রোমান্টিক লাভ স্টোরি গল্প | রোমান্টিক গল্প

 রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প

রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প

কয়েক দিন যাবত আমার আর ইফতির প্রচন্ড ঝগড়া চলছে। একদম ব্রেকআপ হয়ে যাওয়ার অবস্থা। করেই ফেলবো ব্রেকআপ। রাখবো না আর এই হাঁদাটার সাথে কোনো সম্পর্ক। ফোনটা হাতে নিতেই দেখি ইফতির কল।


ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে ইফতি বলল, সত্যিই কি ব্রেকআপ? আর কথা হবে না আমাদের?


আমি ভারী গলায় বললাম, না হবে না। শুধু কথা না। আমাদের আর কখনও দেখাও হবে না৷ আজকেই শেষ কথা। আর কোনোদিনও আমাকে ফোন দিবা না।


ইফতি কাঁদো কাঁদো গলায় বলল, আরেকটা বার ভেবে দেখলে হতো না?


আমি প্রচন্ড রেগে গিয়ে বললাম, ভাবাভাবির দিন শেষ। তুমি তো বাসায় বিয়ের কথা বলতে পারবে না। ভয়ে তোমার হাঁটু কাঁপে। তাহলে এই সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কী?


ইফতি আমতা আমতা করে বলল, না মানে আমি.......


টুটটট........


দিলম ফোন কেটে৷ এই হাঁদা রামের ভাঙ্গা রেকর্ড শুনতে শুনতে আমার কান পঁচে গেছে। প্রত্যেক বার একই কথা, এইবার সত্যি সত্যিই বাসায় তোমার কথা বলবো। এসব বলে বলে আমাকে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে৷ আর আমিও ওর কথায় ভুলে গিয়ে আবার প্যাচআপ করে ফেলি। কিন্তু না৷ এবার আর তা হবে না। এবার সত্যিই ব্রেকআপ করে দিবো।


একঘন্টা পর........


ইফতি এতোগুলা কল দিছে!! মনে হয় বেশি বাড়াবাড়ি করে ফেলছি। ব্রেকআপ যখন করেই ফেলবো তখন না হয় আরেকটা বার ফোন করে বলি শেষ বারের মতো একটু দেখা করতে। তবে এরপর সত্যিই ব্রেকআপ। নো প্যাচআপ।


ইফতিকে ফোন করে বললাম, কালকে সারাটা দিন যেন আমাকে দেয়। কারণ, এরপর আর কখনও আমাদের দেখা হবে না।


সকাল সকাল রেডি হয়ে বের হলাম। ইফতির হাতে আমার প্রিয় রজনীগন্ধা ফুল৷ দেখেই মনটা তাজা হয়ে গেল। ফুলের ঘ্রান নিতেই কেমন মাতাল মাতাল লাগছিলো। এই এক ফুলের ঘ্রান যা পৃথিবীর সমস্ত ফুলের ঘ্রানকে হার মানায়। রজনীগন্ধা ফুলের ঘ্রানে অদ্ভুত রকমের একটা নেশা কাজ করে।


ইফতি নিচু স্বরে বলল, চলো ওদিকটায় বসি।


আমিও মৃদু স্বরে বললাম, আচ্ছা।


নদীর পারে গিয়ে বসলাম দুজন। এখানে আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল। পুরনো জায়গায় এসে পুরনো সব স্মৃতি গুলো মনে পড়ে যাচ্ছিলো।


এরপর আমরা গেলাম ফুচকা খেতে। এখানে আমরা অনেক বার ফুচকার খেয়েছি একসাথে। আজও খেলাম। খেতে খেতে আবারও আগের সব স্মৃতি গুলো মনে পড়ে যাচ্ছিলো।


এরপর আমরা হাঁটতে শুরু করলাম চেনা পথ ধরে। যে পথে বহুবার হাতে হাত রেখে হেঁটেছি আমরা।


ইফতি হঠাৎ আমার হাত ধরে বলল, প্লিজ এবারের মতো মাফ করে দাও। এবার সত্যি সত্যিই বাসায় বলবো। আর ভুল হবে না।


আমি কপাল কুঁচকে ইফতির দিকে তাকিয়ে রইলাম। মনে মনে বললাম, এই নিয়ে বহুবার এমন হয়েছে। প্রত্যেক বার শেষ দেখার নাম করে ব্রেকআপের বদলে প্যাচআপ করে বাসায় ফিরি। তারপর সে আগের মতোই আমাকে তার হাঁটু কাঁপা কাঁপির গল্প শুনায়।


তবে এবার আর তা হয় নি। সত্যি সত্যিই এবার ইফতি বাসায় আমাদের সম্পর্কের কথা বলে এবং আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।


আজ আমাদের দ্বিতীয় এনিভার্সেরি। কিন্তু সকাল থেকে আমার আর ইফতির মধ্যে তুমুল বেগে ঝগড়া চলছে। ঝগড়াঝাঁটির এক পর্যায় আমি রেগেমেগে বাপের বাড়ি চলে গেলাম। সিদ্ধান্ত নিলাম ইফতিকে ডিভোর্স দিবো। ইফতিও আর আমার সাথে থাকতে চায় না। ব্যাগপত্র নিয়ে একেবারে সব ছেড়ে ছুড়ে চলে এলাম৷


রাতে ইফতি ফোন করে বলল, শেষ বারের মতো কালকে একটু দেখা করবে? এরপর তো আর কখনও আমাদের দেখা হবে না।


আমিও ইমোশনাল হয়ে গেলাম। কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম, ঠিক আছে।


পরের দিন গেলাম ইফতির সাথে দেখা করতে। প্রতিবারের মতো এবারও আমরা আমাদের সেই পুরনো জায়গা গুলোতে ঘুরে বেড়ালাম।


ইফতি আমার হাতে হাত রেখে বলল, এবারের মতো মাফ করে দাও। আমি আর কখনও ডিম আনতে বললে নিম পাতা আনবো না৷ বিছানায় ভেজা টাওয়াল রাখবো না। আর প্রতিদিন বাসায় ফেরার সময় তোমার জন্য বেলীফুলের মালা নিয়ে আসবো। প্লিজ তুমি আমাকে ডিভোর্স দিও না।


আমি মুখ বেকিয়ে বললাম, হাঁদারাম কোথাকার৷ আশেপাশের লোকজন শুনতে পাচ্ছে তো!


পাশ থেকে একজন হাসতে হাসতে বলল, আরে মশাই আপনার বউ এসবের জন্য আপনাকে ডিভোর্স দিতে চায়! ভাই আপনার তো সোনায় বাঁধানো কপাল। আমার বউ তো রোজ আমাকে হুমকি দেয় সোনার গয়না না বানিয়ে দিলে ডিভোর্স দিয়ে দিবে। আপনি তো ভাই জিতসেন।


আমি রাগি স্বরে ইফতির দিকে তাকিয়ে বললাম, শেষ বারের মতো দেখা করে কী ডিসিশন নিলে? আমায় নিয়ে ফিরবে নাকি ডিভোর্স ফাইনাল?


ইফতি একটা হাসি দিয়ে বলল, শুনলে না লোকটা কী বলল!! আমি জিতেছি। আর জেতার পর কেউ ট্রফি ছাড়া ঘরে ফেরে?


-সম্পর্কের_পাঁচফোড়ন  


এমন আরও রোমান্টিক গল্প পড়ুন।