- বিয়ে নিয়ে ক্যাপশন
" যৌতুক ছাড়া ছেলের বিয়ে দিবো না।যে পরিবার যৌতুক দিবে তাদের মেয়ের সাথে বিয়ে দিবো "
বাবাকে নিরীহ ভঙ্গিতে বললাম " মেয়ের বাবার বাড়ি খরচ বহন করার সামর্থও নেই।এতো টাকা যৌতুক দিবে কিকরে? "
বাবা বীরদর্পে বললো " দিতে না পারলে অন্য মেয়ে দেখবো "
মনে মনে ভিষণ ব্যথিত হলাম।মেয়েটাকে একবার দেখেই যে অর্ধাঙ্গিনী করার তীব্র বাসনা মনের ভেতর পুষে রেখেছি।
দীর্ঘ এক সপ্তাহ ধরে বাবাকে কথার ছলে বোঝানোর চেষ্টা করলাম।বাবা পাথর হয়ে রইলেন।
বাবার একটাই কথা " যৌতুক না পেলে সমাজে সেই ছেলের দাম থাকে না।যে যত বেশি যৌতুক পায় সমাজে সে তত মূল্যবান হিসেবে বিবেচিত হয় "
সমাজের এই রীতিকে আমি তীব্র নিন্দা জানাই।প্রতি রাতে মেয়েটার মুখ চোখের সামনে ভেসে ওঠে।মেয়েটাকে নিজের অজান্তেই মন প্রাণ সব যেন বিলিয়ে দিয়েছি।
লুকিয়ে মেয়ের বাড়ি গেলাম।মেয়ের বাবাকে ঘটনা খুলে বললাম।মেয়ের বাবা নিরীহ মুখ করে বললো " সব বুঝলাম বাবা।কিন্তু এত টাকা আমি তো দিতে পারবো না "
" টাকাটা আমি আপনাকে দিয়ে যাবো, লুকিয়ে,কেউ জানবে না।বিয়ের দিন আপনি বাবার হাতে টাকাটা বুঝিয়ে দিয়েন।সবাই যেন ভাবে আপনিই টাকাটা দিয়েছেন "
কথাটা শুনে মেয়ের বাবার চোখ ছলছল করে উঠলো।চোখের সামনে একজন বয়স্ক লোকের কান্না দেখা ভিষণ অস্বস্তিকর।
ইতস্তত করে দরজার দিকে তাকাতেই সেই তরুণীর চোখে চোখ পড়লো।তার চোখেও জল।মনটা বেদনায় ভরে গেলো।মেয়েটাকে কাঁদলে এতো মায়াবী লাগে! এই মায়া ভরা মুখখানা ছেড়ে এখন যাই কি করে!
গল্প মায়াবতী
লেখক জয়ন্ত_কুমার_জয়
- বিয়ের স্ট্যাটাস
-বউ হবি আমার'
-আশ্চর্য কে আপনি! এছারা আমাকে এই সব কেনো বলতেছেন শুনি।
-আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই রুপন্তি। প্লিজজ না করিও না।
-বাহ্ আপনি দেখি আমার নামও জানেন।
-জ্বী অনেক কিছুই জানি। বলবো নাকি সব কিছু বলো।
-আপনি আমার সম্পর্কে জানেন?
-তেমন কিছু জানিনা। কিন্তু তোমার অতিত নিয়ে জানতেও চাইনা।
-শোনেন আমি একটি ডিভোর্সি মেয়ে, এছাড়াও আমার একটি মেয়ে সন্তান আছে।
'কথাটি শুনেই নাইম কেমন জানি নিস্তব্ধ হয়ে গেলো একটু'
-কি বিয়ে করার ইচ্ছে চল গেলো।
'একটু ভাবনা চিন্তার পরে নাইম বলে উঠে'
-আচ্ছা রুপন্তি তোমার ডিভোর্স কেনো হলো জানতে পারি একটু।
-আসলে ডিভোর্স টা আমি নিজেই দিয়েছি। কারন ও নেশা করে, রাতে মদ খেয়ে এসে মারধর করে এই সব সজ্য করতে করতে বিরক্ত হয়ে গিয়েছি। তাই আমি নিজে থেকেই ডিভোর্স টা দিয়েছি।
-ওহ! তোমার ডিভোর্সি স্বামী কি যোগাযোগ করেনা তোমার সঙ্গে আর।
-নাহ।
-আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই। সেটাও এই মুহূর্তে যদি তোমার কোন আপত্তি না থাকে।
-এতো কিছু জানার পরেও আমাকে কেনো বিয়ে করতে চান জানতে পারি।
-ওইইই যে ভালোবাসা।
-এই ভালোবাসা পরবর্তীকালে জানালা দিয়ে পালিয়ে যাবেনা তো।
-কখনোই যাবেনা।
-নেশা করেন কী আপনি।
-না আমি নেশা করিনা।
-আচ্ছা আপনি কি বিবাহিত নাকি..?
-না আমি বিবাহিত না।
-তবুও একটি বাচ্ছার মাকে বিয়ে করতে এতো আগ্রহি বুঝলাম না।
-ভালোবাসা! এই ভালোবাসা যার প্রতি একবার হয় তাকে কখনোই ভোলা যায়না।
-বুঝলাম ভালোবাসেন। কিন্তু আপনার পরিবারের লোক জন বা পারা প্রতিবেশি মানবে কি।
-এই পৃথিবীতে আমি একাই।
-কেনো।
-ছোট্ট থেকে রাস্তায় বড় হয়েছি। আমি জানিনা আমার বাবা কে মা কে..! এখন একটাই ইচ্ছে তোমাকে বিয়ে করে সুখের নীর বাধা। (চিন্তা করিও না, থাকার মতো সুন্দর একটি বাড়িও আছে আমার )
-বাড়ি কোই পাইছেন।
-কাজ করে করে একটি বাড়ি তৈরি করছি।
-আচ্ছা! ভালোবাসবেন এই ভাবে সারা জীবনতো।
-এই শরীরে এক বিন্ধু রক্ত থাকা পযর্ন্ত সর্বোচ্চ টা দিয়ে ভালোবেসে যাবো কথা দিলাম।
-ঠিক আছে।
-তুমি বিয়েতে রাজি তাহলে রুপন্তি।
-হ্যাঁ! কিন্তু আমার মেয়েটাকে কখনো পর ভাব্বেননা তাকে বাবার অনুপস্থিতি বুঝতে দিবেনা।
-আজ থেকে তোমার এবং মেয়ের দায়িত্ব আমি নিলাম। যতোদিন বাছবো দায়িত্ব পালন করবো।
-ঠিক আছে আমার বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসিও।
-ঠিক আছে সন্ধ্যায় আসবো।
-হুম।
'এর পরে নাইম বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেলে রুপন্তির পরিবারের সবাই রাজি হয়। এবং দুজনের বিয়ে হয়' আজ রুপন্তি ও নাইমের বিয়ের ১০ বছর পূর্ণ হলো।
ডিভোর্স_বউ
------সমাপ্ত