রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প | রোমান্টিক স্ট্যাটাস

ভালোবাসার রোমান্টিক স্ট্যাটাস

ভালোবাসার রোমান্টিক স্ট্যাটাস

 দুইমাস ধরে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে টিউশনি করাচ্ছি।এর আগে কখনো টিউশনি করাই নি। ছাত্রী বন্ধুর ছোট বোন তবে অত্যন্ত মেধাবী।তিন মাস পর এইস.এস.সি পরীক্ষা দিবে।আমি উচ্চতর গনিত এবং পদার্থ পড়াই। প্রতিদিন এক অধ্যায় এর উপর পরীক্ষা। ছাত্রীকে সৃজনশীল গুলো দাগিয়ে দিই,সে লক্ষী মেয়ের মতো করতে থাকে।আমি পত্রিকা পড়ে সময় কাটাই।আবার নাস্তার ব্যবস্থা রয়েছে।সম্মানিটাও সম্মানজনক।এখন মনে হচ্ছে এতদিন টিউশনি না করিয়ে বড় ভুল করে ফেলেছি।বেকার অবস্থায় এর চাইতে আরামদায়ক পেশা আর কি হতে পারে! প্রতিদিনের মতো আজকেও সৃজনশীল দাগিয়ে দিয়েছি।কিন্তু আজকে আমার ছাত্রীর লেখায় গতি নেই।


আমি বললাম,

- “ কোন সমস্যা, নিতু? ”

- “ জ্বী, মিহু ভাইয়া। ”

- “ কোথায় সমস্যা বলো আমি দেখিয়ে দিচ্ছি। ”

- “ কথাটা বলতে একটু লজ্জা করছে। ”

- “ লজ্জার কি আছে,আমাকে বলো আমি দেখিয়ে দিচ্ছি। ”

- “ কথাটা পড়া বিষয়ক না? ”

- “ তাহলে? ”

- “ প্রেম বিষয়ক। ”


আমি ছোটখাটো একটা কাশি দিয়ে হাতে পত্রিকা নিয়ে বললাম,

- “ লেখায় মন দাও। ”

- “ ভাইয়া, আগে কথাটা শেষ করি? ”

- “ খুব জরুরী হলে বলো,আর না হলে পরে ফোনে বলো। ”

- “ খুব জরুরী, ভাইয়া।আমি একটা ছেলেকে দেড় বছর ধরে পছন্দ করি।ওর নাম রায়হান।  ”


এবার আমি পত্রিকাটা সরিয়ে বললাম,

- “ আমি তোমাকে পড়াতে এসেছি।গল্প শুনার জন্য না। ”

- “ ভাইয়া এই গল্পে আপনিও রয়েছেন। ”


আমি আবার পত্রিকা হাতে নিয়ে বললাম,

- “ লিখতে লিখতে বলো। ”

- “ ভাইয়া,পরীক্ষার আর তিন মাস বাকি।এখন তো আর বাইরে ঘুরাঘুরি সম্ভব না।তাই ভাবছি ওকে বাসায় নিয়ে আসব। ”


- “ তোমার বাবা-মা কিছু বলবে না? ”

- “ সেই ব্যবস্থাও করে রেখেছি।আপনার জায়গায় রায়হানকে বসিয়ে দিলে কেমন হয়?বাইরে না গিয়ে সামনা-সামনিই কথাবার্তা হলো। ”


- “ কিন্তু আমি তো টিউশনি ছাড়ছি না! ”

- “ না ছাড়তে চাইলে জোর করে তাড়িয়ে দিবো।সেই পরিকল্পনাও করে রেখেছি। ”

- “ শুনি কি পরিকল্পনা! ”

- “ বলা যাবে না।তবে আগেরজনকে তাড়িয়ে ছিলাম পড়াতে পারে না বলে।আপনাকে এই অপবাদ দিলে কেউ বিশ্বাস করবে না,বরং আমার পড়াশুনা নিয়েই দোষ দিবে।তবে আপনাকে যে অপবাদ দিবো তাতে জেলে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।আর বাবা যে সচিব তা তো আপনার জানার কথা। ”


- “ ঠিক আছে,কালকে থেকে আর আসবো না। ”

- “ কালকে আপনি রায়হানকে নিয়ে আসবেন।আর আপনি আমার মাকে বলবেন, আপনার সমস্যার কারনে পড়াতে পারবেন না।এখন থেকে রায়হান পড়াবে। ”


- “ ঠিক আছে,আজকেই আন্টিকে বলে যাচ্ছি। ”

- “ এই যে এইটা রায়হানের নাম্বার,কথা বলে সব কিছু আগে থেকে ঠিক করে রাখবেন। ”


আমি নাম্বার লেখা কাগজ টা হাতে নিলাম।


- “ ভাইয়া,আমার কথা গুলো শুনে অবাক লাগলে আরেকটা গল্প বলি,তাহলে সব কিছু স্বাভাবিক মনে হবে। ”


- “ বলো। ”

- “ আমাদের কলেজের যে ফার্স্ট গার্ল সে পরীক্ষায় ফেল করবে নিজের ইচ্ছাতে। ”

- “ কেন? ”

- “ সে যেই ছেলের সাথে রিলেশন করে,সেই ছেলে এইস.এস.সি এর পর আর লেখাপড়া করে নি।এখন ছোটখাটো ব্যবসা করে। ”


- “ এর সাথে ওর ফেল করার কি সম্পর্ক? ”

- “ ও যদি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে,তাহলে ঐ ছেলের থেকে ওর যোগ্যতা বেড়ে যাবে।ফলে কেউ সম্পর্ক মেনে নিবে না।তাই সে ভবিষ্যতের কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ”


- “ তোমাকেও কি তোমার এই বান্ধবী এসব পরামর্শ দিয়েছে? ”

- “ না,ভাইয়া।আমি কারো কাছ থেকে বুদ্ধি ধার নেই না।নিজের বুদ্ধিতে চলি। ”

'

'

পরের দিন আবার বাসা থেকে টিউশনির জন্য বের হয়েছি।এত ভালো একটা টিউশনি হাতছাড়া হতে চলেছে,তাই মন টা খারাপ।আবার তুলিকে বলেছিলাম আজকে তাকে নিয়ে শপিং এ যাবো, রেস্টুরেন্টে বসবো।এডভান্স পড়াতাম,এখন তো এই মাসের সম্মানিটাও পাবো না।এসব ভাবতে ভাবতেই তুলির ফোন এসে গেল।


- “ হ্যালো,তুলি। ”

- “ হুম,আমি কি এখন রেডি হবো। ”

- “ আজকে আমার শরীরটা ভালো লাগছে না। ”

- “ কি হয়েছে? ”

- “ জ্বর,সর্দিকাশি, মাথাব্যথা। ”

- “ তাহলে আজকে বের হওয়ার দরকার নেই। ”

'

'

রায়হান সাহেব আর আমি একসাথেই টিউশনির জন্য বাসায় ঢুকলাম।আন্টি দরজা খুলে দিলো

- “ আন্টি,নতুন শিক্ষক নিয়ে আসলাম।নিতু কে ডাকেন পরিচয় করিয়ে দিই। ”


কিছুক্ষন পর নিতু আসলো, হালকা সাঁজগোজ করে।আমি নিতুকে বললাম,

 - “ তোমার নতুন শিক্ষক সালাম দাও। ”


আন্টি রায়হান সাহেবকে বললেন,

- “ আপনি কোন বিষয়ে পড়ছেন? ”

- “ ইংলিশ। ”


আন্টি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, 

- “ তুমি তো গনিত আর পদার্থ পড়াতে তাহলে তোমার জায়গায় ইংরেজি টিউশনি দিচ্ছো কেন? ”


আমার জবাব দেয়ার আগেই নিতু বললো,

- “ আমি মিহাদ ভাইয়াকে বলেছি ইংরেজি প্রাইভেট এর কথা। ”


আন্টি বললেন,

- “ ঠিক আছে,দুইটাই পড়ো।মিহাদের কাছে বিজ্ঞান আর উনার কাছে ইংরেজি। ”


- “ আমি তো দুইটায় পড়তে চাচ্ছিলাম।মিহাদ ভাইয়ার কি যেন সমস্যা তাই পড়াতে পারবে না। ”


- “ তোমার আবার কি সমস্যা,মিহাদ? ”

- “ আন্টি সামনে আমার ফাইনাল ইয়ার পরীক্ষা,এখন নিজের একটু পড়াশোনা দরকার,আবার বাসা থেকে এখানে আসতে যেতে সব মিলিয়ে এক ঘন্টার উপরে সময় চলে যায়। ”


- “ তাহলে আমি ড্রাইভার কে বলে দিচ্ছি তোমাকে নামিয়ে দিয়ে যাবে।সপ্তাহে দুই দিন হলেও সময় দাও। ”


আমি নিতুকে বললাম,

- “ তোমার কি কোনো সমস্যা আছে? ”

- “ ও কি বলবে তুমি একটু বসো,আমি এখনি আসছি। ”


দুই মিনিট পর আন্টি হাতে খাম নিয়ে আসলেন।আমার হাতে ধরিয়ে বললেন,

- “ পাঁচ হাজার বাড়িয়ে দিয়েছি। ”

- “ এত করে যেহেতু বলছেন আবার এই সময়টাও নিতুর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ এখন আর না করি কি করে! ”


আমি নিতুকে বললাম,

- “ আজকে তোমার রায়হান ভাইয়ার সাথে পরিচিত হও।আজকে আমার একটু কাজ আছে। ”


আমি বাসা থেকে বের হয়ে তুলিকে ফোন দিলাম,

- “ হ্যালো,তুলি।তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে নাও,আমি তোমার বাসার কাছাকাছি চলে এসেছি। ”

- “ তুমি না বললে শরীর খারাপ! ”

- “ ধুর বোকা,তোমাকে সারপ্রাইজ দিলাম।বাসা থেকে সময় নিয়ে এসো।কিছু কেনা কাটার পর রেস্টুরেন্টে বসবো। ”


তুলির বাসার সামনে এসে ফোন দিলাম,রিসিভ করলো না। ২০-২৫ মিনিট অপেক্ষার পর বাসায় ফিরে আসলাম। মাথাটা ঝিন ঝিন করছে নিতু আর তার বান্ধবীর আবেগের ভালোবাসার কঠিন পরিনতি কি ভয়াবহ হতে পারে তাই ভাবছি।না এভাবে চলতে পারে না।রাকিব আর আন্টি কে সব বলে খুবই সুক্ষ্ম ভাবে এর সমাধান করতে হবে। আন্টিকে কি আজই কিছু বলব? না থাক  নিতু হয়ত পাশে থকবে।রাকিব কেও এই সময় পাওয়া যাবে না।


ঘুম ঘুম লাগছে।ঘুম থেকে উঠে দেখি তুলি ২ বার ফোন দিয়েছে। ইনবক্সে পেলাম, – ‘সরি, খালু স্ট্রোক করেছে। আমরা হাসপাতালে চলে গেছিলাম তরিঘরি করে।ফোন নিতে ভুলে গেছিলাম।’


কথা বলতে ইচ্ছা করছে না। রিপ্লাই দিলাম, – ‘ওকে পরে কথা হবে।’


একটু পর আন্টি ফোন দিলো,

- “ মিহাদ? ”

- “ জি আন্টি ”

- “ নতুন টিচার নিয়ে কিছু বলতে চাই। ”


এ কথা শুনেই একটু ঘাবড়ে গেলাম।বললাম, 

- “ আন্টি নিতু কোথায়? ”

- “ নিতু এখানেই, সে ত বলছে নতুন টিচার তার খুব ভালো লাগছে। খুব ভালো পড়ায়। আজ প্রায় ২ ঘন্টা পড়িয়েছে।আমি বললাম, ‘তুমি কি প্রতিদিনই এতক্ষণ সময় নিয়ে পড়াবে?’

ছেলেটা বললো, ‘জি আন্টি।আমার মত করে একবার সিলেবাস টা শেষ করি।সময় ত খুবই কম।’


- “ কি পড়াচ্ছে কিছু শুনছেন। ”

- “ তা শুনিনি। তবে বুজেছি ছেলেটা খুবই হাসি খুশি। ”

- “ আন্টি আপনি নিতুর থেকে একটু দুরে যান। ”

- “ আচ্ছা, বলো। ”

- “ রায়হান ত কাল থেকে আমার আগে আসবে পড়াতে, ও যতক্ষণ থাকবে আপনি তাদের প্রতি খুবই তীক্ষ্ণ নজর রাখবেন,তাহলেই বুজবেন কি পড়ায়, কেন এত হাসি খুশি টিচার সে। এখন এত কিছু বলা যাবে না।আমি চিন্তা করেই রায়হান কে বাসায় এনেছি। আমার প্রতি আস্থা রাখবেন। কাল আমি বাসায় যাওয়ার পর পরই আপনি বাসা থেকে বের হয়ে যাবেন।আমি যখন ফোন দিবো তখন আসবেন। চিন্তা করবেন না ততক্ষণ ওর বান্ধবী জিনিয়া আমাদের সাথে থাকবে। এখন একটু নিতুর কাছে ফোন টা দিয়ে আপনি সরে যান। ”


- “ হ্যালো,ভাইয়া। ”


আস্তে করে ফিসফিসিয়ে বললাম,

- “ আন্টি কাছে আছে? ”

- “ না ভাইয়া ”

- “ একটা কথা বলি নিতু, আমি কিন্তু শুধু শুধু হেল্প করিনি, আমি আসলে তোমার আর জিনিয়ার আবেগঘন প্রেমের ব্যপারে ইন্টারেস্টেড হয়ে গেছি। একজন ইচ্ছা করে ফেইল করতে চায় আর একজন বাসাই টিচার হিসেবে নিয়ে আসছে।কালকে তোমাদের সাথে এসব নিয়ে কথা বলবো।

জিনিয়া কে আমার সাথে কথা বলিয়ে দিও কাল। ও কে বলবা আমি ফ্রেন্ডলি, ওর বাসা কি দূরে? ”


- “ না ভাইয়া,পাশের বাসা।ও ত প্রায় ই আমাদের বাসায় আসে। ”


পরদিন আমার নিতুদের বাসায় যাওয়ার আগেই আন্টি ফোন দিলো।চাপা গলায় বললো, 

- “ মিহাদ একি শুনলাম! রায়হান বলছে, ‘হাত টা ছাড়ো।এখন আমার শাশুরি মা চা নিয়ে আসতে পারে।’ কি করব কিচ্ছু বুজতে পারছি না। ”


- “ আপনাকে এখন কিচ্ছু না বুজার মতই থাকতে হবে আরও অনেক কিছু বুঝার জন্য। মাত্র কয়েকদিন এসব সহ্য করেন।আজ আমি আরোও অনেক কিছু জানবো। ওখান থেকেই একটা সমাধান বের করব,এজন্যই আপনি কিছুক্ষণ বাসায় থকবেন না। ”


আন্টি ভাঙা গলায় বললেন,

- “ আচ্ছা, তোমাকে আমি আমার ছেলের মতোই বিশ্বাস আর ভরসা করি। ”


যথারীতি আমি বাসায় ঢুকলাম।নিতু আর তার বান্ধবী জিনিয়া আমাকে সালাম দিল।সালাম নিয়ে বললাম, 

- “ কেমন আছো তোমরা? ”

- “ জি ভাইয়া ভালো। ”

- “ কেমন লেখাপড়া চলছে? ”

- “ আমি পড়ছি ভাইয়া,  জিনিয়া ১ মাস যাবত পরে না। বই এর সামনে পড়ার ভাব ধরে বসে থাকে। ”


আন্টি এসে বললো,

- “ নিতু আমি একটু বাইরে যাচ্ছি,তোরা পড়তে থাক। ”

- “ আচ্ছা যাও। ”


দরজা টা লাগিয়ে দিয়েই নিতু বললো,

- “ ভাইয়া প্রতিদিনই তো পড়ি,আজ না হয় একটু গল্পই করি।অন্তত আম্মু আসার আগ পর্যন্ত। ”


- “ তাতো করাই যায় একদিনের জন্য। ”

- “ ধন্যবাদ,ভাইয়া।আচ্ছা ফ্রেন্ডলি আমাকে বলতো, কে প্রেমে বেশি অভিজ্ঞ তোমাদের মধ্যে? ”


নিতু বললো,

- “ আমি তিন মাস। ”


জিনিয়া বললো, 

- “ আমিও প্রায় সেইম। ”


- “ তাহলে কেমনে বুঝবো। নিতু মনে হয় ভালো বুৃঝে, সে ঠান্ডা মাথায় সব সামলিয়ে নিয়েছে। জিনিয়ার মত এক্সাম এ সেচ্ছায় ফেইল করার মতো বোকা না। ”


জিনিয়া সাথে সাথে বলে উঠলো,

- “ না ভাইয়া,আমি বোকা না।আমি সফল হওয়ার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ”


- “ যারা প্রেমে বেশি ইমোশনাল হয়ে যায় তারাই তো বোকা।শুধু বোকা না রাম বোকা।তখন এমন অনেক ভুল করে বসে যা সারাজীবনের অনুশোচনায়ও মাশুল দেওয়া যায়না।আচ্ছা নিতু, জিনিয়া তো ওর বয়ফ্রেন্ডের জন্য ফেল করতে পারে।তুমি তার জন্য কি করবে? ”


- “ আমি ওর জন্য পালিয়ে যেতেও রাজি। ”

- “ তোমারা যে তাদের জন্য এত কিছু করতে প্রস্তুত,তারা তোমাদের জন্য কতটুকু ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত তাও তো জানা দরকার। ”


নিতু কিছু না ভেবেই জবাব দিলো,

- “ আমি ওকে বিশ্বাস করি। ”


জিনিয়াও নিতুর সাথে তাল মিলিয়ে একই উত্তর দিলো।

- “ তাহলে ছোটখাটো একটা পরীক্ষা নিয়ে বিশ্বাস পাকা করলে কেমন হয়? ”


বুঝলাম দুজনেই খুব আগ্রহী। 

- “ শুনো জিনিয়া,তোমার বয়ফ্রেন্ড এর জন্য তুমি ফেল করতে প্রস্তুত কিন্তু সে কি তোমার জন্য আবার পড়ালেখা করতে রাজি হবে।তুমি তোমার নিজের যোগ্যতা না কমিয়ে তাকে তার যোগ্যতা বাড়াতে বলো।যদি সে তোমাকে সত্যিই ভালোবাসে তাহলে সে অবশ্যই তা করতে রাজি হবে। ”


জিনিয়া অনেকক্ষণ ভেবে গম্ভীর গলায় বললো,

- “ ভাইয়া,সত্যিই আমার এই কাজ করার দরকার ছিলো।আরও আগে কেনো মাথায় আসলো না,বুঝলাম না। ”


- “ এখন নিতু তুমি আমাকে বলো তো কার মাথায় আগে এসেছে যে রায়হান বাসায় টিচার হিসেবে যোগদান করবে? ”


- “ রায়হান আমাকে এটা নিয়ে চাপ দিচ্ছিলো। ”

- “ তোমার কি মনে হয়,ও তোমার ভালো চায়? ”

- “ হুম। ”

- “ মোটেই না।তোমাদের এই বয়সের আবেগ তাদের প্রতি বিশ্বাসে পরিনত হয়েছে।বাস্তবে তা হচ্ছে কেবলই ছলনা।যদি সত্যিই রায়হান তোমাকে ভালবাসতো তাহলে এই তিনমাস তোমার সাথে দেখা করতো না,প্রতিদিন দুইঘন্টা তোমার সময় নষ্ট করতো না।ওকে বলবে এখন থেকে আর না আসার জন্য। ”


- “ আমারও তো খারাপ লাগবে ভাইয়া  ”

- “ আমি তোমাদের ভালোর জন্যই বলছি।আমার কথা গুলো আবেগ দিয়ে না বিবেক দিয়ে চিন্তা করো।আর যা করতে বলেছি তার ফলাফল এক সপ্তাহের মধ্যে জানানোর চেষ্টা করো।আর আমার সাথে যে কোনো বিষয় শেয়ার করবে। ”

.

.

এর ৪-৫ দিন পর আমি তুলির সাথে রাস্তায় হাঁটছি।এমন সময় নিতু ফোন দিলো।

- “ ভাইয়া কালকে থেকে কি এক ঘন্টা আগে আসতে পারবেন? ”

- “ কেনো?রায়হানকে কি বাসা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছো নাকি? ”

- “ শুধু বাসা থেকে না,মন থেকেও। ”

- “ তোমার বান্ধবীর কি খবর? ”

- “ ও তো ভাইয়া খাবার-দাবার সব ছেড়ে দিয়েছে।এখন সারাদিন বই নিয়ে বসে থাকে। ”

- “ তাহলে দুইজনেই ফেল।এখন ঠিকমতো লেখাপড়া করো যাতে নিজেদের পরীক্ষায় ভালো করতে পারো। ”


নিতুর সাথে কথা শেষে আমি তুলিকে জিজ্ঞেস করলাম,

- “ আমি যদি কখনো তোমার বাসায় টিউশনি করাতে যেতাম তাহলে তুমি কি করতে? ”

- “ আমি অনুমতিই দিতাম না।বরং এই অপরাধে তোমাকে মনে মনে শিক্ষকের সম্মান দিতাম। ”

- “ যাক,তুমি ওদের মতো বোকা না। ”

.

  (সমাপ্ত)

---------------------------------

-ছোটগল্প

-মিহুর_প্রথম_টিউশন

-খাদেমুল আলম মিঠুন

---------------------------------


এমন আরও গল্প পড়ুন।