অবহেলার কষ্টের স্ট্যাটাস
বিচ্ছেদের পাঁচ বছর পরে আমাদের দেখা হল একটা রেস্টুরেন্টে। আমি গিয়েছিলাম অফিসের কাজের জন্য সেখানে কোন লাঞ্চের ব্যবস্থা ছিল না। তাই ওই রেস্টুরেন্টে খেতে বসছিলাম। হঠাৎ পিছনে তাকিয়ে দেখি আমার প্রাক্তন বউ। দেখে মনে হচ্ছিল আমার প্রাক্তন বউ অনেক সুখে আছে। আমি দূর থেকে বারবার তাকে দেখার চেষ্টা করছি।
হয়তো বা সে আমাকে দেখতে পারে নাই।
আচ্ছা যাই হোক আমি আরিয়ান এবং আমার প্রাক্তন
বউ লিজা। আমরা দীর্ঘ পাঁচ বছর সংসার করেছিলাম।
মেয়েটা অনেক চঞ্চল টাইপের ছিল। অনেক ছেলে মানসী করত। তার প্রত্যেকটা আবদার পূরণ করার চেষ্টা করতাম। কিন্তু হঠাৎ এতটা চেঞ্জ হল কখনোই ভাবতে পারি নাই। আমি একজন মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ছেলে।
তার সব চাহিদা পূরণ করা সম্ভব আমার হতো না। সে মাঝে মাঝে অনেক কষ্ট পেতো আবার খুশি হতো।
আমার অজান্তে অনলাইনে একটা ফেসবুক ছেলের সাথে রিলেশন করে। আমি সেটা কখনোই জানতে পারি নাই।
কারন আমি তাকে অনেক ভালবাসতাম। কখনো জানার চেষ্টাও করি নাই। হঠাৎ যখন আমাদের সংসারে অভাব চলে আসলো। তখন লিজা মেনে নিতে পারে না। সে কথায় কথায় বলে তুমি কেমন স্বামী। আমার চাহিদা পূরণ করতে পারো না।
ওই সময়টা আমার চাকরি চলে যায়। আমি সম্পূর্ণ বেকার অবস্থায় থাকি। সে বলে দুমুঠো ভাত ঠিকমতো দিতে পারো না তোমার সংসার আমি থাকবো কি করে। আমি আমার বাবার বাড়িতে চলে যাব।
যাকে এতটা ভালোবাসলাম সে কিনা দুঃখের সময় আমার পাশে থাকল না। নিজের কাছে অনেক খারাপ লাগে।
তারপর লিজা সত্যি তার বাবার বাড়িতে চলে যায়।
ওই সময় অনেক চেষ্টা করি প্লিজ যেওনা আমাকে ছেড়ে। তুমি যদি চলে যাও সত্যি আমি নিঃস্ব হয়ে যাবো।
তবু আমার কথা শোনে নাই । কারণ শুনবে কি করে আমি যে তার চাহিদা পূরণ করতে পারি না।
আরেকটা কথা চাহিদা বলতে শুধু ভাত কাপড় এটাই না।
তার যে আরেকটা সম্পর্ক ছিল ওটাই তার কাছে ইস্যু ছিল। এজন্যই সে থাকতে চাচ্ছে না আমার কাছে।
তারপর আমি যে রেস্টুরেন্টে খেতে বসছিলাম তাকে দেখতে পাই এবং সে এখন দ্বিতীয় স্বামীর সাথে বসে খাচ্ছে।
আমার দেখে অনেক কষ্ট লাগছিল।একটু সাহস নিয়ে তার সামনে দাঁড়ালাম।
আমাকে দেখে অনেক অবাক হয়ে বলল কেমন আছো। যেহেতু অনেকদিন সংসার করেছি চিনতে কষ্ট হয় নাই লিজার।
আমি হেসে বললাম যেমনটা রেখে গিয়েছিলে।
তবে আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি।
তারপর আমি বললাম তুমি কেমন আছো। আরেকটা কথা ওই সময় তার স্বামী ওয়াশরুমে গিয়েছিল।
সে আমাকে বলল সত্যি আমি অনেক অন্যায় করেছি।
আমি বললাম কেন?
লিজা আমাকে বলল প্রথম স্বামী আর প্রথম ভালবাসা কখনো দ্বিতীয়বার আসে না।
আমি জানতাম তুমি আমাকে অনেক ভালোবাসো। আমি একটু লোভের কারণে তোমার কাছ থেকে ঠিকই চলে আসি।
আমি একটু ও ভালো নেই আরিয়ান।
আমার স্বামীর ঠিকি টাকা আছে। কিন্তু তোমার মতন আমাকে ভালবাসে না। তোমার মতন করে খোলা দোকানে ফুচকা চা খাওয়াতে নিয়ে যায় না।
তোমাকে যখন যা বলতাম তুমি তাই শুনতে।
সত্যিই এখনো তোমাকে অনেক মিস করি।
আমি অনেক বড় ভুল করেছি।
টাকা কখনো সুখ দিতে পারে না। এটা এখন বুঝতে পারছি।
পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও।
তাই সবার উদ্দেশ্যে একটা কথাই বলবো আপনার স্বামী যেমনি হোক না কেন। তাকে ছেড়ে কখনো আমার মত ভুল করবেন না।
একটা স্বামীর সবচেয়ে বড় চাওয়া হল তার স্ত্রী সুখে দুঃখে সব সময় পাশে থাকবে। আর এটাই হলো প্রকৃত ভালোবাসা।
আর পরকীয়া কখনো সুখ দিতে পারেনা। হয়তো ক্ষনিকের জন্য আপনাকে অনেক সুখে রাখবে।চিরস্থায়ী ভালোবাসা কখনো দিতে পারবে না।
-পরকীয়া_প্রেম
-লেখা_আরিয়ান