলাম। তাই আব্বু আম্মু মিলে আমাকে,আমার বড় খালাতো ভাইয়ার সাথে পড়ালেখা করার জন্য ঢাকা পাঠিয়ে দেয়৷
আমার বড় খালাতো ভাই এবার অনার্স ৩য় বর্ষে। নাম তার মোহাম্মদ সামিম,ভাইয়া পড়ালেখা খুব এক্সপার্ট। সব সময় ক্লাসের ফাস্ট হয়৷ তবে একটা মজার বিষয় হলো,,, ভাইয়া আর আমি খুব ভালো বন্ধুর মতো চলা ফেরা করতাম।
আমি ছোট হলেও,,ভাইয়া আমাকে তার বন্ধুই মনে করতো৷ সত্যি এমন ভাইয়া থাকা ভাগ্যের ব্যাপার৷
ভাইয়া যখন অনার্স ৩য় বর্ষে,, তখন আমি ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে৷ সারাদিন কাটতো দুজনের দুষ্ট মিষ্টি ভালোবাসায়।। খুব হ্যাপি ভাইয়ার মতো বন্ধু পেয়ে।
প্রায় সময় ভাইয়ার সাথে বিভিন্ন যায়গায় ঘুরতে বের হতাম। বিভিন্ন যায়গায় গিয়ে মজা মাস্তি করতাম।
ভাইয়া আর আমি একই হলে থাকতাম। এক হলে থেকে পড়া লেখা করতাম। ভাইয়ার অনেক ফ্রেন্ড আছে আমি ছোট হলেও ভাইয়ার মতো,,ভাইয়ার ফ্রেন্ড তারাও আমার সাথে খুব মজা করতো। তাদের সাথেই আমার সময় কাটতো। আর পড়া লেখা তাদের মাঝে থেকে আরও ভালো হতে লাগলো। তাদেরঅনুপ্রেরনা আজ আমি সফল।
ভাইয়া আমাকে সব সময় সাজেশন দিতো।। উনিই সব সময় হেল্প করতো। যে বিষয় বুঝতাম না ভাইয়া বুঝিয়ে দিতো। দেখতে দেখতে এক্সাম শুরু হয়ে গেলো। খুব ভালো এক্সাম দিলাম। ভাবতেই অবাক আমার মতো একটা ঢেঁড়স 😜😜এতো ভালো এক্সাম দিবে ভাবতে পারিনি। সবই ভাইয়ার কারনে। অবশেষে এক্সাম শেষ হলো।
একদিন ভাইয়া,ভাইয়ার বন্ধুরা সবাই মিলে গল্প করছে। আমিও সেখানে গেলাম।। কিছুক্ষণ পর ভাইয়ার একটা বন্ধু ভাইয়াকে বলে উঠলো........
ইকবালঃ সামিম চল আমরা সিনেমা দেখতে যাই?
ভাইয়াঃ নাহ আজকে যাবো না,অনেক রাত হয়ে গেছে?
ইকবালঃ আরে চল না,, সবাই মিলে আনন্দ করবো?
নাহিদঃ সামিম চল,, সবাই এক সাথে যাই,, সমস্যা নাই।
সবাই মিলে এক সাথে আনন্দ করবো?
ভাইয়া আর কিছু বললো না।। যাওয়ার জন্য সম্মতি দিলো। সবাই রেড়ি হতে লাগলো,আমাকেও রেড়ি হতে বললো। কি আর করার, বড় ভাই তার কথা না রেখে পারি। আমি রেড়ি হয়ে আসলাম।
এরপর ৪ জন মিলে সিনেমা হলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। সারারাত সেই মজা মাস্তি করলাম। দেখতে দেখতে রাত ২ঃ৩০ বেজে গেছে। নাহহ এবার বাসায় যেতে হবে,,অনেক রাত হয়ে গেছে। তাই ভাইয়া তার বন্দুকে বললো..........
ভাইয়াঃ ইকবাল অনেক রাত হয়ে গেছে,, এবার চল?
ইকবালঃ হুমমম চল,, যাওয়া যাক?
বাহিরে এসে কোনো গাড়ি ফেলাম না। কি এক মস্ত ঝামেলায় পড়লাম। কিছুক্ষণ পর ২ টা রিকশা
পেলাম। আমি আর ভাইয়া এক রিকশায় উঠলাম। আর ভাইয়ার বন্ধু দুজনে এক রিকশায় উঠলো।
রিকশা চলতেছে তার আপন মনে।কিছুক্ষণ পর খেয়াল করলাম একি রাস্তা কেমন জানি অচেনা লাগতেছে। বিশাল এক চা বাগানের পাশ দিয়ে আমাদের নিয়ে যাচ্ছে। পিছনে তাকিয়ে দেখি ভাইয়ার বন্ধুরা নেই,,
একি তারা কোথায় গেলো,,তারা তো আমাদের সাথেই ছিলো তাহলে গেলো কোথায়। এবার মনের ভিতর একটু ভয় কাজ করছে৷
কিন্তু একটা বিষয় খুব ভালো ভাবে লক্ষ করছি। রিকশা চালক চালিয়ে যাচ্ছে,কিন্তু কোনো কথা বলছে না। আর কোনো প্রশ্ন করলে উত্তর দিচ্ছে না। কিছুক্ষণ পর ভাইয়া তার পায়ের দিকে লক্ষ করলো।
লক্ষ করে থমকে গিয়ে আমাকে দেখালো।। আমি দেখে রিতীমত অজ্ঞান হওয়ার অবস্থা।
কারন রিকশা চালকে পা দুটি উলটো,,একি কি ভাবে চালাচ্ছে উনি রিকশা। স্বাভাবিক মানুষের পায়ের পাতা যেমন,,তার পায়ের পাতা সম্পুর্ণ বিপরীত।
তারপর আমি আর ভাইয়া আস্তে করে রিকশা থেকে লাফ দিয়ে এক দৌড়🏃🏃। অনেক দুর গিয়ে দুজনে থামলাম। দুজনে খুব ভয় পেয়েছি,,এবং হ্যাপাচ্ছি।
কি করবো বুঝতে পারছি না। তাই আস্তে আস্তে করে হাঁটতে শুরু করলাম।
কিছুক্ষণ পর আবার একটা রিকশা আসলো,, কোনো কিছু চিন্তা না করে রিকশা ওয়ালার সাথে ভাড়া নির্ধারণ করে উঠে পড়লাম। কিন্তু এই রিকশা ওয়ালা কথা বলতেছে। এবং কিছুক্ষণ পর রিকশা ওয়ালা ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করলো...........
রিকশা ওয়ালাঃ আপনারা এত রাতে কোথায় থেকে এসেছেন?
ভাইয়াঃ সিনেমা দেখে আসলাম?
এভাবে অনেক কথা হলো আমাদের মাঝে। এক পর্যায়ে ভাইয়া ওই ভুতের ঘটনা খুলে বললো। কিছুক্ষণ পর রিকশা ওয়ালা ভাইয়াকে বললো........
রিকশা ওয়ালাঃ ওই ভুতের পা দেখতে কেমন?
ভাইয়াঃ স্বাভাবিক মানুষের পায়ের চাইতে বিপরীত?
রিকশা ওয়ালা তার পা আমাদের কে দেখিয়ে বললো...
রিকশা ওয়ালাঃ দেখেন তো এই রকম কিনা💀💀?
রিকশা ওয়ালার পা দেখে আমরা দুজনে রিকশা থেকে নেমে দিলাম আবার দৌড়। এক দৌড়ে চলে আসলাম হলে। এসে দেখি ভাইয়ার বন্ধুরা এখনো বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের জন্য।
হলে এসেই কিছুকক্ষণ পর আমি অজ্ঞান হয়ে গেলাম। এরপর সবাই মিলে আমাকে রুমে নিয়ে গেলো।
মাথায় তেলে পানি দিয়ে দিলো। ঘুমের ঔষধ খাওয়াই দিলো। আমি এবার ভূতের রাজ্যে না,, ঘুমের রাজ্যে হাড়িয়ে গেলাম।
***************সমাপ্ত***********