বাস্তব জীবনের কিছু গল্প | ভালোবাসার কিছু বাস্তব কথা

  • বাস্তব শিক্ষনীয় গল্প

বাস্তব শিক্ষনীয় গল্প

" বাবার সাথে আমার স্ত্রী খারাপ ব্যবহার করে " অফিস থেকে ফিরতেই কথাটি বললো কাজের বুয়া।


বুয়ার কথায় আমি বিভ্রান্ত হলাম না।বাবা আমার স্ত্রীকে মেয়ের মতো ভালোবাসে,মেয়েরা বাবার ভালোবাসা উপেক্ষা করার সাহস পায় না।


রাতে বাবার ঘরে গেলাম।গম্ভীর স্বরে বাবাকে বললাম " বাবা,রুপার সাথে আমার একসাথে বাস করা আর সম্ভব না "


আমায় কথায় বাবা হকচকিয়ে বললেন " এসব কি কথা?দোষ যার'ই থাক,মিটিয়ে নাও।বাস করবে না এসব কেমন কথা?মেয়েটার কি হবে তাহলে! "


এসব বলে বাবা অনেক্ক্ষণ আমায় বোঝালেন।রুপা বাবার সাথে খারাপ ব্যবহার করলে বাবা নিশ্চয়ই আমায় এতো বোঝাতেন না।আমি বেশ বুঝতে পারলাম বুয়া ঝামেলা সৃষ্টির জন্য কথাটা বলছে।


ঘরে গিয়ে রুপাকে বললাম " বাবার তো বয়স হইছে,তুমিও ওনাকে দেখার সময় পাও না,আমিও পাই না।বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসলে কেমন হয়? "


রুপা চোখ সরু করে বললো " ভালোই হয়।ওখানে বাবা গল্প করার অনেক মানুষ পাবে "


বৃদ্ধাশ্রমে গেলে গল্প করার অনেকে পাবে এটা ঠিক।এই বয়সে গল্প করার লোক দরকার।পরেরদিন সকালে রুপাকে বললাম " দ্রুত রেডি হও, বৃদ্ধাশ্রম যেতে হবে "


স্ত্রী বিরক্ত মুখে বললো " আচ্ছা "


গাড়িতে বসতে বসতে রুপা বললো " বাবা কোথায়? "


" তুমি বসো,বাবা আসছে "


রুপা গাড়িতে বসলো।গাড়ি থামলো রুপাদের বাড়ির সামনে। রুপা বিষ্মিত হয়ে বললো " আমাদের বাড়িতে নিয়ে এলে কেন? "


" তোমার বাবা,মাও তো বৃদ্ধ।তাই বৃদ্ধাশ্রমে রেখে গেলাম।ওনাদের গল্প করার লোক প্রয়োজন।দ্রুত ডিভোর্স লেটার পেয়ে যাবে "


রুপা অনেক আকুতি মিনতি করলো।আমার শুনলাম না।যে মেয়ে বাবার ভালোবাসা বুঝতে পারে না সে কাউকেই ভালোবাসার যোগ্যতা রাখে না।


গল্প-সিদ্ধান্ত

লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয়

  • ভালোবাসার কিছু বাস্তব কথা

গায়ে হলুদের রাতে অপরিচিত একটা ছেলে এসে বললো " স্যার,অরিত্রির সাথে দুই বছরের সম্পর্ক।আমরা দুজন দু'জনকে অনেক ভালোবাসি "


আমি হতভম্ব হয়ে বললাম " আপনার কথা কেন বিশ্বাস করবো? "


" স্যার অরিত্রি ও সাথে এসছে।বাড়ির সামনে একটা রিস্কায় বসে আছে "


" সম্পর্কের কথা অরিত্রির বাড়িতে বলেছিলেন? "


" জি। বেকার ছেলের সাথে ওনারা বিয়ে দিতে রাজি হননি।গতকাল চাকরির এপয়েন্ট লেটার হাতে পেয়েছি।এই যে দেখুন "


ছেলেটা একটা খাম আমার দিকে এগিয়ে দিলো।আমি বললাম " বিয়েটা তাহলে ভেঙ্গে দিতে বলছেন? "


ছেলেটা করুন দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললো " জি স্যার।এই সেক্রিফাইজটা করবেন প্লিজ?আপনার সম্মানহানি হবে বুঝতে পারছি!তবুও স্যার আমার সারাজীবনের খুশিটা নিয়ে নিবেন না।আপনার পায়ে পড়ি! "


ছেলেটা সত্যি সত্যিই আমার পায়ে হাত রাখলো।ছেলেটাকে দাড় করালাম।বললাম


" আমি যদি বিয়ে ভেঙ্গে না দিই তাহলে কি আপনারা পালিয়ে যাবেন? "


" না স্যার "


একটু অবাক হয়ে বললাম " এতো ভালোবাসেন, তাহলে পালাবেন না কেন? "


" অরিত্রির বাবা খুব সম্মানিয় ব্যক্তি।এমন ঘটনায় ওনাকে অপমান করা হবে।তার থেকেও বড় কথা অরিত্রি কষ্ট পাবে।ওর কষ্ট সহ্য করতে পারি না।বিয়ে তো একবারই হয়,লুকিয়ে বিয়ে করে আজীবন ছোট থাকতে চাচ্ছি না "


ছেলেটির কথায় আমি মুগ্ধ হলাম।হেসে বললাম " আচ্ছা ঠিক আছে।সেক্রিফাইস করলাম "


ছেলেটার চোখভর্তি জল চলে এলো।সে ভেজা চোখে মুচকি হেসে আমার থেকে বিদায় নিলো।


গল্প-অপেক্ষা

লেখকঃ-জয়ন্ত_কুমার_জয়

  • life বাস্তব কথা নিয়ে স্ট্যাটাস

বিয়েতে মেয়ের বাড়িতে বরযাত্রী নিয়ে গেলাম ২৪৬ জন।মেয়ের বাবা আড়ালে ডেকে বললেন


" বাবা,তোমাদের না ১০০ বরযাত্রী আনার কথা ছিলো? "


বললাম " বাবা আমি পরিবারের ছোট ছেলে।সবার শখ বিয়েতে আসবে।কিকরে না বলি বলুন তো? "


" সে নাহয় ঠিক আছে।আগে থেকে বললে ভালো হতো।এখন ওদেরকে একটু বলে দাও খাবারে সামান্য দেরী হবে।সবার আয়োজন করে একসাথে খেতে দিবো "


" বাবা আপনি টেনশন করবেন না।আমি বলে দিবো "


বিয়েতে আত্মীয়-স্বজন বন্ধুবান্ধব কাউকে আনা বাদ রাখিনি।সবাই তো কাছের মানুষ, কাকে রেখে কাকে বাদ দেই!


বিয়ে হয়ে গেলো।বছর ফিরতে স্ত্রীর ডে"লিভা"রি।হসপিটালে আমার রুদ্ধশ্বাস! এ নে"গেটিভ র"ক্তের অভাব।আত্নীয়-স্বজন অনেকের সাথে র"ক্ত মিলে যায়,তারা বাহানা দিয়ে এড়িয়ে গেলো।


রিক্সায় উঠে রওনা হলাম কলেজ গুলোর উদ্দেশ্য।সেখানে র"ক্ত জোগাড় করার সেচ্চাসেবী কমিটির ছেলেমেয়েরা থাকে।ওদের বললে যদি কোনো উপায় হয়! 


আমার ছটফটানি দেখে রিক্সাওয়ালা মামা বললো " মামা এতো ঘাবড়াইছেন কেন? কার কি হইছে? "


" র"ক্ত লাগবে।জোগাড় হয়নি, স্ত্রীর ডে"লিভা"রি "


" কি র"ক্ত লাগবো? "


" এ নে"গেটিভ "


" মামা আমার তো এই র"ক্ত। আমার কাছে র"ক্ত নিবেন? "


শেষমেশ রিকশাওয়ালা মামার র"ক্ত দিয়েই স্ত্রীর ডে"লিভা"রি হলো।মাথায় হাত রেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবলাম, বিয়েতে গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে কাদের নিয়ে গিয়ে খাওয়ালাম?কাদের আপন ভাবতাম?এই বিপদের দিনে আমি একা! কেউ নাই।


রিকশাওয়ালা মামার নাম্বার নিয়ে রাখলাম।বাড়িতে ভালোমন্দ রান্না হলে তাকে ডেকে খাওয়াই।সে আপনজন "


গল্প-অনুধাবন

লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয় 

  • বাস্তব জীবন বড়ই কঠিন

দাদার ইনকামের টাকাতেই আমার পড়ালেখা,বিয়ে।বিয়ের কিছুদিন পরই বউদি বিধবা!আজ জমি ভাগ হচ্ছে।


বউদি নির্বাক!আমার ভাগের জমিটুকু বউদিকে দিয়ে দিলাম।বউদি অবাক হয়ে বললো 


" আমায় কেন দিচ্ছ? "


" দাদা আজীবন আমায় দিয়েই গেছে।বেঁচারার ঋণ শোধ করতে তো পারবো না।জমিটুকু তোমায় দিলাম।দীপু,তুলিকে বলবে তাদের পিসির পক্ষ থেকে এটা উপহার "


বউদির চোখে জল।দাদার কবরের পাশে দাড়িয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম " ভালো থাকিস দাদা!এখন থেকে দীপু,তুলির পড়াশোনার দায়িত্ব আমার।যেমন দায়িত্ব নিয়ে তুই আমায় পড়িয়েছিস সেভাবেই তোর ছেলেমেয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব আমি নিলাম!"


গল্পঃ-ঋণ

লেখকঃ-জয়ন্ত_কুমার_জয়

  • বাস্তব জীবনের কষ্টের গল্প

" ভাবী তোমার ঠোঁ'টে কি হয়েছে?আর বু'ক এমন লাল আছে কেন? "


ছোট ননদের কথায় আঁচলে বু'ক ঢেকে রুহি বললো " এটা এলার্জির দাগ অর্পি "


অর্পি বিষ্মত হয়ে বললো " এলার্জি আমারো আছে ভাবী।আমার তো এমন হয় না।এটা এলার্জির দাগ না।আর ঠোঁ'ট কে'টে তো র'ক্ত পড়ছে "


এমন সময় রুহির শ্বাশুড়ি এসে বললো " কাজকাম বাদ দিয়ে সুখের গল্প শুরু করে দিলি?তোকে বলছি না চুপচাপ কাজ করবি?কারো সাথে কথা বলবি না! "


রুহি দুঃখিত স্বরে বললো " ভুল হয়ে গেছে মা "


রাতে স্বামী এসে আবারো রুহির গা'য়ে হাত তুললো।দোষ একটাই!বিয়ের একমাসের মধ্যে যৌতুক হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিলো রুহির পরিবারের।একমাস পেরিয়ে আজ দশদিন।পরিবার থেকে যৌতুক এখনো আসেনি! 


জমি বিক্রি করে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে পরেরদিন রুহির বাবা মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে গেলেন।আঙ্গিনায় দেখলেন মেয়ের শরীর সাদা কাফনে আবৃত।মেয়ের মৃ'তদে'হ দেখে সঙ্গে সঙ্গেই বাবার হার্ট অ্যাটাক।রুহির শ্বাশুড়ি টাকাগুলি হাতে নিয়ে ছেলেকে বললেন


" অপয়া মেয়েডারে আরো আগে মা'রতে পারলি না?তাইলে তো আরো আগে টাকা পেয়ে যাতাম! "


আঙ্গিনায় পড়ে রইলো রুহি এবং তার বাবার মৃ'তদে'হ।


গল্প-যৌতুক_সমাজ 

লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয়


মন ছুঁয়ে যাওয়া গল্প পড়ুন।