না পাওয়া ভালোবাসার কষ্টের গল্প
গল্পঃ_অসমাপ্ত_ভালোবাসা (পর্ব_০১)
গল্পটা বাস্তবের সাথে যথাযত মিল রয়েছে।
লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।
পার্কের মধ্যে হাঁটতেছি এমন সময় একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা খেলাম।। আসলে আমি মোবাইলে কথা বলতে বলতে হাঁটতেছি তাই খেয়াল করিনি। ধাক্কা খেয়ে আমার মোবাইলটা হাত থেকে নিচে পড়ে গেলো।
আর খেয়াল করলাম মেয়েটাও পড়ে গেলো। মেয়েটার পায়ে হাই হিল থাকায় নিজেকে সামলাতে পারেনি। তারপর আমি মেয়েটাকে বললাম......
সব সময় রোমান্টিক গল্প পড়তেও বিষন্নতা লাগে।।তাই এবার ভিন্ন ধরনের গল্প আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করলাম।আশাকরি গল্পটা সবাই পড়বেন। নিশ্চয়ই ভিন্ন ধরনের কিছু পাবেন।
~~~~
গল্পের নাম দেখে গল্প বিবেচনা করবেন না,,একটা নামে
ভিন্ন ভিন্ন গল্প লিখে থাকেন লেখকরা। সুতরাং আগে পড়বেন তারপর বিবেচনা করবেন। ধন্যবাদ সবাইকে.।
গল্পের মাঝে বিরক্ত করার জন্য আমি দুঃখীত। ইতিঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।
আমিঃ এই সরি সরি আমি আসলে.......
পুরোটা বলার আগে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। কারন যার সাথে ধাক্কা খেলাম সে আর কেউ নয়, সে হলো অহনা। একটা সময় যাকে আমি নিজের চাইতে অনেক বেশি ভালবাসতাম।
এখনো বাসি কিন্তু সেটা নিজের মনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। অহনাও আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো।
আসলে ৫ বছর পর দেখা, সবকিছু পাল্টে গেছে। দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে রইলাম। কেউ কিছু বললাম না। কিছুক্ষণ পর একটা মেয়ে এসে অহনাকে নিয়ে যায়।
অহনা হাটছে আর আমার দিকে চেয়ে আছে৷ আমিও আর একবারের জন্য অন্য দিকে তাকাইনি।
অহনা সেই আগের মতোই আছে। বরং আগের থেকে আরো সুন্দর হয়ে গেছে। আসলে হওয়ারই কথা।
অহনা হয়তো আমার কথা এতদিনে ভুলে গেছে। আমি মোবাইলটা মাটি থেকে নিলাম,দেখলাম মোবাইল টা ভেঙ্গে গেছে। ভাঙ্গা মোবাইল টা নিয়ে পার্ক থেকে বের হয়ে গেলাম।
একটা দোকানে গেলাম এক প্যাক সিগারেট কিনলাম। কারন অহনার সৃতি গুলো আজ আমাকে ঠিক থাকতে দিবে না।
অহনাকে ভুলার জন্য একমাত্র সিগারেট আমার সঙ্গী।
সিগারেট নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।এরপর গোসল করে ঘুমাতে গেলাম কিন্তু ঘুম আসছে না।
বারবার ওর সৃতি গুলো মনে পড়তে লাগলো। ওর কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম মনে নেই।
ঘুম থেকে উঠে দেখি মাগরিবের আজান দিয়ে দিছে। তারপর ফ্রেশ হয়ে ওজু করে নামাজ পড়ে নিলাম।
নামাজের মধ্যেও আজকের ঘটনা মনে পড়তে লাগলো। নামাজ পড়ে ছাদে চলে গেলাম। এক কোনে গিয়ে বসে একটা সিগারেট ধরালাম আর টানতে লাগলাম।
~~~~~
~~~~~
চলেন এবার আপনাদেরকে আমার পরিচয় টা দিয়ে দেই। আমি আকাশ পড়া লেখা শেষ করে আপাতত একটা প্রাইভেট কম্পানির এমডি।
বাসায় শুধু আমি নিজেই একা থাকি। হুমম পরিবার আছে, কিন্তু থেকেও নেই।
আর আমিও মনে করি আমার কেউ নেই.?? একা একা বাসায় থাকি আর আজকে যার সাথে ধাক্কা খেলাম সে আমার এক সময়ের ভালোবাসা। নিজের চাইতে বেশি ভালোবাসতাম, সেও আমাকে ভালোবাসতো৷ কিন্তু মন থেকে বাসতো কিনা সেটা আজও অজানা।
অহনার আরো একটা পরিচয় আছে। সে হলো আমার বড় ভাইয়ার শালি। মানে ভাবির ছোট বোন, সে জন্যই এতো দুরত্ব আমাদের মাঝে।
চলেন আপনাদের পুরো বিষয়টা বুঝিয়ে বলি৷ তাহলে সবকিছু বুঝতে পারবেন। চলেন ঘুরে আসি ৫ বছর পিছন থেকে 👇👇👇
রাতে পড়তেছি এমন সময় ভাইয়া রুমে আসলো আর আমাকে বললো.......
ভাইয়াঃ কিরে অকাশ কি করিস??
আমিঃ পড়তেছি? কখন আসলে বাসায়??
ভাইয়াঃ এই তো এই মাত্র। পড়া লেখার কি অবস্থা??
আমিঃ ভালো। তোমার জন্য খুশির খবর আছে??
ভাইয়াঃ তাই নাকি? কি খুশির খবর শুনি??
আমিঃ আগে ৫০০ টাকা দাও??
ভাইয়াঃ তোর সব যায়গায় ধান্দা বাজি না করলে
হয় না??
আমিঃ আচ্ছা যাও তোমার কোনো খবর শুনতে
হবে না??
ভাইয়াঃ আচ্ছা ঠিক আছে দিবো। এখন বল কি
খুশির খবর??
আমিঃ তোমার বিয়ে??
ভাইয়াঃ বিয়ে মানে??
আমিঃ বিয়ে মানে বিয়ে?
ভাইয়াঃ কই আমি তো কিছু জানিনা। তুই কিভাবে জানলি??
আমিঃ আরে আমিও জানতাম না। আব্বু আম্মু বলাবলি করছিলো তখন শুনি ফেলেছি??
ভাইয়াঃ ওওওও??
আমিঃ কি তোমার মুখ কালো হয়ে গেছে কেনো?
পছন্দ আছে নাকি কেউ??
ভাইয়াঃ আরে না থাকলে তো তুই সবার আগে জানতি??
আমিঃ হুম সেটাও ঠিক। তুমি কাউকে না বললেও আমাকে বলতে। তাহলে মুখ এমন করে রাখছো কেনো??
ভাইয়াঃ আসলে বিয়ে করতে ইচ্ছে করছে না??
আমিঃ তুমি পাগল নাকি?? আমাকে যদি আব্বু আম্মু বলতো এক্ষুনি বিয়ে করে ফেলতাম৷ কতো স্বপ্ন আছে বিয়ে নিয়ে?? 😍😍
ভাইয়াঃ তাই নাকি? তাহলে তুই বিয়ে টা করে ফেল??
আমিঃ পাগল নাকি আব্বু আম্মু মাইর দিবে??
ভাইয়াঃ আমি উনাদের বলে দিবো??
আমিঃ দরকার নেই তোমার এতো কষ্ট করার৷ সময় হলে সব হবে??
ভাইয়াঃ যাক অবশেষে??
আমিঃ অবশেষে কি??
ভাইয়াঃ কিছু না...??
আমিঃ বাহ এখন থেকেই তোমার লাড্ডু ফুটতে
শুরু করলো?
ভাইয়াঃ এই তুই বেশি ফাজিল হয়ে গেছিস। আমি
তোর বড় সম্মান দিবি??
আমিঃ কচু দিবো। তোমার বউয়ের সামনে তোমাকে পিটাবো তুমি দেইখো?
ভাইয়াঃ তোর ভাবি তোকে মাইর দিবে?
আমিঃ মাইর দিবে না, আদর দিবে। বলবে আমার ছোট ভাইয়া টা?? হা হা হা 😀😀
আচ্ছা আপনাদের তো ফ্যামিলির কথা কিছু বলা হলো না। ফ্যামিলিতে আমি,আব্বু,আম্মু,ভাইয়া। আব্বু
আগে ছোট একটা চাকরি করতো,, অসুস্থতার কারনে ছেড়ে দিয়েছে।
আসলে আব্বু ছাড়তে চায়নি।। ভাইয়া পড়া লেখা শেষ করে ব্যাংকে চাকরি পায় সেই থেকে আব্বুকে আর কিছু করতে দেয় না। ভাইয়া চাকরি পেয়েছে প্রায় এক বছরের মতো হবে।
আব্বুকে সবাই অনেক ভয় পায়। আব্বুর ভয়ে ভাইয়া কখনো কোনো মেয়ের সাথে মিশেনে, ফ্রেন্ডশিপ তো দূরের কথা।। ভাইয়া আর আমি ফ্রেন্ডের মতোই চলি।
এতো বড় হয়েছে তারপরে ও আমার সাথে ঘুমায়। আর ওর যতো কথা আছে সব আমার সাথে সেয়ার করে, আমিও করি। দুই ভাই সারাদিন টম & জেরির মতো লেগে থাকি।। ভাইয়ার সাথে কথা বলতেছি এমন সময় আম্মু রুমে আসলো আর বললো.........
আম্মুঃ এই তোরা এখনো বসে আছিস। সেই কখন থেকে ডাকতেছি??
ভাইয়াঃ আচ্ছা আসতেছি তুমি যাও??
আম্মুঃ তাড়াতাড়ি আয়?? ( এ বলে আম্মু চলে গেলো )
ভাইয়াঃ হুমম? এই ওঠ পরে পড়িস?
তারপর উঠে খেতে গেলাম। খাওয়ার মাঝখানে আব্বু বললো.......
আব্বুঃ জুয়েল??(বড় ভাইয়ার নাম )
ভাইয়াঃ জ্বি আব্বু বলেন??
আব্বুঃ পড়া লেখা তো অনেক আগেই শেষ করলি চাকরিও পাইছিস?? আর কত বসে থাকবি?? তোর আম্মুও অসুস্থ হয়ে গেছে। এবার অন্তত বিয়েটা কর?
ভাইয়াঃ আব্বু আর কিছু দিন যাক তারপর.... (বাকি কথা না বলতে দিয়ে)
আব্বুঃ তুই এই কথা সব সময় বলিস। শোন আমরা তোর জন্য একটা মেয়ে দেখেছি। মেয়েটা দেখতে শুনতে অনেক সুন্দর, ভালো ভদ্র শিক্ষিত মেয়ে?? আমার মনে হয় তোর জন্য পারফেক্ট হবে??
ভাইয়াঃ কিন্তু আব্বু......??( না বলতে দিয়ে )
আব্বুঃ কোনো কিন্তু না। কালকে আমরা ওদের বাসায় যাবো৷ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে কালকে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করে ফেলবো??
ভাইয়াঃ তোমরা যা ভালো মনে করো??
তারপর আমি আব্বু আম্মুকে বললাম.......
আমিঃ আমার কথা কিছু চিন্তা ভাবনা করছো??
আম্মুঃ তোর কথা কি চিন্তা করবো??
আমিঃ না মানে ভাইয়ার জন্য তো ঠিক করলে। আমার জন্য যদি কিছু একটা করতে?? 😁😁
আম্মুঃ জুয়েল লাঠি নিয়ে আয় তো??
আমিঃ এই না না আমি তো মজা করছি??
তারপর খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুমে চলে গেলাম।
ভাইয়া আসলো কেমন খুশি খুশি লাগছে 😀😀
আমি বুঝতে পারছি কেনো এতো খুশি খুশি লাগছে।। কিছু বললাম না। রাতে ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে কলেজে চলে গেলাম।
কলেজ থেকে এসে খাওয়া দাওয়া করলাম।। কিছুক্ষণ পর ভাইয়াও আসলো। সবাই রেড়ি হয়ে নিলাম৷ এরপর মেয়ে দেখতে তাদের বাসায় রওয়ানা দিলাম। গাড়িতে আমি আর ভাইয়া এক সাথে বসলাম।। আমি এটা ওটা বলে ভাইয়াকে ক্ষেপাতে লাগলাম।
যাইহোক কিছুক্ষণ পর ১টা বাসার সামনে গিয়ে গাড়ি থামলো। মনে হয় এটাই মেয়েদের বাসা। গাড়ি থেকে নামলাম। বাড়িটা খুব সুন্দর।
তারপর আম্মুর বয়সি মহিলা এসে দরজা খুলে দিলো। মনে হয় উনি মেয়ের মা। সবাই সালাম দিলাম। উনি আমাদের হাঁসি মুখে ভিতরে নিয়ে গেলেন। বাসার ভিতরটা খুব সুন্দর করে সাজানো। আমাদের সোফায় বসতে দিয়ে উনি ভিতরে চলে গেলো।
তারপর আমরা সোফায় বসলাম।। আমি আর ভাইয়া এক সাথে বসলাম। হটাৎ করে দেখি ভাইয়া এদিক ওদিক চটপট করতেছে। তারপর আমি বললাম......
আমিঃ কি ভাইয়া কি হয়েছে??
ভাইয়াঃ কই কিছু না??
আমিঃ তাহলে এমন করছো কেনো। ভাবি আসবে তো একটু ওয়েট করো৷ এতো তাড়া কিসের??
ভাইয়াঃ সব যায়গায় ফাজলামি না করলে হয় না??
বাবাঃ কি হয়েছে তোদের। এখানে এমন করছিস কেনো৷ ওরা কেউ দেখলে কি বলবে??
আমি চুপ করে রইলাম।। কিছুক্ষণ পর একটা আংকেল আসলো। বাবাকে দেখেই কোলাকুলি শুরু করলো। এমন ভাবে কথা বলছে মনে হয় মেলায় হারিয়ে যাওয়া দুই ভাই। আমরাও আংকেলের সাথে কথা বলে নিলাম।
আমি এদিক ওদিক তাকাচ্ছি কোনো মেয়ে আছে কিনা তা দেখার জন্য। প্রায় ০১ ঘন্টা পর মেয়ে মানে ভাবিকে নিয়ে আসা হলো।। ভাবি চা হাতে করে নিয়ে আসলো। ভাবিকে দেখে আমি নিজেই ক্রাশ খেলাম। ভাইয়া হা করে তাকিয়ে আছে।। আমি ভাইয়ার অবস্থা দেখে ১টা টোকা দিয়ে বললাম........
গল্পঃ_অসমাপ্ত_ভালোবাসা (পর্ব_০২)
গল্পটা বাস্তবের সাথে যথাযত মিল রয়েছে।
লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।
আমি এদিক ওদিক তাকাচ্ছি কোনো মেয়ে আছে কিনা তা দেখার জন্য। প্রায় ০১ ঘন্টা পর মেয়ে মানে ভাবিকে নিয়ে আসা হলো।। ভাবি চা হাতে করে নিয়ে আসলো। ভাবিকে দেখে আমি নিজেই ক্রাশ খেলাম। ভাইয়া হা করে তাকিয়ে আছে।। আমি ভাইয়ার অবস্থা দেখে ১টা টোকা দিয়ে বললাম........
এতো কম রিসপেন্স ফেলে গল্প লিখা হয়তো আর হবে না। নেক্সট পর্ব পেতে লাইক কমেন্ট করে সাথে থাকুন।
আমিঃ এই মুখ বন্ধ করো মশা ডুকবে মুখে??
ভাইয়া এবার নিজেকে সামলে নিলো। মেয়ে আমাদের সামনে বসলো। এরপর চুরান্ত কথা বার্তা শুরু হলো।
এক পর্যায় ভাইয়া আর মেয়েকে ভিতরে পাঠানো হলো আলাদা কথা বলার জন্য। ভাইয়া আমাকে ডাকতেছে তার সাথে যাওয়ার জন্য।। কিন্তু আব্বুর চোখ রাঙ্গানো দেখে ভাইয়া মেয়েটার সাথে ভিতরে চলে গেলো।
এরপর আন্টি আর আংকেল আমাকে জিজ্ঞেস করলো আমি কি করি কি খাইতে পছন্দ করি। আমার তো মনে হচ্ছে দুলা ভাইয়া নয় দুলা আমি নিজেই। যাইহোক অবশেষে ভাইয়া কথা বলে আসলো।
দেখলাম ভাইয়া অনেক খুশি, মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে। আমাদের মেয়ে পছন্দ হলো। উনাদেরও ভাইয়াকে পছন্দ হলো।
এবার বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করার পালা।। অবশেষে এক মাস পর বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা হলো। তারপর আরো কিছুকক্ষণ বসে কথা বলে বাসায় চলে আসলাম।
যাইহোক অবশেষে ভাইয়ার বিয়েটা ঠিক হলো।। ভাইয়া আসার সময় ভাবির মোবাইল নাম্বারটা নিয়ে আসলো।
দিন রাত শুধু ভাবির সাথে কথা বলে। সত্যি বলতে আমার খুব হিংসা হয়। কারন কথা বলার মতো আমার কেউ নেই।
দেখতে দেখতে বিয়ের দিন খুব নিকটে চলে আসলো।। বিকেল বেলায় আমি ছাদে বসে আছি, কিছুক্ষণ পর ভাইয়া ছাদে আসলো। আর এসে আমাকে বললো.....
ভাইয়াঃ কিরে কি করিস??
আমিঃ সেটা তোমার না জানলেও চলবে? যাও
তোমার বউয়ের সাথে কথা বলো??
ভাইয়াঃ নারে ও শুধু কল দেয়। তাই কথা না
বলেও পারিনা??
আমিঃ বিয়ের আগেই তোমার এই অবস্থা? বিয়ের
পর কি করবে কে জানে??
ভাইয়াঃ আচ্ছা বাদ দে! চল বাহিরে থেকে
ঘুরে আসি??
আমিঃ তুমি যাও আমি যাবো না??
ভাইয়াঃ আরে চল তো??
এই কথা বলে ভাইয়া আমাকে জোর করে বাহিরে নিয়ে গেলো আমাকে।।বাইক নিয়ে বের হয়ে দুজনে কিছুক্ষণ ঘুরলাম। তারপর একটা রেস্টুরেন্টের ভিতরে গেলাম। এরপর ভাইয়া আমাকে বললো......
ভাইয়াঃ কি খাবি??
আমিঃ তোমার যেটা মন চায় অর্ডার দাও??
ভাইয়াঃ আচ্ছা দিতেছি??
ভাইয়া খাবারের অর্ডার দিলো। খাবার সামনে আসলো। খাবার গুলো খেতে খেতে ভাইয়া বললো.........
ভাইয়াঃ তোর বন্ধুদের দাওয়াত দিয়েছিস??
আমিঃ না এখনো দেই নি??
ভাইয়াঃ কখন দিবি আর তো বেশি দিন নেই? কেনা কাটা আর কাজের চাপে সময় পাবি না??
আমিঃ হুম কালকে কলেজে গেলে দিয়ে দিবো??
ভাইয়াঃ হুম তোর সব বন্ধুদের দিস। আর কালকে
একটু কাজ করতে হবে??
আমিঃ কি কাজ??
ভাইয়াঃ কালকে তুই কার্ড বানাতে দিয়ে আসবি?তারপর তোর ফ্রেন্ড দুইটা আছে না কি যেনো
নাম..সারাদিন তোর সাথে থাকে যে??
আমিঃ পাহাদ আর তামিম??
ভাইয়াঃ ওদেরকে নিয়ে কয়েকটা যায়গায় গিয়ে বিয়ের দাওয়াত দিয়ে আসবি? মানে বিয়ের কার্ড গুলো দিয়ে আসবি??
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে??
ভাইয়াঃ হুমমম??
এরপর আরো কিছুক্ষণ কথা বার্তা বলে দুজনে বাসায় চলে আসলাম। অবশেষে বিয়ের দিন চলে আসলো। সব মেহমান একের পর এক আসতে লাগলো।
আমার বন্ধুরা সবাই আসলো। জুবায়ের, তামিম, পাহাদ আয়মান, সানি, মাসুম সবাই আসলো। বন্ধুদের সাথে অনেক মজা করলাম.। অবশেষে মহা ধুমধামে ভাইয়ার বিয়েটা শেষ হলো।
বিয়ের কয়েক দিন পর ভাইয়া আর ভাবি কক্সবাজার গেলো ঘুরতে। আমাকেও যেতে বলেছে কিন্তু আমি যাইনি।। আমার সাথে মোবাইলে কথা হয় সব সময়।
ভাবির সাথে অনেক মস্কারা করি??? ভাবি আদর করে আমাকে ছোট মিয়া বলে ডাকে। প্রায় ৭দিন পর ভাইয়া আর ভাবি কক্সবাজার থেকে বাসায় আসলো।
তারপর খুব সুন্দর ভাবে দিন যেতে লাগলো। বিয়ের প্রায় ১ মাস পর, ভাবি আম্মুকে বললো............
ভাবিঃ আম্মা একটা কথা বলতাম??
আম্মুঃ হুম মা বলো??
ভাবিঃ আসলে বিয়ের পর থেকে আমাদের বাসায় যাইনি? সকালে আম্মু কল দিয়েছে সবাইকে নিয়ে
যেতে বলেছে??
আম্মুঃ সবাই তো আর যাওয়া সম্ভব না,বাসা খালি
হয়ে যাবে? তুমি আর জুয়েল যাও? কয়েক দিন
থেকে এসো ভালো লাগবে??
ভাবিঃ আচ্ছা ঠিক আছে??
অফিস শেষ করে রাতে ভাইয়া বাসায় আসলো? আম্মু ভাইয়াকে সবকিছু বুঝিয়ে বললো। ভাইয়া বললো ছুটি ফেলে যাবে। পরের দিন ভাইয়া অফিসে গিয়ে ৫দিনের ছুটি নিলো। এরপর বাসায় আসলো। বাসায় এসে আম্মুকে বললো......
ভাইয়াঃ আম্মু আকাশ কোথাই??
আম্মুঃ মনে হয় রুমে আছে, গিয়ে দেখ??
ভাইয়াঃ আচ্ছা দেখতেছি??
এরপর ভাইয়া আমার রুমে আসলো আর আমাকে বললো...........
ভাইয়াঃ কিরে আকাশ কি করিস??
আমিঃ কিছু না, কখন আসলে??
ভাইয়াঃ এই মাত্র। শোন কালকে জামা কাপড়
সবকিছু নিয়ে রেড়ি থাকবি??
আমিঃ কেনো??
ভাইয়াঃ ইশিতাদের বাসায় যাবো?? (ভাবির নাম )
আমিঃ তোমার শ্বশুর বাড়ি তুমি যাও? আমি
গিয়ে কি করবো?
ভাইয়াঃ যেতে বলছি যাবি, এতো কথা বলিস
কেনো??
আমিঃ না আমি যাবো না??
ভাইয়াঃ ওকে তুই না গেলে আমিও যাবো না??
এমন সময় ভাবি আসলো রুমে। আর এসেই আমাকে বললো........
ভাবিঃ কি ছোট মিয়া যাবে না কেনো? বাসায় বউ
আছে নাকি??
আমিঃ আসলে ভাবি....? (পুরোটা না বলতে দিয়ে )
ভাবিঃ এসব বলে লাভ হবে না। তোমার জামা কাপড় আমি ব্যাগে নিয়ে নিচ্ছি। সকালে রেড়ি থাকবে??
ভাবি আমাকে আর কোনো কথা বলতে দিলো না??? তারপর খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়লাম। পরের দিন ঘুম থেকে উঠে, ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে নিলাম।
নাস্তা শেষ করে দেখি ভাইয়া আর ভাবি রেড়ি হয়ে বসে আছে। আমিও তাড়াতাড়ি গিয়ে রেড়ি হয়ে নিলাম। তারপর বাহিরে আসলাম,দেখলাম ভাইয়া ব্যাগপত্র গুলো গাড়িতে উঠালো।
আমি আম্মুকে বললাম "আমাকেও বিয়ে দাও,এই ভাবে সালাম করে শ্বশুর বাড়ি যাবো।। সবাই হাঁসতে লাগলো আমার কথা শুনে।
তারপর সবাই গাড়িতে গিয়ে বসলাম। ভাইয়া আর ভাবি পিছনে,আমি ড্রাইবারের সাথে বসলাম। ড্রাইবার আগে থেকেই পরিচিত। আমরা কোথাও গেলে উনার গাড়ি রিজার্ভ করি। কথা বলতে বলতে ভাবিদের বাসায় চলে আসলাম। গাড়ি থেকে নেমে আমি ভাইয়াকে বললাম...
আমিঃ ভাইয়া তোমরা যাও আমি ব্যাগপত্র নিয়ে আসতেছি??
ভাইয়াঃ তুই একা পারবি না আমিও নেই??
আমিঃ পারবো তোমরা যাও??
ভাইয়াঃ আচ্ছা আয়??
ভাইয়া আর ভাবি হাঁটতে লাগলো।৷ আমি গাড়ি থেকে ব্যাগ দুইটা নামিয়ে ওগুলো নিয়ে ভিতরে গেলাম।
বিয়ের পর এই প্রথম ভাবির বাসায় আসলাম.।। আগে একবার এসেছিলাম,বিয়ের আগে। ভিতরে ব্যাগ গুলো রাখলাম। তারপর ভাইয়া আমাকে বললো.......
ভাইয়াঃ আকাশ তুই গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়??
আমিঃ কোন রুমে??
ভাইয়াঃ ডান পাশের ওইটাতে যা? ওইখানে কেউ
থাকে না??
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে??
তারপর আমি ওই রুমটাতে গেলাম ফ্রেশ হওয়ার জন্য। ওয়াশ রুমের দরজা খুলেই একটা টাসকি খেলাম। ভিতরে একটা মেয়ে গোসল করতেছে। আমাকে দেখেই একটা চিৎকার দিলো।
চিৎকার শুনে আমি দিলাম এক দৌড়। তারপর মেয়েটা দরজা লাগিয়ে দিলো। চিৎকার শুনে সবাই রুমে আসলো সাথে ভাইয়াও আসলো। একটু পর মেয়েটাও বাহিরে আসলো। দেখতে মাশাল্লাহ সুন্দর্যের তুলনা হয় না। ভাইয়া আমাকে বললো...........
ভাইয়াঃ কিরে কি হইছে??
আমিঃ কিছু না??
ভাবিঃ তাহলে এতো জোরে চিৎকার দিলো কে??
আমিঃ উনি......? (মেয়েটাকে দেখিয়ে বললাম )
মেয়েটাঃ আপু এই ছেলেটা কে। আমার বেড
রুমে কি করে?
ভাবিঃ আরে ও আমার দেবর কেনো কি
করেছে?
আমিঃ ভাবি আমি বলছি?
যেই বলতে যাবো মেয়েটা এই না না, এ বলে আমার মুখ ধরে ফেললো। কারন আমি যা দেখেছি সেটা যদি বলি মেয়েটার মান ইজ্জতের ১২ টা বেজে যাবে??? তারপর মেয়েটা বললো.........
মেয়েটাঃ না আপু কিছু হয়নি, তেলাপোকা দেখে আমি চিৎকার দিয়েছি। তোরা যা??
ভাবিঃ সেই জন্য এই ভাবে চিৎকার দিবি। আয়
ডাইনিং রুমে আয়??
সবাই একে একে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।। আমিও বের হয়ে গেলাম। আসলে এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে কেনো জানি অস্বস্তি লাগছে। আমি ডাইনিং রুমে চলে গেলাম।।সবার সাথে বসে অনেকক্ষণ কথা বললাম।
তারপর সবাই মিলে নাস্তা করলাম। নাস্তা করে ভাইয়া আর ভাবি একটা রুমে চলে গেলো। আমি ছাদে চলে আসলাম। কেমন জানি বিরক্ত লাগছে এই বাসায়। ছাদে গিয়ে এক কোনে বসে আছি।। কিছুকক্ষণ পরে ভাবি আসলো আর আমাকে বললো........
গল্পঃ_অসমাপ্ত_ভালোবাসা (পর্ব_০৩)
গল্পটা বাস্তবের সাথে যথাযত মিল রয়েছে।
লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।
তারপর সবাই মিলে নাস্তা করলাম। নাস্তা করে ভাইয়া আর ভাবি একটা রুমে চলে গেলো। আমি ছাদে চলে আসলাম। কেমন জানি বিরক্ত লাগছে এই বাসায়। ছাদে গিয়ে এক কোনে বসে আছি।। কিছুকক্ষণ পরে ভাবি আসলো আর আমাকে বললো........
ভাবিঃ কি ব্যাপার ছোট মিয়া মন খারাপ নাকি??
আমিঃ না ভাবি ঠিক আছি??
ভাবিঃ কিছু তো একটা হইছে৷ আমাকে বলো কি সমস্যা??
আমিঃ আসলে ওই মেয়েটার চিৎকার শুনে নার্ভাস
হয়ে গেছি??
ভাবিঃ আরে ওটা মেয়ে না, ও আমার বোন। ওর নাম হচ্ছে অহনা??
আমিঃ আপনার বোন আছে আগে তো বলেননি কোনো আর বিয়ের সময় ওতো দেখিনি??
ভাবিঃ আসলে ও বিদেশে থেকে পড়া লেখা করে৷ আর বিয়ের সময় এক্সাম ছিলো, তাই আসেনি??
আমিঃ ও আচ্ছা??
ভাবিঃ অহনা কি তোমাকে কিছু বলেছে??
আমিঃ নাহহ??
ভাবিঃ আচ্ছা নিচে চলো??
এরপর ভাবির সাথে নিচে গেলাম। গিয়ে দেখি মেয়েটা মানে অহনা ভাইয়ার সাথে ভাব জমাইছে৷ বসে বসে টিভি দেখতেছে।। আমি গিয়ে ভাইয়ার সাথে বসলাম। এরপর ভাইয়া আমাকে বললো.......
ভাইয়াঃ কোথায় গিয়েছিলি??
আমিঃ ছাদে??
এরপর ভাইয়া বললো। আচ্ছা পরিচয় করিয়ে দিই। এই হলো আমার শালি অহনা আর অহনা এই হলো আমার আদরের ছোট ভাই,,আমার কলিজার টুকরা আকাশ।
আমিঃ হ্যালো বেয়াইন??
অহনাঃ হুহহহহ?? 😏😏
আমি আর কিছুই বললাম না। দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে তারপর গিয়ে সোফায় বসলাম। তারপর আমি ভাইয়াকে বললাম......
আমিঃ ভাইয়া শোনো??
ভাইয়াঃ কিছু বলবি?
আমিঃ আমার ভালো লাগছে না। আমি বাসায় চলে যাবো??
ভাইয়াঃ পাগল হলি নাকি, তুই আমাদের সাথেই থাকবি৷ আর আমাদের সাথেই বাসায় যাবি??
আমিঃ না তোমরা থাকো, আমি গেলাম??
ভাইয়াঃ চুপ কর? আব্বুকে বলে দিলে মাইর দিবে। কয়েক দিন গেলে ভালো লাগবে??
আমি আর কিছু বললাম না। এভাবেই বিকাল টা কেটে গেলো। রাতে আমি ছাদে গেলাম। বসে বসে গান গাইতেছি। এমন সময় অহনা আসলো। আর আমাকে বললো..........
অহনাঃ গান তো ভালোই গাইতে পারেন??
আমি কেনো কিছু না বলে চলে যেতে লাগলাম। এমন সময় অহনা আমাকে বললো......
অহনাঃ এই বসুন। কোথায় যাচ্ছেন??
আমিঃ নিচে??
অহনাঃ নিচে কি? বসুন এখানে??
আমিঃ বসলাম??
অহনাঃ সরি??
আমিঃ সরি কেনো??
অহনাঃ দুলা ভাইয়ের সামনে আপনার সাথে এমন ভিহ্যাব করার জন্য??
আমিঃ ইটস ওকে??
অহনাঃ আপনার নামটা যেনো কি??
আমিঃ আকাশ??
অহনাঃ পড়া লেখা কিসে করেন??
আমিঃ অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষে??
অহনাঃ গুড। আপনি বোকা নাকি??
আমিঃ হটাৎ এই প্রশ্ন??
অহনাঃ আমি সব কিছু বলছি। আপনি তো কিছুই বলছেন না??
আমিঃ না এমনেই। আচ্ছা আপনার সম্পর্কে বলেন??
অহনাঃ আপুর থেকে জেনে নিয়েন??
এই ভাবে আরো কিছুক্ষণ কথাবার্তা বললাম, মোটামুটি ভালোই লাগলো। পরের দিন অহনা আর আমি ঘুরতে বের হলাম। একটা রিকশা নিয়ে ঘুরেছি।। আস্তে আস্তে আমি মেয়েটার প্রতি দুর্বল হয়ে গেছি।
এই ভাবে আনন্দে আনন্দে ৫ দিন কেটে গেলো। বাসায় আসার সময় অহনার জন্য খুব খারাপ লাগলো।
অহনাকে অনেক বার বললাম আমাদের বাসায় আসার জন্য। এরপর বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। বিকেল বেলায় রুমে শুয়ে আছি...ঠিক সেই সময় ভাবি আমার রুমে আসলো, আর আমাকে বললো........
ভাবিঃ ছোট মিয়া কি অবস্থা??
আমিঃ অবস্থা তো ভালোই??
ভাবিঃ সেটা তো দেখতেছি। ভিতরে ভিতরে লাড্ডু ফুটতেছে। ঘটনা কি??
আমিঃ কিছু না??
ভাবিঃ আমাকে বলা যায় না??
আমিঃ হুম, ঘটনা হলো আপনার বোন আমার মনটা রেখে দিয়েছে??
হটাৎ করেই ভাবির মুখটা কালো হয়ে গেলো।। মাইন্ড করলো কিনা কে জানে। মুখে হাসি রেখে বললো.....
ভাবিঃ এতো সহজে অহনা প্রেমে পড়বে না??
আমিঃ চেষ্টা করতে তো আর বাধা নেই??
ভাবিঃ তুমি জীবনেও পারবে না। ওরে পটানো
এতো সহজ না??
আমিঃ আচ্ছা সময় হলে দেখা যাবে??
এইভাবে দিন কাটতে লাগলো। আমি বারবার অহনাকে
স্বরন করতে লাগলাম। আসার সময় অহনার মোবাইল নাম্বারটা আনতে ভুলে গেছি। ভাবির কাছে লজ্জায় চাইতেও পারছি না।
কিছুদিন পর ভাবির আব্বু আম্মু আর অহনা আমাদের বাসায় আসলো। আমিতো মহা খুশি।। আংকেল আন্টি চলে যায়, অহনা থেকে যায়। অহনাকে দেখে আমি স্পিকারে রোমান্টিক সব গান ছেড়ে দিতাম।
ভাবি একবার বলেছিলো কালো শার্টে নাকি আমাকে খুব ভালো মানায়। সেই থেকে কালো শার্ট টা পড়েই অহনার সামনে ঘুরাঘুরি করতাম। কিন্তু অহনার
মাঝে একটা পরিবর্তন দেখতে পেলাম। কারন সেদিন রাতে অহনা আমাকে বললো......
অহনাঃ এই যে মিস্টার আকাশ??
আমিঃ হুম বলেন??
অহনাঃ আপনার কাছে কি একটাই শার্ট??
আমিঃ না কেনো??
অহনাঃ তাহলে সারাদিন এটা গায়ে দিয়ে
থাকেন কেনো??
তারপর থেকে প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় শার্ট চেঞ্জ করতাম। শুধু অহনার চোখে পড়ার জন্য। একদিন রাতে অহনা কে ছাদে ডেকে নিয়ে গেলাম। এরপর আমি বললাম...
আমিঃ আপনাকে একটা কথা বলার ছিলো??
অহনাঃ কি কথা বলেন??
আমিঃ আপনাকে আমি ভালোবাসি??
অহনাঃ এটা সম্ভব নয়??
আমিঃ কেনো??
অহনাঃ এক ঘরে ২ বোন কখনো পসিবল না??
আমিঃ সেটা না হয় আমার উপর ছেড়ে দেন৷ আপনি শুধু হ্যা অথবা না বলে দেন??
অহনাঃ এখন না??
আমিঃ তো কখন??
অহনাঃ দুই দিন পর??
আমিঃ এখন বললে সমস্যা কি??
অহনাঃ আমাকে দুই দিন ভাবতে দেন??
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে??
তারপর অহনা নিচে চলে গেলো। আমি টেনশনে পড়ে গেলাম। রাজি হবে নাকি হবে না সেটা নিয়ে খুব চিন্তা হচ্ছে। যাইহোক দুই দিন অনেক কষ্টে কাটালাম।। তারপর অহনাকে বললাম.......
আমিঃ দুই দিন তো চলে গেলো, এবার উত্তর
টা দেন??
অহনাঃ আপনি যদি আমাকে একটু অন্য রকম ভাবে প্রপোজ করেন। তাহলে এক্সেপ্ট করবো??
আমিঃ অন্য রকম মানে??
অহনাঃ মানে হলো যেই স্টাইলে কেউ কখনো কাউকে প্রপোজ করেনি। আপনে আমাকে সেই স্টাইলে
প্রপোজ করবেন। তাহলে আমি রাজি হবো??
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে??
ব্যাপারটা নিয়ে আমি অনেক চিন্তা ভাবনা করলাম।এক পর্যায়ে বন্ধুদের সাথে ব্যাপারটা সেয়ার করলাম। কিন্তু কিছুতেই কোনো কিছু মাথায় আসছে না।
অবশেষে একটা নতুন পদ্ধতি মাথায় আসলো।৷ আমি সেই স্টাইলে প্রপোজ করে দিলাম। অহনাও আমার প্রস্তাব গ্রহন করলো।
একদিন আমি আর অহনা হাত ধরাধরি করে হাঁটতেছি। এমন সময় ভাবি আমাদের দেখে ফেললো।
ভাবি আমাদেরকে দেখে তাকিয়ে থেকে কিছু না বলে নিজের রুমে চলে গেলো। রাতে খেতে গেলাম সবাই। অহনাও আছে। ভাবি তখন অহনাকে বললো.........
ভাবিঃ অহনা আম্মু সকালে কল করেছিলো। তোকে চলে যাওয়ার জন্য বলেছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে বাসায় চলে যাবি??
ভাইয়াঃ সে কি আসছে কয়েক দিন থাকুক??
ভাবিঃ না অনেক দিন থেকেছে। আর থাকার
দরকার নেই??
ভাইয়াঃ এই আকাশ??
আমিঃ জ্বি ভাইয়া বলো??
ভাইয়াঃ সকালে অহনাকে বাসায় দিয়ে আসিস
আমি বাইক রেখে যাবো??
ভাবিঃ সেটার কোনো দরকার নেই। অহনা সি এন জি নিয়ে চলে যাবে। অথবা তুমি যাওয়ার সময় নামিয়ে দিও??
ভাইয়াঃ কিন্তু আমার অফিস??
ভাবিঃ তাহলে অহনা গাড়ি নিয়ে চলে যাবে??
আমি বুঝতে পারছি ভাবি কেনো এমন করেছে,অহনাও বুঝতে পারছে। অহনা বারবার আমার দিকে তাকাতে লাগলো। আমি কিছু না বলে সোজা রুমে চলে গেলাম।
পরের দিন ছাদে গিয়ে বসে আছি। ভাবি অহনাকে এক প্রকার জোর করেই বাসা থেকে বের করে দিলো।
মেয়েটা বারবার আমার দিকে তাকাতে লাগলো।। ইচ্ছে করছে অহনার হাত ধরে টেনে বাসায় নিয়ে আসি। কিন্তু সেটা আর পসিবল না।
ভাবির চোখ মুখ লাল হয়ে আছে। অহনা চলে যাওয়ার পর আমারো মন খারাপ হয়ে গেলো। দুপুরে খেয়ে শুয়ে আছি, এমন সময় ভাবি আমার রুমে আসলো। তখন আব্বু আম্মু ঘুমে ছিলো আর ভাইয়া অফিসে.। আমার রুমে আসার পর ভাবি আমাকে বললো.......
ভাবিঃ আকাশ তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে??
আমিঃ জ্বি বলুন??
ভাবিঃ দেখো আকাশ!! আমি ভেবেছিলাম তুমি অহনার পিছনে পিছনে ঘুড়বে কিন্তু সে জীবনেও তোমাকে মেনে নিবে না। কিন্তু কেনো তোমাকে মেনে নিয়েছে সেটাই বুঝতে পারছি না। আচ্ছা যাইহোক আসল কথা হচ্ছে তুমি অহনার সাথে আর কোনো সম্পর্ক রাখবে না??
আমিঃ কিন্তু ভাবি আমি সত্যি সত্যিই অহনাকে
অনেক ভালোবাসি??
ভাবিঃ দেখো এগুলো হচ্ছে আবেগ। ভালোবাসা বুঝার মতো বয়স তোমাদের এখনো হয়নি??
আমিঃ ভাবি ভুলে যাবেন না, আপনি আমার থেকে মাত্র এক বছরের বড়। আর অনার্সে পড়া একটা ছেলে ভালোবাসা বুঝবে না এটা হতে পারে না??
ভাবিঃ দেখো এতো কিছু আমি বুঝিনা। আমি চাইনা তুমি অহনার সাথে কোনো রকম সম্পর্ক রাখো??
আমিঃ ভাবি এটা আপনি কি বলছেন??
ভাবিঃ ঠিক বলছি। আর যদি বাড়াবাড়ি করো, তাহলে আমি সবাইকে বলে দিবো??
আমিঃ ভাবি আমার কথাটা শুনো??
ভাবি আর কোনো কথা না বলে সোজা রুম থেকে বের হয়ে গেলো। বুঝতে পারছি না ভাবি এমনটা করতেছে কেনো??আমি তো এমন খারাপ ছেলে না, যে অহনার সাথে আমাকে কখনো মানাবে না,, বা আমি অহনার যোগ্য নয়।
ভাবতে ভাবতে অহনার নাম্বারে কল দিলাম।। নাম্বারটা বন্ধ। আরো টেনশনে পড়ে গেলাম। কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। বিকেল বেলায় বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম।
এরপর পাহাদ আর তামিমকে কল দিলাম। ওদের সাথে একটু আড্ডা দিলাম সব কিছু সেয়ার করলাম।
মোটামুটি নিজেকে হালকা লাগছে। বাসায় যেতে যেতে প্রায় রাত ১১ টা বেজে গেলো। দেখলাম টেবিলে খাবার রেখে সবাই ঘুমিয়ে গেছে।
আমি খাওয়া দাওয়া করে যেই নিজের রুমের দিকে পা বাড়ালাম,,ঠিক তখনই ভাইয়া আর ভাবির কথা শুনতে ফেলাম। আমি দরজার আড়াল হয়ে সব কথা শুনতে লাগলাম। ভাবি ভাইয়াকে রুমের ভিতরে বললো.......
ভাবিঃ এই তুমি আকাশকে এত টাকা হাত খরচ
দাও কেনো??
ভাইয়াঃ মানে কি? আমি না দিলে কে দিবে??
ভাবিঃ সে নিজে ইনকাম করতে পারে না??
ভাইয়াঃ সে এখনো পড়া লেখা করছে।। পড়া লেখা শেষ করুক তারপর ইনকাম করবে। পুরুষ মানুষ তো আর বসে থাকতে পারবে না। একটা না একটা কিছু করতেই হবে??
ভাবিঃ তাই বলে এতো বড় হয়েও বসে বসে খাবে??
ভাবির কথা শুনে আমার মাথায় রক্ত উঠে গেলো।।বিয়ে হয়েছে এখনো ১ বছর হয়নি। তার মধ্যেই হিসাব নিকাশ শুরু করে দিয়েছে।
আব্বু যখন আমাদের ২ভাইকে টাকা দিতো তখন আমি নিজের জন্য অল্প কিছু রেখে বাকি গুলো ভাইয়াকে দিয়ে দিতাম।। যাতে সে বন্ধু বান্ধব নিয়ে ভালো ভাবে চলতে পারে।
আর সেই ভাইকে ভাবি উল্টা পাল্টা বুঝাচ্ছে। আর এক সেকেন্ডও ওদের রুমের সামনে দাঁড়ালাম না। নিজের রুমে চলে গেলাম। পরে আর কি কি বলেছে কিছুই শুনতে পাইনি। পরের দিন সকালে ভাইয়া রেড়ি হচ্ছে অফিসে যাওয়ার জন্য আমি ভাইয়াকে বললাম.........
আমিঃ ভাইয়া কিছু টাকা দাও, বাহিরে যাবো??
ভাইয়াঃ কত টাকা দিতাম??
আমিঃ তোমার যা মন চায়??
ভাইয়া ২ হাজার টাকা আমার হাতে দিলো। এমন সময় ভাবি রান্না ঘর থেকে এক রকম দৌড় দিয়ে আসলো এসে ভাইয়াকে বললো......
ভাবিঃ বলেছিলাম কি এতো টাকা দিয়ে ও কি করবে। ও ছোট মানুষ এতো টাকা হাত খরচ লাগে নাকি।
৫০০ টাকা দিলেই তো হয়??
ভাইয়াঃ আরে না কি ৫০০ টাকা দিবে। সবগুলো নিয়ে যা,,শেষ হলে আমাকে বলিস??
এবার ভাবি ভাইয়ার দিকে চোখ রাঙ্গাতে শুরু করলো। আমি বিষয়টা স্পষ্ট লক্ষ করলাম। তারপর টাকা গুলো ভাইয়ার হাতে দিয়ে বললাম..........
গল্পঃ_অসমাপ্ত_ভালোবাসা (পর্ব_০৪)
গল্পটা বাস্তবের সাথে যথাযত মিল রয়েছে।
লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।
এবার ভাবি ভাইয়ার দিকে চোখ রাঙ্গাতে শুরু করলো। আমি বিষয়টা স্পষ্ট লক্ষ করলাম। তারপর টাকা গুলো ভাইয়ার হাতে দিয়ে বললাম..........
আমিঃ ভাইয়া, ভাবি ঠিক বলেছে। আমি বাচ্চা ছেলে এতোগুলো টাকা দিয়ে কি করবো। বাইরে নিয়ে
গেলে হারিয়ে ফেলবো। তুমি এক কাজ করো, টাকা গুলো তোমার কাছেই রেখে দাও। আমার লাগলে
আমি তোমাকে বলবো??
ভাইয়া কিছু একটা বলতে চাইছিলো,কিন্তু আমি সোজা রুমে চলে গেলাম। তারপর থেকে আমি ভাবির সামনে তেমন একটা যাই না। ভাইয়ার সাথেও খুব একটা
কথা বলি না। পরের দিন শুক্রবার ছিলো, ভাইয়া বসে বসে টিভি দেখতেছে। আমি রুমে বসে গান শুনতেছিলাম। এমন সময় পাহাদ কল দিয়ে বললো বাইক নিয়ে বের হইতে, তামিমও আছে। ভাইয়ার কাছে গেলাম। আর ভাইয়া আমাকে দেখে বললো.......
ভাইয়াঃ কিরে কোথায় থাকিস সারাদিন। আয় বস এখানে??
আমিঃ না ভাইয়া, বাইরে যাবো আমি। বাইকের
চাবিটা দাও??
ভাইয়াঃ ঘুরতে যাবি নাকি??
আমিঃ হুমমম। পাহাদ আর তামিম নিচে দাঁড়িয়ে আছে??
ভাইয়াঃ তোর ভাবিকে বল দিতে। কালকে রাতে তোর ভাবি আমার থেকে চাবি নিয়ে কোথায় রাখছে??
আমার আর ভাইয়ার কথা গুলো ভাবি দরজার পাশে লুকিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুনছিলো। আমি আলমারির আয়নায় সবকিছু দেখেছি।
আমি ভাইয়াদের রুমের সামনে গেলাম। দেখলাম ভাবি তাড়াতাড়ি করে বাইকের চাবিটা বালিশের নিচে লুকিয়ে ফেললো। তারপর আমি ভাবিকে বললাম......
আমিঃ ভাবি চাবিটা দেন??
ভাবিঃ কিসের চাবি??
আমিঃ বাইকের??
এই বার ভাবি এদিক ওদিক চাবি খুঁজার ভান ধরলো।। কিন্তু একবারো বালিশের নিচে হাত দিলো না। তারপর ভাবি আমাকে বললো......
ভাবিঃ আকাশ চাবি তো খুঁজে পাচ্ছি না। তোমার ভাই কোথায় রেখেছে কে জানে??
আমি ভাবতেছি একবার বলে দিবো, চাবিতো আপনে বালিশের নিচে লুকিয়ে রেখেছেন,,পাবেন কি করে।
কিন্তু এখন যদি এই কথাটা বলি তখন ভাবি বলবে,তুমি দেখি আমার বালিশের নিচের খবর ও জানো।
তাই কোনো কিছু না বলে সোজা বাহিরে চলে গেলাম।। মন খারাপ দেখে পাহাদ আর তামিম বারবার জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে,কিন্তু আমি কিছু বললাম না।
যতযাই হোক না কেনো ঘরের কথা বাহিরে বলা উচিত হবে না। তারপর আরো কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
পরের দিন কলেজে চলে গেলাম।। কলেজ শেষ করে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতেছি এমন সময় ভাবির মোবাইল থেকে কল আসলো কিন্তু আমি ধরলাম না।
বারবার কল দিতে লাগলো। তাই আমি সুইস অপ করে রেখে দিয়েছি। প্রায় ত্রিশ মিনিট পর মোবাইল ওপেন করলাম। অপেন করে দেখলাম,,অনেক গুলো কল এসে জমা হয়েছে।। একটু পর ভাইয়া কল দিলো আর আমাকে বললো.......
ভাইয়াঃ কিরে তুই কল ধরিস না কেনো। আবার
নাম্বারও বন্ধ??
আমিঃ ভাইয়া ক্লাসে ছিলাম। বলো কি হয়েছে??
ভাইয়াঃ তাড়াতাড়ি বাসায় যা। তোর ভাবি নাকি মাথা ঘুরে পড়ে গেছে??
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে যাচ্ছি??
কল কেটে দিয়ে পাহাদ ও তামিমকে নিয়ে বাসায় চলে গেলাম। ভাবি শুয়ে আছে। তাড়াতাড়ি একটা গাড়ি নিয়ে হাসপাতালে গেলাম ভাবিকে নিয়ে। ভর্তি করিয়ে আমরা বাহিরে অপেক্ষা করতে লাগলাম। একটু পর ভাইয়াও চলে আসলো। এসে আমাকে বললো.........
ভাইয়াঃ কিরে কি হইছে??
আমিঃ তেমন কিছু না। মনে হয় মাথা ঘুরেছে??
ভাইয়াঃ ডাক্তার সাহেব ইশিতার কি অবস্থা??
ডাক্তারঃ ভালো তেমন কিছু হয়নি। রোগী আপনার
কি হয়?
ভাইয়াঃ আমার ওয়াইফ??
ডাক্তারঃ congratulations. আপনি বাবা হতে চলেছেন??
ডাক্তারের কথা শুনে ভাইয়া আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলো। আসলে এটা খুশির কান্না।
তারপর ভাবিকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হলো। আমি খুব একটা ভাবির সাথে কথা বলি না।
আর হ্যা ভাইয়ার কাছেও এখন আর টাকার জন্য হাত পাতি না।সারাদিন ঘরে বসে থাকি,কলেজে হেঁটে হেঁটে যাই। মাঝে মাঝে অহনার কথা অনেক মনে পড়তো। কিন্তু চাইলেও ওর সাথে কথা বলতে পারতাম না। প্রতিদিন অনেক বার কল দিতাম,, কিন্তু নাম্বার অফ থাকতো।
এভাবে কিছুদিন কেটে গেলো। ভাবিও মোটামুটি এখন সুস্থ। তবে একটা সমস্যা ভাবি এখন আর ঠিক মতো কাজ কাম করতে পারছে না। মাও অসুস্থ তাই বাসার কাজ গুলো ঠিক ভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে ভাবি অহনাকে আমাদের বাসায় নিয়ে আসলো।
অহনাকে দেখেই আমার ভিতর-টা কেঁদে উঠলো। ভাবি সামনে থাকায় কিছু বললাম না। রাতের বেলায় অহনা আমার রুমের সামনে আসলো। ওকে দেখেই আমি দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে দরলাম। অহনাও আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো। হটাৎ করে অহনা আমাকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু আমি তখনও অহনাকে জড়িয়ে ধরে আছি।
অহনার এমন অবস্থা দেখে আমি পিছনে তাকালাম। তাকিয়ে আমি অনেক বড় একটা ধাক্কা খেলাম। কারন পিছনে ভাবি দাঁড়িয়ে আছে। আমার কলিজা শুকিয়ে গেলো। এরপর ভাবি অহনা কে বললো............
গল্পটা বাস্তবের সাথে যথাযত মিল রয়েছে,,অনেক আপু গল্পটা পড়বেন। আশাকরি ভুল বুঝবেন না, এটাই বাস্তব। একটা কথা সব সময় মনে রাখবেন। সংসার সুখী হয় রমনীর গুনে, সংসার ধ্বংস হয় নারীর কারনে।
অথছো দুটোই নারী জাতি।
আর একটা কথা সব সময় মনে রাখবেন। আজ আপনি যেই যায়গায় আছেন। গতকাল আপনার আম্মু অথবা শ্বাশুড়ি সে যায়গায় ছিলেন। আর আজ আপনার
আম্মু ও শ্বাশুড়ি যেই যায়গায় আছেন। আগামী কাল আপনি থাকবেন সেই যায়গায়। সুতারাং ভালো করলে ভালোর ফল আল্লাহ দিবেন। খারাপ করলে অবশ্যই আপনার পাওনা,আপনি পাবেন। একই ক্ষেত্রে ছেলেদের ও এমনই। আমার কথায় যদি কেউ মনে কষ্ট পেয়ে থাকেন। ছোট ভাই হিসেবে ক্ষমা করে দিবেন 🙏 ইতিঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।।
ভাবিঃ অহনা তুই এখানে কি করিস??
অহনাঃ কই কিছু না??
ভাবিঃ যা ঘুমাতে যা??
অহনা মাথা নিচু করে চলে যায়।।ভাবি কিছুক্ষণ আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। আমিও নিজের রুমে চলে গেলাম।
রাতে বসে বসে ভাবছি, ভাবি আবার অহনাকে ওদের বাসায় পাঠিয়ে দিবে নাতো। এমন সময় পাহাদ কল দিলো। আমি কথা বলতে বলতে রুম থেকে বের হয়ে গেলাম। কারন আমার রুমে নেটওয়ার্ক থাকে না।
তাই আমি ছাদে উঠার জন্য সিঁড়ির রুমের দিকে যাচ্ছি এমন সময় ভাইয়া আর ভাবির রুম থেকে চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ আসতে লাগলো?? এতো রাতে কি নিয়ে ঝগড়া করছে কে জানে।
এরপর আমি পাহাদকে পরে কল দিবো এই কথা বলে কলটা কেটে দিলাম। আর দরজার পাশে দাঁড়াতেই শুনাতে ফেলাম,,ভাবি ভাইয়াকে বললো............
ভাবিঃ এই শুনো আমি সকলের জন্য রান্না করতে পারবো না??
ভাইয়াঃ মানে কি? এখানে নতুন কেউ আসছে
নাকি??
ভাবিঃ পুরাতনদের কথাই বলছি??
ভাইয়াঃ দেখো পাগলামি করো না৷ তুমি না করলে কে করবে শুনি? আম্মুও অসুস্থ হয়ে গেছে??
ভাবিঃ সবকিছু আমাদের ঠেকা পড়েছে নাকি??
ভাইয়াঃ মানে??
ভাবিঃ তুমি সারাদিন অফিস করবে, এতো কষ্ট করবে। আমি সারাদিন কাজ করবো। আর অন্যরা বসে বসে খাবে???
ভাইয়াঃ অন্যরা কোথায় আব্বু আম্মু আর আকাশ ইতো থাকে বাসায়। বাইরের কেউ তো থাকে না??
ভাবিঃ তো ও বসে বসে খাবে কেনো??
ভাইয়াঃ কে??
ভাবিঃ তোমার ভাই? ও কিছু করতে পারে না? ফ্যামিলিটা শুধু তোমার একার নাকি??
ভাবিঃ আরে আজব,,ও এখনো ছোট।। পড়া লেখা করছে। পড়া লেখা শেষ হোক,তারপর তো একটা চাকরি করবেই??
ভাবিঃ তাই বলে এতো বড় হয়েও বসে বসে খাবে??
ভাইয়াঃ দেখো ইশিতা আব্বু যখন ইনকাম করতো
তখন আমিও এই ভাবে বসে বসে খেয়েছি। পড়া
লেখা শেষ করেই চাকরি নিয়েছি??
ভাবিঃ বাবার হোটেল আর ভাইয়ার হোটেল এক না??
ভাইয়াঃ তার মানে তুমি বলতে চাচ্ছো আকাশকে
কাজ করতেই হবে??
ভাবিঃ একদম কারেক্ট। বসে বসে খাওয়া চলবে না??
ভাইয়াঃ এই তুমি পাগল হয়ে গেছো। ও কি করবে এখন??
ভাবিঃ যেটা মন চায় সেটাই করুক। বাট বসে বসে খাওয়া চলবে না। আর তোমার আব্বু আম্মুকে কি
শুধু আমরা খাওয়াবো নাকি??
ভাইয়াঃ মানি??
ভাবিঃ উনারা তো শুধু তোমার বাবা মা নয়, আকাশে এরও। সেই হিসেবে ওর ওতো অনেক দায়িত্ব আছে। আকাশকেও উনাদের খাওয়াতে হবে??
ভাইয়াঃ ওয়েট ওয়েট, আকাশ খাওয়াবে মানে কি। আমরা কি এখনো আলাদা হইছি। নাকি আকাশ
বিয়ে সাদি করে বউ নিয়ে আলাদা আছে??
ভাবিঃ দেখো এতো কিছু আমি বুঝিনা। আমি সবার জন্য রান্না করবো না??
ভাইয়াঃ তোমার মাথা কি একেবারে খারাপ হয়ে গেছে??
ভাবিঃ হ্যা হ্যা আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তুমি দেখোনা আমাদের সন্তান আসবে, ওর তো একটা ভবিষ্যত আছে। ওর জন্য চিন্তা করা লাগবে না??
ভাইয়াঃ ইশিতা আমাদের সন্তান এখনো পৃথিবীতে আসেনি৷ সো এখন এগুলো নিয়ে কথা বলবে না।
আরে আব্বু আম্মু আমার জন্য কি না করেছে।
আর তুমি বলছো ওদের না খাওয়াইতে??
ভাবিঃ আমি তো একবারো বলিনি উনাদের
খাওয়াবো না??
ভাইয়াঃ তাহলে কি বলতে চাচ্ছো??
ভাবিঃ খুব সিম্পল আকাশ টাকা ইনকাম করে তোমার হাতে দিবে। তাহলে সে এই বাসায় খেতে পারবে??
ভাইয়াঃ ইশিতা ভুলে যেওনা টাকা আমি ইনকাম করি তুমি না। সো কে খাবে কে খাবে না সেটা আমি
ডিসাইট করবো তুমি না.??
ভাবিঃ ও আচ্ছা তার মানে এই বাসায় আমার কোনো দাম নেই। আমি উড়ে এসে জুড়ে বসেছি। ওকে আমি কালকেই বাবার বাড়ি চলে যাবো??
ভাইয়াঃ উলটো বুঝো কেনো??
ভাবিঃ শুনো আমি এতো কিছু জানিনা৷ তুমি আকাশকে আর খাওয়াবে না৷ আর আব্বু আম্মুর জন্য আকাশকে ও টাকা দিতে হবে। নাহলে...
ভাইয়াঃ নাহলে কি??
ভাবিঃ নাহলে আমি এই বাসা ছেড়ে চলে যাবো??
ভাইয়াঃ ওকে যাও??
ভাবিঃ হুম যাবো তবে একদিনের জন্য নয়, সারা জীবনের জন্য??
ভাইয়াঃ মানে??
ভাবিঃ তুমি আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিবে??
ভাইয়াঃ এবার কিন্তু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে??
ভাবিঃ তুমি আমার কথায় রাজি কি না সেটা বলো??
ভাইয়াঃ কোন কথায়??
ভাবিঃ আকাশকে আর একটা টাকাও দিবে না৷ এন্ড সংসারের জন্য টাকা দিতে হবে??
ভাইয়াঃ এটা সম্ভব না??
ভাবিঃ ওকে তাহলে কালকে সকালে ৫ লাখ টাকা
রেড়ি রাখবে৷ আমি চলে যাবো??
ভাইয়াঃ ৫ লাখ মানে। আমাকে বিক্রি করলেও তো ৫ লাখ টাকা হবে না। আর কিসের ৫ লাখ টাকা??
ভাবিঃ কাবিনের ৫ লাখ টাকা রেড়ি রাখবে। দেখি তোমার গায়ে কতো চর্বি হয়েছে??
ভাইয়াঃ দেখো সে হুট করে চাকরি পাবে কোথায়??
ভাবিঃ সেটা সে বুঝবে। তাকে নিয়ে আমার চিন্তা করা লাগবে না। টাকা না দিতে পারলে বাসা থেকে বের
করে দিবে??
ভাইয়াঃ এটা কি করে সম্ভব??
ভাবিঃ সব সম্ভব। আমি কথা বলার সময় তুমি শুধু চুপ থাকবে??
ভাইয়া ও ভাবির কথা গুলো শুনে আমার শরীর কাঁপতে শুরু করলো😥😥 আর এক সেকেন্ডও দরজার সামনে থাকলাম না। সোজা নিজের রুমে চলে গেলাম।
অহনাকে ভালোবাসার জন্য ভাবি এই ভাবে শাস্তি দিবে কল্পনাও করতে পারিনি😞😞 তবে আমি আরো আগে থেকেই টের পেয়েছি। ভাবি আমার আর আব্বু আম্মুর খাওয়া দাওয়া দেখতে পারে না। অনেক বার চাইছি আলাদা বাসা নিয়ে থাকতে,কিন্তু আব্বুর ভয়ে পারিনি।
এখন আব্বুর বয়স হয়ে গেছে তাইতো যেভাবে মন চায় সেভাবে বলছে। আব্বুকে ঘুম থেকে ডেকে এনে বলতে ইচ্ছে করছে..👇👇👇
দেখো তোমার শিক্ষিত বউ মার আচরণ। তুমি বলেছো বউ অনেক ভালো। এটাই কি ভালোর নমুনা।
শুয়ে শুয়ে ভাবতেছি মেয়েরা মায়ের জাত,সে জন্য কিছু বলতে পারি না৷ মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে ভাবির দুই গালে দুইটা চড় বসিয়ে দিই। কিন্তু আমার বাবা,, মা এগুলো আমাকে শিক্ষা দেয়নি। রাতে আর ঘুমালাম না,ছাদে গিয়ে বসে রইলাম। সকাল বেলায় অহনা ছাদে আসলো আর আমাকে বললো.....
অহনাঃ এতো সকালে ছাদে,,ঘুমাওনি??
আমিঃ নাহহ??
অহনাঃ কেনো??
আমিঃ এমনিই??
এরপর অহনা আমার পাশে বসলো,আর আমার একটা হাত ধরে, কাঁধে মাথা রেখে কথা বলতে শুরু করলো।
অহনার এমন আচরণ দেখে আমার মনটা একটু হালকা হয়ে গেলো। ছাদে বসে বসে অহনার সাথে কথা বলছি এমন সময় ভাবি আমাদের পিছনে এসে অনেক জোরে একটা চিৎকার দিলো। ভাবির চিৎকার দেখে অহনা ভয়ে কাঁপতে থাকে। চিৎকার শুনে ভাইয়া, আব্বু, আম্মু সবাই ছাদে চলে আসে। এসেই আব্বু বললো.............
আব্বুঃ কি হইছে??
ভাবিঃ আপনার ছেলেকে জিজ্ঞেস করেন??
ভাইয়াঃ আচ্ছা সবাই নিচে চলো৷ আশে পাশের সবাই তাকিয়ে আছে??
এরপর সবাই মিলে নিচে গেলাম। ভাবি কল দিয়ে উনার আব্বু আম্মুকে আসতে বললেন। ততক্ষণ কেউ কোনো কথা বলছে না। প্রায় এক ঘন্টা পরে ভাবির আব্বু আম্মু আসলো। আসার পর আব্বু আমাকে বললেন.........
গল্পঃ_অসমাপ্ত_ভালোবাসা (পর্ব_০৫)
গল্পটা বাস্তবের সাথে যথাযত মিল রয়েছে।
লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।
এরপর সবাই মিলে নিচে গেলাম। ভাবি কল দিয়ে উনার আব্বু আম্মুকে আসতে বললেন। ততক্ষণ কেউ কোনো কথা বলছে না। প্রায় এক ঘন্টা পরে ভাবির আব্বু আম্মু আসলো। আসার পর আব্বু আমাকে বললেন.........
আব্বুঃ এই আকাশ কি হয়েছে??
আমিঃ আব্বু আমি অহনাকে ভালোবাসি? আর অহনাও আমাকে ভালোবাসে??
তখন ভাবি বলল........
ভাবিঃ মিথ্যা কথা অহনা জীবনেও ওকে ভালোবাসেনি। ও জোর করে অহনার সাথে ছিহ! ভাগ্যিস আমি ছাদে গিয়েছিলাম??
আমিঃ ভাবি আপনি এসব কি বলছেন??
ভাবিঃ যা সত্যি তাই বলছি??
এরপর ভাইয়া বললো..........
ভাইয়াঃ তোর লজ্জা করেনা,এতো বড় হয়ে এগুলো করিস। খাস বসে বসে, দুই টাকা তো এনে দিতে
পারিস না৷ আবার এগুলো করে বেড়াস। লজ্জা
করে না তোর???
আমিঃ বাহ! তুই তোর বউয়ের কথা শুনে আমাকে
এটা বলতে পারলি??
এরপর আম্মু কোনো কথা না বলে সোজা আমার কাছে এসেই ঠাসস ঠাসস করে দুইটা চড় আমার গালে বসিয়ে দিলো আর বলতে লাগলো.......
আম্মুঃ কুলাঙ্গার কোথাকার, এই জন্য তোকে জন্ম দিয়েছি??
তারপর আমি বাবাকে বললাম........
আমিঃ বাবা আপনি অন্তত আমাকে বিশ্বাস করুন। আপনি খুব ভালো করে জানেন আমি কেমন??
আম্মু বললো..........
আম্মুঃ দেখতেই তো পারছি কেমন ভালো। অন্যের ইজ্জত নিয়ে টানাটানি করিস??
আমিঃ ওকে ফাইন,আমি যেহেতু অহনার সাথে খারাপ কিছু করেছি। আমি তাহলে অহনাকে বিয়ে করবো??
ভাবিঃ বিয়ে করবি মানে। তোর কাছে কে অহনাকে বিয়ে দিবে। অন্তত আমি বেঁচে থাকতে জীবনেও
দিবো না??
আমিঃ কেনো কি নেই আমার মাঝে। যে অহনাকে
বিয়ে দিবেন না??
ভাবিঃ তুই আরো বড় কিছু হলেও অহনাকে তোর হাতে তুলে দিবো না??
এরপর ভাইয়া বললো........
ভাইয়াঃ এখনো বসে বসে খাস। বিয়ের কথা মুখে আনতে লজ্জা করেনা??
আমিঃ তুই মনে হয় অনেক ইনকাম করে রাখছিস। মাত্র ১ বছর ইনকাম করেই তোর এই অবস্থা। আব্বু যে সারাজীবন তোকে বসিয়ে বসিয়ে খাইয়েছে???
এরপর আম্মু আমাকে বললো........
আম্মুঃ কুলাঙ্গার! তোর ভাইকে এই কথা বলতে তোর একটুও লজ্জা করলো না। যে তোকে খাওয়ায় তাকে তুই এই কথা বলতে পারলি??
আমিঃ ওকে আমাকে আর খাওয়াতে হবে না। আব্বু আমি যতটুকু সম্পত্তি পাবো,আমারটা আমাকে
বুঝিয়ে দিন? আমি অহনাকে বিয়ে করবো??
আম্মু বললো.......
আম্মুঃ আমি মারা যাওয়ার পর যেটা ইচ্ছা সেটা করিস। এর আগে এক রত্তিও কেউ পাবি না??
আম্মু এই কথা বলার পর ভাবি বললো.........
ভাবিঃ দুই টাকার মরদ নাই আবার সম্পত্তি নিতে আসছে??
আমিঃ ভাবি আমার মাথা গরম করবেন না। তাহলে কিন্তু আমি ভুলে যাবো আপনি আমার ভাবি??
ভাবিঃ কি করবি তুই হে, মনে রাখিস তুই যতোই চালাকি করিস না কেনো,অহনাকে পাবি না??
আমি সোজা অহনার কাছে গেলাম। ওরে ঝাঁকিয়ে দিয়ে বললাম, "অহনা বলো তুমি আমাকে ভালোবাসো..তুমি আমাকে বিয়ে করতে চাও..অহনা বলে দাও সবাইকে।
অহনা ভাবির দিকে তাকালো। তারপর না সুচক মাথা নাড়ালো।মুহুর্তেই আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।
তারপর আমি আব্বু কে বললাম........
আমিঃ আব্বু অহনা মিথ্যা কথা বলছে। ও ভাবির
ভয়ে এমনটা করছে??
ভাবিঃ এই ফালতু এই, তোর মতো আমি এতো মিথ্যুক নই। আমার বোনের রুচি এতোটা খারাপ না,যে তোকে বিয়ে করবে??
নিজেকে আর কন্ট্রল রাখতে পারলাম না। ভাবির গায়ে হাত তুলে ফেললাম। হুমম ভাবির গালে চড় বসিয়ে দিলাম। মুহুর্তে সবাই অবাক হয়ে গেলো। তারপর ভাবি তার বাবাকে বললো........
ভাবিঃ বাবা আমি আর এই বাসায় থাকবো না। আমাকে নিয়ে চলো??
ভাইয়া আমার এমন কান্ড দেখে ডাইরেক্ট আমার উপর আক্রমন করে। একটা লাথি দিয়ে মারতে থাকে। এক বারের জন্য ভাইয়ার চোখের দিকে তাকাইনি। যে ভাই জীবনে কোনো দিন আমার গায়ে হাত তুলেনি সে ভাই আজকে ভাবির মিথ্যা কথা শুনে আমার গায়ে হাত দিলো। আব্বু আর ভাইয়া দুই জনেই আমাকে ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করে দিলো। বের হওয়ার সময় ভাইয়াকে বললাম...............
আমিঃ একদিন সত্যিটা ঠিকই জানবি। কিন্তু মনে রাখিস আমাকে আর পাবি না?
আর কোনো কথা না বলে বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম।আসার সময় ভাবির মুখে স্পষ্ট হাঁসির চিহ্ন দেখতে পেলাম। ভাইয়ার আচরনে আমার কোনো দুঃখ নেই। কিন্তু অহনা। অহনা আমার সাথে এমন করতে পারলো।
আরে আমি তো অহনার জন্যই মার খেলাম,,অপমানিত হলাম। সত্যিটা বললে কি এমন হতো। বাসায় না থাকতে দিলে নাই, আমি অহনাকে নিয়ে অন্য কোথাও চলে যেতাম। আসলে মেয়েদের কে চিনা জীবনেও সম্ভব না। সার্থের জন্য সব করতে পারে.। আমার সাথে অহনা এমন করবে আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। সে যদি সত্যি কথাটা বলতো তাহলে ভাবি ছাড়া সবাই পজেটিব ভাবে ভাবতো.....
এই জন্য আমি বলি..পরিও না নারীর প্রেমে করিও না ভুল। নারী হলো কাল নাগীনি🐍🐍 সর্বনাশের মূল।
সৎ পথে করিও ভ্রমন যদিও হয় দেরি.....অসৎ নারী করিও না বিয়া যদিও হয় পরী......
ওয়াদা করছি আর জীবনেও ওই বাসায় গিয়ে থাকবো না। কোনো দরকার ছাড়া যাবো না। আর আব্বু আম্মু ছাড়া ওদের কারো সাথে কোনোদিন কথা বলবো না।।
বাসা থেকে বের হয়ে একটা নির্জন যায়গায় গিয়ে বসে রইলাম। বসে বসে কান্না করতেছি, এমন সময় কেউ একজন আমার কাঁধে হাত রাখলো।। পিছনে তাকিয়ে দেখি পাহাদ আর তামিম। পাহাদ বললো.......
পাহাদঃ কিরে তুই এখানে। আমরা তোকে অনেক খুঁজেছি। চল এখন??
আমিঃ কোথায়??
পাহাদঃ বাসায়??
আমিঃ না আমার কাজ আছে তোরা যা??
পাহাদঃ মন খারাপ করে বসে থেকে লাভ আছে বল। ফ্যামিলিতে একটু আকটু সমস্যা হয়। এটা কোনো ব্যাপার না??
আমিঃ তোদের এই কথা কে বলেছে??
পাহাদঃ আন্টি কল করে সব বলেছে। তুই বাসায় চল??
আমিঃ না আমি জীবনেও আর ওই বাসায় যাবো না??
পাহাদঃ দেখ তুই পাগলামি করিস না। চল বাসায় চল??
আমিঃ বললাম তো আমি যাবো না??
পাহাদঃ তো তুই কোথায় যাবি??
আমিঃ আমাকে নিয়ে তোদের চিন্তা করা লাগবেনা। তোরা যা??
পাহাদঃ সত্যি যাবি না??
আমিঃ না??
পাহাদঃ কি করবি তাহলে??
আমিঃ জানিনা, তবে এটা সিওর থাক যে আমি আর বাসায় যাচ্ছি না??
পাহাদঃ পড়া লেখার কি হবে??
আমিঃ জানিনা, করবো না আর। করে লাভ কি??
পাহাদঃ দেখ এই সামন্য ঘটনার জন্য পড়া লেখা বন্ধ করিস না। তুই তোর ফ্যামিলেকে দেখিয়ে দে, তোর ভাবিকে বুঝিয়ে দে। যে তুই তাদের ছাড়া প্রতিষ্ঠিত
হতে পারিস?? আচ্ছা এখন আমার সাথে আমাদের বাসায় চল। কি করবি সেটা পরে দেখা যাবে।
এরপর আমি পাহাদের বাসায় চলে গেলাম। রাতে আমি তামিম,পাহাদ ওদের ছাদের উপর বসে আছি। বার বার অহনার কথা মনে পড়তে লাগলো। হটাৎ পাহাদ বলে উঠলো.......
পাহাদঃ আকাশ??
আমিঃ হুমম বল??
পাহাদঃ অহনাকে উঠিয়ে নিয়ে আয়৷ তারপর বিয়ে করে ফেল??
আমিঃ নারে অহনা ওর আব্বু আম্মুর উপর কথা বলবে না৷ আর অহনাকে আমি নিয়ে আসলে, ভাইয়া আর ভাবির ডিবোর্স হয়ে যেতে পারে??
পাহাদঃ তাহলে কি করবি??
আমিঃ দোস্ত আমি ওরে ছাড়া থাকতে পারবো না??
পাহাদঃ তাহলে বাসায় ফিরে যা। দেখবি সবাই
মেনে নিবে??
আমিঃ না, আমি ওয়াদা করেছি।। আমি ওই বাড়িতে গেলেও থাকবো না। শুধু আব্বু আম্মু ছাড়া আর
কারো সাথে কোনো কথা বলবো না। যদিও যাই এক ফোটা পানিও খাবো না??
পাহাদঃ তাহলে তুই একটা কাজ কর??
আমিঃ কি??
পাহাদঃ তুই ঢাকা চলে যা??
আমিঃ কেনো??
পাহাদঃ ওইখানে গিয়ে পড়া লেখা শেষ কর। অহনার বয়স এখনো বেশি হয়নি। তুই ভালো কোনো চাকরি ফেলে এমনিতেই তোর কাছে বিয়ে দিবে??
|||
আমার কয়েকটা ফ্রেন্ড আছে ওইখানে.। ওদের সাথে থাকবি পড়া লেখা করবি। আমি ওদের বলে দিবো যাতে তোর জন্য একটা চাকরি দেখে, বা কয়েকটা টিউশনি ব্যাবস্থা করে দেয়।। অন্তত খরচ টা চালিয়ে নিতে পারবি???
আমিঃ ওকে তাহলে তুই কথা বল??
পাহাদঃ আচ্ছা ঠিক আছে??
পরেরদিন আমি,পাহাদ,তামিম ঢাকা চলে গেলাম। ঢাকা আসার পর হাকিম, ইউসুফ, সানি ৩ টা ছেলে আমাদের নিতে আসলো। পরে জানলাম এরাই পাহাদের বন্ধু।
অবশেষে ওদের সাথে ব্যাচেলার উঠলাম। আব্বু আম্মুর জন্য মন খারাপ থাকতো সব সময়। পাহাদ আর তামিম আমাকে রেখে আবার লক্ষীপুর চলে গেলো।
ওদের সাথে মোবাইলে কথা হয়।। মাঝে মাঝে আম্মুর সাথেও কথা হয়। এভাবেই দিন যাচ্ছে। সানি,হাকিম আমাকে খুব ভালো বন্ধু হিসেবে দেখে।আর কয়েকটা টিউশনি করে কোনো রকম দিন যাচ্ছে।
হটাৎ এক দিন পাহাদ কল দিয়ে বললো...অহনার বিয়ে হয়ে গেছে। আমাকে জানায়নি। কারন আমি জানলে নাকি সমস্যা করতাম। পাহাদও শুনেছে বিয়ের কয়েক দিন পর। ইচ্ছে করছে উড়ে অহনার কাছে চলে যাই কিন্তু পারলাম না। নিজেকে আর স্থির রাখতে পারলাম না। ফ্যামিলি এত বড় গাদ্ধারি করবে কল্পনাও করিনি।
আম্মুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম,আম্মু বললো তারা নাকি বিয়েতে যায়নি। শুধু ভাইয়া আর ভাবি গিয়েছিলো। আর বিয়েটা ভাবি নিজেই দিয়েছে।
আর কোনো কিছু বললাম না।। সেদিন অনেক গুলো ঘুমের মেডিসিন খেয়ে ফেললাম নিজেকে শেষ করে দেওয়ার জন্য 😢 কিন্তু সেটাও পারলাম না। কারন হাকিম,,ইউসুফ,, সানি তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যায়। অল্পের জন্য বেঁচে যাই।
পরে পাহাদ ও তামিম খবর পেয়ে হাসপাতালে আসে।। কোনো কথা না বলে দুজনে আমার গালে ঠাসস ঠাসস করে চড় বসিয়ে দেয়। তারপর জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দেয়। আমার চোখ দিয়েও পানি ঝড়তে লাগলো।
পাহাদ,তামিম ২ দিন থেকে আবার ব্যাক করলো। আমি সব সময় মন খারাপ করে বসে থাকতাম। কিছুদিন পর আম্মু কল দেয় আর বলে..........
আম্মুঃ কেমন আছিস??
আমিঃ ভালো তোমরা??
আম্মুঃ ভালো??
আমিঃ আব্বু কোথায়??
আম্মুঃ পাশেই আছে। শোন তোকে একটা কথা বলার জন্য কল করেছি??
আমিঃ হুম বলো??
আম্মুঃ তোর ভাইয়ের মেয়ে হয়েছে। তুই কাকা হয়েছিস??
আমিঃ সরি তুমি ভুল বলেছো। আমার কোনো
ভাই নেই??
আম্মুঃ প্লিজ এভাবে বলিস না। যা হওয়ার হয়ে গেছে এবার অন্তত বাড়িতে ফিরে আয়??
আম্মু কাটা গায়ে লবনের চিটা দিতেছে।। কথাটা মনে মনে বললাম।
আমিঃ নাহ বাড়িতে যাবো না। অন্য কোনো কথা থাকলে বলো??
আম্মুঃ অন্তত ছোট মেয়েটাকে দেখে যা??
আমিঃ আমার সময় নাই। কখনো সময় ফেলে
আসার চেষ্টা করবো??
এই কথাটা বলে কলটা কেটে দিলাম। আম্মু কান্নাকাটি করলো বাট আমি যাইনি। এভাবে মাস শেষ হয়ে বছর শেষ। আমি বাসায় যাইনি। অহনার জন্য এখনো আমি কান্না করি। সত্যি অনেক ভালো বাসতাম মেয়েটাকে।
কিন্তু মেয়েটাও সার্থপর,কারন ওর জন্য আমি ঘর ছাড়া হলাম৷ কিন্তু সে খুব সহজেই অন্য একটা ছেলেকে বিয়ে করে নিলো। একবারও ভাবলো না আমার কথা।
প্রায় ২ বছর পর,,আমি অর্নাস শেষ করে মাস্টার্সে ভর্তি হলাম। ছোট একটা চাকরিও পেলাম। মাসে মাসে আব্বু আম্মুর জন্য টাকা পাঠাই। যাতে ভাবি আব্বু আম্মুকে কিছু না বলতে পারে।
একদিন আব্বু আমাকে কল দিলো। এমনিতে আব্বুর সাথে তেমন কথা বলিনি,বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর একদিন বলেছি তাও ভুলে। আর আজকে আব্বু নিজেই কল দিয়ে বললো আম্মু নাকি খুব অসুস্থ। শেষ বারের মতো আমাকে দেখতে চাইছে।
আব্বুর কথা শুনে নিজেকে স্থির রাখতে পারিনি। ব্যাগ পত্র গুছিয়ে লক্ষীপুরের দিকে রওয়ানা দিলাম।
অবশেষে লক্ষীপুর চলে আসলাম।।পাহাদ আর তামিম আমাকে দেখেই জড়িয়ে ধরলো। তারপর ওদেরকে সাথে নিয়ে বাসার দিকে পা বাড়ালাম,কিন্তু ওরা গেলো না। কলেজে কি একটা কাজ আছে নাকি তাই ওরা কলেজে চলে গেলো।
আর আমি বাসার উদ্দেশ্য রওয়ানা দিলাম।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ১১ বাজে। একটা হোটেলে গিয়ে দুপুরের খাবার টা প্যাকেট করে নিলাম। সাথে কয়েক বতল পানি নিলাম।. আব্বু আম্মুর জন্য কিছু জিনিস নিলাম। আর ভাইয়ার মেয়ের জন্য কয়েক প্যাকেট চকলেট নিয়ে বাসায় গেলাম। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। কেমন জানি অস্বস্তি লাগছে,, শরীর কাঁপতেছে। কাঁপা কাঁপা শরীর নিয়ে কলিং বেল চাপ দিলাম।
ভিতর থেকে কেউ বললো দরজা খোলা আছে। তারপর আমি ভিতরে চলে গেলাম। ছোট একটা পরীকে দেখে আমার চোখ আটকে গেলো। পরীটা আর কেউ নয় আমার ভাইয়ার মেয়ে। চেহারাটা একদম ভাইয়ার মতো হয়েছে। আমাকে দেখে ভাইয়ার মেয়ে বললো..........
গল্পঃ_অসমাপ্ত_ভালোবাসা_পর্ব (০৬_শেষ_পর্ব)
গল্পটা বাস্তবের সাথে যথাযত মিল রয়েছে।
লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।
আর আমি বাসার উদ্দেশ্য রওয়ানা দিলাম।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ১১ বাজে। একটা হোটেলে গিয়ে দুপুরের খাবার টা প্যাকেট করে নিলাম। সাথে কয়েক বতল পানি নিলাম।. আব্বু আম্মুর জন্য কিছু জিনিস নিলাম। আর ভাইয়ার মেয়ের জন্য কয়েক প্যাকেট চকলেট নিয়ে বাসায় গেলাম। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। কেমন জানি অস্বস্তি লাগছে,, শরীর কাঁপতেছে। কাঁপা কাঁপা শরীর নিয়ে কলিং বেল চাপ দিলাম।
ভিতর থেকে কেউ বললো দরজা খোলা আছে। তারপর আমি ভিতরে চলে গেলাম। ছোট একটা পরীকে দেখে আমার চোখ আটকে গেলো। পরীটা আর কেউ নয় আমার ভাইয়ার মেয়ে। চেহারাটা একদম ভাইয়ার মতো হয়েছে। আমাকে দেখে ভাইয়ার মেয়ে বললো..........
ভাইয়ার মেয়েঃ কে গো তুমি??
আমিঃ তুমি কে, তোমার নাম কি??
ভাইয়ার মেয়েঃ আমার নাম তমা। তুমি কে??
আমিঃ আমি তোমার চাচ্চু??
তমাঃ তুমি সে যার জন্য দাদু প্রতিদিন কাঁধে। যাও তুমি পঁচা, তোমার সাথে কথা নাই??
আমিঃ ওলে ওলে বাবুটা রাগ করে দেখতেছি??
এই বলে তমাকে কোলে তুলে নিলাম।। তারপর চকলেট গুলো ওর হাতে দিলাম। ওরে কোলে নিয়ে আম্মুর রুমে গেলাম। আম্মু আমাকে দেখেই কাঁদতে শুরু করলো। আমি গিয়ে সালাম করবো এমন সময় আমাকে জড়িয়ে ধরে সে কি কান্না।
মা তো ছেলের কষ্ট সহ্য করতে পারে না।। আমিও মাকে জড়িয়ে ধরে রাখলাম কিছুক্ষণ। মা আগের মতো নাই। পুরো শরীর ভেঙ্গে গেছে,আমি মায়ের পাশে বসে আছি। তমা আমার কোলে। এমন সময় আব্বু রুমে আসলো।
আব্বুর চোখেও স্পষ্ট পানি দেখতে ফেলাম। আব্বু প্রায় কেঁধেই দিলো। অনেকক্ষণ পরে ভাবি আসলো। আমি আসছি যে হয়তো জানে না।। আম্মুর রুমে কান্নাকাটির আওয়াজ শুনে আসছে।
ভাবি আমাকে দেখে কিছুক্ষণ আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। কিছু বলতে যাবে, তার আগেই আমি তমাকে কোলে নিয়ে ছাদে চলে গেলাম।মেয়েটা অনেক মিষ্টি, একদিনে মন জয় করে নিয়েছে।। কিছুক্ষণ ছাদে থেকে তারপর নিজের রুমে চলে গেলাম। সবকিছু আগের মতোই আছে। পুরোনো সৃতি গুলোর কথা মনে পড়ে,আমার চোখের কোনে পানি জমা হয়ে গেলো।
তারপর আম্মুর কাছে গেলাম। গিয়ে আম্মুর পাশে বসে বসে কথা বলতেছি। কিছুক্ষণ পর ভাবি আসলো আর সবাইকে খাবার খেতে যাওয়ার জন্য বললো। তখন আম্মু আমাকে বললো...........
আম্মুঃ চল খাবার খেতে চল??
আমিঃ আমি খাবার নিয়ে আসছি। তোমরা আমার সাথে খাও??
আম্মুঃ কি বলিস, কোথায় থেকে আনলি??
আমিঃ হোটেল থেকে??
তারপর ব্যাগ থেকে খাবার বের করে আমি,আব্বু,আম্মু খেয়ে নিলাম। তমাকেও খাইয়ে দিলাম। ভাবি কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। তারপর নিজের রুমে চলে গেলো। বিকেল বেলায় আমি চলে যাওয়ার জন্য রেড়ি হচ্ছি এমন সময় আম্মু বললো.........
আম্মুঃ কোথায় যাচ্ছিস??
আমিঃ চলে যাচ্ছি??
আম্মুঃ কয়েকটা দিন থেকে যা??
আমিঃ না আম্মু কাজ আছে??
আম্মুঃ আজকের রাতটা থেকে যা। প্লিজ বাপ না
করিস না??
বিকেল বেলা বের হয়ে তামিম ও পাহাদের সাথে আড্ডা দিলাম। মনটা একদম ফ্রেশ হয়ে গেলো। রাতে বাসায় যাওয়ার সময় তামিম আর পাহাদকে সাথে করে নিয়ে গেলাম। কারন আমি ওই বাসায় থাকবো না, বিদায় নিয়ে চলে আসবো।
বাসায় গেলাম তামিম আর পাহাদকে নিয়ে।তামিম আর পাহাদ আম্মুকে দেখলো,,কথা বলতেছে। তমা এসে আমার কোলে উঠে গেলো।
কিছুক্ষণ পরে ভাইয়া আসলো। আমি আম্মুর কাছেই ছিলাম। ভাইয়া আমাকে দেখে দৌড় দিয়ে আসতে যাবে ঠিক তখনই আমি মোবাইলটা কানে লাগিয়ে উল্টা দিকে হাঁটা দিলাম। ভাইয়া নিশ্চয়ই বুঝতে পারছে আমি ওর সাথে কথা বলবো না। ভাইয়ার সাথে ভাবিও ছিলো। আমি মোবাইল কানে লাগিয়ে তামিমের কাছে চলে আসলাম?? এরপর ভাইয়া তামিম আর পাহাদকে বললো.......
ভাইয়াঃ কি অবস্থা তোমাদের??
তামিমঃ জ্বি ভাইয়া ভালো??
ভাইয়াঃ আজকে সবাই খেয়ে যাবে??
তামিমঃ আসলে ভাইয়া আম্মুকে বলে এসেছি, আম্মু অলরেডি খাবার তৈরি করে ফেলছে??
ভাইয়াঃ না এতো কথা আমি শুনবো না। আজকে খেতেই হবে??
এরপর ওরা আর কিছু বললো না। আমি মোবাইলটা কানে লাগিয়ে আবারো বাহিরে চলে গেলাম। বাহিরে গিয়ে হোটেল থেকে খাবার নিয়ে বাসায় আসলাম।
আমার রুমে আমি তামিম ও পাহাদ বসে আছি। এমন সময় ভাবি রুমে আসলো,,খাবার খেতে ডাকছে। ওরা উঠে গেলো,আমাকেও উঠালো। আমি খাবারের প্যাকেট টা হাতে নিয়ে ওদের সাথে ডাইনিং রুমে চলে গেলাম।
ভাবি মনে করেছে আমি খাবার খাবো,তাই সবার আগে আমাকে ভাত দিয়েছে। কিন্তু আমি ওগুলো দূরে ঠেলে দিয়ে প্যাকেট টা খুলে প্যাকেটের উপরে রেখেই খাওয়া শুরু করলাম।
সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো।। আব্বু আর খেলো না। ভাইয়াও উঠে রেখে চলে গেলো। তারপর রুমে
এসে রেড়ি হয়ে নিলাম। সবকিছু নিয়ে বের হবো,এমন সময় দেখি তমা নেই। মনে হয় ঘুমিয়ে গেছে।
এরপর আব্বু আম্মুকে সালাম করে বেড়িয়ে পড়লাম। আম্মু কান্না করতেছে। ভাইয়া আর ভাবি এক কোনে দাঁড়িয়ে রয়েছে।। তারপর বাসা থেকে বের হয়ে তামিমের বাসায় চলে গেলাম। রাতটা ওইখানে থেকে পরের দিন ঢাকা চলে গেলাম।
এরপর থেকে আম্মুর সাথে মোবাইলে কথা হয়। আমার পিচ্চি আম্মুটা একদিন বললো...ভাইয়া নাকি সেদিন ভাবিকে অনেক বকা ঝকা করেছে। পিচ্চি আম্মুটার সাথে আমার প্রতিদিন কথা হয়। এভাবেই দিন যাচ্ছে। মাস শেষ হয়ে বছর। আমি মাস্টার্স কমপ্লিট করলাম। অবশেষে একটা কম্পানিতে চাকরিও ফেলাম।। সেই কম্পানির এমডি হলাম।
চাকরি করে বেশ ভালো ভাবেই যাচ্ছে।। প্রতি সোমবার আমি পার্কে ঘুরি। কারন প্রতি সোমবার আমি অহনাকে নিয়ে পার্কে ঘুরতাম। আজকেও ঘুরতেছি তবে একা।
এমন সময় পার্কে অহনার সাথে ধাক্কা খেলাম..১ম পর্বে আপনাদের কে বলেছি। তারপর এতক্ষণ অহনার আর আমার ৫ বছর আগের ঘটনা বললাম।
👉আর এখন ৫ বছর পরে যা ঘটলো তা বলতেছি..👇
রাতের বেলা আর ঘুম হয়নি, বারবার অহনার কথা মনে পড়তে লাগলো। সকাল বেলায় রেড়ি হয়ে অফিসে চলে গেলাম। ডেস্কে বসে আছি। কিছুক্ষণ পর একজন কর্মচারি আসলো,নাম আসিফ। এরপর বললো..........
আসিফঃ স্যার আসবো??
আমিঃ হ্যা আসেন। কিছু বলবেন??
আসিফঃ জ্বি স্যার একটা কথা বলার ছিলো??
আমিঃ জ্বি বলুন??
আসিফঃ স্যার আমার কয়েকদিন ছুটি লাগবে??
আমিঃ কয়দিন??
আসিফঃ ৭ দিন হলে হবে??
আমিঃ ওকে যান দিলাম??
আসিফ চলে গেলো।। কিছুক্ষণ পর আম্মু কল দিলো। আম্মুর সাথে কিছুক্ষণ কথা বললাম। তারপর তমা মোবাইলটা নিয়ে কথা বলতে শুরু করলো। পরীটার কথা শুনে মন ফ্রেশ হয়ে গেলো। পরীটার নাকি পরশু জন্মদিন। আমি না গেলে কেক কাটবে না। তাই আমি রাজি হয়ে গেলাম।
পরের দিন আমি অফিস করে রাতের বেলায় রওয়ানা দিলাম। রাত ১২ টায় বার্থডে পার্টি। অলরেডি ঢাকা থাকতে ৬ টা বেজে গেলো। আমি ড্রাইবারকে বললাম তাড়াতাড়ি গাড়ি চালাতে।
আমি লক্ষীপুর নেমে অনেক গুলো গিফট, একটা বড় কেক,আব্বু আম্মুর জন্য কিছু শপিং করলাম। তামিম আর পাহাদকে আসতে বললাম। ওরা চলে আসলো।
তারপর ওদের নিয়ে বাসায় রওয়ানা দিলাম। বাসায় যেতে যেতে ১১ঃ৪০ বেজে গেলো। তাড়াতাড়ি কলিং বেল চাপ দিলাম....আর সাথে সাথেই একটা টাসকি খেলাম। কারন দরজা খুলে দিয়েছে অহনা।
আমি কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেলাম। কিছুক্ষণ পরে তামিমের ধাক্কা খেয়ে বাস্তবে ফিরে আসলাম। ভিতরে গেলাম শুধু আব্বু আম্মুকে সালাম করলাম। কিন্তু তাদের সাথে কথা বললাম না। ভাইয়া,ভাবি, অহনা ওর আব্বু,আম্মু কারো সাথে কোনো কথা বললাম না।
সবাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। হয়তো ভাবছে এতটা পরবর্তন কি করে সম্ভব। তমা কিছুক্ষণ
পরে লাফ দিয়ে আমার কোলে উঠে গেলো।
একটু পর ভিতরের রুম থেকে আসিফ আসলো।। মানে আমার অফিসের কর্মচারি। আমাকে দেখেই বললো....
আসিফঃ স্যার আপনি এখানে??
আমিঃ আরে আসিফ সাহেব যে??
আসিফঃ জ্বি স্যার। স্যার আপনি এখানে আসলেন
কি করে??
আমিঃ ওই যে আমার আব্বু আম্মু??
আসিফঃ ওহ তাহলে তো আপনি আমার আত্মীয়??
আমিঃ হয়তো, আপনি কার কি হন??
আসিফঃ জ্বি আমি আপনার ভাইয়ের ভায়েরা ভাই??
মানে অহনার হাজবেন্ড??
কথাটা শুনে বুকটা কেঁপে উঠলো। অহনা নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো। অহনার আব্বু বললো.........
অহনার আব্বুঃ আসিফ তুমি ওকে কি করে চিনো??
আসিফঃ আরে বাবা কি বলেন! উনি তো আমাদের কম্পানির এমডি,আমাদের স্যার। অনেক ভালো মানুষ??
অহনার আব্বু নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো।। তারপর আমি আসিফকে বললাম..অনুষ্ঠান শুরু করার জন্য। অন্য কাউকে কিছু বলিনি।
অহনার দিকে যতবার তাকাচ্ছি,, আমার কলিজা ফেটে যাচ্ছে। তারপর কেক কাটলো। তমা সবার আগে আমাকে খাইয়ে দিলো। আমিও শুধু তমাকে খাইয়ে দিলাম। তমা একে একে সবাইকে খাইয়ে দিলো। সবাই তমাকেও খাইয়ে দিলো।
ভাইয়া বার বার আমার দিকে তাকালো।। কিছু বলতে চেয়েছিলো। কিস্তু আমি অন্যদিকে তাকিয়ে থাকতাম। কেক কাটা শেষ হলো।। আমি সবগুলো গিফট তমার হাতে তুলে দিলাম।
তারপর আব্বু আম্মুর জন্য নিয়ে আশা জিনিস গুলো উনাদের হাতে তুলে দিলাম। দেখলাম সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তাই আমি আম্মুর রুমে চলে গেলাম।। আব্বু আম্মুও আমার পিছু পিছু আসলো। তারপর এসে আম্মু আমাকে বললো..........
আম্মুঃ আজকেও ওদের সাথে কথা বলবি না। এতো পাষাণ হয়ে গেছিস??
আম্মু আজ এই কথাটা আমাকে বলছে।। একটি বার বললো না আমি কেমন আছি। কতটা কষ্ট পেয়েছি।
উপরের দিকটা দেখেই তারা আমাকে বিচারের কাট গড়ায় দাঁড় করালো।। আর আজ বলছে পাষাণ হয়ে গেছিস। এরপর আমি আম্মুকে বললাম.............
আমিঃ আমার কোনো ভাই ভাবি নেই? শুধু তুমি
আব্বু আর তমা ছাড়া??
আম্মুঃ তো তমা কোথায় থেকে আসলো তাহলে??
কথাটা বলার সাথে সাথেই তমা আসলো,এসেই আমার কোলে উঠে গেলো। হটাৎ করে চোখ পড়লো,,,আম্মুর খাটে একটা বাচ্ছার দিকে,,কি সুন্দর ফুটফুটে বাচ্ছা। দেখে মনে হয় একটা জান্নাতি হুর ঘুমিয়ে আছে। তারপর আমি বললাম.........
আমিঃ এই বাচ্ছাটা কার??
তমাঃ আরে এটা আমার খালাতো বোন, অহনা
আন্টির মেয়ে??
কথাটা শুনে আরো একটা ধাক্কা খেলাম.। মাত্র ৫ বছরে সবকিছু চেঞ্জ হয়ে গেছে। না এখানে আর বেশিক্ষণ থাকা যাবেনা,আমার শরীর কাঁপতেছে😥😥। আম্মুকে বললাম আমি চলে যাচ্ছি। অনেক বার থাকতে বলেছে বাট আমি থাকিনি।
আম্মুর রুম থেকে বের হয়ে দেখি তামিম,পাহাদ আর আমার ড্রাইবার খাবার খেতে ডাইনিং টেবিলের দিক যাচ্ছে। তখন আমি আমার ড্রাইবারকে বললাম.......
আমিঃ সাহেদ ভাই চলেন, আমরা চলে যাবো??
তামিমঃ আরে ভাবি তো আমাদের খেতে ডাকছে??
আমিঃ বাহিরে খেয়ে নিবো চল??
তামিমঃ কিন্তু সবাই তো এক সাথে খাবে এখানে??
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে, তোরা খেয়ে বাসায় চলে যাস। আমি চলে যাচ্ছি, সাহেদ ভাই আসেন??
তামিমঃ না দাঁড়া, আমরাও আসছি??
আমিঃ ওকে আয়? সাহেদ ভাই আপনি গিয়ে গাড়ি স্টার্ট দেন??
সাহেদ ভাই বাহিরে চলে গেলো।। আমি আব্বু আম্মুকে সালাম করে নিলাম। সবার দিকে একবার তাকালাম। ভাইয়ার চোখে পানি টলোমলো করছে। অহনা আর বাকিরা নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো। তমা এসে
আমার কোলে উঠে গেলো। তারপর তমা বললো.......
তমাঃ চাচ্চু ও চাচ্চু তুমি কোথায় যাচ্ছো? আমাদের সাথে থাকতে পারো না??
আমিঃ না আম্মু আমার থাকার কোনো যোগ্যতা নেই। আমি ফ্যামিলিতে টাকা দিতে পারবো না। আমি
হলাম কুলাঙ্গার, ফালতু ছেলে। আমি এখানে থাকলে তুমিও খারাপ হয়ে যাবে???
তমাঃ তুমি তো আমার ভালো চাচ্চু। ওরা সবাই পঁচা??
এরপরে আমি তমার কপালে একটা পাপ্পি দিয়ে তমাকে নিয়ে বাহিরে গেলাম। সবাই হয়তো বুঝে গেছে আমার কথার মানে।আসিফও বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছে।
তমাকে নিয়ে বাহিরে চলে আসলাম। সবাই আমার পিছনে পিছনে আসছে।
তামিম আর পাহাদকে গাড়িতে উঠতে বললাম।। তমার হাতে কিছু টাকা দিয়ে তমাকে আম্মুর কোলে দিলাম। তারপর শেষ বারের মতো সবার দিকে তাকিয়ে গাড়িতে উঠলাম। সাহেদ ভাই গাড়ি স্টার্ট দিলো। আম্মুও কান্না শুরু করলো। আমারও চোখ দিয়ে বৃষ্টি নামতে লাগলো।
কিছুদূর গিয়ে আমরা একটা হোটেলে ঢুকলাম। তারপর সবাই খাবার খেয়ে নিলাম। এরপর তামিম ও পাহাদকে বিদায় দিয়ে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম।
গাড়ি চলছে তার আপন গতিতে।। আমি হারিয়ে গেছি সেই ফেলে আসা অতীতে। হয়তো আজকে আমার সুন্দর একটা ফ্যামিলি থাকতো। আমিও অন্য দশ জনের মতো থাকতে পারতাম।সামান্য একটা চাকরির জন্য হারালাম নিজের ভালোবাসাকে,ছেড়ে দিলাম ফ্যামিলিকে। সবকিছু থেকেও অনাথ, হয়তো আজকে অহনাকে নিয়ে অনেক সুখে থাকতাম।। স্বপ্ন দেখতাম অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার
কিন্তু নিয়তি বড়ই নিষ্ঠুর।। কোথায় থেকে কোথায় নিয়ে যায় সেটা কেউ বলতে পারে না। সবার ভাগ্যে সবকিছু থাকে না। সব কিছুর সমাপ্ত হয় না। কিছু গল্প অসমাপ্ত থেকে যায়😥😥তবুও ভালো থাকুক প্রিয় মানুষ গুলো।
সবার সবকিছু থাকুক পর্ণ...আমার জীবনটা না হয় থাকবে দুঃখে পরিপূর্ণ।
এটাই আমার অসমাপ্ত ভালোবাসার গল্প 😥😥😥😥
প্রিয় পাঠক পাঠিকা নতুন গল্প কি শুরু করবো কমেন্ট করে জানাবেন।
-------------সমাপ্ত -------------