- ভালোবাসার মানুষের অবহেলা
স্বামীকে সর্বদা পায়ের নিচে রাখতাম।এই যুগে তো নারীরাই সব,পুরুষদের প্রয়োজন কিসে?
এমন মনোভাব আমার ছোটকাল থেকেই ছিলো।বিয়ের পর বিষয়টা বাস্তব জীবনে উপলব্ধি করার চেষ্টা করলাম।স্বামীকে সবসময় নিজের কথায় নাচাতাম।
দেখতে বেশ রুপবতী এবং শিক্ষিত হওয়ায় আমি যাই বলতাম স্বামী তাই শুনতো।বিষয়টা প্রথম প্রথম ভালোই লাগতো।স্বামীকে বরাবর অবহেলা করতাম।বলা বাহুল্য; তার সাথে চাকরের মতো ব্যবহার করতাম।
ফলস্বরূপ,নিজেকে অনেক সম্মানিত এবং বড় কিছু মনে হলেও মনের দিক থেকে শান্তিটা যেন অনেক দূরে হারিয়ে গেলো।পরিবারের লোকজনও আড়ালে আবডালে আমায় নিয়ে সমালোচনা করতে শুরু করলো।এলাকার লোকজনও বাজে দৃষ্টিতে আমায় দেখতো।নিজেকে কেমন যেন রোবটিক মনে হতো।
বাবার বাড়ি ঘুরতে গেলাম।একরাতে মাকে কাঁদতে কাঁদতে বললাম
" মা,সবাই তো বলে পুরুষের হাতের রোবট কখনো না হতে।আমি তো ঠিক তেমনিই হয়েছি,বরং স্বামীকেই আমার চাকর বানিয়ে রেখেছি।কিন্তু মা, আমার জীবনে সুখ নেই কেন?কেন অন্যসব মেয়েদের মতো স্বামী সংসারে আমার মন বসে না? কেন আমার মনে ভালোবাসার শিহরণ জাগে না? "
মা হেসে বললো " স্বামীকে চাকর বানিয়েছিস রে মা! আর নিজে যে হয়েছিস চাকরানী,সেদিকে নজর রেখেছিস?সুখ পাবি কি করে? সুখ পেতে হলে রাজরাণী হতে হয়,স্বামীকে বানাতে হয় রাজা "
মায়ের কথা সেইরাতে আমায় বিস্মিত এবং অভিভূত করলো।ঠিকই তো! স্বামীকে চাকর বানিয়ে নিজেই তো চাকরানী হয়ে গেছি!
এরপর থেকে স্বামীকে স্বামীর মর্যাদা দিতে শুরু করলাম।স্বামীর সব কথা শুনি,ওনার ইচ্ছের দাম দিই,নিজেকে পরিপাটি হিসেবে ওনার সামনে উপস্থাপন করি।
এখন গর্ব করে বলতে পারি আমার মতো সুখী মেয়ে খুব কম জনই আছে।স্বামীকে রাজা বানিয়েছি,নিজে হয়েছি রাজরাণী।জীবনের আসল সুখ তো এখানেই নিহিত।স্বামীকে চাকর না,রাজা বানালে তবেই রাণীর সম্মান পাওয়া যায়।
গল্প-গুরুত্ব
লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয়
- ব্যস্ততা অবহেলা নিয়ে স্ট্যাটাস
ক্লান্ত শরীরে বাড়ি ফিরছি।পকেটে ৮ টাকা।হাতে এক কেজি চাল,এক পোয়া ডাল,৫ টাকার তেল।
মাথাভর্তি টেনশন।মাসের শেষ।বেতন পাওয়ার এখনো ৬ দিন বাকি।কিভাবে সংসার চালাবো?ঘরে নব্য বিবাহিত স্ত্রী।কি খাওয়াবো তাকে?দোকানী বাকি দিবেনা,আগে থেকেই অনেক বাকি পড়ে আছে।
চিন্তায় চোখের সামনে সবটা অন্ধকার হয়ে আসছে।রাস্তার কাজ চলছে,কিসের সাথে যেন পা আটকালো।হুমড়ি খেয়ে রাস্তার উপর পড়ে গেলাম।
পলিথিন ছিঁড়ে চাল,ডাল সব বালুর সাথে মিশে একাকার হয়ে গেলো।ভিষণ হাসি পাচ্ছে,ভাগ্যর উপর কিছুক্ষণ হাসাহাসি করে আবার হাঁটা ধরলাম।
পথশিশুর আকুতি, " ভাইজান,গোলাপ নিবেন? "
" দাম কত? "
" ১০ টাকা "
পকেট থেকে কয়েনগুলো বেড় করে গুনে দেখি ৮ টাকা আছে।বললাম
" ৮ টাকা আছে।চলবে? "
মেয়েটা হেসে বললো " আজ পোরপোস ডে।রাত হইছে,আপনের জন্য ২ টাকা ছাড় "
মেয়েটার কথায় হাসলাম।প্রকৃতি,দারিদ্র্য আমায় ছাড় দিলো না সেখানে পুচকি মেয়েটা আমায় দুইটাকা ছাড় দিচ্ছে!
গোলাপ হাতে ঘরে ফিরলাম।স্ত্রীর চোখমুখ চকচক করে উঠলো।বললো " আপনি আমার জন্য গোলাপ আনছেন! "
গোলাপটা স্ত্রীর কানে গুঁজে দিলাম।লক্ষ্য করলাম স্ত্রী চোখের জল লুকাতে ব্যস্ত।পরীর মতো দেখতে মেয়েটা কি দেখে যে আমায় বিয়ে করলো কে জানে!
শুতে গিয়ে স্ত্রী আমার বু"কে মাথা রেখে বললো " মন খারাপ করিয়েন না তো।সবসময় তো এমন থাকবে না।একদিন সব ঠিক হবে,আমাদের অনেক টাকা হবে।সুদিন আসবেই "
হেসে বললাম " তোমার মতো দায়িত্বশীল,বুঝদার মেয়ে পেয়েছি,এর থেকেও সুদিন আর কি হতে পারে? "
গল্প-মধ্যবিত্ত_সংসার
লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয়
- ভালোবাসায় অবহেলা
পার্কে কাপল দেখলেই আমার ভিষন হাসি পায়।প্রেম বলতে আবার কিছু আছে নাকি?
রোজ সময় কাটাতে পার্কে যাই।সেখানে প্রেমিক প্রেমিকা বাদেও প্রায়ই উদাসীন,সুদীর্ঘ চুল,ভবঘুরে ধরনের একজনকে দেখতে পাই।একদিন কৌতুহল নিয়ে ওনাকে বললাম
" আপনাকে প্রায়ই এখানে দেখি।যারা প্রেম করছে তাদের দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন।কি দেখেন? "
লোকটা বিভ্রান্ত দৃষ্টিতে বললো " প্রেমে পড়েছেন কখনো?"
হেসে বললাম " হাহাহা,প্রেম? প্রেম বলতে কিছু আছে নাকি?আমি তো অপেক্ষায় থাকি কখন ওদের ব্রেকআপ হবে,মজাই লাগে দেখতে "
লোকটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো " এই খুশিটা ধরে রাখুন।একবার প্রেমে পড়লে সর্বনাশ "
নিতান্তই পাগল ধরনের লোকের সাথে বেশিক্ষণ কথা বলা বোকামি।আর কিছু না বলে চলে আসলাম।
তার কিছুদিন পর প্রেমে পড়লাম।প্রথম প্রেম,কত অনুভূতি,কত আশা! মেয়েটাকে নিয়ে মনের অন্তরালে অন্য দুনিয়া সাজিয়ে ফেললাম।
অতিরিক্ত প্রেম মেয়েরা ঠুমকো ভাবে,আমার বেলাও তাই হলো।মেয়েটা চলে গেলো।তার সাথে কাটানো সময়গুলো বড্ড তাড়না করে বেড়াতে লাগলো।মন প্রশান্তির জন্য পার্কে গেলাম।সেই ভবঘুরে লোকের দেখা।উনিই আমায় দেখে কাছে এসে বললো
" কি দেখেন? "
" ওদের প্রেম দেখছি "
" কি মনে হচ্ছে?কিছুদিন আগে দেখে যেমন হাসি,মজা লাগতো এখনও তেমন মজার লাগে?এখনও কি বিচ্ছেদ দেখতে ইচ্ছে করে? "
মুহুর্তেই প্রেমিকার স্মৃতি মনে পড়ে চোখ ভিজে গেলো অশ্রুতে।বললাম
" না, ইচ্ছে করে না।এদের যেন কখনোই বিচ্ছেদ না হয়।কখনোই না "
গল্প-বিচ্ছেদ
লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয়
- অবহেলা নিয়ে স্ট্যাটাস
১. আপনার অতীতের কলঙ্কিত,খারাপ খবরগুলো যে ফ্রেন্ড আপনাকে বারবার মনে করিয়ে দেয়,তার সঙ্গে কথা বলা কমিয়ে দিন। কারণ অতীত চেপে রাখতে হয়।
২. যে ইচ্ছেমতো অবহেলা করে। তার পেছনে ইচ্ছেমতো কয়েকটি দিন লেগে থাকুন। তাকে বিরক্ত করতে থাকুন। তারপর হুট করেই হারিয়ে যান। আপনাদের হয়তো প্রেম হবে না, কিন্তু আপনার কথা তার হুটহাট মনে পড়বে। আর হয়তো সে আপনাকে মিস করতেও শুরু করবে।
৩. আপনার বিশাল বার্থডে উইশের বিপরীতে যে এক লাইনের রিপ্লাই দেয়, তাকে ভবিষ্যতে উইশ না করার প্রতিজ্ঞা করুন।
৪. প্রাক্তনের জন্যে যার মন পড়ে থাকে, তাকে ভালোবাসা থেকে দূরে থাকুন।
৫. ব্রেকাপের চার পাঁচ মাস পরে আবার সব ঠিকঠাক করে প্রেম করা থেকে দূরে থাকুন। কিছুই আর আগের মতো পাবেন না।
৬. আপনি যার সঙ্গে কথা বলার জন্য হাজারটা বাহানা তৈরী করেন এবং সে Hmm রিপ্লাই দিয়েই সমাপ্ত করে দেয়। তাকে মেসেজ দেওয়া হতে বিরত থাকুন। এটা Ego নয় Self Respect.( আত্মসম্মান )।
৭. অতীতকে ভেবে প্রতি রাতে বালিশ ভেজানো থেকে বিরত থাকুন। তবে অতীতকে ভুলে গেলে আপনার ভবিষ্যৎ কিন্তু অন্ধকার। তাই প্রতিজ্ঞা করুন, একই ভুলের জন্য যেনো আপনাকে দ্বিতীয়বার কাঁদতে না হয়।
৮. যার ইগো অনেক বেশী, তার সঙ্গে রিলেশন করা থেকে বিরত থাকুন। মনে রাখবেন, যার ইগো যতো বেশী তার মানুষকে এভয়েড করার শক্তিও ঠিক ততোটাই বেশী।
৯. কেউ চলে যেতে চাইলে সহজেই তাকে যেতে দিন। ভুল মানুষদের যেতে দিতে হয়, সঠিক মানুষটি আসার জন্য।