valobashar romantic golpo | best romantic golpo

 romantic golpo

romantic golpo

- এই যে সাহেব? এখনও ঘুম?

- উঁহু। ভেঙে গেছে। 

- কখন?

- সকাল সকাল।

- তা সকাল কয়টায়?

- এগারোটার একটু আগে।

- বাপরে! এত সকালে?

- হুঁ। তোমার কথা মনে পড়তেছিলো যে।

- ওই! তুমি ভালো হবা না? না ?

- কেন? কী করলাম?

-ফাজলামো ছাড়া আর কিছু পারো তুমি?

- আলু ভর্তা পারি, ডিমও ভাজতে পারি।

-ওকে। বিয়ের পর প্লেটও মাজবা তুমি।

- প্লেট পাব কই?

- পাব কই মানে? বিয়ের পর আমরা ভাত খাবো কোথায়?

- কলাপাতায়।

- কলাপাতায় মানে? 

- কছিম মামাকে বলে রাখছি। প্রতিদিন আমাকে পাতা কেটে দিবে। ধোয়াধুয়ির মধ্যে নাই।

- আর আমি?

- অফিসে খেয়ে আসবা। বাসায় থাকলে হালকা ডায়েট করবা।

- ফাজিল একটা! মাইর চিনো তুমি?

- কেন? কী করলাম আবার?

- কিছুই করো নাই?

- না।

- আমাদের বাসার সামনে যে দোকানদার সলিম মামা; তাকে কী জিজ্ঞেস করছো আমার সম্পর্কে?

- ওই তো তোমার স্বভাব চরিত্র কেমন, এটা।

- তুমি জানো না আমার সম্পর্কে? এতদিনেও আমাকে তোমার দেখা হয় নাই?

- কছিম মামা বলছে, যা দিনকাল পড়ছে! নিজের চোখকেও বিশ্বাস নাই।

- ওই! তুমি ফাজলামো করো আমার সাথে?

- গত মাসে যে আমার চাচাতো বোন উর্মিমালার বিয়ে হলো, মনে আছে? ওর ননদ থাকতে তোমার সাথে করবো কেন? 

- মানে তুমি ওর ননদের সাথে কথা বলো?

- হুঁ।

- কী কথা বলো?

- যেসব কথা বাইরের মানুষকে বলা যায় না।

- বদমাশ!

-ওই তো! সরল অংকের সূত্র। ছোটবেলায় করছি।

- ওই! বন্ধের দিনে ফাজলামো বাদ দিয়ে একটু সিরিয়াস কথাবার্তা নাই তোমার?

- থাকবে না কেন? তোমার আম্মাকে ফোন দাও।

- উফ! আম্মাকে কেন? আমার সাথে সিরিয়াস কিছু নাই তোমার?

- সেদিন যে রিকশায় চুমু খেলাম সেটাও হালকা মনে হইলো?

- ওহ! খোদা! আমি আর পারি না। কী অসভ্য!

- আর কয়দিন পর বর্বর মনে হবে। 

- কেন?

- আমরা আদিম যুগে ফিরে যাব তাই।

- চুপ! ফাজিলের ফাজিল কোথাকার! 

ভালো হবা না তুমি?

- আবার কী করলাম?

-তুমি আমার ফ্রেন্ড ইরাকে কী বলছো সেদিন?

- বলছি, সুন্দর লাগছে।

- রাস্তার মধ্যে একটা মেয়ে জুতা ছিঁড়ে হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মুচি খুঁজে পায় না। আর তুমি তাকে বলছো সুন্দর লাগছে?

- হুঁ।

- আবার বলে হুঁ? তুমি আসার পথে রিকশায় ওকে তুলে নিয়ে এলে না কেন?

- ও প্রতিদিন গোসল করে না যে।

- প্রতিদিন গোসল করে না মানে? তুমি জানো গোসল করে না? 

- তুমিই তো বলছিলা তিনদিন পর পর গোসল করে।

- আরে! ওটা তো শীতে।

- ওহ! মনে নাই।

- মনে নাই মানে? মন কই থাকে?

- শরীরে।

-উফ! 

অসহ্য! আর পারি না।

- কী পারো না?

- তোমাকে চিবিয়ে চিবিয়ে খেতে।

- চিকেন ফ্রাই খেয়েই তো পেটে জায়গা থাকে না।

-ওই? খোঁটা দাও তুমি?

- উঁহু। মনে করিয়ে দিই

- মনে করিয়ে দাও কেন?

- দুই চারদিনের মধ্যে যেন আর খেতে না চাও। পকেট খালি।

- মুখ ফুটে নিজেও কি বলতে পারো না? রূপা বিকেলে দেখা করি। তুমি বিল দিও রেস্টুরেন্টের।

- মুখ কি কলি? যে ফুলের মতন ফুটবে?

- ওই! তুই ভালো হবি কবে ?

- আমাদের বাড়িওয়ালার মেয়ে নাবিলা বললেই।

- আমি বললে তোর ভালো লাগে না?

- উঁহু! কর্কশ শোনায়। কাকের মত স্বর! 

- মধুর কার?

- ওই তো নাবিলার।

-ঠিক আছে। বিকেলে তোর নাবিলাকে ডাক। বোঝাপড়া আছে আমার।

- নাবিলা যেতে পারবে না কোথাও। ওর আলাদা একটা দাম আছে না?

- কিসের দাম?

- ওই যে চার এমবিপিএস ওয়াইফাই একাই চালায়।

-তুই থাক বাসায়। আমিই আসতেছি। 

চৈত্র মাসের শেষ বিকেল। 

প্রচণ্ড দাবদাহ শেষে নরম আলো এসে পড়েছে ব্যালকোনিতে। কফির মগে তৃপ্তির চুমুক শেষ হতেই কলিং বেলের শব্দ। দরজা খুলে দিলাম।

রূপা ছাড়া আর কে হবে?

দু চোখ লাল, যেন আগুন ঝরছে। 

ক্রোধে, রাগে, অভিমানে যে এক দুপুর ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে এসেছে তাতে আর ভুল কী! আমার দিকে তাকিয়ে আছে অগ্নিচোখে। সে চোখের দিকে তাকিয়ে মশকরা করার লোভ সামলাতে না পেরে বললাম, 

"প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস

তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ ।"

রূপা রাগ সামলাতে না পেরে বললো, 

- ফাজিল, অসভ্য, শয়তান, বদমাশ আমার সাথে মজা নাও তুমি?

- তুমি ছাড়া আর কে আছে আমার যে তার সাথে নিব?

- কেন? নাবিলা? 

- ধুর! চোখ বন্ধ করো তো?

- উঁহু। 

- কেন?

- তুমি আমাকে চিকেন খাইয়ে পর্যন্ত খোঁটা দিয়েছো?

- হাহাহ।

- হাসো কেন?

-"মনে মনে যে কতবার হাসি

কত যে তোমার নাম ধরে ডাকি!"


রূপা কপট রাগের অভিনয় করে বললো, যা! ফাজিল! এখন আবার কাব্য করে!


রূপার হাতে দুটো "ঢাকা -কুয়ালালামপুর" টিকিট ধরিয়ে দিয়ে বললাম, আমাদের বিয়ের পরের সপ্তাহে হানিমুন। ওকে? এই জন্যই ডেকেছিলাম।

রূপা আমাকে মারতে মারতে বুকে মাথা রেখে বললো, এই তোমার ডাকার নমুনা! ফাজিল! অসভ্য!


সত্যিই মাঝেমাঝে মনে হয় "লাইফ ইজ ওয়ান্ডারফুল"! 


-গল্পঃ হানিমুন।

মঈনুল সানু।


রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প পড়ুন।