স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা | স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প

 স্বামী স্ত্রীর রোমান্টিক গল্প

স্বামী স্ত্রীর রোমান্টিক গল্প

আমার স্বামী যখন সকালবেলা না খেয়ে অফিস চলে যাচ্ছিলো তখন আমি মেজাজ দেখিয়ে বললাম,


-- " আমার হাতের রান্না তো এখন আর তোমার মুখে রোচে না।না খেয়েই চলে যাচ্ছো।কেউ কি অমৃত রান্না করে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে নাকি?যে বাড়ি থেকে আমার হাতের বি'ষ মুখে তোলা যায় না? "


আমার কথায় সেও মেজাজ দেখিয়ে বললো,


-- " সকালের রান্না শেষ করতে যদি দুপুর বানিয়ে দেও তাহলে কি আর খেয়ে যাওয়ার উপায় থাকে? নবাবজাদির তো সকাল আটটা না হলে ঘুম ভাঙে না। "


আমিও তেঁতো গলায় বললাম,


-- " দুইটা ছেলে মেয়ে আছে সেদিকে কি নজর আছে?তাদের সবকিছু তো আমাকে দেখতে হয়।  একটু খাবারও কি বেড়ে খেতে পারো না তুমি? "


সে মুখ বেঁকিয়ে বললো,


-- " তোমার ঘ্যানঘ্যান শুনে অফিস যেতে আর ভালো লাগে না। "


 আমি পিছন পিছন দৌড়ে বললাম,


-- " আরে টিফিন তো নিয়ে যাও। "


সে গাড়িতে উঠতে উঠতে বললো,


-- " আমার জন্য অমৃত নিয়ে বসে আছে।তোমার হাতের বিষ খাওয়ার কোনো ইচ্ছা আমার নেই।" 


চোখের কোণের পানিটা মুছে বাড়ি ফিরে ছেলেমেয়েদের খেতে দিলাম।খাবারের গামলাতে দেখলাম তিন পিচ মাছ আর খানিকটা সবজি কম।তার টিফিনবাক্সটাও ঘরে কোথাও নেই।পাশে একটা প্লেটে আমার খাবারটাও ঢাকা দেওয়া। মুচকি হেসে নিজের কাজে চলে গেলাম। মানুষটা পারেও বটে। যাওয়ার আগে রোজ আমাকে রাগাতেই হবে।

.

.

.

.

সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হতে গেলো এখনো তার খোঁজ নেই৷কোথায় কি করে সৃষ্টিকর্তা ভালো জানে। এতো কিসের কাজ যে রাত ১১টা বেজে যাবে৷মেজাজটা আর ধরে রাখতে না পেরে কল দিয়ে বললাম,


-- " কোথায় এতো কাজ থাকে তোমার? "


সে হাসতে হাসতে বললো,


-- " দরজা খুলে দেও বউ। "


দরজা খুলতেই একটা মেয়েলি সুবাস নাকে এলো৷নাহ আর তো সহ্য হচ্ছে না আমার।রাগে ফুলতে ফুলতে বললাম,


-- " এতো রাতে গায়ে মেয়েদের পারফিউম লাগিয়ে বাড়ি কেন আসতে হয়েছে? সেখানেই থেকে যেতে। "


তিনিও আমার নাকের কাছে তার হাতটা এনে বললো,


-- " গা থেকে নয় হাত থেকে গন্ধটা আসছে। পারফিউম ভালো না হলে তো মহারাণীর পছন্দ হয় না। "


কথা বলে আমার হাতে একটা পারফিউম,একটা গোলাপ, কয়েকটা চকলেট আর একটা আইসক্রিম ধরিয়ে দিয়ে কানে কানে বললো,


-- " আজ কিন্তু আমি প্রথম কারাগারে বন্দি হয়ে ছিলাম।"


বলে আমাকে চোখ মেরে চলে যেতে যেতে বললো,


-- " খেতে দেন মেডাম ক্ষুধা লাগছে আমার৷ "


তার প্লেটে ভাপা ইলিশ দিলে বললো,


-- " বউ একটু খাইয়ে দিবে আমাকে? আমি জানতাম আজ তুমি ভাপা ইলিশ রান্না করবে।আমার পছন্দ বলে কথা। আমার বউ কি রান্না না করে পারে। "


আমি রাগী চোখে তাকালে হেসে বললো,


-- " কাজল দেওয়া চোখে মায়াটাই বেশি মানায়। আমি হাজারবার ওই চোখের প্রেমে পড়তে রাজি। "


আমি লজ্জা পেয়ে সেখান থেকে চলে এলাম।সে হেসে গড়াগড়ি দিচ্ছে আর বলছে,


-- " এতে এতো লজ্জা পেলে দুইটা ছেলে মেয়ে কোথা থেকে আসলো বউ? কি নির্লজ্জ রে বাবা।"

 

দিন শেষে এই নির্লজ্জটাই আমার সবকিছু।আমি আইসক্রিম চকলেট পছন্দ করি বলে ছেলে মেয়ে ঘুমালে বাড়ি আসতে হবে!মাঝে মাঝে আমাকে গোলাপফুল এনে দিবে।আসলেই আমি সুখী।


সমাপ্ত

ছোটগল্প

সুখী


এমন আরও স্বামী স্ত্রীর রোমান্টিক গল্প পড়ুন।