গল্প রোমান্টিক | রোমান্টিক হাসির স্ট্যাটাস

 খুব রোমান্টিক গল্প

খুব রোমান্টিক গল্প

আমাদের বিয়ে হয় গত বছরের জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে।

তখন প্রচন্ড গরম ছিল। এখন চলছে, শীতকাল। বেশ কিছুদিন

ধরে দেখছি, নিশি গোসল করছে না। গোসল না করায়, তার

শরীর দিয়ে কেমন যেন উদঘুটে গন্ধ গন্ধ লাগছে।

রাতে শুয়ে আছি। মনে মনে ভাবছি, যে করেই হোক নিশিকে

গোসল করার জন্য বলতে হবে।

আমি বললাম, নিশি, তুমি কি আজকে গোসল করছ?

নিশি অবাক হয়ে বলল, কিসের গোসল?

আমি বললাম, কিসের গোসল মানে! শীত আসার পর থেকে

লক্ষ করছি, তুমি গোসল করছনা। গোসল না করায়, তোমার

শরীর দিয়ে কেমন যেন গন্ধ গন্ধ লাগছে সেটা কি বুঝনা।

নিশি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি আমায়

ভালোবাসো?

আমি অবাক হয়ে বললাম, গোসলের সাথে ভালোবাসার কি

সম্পর্ক?

নিশি বলল, সম্পর্ক অবশ্যই আছে! তুমি আগে বলো, আমাকে

ভালোবাসো?

আমি বললাম, অবশ্যই ভালোবাসি।

নিশি দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে বলল, যদি তুমি আমায় সত্যি

ভালোবাসতে তাহলে আমার শরীরের গন্ধটাকেও তুমি

ভালোবাসতে। আসলে তুমি আমায় ভালোবাসো না।

মাথাটা গরম হয়ে গেল। রেগে গিয়ে বললাম, কিসের সাথে

কিসের তুলনা করছ! কই গোসল আর কই ভালোবাসা।

নিশি আমার চেয়ে ডাবল রেগে গিয়ে বলল, আমাদের খাবার

খাওয়ার নিয়ম কয় বেলা?

কেমনডা লাগে! বলালম, গোসলের সাতে খাবারের কি

সম্পর্ক!?

নিশি বলল, যা বলছি সেটা বলো, খাবার খাওয়ার নিময় কয় বেলা?

রেগে গিয়ে বলাম, কয় বেলা আবার, তিন বেলা! সকাল, দুপুর,

ঘুমানোর আগে।

নিশি বলল,

গুড, সকাল থেকে রাতে ঘুমাতে যাবার আগ পর্যন্ত আমরা তিন

বেলা খাবার খাই। কখনো কি তুমি দিনের মতো রাতেও ঘুম

থেকে উঠে উঠে খাবার খেয়েছ?

প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে বললাম, তোমার মাথা কি ঠিক আছে? রাতে

কিজন্য খাবার খাব! রাতে তো ঘুমিয়ে থাকি, রাতে খাবার খাওয়ার

প্রয়োজন হয়না।

নিশি বলল,

দিনের ১২ ঘন্টা খাই, আর বাকি ১২ ঘন্টা খাইনা, বিশ্রাম নেই। মানে ২৪

ঘন্টার মধ্যে অর্ধেক সময় খবার খেতে হয়, আর বাকি অর্ধেক

সময় খাইনা। ঠিক তেমনই আমাদের উচিত, বছরের ৬ মাস নিয়মিত

গোসল করা, আর বাকি ৬ মাস গোসল না করা। অর্ধেক সময়

গোসল, আর বাকি অর্ধেক সময় গোসল না করা।

নিশির এমন যুক্তি শুনে মেজাজটা বিগরে গেল। বললাম, তুমি এসব

যুক্তি বাদ দাও, কালকে গোসল করবা কি করবা না সেটা বলো?

নিশি রেগে গিয়ে বলল, গোসল আর গোসল! এই গোসলের

মধ্যে কি পাইছ! সত্য করে কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দিবা?

আমি বললম, কি?

- তুমি নিয়মিত শীতের মধ্যে গোসল করো, এর জন্য কি

তোমারে কেউ নোবেল দিছে?

- না

-তুমি এই শীতের মধ্যে গোসল করে অফিসে যাও, এর জন্য

কি তোমার বেতন বাড়ছে?

- না

- প্রমোশন হইছে?

-না

- শরীরের হাইড বাড়ছে?

- না

- শীতের মধ্যে গোসল দেওয়ার কারণে কি তোমার টাক

মাথায় চুল গজাইছে?

- না

নিশি এইবার অরও রেগে গিয়ে বলল, তাইলে শীতের মধ্যে

গোসল করে লাভ কি হলো?

আমিও রেগে বলাম, “লাভ লস বুঝিনা, তুমি যদি কাল গোসল না

করো, তাহলে তোমার বাবার বাড়িতে চলে যাবে।”

সকাল বেলা নিশি ব্যাগ গুছিয়ে বাবার বাড়ি চলে গেল। আমি তাকে

ফেরালাম না।

৬ মাস হয়ে গেল, নিশির সাথে কোন যোগাযোগ নেই। দিনকাল

খুব একটা ভালো কাটছে না। সময় কাটানোর জন্য ম্যাগাজিন

পড়তেছিলাম। প্রথম পৃষ্ঠা ওল্টাতেই চোখছানা বড় হয়ে গেল।

নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিনা। হেডলাইনে লেখা,

“টানা ৬ মাস গোসল না করে গিনিস বুকে নাম লিখালো বাংলাদেশের

নিশি”।

নীচে ছোট এক কলামে নিশির সাক্ষাতকারে লেখা,

“সামান্য গোসলের জন্য যে মানুষটা একদিন আমাকে ছেড়ে

দিছিল, তাকে দেখিয়ে দিলাম, গোসল না করেও জীবনে

অনেক বড় হওয়া যায়।”🙂

রম্যগল্প: গোসল


রোমান্টিক হাঁসির গল্প পড়ুন।