স্বামী স্ত্রীর কষ্টের স্ট্যাটাস | স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা

 স্বামী স্ত্রীর আদর ভালোবাসা

স্বামী স্ত্রীর আদর ভালোবাসা

-- আমি তোমাকে শারীরিক সুখ দিতে পারব না।


-- তাহলে তুমি কি হিজড়া।


-- এমনটা নয়। তবে সেটা অন্য কারন ধরে নাও। 


-- আজকে আমাদের বাসার রাত। আর আজকেই কেন এই কথা আমাকে বললেন।


-- অনেক আগেই আমি তোমাকে এই কথা বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিবারের সবার মুখের দিকে তাকিয়ে তোমাকে বিয়ে করছি। অনেক চাপে পড়েই একপ্রকার তোমাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছি আমি।


-- আমি কি কোন অন্যায় করছি আপনার সাথে।


-- আপনি কোন অন্যায় করেন নাই আমার সাথে। অন্যায় করছি আমি। আমাকে মাফ করে দেন।


মাইশা মায়াবী দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে কান্না করে দিয়ে বলল, সত্যি করে বলেন আপনি আমার সাথে মজা করছেন।


লাদেন:- তোমাকে আমি আজকে বিয়ে করছি। তুমি এখন থেকে আমার জীবনের সাথে জড়িয়ে গেল। আমি তোমাকে মিথ্যে কখনোও বলব না। যা বলছি সব সত্যি।


মাইশা:- জানেন মেয়েদের বিয়ে একেবারেই হয়।


লাদেন:- হয়তোবা তবে সেটা আমার জানা নেই। আমাকে মাফ করে দেন। আরো আগে আপনাকে এই কথা বলা উচিত ছিল আমার।


মাইশা:- কোন ব্যাপার না। আমার কপাল খারাপ।


লাদেন:- আপনি চাইলে ডিভোর্স নিতে পারেন আমি না করব না।


মাইশা:- আপনার কাছে আমি শারীরিক সুখ চাই না। শুধু আমার পাশে থাকবেন। হয়তোও যদি আপনি হিজড়া হন তাতেও আমার কিছু আসে যায় না। তবুও আপনি আমার বিয়ে করা স্বামী।


লাদেন:- দেখ বিয়ে মানে সব কিছু। আর একটা মেয়ে তার স্বামীর কাছ থেকে শারীরিক সুখ যদি না পাই, তাহলে এই জীবনের কোন মানে আছে বলেন। আমি যদিও একটা ছেলে তবে আপনার কষ্ট আমি বুঝতে পারছি। বাসর রাতে একটা মেয়ে তার স্বামীর কাছ থেকে অনেক কিছু চাই। তার মাঝে শারীরিক সুখ অন্যতম।


মাইশা:- আপনি চিন্তা করবেন না। আমি সব সামলে নিব। আপনি শুধু আপনার পাশে থেকে আমাকে একটু জায়গা দিবেন।


আমি:- পাগল হয়েছ তুমি মাইশা। কি বলছ তোমার মাথা ঠিক আছে। এভাবে কষ্ট নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবে না।


মাইশা:- আমার মা বাবা সবসময় বলত,, বিয়ের পর স্বামীর খেয়াল সবসময় রাখবি। আর মেয়েদের বিয়ে কিন্তু একেবারেই হয়। আর বিয়ের দ্বিতীয় নাম মুখেও নেওয়া যাবে না। আমি এগুলো বিশ্বাস করি। আমার কিছু লাগবে না। সব কিছু সামলে আমি সংসার করব। Please তা-ও আপনি আমাকে ডিভোর্স দিবেন না।


লাদেন:- তুমি অনেক সুন্দরী। তোমার একটা ভবিষ্যত আছে। আমার পাশে পড়ে থেকে নিজের জীবন নষ্ট করিও না।


মাইশা:- আপনি যদি দ্বিতীয় বার এই কথা বলেন, তাহলে আমি আপনার সামনে বিষ খেয়ে মারা যাব


আমি:- যখন তোমার আমাকে ছেড়ে যেতে মনে হয় চলে যাবে। আমি রাজি আছি সবসময়েই। কখনোও তোমাকে বাধা দিব না।  তবে আমি কেমন পুরুষ দেখলে তোমাকে শারীরিক সুখ দেওয়ার ক্ষমতা আমার মাঝে নেই। বলে একটু মন খারাপ করলাম


মাইশা:- সব উপর ওলার হাতে। আপনি তো আর জোর করে হন নাই। তাই এসব নিয়ে আর চিন্তা ভাবনা করবেন না। দেখবেন আমি আপনার পাশে ভালো একজন স্ত্রী হয়ে সবসময় থাকব। কখনোই আপনার কাছে আমি শারীরিক সুখ চাইব না।


লাদেন:- এভাবে তো আর জীবন পার করা যাবে না।


মাইশা:- এতিমখানা আছে না। দরকার পড়লে ওখান থেকে বাচ্চা নিয়ে আসব। তা-ও আমি আপনার মনে কষ্ট দিব না। আমার দ্বারা আপনি একটুও কষ্ট পাবেন না এটা আমার প্রমিজ।


আমি:- তোমার মতো একজনকে বউ হিসাবে পাব এটা মনে হয় আমার ভাগ্যে ছিল। জানি না কার কি ভালো কাজ করলাম। যার কারনে এমন একটা বউ আমি পেয়েছি।


মাইশা:- ঘুমাবেন না রাত তো অনেক হয়ে গেছে।


লাদেন:- আজকে আপনার সাথে কথা বলেই কাটিয়ে দেই এই রাতটা।


মাইশা:- আপনি বলেন না। কেমন যেন পর পর লাগে। মাইশা বলে ডাকবেন।


লাদেন:- কিন্তু!


- কোন কিন্তু নয় বলেন মাইশা।


লাদেন:- আচ্ছা যাও। এখন থেকে মাইশা বলব তুমি খুশি।


মাইশা:- অনেক অনেক খুশি।


একটা মেয়ে সে জানে তাকে আমি শারীরিক সুখ দিতে পারব না। এর পরেও ও আমার কাছে পড়ে আছে। একটু ভালোবাসার জন্য। সত্যি মেয়েদের কোন তুলনা হয় না।


এভাবে দেখতে দেখতে দুই মাস চলে গেল। আজকে হঠাৎ মাইশা মাথা ঘুরিয়ে পড়ে গেল। হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তার বলল,,ও নাকি দুই মাসের প্র্যাকনেট। শুনে আমার মাথা ঘুরিয়ে গেল তাহলে ও কি। না না আমি তো ওকে শারীরিক সুখ দিতে পারি নাই। তাই বলে ও পালিয়ে এসব করবে। ছিঃ ছিঃ!আমাকে বলত। আমি নিজেই ওকে মুক্ত করে দিতাম।


হাসপাতাল থেকে বাড়িতে আসলাম মন খারাপ করে।


রুমে যেতেই মাইশা বলল,, আপনি হাসপাতাল থেকে আসছেন সেই মন খারাপ করে। কি হয়েছে আপনার? আর ডাক্তার আপনাকে কি বলল। আমার কি হয়েছে!


লাদেন:- তোমার পেটে দুই মাসের বাচ্চা।


এটা শুনেই মাইশা দুই কদম পিছিয়ে গেল। ওর মুখে কোন কথা নাই একদম চুপচাপ হয়ে গেছে। এক কোনায় দেওয়াল ঘেঁষে বসে পড়ল। আর ওর চোখ থেকে পানি পড়ছে।


আমি:- আমাকে বলতে আমি তোমাকে মুক্ত করে দিতাম।


মাইশা কান্না করতে করতে বলল,,এমন মিথ্যা অপবাদ আমাকে দিবেন না। আজ পর্যন্ত কেউ আমার শরীরে ফুলের টুকাও পর্যন্ত দিতে পারে নাই।


আমি:- মিথ্যা বলে লাভ কি! এখন বল এই বাচ্চার বাবা কে? আমি নিজে তার কাছে নিয়ে যাব তোমাকে।


মাইশা:- বিশ্বাস করেন আপনার কসম করে বলছি আমি, কারো সাথে এসব করি নাই। কিন্তু আমার একদিন এমন মনে হচ্ছিল আমার সাথে কেউ শারীরিক সম্পর্ক করেছে। যখন আপনার সাথে ছিলাম। সত্যি করে বলেন আমার কসম লাগে। আপনাকে আমার এখন সন্দেহ লাগে।  সত্যি সত্যি বলেন। নয়লে আজকে আমি এখানেই আপনার সামনে আত্মহত্যা করব।


মনে মনে বললাম,,এই রে আজকে বুঝি ধরাই পড়ে গেলাম।


মাইশা মায়াবী দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে কান্না করতে করতে বলল,, আমাকে পরকিয়ার কলঙ্ক দিবেন না। বাবা মা শুনতে পারলে আমাকে কেটে নদীতে ভাসিয়ে দিব। আপনি সত্যি কথা বলুন।


আমি:- আমাকে মাফ করে দাও মাইশা। সেইদিন আমি তোমাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে এসব করছি। তবে তুমি আমার বউ। আমার তোমার উপর হক আছে। কিন্তু আমি তোমার উপর একটা পরিক্ষা করছি তুমি আমাকে কতটা ভালবাস। তবে সেটা শারীরিক সম্পর্ক নয়, এভাবে যে একটা নারী স্বামীর পাশে বিনা কারনে একটু সুখের জন্য থাকতে পারে। আমি সেটাই প্রমাণ করতে চেয়েছি।


মাইশা কান্না করতে করতে আমাকে জড়িয়ে ধরল। আপনি খুব বেইমান। আমার সাথে এমন করলেন কেন। আমি কি দোষ করছি। জানেন আমি কতটা ভয় পেয়েছি।


লাদেন:- আমাকে মাফ করে দাও। আমি তোমাকে মিথ্যে বলছি।


মাইশা:- তাহলে এই সন্তান আমাদের।


আমি মাথা নিচু করে বললাম,, তোমার সাথে এভাবে শারীরিক সম্পর্ক করা উচিত হয় নাই আমার। আর এই সন্তান আমাদের। বিয়ের প্রথম রাতেই আমি তোমার সাথে মিথ্যা বলছি এজন্য সরি।


মাইশা আমার কপালে চুমু দিয়ে বলল,, একজন নারী পুরুষের কাছে অল্প একটু ভালবাসা চাই। এতেই ওরা খুশি। আমি কিছু মনে করি নাই।


আমি:- আমাকে এত কেন তুমি ভালবাস বল। আমি তো তোমার ভালবাসার মূল্য দিতে পারব না।


মাইশা:- কিছুই করতে হবে না। শুধু আমার পাশে থাকবেন। আর আমার আর আমার বেবির খেয়াল রাখবেন।


লাদেন:- তুমি ভয় পেয়েছিলে না।


মাইশা:- অনেক ভয় পেয়েছি। তখন মনে হচ্ছিল আমার এই পৃথিবীতে বাঁচার কোন অধিকার নেই। আর যখন বললেন এই সন্তান আমাদের, আমি যে কতটা খুশি হয়েছি বলার বাহিরে।


লাদেন:- চল তোমাকে আজকে আমি তোমার প্রিয় জায়গায় নিয়ে যাব।


মাইশা:- সত্যি।


লাদেন:- হু সত্যি চল। আর তোমার বাবা মা'কে এখন এই কথা বলিও না। পরে বলবে কেমন।


সত্যি একজন মেয়ের বুকে তার স্বামীর জন্য এত ভালবাসা থাকে। সেটার প্রামন হয়তো আজীবন করা যাবে না। মেয়েদের ভালবাসার তুলনা হয় না। সব নারীদের আমি সম্মান করি।


 ( সমাপ্ত)


গল্প:- বউয়ের_ভালবাসা,,,

লিখক:- আরিয়ান ইসলাম।


স্বামী স্ত্রীর ভালবাসার গল্প পড়ুন।