বাস্তব জীবন বড়ই কঠিন | বাস্তব শিক্ষনীয় গল্প

  •  বাস্তব জীবন নিয়ে কবিতা

বাস্তব জীবন নিয়ে কবিতা

ইচ্ছে করে হারিয়ে যাই আবার ছেলেবেলাতে

আবার গিয়ে মেতে উঠি ছোট্টবেলার খেলাতে।


ইচ্ছে করে আবার আমি গাঙ্গে গিয়ে নৌকাবাই

হারিয়ে যাওয়া পুতুলটারে আবার এনে বউ সাজাই।


সাত সকালে সবাই মিলে আবার গিয়ে ফুল তুলি

ফাঁদ পাতিয়া ধরি বনের ময়না টিয়া বুলবুলি।


ইচ্ছে করে আবার গিয়ে ঘুড়ির সুতায় ধার লাগাই

ইচ্ছে করে আবার গিয়ে বৃষ্টি ভিজে আম কুড়াই।


ইচ্ছে করে আবার গিয়ে সবাই মিলে স্কুল পালাই

আবার গিয়ে কঞ্চি দিয়ে লাঙ্গল জোয়ান মই বানাই।


ইচ্ছে করে গাড়ি বানাই তাল সুপারির ডাল দিয়ে

পুতুল খেলার ঘর বাঁধি সেই কলাপাতার চাল দিয়ে।


ইচ্ছে করে আবার গিয়ে শাপলা তুলি দল বেঁধে

সবাই মিলে নাচি পায়ে শাপলা ডাটার মল বেঁধে।


ইচ্ছে করে গাঙ্গে আবার বড়শি ফেলি জালটানি

ইচ্ছে করে মায়ের মধুর সেই বকা সেই গাল শুনি।


আজকে আমি হারিয়ে যাব সেই সে মধুর শৈশবে

আর কে যাবি আমার সাথে আয় রে তোরা আয় সবে।


-গল্প  -স্মৃতির_কান্না

  • বাস্তব জীবনের স্ট্যাটাস

বিয়ের পর প্রথমবার শ্বশুর বাড়ি যাবো।স্ত্রী বললো "তোমার শার্টগুলো বাজে।নতুন শার্ট কিনবো চলো "


নতুন বউ,কাজেই ও যা বলবে তাই আমার কাছে যুক্তিযুক্ত।বললাম " একদম ঠিক বলছো,শার্টগুলো মহা বাজে,এসব পড়ে শ্বশুর বাড়ি যাওয়া অসম্ভব "


গেলাম শার্ট কিনতে।খয়েরী রঙ্গের ছোট ছোট সাদা প্রিন্ট করা একটা শার্ট ভিষণ পছন্দ হলো।পাশ থেকে স্ত্রী বললো " এটার প্রিন্ট ভালো না "


আমার পছন্দের শার্টটা বাতিল!কেনা হলো ওর পছন্দের শার্ট।শার্টটা দেখে মন্ত্রমুগ্ধ!মনে হতে লাগলো মার্কেটের সবচেয়ে সুন্দর শার্টটা স্ত্রী পছন্দ করে দিয়েছে।


যেখানে ভালোবাসায় যেমন তেমন জিনিস ও মহা মূল্যবান হয়ে উঠে সেখানে এইটা ওর পছন্দ করে শার্ট!৯ বছর পেরুলো,শার্ট এখনো যত্ন করে রেখেছি।বুড়ো বয়সে নাতি-নাতনীদের দেখিয়ে বলবো " পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শার্ট দেখবে?এই দেখো,বিশ্বাস করো এই থেকে সুন্দর শার্ট পৃথিবীতে আর একটি নাই "।সখ! 


গল্প-স্মৃতি

লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয় 

  • বাস্তব জীবন

ছেলে কাজের জন্য বাইরে গেলে বউমা রান্না বন্ধ করে দেয়।ব্যাপার কি? ছেলে বাইরে গেলে বউমা রান্না করেনা কেনো? 


কাছে গিয়ে বললাম " মা রান্না বসালে না? "


বউমা বললো " আমি তো খেয়েছি মা।পাউরুটি আনা ছিলো "


" সে কি কথা! সকাল থেকে শুধু পাউরুটি খেয়ে আছো?দুপুর একটা বাজে "


" আমার পে'ট ভরা আছে মা।তুমি কিছু খাবে? জুস বানিয়ে দিবো? "


" একটু আগেই তো দিলে! "


" এক ঘন্টা হয়ে গেছে।ডাক্তার বলছে একটু পরপর খেতে "


" শুধু তো আমায় নিয়েই পড়ে আছো।তুমি খাচ্ছো না কেনো? মন খারাপ? "


" ইশশ,মন খারাপ কেনো হবে? "


মনের মধ্যে কেমন যেন খচখচ করতে লাগলো।লক্ষ্য করেছি ছেলে কাজের জন্য বাইরে গেলে বউমা ঠিক মতো রান্না করেনা।একটা রুটি খেয়েই দিন পার করে দেয়।অথচ ছেলে বাড়িতে থাকলে সারাদিন রান্না ঘরে ফোন দেখে দেখে এটা ওটা রান্না করে।


রাতে বউমা কে বললাম " ছেলে বাড়িতে থাকলে এতো এতো রান্না করো।ও চলে গেলে তুমি নিজেও খাওয়া বন্ধ করে দাও, কেনো মা? সারাদিন শুধু রুটি খেয়ে আছো।খাও না কেনো? "


বউমা আমতা আমতা করে বললো " নিজের জন্য রান্না করতে ইচ্ছে করে না মা।ওনাকে খাওয়াতে পছন্দ করি।আপনি সুস্থ থাকলে আপনার জন্য রাঁধতাম "


গল্প-পরিতৃপ্তি

লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয়

  • মেয়েদের জীবনের কিছু বাস্তব কথা

আমার বিয়ের পাঁচ বছর হতে চলল। কোনো বাচ্চা কাচ্চা এলো না। খুব শখ করেই বাবা দুই বোনকে একই পরিবারে দুই ভাইয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে ছিলেন।

আমার বিয়ের তিন বছর পর আমার দেবরের সঙ্গে ছোট বোনের বিয়ে হয়। শাশুড়িমা আমাকে প্রথম প্রথম ভালোবাসলেও বাচ্চাকাচ্চা না হ‌ওয়ায় এখন উনি সব সময় আমার উপরে রেগে থাকেন, সব জিনিসে ভুল ধরেন।

বাধ্য হয়েই স্বামীকে নিয়ে হাসপাতালে গেলাম টেস্ট করাতে। রিপোর্টে এলো আমি বন্ধ্যা। আমার কখনো বাচ্চা হবেনা। আমার স্বামীও এখন আর আমায় তেমন গুরুত্ব দেয় না।


 রিপোর্টের কথা জানার পর আমার শাশুড়িমা আমায় বললেন , আমার বড় ছেলেকে আবার বিয়ে দেবো, সংসারের তো একটা আলোর প্রয়োজন আছে। তুমি থাকতে পারো এই বাড়িতে সমস্যা নাই।


 আমি জানি আমার স্বামীও তাই চায়, তাই মেনে নিলাম। কারণ আমার আদরের ছোট বোন যে দেবরের বউ। আমি কিছু বললে যদি তার সংসার ভেঙ্গে যায়।

বিয়েটা হয়ে গেল। এখন আমার স্বামী ওর নতুন বউকে নিয়ে ব্যস্ত। আমি একটা ছোটো জব করতে লাগলাম নিজের জন্য।


দু'বছরের মাথায়, আমার বোনকেও শাশুড়িমা যা তা বলে কথায় কথায় অপমান করতে লাগলেন। আমার বোন আমার কাছে এসে কাদঁতো।

একদিন আমার শাশুড়িমা বোনকে বললেন, তোর বোনও বাচ্চা দিতে পারেনি আমার বড় ছেলেকে, তুইও তোর বোনের মতোই বন্ধ্যা নাকি।

আমার শাশুড়িমার এই কথা আমার গায়ে জ্বালা ধরানোর জন্য যথেষ্ঠ ছিল।

আমার দেবরও আমার বোনকে নিয়ে পরীক্ষা করাতে গেল। 


রিপোর্টে এলো,

আমার ছোটো দেবর কোনোদিন বাবা হতে পারবে না, হয়তো ভাগ্যের চাকা এভাবেই ঘুরে যায়,


আমার শাশুড়িমাকে ওইদিন বলতে শুনেছিলাম,

দেখো মা তুমি মেয়ে মানুষ, আমার ছেলে তো তোমায় ভালোবেসে বিয়ে করেছিল তাইনা.? তুমিও তাকে অনেক ভালোবাসো, জীবনে তো বাচ্চাই সব না, আমরা ক'দিনই বা বাঁচবো।

কষ্ট করে থেকে যাও আমার ছেলের ভালোবাসায়, সে তোমায় আগলে রাখতে চায়। তুমি ছেড়ে গেলে সে ভেঙে পড়বে।


আমার বোন আমার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হেসে আমার শাশুড়িমার হাত ছেড়ে দিয়ে বলল,


মা একদিন আমার বোনকে আপনি বলেছিলেন মেয়েদের জীবনে বাচ্চাই সব। মা না হলে তাদের জীবনের কোনো মুল্য নেই।

সেদিন আমার বোনটা খুব ভেঙে পড়েছিল, আমার বোনের ভালোবাসার মানুষটাকে আপনি অন্যের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।

তখন কোথায় ছিল আপনার এই ন্যায় কথা?


শাশুড়ি লজ্জায় চোখ নামিয়ে নেয়, সাথে থাকা আমার স্বামীও।


আমি ওইদিন আমার বোনকে অবাক হয়ে দেখেছিলাম। ও আমার হাত ধরেই ওবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এলো।


আজ আমার বোনের দু'টো ছেলে আর একটা মেয়ে আছে। ওর সুখের সংসারে।

আর আমার দুটো যমজ মেয়ে। আমি একজনকে বিয়ে করেছিলাম বাবার পছন্দে, তাঁর ব‌উ ডেলিভারির সময় মারা যায়।

আমি তার মেয়েদের নিজের মেয়ের মতোই ভালোবাসি, তারা জানেই না আমি তাদের মা নই।

আমিও জানায় নি।

হোক না তারা আমার‌ই।

জন্ম না দিলে কি মা হওয়া যায়না...!!!!!

মন ছুঁয়ে যাওয়া গল্প পড়ুন।