ডিভোর্স নারীর গল্প | ডিভোর্সের গল্প ২০২৪

 ডিভোর্স নারী

ডিভোর্স নারী

আমি ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত সেদিনই নিলাম যেদিন আমার সো কল্ড কুল শ্বাশুড়ি মা আমার সংসার এবং তার ছেলেকে সামলানোর জন্য বললেন,আমার ছেলে এখন বড় চাকরি করে,তুমি চলে গেলে তার লাইনে একশো মেয়ে দাঁড়াবে,কিন্তু তোমার হবে কলংক।সত্যিই তো একেতো ব্রোকেন ফ্যামিলির মেয়ে,বয়স ত্রিশ ছুয়েছে,দেখতে এভারেজ,এমতাবস্থায় আমার স্বামী মহাদেবের ওজন ৯৫ ছাড়িয়ে গেলেও সে সুপুরুষ, মাথার চুল সব সাদা হয়ে গেলেও তাকে বলা যায় গ্রে হেয়ার হ্যান্ডসাম।আর আমার বায়ান্ন ওজনেই শুনতে হয়েছিলো একি একেবারে মহিলা মহিলা লাগছে।আমি মনে মনে ভাবতাম মহিলা/নারী আমি তো তা লাগলে ক্ষতি কি!

কেনো মেয়েদের ষোড়শী লাগাটা জরুরি আমি জানিনা।সে যাই হোক।মনের দুঃখে হোক কিংবা দহন জ্বালায় অত্যন্ত গর্হিত কাজটি করে ফেললাম,সেদিন ভোরে হাটতে হাটতে আমাদের বাসার এদিকেই এক পার্কে গেলাম,পার্কে যাওয়াটা গর্হিত কাজ নয়,কাজটা ঘটলো তার কিছু বাদে।আমার স্বামীর বয়সী এক লোক আপন মনে কানে হেডফোন গুঁজে গান শুনতে শুনতে এক্সারসাইজ করছে।ভীষণ সুন্দর সুঠাম শরীর,চোখে মুখে আলাদা দীপ্তি ঝরে পড়ছে।প্রচন্ড বিধ্বস্ত আমার মনে হলো এই লোকটা জগতের সুখী মানুষের একজন।কেনো মনে হলো জানিনা।মনে হলো তার পাশাপাশি দাড়াই,জিজ্ঞেস করি আমাকে একটু সুখে থাকার মন্ত্র শিখিয়ে দিবেন।এই দুনিয়া আমাকে সুখী হতে দিচ্ছেনা।এসব ভাবতে ভাবতেই কখন যে আমি লোকটির পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছি জানিনা।ধ্যান ভাঙলো যখন কান থেকে হেডফোন খুলে আমার দিকে তাকিয়ে বললো, কিছু বলবেন ম্যাডাম?আমি চমকে তাকালাম।ভীষণ বিব্রত বোধ করে বললাম,সরি প্লিজ।আমি আসলে একটু এবসেন্ট মাইন্ডেড হয়ে ছিলাম।উনি নির্মল হাসি হেসে বললো,চা খাবেন? এই যে ছোট ছেলেটাকে দেখছেন ও খুব ভালো চা বানায়।আমি কিছু দূরে ফ্লাক্স নিয়ে বসা এগারো বার বছরের বাচ্চা ছেলেটিকে দেখলাম।মুখটা কি হাসি হাসি।দেখে মনে হচ্ছে এ জগতের সবচেয়ে আনন্দময় কাজ হলো চা বানানো।আমি বললাম,এই বাচ্চা ছেলে ভালো চা বানায়? লোকটা বললো, হ্যা,এই গুন সে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে।তার বাবাও ফ্ল্যাক্সে করে চা বিক্রি করে সংসার চালাতো,মারা গেছে বছর তিনেক হলো।চলুন যাওয়া যাক।আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত এগিয়ে গেলাম।আমি বুঝতে পারছি না এই সম্পূর্ণ অপরিচিত মানুষের সাথে আমি কেনো কথা বলছি,কেনোইবা তার একবার চা খাওয়ার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাচ্ছি।তবু মন মানলো না।মনে হলো এই মুহূর্তে এই কাজটি ছাড়া অন্য কিছু করার ক্ষমতাই আমার নেই।আমি মুখে কোনো উত্তর না দিয়ে এগিয়ে গেলাম।লোকটি এবার প্রশ্ন করলো,কি করেন আপনি?  আমি বললাম,ঘরে থাকা ছাড়া কিছু করিনা।লোকে বলে গৃহিণী, সমাজ বলে তাহিরের ওয়াইফ,তাহির বলে ঘরে শুয়ে থেকে দিনপার করা মানুষ, না মানুষ না মেয়ে মানুষ।আর শ্বাশুড়ি বলে স্বামীর কর্মী, বলতে পারেন তার বাড়ির রান্নার লোক,তার মন ভালো খারাপ দেখে রাখার জন্য মাঝে মাঝে সাইকোলজিস্ট, তার ঘরের ঝি,তার রাতের মনোরঞ্জনকারী ইত্যাদি।খেয়াল করলাম লোকটি এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমি আবারও বললাম,সরি।আমি বেশি কথা বলছি।লোকটি একথার কোনো উত্তর না দিয়ে বললো,আমার নাম সায়েম।আমি পেট চালানোর জন্য আপনার মতই একটা প্রতিষ্ঠানে গোলামি করি।আচ্ছা আপনি কি জানেন সরকার মানে কি?আমি বললাম,বিশেষ কোনো অর্থ না থাকলে সবাই যা জানে তা আমিও জানি।সায়েম সাহেব উচ্ছ্বল গলায় ছেলেটির দিকে তাকিয়ে বললো, মেহমান এনেছিরে টোটন, একটা জম্মেশ চা বানিয়ে ফেল।টোটন দাত বের করে বললো, আপনে খাইবেন না? সায়েম বলল,অংকে আমি বরাবরই কাচা রে! দুটো চা বানা।তারপর আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বললো, মোঘল আমলে এদেশের স্থানীয় শিক্ষিত ধর্নাঢ্য ব্যক্তিবর্গকে ও রাজার প্রধান কর্মচারী এবং সম্পত্তি দেখাশুনার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিকে সরকার বলা হতো।


বর্তমান সময়ে রাষ্ট্র পরিচালনাকারী রাজনৈতিক দলকে যেমন রাষ্ট্র বা দেশের সরকার বলা হয়।তার মানে বুঝতে পারলেন,সরকার আদতে শাসনকর্তা হলেও তাদেরও কাজ দেশের মানুষের সুখ সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা,মানে হলো আমরা সবাই সবার গোলাম,কি বলেন।বলেই লোকটা দীর্ঘ সময় নিয়ে হাসলো।আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।লক্ষ্য করলাম,আমার মনটা ভালো লাগছে, বেশ ভালো লাগছে।চায়ে হালকা চুমুক দিলাম।খুব হালকা মিষ্টির চা,আদা ছেচে দিয়ে একটা দারুন ঝাঝালো ফ্লেভার আছে,পুদিনা পাতার একটা সজীবতা চায়ে চুমুক দিতেই পাওয়া যায়,একটু কি নোনতা ভাব আছে চায়ে? আচ্ছা লিকারটা এতো পারফেক্ট হয় কত ক্ষন জ্বাল দিলে!এসব চিন্তায় আমি যখন ডুবে আছি সায়েম সাহেব বললো, বলেছিলা ম না দারুন বানায়।আমি আর আমার স্ত্রী ওর বাবার হাতের চা খেয়েই প্রতি দিন সকাল শুরু করতাম,নীরার খুব প্রিয় ছিলো।আমি অপ্রস্তুত হয়ে বললাম,ছিলো বলছেন কেনো?ইজ শি?শেষ না করতেই সায়েম সাহেব বললো, না না, ও বেচে আছে।আমরা আর এক সাথে নেই এই যা!আমি আবারও অপ্রস্তুত হলাম।

হাটতে হাটতে পার্কের বাইরে বেরিয়ে এসে বললাম,আসি।ধন্যবাদ চায়ের জন্য।সায়েম সাহেব হাসলেন।আমার খুব জানতে ইচ্ছে হলো এতো সুখে থাকার মন্ত্র কি?


তাহির সকালে উঠে মোবাইলে গেইমস খেলছে।আমি তার দিকে না তাকিয়েই জিজ্ঞেস করলাম,কি খাবে?ও কি উত্তর দিলো শুনলাম না,হয়তো উত্তর দেয়নি।কারণ আমার বেশির ভাগ কথার উত্তর ও দেয়না।ইচ্ছে করে তা কিন্তু নয়।অফিস থেকে বড় চাকরি করে ফিরে এসে এক গামলা ভাত গিলে হয়তো সিনেমা দেখতে বসে, নাহয় মোবাইলে গেইমস খেলে,মাঝে মাঝে ইন্সটাগ্রামে ন্যাংটো মডেলের ছবি দেখে প্রলুব্ধ নয়নে চায়।ঘুম ঠিম হয়নি তাই হাই তুলে ঘরে ঢুকে গেলাম।ওর উত্তর না দেয়া আজকাল আমাকে ছুয়ে যায়না।আগে যেতো,খুব অভিমান হতো। ভাবতাম আমাকে অবহেলা করছে।বুঝতে দেরি হয়েছিলো হেলা,অবহেলা করার মতও এতো মনোযোগ আমাকে দেয়ার জন্য ওর নেই।সেদিন মৃধা আমার বাসায় এলো, সাধারণত ও আমার বাসায় আসেনা।ব্যস্ত থাকে তাই।আর তাছাড়া চাকরিতেও ভীষণ ভালো করছে মেয়েটি।এতো সুন্দরী গুনী মেয়েটাও বর খুজে পাচ্ছেনা।মাঝে মাঝে মুখ ভার করে বলে,আমার জন্য কি কেওই নেই।আমি বললাম,তোর একটা ইশারা সবাই লাইনে দাঁড়িয়ে যাবে।ও বিরক্ত চোখে তাকিয়ে বলে,ধুর সে-তো তোর ডাকেও দাঁড়াবে।এর ভিতর অধিকাংশই থাকবে যাদের চাহিদা শরীর, বাকি একাংশের থাকবে বউয়ের টাকায় বেঁচে থাকার ইচ্ছা, বাকিদের থাকবে বাহ মেয়েটাকে বিয়ে করা যেতেই পারে।আমি হাসি ওর কথা শুনে।মৃধা সেদিন এসে বললো, ঘরে ইলিশ আছে? আমি বললাম আছে তো!মৃধা ব্যাগ রেখে বললো, দারুন।আগে আমাকে তোর হাতের পারফেক্ট এককাপ চা খাওয়া।দুপুরে শর্ষে ইলিশ।আমি বললাম,বাহ সময় নিয়ে এসেছিস তাহলে।মৃধা হাসলো।রাধলাম বাড়লাম পুরোটা সময় মৃধা পাশে পাশে রইলো,জগতের এমন বিষয় নেই যা নিয়ে গল্প হলোনা।যাবার আগের সময়টা একেবারে নিশ্চুপ হয়ে রইলো।আমি আরো এক কাপ চা দিয়ে বললাম,কিছু একটা বলতে চাস,বলনা!আমাকে বলতে এতো ভাবতে হবে কেনো!মৃধা প্রায় মুখস্থ বাণীর মত বলে গেলো, তাহির ভাই স্পা তে যায় জানিস? স্পা টা ভালো না রিনি।ওখানে ভালো কাজ হয়না।আমি মৃদু হেসে বললাম,তুই মাথা নীচু করে রেখেছিস কেনো? মৃধা আমার চোখ বরাবর চাইলো।আমি আবারও হাসলাম।তাহির স্পা তে যায় আমি জানি।ওর প্যান্টের পকেটে রিসিট পেয়েছি।ওখানে কি হয় তাও জানি।ওর কাছেই শুনেছি বিয়ের আগে।আবার যাওয়া শুরু করেছে দেখে আমার আফসোস নেই।বড় চাকরি করলে একটু আকটু যাওয়ার অভ্যেস থাকে আমার শ্বাশুড়ি শুনলে নিশ্চয়ই তাই বলতো।আমি জানি তাহিরের শরীরের ক্ষুধা নেই,কাওকে শারিরীক প্রশান্তি দেবার মত নেই।হয়তো নিজের খানিক প্রশান্তির জন্য যায়।একঘেয়ে শরীর আর বিছানায় নিজের অপূর্ণতা ঢাকার জন্য এ উপায় মন্দ না।আজকাল এসব আমাকে নাড়া দেয়না।মৃধা কি বুঝলো আমি জানিনা,শুধু বললো, তুই জানতি রিনি।আমি উত্তর না দিয়ে হাসলাম।

আজ আবারও হাটতে গেলাম পার্কে।সায়েম সাহেবকে দেখলাম চা খাচ্ছে।আমাকে দেখেই টোটনকে বললো, দেখেছিস বলেছিলাম না সেদিনের আন্টি আসনে, নে নে চা বানা।আমি হেসে পাশের বেঞ্চিতে বসে পড়লাম। আমার পার্কে যেতে ভালো লাগে।কাজের ফাঁকে সায়েমকে নিয়ে ভাবতেও ভালো লাগে।এই যে,আমাকে ভুল বুঝে ফেললেন তো!কি আর করার সত্যি বলেছি।প্রতিদিন সকালের এই সময়টা আমার দিনের মধ্যে প্রিও সময়।রোজ ঘরে ফিরে দেখি তাহির উঠে পড়েছে।ও বেশিরভাগ দিন টেরই পায়না আমি বাইরে গিয়েছিলাম।মাঝে একদিন শুধু বিকট শব্দে হাই তুলে বললো, কই গেছিলা? আমি বললাম,পার্কে হাটতে যাই।ও আবার বিকট হাই তুলে মোবাইলে মনোযোগ দিলো।আমি ঢুকে গেলাম রান্নাঘরে।


সেদিন সায়েমকে বললাম,আচ্ছা আজকাল নাকি পুরুষরা খুব সোচ্চার পুরুষ নির্যাতন নিয়ে? তারা না-কি আইন চায়,ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং  তাইনা?সায়েম চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বললো, ইন্টারেস্টিং তো বটেই।তারা বোকা প্রজাতির না হলে আইন কি আর চাইতো?আমি ভ্রু কুচকে বললাম,পুরুষেরা বোকা?সায়েম আমার দিকে তাকিয়ে বললো, বোকা তো বটেই।তানা হলে নিশ্চয়ই চিন্তা করতো নারী নির্যাতনের সবই শারিরীক। আর কেবল সেই নির্যাতনগুলোরই আইন আছে।পুরুষের সাথে শারিরীক শক্তিতে পেরে ওঠা সম্ভব না।আর পুরুষেরা যে নির্যাতনের কথা বলে সেগুলো মানসিক।মেয়েরা যদি মানসিক নির্যাতনের জন্য লড়াই করতো।দেখতেন প্রতিদিন হাজার হাজার পুরুষ অ্যারেস্ট হয়ে যেত। আচ্ছা বউ আদর নামের কোনো শব্দ শুনেছো?না শোনোনি কারণ এটির অস্তিত্ব নেই।জামাই আদরের আছে।শ্বশুর বাড়ি মানেই পুরুষের জামাই আদর আর নারীদের হাজারো নিয়ম মানিয়ে চলার মেনে চলার স্থান।আমি বিস্মিত হলাম।এভাবে তো কখনো ভেবে দেখিনি।একটা পুরুষ এভাবে ভাবতে পারে তাও ভাবিনি।আমি মুগ্ধ হয়ে সায়েমের দিকে তাকালাম।আচ্ছা আমি কি লোকটার প্রেমে পড়ে যাচ্ছি!ছি ছি এসব ভাবনা ভাবাও অন্যায়। তবু কেনো প্রতিদিন ভাবছি।প্রতিদিন সকালের ঐ বিশ মিনিট তার সাথে আমার কথা হয়,দেখা হয়।বাকিটা সময় তাহিরের ঘরে ফিরে আমি ঘরকন্না সামলাই।কিন্তু মন পড়ে থাকে সায়েমের প্রতিটি কথায়।এমন প্রচন্ড অন্যায় চিন্তার সাথে আমি দিনাতিপাত করছি।এমন অন্যায় চিন্তা কারো সাথে ভাগাভাগিও করা যায়না।অথচ আমি সায়েম সম্পর্কে কিছুই জানিনা।সেও জানেনা।কখনো একে অপরকে জিজ্ঞেসও করিনি  কে কোথায় থাকি।আমার জানতে ইচ্ছে হয়নি,তারও বোধহয় হয়নি।আমি ছোট্ট একটা নিশ্বাস ফেললাম।সায়েম বললো, আমার সম্পর্কে কিছু জানতে চাইলে জিজ্ঞেস করতে পারো,তোমার সম্পর্কে কিছু বলতে চাইলে আমি শুনছি।আমি হেসে বললাম,আমি একদিন আপনাকে রেধে খাওয়াতে চাই।এটুকু তো জানি।আপনি একা থাকেন।আপনার বাসায় নিমন্ত্রণ করবেন?বলেই ভাবলাম,ছি ছি কি ছ্যাবলামোটাই না করে ফেলেছি।সায়েম হাসলো।ওর সেই উচ্ছ্বল নির্মল হাসি।বললো, অবশ্যই আরো আগেই করতাম।হুট করে ব্যাচেলর বাসায় কোনো মহিলাকে দাওয়াত করা যায়না তো,তাই করিনি।আমি উত্তর দিলাম না।মনে মনে ভাবতে লাগলাম তাহিরকে কি বলে বেরোবো বাসা থেকে।


একটা পেয়াজি রংয়ের শাড়ি গায়ে জড়িয়ে অনেক্ক্ষণ নিজেকে দেখলাম।চোখে পড়লো চোখের নীচে কালচে ডার্ক সার্কেল।কেমন প্রাণহীন মুখ।সেই মুখে হালকা ব্লাশঅন দিয়ে সজীব করলাম,চুলটা ছেড়ে দিয়ে কপালে একটা টিপ পড়ে ভাবলাম,বেশি বেশি হয়ে গেলো নাকি।তারপর কি ভেবে একটা হাতখোপা করে নিলাম।হটপট হাতে নিয়ে মোবাইলে ঠিকানা দেখে পৌঁছে গেলাম সায়েমের বাড়ি।আর বুকের ভিতর হাতুড়ি পেটার মত শব্দ হতে লাগল।মৃদু উত্তেজনায় পুরো শরীর মন ঘিরে রইলো।সায়েম আমাকে দেখে খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে হাসলো।আমিও হাসলাম,তবে সে হাসির উৎস হৃদয় না মস্তিষ্ক।কি হবে কি করছি এসব ভেবে ভেবেই অস্থির হয়ে আছি।সায়েমের ঘরটা গোছানো এতটা গোছানো আমি আশা করিনি।ঘরে দুটো স্বাস্থ্যবান বিড়াল গম্ভীর ভাবে হাটাহাটি করছে।দূরে একটি কুকুর বসে আছে।আমাকে দেখে কুকুর দৌড়ে এলো,ভয়ে আমার হাত থেকে হটপট পড়ে যাওয়ার জোগাড় সায়েম হেসে বললো, ক্লিওপেট্রা খুব লক্ষী মেয়ে। তোমার সাথে বন্ধুত্ব করতে এসেছে।আমি খুব শান্ত ভঙ্গিতে হাসার চেষ্টা করলাম কিন্তু ভয়ে আমার প্রাণ শুকিয়ে এলো।ছেলে বেলায় কুকুরের কামড় খেয়ে ইঞ্জেকশন লাগাতে হয়েছিলো এরপর থেকেই কুকুরে আমার ভয়।ক্লিওপেট্রা আমার পায়ের কাছে এসে গন্ধ শুকে আবারও সোফায় গিয়ে বসলো। আমি বললাম,আপনি এনিমেল লাভার বুঝি? সায়েম বললো, আমি না নীরা খুব পশুপাখি ভালোবাসতো।ওর সাথে থেকে এদের উপর আমারও মায়া জন্মে গেছে।ক্লিওপেট্রা ওরই কুকুর।ডিভোর্সের সময় যখন আমরা সব ভাগাভাগি করছি নীরা হঠাৎ করে বললো, ক্লিও কে তোমার কাছে রেখে যাচ্ছি।আমার চেয়ে তুমি বেশি ওর যত্ন নাও।কাজেই ও তোমার।আমি নীরাকে বললাম,সে কারনে না তুমি ওকে রেখে যাচ্ছো যেনো তোমাকে কোনোভাবেই এ ঘর মন থেকে দূরে সরাতে না পারি।মেয়েরা অদ্ভুত প্রানী, তারা চলে যাবে তবু নিজের ছায়া কিছুতেই ম্লান হতে দেবেনা।আমি প্লেটে খাবার বাড়লাম।সায়েম জিহবায় তৃপ্তির তুলে বলল, বাহ সুগন্ধেই তো প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে আমি লজ্জিত ভাবে হাসলাম।আমি ভাতের প্লেটে ভাত নাড়াচাড়া করতে করতে দেখলাম সায়েম কি তৃপ্তির সাথে খাচ্ছে।আমার কি যে আনন্দ হলো। আনন্দে চোখে পানি চলে এলো।আমি নিজেকে দ্রুত শাসন করে বললাম,রিনি তুমি সীমালঙ্ঘন করছো।নিজেকে সামলাও।সায়েম হাসিমুখে বলল, তোমার ক্ষিদে নেই তাইনা? ভালোই হলো,খাবার গুলো বেচে গেলো। কি যে আরাম করে খেলাম।এতো ভালো রাধো তুমি!আচ্ছা তোমার নামটা কি আজ বলবে।আমি বললাম,রিনি।আমার নাম রিনি।সায়েম বেশ শব্দ করেই বলে উঠলো,রিনি।বারান্দায় খাচায় ভরে রাখা ময়না ডেকে উঠলো, রিনি,রিনি।আমি প্রথম চমকে গেলেও পরে খুব হাসলাম।সেদিনের সারা দুপুর বিকেলটা অজানা ভালোলাগায় ভরে উঠলো।সায়েম তার সীমারেখা এতো টুকুও পার করলো না।তবু আমার মন জুড়ে বার বার ঝড়েরবেগে একি ইচ্ছে আসতে লাগলো।আমি মনেপ্রাণে সেই ইচ্ছেকে দমন করলাম।


সেদিন রাতেই অনেকদিন পর শ্বাশুড়ির সাথে কথা হলো,খুবই মিষ্টি গলায় জিজ্ঞেস করলো।বাচ্চা কবে নিচ্ছো তোমরা মা? আমি অস্ফুট হাসলাম।কি বলবো ভেবে পেলাম না।বিয়ের এ চার বছরে এটুকু বুঝে গেছি তাহির নিতে চায়না বললেও দোষ আমার ঘাড়েই আসবে।তাই নীরব থাকাই শ্রেয়।শ্বাশুড়ি বললো, একবার ডাক্তার দেখিয়ে জেনে নাও তোমার টিউমারটার কারণে হচ্ছেনা কিনা।আমি চোখ বুজে প্রহর গুনলাম।কখন রাখবেন উনি ফোন।ঠোঁটের কোণায় আটকে গেলো বাক্যটি,আপনার ছেলে বাচ্চা নিতে চায়না আজ পর্যন্ত চেষ্টাই করিনি জানিনা চেষ্টা করলে হবে কিনা।এ সব কিছুই মনেই আটকে রইলো।উনি শুধু বললো, স্বামীকে সন্তানের জন্য রাজি করা তোমারই কাজ।ছেলেরা একটু এমনই হয়।ছেলেদের বয়েস কখনোই বেড়ে যায়না রিনি।আমি শুধু মুখে বললাম,হুম।

সেদিন রাতেও একই বিছানায় শুয়ে দুজন দুদিক ফিরে রইলাম।তাহির হঠাৎ বললো, কি ব্যাপার মুখ কালো করে রেখেছো কেনো? আমি বললাম,এমনি।যদি উত্তর দিলাম মুখ কালো করে নেই।তাহলে সেই উত্তর তাহিরের পছন্দ হতোনা।তাই এমনি বলাই নিরাপদ।আজ তাহির আমার সাথে কথা বলতে চাইছে।কেনো চাইছে আমি জানি।হয়তো মাস দুমাসের মধ্যে আজ সেই দিন,যেদিন ওর একটু পুরুষত্ব দেখাতে ইচ্ছে করে।আমি সেদিন বাধা দেইনা।যদিও পুরোটা সময় মনে হতে থাকে ওর বাক্যগুলো যখন বিয়ের প্রথম বছর গুলোতে প্রচন্ড রেগে আমি বলতাম,তুমি কেনো আমার প্রতি আগ্রহ দেখাও না।ও বিদ্রুপের গলায় বলতো,মরার মত বিছানায় পড়ে থাকো দেখে আমার আগ্রহ হয়না। আমি প্রচন্ড অবাক হয়ে বলতাম,প্রতিবার তো আমিই অ্যাপ্রচ করি। ও মুখ বেকিয়ে বলতো,আগ্রহ পাইনা তোমার সাথে।পুরোটা সময় কেটে যেতো বের কর‍তে কোথায় কমতি আছে আমার।আমার শরীরটা নায়িকাদের মত না হলেও আমি স্লিম,পরিপাটি।তাহলে কোথায় কমতি,কেনো কমতি!

তখনও আমার অবুঝ স্বত্তা বোঝেনি তাহির নিজের ত্রুটি ঢেকে আমাকে দাবিয়ে রেখে পৌরুষ জাহির করার জন্যই খুবই বুদ্ধিমত্তার সাথে আবিস্কার করেছিলো আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবার উপায়।এমন উপায় যেটা আমি কারো কাছে গিয়ে প্রমাণ করতে পারবো না,মুখ ফুটে বললেই লোকে আমাকেই বলবে খারাপ মেয়েলোক ছি ছি।তাই নীরব শ্রোতা হয়ে গেলাম,নীরব দর্শক হয়ে গেলাম।রান্নাঘরের হাড়ি ঠেলে ফ্রিল্যান্সিং এর টুকটাক কাজ করে নিজের আলাদা দুনিয়া বানিয়ে নিলাম।যে দুনিয়ায় আমি একজন অপরিপূর্ণ নারী,গোমড়ামুখী।সেদিন তাহিরের ডাকে আমি সাড়া দিলাম না।খুব ভোরে উঠে হাটতে হাটতে চলে গেলাম সায়েমের বাড়ি, সায়েম দরজা খুলেই বিস্মিত গলায় বললো, কি হয়েছে।দরজা থেকে সরে দাড়ালো না।আমি ওর বাসায় ঢুকতে ঢুকতে বললাম,আমার নাম আপনি আগে থেকেই জানতেন তাইনা!পাখিকে আমার নাম আগেই শিখিয়ে রেখেছিলেন আমাকে বিস্মিত করার জন্য।সায়েম উত্তর দিলোনা।শুধু বললো, ঘরে এসে বসো।আমি প্রচন্ড আক্রোশের সাথে বললাম,আপনারা ছেলেরা না মেয়েদের নাম দিয়েছেন ছলনাময়ী। তবে আপনাদের কি নাম আমরা দেবো বলুনতো? সায়েম ধীর গলায় বললো, তোমার লিখা আমি ফেইসবুকে পড়তাম,সেভাবেই তোমাকে চিনি।তোমাকে চিনি বললে আমাদের বন্ধুত্বটা হতোনা রিনি।তবু আমি তোমার অপরাধী। এটুকু বলতে পারি তোমাকে নিয়ে কোনো মন্দ চিন্তা আমার মনে ছিলোনা।আমি কান্নায় ভেঙ্গে পড়লাম।মনে হলো শত বছরের জমিয়ে রাখা অভিমান ঝরে পড়ছে।আমি ভুলেই গেছিলাম আমি কাদতে জানি।আমি প্রায় ভুলেই গেছিলাম আমিও মানুষ।সায়েম আমার পায়ের কাছে হাটু গেড়ে বসে বললো, আমি একটা ফাইভ স্টার হোটেলের চীফ শেফ।আমার নিজের একটা রেস্তোরাঁ আছে বনানীতে।সেই তথ্য জানলে তুমি আমাকে রেধে খাওয়াতে না।আমারও জানা হতোনা ঘরের রান্নার তো কি অসম্ভব সুন্দর মাত্রা যোগ হতে পারে।আমি আমার মেন্যুতে বাংলা খাবার যোগ করেছি।তুমি ছাড়া এ কাজটি কেও পারফেক্টলি করতে পারবেনা।তুমি চলে এসো রিনি।আমি কিচ্ছু জানতে চাইবো না কেনো, কিভাবে। শুধু জানি তুমি চলে এসো।আমাদের স্বপ্নের জায়গাটা আমরা এক সাথে তৈরি করবো।আমি এক দৃষ্টিতে সায়েমের দিকে তাকিয়ে থেকে বললাম,কিন্তু আমি জানতে চাই যে স্ত্রীকে এতো ভালোবাসেন কেনো একসাথে নেই আপনারা? সায়েম আমার পাশে বসতে বসতে বললো, আমাকে নিয়ে সবাই ওকে ক্ষেপাতো স্বামী রন্ধনশিল্পী এটা এদেশে এখনও গ্রহনযোগ্য নয়।আসলে কারণ কি আমি আজও জানিনা।শুধু দুজনেরই মনে হয়েছিলো ভালোবাসাটা ঠিক আর নেই।হারিয়ে গেছে কোথাও।খুব ঠান্ডা মাথায় আমরা সিদ্ধান্ত নেই।নীরার আমার রান্না খুব পছন্দ।এখনো প্রায় ওর স্বামীকে নিয়ে আসে আমার রেস্তোরাঁরে খেতে।আমি ওকে ওর প্রিয় ডিশ পাঠাই কম্প্লেমেন্টারি খাবার হিসেবে। আমরা ভালো আছি যার যার জায়গায়।আমরা সম্পর্ককে তিতকুটে বানানোর আগেই শ্রদ্ধা নিয়ে ইতি টানতে চেয়েছি।তোমার পিছুটান কি রিনি?আমি চোখের পানি মুছে বললাম।আমার পিছুটান আমার নিজের সাথের প্রতিজ্ঞা।ভেবেছিলাম বাবা মায়ের মত ডিভোর্সে যাবোনা।ভেবেছিলাম ভালোবাসা দিয়ে বোধহয় সব জয় করা যায়।যায়না।শুধুমাত্র একটা নীলকাগজের এতো ক্ষমতা নেই যে সবকিছুর উর্ধে গিয়ে প্রানান্তকর ভালোবাসা।খুবই নাজুক এ সম্পর্ক।ভেবেছিলাম শুধু আমার একটা ঘর হবে,কিন্তু দিন শেষে আমি তাহিরের ঘরেই আছি।দিন শেষে আমি মেয়েমানুষ।চট করে বলে ফেলতে পারবো না আমি সুখী না মানসিক শারিরীক ভাবে।লোকে আমায় বেশ্যা বলবে।তাহির আমাকে নিশ্চিন্ত জীবনে দিয়েছে,অবাধ স্বাধীনতা দিয়েছে,আমার বলবার জন্য ঘর দিয়েছে,আমার সব অভাব পূরন করেছে যখন যা চেয়েছি।কিন্তু সায়েম বিশ্বাস করো আমার চাইতে হয়েছে,বলতে হয়েছে এ কারণে আমি টাকা চাই।কখনো কখনো সেই কারণ তার তুচ্ছ লেগেছে।অত্যন্ত মিষ্টি হেসে তাচ্ছিল্যের গলায় বলেছে,সিরিয়াসলি রিনি এটা কিনতে চাও!আমি দ্রুত মত বদলেছি।সব আমাকে দিয়েছে তবে সেগুলো না চাইতেই না চাইতে।আমি নিজেকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছি বেশিই চেয়ে ফেললাম কিনা!আজ বুঝি আমি নিজেকে না তাহির খুব সূক্ষভাবে আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করিয়েছে।সায়েম আমার লিখায় যতই থাকুক না কেনো সমাজ কে কাচকলা দেখাও,ততক্ষানিই আমি সমাজকে ভয় পাই।হারিয়ে ফেলার ভয় পাই।মেয়েবেলায় যেমন বাবা মাকে হারিয়ে ফেলেছিলাম।ছোট্ট নিশ্চিত আশ্রয় আমার ঘর হারিয়েছিলাম।কি প্রচন্ড ইনসিকিউরিটি নিয়ে বড় হয়েছি তুমি জাননা!সর্বদা আমার বাবা মায়ের চোখে আমার চাইতে আমার ভাইবোনদের জন্য ভালোবাসা দেখেছি,তাদের নতুন সংসারের জন্য ভালোবাসা দেখেছি,দেখেছি তাদের চোখে আমাকে নিয়ে সূক্ষ্ম অবহেলা।হয়তো তাই তাহিরের প্রানহীন সংসারে জোর করে প্রাণ আনতে চেয়েছি।আমার এই চেষ্টা তাহিরের চোখে পড়েছে।আমার প্রচন্ড চেষ্টাকে দুর্বলতা ভেবে ওর হাতিয়ার বানিয়েছে।

আমি এটুকু বলে হাসলাম।সায়েম এই প্রথম বার আমার হাত জড়িয়ে ধরলো।আমি দুচোখ বুজলাম।ওর উষ্ণতা আমি টের পাচ্ছি।আমার দুচোখ গড়িয়ে নেমে এলো নোনাজল সায়েম বললো, আর কিছু জানতে চাইনা রিনি।শুধু তোমাকে চাই।তোমার একটুখানি আদর মাখা ঘরে আমার অল্পখানিক জায়গা চাই।আর প্রতিজ্ঞা করবোনা,শুধু তোমার দেয়া প্রতিজ্ঞাগুলো মানতে চাই।আমি তোমার জীবন সাজাবো না,শুধু আমার জীবনটাকে তোমার মত করে সাজিয়ে দিও।আমি উঠে এলাম।মনে হলো মনটা হালকা লাগছে।খুব হালকা।বাড়ি ফিরে দেখলাম তাহির উঠে পড়েছে।আমি জিজ্ঞেস করলাম,কি খাবে?ও ফোন থেকে চোখ না তুলেই বললো,ওটস অমলেট করে দাও। আমি ওটস অমলেট টেবিলে রেখে বললাম,তোমার মাকে বলে দিও তোমার পিছনে একশো মেয়ের লাইন লেগে যাবে তবে আমার পিছনে দুশো লাগবে না এটা কিভাবে জানে!এতোই অপরিপূর্ণ আমি হলে আমাকে তোমার স্ত্রী হিসেবেও মেনে নিতেন না উনি।তারপর উঠে এসে বললাম,আচ্ছা তোমার বোনের স্বামী তোমার মত ইনকম্পলিট হলেও কি তিনি একই কথা বলতেন তাহির?তাহির কপাল কুচকে কিছু একটা বললো। আমি তা শুনলাম না।আজ আমার মুক্তির দিন।আজ একটি মন্দ কথাও আমি শুনবোনা।


বিকেলে তাহির ফেরার আগেই আমার নতুন গৃহে উঠে এলাম।আপাতত এই একরুমের কামড়াই আমার ঘর।আমার নিজের ঘর।জাকজমক না,খুব আটপৌরে তবু আমার ঘর।

আমি এঘর সাজাবো আমার আপন আলোয়।

তাহিরের সেই কয়েদ ছেড়ে আসার পথে সায়েমের দরজার ফাঁকে একটা চিঠি গুজে দিয়ে এলাম।তাতে লিখা ছিলো,


ধন্যবাদ আমাকে নতুন জীবন দেবার জন্য।আমি যেটাকে ভালোবাসা ভেবেছি তুমি বলবার পর বুঝলাম আমি শুধু একটা নিখাঁদ বন্ধুত্ব চেয়েছিলাম।সুখে থাকার অভিনয় করতে করতে সব বন্ধুদের হারিয়ে ফেলেছিলাম।তুমি জীবনে এলে আমার চোখ খুলে দিলে।তোমাকে ধন্যবাদ।আর একটা কথা নীরাকে যতদিন মন থেকে না সরাতে পারছো জোর করে ঐ মনে আর কাওকে জায়গা দিওনা বিপাকে পড়ে যাবে।দূর থেকেও ভালোবাসা মন্দ না কি বলো!আমি যে ভালো রাধি তোমার মত এতো বড় শেফ না বললে বিশ্বাস হতোনা।ফেইসবুকে পেইজ খুলেছি হোম কেটারিং এর।জীবনে বেঁচে থাকার অর্থ নতুন করে জানতে পেরেছি।তুমিও খুঁজে বের করো সায়েম।আমি তোমার রেস্তোরাঁতে গেলে আমাকে কম্প্লেমেন্টারি ডিশ দেবে তো?

ভালো থেকো।

রিনি।

আমি জানালা দিয়ে দূরে চাইলাম।মোবাইল বেজে চলেছে ক্রমাগত ।আপাতত জানতে ইচ্ছে হচ্ছেনা কে ফোন করছে।আপাতত ভাবতে ভালো লাগছে,আমি সুখে আছি,খুব সুখে।


সমাপ্তি.....


গল্প-ডিভোর্স 


এমন আরও গল্প পড়ুন।