স্বামী স্ত্রীর খুব রোমান্টিক হাঁসির গল্প | হাস্যকর মজার গল্প

মজার ফেসবুক স্ট্যাটাস

মজার ফেসবুক স্ট্যাটাস

 জামাই আমার সারাদিন খাই খাই করে। তার জ্বালায় আমি অতিষ্ঠ। সারাদিন রান্নাঘরে থেকে তার জন্য একের পর এক রান্না করেই যাই। কিন্তু তার পেট ভরে না। খরুচটা এতো পেটুক যে তার জন্য আমার মান সম্মান সব শেষ। কোথাও গেলে যদি কেউ কিছু খেতে দেয় সে চেটেপুটে খেয়ে ফেলবে। এমনকি বিস্কুট দিলেও সব গুলো খেয়ে ফেলবে। ভদ্রতার কাতিরেও একটা প্লেইটে রাখবে না। একদিন আমার এক চাচার বাসায় গেলাম চাচাকে দেখতে। কিছুদিন আগেই চাচার অপারেশন হয়েছে। সাথে করে আমার পেটুক, খরুচটাকে নিয়ে গেছি। কারণ, আমার পাঁচ মাসের একটা বেবি আছে। বেবিটাকে ওও কোলে রাখবে তাই। আমার চাচী আমাদের অনেক রকম খাবারের আইটেম দেয়। সাথে বিস্কুটও ছিল। আমি একটা বিস্কুটও খাইনি। আমার পেটুক জামাই সব খাবার একাই সাফ করে ফেলে। লাস্টে আমি ফিসফিস করে বললাম,,,,,,

- এই যে শোন, দু একটা বিস্কুট প্লেইটে রেখে দিও। নাহলে অভদ্র দেখায়। আমার কথা শোনে পেটুক দাঁত খেলিয়ে হেসে জোরে বলে,,,,,,

- আরে কে কি মনে করবে? আমরা আমরাই তো। পেটে যদি আটে তাহলে প্লেইটে রেখে মনটা আকুমপাকুম করা কিসের ভদ্রতা? সিজানের কথা শোনে চাচী হা করে তাকিয়ে তাকে। সিজান চাচীর দিকে তাকিয়ে আবার বলে,,,,,,

- আন্টি আমি যদি সব গুলো বিস্কুট খেয়ে ফেলি তাহলে আপনি কি কিছু মনে করবেন??? চাচী বিস্মিত হয়ে একবার আমার মুখের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলেন,,,,

- না না। তুমি সব গুলো খাও। রাখতে হবে না। আমি কিছু মনে করবো না। লাগলে বলো আরো কয়েকটা এনে দেই। সিজান হেসে বলে,,,,

- দেন সমস্যা নাই। আমি খেতে পারি। খাওয়ার মধ্যে আমার কোনো সরম নাই। কথাটা বলে কি বেরসিক ভাবে হাসছে। আমি তার এমন আচরণে কাঁদবো না অজ্ঞান হয়ে যাবো বুঝতে পারছি না। চাচাকে দেখে বললাম,,,,,

- চাচী আমরা চলে যাই। অন্যদিন আবার আসবো। চাচী বললেন,,,,,

- মাত্রই তো আসলি। বস। দুপুরবেলা খেয়া যাবি। আমি বললাম,,,,,

- না। আজকে সময় হবে না। অন্যদিন এলে খেয়ে যাবো। আমার কথা শেষ হওয়ার আগে আমার পেটুক জামাই বলে,,,,,,

- বাসায় কি কাজ? না আন্টি আমরা ফ্রি আছি। আপনি রান্না করুণ আমরা খেয়েই যাবো। আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বলে,,,,

- আন্টি এতো করে বলছে যখন খেয়েই যাই কি বলো? না খেয়ে গেলে তো কেমন দেখায়। আল্লাহ আমি কোন দুনিয়ায় বসবাস করি? এই পেটুকের তো কোন মান সম্মান রাখলো না আমার। সেদিন চাচীর বাসা থেকে খেয়ে একেবারে সন্ধ্যায় বাসায় আসি। পেটুক সারা রাস্তায় বটবট করেছে। রাগে আমি ঝিম ধরে ছিলাম। আমার মাথার চুল কাড়াকাড়া হয়েছিল। যদি কোনো লাঠি পেতাম তার হাফ টাক মাথায় টাস করে বসিয়ে দিতাম। কিন্তু আশেপাশে কিছু পেলাম না। তাই কোনো রকম নিজের রাগ কন্ট্রোল করলাম।


তার দুদিন পর বাসায় মেহমান আসবে। ননদীকে দেখতে। তাই বাসায় দোমধারাকা রান্নার আয়োজন চলছে। এতো এতো রান্নার আয়োজন দেখে সেদিন আমার পেটুক জামাই আর অফিস গেলো না। অফিস টাইমে দেখি সে দিব্বি ড্রয়িংরুমে বসে আছে। আমি গিয়ে বললাম,,,,,,

- এখানে এমন হাবলার মতো বসে আছো কেন? অফিস যাবে না?? সে বেক্কলের মতো হাসি দিয়ে বলে,,,,

- আজ বাসায় এতো আয়োজন। অফিস গেলে মনটা কেমন কেমন করবে। তাই আর গেলাম না। ভালো করিনি বলো? আমি কিছুক্ষণ থম ধরে থেকে বললাম,,,,,

- হো ভালোই করসো। তুমি বাসায় না থাকলে আমার মাথাটা চিবিয়ে খাবে কে? কথা বলে আমি আবার রান্নাঘরে চলে গেলাম। বিকালের দিকে মেহমান আসলো। আমি সবাইকে কয়েকরকম মিষ্টি, ফল, পিঠা, শরবত দিলাম। আমার পেটুকটাও তাদের সাথে বসে আছে। কিছুক্ষণ পর আমি গিয়ে দেখলাম তারা সবাই নিজের মতো করেই বসে আছে। কেউ কিছু খাচ্ছে না। আমি বললাম,,,,

- কি হলো। আপনারা তো কিছুই খাচ্ছেন না। নিন মিষ্টি নিন। আমার সাথে তাল মিলিয়ে আমার পেটুক বলে,,,,

- আমিও কখন থেকে তাই বলছি। আগে খাওয়া পরে কথা। নিন নিন। খান। মেহমানরা নেওয়ার আগেই আমার পেটুক গপাগপ খাওয়া শুরু করে দেয়। সবাই লোভাতুর ভাবে তার দিকে তাকিয়ে আছে। সে কয়েক সেকেন্ডে নিজের সব গুলো মিষ্টি খেয়ে পেলে। তারপর আমার দিকে প্লেইটটা এগিয়ে দিয়ে বলে,,,

- তানজিনা, নাও আমাকে আরো কয়েকটা মিষ্টি দাওতো দেখি। মিষ্টি গুলো খুব মজার। হায় আল্লাহ! তাকে দেখে মনে হচ্ছে এই জন্মে আর খায়নি। আমি জোরপূর্বক ঠোঁটে হাসি এনে প্লেইটটা নিয়ে তাকে আরো চারটা মিষ্টি দিলাম। সেগুলোও খেলো। একটা বড় বোলএ তরমুজ কেটে দিলাম সবাইকে। কিন্তু সেগুলো আমার পেটুক জামাই একাই খেয়ে ফেলে। তার এমন রাক্ষসের মতো খাওয়া দেখে আমি নিজের কপাল চাপড়ালাম। আল্লাহ, এই কোন রাক্ষস আমার কপালে দিলে। একে নিয়ে কি করবো আমি? খাওয়া ছাড়া কিছুই বুঝলো না জীবনে।


আজ শুক্রবার। তার অফিস বন্ধ সকাল থেকে কয়েক আইটেমের খাবার খাওয়াইছি। এখনও খাই খাই করছে। তার জন্য এখন আমি আবার রান্না করছি। হঠাৎ রান্নাঘর থেকে বাবুর কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কিন্তু আমি চুলায় মাছ ভাজি বসিয়েছি। এখন এগুলো রেখে গেলে পুরে ছারকার হয়ে যাবে। তাই আমি সিজানকে ডাক দিয়ে বললাম,,,,,

- কিগো, তুমি কি বাসায় আছো?

- আছি।

- বাবু কাঁদছে শোনছো না?

- বাবুতো খাওয়ার জন্য কাঁদছে। বাপকা বেটা। আমার মতই হয়েছে পুরা।

- দেখো ফিটারে দুধ আছে। বাবুকে একটু খাওয়াও। আমার দুটো হাতেই বন্ধ। আমার কথার উত্তরে সে বলে,,,,

- আচ্ছা খাওয়াচ্ছি। কিন্তু এতক্ষণ হলো এখনও বাবুর কান্না থামছে না। বাধ্য হয়ে আমি চুলা বন্ধ করে রুমে গিয়ে যা দেখলাম। আল্লাহ এটাই মনে হয় এজীবনে দেখার বাকি ছিল। পেটুকের বাচ্চা পেটুক বাবুকে কোলে নিয়ে ফিটারটা নিজের মুখে দিয়ে বসে আছে। এই দৃশ্যটা আমার শরীরে সহ্য হলো না। আমি রাগে লাল হয়ে গিয়ে দাঁড়ালাম তার সামনে। আমার চোখ দিয়ে যেন আগুন বের হচ্ছে। আমার এমন রুপ দেখে সিজান ফিটারটা মুখ থেকে বের করে বলে,,,,,

- আসলে বাবু খাচ্ছিল না।

- বাবু খাচ্ছিল না মানে কি? তুমি কি বাবুকে দিসো খাওয়ার জন্য? নিজেই তো খাওয়া শুরু করেছো। আমি জিসানের কোল থেকে বাবুকে নিয়ে নেই। সাথে ওর হাত থেকে ফিটারটাও। জিসান উঠে দাঁড়িয়ে মুখটা অসহায় করে বলে,,,,,

- বাবু খাচ্ছে না বলে ভাবলাম দেখি কি কম হয়েছে। তাই,,,,,আমি পেটুকটাকে থামিয়ে দিয়ে দমকে বললাম,,,,

- চুপ করো। তোমার মতো টাকলা পেটুক, বুড়িওয়ালা পেটুক, আর কি যেন? এখন মনে পড়ছে না। মনে পড়লে বলবো আমার জীবনেও একটা দেখি নি। টাকলা পেটুক অসহায় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি আবার বললাম,,,,,

- তোমাকে সারাদিন কম খাওয়াই? এট লাস্ট তুমি,,,,??? আমি আর নিতে পারছি না। তুমি এক্ষণি বাসা থেকে বের হও। নাহলে আমি তোমার মাথা ফাটিয়ে দিবো। আমার কথা শোনে সে সুন্দর করে বলে,,,,,

- আচ্ছা তাহলে আমি বাইরে থেকে একটু ঘুরেই আসি। একটা দুধের প্যাকেট নিয়ে আসি। বাবুর দুধটা মজার ছিল। এখন থেকে নাহয় আমিও বায়োমিল্ক খাবো। তোমার জন্যও কি একটা নিয়ে আসবো? তার কথা শুনে আমার অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা। মাথাটা ভনভন করছে। ছাদটা মনে হয় উল্টে যাচ্ছে। আমি মনে মনে বল্লাম,, আল্লাহ কেউ আমারে এট্টু ধরো।


-পেটুক_বর  


রোমান্টিক মজার গল্প পড়ুন।