ভালোবাসার গল্প
আমার সামনেই হাতের মোবাইল টা আছার মারলো আমার স্ত্রী নিশি।
মেঝেতে পরার সাথে সাথে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো টুকরো হয়ে গেলো নিশিকে সদ্য কিনে দেওয়া মোবাইলটা।
মোবাইলটা ভেঙ্গে ফেলে হনহন করে ব্যালকনির দিকে চলে গেলো নিশি।।
।
আর আমি বোকার মতো চেয়ে আর ওর দিকে।
।
মোবাইল আছার দেওয়ার কারন......?
।
কারণ হলো আমি ওর মোবাইল হাতে নিয়েছি কেন...?
।
আমি এবং নিশি বিয়ে করেছি ৩ বছর।
আমাদের বিয়েটা প্রেম করেও নয় আবার ভালবেসেও নয়।
আগে থেকে দুজন দুজনকে পছন্দ কটতাম। মানে আমি নিশির ছোট ভাই মুহিবকে পড়াইতাম। সেই থেকেই আমাদের পরিচয়।
সেটা ওর পরিবার জানার পর আর না করে নি। কেননা যখন ওর বাবা মা আমাদের পছন্দ করার বিষয়টা জানতে পারে।
তখন আমি ভাল একটা জব করতাম।
তখন.....?
হুমমম আমি এখন বেকার। আমার বস হঠাৎ করে বাংলাদেশ থেকে সব কিছু গুটিয়ে নিয়ে uk চলে গেলে বেকার হয়ে পড়ি আমি।
uk এর মতো দেশে ভালো পার্টনার শিপে ব্যাবসা করতে পারলে,,
কে চায় এদেশে থাকতে বলুন।
যখন আমি চাকরি করতাম তখন নিশি অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী ছিলো।
এখন নিশি চাকরি আমি বেকার।
।
ঠিক ধরেছেন.....
নিশি অনার্স কমপ্লিট করে ওর এক বন্ধুর মাধ্যমে একটা জব পায়।
আর বলতে গেলে সেদিন থেকেই এসব শুরু আমার জীবনে।
।
কি হয়েছে এখানে.....? (আমার মা)
।
কিছু না। (এতোক্ষনে সব ক্লিন করে নিয়েছি)
।
কিছু একটা ভাঙ্গার শব্দ পেলাম।
।
কই না তো
!
নিশি কই
....?
।
ব্যালকনিতে
।
ও বলেই
চলে গেলো আমার মা।
।
মা চলে যাওয়ার পর আমি নিশির দিকে ব্যালকনিতে গেলাম।
।
নিশির কাধে হাত দিয়ে বললাম
মোবাইলটা ভাঙ্গার কি দরকার ছিলো......?
।
নিশি চুপ
।
আমিও কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার বললাম,,,,
অফিসে যাবে না.....?
।
এখন বিরক্ত করো নাতো.....
শক্ত গলায় বললো নিশি
।
আমিও আর কথা না বাড়িয়ে রুমে চলে আসলাম।
।
কিছুক্ষণ পর নাস্তা নিয়ে আসলো আমার মা।
টেবিলে রেখে তারপর চলে গেলো।
।
আমরা একটা ভাড়া বাড়িতে থাকি।
আমাদের বিয়ের সময় মুলত মা আসে গ্রাম থেকে।
তারপর নিশি আর মাকে যেতে দেয় নি।
ওর নাকি একা থাকতে ভালো লাগতো না তাই।
।
আমি যখন চাকরি করতাম তখন বাসায় একটা কাজের মেয়ে ছিলো।
তখন মা কোন কাজ করতো না।
আমার চাকরি চলে যাওয়ার পর
মেয়টাকে বেশি দিন রাখতে পারি নি।
চলে যেতে হয় ওকে।
তারপর থেকে মা ই সব করে।
।
নিশিকে ডেকে নিয়ে নাস্তা সেটে বসে নাস্তা সেরে নিলাম যে যার মতো।
।
তারপর নিশি অফিস চলে গেলো।
।
আমিও রেডি হয়ে বেড়িয়ে পরলাম ইন্টারভিউ দিতে।
।
হুমমমম,,,,
আজ আমার একটা কম্পানিতে ইন্টারভিউ আছে।
সেটা কখন হবে, কোথায় হবে সেটা ওদের পেজ থেকে জানার জন্যই নিশির মোবাইলটা হাতে নিয়েছিলাম।
আমার মোবাইলে ডাটা ছিলো না তাই।
।
রাস্তা দিয়ে হাটছি আর হাতে ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছি।
।
প্রচন্ড রোদ,,,
তবে রোদে হাটার অভ্যাস আমার আছে।
জীবনে কম কষ্ট করিনি।
।
হাটতে হাটতে গন্তব্যে পৌছে গেলাম।
।
ওয়েটং রুমে বসে আছি,,,
।
কিছুক্ষণ বসে থাকার পর আমার ডাক পরলো।
।
ইন্টারভিউ দিলাম।
তবে চাকরিটা হবে বলে মনে হয় না।
নাহ ইন্টারভিউ খারাপ হয় নি।
চাকরিটা হবে না কারণ আমার যে মামা খালু নেই।
সুপারিশ ছাড়া এখন চাকরি সোনার হরিণের চেয়েও দামি।
।
আবারো হেটে হেটে বাসায় ফিরছি।
হঠাৎ সকালের কথাটা মনে পড়ে গেলো।
মানে নিশির মোবাইল ভাঙ্গার কথা।
তাই রাস্তার ধারে একটা মোবাইল মার্কেটে ঢুকলাম। নিশির জন্য একটা মোবাইল দেখার জন্য।
হয়তো এটা ভাবছেন,, যে রিক্সা ভাড়া না দিয়ে যে হেটে ইন্টারভিউ দিতে যায়। সে কিনবে মোবাইল...?
আসলে টাকা আমার কাছে কিছু টাকা আছে। বাকিটা না হয় কারো কাছে ধার নেব।
কেননা মোবাইলটা তো আমার জন্যই ভেঙ্গেছে।
।
দুই একটা দোকান ঘুরে মার্কেটের কোনায় একটা বড় দোকান দেখে সেদিকে হাটতে শুরু করলাম।
।
হঠাৎ কেউ আমাকে পেছন থেকে ধাকা দিয়ে এগিয়ে গেলো।
।
ধাকাটা সামাল দিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখি একটা কাপেল।
হাত ধরে হাটছে।
।
ছেলেটাকে চিনি না,,,
কিন্তু মেয়েটাকে চেনা চেনা লাগছে।
।
তাই একটু দ্রুত হাটাতে শুরু করলাম।
কিন্ত ওদের নাগাল পেলাম না।
খটকা লাগলো মনে। মেয়েটা নিশি নয় তো.....?
।
কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি করে মোবাইল না নিয়েই বেড়িয়ে পরলাম মার্কেট থেকে।
।
হতাশ হয়ে বাসায় ফিরলাম।
রুমে এসে খাটের উপর শুয়ে মাথায় হাত দিয়ে আছি।
এমন সময় কারো হাতের স্পশ অবুভব করলাম।
চোখ খুলে দেখি মা।
।
কিরে চাকরিটা হয় নি....?
।
""""মা"" অদ্ভুদ এক প্রানি। সন্তানের মুখ দেখে তার ভিরতের সব কিছু বুঝতে পারে।
মায়েদের একটা আলাদা ক্ষমতা আছে।
যা অন্য কারোর নেই।
তাইতো আমাদের প্রিয় ধর্ম ইসলাম ধর্মে বলেছে সন্তানদের বেহেস্ত মায়ের পায়ের নিচে।
।
আমি বললাম,,,, নাহ হয় নি
।
খুব ক্লান্ত লাগছে.....?
।
হুমমম।
।
দাড়া,,,, আমি পানি নিয়ে আসতেছি।
বলেই চলে গেলো মা।
।
বিকেলে বসে বসে চাকরির পেপার দেখছি।
এমন সময় নিশি রুমে প্রবেশ করলো।
হাতে একটা ব্যাগ নিয়ে।
দেখে বুঝতে পারলাম নতুন মোবাইল কিনেছে।
।
মনে মনে ভাবতে লাগলাম,,
তাহলে কি মার্কেটে দেখা সেই মেয়েটা নিশি....?
।
গল্প: ছেরা পাতা
আদিল খান
পর্ব:০১
ছেরা_পাতা
পর্ব_২
আদিল_খান
।
।
নিশির হাতে ব্যাগটা দেখে ভাবতে লাগলাম।
তাহলে সেই মেয়েটা নিশি..ছিলো...?
।
নিশির হাতে ব্যাগ দেখে খুব সাধারণ ভাবেই মনের মাঝে কিছু প্রশ্ন উদয় হলো।
সংশয় তৈরি হলো
সংশয় দুর করতে নিশিকে বললাম,,,
তোমার হাতে ওটা কিসের ব্যাগ....?
।
দেখে বুঝনা....?
মোবাইল কিনেছি
।
খুব ইচ্ছে থাকা সত্তেও মনের মঝে উদয় হওয়া বাকি প্রশ্ন গুলো আর করতে পারলাম না।
চুপ হয়ে গেলাম,,, একটা উত্তরেই
।
আমাকে বাকা চোখে দেখে ব্যাগটা টেবিলে রেখে ওয়াশ রুমে চলে গেলো নিশি।
।
আমি এই ফাকে ব্যাগটার কাছে গেলাম।
।
ব্যাগটা হাতে নিলাম,,,,
হাতে নিয়ে বুঝতে পারলাম মোবাইলটা খুব না হলেও দামি....
১০ + তো হবেই।
।
এই সময় এতো টাকা দিয়ে ফোন কেনা নিশির পক্ষে সম্ভব না।
কেননা ওর বেতন ই তো ১৮ হাজার টাকা।
।
তার উপর আজ ২৪ তারিখ।
মানে মাসেস শেষের দিকে।
এখন এই সময় নিশির হাতে এতো টাকা থাকা সম্ভব না।
।
ব্যাগটা রেখে আবার পেপারটা হাতে নিলাম।
।
নিশি ওয়াশরুম থেকে টাওয়াল গায়ে পেচিয়ে গোসল শেষ করে বেরিয়ে এলো।
।
মেয়ে মানুষ ফুলের মতো,,,,
ফুলের উপর পানি ছিটালে ফুল যেমন তার সব সৌন্দর্য উজার করে দেয়।
মেয়েরাও ঠিক তেমনি,,,,
পানির স্পর্শে মেয়েদের আসল সৌন্দর্য ফুটে উঠে।
ভেজা চুলে নিশিকে খুব সুন্দর লাগছে।
।
নিশির টাওয়ালে পেচানো শরীর আমাকে যেন একটা নেশায় ফেলে দিচ্ছে।
।
রাত প্রায় ৯ টা
।
আমি ডিনার সেরে একটু বাইরে বের হলাম।
উদেশ্য চায়ের দোকান
।
তবে চায়ের দোকানে যেতে হলে প্রায় ৪-৫ মিনিট হাটতে হয়।
।
গলির মধ্য দিয়ে হাটছি,,, ডান ও বাম দুই দিক থেকেই পড়াশোনা করা বাচ্চা দের শব্দ শুনতে পাচ্ছি।
দুই দিকের বাসা গুলো থেকে ছোট ছোট বাচ্চাদের নামতা পড়ার ধ্বনি স্পষ্ট ভাবে কানে বাজতেছে আমার।
।
৪ এক্কে ৪
৪দুকুনে ৮
তিন ৪ এ ১২
।
কোন কোন বাসা থেকে মহিলাদের কঠোর গলা ও কানে আসতেছে,,,
ভালো করে পড়,,, না হলে মারবো।
।
বাচ্চাদের গলার আওয়াজ শুনে,,,, হুর্তের মধ্য হাড়িয়ে গেলাম নিশি এবং আমার প্রথম বিবাহ বার্ষিকীর রাতে।
।
সেদিন হালকা আয়জনের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের বিবাহ বার্ষিকী পালন করি।
।
সব আয়োজন শেষে যখন দুজনে রুমে এসে শুয়ে পড়ি,,,
তখন নিশি আমার বুকে মুখ রেখে বলেছিলো,,,,
।
একটা কথা বলবো....?
।
হুমম কি.....?
।
তুমি প্রথমে ছেলে চাও নাকি মেয়ে.....?
।
নিশির প্রশ্নে একটু অবাক হয়ে বলেছিলাম,,,,
এখনি এসব ভাবছো কেন.....?
সামনে না তোমার পরিক্ষা.....?
।
পরিক্ষা তো কি হয়েছে.....?
আর ভাবতে তো দোষ নাই।
তুমি কি জানো.....?
মেয়েরা যদি কাউকে ভালবাসে তাহলে তাকে নিয়ে ৫০ বছর পরে কি করবে সেটাও ভেবে রাখে।
আর আমি তো দুই বছর পরের কথা ভাবছি।
জানো আমার খুব ভালো লাগে ছোট বাচ্চা পড়াতে।
তুমি যখন মুহিবকে পড়াতে আসতে আমি তখন লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতাম তোমায়।
।
সেদিন নিশি কথা শুনে হা হা করে হেসে দিয়েছিলাম।
।
হাসার জন্য কত গুলো কিল ঘুশি আমার বুকে পরেছিলো তার হিসাব নেই।
।
যাক গে সে সব কথা,,,
।
চায়ের দোকানে চলে আসছি,,,
এখন চা খাব।
।
চাচা এক কাপ চা দেন,,, সাথে একটা বেনসন।
।
এই নিন,,, (চায়ের দোকানদার)
।
আমি কাপটা হাত বাড়িয়ে নিয়ে
পাশে রেখে সিগারেট টা নিলাম।
।
তারপর চা টা শেষ করে,,,,
দোকানদারকে টাকা দিয়ে।
সিগারেট টা ধরিয়ে নিলাম।
।
ইচ্ছে মতো টানের উপর টান দিয়ে সিগারেট শেষ করে বাসায় এসে দেখি,,,,
নিশি শুয়ে শুয়ে সদ্য কেনা নতুন ফোন টিপছে,,, আর মুসকি মুসকি হাসতেছে।
।
আমিও নিশির পাশে শুয়ে পড়লাম।
।
শোয়া মাত্রই নিশি বললো....
কই গেছিলা.....?
।
দোকানে...
।
ওওওওও
।
হুমমমম,,,,,
একটা কথা বলবো নিশি....?
।
কি
।
ফোন কেনার টাকা কই পাইছো.....?
।
কেন....?
।
এই প্রশ্নটা করার অধিকার আমার আছে নিশি।
।
সেটা তো জানি,,,,,,
আমি অধিকারের কথা নয়,,,প্রশ্নটা করার কারণ জানতে চাচ্ছি।
।
জানাটা প্রয়জন আমার।
।
কেন প্রয়জন শুনি,,,,তুমি ফোন কিনে দিতা....?
।
তুমি বলবা কি নাহ.....?( ধমক দিয়ে)
।
ছিঃ তুমি সিগারেট খেয়ে আসছো......?
।
হুমমমম তো
।
আমি তো.......( কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে গেলো নিশি)
।
তারপর বিছানা থেকে উঠে,,,,,,,বালিস আর একটা চাদর নিয়ে ফ্লোরে বিছানা করে শুয়ে পড়লো।
।
এসব দেখে বললাম,,,,
ফ্লোরে শুইলা কেন......?
।
তো কি করবো....? সারা রাত সিগারেট এর গন্ধ শুকবো...?
।
কি করবা মানে....?
।
আমার সিগারেট এর গন্ধ সহ্য হয় না। তাই তোমার সাথে ঘুমানো সম্ভব না।
আর বিরক্ত করো না,,, আমি খুব ক্লান্ত।
।
।
নিশির এসব কথা শুনে অবাক হয়ে গেলাম।
অবাক কেন হচ্ছি শুনবেন......?
।
একদিন নিশি আমাকে বলেছিলো,,,
।
তুমি সিগারেট খাও......?
।
আমি বলেছিলাম,,,, নাহ কেন...?
।
তার পর নিশি বলেছিলো,,,,না খেলে আজ থেকে খাবা।
।
অবাক হয়ে সেদিন বলেছিলাম কেন......?
।
কারণ আমি চাই না কেউ বলুক তুমি আমার কথা উঠা বসা করো...?
আর
।
আর.....?
।
সিগারেট খোর ছেলে দের প্রতি আমার একটু দুর্বলতাও আছে।
হা হা
।
সেদিনের নিশির সেই হাসির ধ্বনি আজ আবার কানে এসে ধাক্কা খেলো আমার।
ভাবছি,,,,
মানুষ কতো সুন্দর করে নিজেকে বদলাতে পারে।
।
আমি খাটে আর নিশি ফ্লোরে শুয়ে ফোন টিপছে।
।
কেউ যদি আপনার থেকে দুরে সরে যেতে চায়,,,,,
তাহলে আপনার করা ছোট থেকে ছোট ভুল গুলোও তার কাছে,, পাহাড় সমান মনে হবে।
আর সেগুলোকে ইসু করেই সে আসতে আসতে আপনার থেকে সরে পরবে।
যেমনটা নিশি আজ করলো।
।
যত দিন যাচ্ছে,,,,, নিশি ও আমার দুরত্ব বাড়ছে।
ইদানীং নিশির ছোট ছোট বিষয় নিয়ে মিস বিহেভিয়ার গুলো বেড়েই চলছে।
।
একদিন দুপুরে লান্স শেষ করে বসে আছি
।
এমন সময় মোবাইলের রিংটোনটা বেজে উটলো।
অপরিচিত নাম্বার,,,,
।
পিক করে সালাম দিলাম
।
আপনি আদিল....?
।
জ্বি,,,, আপনি কে...?
।
আপনি কিছুদিন আগে আমাদের কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন....?
।
জ্বি স্যার
।
সামনের ৩ তারিখ অফিসে দেখা করবেন।
বলেই কলটা কেটে দিলো।
।
ওনার কথা শুনে মনে হলো,,,, হয়তো চাকরিটা হলে হতেও পারে।
।
নিশিকে এ বিষয়ে কিছু বলল না বলে ঠিক করলাম।
এমন কি মায়ের কাছেও বলবো না।
।
রাতে আমি এবং নিশি শুয়ে আছি,,,,,
হঠাৎ ওর মোবাইলে কল আসে।
।
নিশি মোবাইলটা নিয়ে তারাতারি করে ভাইব্রেশন মুডে নিলো।
।
হয়তো আমি জেনে যাবো এই ভয়ে।
।
ভাইব্রেশন মুডে নিয়ে বিছানা থেকে নেমে ব্যালকনিতে গিয়ে কথা বলতে শুরু করলো নিশি।
।
এক ফোটা জল আমার চোখের থেকে বেরিয়ে গাল বেয়ে আসতে করে এসে টপ করে বালিশের উপর পরলো।
।
কি হচ্ছে কি বুঝতে পারছি না,,,,
নিশিকে কি এই বিষয়ে প্রশ্ন করবো....?
।
যদি করি,,,,, তাহলে ওর উত্তর গুলো নিতে পারবো কি....?
।
এরকম পরিস্থিতিতে যে বুকের ভিতর কি পেইন হয়,,, সেটা শুধু সেই বুঝে,,,
যার হয়।
।
কেউ পাশে এসে শুয়ে পড়লো আমার।
।
বুঝতে পারলাম নিশি এসেছে।
।
আমিও কোলবালিশ টা টেনে নিয়ে পাশ ফিরে চোখ বন্ধ করলাম।
।
।
।
ছেরা পাতা
আদিল খান
পর্ব:৩+৪
।
।
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি নিশি খাটের উপর নাই।
হঠাৎ করে নিশিকে না দেখে একটু অবাক হলাম।
তারপর
ভাবলাম,,, হয়তো ব্যালকনিতে আছে।
কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি নিশি সেখানেও নাই।
।
কোথায় যেতে পারে নিশি সেটাও এই সকাল বেলায়.....?
।
মায়ের রুমে......?
।
তারা তারি করে মায়ের রুমের সামনে গিয়ে দরজায় নক করলাম।
।
প্রথমে কোন সারা পেলাম না।
তাই বারবার নক করতে লাগলাম। কারণ মা হয়তো নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে গেছে তাই দরজার শব্দ শুনছে না।
।
অনেকক্ষণ নক করার পর আম্মা দরজা খুলে বাইরে এসে বলল
।
কি হয়েছে....? দরজায় এতো শব্দ করছিস কেন....?
।
মা তুমি নিশি তোমার কাছে এসেছে.....?
।
নাহ কেন...?
নিশি তোর রুমে নেই.....?
(অবাক হয়ে)
।
না,,,,, ঘুম থেকে উঠে দেখে ও বিছানায় নেই,,,,
ভাবলাম হয়তো ব্যালকনিতে আছে,,,
কিন্তু ওখানেও নেই।।
।
কিহ....?
।
হুমমমম
।
তাহলে কোথায় গেলো.....?
।
জানি না মা
।
নিশিকে কল করেছিস....?
।
না
।
তাহলে কল কর
।
আচ্ছা,,,,
বলে রুমে চলে আসলাম মোবাইল নিতে।
।
মা ও আমার পিছনে পিছনে রুমে চলে আসলো।
।
রুমে এসে মোবাইলটা বের করে,,,,নিশিকে কল দিলাম,,,
।
দুই বার রিং হলো কিন্তু কলটা ধরলো না।
।
আবার ট্রাই করলাম,,,
কিছুক্ষন রিং হওয়ার পর কলটা পিক করলো নিশি
পিক করে বললো,,,
।
কলটা পিক করছি না,,, তার মানেটা হলো আমি ব্যাস্ত,, এতোটুকু বুঝ না.....?
।
আ আসলে আমি তোমা......টু টু
।
কথাটা শেষ না করতেই কলটা কেটে গেলো।
।
কি বললো নিশি (মা)
।
কিছুনা এখন ব্যাস্ত আছে।
।
ওহহহহ,,,, এতো সকালে কি এমন কাজ....?
।
জানি না,,,,তুমি চিন্তা করো না
যাও তুমি ঘরে গিয়ে রেস্ট নাও।
।
আমার কথাটা শুনে মা একটু নরম শুরে আমার কাধে হাত রেখে বললো,,,,, একটা কথা বলবো.....?
।
কি বলো
।
তোর কি নিশির সাথে কিছু হয়েছে....?
।
কই না তো,,,,,,
আসলে আজ না বলে চলে গেছে তো তাই (আসলে এতোদিন ধরে নিশির সাথে আমার যা হয়েছে তা মাকে বুঝতে দেই নি। কারণ শুনলে হয়তো কষ্ট হবে তাই)
।
ওওও আচ্চা,,,,
চা খাবি...?
।
না এখন আর চা খাবো না।
।
আচ্চা,,, তুই রেস্ট নে তহলে।
বলেই মা চলে গেলো।
।
রুমে বসে বসে ভাবছি,,,,,
নিশির কি এমন হলো যে হঠাৎ রং বদলাতে শুরু করলো...?
।
কেননা মানুষ বদলায় মুলত দুইটা কারণে
।
১ > সভাবে
২> টাকার অভাবে।
।
নিশির সাথে হয়তো সেভাবে প্রেম করতে পারিনি।
ভালো করে বুজিনি ওকে বিয়ের আগে।
।
কিন্তু বিয়েটা হয়েছে তিন বছর হলো।
আর এই তিন বছরের মাঝে
নিশি আমার এবং আমার মায়ের অনেকটা খেয়াল রেখেছে,,
মায়ের অষুৎ খাওয়া থেকে শুরু করে
সময় মতো ঘুমানো সব কিছু সময় মতই করতো। নিশি মায়ের কাছে খুব প্রিয় হয়ে উঠেছে।
।
মা তো এখন কথায় কথায় বলে দেন যে,,,, নিশির মতো বউ পাওয়া ভাগ্য নয় সৌভাগ্যের ব্যাপার।
।
যদি সভাবে না হয় তাহলে কি নিশির মাঝে এই পরিবর্তনটা টাকার অবাবে....?
।
কেননা নিশি বদলানো শুরু করছে যখন আমার চাকরিটা চলে গেছে।
কিন্তু
টাকার অভাবেই যদি হয় তাহলে নিশি এতোদিন কেন কিছু বললো না।
হঠাৎ করেই কেন এমন শুরু করলো......?
।
নাকি আগে থেকে ও আমার থেকে স্পেস নিতে শুরু করছে যা আমি এখন টের পাচ্ছি.......?
।
কোনটা....?
ঠিক কি কারনে নিশি এসব শুরু করলো।
।
কেন আমাদের সুখের সংসারে এভাবে আগুন দিচ্ছে নিশি.....?
।
দেখতে দেখতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলো।
নিশি ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরলো।
।
নিশির কাছে অনেক প্রশ্ন করার ছিলো কিন্তু ওকে দেখে আর কিছু বললাম না।
।
নিশি রুমে ঢুকে ব্যাগটা রেখে ওয়াশ রুমে গেলো।
।
আমি বসে বসে পেপার দেখছি।
।
নিশি ওয়াশ রুমে থেকে এসে চুল বাধতে বাধতে বললো
।
লান্স করছো....?
।
হুমমমম,
।
তোমার ইন্টারভিউ কেমন হয়েছে বলো নি তো.....?
।
তুমি কখনো জানতে চেয়েছো......?
।
ওওও,,,, জানতে চাইনি তাই বলবা না....?
।
আমি চুপ
।
একটা কথা বলার ছিলো,,, বলবো....?
।
হুমমম কি....?
।
আমি ৭ দিনের ছুটি পেয়েছি,,, ভাবতেছি একটু বাসায় যাব,,
বাবা, মা, মুহিব ওদের কত দিন দেখি না।
ওদের সাথে একটু সময় কাটাবো।
কি বল তুমি....?
।
ওওও,,, আচ্চা,,, আমি আর কি বলবো...?
তোমার ইচ্ছে হলে যাও,,,ঘুরে আসো।
।
তুমি একা যাবা নিশি.......?
কথাটা বলতে বলতে রুমে প্রবেশ করলো মা
।
হুমমমম,,,,, কেন....?
।
আদিল কি করলো,,, ওকেও নিয়ে যাও,,,
কারণ ও নিজেও তো কিছুদিন জব না থাকায় বাসায় বসে বসে সময় কাটাচ্ছে।
।
আসলে মা,,, আদিল কে সাথে নিলে আপনাকেও নিতে হয়,,কেননা আপনি তো একা একা বাসায় থাকতে পারবেন না।
আর ও তো চাকরির জন্য ট্রাই করতেছে।,,
তাই ভাবছি,,,
এবার একটু একা যাবো।
।
তাহলে তোমার ও যাওয়ার প্রয়জন নেই।
।
কেন....?
।
আহা,,,, যাক না মা,,,,
নিশি যদি একা যেতে চায় তো যাবে। (আমি)
।
তারপর মা আর কিছু বললো না,,,,
শুধু আমার দিকে একবার আর নিশির দিকে একবার তাকাতে লাগলো।
।
সন্ধার সময় বাজার করে এসে মায়ের কাছে জানতে পারলাম নিশি চলে গেছে।
।
আমিও সে বিষয় নিয়ে আর কিছু বললাম না।
।
রুমে এসে হাত মাথার পিছনে রেখে চোখ দুটো বন্ধ করলাম।
।
মহুর্তেই চোখে সামনে ভাসতে লাগলো সেই সব দিন গুলোর কথা।
যখন নিশি এবং আমার মাঝে ভালবাসা ভরপর ছিলো।
।
তারিখ ৩-৯ - ১৮
।
অফিসে গিয়ে জানতে পারলাম
বস তিন দিনের জন্য uk চলে গেছে।
তাই অফিস তিন দিনের জন্য বন্ধ থাকবে।
।
খুশির খবরটা সাথে সাথে নিশিকে বললাম।
।
এবং নিশির প্লান মতো চলে গেলাম কক্সবাজার ঘুরতে।
।
সারাদিন ঘুরা ঘুরি শেষে হোটেলে ডিনার সেরে আমি মোবাইলে সারা দিনে নিশির তোলা পিক গুলো দেখছি।
আর নিশি আয়নার সামনে বসে গুম গুন করে গান গাইছে।
।
নিশির পরনে ছিলো কালো একটা নাইটি।
।
নিশিকে দেখে নিজের মধে একটা অদ্ভুত অনুভুতি হতে লাগলো।
।
তাই মোবাইলটা রেখে নিশির কাছে গিয়ে জরিয়ে ধরে ওর গালে নিজের গাল ঘসতে লাগলাম।
।
হাতে থাকা চিরুনি রেখে আয়নার দিকে তাকিয়ে চোখ গরম করে বললো,,,
এসব কি.....?
।
সোহাগ
।
ছাড়ো
।
কেন....?
।
আরে লাগছে তো
।
কি....?
।
কি বুঝ না....?
আমার থেকে নিজেকে মুক্ত করে
।
নাহ
।
তোমার মুখের ওসব খুব লাগে আমার গালে
.
আমার মুখের এসব.....?
গালে হাত দিয়ে
।
হুমমম ঐ দাড়ি গুলো
।
ওওও তাই নাকি
।
সয়তান
।
আচ্চা আসো বিষে বিষে বিষক্ষয় করে দেই।
।
না না আমার লাগবে না
।
হা হা
।
যা ভাগ,,, সয়তান,,,,
।
কিরে খাবি না.....?
মায়ের ডাকে বাস্তবে ফিরলাম।
।
হুমমমম,,,,
দাও
।
তুই টেবিলে বস,,,, আমি নিয়ে আসি।
।
ওকে
বলে বিছানা থেকে উঠে ওয়াশ রুমে গেলাম
।
আজ ৩ তারিখ
।
সকালে রেডি হচ্ছি সেই বসের সাথে দেখা করার জন্য।
।
এমন সময় নিশি এসে বললো,,,,
কোথাও যাচ্ছো মনে হয়....?
।
হুমমম
।
কোথায়...?
।
ইন্টারভিউ দিতে
।
ওওওওও
।
রেডি হয়ে বাসা থেকে বের হলাম।
।
হেটে হেটে চলে আসলাম সেই অফিসে।
।
কিছুক্ষন বসে থাকার পর ভিতর থেকে আমাকে ডাকা হলো।
।
আসবো স্যার....?
।
জ্বি আসুন
বসুন
।
ধন্যবাদ স্যার,,,
।
দেখি আপনার ফাইল গুলো।
।
এই নিন স্যার
ফাইল গুলো এগিয়ে দিয়ে।
।
স্যার ফাইলো গুলো দেখে বললো
।
আপনার তো সব বিষয়ে দেখছি ধারনা আছে।
।
জ্বি স্যার।
।
আপনাকে অভিনন্দন,,,, আমরা আমাদের কোম্পানির একজন স্টাফ হিসেবে আপনাকে সিলেক্ট করেছি।
আপনি চাইলে কাল থেকে কাজে যোগ দিতে পারেন।
।
স্যারের মুখে কথাটা শুনে হাসবো না কাঁদবো ঠিক বুঝতে পারছিলাম না।
।
অফিস থেকে বেরিয়ে একটা রিক্সা ধরে নিলাম বাসায় যাওয়া জন্য।
।
বাসার সামনে আসতেই দেখলাম বাসার সামনে লোকের ভির।
।
হঠাৎ বাসার সামনে ঠিক কি কারনে লেকের ভিড় বুঝতে পারলাম না।
।
তারাতারি করে রিক্সাওয়ালাকে ভাড়া দিয়ে লোক সরিয়ে ভিতরে ঢুকে দেখি
সাদা কাফনে মোড়ানো একটা লাশ।
পর্ব_৪
।
।
আমি দাড়িয়ে আছি,,,,
আর আমার সামনে সাদা কাফনে মোড়ানো একটা লাশ।
।
লাশটা কার হতে পারে.....?
কিছু বুঝতে পারছি না।
।
লাশটার পাশে আমাদের বাড়ি ওয়ালা অংকেল ও ওনার স্ত্রী বসে আছে।
।
তারাতারি করে রুমে গেলাম।
মা এবং নিশিকে খুজতে।
।
রুমে গিয়ে দেখি নিশি যেন কার সাথে ফোনে কথা বলছে।
।
আমি নিশি বলে ডাক দিলে আমার দিকে ফিরে তাকায় নিশি।
।
তারপর আমি বললাম। নিশি মা কোথায় আর ঐ
বাইরে লাশটা কার....?
।
নিশি খুব সাধারণ ভাবেই উত্তরের বললো
।
কার আবার,,, তোমার মায়ের।
।
নিশির কথা প্রথমে বিশ্বাস করতে পারলাম না। তাই বললাম
হো হোয়াট.....?
।
হুমমমমম
।
খুব ইচ্ছে করছিলো নিশিকে আরো কিছু বলি,,,
কেন,কিভাবে হলো জানতে চাই।
কিন্তু পারলাম না,,,,,,,,
আমার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতে শুরু করলো।
হাতে, পায়ে শক্তি কমে আসতে শুরু করলো।
কোন শব্দই বের হচ্ছিলো না আমার মুখ দিয়ে।
।
দেয়ালে হাত দিয়ে নিজেকে কন্ট্রোল করলাম।
।
তারপর রুম থেকে আসতে আসতে বেরিয়ে আমার মায়ের কাছে এলাম।
।
মা লম্বা হয়ে শুশে আছে। ঠিক যেভাবে প্রতিদিন শুয়ে থাকে।
কে জানি তাকে সাদা কাপড় পরিয়ে দিয়েছে।
আমি কাছে আসতেই বাড়ি ওয়ালা আংকেল সহ দুই তিন জন আমাকে ধরতে আসলে আমি না করে দিলাম।
।
মায়ের মাথার কাছে বসে পড়লাম।
।
আংকেল মায়ের মুখের উপর থেকে কাপড় সরিয়ে দিলেন।
।
মা চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে।
মন হচ্ছে যেন ঘুমাচ্ছে আমার মা।
হঠাৎ বুঝতে পারলাম আমার দম কেমন জানি বন্ধ হয়ে আসছে।
শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে আমার।
কান্নায় ফেটে পরলাম আমি।
পাগলের মতো মায়ের মাথা থেকে পা পর্যন্ত দেখতে লাগলাম।
।
আমাকে ধরে তোলা হলো।
।
কিন্তু আমি আবার
বসে পড়লাম পাশের পায়ের কাছে।
।
মায়ের পা ধরে যে কতক্ষণ কেঁদেছি জানা নেই।
।
হঠাৎ হুশে ফিরে দেখি আমি একটা চলন্ত গাড়িতে।
।
গড়িটা দেখে বুজলাম এটা একটা লাশ বহন কারি গাড়ি।
।
পাশেই আমাকে ধরে বসে আছে
মুকুট।
মুকুট সম্পর্কে আমার ছোট ভাই
এখানেই মানে ঢাকাতে পরিচয় হওয়া।
।
মুকুটের সাথে পরিচয় খুব বেশি দিনের না।
১ বছরের মতো হবে।
কিন্তু দেখা হলেই বলতো
ভাইয়া একটু ছুটি নিয়ে চলুন না
আপনাদের এলাকাটা ঘুরে আসি।
বিশ্বাস করুন আমার খুব ইচ্ছে গ্রাম দেখবো। গ্রাম দেখতে আমার খুব ভালো লাগে।
আসলে শহরের ছেলে তো।
প্রায় সময় ই মুকুট বলতো
নিয়ে চলুন না ভাইয়া একদিন।
।
মুকুটকে সেই সময় নিয়ে যেতে না পারলেও আজ নিয়ে যাচ্ছি আমার গ্রামে।
।
আর সেটাও কিনা.....?
।
কথাটা ভাবতেই দুই চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়তে শুরু করলো।
।
আমি বা হাত দিয়ে চোখ মুছেও শেষ হয় না পানি।
জানি না আমার চোখে এতো পানি কেন।
।
হয়তো কপালে বেশি দুংখ তাই।
।
আমার সামনের সিটেই বসা ছিলো নিশি।
।
মুখে শোকের কোন ছায়া নেই।
যা আছে সব অভিনয়।
।
নিশির থেকেও মুকুটকে বেশি শোকাহত মনে হচ্ছে।
।
ঘড়িতে দেখি
রাত প্রায় ১১ টা।
।
গাড়ি গুলো ছুটে চলছে নিজের গন্তব্যের দিকে।
।
একটার পর একটা গাড়িকে ছারিয়ে যাচ্ছে আমাদেরকে
গাড়িটা।
।
মায়ের ইচ্ছা মতো মাকে দাফন করতেই মাকে গ্রামে নিয়ে যাচ্ছি।
নিশি জানতো মায়েই এই ইচ্ছে টার কথা।
।
হয়তো নিশিই বলেছে সবাইকে। আমি তো সেই সময় হুশে ছিলাম না।
তাই তারা গাড়ি ভাড়া করে দিয়েছে।
।
আমরা আমাদের
গ্রামে পৌছাতে পৌছাতে রাত প্রায় শেষ।
।
আমাদের বাড়ির সামনে গাড়ি পৌছাতেই গ্রামের সবাই গাড়ির সামনে ভির জমাতে শুরু করলো।
।
মনিকা চাচি (আমার ছোট চাচার স্ত্রী)
চিৎকার দিয়ে আমাকে এসে জরিয়ে ধরলো।
।
আমি কাঁদি না,,,,,
শুধু চোখের জল মুছি।
চারদিকে তাকিয়ে দেখি ছোট মামা, বড় মামা,বড় আংকেল,চোট আংকেল,চাচাতো, মামাতো ভাই বোনেরা সবাই এসেছে।
।
সবার চোখেই পানি।
সবার প্রিয় পাত্র ছিলো আমার মা।
।
বাবার অনুপস্থিতিতে মা ই সবাইকে আগলে রাখতো।
বাবা যখন চলে যান,,,
তখন আমি ছিলাম দশম শ্রেণির ছাত্র।
মাকে দেখেছিলাম কিভাবে সংসার আগলে রাখতেন।
।
সবাই কাদঁছে।
কিন্তু আমি সবার মতো কাদতে পারছি না।
।
কারণ আমি যদি কান্নায় ভেঙ্গে পরি তাহলে
সোহেল,সজিব,মামুন, এরা সবাই ভেঙ্গে পড়বে।
।
বাড়ির বড় ছেলেদের সব সময় সব কিছু মানিয়ে নিতে হয়।
সেটা আপনজন মারা গেলেও।
।
পূর্ব আকাশে সূর্য আসতে আসতে তার আগমনী বার্তা দিচ্ছে।
।
লাল হয়ে উদয় হচ্ছে সূর্য,,,,
।
মামা-চাচারা ঠিক করলো সকাল ১০ টায় দাফন করা হবে মাকে।
।
সেটাই হলো,,,,,,,
।
১০ টায় মাকে দাপন করলাম।
।
দেখতে দেখতে চলে গেলো প্রায় ৫ দিন।
।
এর মধ্যে জানতে পারলাম মুকুট নাকি আমার মামাতো বোন দিয়াকে পছন্দ করেছে।
বিয়ে করতে চায়।
।
কথাটা জানতে পারি বড় মামার কাছে।
।
উনিই সকালে মুকুটের সম্পর্কে জানতে চায় আমার কাছে।
।
কেন জানতে চাইলে এসব বলে আমায়।
আর আমার মতামত জানতে চায়।
।
আমিও না বলি নি।
।
কারণ মুকুট ছেলেটা খারাপ না,,,
শহরের হলেও যতেষ্ট ভদ্র।
আর লেখাপড়ায় ও নাকি ভালো।
।
রাত প্রায় ১০ টা,,,
আমি ডিনার সেরে পুকুর পারে গেলাম।
।
মায়ের কবর টা দেখে আসবো সাথে প্রকৃতির সাথেও একটু কথা বলে আসবো।
।
কিন্তু গিয়ে দেখি কে বা কারা যেন কথা বলছে।
।
আমি একটু মনোযোগ দিয়ে শুনে বুঝতে পারলাম সেখানে নিশি আছে।
।
কিন্তু কাছে গিয়ে যা দেখলাম তাতে আমার গল্পে নিশি আমাকেই টুইস্ট দিয়ে দিলো।
।
।
।
ছেরা_পাতা
আদিল_খান
পর্ব_৫ (শেষ_পর্ব)
।
।
।
পুকুর পারে গিয়ে কারো কথা বলার আওয়াজ শুনে একটু কাছে গিয়ে
দেখি নিশি মুকুটের কলার ধরে কি যেন বলছে।
।
মুকুট নিশির হাত থেকে কলার ছাড়িয়ে নিয়ে বললো।
আমাকে ফাসানোর ভয় দেখিয়ে লাভ নাই।
যতটা আমি দোষী তুমিও ঠিক ততটাই দোষী।
।
তারপর নিশি মুকুটকে একটা থাপ্পর মেরে বললো,,
আর আমাকে ঠকানোর দোষ টা কার,,,, আমার....?
।
কিহ....?
আমি তোমাকে ঠকিয়েছি....?
।
তা নয়তো কি....?
এতো দিন আমার সাথে ওসব করে এখন দিয়াকে দেখে আমাকে ছেড়ে দিচ্ছো।
চরিত্রহীন
।
আমি চরিত্রহীন হলে তুমি কি....?
তুমি যে নিজের বরকে ঠকিয়ে আমার সাথে হোটেলে,নিজের রুমে মজা করেছো সেটা....?
।
হয়েছে,,, চুপ করো,, কেউ শুনলে সমস্যা হবে।
কিন্তু....?
।
কিন্তু কি.....?
।
তুমি দিয়াকে বিয়ে করবে না,,
তুমি শুধু আর শুধু আমার। আমাকে বিয়ে করো,,, অনেক ভালবাসবো তোমায়।
অনেক কিছু করেছি তোমায় পাওয়ার জন্য।
বলেই নিশি মুকুটকে জরিয়ে ধরলো।
।
মুকুট নিশির থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললো,,,,
তোমায় বিয়ে করবো আমি.....?
হাহা
এতো স্বপ্ন দেখা বাদ দাও।
তুমি আদিলের সাথেই ঠিক আছ।
।
প্লিজ মুকুট,,,, আমাকে বিয়ে করো। আমি তোমাকে ছাড়া বাচবো না। বিশ্বাস করো।
।
আরে চুপ,,,
তোকে বিশ্বাস করবো আমি...?
আমি কি আদিলের মতো বোকা নাকি...?
যে মেয়ে নিজের শারীরিক সুখের জন্য নিজের শাশুড়িকে ঘুমের অষুৎ ওভার ডোস দিয়ে মেরে ফেলতে পারে তাকে বিশ্বাস করবো আমি.....?
।
আমার মাকে নিশিই মেরেছে কথাটা শুনে বড় ধরনের একটা ধাক্কা পেলাম।
কিন্তু নিজেকে কন্ট্রোল করে আবার ওদের কথায় মনোযোগ দিলাম।
।
নিশি বললো
আমি কি ওসব শুধু নিজের জন্য করেছি.....?
।
তো কার জন্য করছো....?
।
তোমার আমার দুজনের জন্যই করেছি,,,,
কারণ ঐ বুড়িটা কিছুটা বুঝতে পেরে গেছিলো যে তুমি আদিলের অনুপস্থিতিতে আমার রুমে আসো।
।
দেখ,,,, যা হয়েছে,,, সেটা বাদ দাও,,,
এখন তুমি যদি আমার আর দিয়ার মাঝে আসার চেষ্টা করো তাহলে ভালো হবে না।
তাই বলছি,,,,
তুমি আদিলের সাথেই থাকো,,,
।
পারবো না
।
কেন পারবা না,,,, আদিল তোমার বর।
।
হুমমম আদিল আমার বর,,, কিন্তু তুমি আমার ভালবাসা।
।
ধুর,,,,,
দেখ তুমি যদি ভেবে থাকো এসব বলে তুমি আমাকে এই বিয়েটা থেকে আটকাতে পারবে।
তাহলে ভুল ভাবছো তুমি।
আমি তোমাকে কোন দিন বিয়ে করতে পারবো না।
।
নিশি আর মুকুটের কথাগুলো শুনে ঠিক রিয়েক্ট করবো বুঝতে পারছি না।
।
মাথায় যেন কিছু ঢুকছে না,,,,
।
নিশিই আমার মাকে মেরেছে.....?
।
এমনটা করতে পারলো নিশি......?
যে মাহিলা নিশিকে নিজের মেয়ের মতো দেখতো তাকেই নিশি......?
।
নিজের শরীরিক চাহিদা মেটানোর জন্যই তাহলে এসব হয়েছে.....?
।
দোষটা আসলে কার......?
আমার....?
যে কিনা নিজের জীবন সঙ্গিনী বেচে নিতে ভুল করেছি।
।
নাকী দোষটা নিশির,,,,
যে আমার,,, আমার মায়ের ভালবাসাটা বোঝে নি
।
নাকী মুকুটের
যে আমার বিশ্বাসের মুল্য দেয় নি।
।
এসব দাড়িয়ে ভাবার মাঝে আমার উপস্থিত বুঝতে পেরে
কাঁপা গলায় নিশি বললো
।
কে কে ওখানে.....?
।
ওরা আমাকে দেখার আগেই আমি আবার রুমে চলে আসলাম।
।
এসে ঘুমানোর ভান করে শুয়ে পড়লাম।
।
একটু পর নিশি আসলো রুমে।
।
সকালে মামার ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো আমার।
।
আমাকে টেনে তুলে মামা বললো
কিরে সকাল সকাল আমাদের বাসায় পুলিশ কেন......?
।
মামার মুখে পুলিশের কথা শুনে ঘুম উরে গেলো।
বললাম
চলো.. তো দেখি...
।
মামাকে নিয়ে বাইরে বের হয়ে আসলাম।
।
একজন ASI সহ দুইজন কন্সটেবল এসেছে।
উঠানে বসে আছে।
।
আমাকে দেখেই বললো
আপনি আদিল...?
।
জ্বী
।
কাল রাতে আমাদের কল করেছিলো কে.....?
(এতোক্ষনে নিশি,মুকুট সহ সবাই এসে গেছে উঠনে)
।
আমি ( বলে সবার সামনে চলে আসলো দিয়া)
।
দিয়ার কাছে গিয়ে আমি বললাম
কেন.....?
।
দুজন মানুষ রুপি জানোয়ার কে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য।
।
দিয়ার মুখে কথাটা শুনে সবাই চমকে গেলো।
কি!!!!!!!! কি বলছিস এসব....?
।
জ্বী আমি ঠিক ই বলছি ভাইয়া,,,,
তুই মানুষ নাকি রোবট.হ্যা....?
একটা মেয়ে তোর মাকে ঘুমের অষুৎ খাইয়ে মেরে ফেললো।
তুই তাকে চিনিস জানিস,,, কিন্তু কিছু বলছিস না।
কেন ভাইয়া কেন.....?
ঔ নিশি তোকে কি কিছু করেছে নাকি.....?
।
আমি তোকে,,,,
কথাটা বলেই দিয়া দৌরে নিশির কাছে গিয়ে নিশিকে চুল ধরে একটা টান দিয়ে মাটিতে ফেলে দিলো।
।
সাথে সাথে ছোট চাচি,মামি,সবাই দিয়াকে ধরে নিশিকে ছাড়িয়ে দিলো।
।
দিয়া একটা ঝটকা মেরে সবাইকে ফেলে দিয়ে মুকুটের কলার ধরে বললো।
।
কুত্তার বাচ্চা আমাকে বিয়ে করবি তুই....?
তোর বিয়ের শখ মিটাবো আজ।
ওই রিয়া লাঠি নিয়ে আয়
আজ শুয়ারের বাচ্চাদের মেরেই ফেলবো।
।
দিয়ার এরকম করা দেখে ছোট চাচা দিয়ার থেকে মুকুটকে ছারিয়ে নিয়ে।
দিয়াকে রুমে দিয়ে আসলো।
।
তারপর সাধারণ ভাবেই আমাকে বলা হলো টিক কি হয়েছে,,,,,
আমিও সব বলে দিলাম।
।
আমার সবকিছু নরমালি বলা দেখে সবাই সবার মুখের দিকে তাকাচ্ছে। আর বলছে আদিল কথা গুলো এতোটা নরমালি কি করে বলছে....?
সবার মুখে অবাক হওয়া ছাপ সুস্পষ্ট।
।
আপনি যা বলছেন তার কোন প্রমান আছে....?
(পুলিশ)
।
ওদের প্রশ্ন করলেই প্রমান পেয়ে যাবেন।
।
তারপর নিশি আমার দিকে একবার তাকিয়ে সব পুলিশের কাছে সব বলে দেয় নিশি।
।
পুলিশ ওদের নিয়ে চলে গেলো।
।
মামা আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
।
হয়তো এটা ভাবছে,,,,
আমি এতোসব এতো নরমালি বললাম কিভাবে....?
।
মামার মনে এমব প্রশ্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক,,,
কিন্তু মামা কি জানে,,,, যে মানুষ আঘাত পেতে পেতে একদিন এমন হয়ে যায় যে,,,,
সে কাঁদতে ভুলে যায়.....?
নিশির থেকে তো জীবনে কম আঘাত পাই নি।
তাই হয়তো পাথর হয়ে গেছি।
।
উঠান থেকে রুমে এসে শুয়ে পরলাম।
।
আপনারা হয়তো ভাবছেন আমি কেন এতো কিছুর পরেও চুপ ছিলাম।
কেন আমি পুলিশকে ডাকি নি....??
।
ভাবছেন তো...?
।
চলুন বলছি,,,
তবে দিয়া ব্যাপারটা কিভাবে জানতে পারলো আমি ঠিক জানি না
হয়তো দিয়াও আমার মতো নিশি এবং মুকুটের অথবা আমার এবং নিশির মাঝে কথা হওয়ার সময় সব শুনেছে
।
।
কাল রাতে আমি নিশি রুমে আসার পর নিশি চুপচাপ ঘুমিয়ে পরে নি।
নিশির সাথে বেশ কিছুক্ষন কথা হয় আমার।
।
আমি যখন ঘুমের ভান করে শুয়ে ছিলাম।
তখন নিশি রুমে এসে বলেছিলো।
।
আমি জানি তুমি ঘুমাও নি
আর এটাও জানি তুমিই সেই ব্যাক্তি যে পুকুর পারে আমার আর মুকুটের কথা গুলো শুনেছো।
।
শোয়া থেকে উঠে বসলাম,,,,
তারপর নিশিকে একটা চর মারতে গিয়েও পারলাম না,,,,
তারপর চিৎকার করে বললাম,,,,
কি দোষ ছিলো আমার মায়ের.......?
কেন মারলে আমার মাকে....?
।
নিশি খুব সাধারণ ভাবেই বললো,,,,
অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম আমি।
একজন বেইমানের প্রেমে।
।
হাহা,,,, দুনিয়াটা বড় অদ্ভদ তাই না নিশি......?
একজন বেইমান হয়ে আবার আর একজন কে বলছে বেইমান।
।
হয়তো সেটাই,,,,,
।
কেন ঠকালে আমায় নিশি,,,,
।
আমি যদি বলি এই প্রশ্নটা করার অধিকার তোমার নেই।
।
মানে....?
।
একবার মনে করে দেখো তো,,, তুমি যখন জব করতা,,,
তখন ঠিক কতটা সময় থাকতো তোমার হাতে আমাকে দেওয়ার জন্য....?
।
ঠিক বুঝলাম না,,,,,
।
ওকে আমি বুঝিয়ে বলছি,,,,
তুমি সকালে ঘুম থেকে উঠে অফিসে চলে যাইতা,,,
আর ফিরে আসতা সেই রাত ৮-৯ টার সময়।
এসেই ডিনার করে ঘুমিয়ে পরতা।
তো এখন আমায় বলো,,, এখানে ভালো বাসা টা কোথায়.....?
শুধু কি I love u, I miss u, এই শব্দ গুলোর মাঝেই ভালবাসা সিমাবদ্ধ....?
নাকি একটা যুবতী মেয়ের নেশা বলেও কিছু থাকে....?
দিন শেষে তার ও কিছু চাহিদা থাকে....?
।
নিশির কথাগুলো শুনে অবাক হয়ে গেলাম।
।
নিশি আবার বললো,,,, একটা মেয়ে তখনি অন্য কারো আমের গাছের নিচে আম কুড়াতে যায়,,,
যখন তার আমের গাছ না থাকে।
আর তুমি তো আমার কাছে থেকেও ছিলে না।
।
কি বলবো কিছু বুঝতে পারছি না,,,,,
নিশির কথা গুলো ভুল নাকি ঠিক জানা নেই আমার।
।
এসব ভাবার মাঝে নিশি হঠাৎ আমার দুই পা ধরে কাঁদতে শুরু করলো।
আর বললো,,,,, আমায় কি মাফ করা যায় না.....?
আমি বুঝতে পেরে গেছি,,আমার বড় ভুল হয়েছে।
আমায় ক্ষমা করো প্লিজ,,,
আমি বাচতে চাই।
।
আমি কিছু বলার আগে নিশি
আমার পা ছেড়ে চোখের জল মুছতে মুছতে বললো,,,,
তুমি আমায় ডিভোর্স দিয়ে দিয়ো,,,
কিন্তু পুলিশে কাছে দিও না।
।
তুমি তো জানো অন্ধকার আমার একদম ভালো লাগে না।
আমি বাচতে চাই আদিল।
আমি বাঁচতে চাই।
।
২ মাস কেটে গেলো দেখতে দেখতে।
।
আমি এখনো গ্রামেই আছি,,,
কারণ পরিবারের কেউ আর রাজি হয়নি যে আমি আবার শহরে যাই।
।
আমারো ইচ্ছে ছিলো না খুব একটা।
।
রুমে বসে বসে হুমায়ুন স্যারে একটা উপন্যাস পড়ছি,,,,
এমন সময় মামা আসলো রুমে।
।
এসে বললো।
।
কি করছিস....?
।
এই তো মামা বই পড়ছি,,,,,
বসো
।
এই নে,,, এখানে পাঁচ লাখ টাকা আছে।
এখানেই একটা ব্যাবসা শুরু কর।
।
কিন্তু মামা,,,
।
আর কোন কিন্তু নয়,,,, এবার তো ঘড় থেকে বের হ।
এই ঘড়ে আর কতো দিন থাকবি....?
।
৮ বছর পর
।
আমি পুকুরে মাছকে খাবার দিচ্ছি এমব সময় বাবা বাবা ডাক শুনে পিছনে ফিরে দেখি
আয়না এবং আয়শা।
আয়না আমার মেয়ে। ৫ বছর বয়স। আর আয়শা আমার স্ত্রী।
হুমমমম এখানে মানে গ্রামেই মামা,চাচারা দেখে একটা বিয়ে দেয় আমার।
আমার স্ত্রীর নাম আয়শা।
আর আমি এখন একজন খামারি।
মাছ চাষ করি।
।
আয়নার ডাকে সারা দিয়ে বললাম কি হয়েছে আমার রাজকুমারীর ,,,....?
।
খাবার নিয়ে এসেছি,,,,জলদি আসো খাবে।
।
আচ্চা আসতেছি।
।
পুকুর থেকে উঠে হাত মুখ ধুয়ে পুকুর পারে বসে পরলান খাবার খাওয়া জন্য।
।
খাবার খাওয়া শেষে আয়শা সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছে বাড়ি যাওয়ার জন্য।
কিন্তু আয়শার সামনের চুল গুলো বার বার চোখের সামনে এসে বিরক্ত করছিলো ওকে। তাই আয়শা ওর সামনে আসা চুল গুলো বার বার কানে গুজে দিচ্ছে।
।
চুল গুলো আবার সামনে আসলে আমি হাত বাড়িয়ে ওর কানে গুজে দেই।
।
গুজে দেওয়ায় আয়শা চোখ ঘুড়ি একটু চোখ গরম করে বললো
।
লজ্জা শরম নাই নাকি....?
আয়না আছে দেখছো না...?
।
আয়নার দিকে আড় চোখে তাকিয়ে দেখি আমার দিকেই তাকাচ্ছে।
।
তারপর আমাকে বললো,,,,
কি হুমমমম আবার মায়ের সাথে দুষ্টুমি হচ্ছে....?
।
আমি বললাম,,, কই না তো....?
।
আমি না তোমার মা,,,,,...?
আমাকেও মিথ্যা বলো.....?
।
আয়নার মুখে মায়ের কথা শুনে ওকে টেনে বুকে জরিয়ে ধরলাম।
।
আয়শা সব কিছু বুঝতে পেরে আমার কাধে হাত রাখলো।
আর বললো,,,,
দুঃখ করো না।
এমন সময় মাথার উপরের
গাছ থেকে একটা পাতা এসে পরলো আমাদের সামনে।
।
আয়না সেই পাতাটা হাতে নিয়ে
বললো,,,,
চলো মা বাসায় যাই।
।
আয়না
আর আয়শা চলে যেতে লাগলো।
আর আমি তাকিয়ে আছি ওদের দিকে।
চোখের আড়াল হওয়া অবদি।
।
।
>>>> ❤❤ সমাপ্ত❤❤