স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা
গল্পঃ_সত্যিকারের_ভালোবাসা
একটি শিক্ষনীয় পোস্ট।
লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহ জালাল।
মায়াঃ এই শুভ, আমার পেটে প্রচন্ড ব্যাথা করতেছে।
শুভঃ কেনো কি হয়েছে?
মায়াঃ পিরিয়ড শুরু হয়েছে গত কাল থেকে।
শুভঃ আচ্ছা তুমি থাকো, আমি আসতেছি।
মায়া শুয়ে রইলো।। শুভ রান্না ঘরে গিয়ে গ্যাস অন করে পানি গরম করে মায়ার কাছে আসলো। এসেই মায়াকে বললো..........
শুভঃ মায়া এবার একটু উঠো।
মায়াঃ কি বলো, উঠতে পারছি না। পেটের ব্যাথা
আরো বারতেছে।
এই বার শুভ মায়াকে শোয়া থেকে কোলে তুলে নিলো। তারপর বিছানা থেকে নামিয়ে চেয়ারে বসিয়ে দিলো।
এরপর পেটের উপর থেকে থ্রী-পিছের পার্ট টা সরিয়ে একটা কাপড় নিয়ে গরম পানিতে ভিজিয়ে নাভীর উপরে আস্তে আস্তে মালিশ করতে থাকে।। কিছুক্ষণ পর একটু ব্যাথা কমে যায়।
মায়া অবাক হয়ে গেলো।। কারন মায়া তার বান্ধবীদের কাছ থেকে শুনেছিলো। তাদের যখন পিরিয়ড শুরু হয় তখন তাদের স্বামী খারাপ ব্যাবহার করে৷
ভালো ভাবে কথা বলেনা৷ যেখানে সারা মাস বুকে নিয়ে ঘুম পারে,আর যখন ৩ দিন ৫ দিন ৭দিন পিরিয়ড থাকে তখন তারা খুব খারাপ ব্যাবহার করে। আর তখন খুব কষ্টে থাকে তারা।। পরিবারের সকলের জন্য রান্না করা বাড়ির সকল কাজ করা।
যখন মেয়েদের পিরিয়ড শুরু হয়,,তখন প্রতিটা মেয়ের মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে। পেট ব্যাথা করে, ভালো কথা শুনলেও অল্পতেই রাগ উঠে যায়।।
এমন সময় স্বামীর সঙ্গ পাওয়া তো ভাগ্যের ব্যাপার। যা মায়ার ভাগ্যে হয়েছে। এরপর শুভ মায়াকে বললো.....
শুভঃ আচ্ছা তুমি শুয়ে থাকো। আমি আজকে রাতের
খাবার রান্না করি।
মায়াঃ তোমার কষ্ট করতে হবে না। আমি রান্না করতে পারবো।
শুভঃ আমি জানি তুমি পারবে। কিন্তু আমি করলে
দোষ কি তাতে।
মায়াঃ আচ্ছা যাও করো।
এরপর শুভ চলে গেলো রান্না করতে,আর ভাবতে থাকে মায়াকে নিয়ে।
শুভর কাজের সুবাদে পরিবার রেখে শহরে থাকতে হয় শুভ আর মায়াকে।৷ আজ থেকে দের বছর আগে শুভ আর মায়ার পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়।
শুভ বাসর রাতে মায়ার শরীর না চেয়ে বলেছিলো......
শুভঃ আমি আপনাকে সম্পুর্ণ ভাবে চিনি না। আপনিও আমাকে সে ভাবে চিনেন না৷ আমরা স্বামী স্ত্রী হওয়ার আগে বন্দু হতে পারি না??
মায়াঃ জ্বি অবশ্যই, কেনো নয়।
এবং বাসর রাত থেকেই মায়ার সকল বান্ধবীদের মধ্যে থেকে মায়া সুখী সব থেকে বেশি। মায়া তো মাঝে মাঝে মনে করে পৃথিবীর সকল মানুষের চাইতে সে সুখী।
কারন শুভ যত ব্যাস্ততায় থাকুক না কেনো রাত ৮ টার আগে বাসায় চলে আসে৷
আর সকালে,, দুপুরে,, রাতে মায়ার সাথেই খাবার খায়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে। স্ত্রীর সাথে সব-সময় বন্ধুর মতো আচারণ করে৷ এবং ফযর এর নামাজের সময় মসজিদ দুরে হওয়ায় ফযরের নামাজ ঘরে যখন পড়ে তখন মায়া শুভ কে সাথে নিয়ে পড়ে।
আর সবচেয়ে বেশি খেয়াল রাখে যখন মায়ার পিরিয়ড শুরু হয় তখন।
প্রতিটা সময় মায়ার খেয়াল রাখে৷। মায়া রান্না করতে গেলে সেখানে গিয়ে সহযোগিতা করে। সকল কাপড় গুলো শুভ নিজেই ধুয়ে দেয়।।এমন সময় শুভ মায়াকে বলে উঠলো.......
শুভঃ এতো কি ভাবছেন মেডাম?
মায়াঃ কিছু না, রান্না হয়েছে।
শুভঃ হুম চলো খাবো ক্ষুদা লাগছে।
মায়াঃ এই আজ তুমি আমাকে খাওয়াই দিবা।
শুভঃ হুম আজকে খাওয়াই দিবো। আমিও খাবো।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে শুয়ে পড়লো দুজনে।।মায়াকে অন্য পাশ হয়ে শুয়ে থাকা দেখে শুভ মায়াকে বললো....
শুভঃ কি হলো ওপাশ হয়ে শুয়েছো কেনো?
মায়াঃ আসলে যদি তোমার সমস্যা হয় আমার পিরিয়ডের জন্য তাই।
শুভঃ আমাকে এখনো চিনলে না।
মায়াঃ আচ্ছা সরি গো।
এরপর মায়াকে বুকে নিয়ে জড়িয়ে ধরে রাখে........
আমাদের প্রতিটা স্বামীর দায়িত্ব এবং কর্তব্য, স্ত্রীর যখন পিরিয়ড শুরু হয় তখন তাদের সেবা করা। কারন, মেয়েদের এই পিরিয়ডের জন্য আজ আমরা দুনিয়াতে আসতে পেরেছি।
যদি মেয়েদের পিরিয়ড না হতো,আমরা কোথায় থেকে দুনিয়ায় আসতাম। মেয়েদের পিরিয়ড হওয়া খারাপ কিছু না। বরং প্রতিটা স্বামীর গর্বের বিষয়।
আমাদের স্বামীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য স্ত্রীর পিরিয়ডের সময় তাকে সঙ্গ দেওয়া। তাদের পাশে থেকে তাদের কাজে সাহায্য করা।
তাহলে দেখবেন আপনার ঘরটা ঘর মনে হবে না।। বরং একটা জান্নাতের টুকরা মনে হবে। একে অপরের প্রতি সম্মান ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে।
ভালো থাকুক সত্যিকারের ভালোবাসা। এ ভালোবাসা
অটুট থাকুক সারাজীবন,, যুগ থেকে যুগান্তর।
এই ভালোবাসার প্রতি ভক্তি সম্মান ও শ্রদ্ধা রইলো।
নারীকে সম্মান করতে শিখুন। আপনিও সম্মান পাবেন। সম্মান দেওয়ার মালিক আল্লাহ। আপনি আপনার মা বোন কে যতটা ভালবাসেন। তেমনই সবাই সবার মা বোনকে ভালোবাসে।। সবার ভালোবাসা হোক বিশুদ্ধ।
♥♥♥
***********সমাপ্ত***************