মেয়েদের সংসার জীবন | সংসার জীবনের গল্প

 সংসার জীবনের কষ্ট

সংসার জীবনের কষ্ট

সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতেই ছোটবৌ শরিফা বেগমের খিলখিল হাসির শব্দে নিঃশ্চুপ দাঁড়িয়ে গেলাম। ভেতরে আনন্দ-কোলাহলের হিল্লোল বইছে যেন। অথচ আমি বাড়ি থাকলে এদের তেমন কোন সাড়াশব্দই পাওয়া যায় না।

-বুবু, একটা গান ধরেন। খুব শুনতে ইচ্ছা করছে। বিপুল উৎসাহে ডগমগ করছে ছোট বউয়ের কচি কণ্ঠ।

-ধুর, থাম মুখপুড়ী। কে কোত্থেকে শুনবে, তারপর তরফদারের কানে তুলে দেবে।

-বুবু যে কি বলেন! এই রাতে এখন কে আসবে! আমাদের কি কোন শখ আহ্লাদ নেই?

-আর শখ আহ্লাদ! সব এই বাড়ির ইটপাথর খেয়ে নিয়েছে রে।

-আজ উনি বাড়িতে নাই, এই খুশিটা একটু উদযাপন করা দরকার। আমার খুব নাচতে ইচ্ছা করছে বুবু, নাচবো?

-আচ্ছা, নাচ। আজমলা বেগমের কণ্ঠে প্রশয়ের হাসি।

-ও, বুবু! শরিফা ছুটে এসে আজমলা বেগমকে জড়িয়ে ধরল। আপনি ওই গানটা ধরেন না, বুবু।

-কোন গানটা?

-লীলাবালী---লীলাবালী----

ভেতরে তুমুল জলসা হচ্ছে। বড় বৌয়ের গানের গলা তো খাসা বেশ!

বড় বৌ গান গাইতে জানে! বারো বছরে এই খবরটাও আমার জানা নাই!

বাহ্‌! বাহ্‌! বাহ্‌! রাগে আমার পিত্তি জ্বলতে লাগলো। খিলখিল হাসি আর নুপূরের শব্দে দুকান ঝালাপালা।

চিরকাল শুনে এসেছি, দেখে এসেছি সতীনে সতীনে সাপে-নেউলে সম্পর্ক। কিন্তু এদেরকে দেখলে কে বলবে সেটা! এদের এই আকাশ-পাতাল ভালোবাসা দেখে মনে হচ্ছে, সতীন নয়; এরা যেন গভীর ভালোবাসায় ডুবে থাকা দুই বাল্যসখী। ব্যবসার কাছে চট্টগ্রাম গেছি সপ্তাহখানেক আগে। বলেছিলাম দশদিন থাকবো। কাজ শেষ হওয়াতে আগেভাগে চলে এসেছি।

সবই তাঁর শান! এসেছি বলেই না এই গুপ্ত রহস্য ভেদ হলো আজ!

হিসাবমতে, আমার ঘরে আজ বড় বৌয়ের থাকার কথা। কারণ, আজ বুধবার। প্রথম তিনদিন ছোট বৌ এবং পরের তিনদিন বড় বৌয়ের। আর একদিন আমি একা থাকি। এই একদিন আমার একান্তই নিজস্ব। ইচ্ছা হলে সারারাত ঘুমাই, ইচ্ছা হলে জেগে থাকি। কিংবা ইচ্ছা হলো, সারারাত বন্ধুদের সাথে তাসের আড্ডায় কাটিয়ে দিলাম! কার কি! আর এই বিশেষ দিনগুলিতে আমার গুপ্ত পানশালার দেরাজ উন্মুক্ত হয়। বিদেশি শরাবের খোলতাই মেজাজে নিজেকে বেশ শাহেনশাহ, শাহেনশাহ লাগে। আমার জীবন আমার। এখানে কারো নাক গলানোর কোন অধিকার নাই। এই সংসারের একটা ধূলাও আমার হুকুম ছাড়া উড়তে পারে না। আমার দুই বৌয়ের ঘরে এক মেয়ে। একটা ছেলে নাই বলে ছোটবৌকে ঘরে এনেছি দুইবছর হলো। কিন্তু এই মেয়েটা আমাকে মোটেও পাত্তা দিতে চায় না। বয়স কম। তার উপর আগুনজ্বলা রূপ! মেজাজের উত্তাপও কম কিছু নয়। একে আমি একটু ভয়ই পাই মনে মনে। কেন জানি মনে হয়, এই আগুন সামলে রাখা বেশ কঠিন। অবশ্য বলে রেখেছি, ছেলে না হলে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেবো। মুখে কোন কথা না বললেও ওর দুচোখে শ্বাপদের দৃষ্টি দেখে বুঝেছিলাম, ব্যাপারটা এতো সহজ হবে না। আর এসব নিয়ে এদের দুজনের কোন মাথা-ব্যথা আছে বলেও মনে হয় না। খুব তো দুই সতীনে মিলে আনন্দ-মজলিস জমিয়েছে!

দাঁড়াও, দেখাচ্ছি আজ।

দরজায় করাঘাতের শব্দে ভেতরের সব ঝংকার থেমে গেল নিমিষেই। দুজোড়া পায়ের শব্দ খুব দ্রুত মিলিয়ে যাচ্ছে ভেতরের দিকে। ঘোমটাটানা নছিমন এসে দরজা খুলে সভয়ে একপাশে সরে দাঁড়াল।

-বড়গিন্নীকে আসতে বল। আমার কণ্ঠস্বরে বজ্রের আভাস পেয়ে দ্রুত ছুটে গেল নছিমন।

পেছনে শাড়ির খসখস শব্দ শুনে বুঝলাম বড়বৌ এসেছে। আমি না শোনার ভান করে চুপ করে রইলাম। পেছনে আর কোন শব্দ নেই। অথচ কে বলবে এরা এতোক্ষণ বাড়ি মাথায় করছিলো! আমি জানি, দরজার আড়ালে ছোট বৌ’ও লুকিয়ে আছে সীমাহীন কৌতূহল নিয়ে। বড় বৌয়ের সাথে কি কথা বলি আড়ি পেতে শুনবে সে। তারপর সুযোগ বুঝে আমাকে কপচাবে। বড়বৌ একটা মেনীমুখো শয়তান! নিজে না পেরে ছোটটাকে আমার পেছনে লেলিয়ে দিয়েছে। এনেছিলাম ওকে শায়েস্তা করার জন্য। এখন নিজেই ফেঁসে গেছি। আমার আট বছরের মেয়েটা পর্যন্ত ছোট বৌয়ের লেজ ধরা। সবাই মিলে আমার পেছনে কি ষড়যন্ত্র করে চলেছে কে জানে!

‘আমায় ডেকেছেন?’ পেছনে বড়বৌয়ের গলা পেয়ে ভাবনার ঘোর কাটলো।

‘এসেছো তো অনেকক্ষণ। সঙের মতো দাঁড়িয়ে আছো কেন? বোবায় ধরেছে? এতোক্ষণ তো দুই সতীন মিলে বাড়ি মাত করছিলে! এটা যে মুসলমানের বাড়ি সেটা ভুলে গেছো?’

আজমলা বেগমের চোখমুখ শুকিয়ে গেছে। হাতের আঙুল কাঁপছে তিরতির করে। দেখতে পেয়ে উল্লাসবোধ করছি ভেতর ভেতর। গলার স্বর আরেক পর্দা চড়িয়ে বললাম,

‘মেহেরাজকে বলে দিচ্ছি, কাল সকালে রিকশা আসবে। বাপের বাড়ি চলে যাবে তুমি। এরকম বেশরিয়তী, অবাধ্য স্ত্রীর মুখ দেখতে চাই না আমি।’

ছুটে এল বড় বৌ। একটা দলা পাকানো পুঁটলির মতো লুটিয়ে পড়লো পায়ের কাছে।

‘ভুল হয়ে গেছে। মাফ করে দেন আমারে। আর কোনদিন এমন হবে না।’

‘এটাই শেষ কথা আমার। দূর হয়ে যাও সামনে থেকে।’ আমি রাগে গজরাতে লাগলাম।

‘আল্লাহর দোহাই লাগে। শোনেন আপনি-----’কাঁদতে কাঁদতে আরও কীসব বলে যাচ্ছিল আজমলা খাতুন এমন সময় ঝড়ের বেগে ছোটবৌ ঢুকল ঘরে।

‘কী হয়েছে, বুবু? উঠেন, উঠে আসেন বলছি।’ তারপর নিজেই এসে টেনে তুললো ওকে।

‘বুবুরে কি বলছেন আপনি? এত চিল্লাপাল্লা করছেন কেন?’ লাল-নীল ফুলতোলা ছাপা শাড়ির আঁচলটা কোমরে গুঁজতে গুঁজতে ছোটবৌ সরোষে কথাগুলি ছুঁড়ে দিল আমার দিকে। মাটির পাতিল আগুনে পোড়ালে যেমন টকটকে লাল হয়ে ওঠে, তেমনি লাল হয়ে আছে এখন ছোট বৌয়ের ধবধবে ফর্সা দুগাল। তিরতির করে কাঁপছে সেগুলো। চোখে শিকারলিপ্সু হিংস্র বাঘিনীর উত্তুঙ্গু দৃষ্টি। সে দৃষ্টির সামনে দাঁড়িয়ে আমি কেমন মিইয়ে গেলাম। তোতলাতে তোতলাতে কোনমতে বললাম,

‘কি--কি-ছু বলি নাই। তুমি তোমার ঘরে যাও।’ বাঘের গলায় এখন মিউ মিউ ধ্বনি। এই ধানী মরিচকে কেন যে বিয়ে করলাম! নিজের গালে এখন নিজেরই চড় মারতে ইচ্ছা করছে। একেই বলে, খাল কেটে কুমির আনা।

‘নছিমন বু, উনারে হাত-মুখ ধোয়ার পানি দাও। শোনেন, আর কোন ঝামেলা না করে খানা খেয়ে ঘুমাতে যান। বুবু আজ আপনার ঘরে যাবে না।’

তিড়িং করে বেজন্মা রাগটা চাগিয়ে উঠলেও অনেক কষ্টে সেটাকে চেপে রাখলাম। কিছু না বলে কটমট করে তাকালাম শুধু। কোন ফায়দা হলো না। সে তারচেয়েও তিনগুণ বেশি বিষ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। এতো দেখি ঘরের শত্রু বিভীষণ!

কোথায় ভাবলাম, বড় বৌকে দিয়ে হাত-পা টেপাবো আজ। রাস্তা এতো খারাপ ছিল! শরীরের নাট-বল্টু যেন সব আলগা হয়ে গেছে। ব্যথাও করছে সমানে। এমন বজ্জাত মেয়েছেলে বাপের জন্মে দেখিনি! রূপ দেখে কেন যে মজেছিলাম! যেমন আগুনের মতন-রূপ, তেমন আগুন মেজাজ! কীভাবে যে একে সামলে রাখবো সেই চিন্তায় মেজাজটা আরও বেশি খচে গেল আমার।

গনগনে রাগ আর শরীরের ব্যথাটাকে টিপে মারতে গুপ্ত পানশালার দেরাজ খুললাম। আমি সাধারণতঃ বেশি করে পেঁয়াজ আর কাঁচা লংকা দিয়ে ডিম ভাজির সাথে তারিয়ে তারিয়ে বিয়ার খেতে খুবই পছন্দ করি। কিন্তু আজ সে সবের ধারে কাছে গেলাম না। সবুজ রঙের মাঝারি সাইজের বোতলটা এক ঝটকায় টেনে নিয়ে দক্ষ হাতে খুলে ফেললাম ছিপিটা। উপচে উঠা বুদবুদের অনেকখানিই পড়ে গেল দু’ঠোটের ফাঁক গলে। যা শালা! নিজেকেই গাল পাড়লাম নিজের নির্বুদ্ধিতাই। গলা দিয়ে নামতে থাকা উত্তপ্ত গরলের তেতো-মিষ্টি স্বাদ আমার রাগটাকে অনেকটাই কমিয়ে দিল।

অনেক দূর থেকে জলতরঙ্গের মতো একটা রিনিঝিনি হাসির শব্দ ভেসে আসছে। সাথে আরও দুতিনটা অস্পষ্ট কন্ঠ বাতাসে। আমার দুচোখে ঘুম যেন আঠার মতো লেগে আছে। চোখের পাতা সীসার মতো ভারী। অনেক চেষ্টা করেও খুলতে পারছি না পুরোটা। নিজের অজান্তেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বারবার। ভার হয়ে থাকা মাথায় একটা ভোঁতা যন্ত্রণা। হ্যাং ওভারের প্রভাব!

-চলে আয়, শরিফা। জান্নাতের বাপ দেখলে আরেকটা অশান্তি বাঁধাবে শেষে!

এটা তো বড়বৌয়ের গলা! কি দেখবো আমি! কি করছে ছোটবৌ! এক নিমিষে ঘুম কেটে গেলো। ঝট করে উঠে বসলাম খাটে। তারপর পায়ে স্যান্ডেল গলিয়ে নিঃশব্দে ঘরের দরজায় এসে দাঁড়ালাম। যা দেখলাম তাতে তো আমার বাহ্যজ্ঞানশূন্য অবস্থা!

কেউ একজন গাছে উঠে জামরুল পাড়ছে। ছোটবৌ আর জান্নাত উঠোনময় ছুটে ছুটে সেগুলো কুড়োচ্ছে। সাথে খিলখিল হাসি। শরিফার কোঁচড়ভর্তি জামরুল। খোলা মাথায় সে উঠানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ফলে, আঁচল সরে গিয়ে পিঠের অনেকখানি অংশ উমুক্ত এখন। ঝকঝকে রোদের আলোয় তার ধবধবে ফরসা পিঠ কাঁসার থালার মতো চকচক করছে।

-ভাইজান, ঐ উঁচা ডালটা ধরেন। অনেকগুলা পাকছে। তাড়াতাড়ি পাড়েন। ছোটবৌয়ের হাসির ঝংকার তোলা কিশোরী কণ্ঠ আমার গায়ে আগুন ধরিয়ে দিল।

ওই বদমাশটা আবার আসছে! এইজন্যই এতো ফুর্তি তোমার! দাঁড়াও, জন্মের মতো ফুর্তি গোছাচ্ছি!

একলাফে বেরিয়ে এসে চুলের মুঠি ধরলাম ওর। হিসহিসিয়ে বললাম,

এতোবড় সাহস তোর! বেগানা মরদের সামনে নটীর মতো উঠানে উঠানে নাচছিস! আজ তোর একদিন কি আমার একদিন!

‘আহ্‌! ছাড়েন আপনি। আমি ব্যথা পাই তো। ছাড়েন, ছাড়েন বলছি।’ আমার বজ্র আঁটুনির ভেতর ছটফট করছে ছোট বঊ। আর শরীর মোচড়াচ্ছে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য। আমি আরও শক্ত করে চেপে ধরলাম ওকে।

শক্তিতে পেরে না উঠে আমার হাতে কামড় বসিয়ে দিল ছোটবৌ। তীক্ষ্ম চিৎকার করে ছেড়ে দিলাম। তারপর পায়ের কাছে পড়ে থাকা চ্যালাকাঠটা সজোরে ছুঁড়ে মারলাম ওর দিকে। পায়ে প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে মা-গো বলে লুটিয়ে পড়লো শরিফা। বড়বৌ এতোক্ষণ স্থাণুর মতো দাঁড়িয়ে থেকে দেখছিল সব। ছোটবৌ পড়ে যেতেই ছুটে আসলো টেনে তোলার জন্য।

-খবরদার! আর এক পা’ও সামনে আসবা না। মেরে ঠ্যাং ভেঙে দেবো একেবারে। রামধমক খেয়ে কাঠের পুতুলের মতো দাঁড়িয়ে পড়লো বড়বৌ। আমি ক্ষিপ্রবেগে ছুটে এসে শরিফাকে টেনে তুললাম। তারপর টেনে হিঁচড়ে ঘরের দিকে নিয়ে যেতে লাগলাম রাগে গজরাতে গজরাতে।

‘ভাইজান, তুমি কেমন মানুষ! তোমার সামনে জানোয়ারটা আমার গায়ে হাত তুলছে আর তুমি কিছুই বলছো না!’ মাহফুজ রক্তচক্ষু নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু কাছে আসার সাহস পাচ্ছে না।

ছোটবৌয়ের চাচাতো ভাই মাহফুজ। মাঝে মধ্যেই এ বাড়িতে আসে সে। আর সে আসলেই শরিফা বেগমের আনন্দের আর সীমা থাকে না। কেন রে, বাবা! তুই বিবাহিতা ছেমড়ী! তুই আনন্দ করবি তোর স্বামীর সাথে। বেগানা মরদের সাথে তোর এতো ঢলাঢলি কীসের, এ্যাঁ! আমার কঠিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ছেমড়াটা আবার আমার বাড়িতে আসছে। রাগটা সামলাই কেমনে!

‘আপনি কি আমার হাত ছাড়বেন, নাকি ছাড়বেন না?’ আঘাত খাওয়া সাপিণীর মতো ফোঁস ফোঁস করছে ছোটবৌ।

‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে চিরজনমের মতো ছেড়ে দেবো, হারামজাদী।’ বলতে বলতে ঠাস ঠাস করে চড় কষালাম ওর দুগালে।

মুহূর্তের মধ্যেই যেন একটা প্রলয় ঘটে গেল। প্রচণ্ড শক্তিতে নিজেকে ছাড়িয়ে নিল ও। তারপর একদলা থুথু ছুঁড়ে মারলো আমার মুখের দিকে। তীব্র বিদ্বেষে চিবিয়ে চিবিয়ে বললো,

‘আপনি কি ছাড়বেন, আমিই আপনাকে ছেড়ে দিচ্ছি সারাজীবনের জন্য। আপনাকে আমি তালাক দিচ্ছি। এক তালাক-দুই তালাক-তিন তালাক।

যান। এখন থেকে আপনার সাথে আমার আর কোন সম্পর্ক নাই। আপনি আমার কেউ না। আর আমিও আপনের কেউ না। চলো ভাইজান, এই হাবিয়া দোজখ থেকে বের হয়ে যাই।’

আমার পুরো পৃথিবী ওলোটপালট হয়ে গেল! এই তালাকটা কি সিদ্ধ, না অসিদ্ধ কিছুই আমার বোধে এলো না। শুধু মনে হলো, কড়ে আঙুল সমান একটা পুঁচকে মেয়ে আমাকে হারিয়ে দিয়ে গেলো! চিত্রার্পিতের মতো দাঁড়িয়ে থেকে ছোটবৌয়ের অপসৃয়মান শরীরটা দেখতে লাগলাম আমি।

ক্রমশঃ ছোট হয়ে আসা শরীরটা একসময় হারিয়ে গেল দৃষ্টির সীমানা থেকে। মিশে গেল তেজীয়ান সূর্যের আলোয়।


-ছোটগল্প 

-তালাক 

লেখা- মাসুমা বকুল


সংসার জীবনের গল্প পড়ুন।