শিক্ষামূলক পোস্ট
--- মামা মা*ল*টা কিন্তু সে-ই।
- হু রে মামা। কি দারুন চোখ দেখলি।
-- ইশ্ এভাবে বলিস না। আমি ওর মায়ায় পড়ে গেছি।
- যদি আমরা মেয়েটাকে পটাতে পারি না।
-- আমি চুল ঠিক করতে করতে বললাম,,মামা তাহলে তো ওকে দিয়ে একটা পার্টি করা যাবে।
রাসেল:- ইশ্ বন্ধু মনের মতো একটা কথা বললি।
লাদেন:- দেখ মেয়েটা কেমন যেন আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
- দেখে তো মনে হচ্ছে না এটা আমাদের গ্রামের মেয়ে।
- ইশ্ বন্ধু আমার তো জিভে জল এসে গেল। আমি ওকে চাই চাই।
লাদেন:- এক কাজ কর মেয়েটাকে ডাক দে তো।
- আশেপাশে কেউ আছে নাকি।
- আরে কেউ নাই। এত চিন্তা করিস কেন। ডাক দে।
লাদেন:- এই মেয়ে এইদিকে আস তো।
মেয়েটা আমাদের দিকে আসতে লাগল। তবে অদ্ভুত ব্যাপার হল, মেয়েটা একটুও ভয় পেল না আমাদের। যেখানে সব মেয়ে ভয়ে আমাদের থেকে দূরে পালিয়ে থাকে। আর এ তো দেখি আমাদের দিকে নির্ভয়ে আসছে।
মেয়েটা আমাদের কাছে আসতেই ফাহিম জিগ্গেস করল,,এই মেয়ে তুমি কি এই গ্রামে নতুন নাকি।
- মেয়েটা কলেজ ব্যাগ থেকে কি নিতে নিতে বলল,,সেটা আপনাকে বলব কেন।
বিশ্বাস করেন ভাই, মেয়েটার কন্ঠস্বর আমার কেন যেন চিনা চিনা লাগছে। আমার আগেও এই মেয়ের সাথে কথা হয়েছে। এমন মনে হচ্ছে আমার।
এবার রাসেল একটু রাগি সুরে বলল,, তরে যা বলা হয়েছে তাই বল। নয়লে।
- নয়লে কি হু। কি করবি আমার। যতসব ফালতু পোলাপান। এসব পোলাপানের জন্য দেশটাই আজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
- তরে তো আমি?
লাদেন:- রাসেল শান্ত হ। এই মেয়ে তুমি চলে যাও।
মেয়েটা আমার দিকে কেমন রাগি একটা চাওয়নি দিয়ে চলে গেল। তবে মেয়েটাকে দেখে মনে হল খুব পর্দা করে।
ফাহিম:- তুই মেয়েটাকে চলে যেতে বললি কেন?
লাদেন:- আরে ফাহিম শান্ত হ। আমরা কালকে ওকে এখান থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে রে*প করব।
এটা বলতেই রাসেল আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল,,মামা তুই মনের কথা বললি। শালির দেমাগ অনেক। কালকে সব শেষ করে দিব।
কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে তিন বন্ধু বাসায় চলে গেলাম। তবে আমরা প্রতিদিন এই ব্রীজের কাছে বসে মেয়েদের বিরক্ত করি। এটা আমাদের প্রতিদিনের নেশা। নতুন নতুন মেয়ে যাই। খুব ভাল লাগে ওদের দেখতে। আর টিজ করতে।
বিকালে রুমে বসে আছি। হঠাৎ আমার ছোট বোন এসে বলল,, ভাইয়া কি করিস।
- এই তো বসে আছি। কেন কিছু বলবি।
জান্নাত আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল,,তুই আমার লক্ষী ভাইয়া।
লাদেন:- হয়েছে হয়েছে কি বলবি বল এখন।
- ভাইয়া আমি চাই না তুই কোন খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়। তুই তর এসব বন্ধুদের সঙ্গ ছেড়ে দে। ওরা বেশি ভালো না।
লাদেন:- দেখ এটা বলিস না। ওরা আমার কলিজার বন্ধু হয়। তুই তো জানিস। আর হঠাৎ করে ওদের তর খারাপ মনে হল কেন।
জান্নাতের চোখের কোণে আমি পানি দেখতে পাচ্ছি। বুঝি না কি এমন হয়েছে যে ওর মন খারাপ।
লাদেন:- কি হয়েছে সত্যি করে বল তো।
- থাক বাদ দে। এত করে মা তরে বুঝাই তাই বুঝিস না। আমি বললে আর কি বুঝবি।
লাদেন:- হয়েছে তর ডাইলক। এখন বল মা কোথায়।
- স্কুল থেকে এখনো ও আসে নাই।
( আমার আম্মু স্কুলের শিক্ষক)
লাদেন:- আচ্ছা আমার জন্য এক কাপ কফি নিয়ে আই।
- আচ্ছা ভাইয়া। আনছি।
সকালে রেডি হয়ে সব কিছু তৈরি করলাম। আজকে ওই মেয়েটাকে রে*প করব। চিন্তা করতেই ভিতরে নেচে উঠল। অনেক মজা হবে আজকে। বলার বাহিরে।
ব্রীজের কাছে আমরা তিন বন্ধু গাড়ি নিয়ে বসে আছি। এখন থেকে ওকে অপহরণ করব।
রাসেল:- মামা এটার সাথে অন্য কিছু পানি হলে ভাল হত না।
লাদেন:- আরে নিয়ে আই। আজকে পুরোই পার্টি হবে।
মেয়েটা আমাদের কাছে আসতেই আমরা গাড়িতে তুলে অজ্ঞান করে দিলাম।
একটা বাংলোতে নিয়ে গেলাম। ফাহিম আর রাসেল অলরেডি বক্সে গান ছেড়ে নাচ্ছে। আমিও গিয়ে ওদের সাথে যোগ দিলাম।
মেয়েটার জ্ঞান ফিরতেই আমাদের দেখে বড় বড় চোখে তাকিয়ে আছে।
রাসেল:- কি সুন্দরী। আজকে পুরোই খেলা হবে তোমার সাথে তুমি তৈরি তো।
- মেয়েটার মুখ থেকে কোন কথা বের হচ্ছে না। তবে আমার দিকে তাকিয়ে কান্না করে দিল। বুঝলাম না আমার দিকে সেইদিনেও এভাবে তাকিয়ে দেখল। আর আজকে কান্না করে দিল। আমার দিকে তাকিয়ে। নাকি পছন্দ টছন্দ করে আমাকে।
লাদেন:- এই তরা থাম তো। আমি মেয়েটার কাছে গিয়ে বললাম,,এই কান্না করিস কেন? আজকে আর এখান থেকে বাঁচতে পারবি না। তাই বলছি কান্না করিস না। তুইয়েও মজা নে। আমাদেরও মজা নিতে দে।
তা-ও মেয়েটা শুধু কান্না করছে।
এবার ফাহিম রাগে মেয়েটার চুল ধরে বলল,,এই শালি কান্না করবি না।
রাসেল:- এত নাটক কিসের। গা থেকে কা*প*ড় খুলে ফেল।
ফাহিম মুখ থেকে মুখোশটা খুলতেই আমি তিন হাত পিছনে গিয়ে উল্টোবাজি দিয়ে পড়লাম। আমার শরীর টা ভয়ে কাঁপতে লাগল। কোন কথা আমার মুখ দিয়ে বের হচ্ছে না। কারন যেই মেয়েটাকে এখানে আনছি। এ হল আমার একমাত্র ছোট বোন জান্নাত।
রাসেল:- কি হয়েছে বন্ধু। তুই এভাবে কাঁপছিস কেন। শীত লাগল নাকি আবার তর। (আসলেই আমার বোন পর্দা করে তো এজন্য বাহিরের কেউ তাকে চিনে না)
আমি উঠেই পিছন থেকে পিস্তলটা নিয়ে রাসেল হাতে গুলি করে দিলাম।
ফাহিম:- এটা তুই কি করলি।
লাদেন:- ওর হাত খুলে দে।
ফাহিম আমার এই অবস্থা দেখে ভয়ে ভয়ে খুলে দিলাম।
জান্নাত আমার মুখে কতটা থু থু দিয়ে বলল,,তর মতো ভাই থাকার চেয়ে না থাকাই অনেকটা ভাল। নিজের বোনকেও শেষ পর্যন্ত ছাড়লি না। ছিঃ ছিঃ।
জান্নাত কান্না করতে করতে চলে গেল। আমি পিস্তল টা হাত থেকে ফেলে মাটিতে পড়ে কান্না করছি।
লাদেন:- কি করলাম আজকে। নিজের বোনকে ধর্ষন করতে অপহরণ করে নিয়ে আসছি এখনে। ছিঃ ছিঃ।
এটা বলতেই ফাহিম আর রাসেল দৌড়ে চলে গেল। করন ওরা আমার রাগ সম্পর্কে জানে। আমি এখন ওদের মেরেও ফেলতে পারি। নিজের বড় ভাইয়ের কাছে যদি নিজের ছোট বোন নিরাপদ না থাকতে পারে। এই ভাই থাকার চেয়ে না থাকাই অনেক ভাল।
নিজের উপর এখন নিজের ঘৃণা হচ্ছে। মাটি থেকে উঠে অর্জনা কোন গন্তব্যের দিকে যেতে লাগলাম। এই মুখ আর মাকে দেখিয়ে কি করব। আমার মতো ছেলে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই অনেক ভাল।
আজ দুই বছর ধরে বাসায় যাই না। এখন আমি পর্দা শীল বা কলেজ পড়ুয়া কোন মেয়েকে দেখলে মাথা নিচু করে হাঁটি। জীবনে উচিত শিক্ষা হয়েছে আমার।
ভাল একটা কম্পানিতে চাকরি হয়েছে আজকে। এই খুশিতে বাসায় যাচ্ছি। না জানি বোন কি আজো ও আমাকে ক্ষমা করবে।
সেই পুরনো বাসার সামনে চলে গেলাম। কলিং বেল বাজাতে একটু ভয় হচ্ছে। তবুও বাজালাম।
আমার বোন জান্নাত এসে দরজা খুলে দিল। তারমানে এখনোও ওর বিয়ে হয় নাই। আমার মুখে মাস্ক থাকার কারনে ও চিনতে পারছে না।
- কি চাই এখানে।
আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। সরাসরি আমি আমার বোনের পায়ের কাছে পড়ে গেলাম।
জান্নাত আবাক হয়ে গেছে। হয়তো ও এখনোও আমাকে চিনতে পারে নাই।
লাদেন:- আমাকে মাফ করে দে বোন। বিশ্বাস কর আমি এখন ভালো হয়ে গেছি। অনেক কষ্ট হয়েছে এই দুই বছর তদের ছেড়ে থাকতে।
- ভাইয়া তুই!
লাদেন:- আমাকে মাফ করে দে বোন।
জান্নাত আমাকে নিচ থেকে তুলে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে।
- তুই কই ছিলি তুই এতদিন। অনেক খুজখুজি করেও আমি আর মা তকে পেলাম না।
আমি জান্নাতকে ছেড়ে মাথা নিচু করে বললাম,, অনেক বড় ভুল করেছি আমি। আমাকে মাফ করে দে।
জান্নাত আমার মাথায় হাত দিয়ে বলল,,আমি তর বোন। বিশ্বাস কর আমি তর উপর কোন রাগ করি নাই। কিন্তু ওইদিন তরে দেখে আমার কলিজা টা ফেটে যাচ্ছিল। নিজের মায়ের পেটের আপন ভাই।
লাদেন:- আর বলিস না। আমি এখন অনেক ভাল হয়ে গেছি। আর ++ কম্পানিতে আমার চাকরি হয়েছে।
- সত্যি ভাইয়া।
লাদেন:- হু। বোন আমাকে মাফ করে দে। দেখিস তুই এখন থেকে আমি আর কাজ করা ছাড়া। এর বাইরে কোথাও যাব না। অনেক বড় ভুল করছি আমি।
- আরে বোকা আমি কিছু মনে করি নাই। আই আমার সাথে।
জান্নাত আমাকে টেবিলে বসিয়ে খাইয়ে দিতে লাগল।
জীবন থাকতে আর এমন ভুল করব না।
আসলেই ভাই মাঝে মাঝে কি হয় জানেন,,কোন বোরকা পড়া মহিলাকে দূর থেকে দেখলে চিনা যাই না। হয়তো সেটা আপনার বউ বা বোন হোক। আমারোও মাঝে মাঝে এমন হয়। নিজের চাচাতো বোনকে দেখে মাঝে মাঝে নিজেই চিন্তে পারি না। কি এক ভিজিটাল বোরকা বের হয়েছে। নিজের বউকে পর্যন্ত আপনার চিনতে কষ্ট হবে। আমার এই গল্পটা লেখার উদ্দেশ্য এটাই।
দেখেন ভাই আপনার ঘরে মা বোন আছে। আসলেই ভাই এটা আমাদের দোষ না। এটা আমাদের বয়সের দোষ। মাঝেমধ্যে আমরা মেয়েদের দূর থেকে দেখে চোখের মধ্যমেই ধর্ষন করে ফেলি। দূর থেকে বলি তার এটা নয় ওটা সুন্দর। বুকের সাইজ এত এত। কোমরের সাইজ এত এত। আরো কত কি হিসাব নেই।
তাই বলছি মেয়েদের সম্মান করতে শিখুন। আপনি ওদের ইজ্জত দেন। আজকে একটা মেয়েকে দেখে আপনি মাথা নিচু করে হাঁটলেন। এজন্য তো কোন ক্ষতি হচ্ছে না ভাই। আরেকদিন যদি মেয়েটা কোন বিপদে পড়ে। হয়তো আপনাকে ভাল মানুষ মনে করে কোন সাহায্য চাইতে পারে। আপনার কাছে।
আজকে আমার গল্পের কাহিনী টা যদি আপনার সাথে হয় কেমন লাগবে। নিজেকে তখন বাঁচিয়ে রাখবেন। আমার তো মনে হয় না। শুধু আমার ঘরে না। সবার ঘরেই মা বোন আছে। তাই বলছি সব মেয়েদের সম্মান করতে শিখুন। এই মেয়েদের পেট থেকেই আমাদের জন্ম হয়েছে। তাহলে ওদের আমি কিভাবে খারাপ দৃষ্টিতে দেখি। নিজেকে নিজে কন্ট্রোল রাখবেন। মা বোনদের সম্মান দিন। আপনিও সম্মান পাবেন তাদের কাছ থেকে।
সব শেষে আমার মা এবং বোনদের আমি সম্মান এবং ভালোবাসা জানাই। তাদের নিরাপত্তার জন্য আমার এই গল্প।
আর আমি জানি এই গল্পটা পড়ার পর অনেকেই আমাকে খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করবে। করতে পারেন সমস্যা নাই। তবে ছোট ভাই মনে করে মাপ করবেন।
-মা_বোনের_সম্মান
-অনুগল্প -সমাপ্ত