একটি মেয়ের পিরিয়ড হওয়ার গল্প | শিক্ষামূলক গল্প

শিক্ষামূলক পোস্ট

শিক্ষামূলক পোস্ট

 একটি বাস্তব শিক্ষণীয় গল্পঃ 

ইস র*ক্ত বের হচ্ছে ! 

এখনি ওয়াসরুমে যেতে হবে ! 


এখনই পিরিয়ড হওয়ার সময় হলো ! 


স্যার আমি একটু ওয়াসরুমে যাবো ! 

 এই নিয়ে পাখি তিনবার বললো কিন্তু স্যার তাকে বাইরে যেতে দিচ্ছে না! ধমকি দিয়ে পাখিকে বসে থাকতে বললো স্যার! পিরিয়ড এর যন্ত্রণায় পাখি স্যারকে লুকিয়ে লুকিয়ে কান্না করছে ! 


একটানা ১.৩০ মিনিট স্যার ক্লাস নিলো ! বিজ্ঞান ক্লাস ছিলো ! স্যার খুব কড়া । তার ক্লাসে কোনো ছাএ-ছাএী বাইরে যেতে পারে না ।

স্যারের ক্লাস শেষ করেই পাখি দ্রুতো ওয়াসরুমে চলে গেলো । লেখকঃ চিন্তিত বালক 

ক্লাসে সব ছাএ-ছাএী হাঁটাহাটি করছে ক্লাসের ভিতর৷ 


হঠাৎ ---- পাখি যেখানে বসেছিলো সেখানে নীরবের চোখ পড়ল । সে দেখলো পাখির ছিটে রং লাগানো । 

নীরব একটু খেয়াল করে দেখলো ওটা রং না ওটা র*ক্ত! 


নীরব র*ক্ত দেখে ক্লাসের সবাইকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বললো বিষয়টা ৷ 


ক্লাস ভর্তি ছাএ-ছাএী সবাই কানাকানি শুরু করলো। 

কিছু ছেলেরা এটা নিয়ে হাসাহাসিও করছে । 


সেই মূহুর্তে ইংরেজি মেডাম হাজির ক্লাসে । 

সবার এমন অবস্থা দেখে মেডাম জিজ্ঞেস করলো কী হয়েছে !? 


তিষা নামে একটি মেয়ে উঠে বলে দিলো: মেডাম বিজ্ঞান ক্লাসের সময় পাখির পরিয়ড শুরু হয়ে গেছিলো কিন্তু স্যার বাইরে যেতে না দেওয়াতে তার বসার জায়গায় কিছুটা র*ক্ত লেগে গেছে । তারজন্য সবাই হাসাহাসি করছে । 


মেডাম বললো আজকে তোমাদের ইংরেজি ক্লাস নিবো না আজ তোমাদের পিরিয়ড বা মেন্স সম্পর্কে কথা বলবো ৷ 


মেডাম সবার উদেশ্য করে বলা শুরু করলো ::


"পিরিয়ড লজ্জার নয়, হাসির নয়, 

পিরিয়ড না হলে একটা মেয়ে মা হতে পারেনা। 


ছেলেরা মাত্র একবার যদি পিরিয়ডের ৩ দিনের যন্ত্রনা ভোগ করতো । 

তাহলে মেয়েরা নিত্যদিনের বেঁচে থাকা আর একটু অপমানের হাত থেকে রেহাই পেতো...


যদি বুঝতো তলপেট চেপে ধরে শরীর উল্টানো ব্যথার কান্না কতটা ভয়ঙ্কর তাহলে খুড়িয়ে হাঁটতে দেখে মুচকি হাসি দিতো না। 

হাতটা ধরে রাস্তা পার করে দিতো


যদি টের একটা মেয়েকে ন্যাপকিন কিনতে দেখে মজা করছেন, 


মাত্র দুই ঘন্টা একটা ন্যাপকিন আন্ডারওয়ারে লাগিয়ে বাহির দিয়ে হেঁটে আসলেই বোঝা যেতো সে কত বড় বাঘের বাচ্চা। 


 আমার বড় মায়ের পিরিয়ড হয়েছে বলেই আমার নানীর জন্ম, আমার নানীর পিরিয়ড হইছে বলেই আমার মায়ের জন্ম, আমার মায়ের পিরিয়ড হইছে বলেই আমার জন্ম…।❤


পিরিয়ড একটা মেয়েকে কতটা কষ্ট দেয়, কতটা যন্ত্রণা দেয় তা একজন মেয়েই ভালো বলতে পারবে। 


সব যন্ত্রণা সে নিজেই মুখ বুঝে সহ্য করে যায়, নিজেকে সবার সামনে হাসিখুশি রেখে যায়।


সবকিছুতেই লজ্জা।


আসলে লজ্জা পিরিয়ডে নয়, লজ্জার থুথু ছিটানো উচিত আমাদের মানসিকতায় ।


আবার অনেকেতো পিরিয়ড চলাকালীন অবস্থায় একটা মেয়েকে সরাসরি অপবিত্র ঘোষনা করে দেন।


পিরিয়ড চললে মা তার মেয়েকে, শ্বাশুড়ি তার বউকে ঘরের অন্য সদস্যদের শরীরের সাথে স্পর্শ হতেও নিষেদ করে। অথচ সেও একজন নারী।


আর এদিকেতো ফার্মেসিতে প্যাড কিনতে গেলেও যেন লজ্জার শেষ থাকেনা। 


দোকানদারও যেন মুচকি হাসির আড়ালে পিরিয়ড নামক স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়াটিকে ব্যাঙ্গ করে ছাড়লো। 


আর আশেপাশের দশজন যারা আছে তাদের চাহনী দেখে মনে হয় তারাও বেশ মজা নিচ্ছে এই ভেবে যে, আহহ মেয়েটার ভেতর ভেতর তাহলে এসব চলছে। 

পিরিয়ডের কথা ভেবেও যেন তারা আনন্দ পাচ্ছে।


আচ্ছা ছাএ-ছাএী তোমরা যখন একজন এক্সিডেন্ট পেশেন্টকে কোলে তুলে নিয়ে যান,তখন রক্তের দাগ দেখলে কি হাসি দাও ।?

 কারো কোনো উওর নেই । 


সব ছেলেরা তখন কাচুমুচু করা শুরু করেছে । 

ক্লাসটা যেনো নিস্তব্ধ হয়ে গেল । 


শোনো ছেলেরা তোমরা মেয়েদের পিরিয়ড নিয়ে হাসাহাসি করো । একবারও কি ভেবে দেখো যে মেয়েটার চোখে পানি কেনো । 

চোখে পানি এমনি এমনি আসে না । 


ঘন্টা পড়ে গেলো । মেডামেরও সময় শেষ । 


মেডাম পাখির ছুটির ব্যাবস্থা করে দিলো । 


গল্পটাতে বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে !!  


এমন আরও অনেক শিক্ষামূলক গল্প পড়ুন।