স্বামী স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক | স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা

 স্বামী যেভাবে তার পরিবারে স্ত্রীকে পরিবেশন করবেন সবাই তাকে সেভাবেই চিনবে! 


একদিন গোসল করে বের হয়েই ড্রয়িং রুমে কথার আওয়াজ শুনলাম … শ্বাশুড়ী ওকে বলছে 

- বৌ মা কি তোকে বেতন থেকে টাকা দেয়? তোর খালাও ঐদিন বলতেছে বাজারে যেই দাম সবকিছুর! দুইজনের ইনকাম ছাড়া কি কিছু হয়?


আমি পর্দায় আড়াল করে গেলাম নিজেকে।

ও উত্তরে বলল


- আর বইলোনা আম্মা। প্রতিমাসে ও বেতন পাওয়ার পর পরই আমার সাথে এই নিয়ে একটা ঝগড়া হয়।


শ্বাশুড়ী খুব উদ্বিগ্ন হয়ে জিজ্ঞেস করলো


- বলিস কি? ঝগড়া করে?


- হ্যাঁ আম্মা। প্রত্যেক মাসে সে বেতন পেয়েই আমাকে সাধে। আমি প্রতি মাসে তাকে বকা দেই। বলো তো আমাকে টাকা দিতে হবে কেন? ও যখন ছিলো না আমি কি সংসার চালাতে পারি নাই? সংসারে একজন বেড়ে গেছে বলে কি আমার ওর কাছ থেকে টাকা নিতে হবে? আমার কি ওর প্রতি কোন দায়িত্ব কর্তব্য নেই বলো তো? সে তো আমার বউ।


শ্বাশুড়ী মুখ গোমড়া করে বললেন

- জিনিস পত্রের যেই দাম!


- মা একজন আর কি বেশি খায়? এজন্য ওর কাছ থেকে টাকা নিবো? ও তো দিতে চায়। আমিই নেই না। আব্বা মারা যাওয়ার পর আমাকে নিয়ে তোমার নানীর বাড়ি উঠতে হইসিলো। কতই না কষ্ট হয়েছিলো । আল্লাহ না করুক কখনো আমার কিছু হয়ে গেলে যেনো তনুর এমন দিন না আসে ওর অন‍্যের কাছে হাত পাততে হয়। সেজন্য তার সেভিংস করা দরকার। আমি চাই ও ভবিষ্যতের জন্য কিছু জমাক। আর আমার কোন সমস্যা হলে ও ই আমাকে সাহায্য করবে। অর্থ দিয়ে হোক বা মনের সাহস দিয়ে। আমি চাই না আমি মারা যাওয়ার পর আমার স্ত্রী আমার মায়ের মত কষ্ট করুক।


শ্বাশুড়ী শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখ মুছলেন। ওর মাথায় হাত দিয়ে বলল


- আল্লাহ তোমাদের অনেক সুখী করুক বাবা। তুমি আর বৌমা দুইজনই দীর্ঘজীবি হও।


সেদিন পর্দার আড়ালে আমিও দুইফোটা কেঁদেছিলাম। এমন স্বামীর স্বপ্ন সবাই দেখে যারা স্ত্রীকে সবার কাছে উঁচু রাখে এবং তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কেও ভাবে।

আমি অনেক ভাগ্যবতীই বলায় চলে।  


মা ছেলের কথার মাঝে একটা কাশি দিয়ে ড্রয়িংরুমে প্রবেশ করলাম। 

দুইজনই আমাকে দেখে নড়েচড়ে বসলো যেন এতক্ষণ তাদের মধ্যে কোন কথাই হয় নি।


আমি এগিয়ে গিয়ে বললাম


- একটু চা করে দেই আপনাদের?


- হুম বৌমা। একটু লাল চা করো। আমিও তোমাকে সাহায্য করতে আসছি।


- না মা আপনারা বসেন। কথা বলেন। আমিই বানাচ্ছি।


আমি রান্নাঘরে গিয়েও একপ্রকার ঘোরে ছিলাম। সেদিন নিজের কলিজা খুলে রান্না করে দিলেও কম পরত মনে হচ্ছিলো। কারণ স্বামীর দেওয়া সম্মান অনেক বড় সম্পদ। নিজেকে অনেক ধনী মনে হচ্ছিলো আমার প্রতি তার চিন্তাভাবনা শুনে। স্বামী যেভাবে তার পরিবারে স্ত্রীকে পরিবেশন করবেন সবাই তাকে সেভাবেই চিনবে। এটাই স্বাভাবিক। এমন একটা মানুষকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করা যায়, ভালোবাসা যায় এবং মৃত্যুর আগ পযর্ন্ত একসাথে বাঁচা যায় 😊😊

এমন আরও স্বামী স্ত্রীর গল্প পড়ুন।