বাস্তবতা মেয়েদের জীবন নিয়ে কিছু কথা

 ডিভোর্সের পর মেয়েদের জীবন

ডিভোর্সের পর মেয়েদের জীবন

আমার এক কাজিন ৪০+ স্যালারি পেতো। বিয়ে হবার পর স্বামীকে আর পাত্তা দিতো না। একটা মেয়ে বাচ্চা হবার পর সে নিজেই স্বামী কে ডিভোর্স দেয়। কারণ পুরো ফ্যামিলি তার পক্ষে।


এভাবে ২/৩ বছর যাবার পর সে বুঝতে পারে পারিবারে তার দাম ৪০ হাজার টাকা স্যালারির কারণে। একটা সময় চরম একাকিত্ব বোধ করে অসহ্য হলে বিয়ের কথা বলে।


০৭ বছরেও একটা পাত্র জুগাতে পারেনি। ঐ মেয়ে তখন হারে হারে টের পায় বাস্তবতা কত কঠিন।


এটাও টের পায় পুরুষ কে প্রতিপক্ষ ভেবে নিজের পায়ে কুড়াল মারলো।


যে পুরুষকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে ডিভোর্স দিলো ঐ ছেলে ৩ মাসের মাথায় ঠিকই একটা অবিবাহিত মেয়ে বিয়ে করে নেয়।


একটা পর্যায়ে পরিবার অতিষ্ঠ হয়ে যায়। বাবা অসুস্থ হয়ে যায় এসব টেনশনে মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ে দেবার জন্য। সংসারে এত গেঞ্জাম লেগেছে যে ২ ভাই বিয়ে করে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।


শেষ পর্যন্ত একটা মেয়ের লাইফ পর্যন্ত নষ্ট হয়নি সাথে মা বাবাও তিলে তিলে শেষ। একটা সময় নিজ কন্যার গ্রেজুয়েশন নিয়ে আত্মীয় স্বজন মহলে গর্ব করতো। এখন বিড়ালের মত মুখ লুকিয়ে হাফ ছাড়ে।


আমাদের বাকি খালাদের অল্পশিক্ষিত মেয়েদের সংসার দেখে আফসোস করে। কী ভয়ংকর বাস্তবতা। একটা সময় আমার অল্পশিক্ষিত যে খালাতো বোনরা এই শহুরে খালাতো বোনের গ্রেজুয়েশন দেখে আফসোস করতো। ভাবতো আমরা পিছিয়ে আছি। ঐ মেয়ে জব করে সেটেল।


আজ ঐ মেয়ে আফসোস করে ক্যানো অল্পশিক্ষিত থেকে বিয়ে হলো না।


কেন যৌবনের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হলো। ক্যানো পরিবার আর সংসারের ছোয়া থেকে বঞ্চিত হলো।


এই ফেমিনিজম কত লাখ মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে। সেটার হিসাব নেই। আর এই কারণেই শেষ পর্যায়ে তারা কট্টর ধর্ম বিদ্বেষী হয়ে পড়ে। কট্টর পুরুষ বিদ্বেষী হয়ে পড়ে।


তবুও একদল বাস্তবতাকে মেনে নিবে না নিছক অহংকারীতায়।

-নিজাম উদ্দিন ভাইয়ের ওয়াল থেকে। 

মেয়েদের জীবন নিয়ে কথা

           (১) আমার এক ব্যাচমেট ছিলো, তার মা তাকে ছোটবেলা থেকে উঠতে বসতে সাইলেন্ট ট্রিটমেন্ট দিতো। পান থেকে চুন খসলে সেই মা তার সন্তানের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিতেন। মা কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন, এরচেয়ে বড় শাস্তি একটা সন্তানের জন্য আর কিছু হতে পারে না।


ছোটবেলায় আমার সেই ব্যাচমেট এইটার কারণে পাগল পাগল হয়ে যেতো। স্কুলে যেয়ে দেখতাম, মা কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে, এজন্য উদভ্রান্তের মত করে হা হুতাশ করতো। ছেলেটার দূর্বলতার সুযোগ এমনভাবে মা নিচ্ছেন, এটা দেখে আমার বেশ খারাপ লাগতো।


একটা লম্বা সময় যাওয়ার পরে আমার সেই ব্যাচমেট হুট করে আবিষ্কার করলো, কিছু হলেই তার মা যে তার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে, বিষয়টা তার কাছে বেশ ভালোই লাগছে। নীরবতা এঞ্জয় করতে করতে সে রিল্যাক্স মুডে তার দৈনন্দিন কাজকর্ম করতো। তার দূর্বলতা এক্সপ্লয়েট করার চেষ্টায় রত তার মা কে সে ঘৃণা করে নিজে থেকেই কথাবার্তা বন্ধ করে দিলো। 


আমার সেই ব্যাচমেট এখন তার মায়ের সাথে কথা বলে না দীর্ঘদিন। জিজ্ঞেস করায় বলেছিলো, তার মায়ের থাকা না থাকায় তার আর কিছু যায় আসে না। 


(২) এক ছোটবোন ছিলো, বাচ্চা একটা ছেলেকে টিউশানি করাতো। বাচ্চাটাকে পড়াতে পড়াতে আমার ছোটবোন মায়ায় পড়ে গেলো, আপন ভাইয়ের মত আদর করতো। মাঝেমধ্যেই চকলেট, খেলনা এসব নিয়ে যেতো। বাচ্চাও আমার ছোটবোনকে ছাড়া কিছু বুঝতো না। বিষয়টা খেয়াল করলো সেই বাচ্চার মা। তিনি বিষয়টাকে এক্সপ্লয়েট করা শুরু করলেন। 


শুরুতে টাকাপয়সা দিতেন ভালোই, ফ্যামিলি ছিলো ধনী। এরপরে আন্টি তার সংসারের বিভিন্ন অসুবিধার অজুহাত দেখিয়ে টাকাপয়সা কমানো শুরু করলেন। যখন দেখলেন, বাচ্চাটার প্রতি মায়া থাকায় আমার ছোটবোন কম টাকায়ও পড়াচ্ছে, আন্টি টাকাপয়সা দিনকে দিন আরও কমিয়ে একেবারে বেয়ার মিনিমামে নিয়ে এলেন। এরপরে শুরু করলেন টাকা দেয়া নিয়ে টালবাহানা করা। অবস্থা এমন দাঁড়ালো, টিউশান করে যাতায়াত খরচই উঠছে না। 


আমার ছোটবোন হুট করে বুঝতে পারলো, যেই ফ্যামিলি ট্যুরে যায় ইন্দোনেশিয়ায়, তাদের সংসারের খরচ নাই, এইটা তো লজিকে মিলে না। বাচ্চাটার প্রতি তার মায়ার ব্যপারটা যে সেই মহিলা এক্সপ্লয়েট করেছে, এটা সে বুঝামাত্র টিউশানি ছেড়ে দিলো। 


সেই মহিলা আজও আমার ছোটবোনকে ফোন দেয় এসে টিউশানিটা আবার করানোর জন্য। এই দফায় টাকা দেয়া হবে শুরুর চেয়েও অনেক বেশী। আমার ছোটবোন আর কোনোদিন ওই বাসামুখো হয় নি। 


(৩) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার এক বন্ধু ছিলো, প্রেমিকার জন্য তার ভালোবাসা ছিলো হিমালয়সম। মেয়েটার রাগ ভাঙানোর জন্য সে একবার অরিজিনাল সুইস চকলেট কিনেছিলো নিজের খাবারের টাকা দিয়ে। সেই চকলেট কিনার পরে নিজে দুইদিন না খেয়ে ছিলো। 


সেই মেয়ে একবার তাকে ফোন দিয়ে জানালো, তাকে বিয়ের জন্য দেখতে এসেছে ব্যবসায়ীর ছেলে। সেই ছেলের অন্তরাত্মা পর্যন্ত নড়ে গেলো। সে মেয়েকে সারারাত পাগলের মত ফোন দিয়ে গেলো। হাত পা ধরে অনুরোধ করলো, মেয়েটা যেন বিয়ে ভেঙে দেয়। মেয়েটা বিয়ে ভেঙে দিলো ঠিকই, কিন্তু এই ঘটনায় মেয়েটা পেলো তীব্র মজা। 


এরপর থেকেই নাকি মেয়েকে দেখতে দুইদিন পরপর এডমিন ক্যাডার, পুলিশ ক্যাডার, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট, মেরিনার সবাই আসে। মেয়েটা এসব বলতো, আমার বন্ধুটা কাঁদতো, মেয়েটা মজা নিতো। 


ওয়ান ফাইন মর্নিং, আমার বন্ধু মেয়েটার এরকম এক ফোনের জবাবে নিস্পৃহ গলায় বললো, "তোমার অবশ্যই বিয়ে করে ফেলা উচিৎ। আমার জন্য এত ভালো ভালো প্রস্তাব পায়ে ঠেলা উচিৎ হচ্ছে না। বিয়ে করে সুখী হও তুমি।" 


আমার সেই বন্ধু পাশ করে চাকরি নিয়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করে এখন সুখের সংসার করছে। তার সাবেক প্রেমিকার বিয়ে হয়নি আজও। 


ঘটনা এরকম প্রচুর আছে, আমি শুধু তিনটা বললাম। 


ভালোবাসা জিনিসটা আসলে যত্ন করার বিষয়। আদর দিয়ে, এফোর্ট দিয়ে আগলে রেখে লালন করে বড় করার বিষয়। ওটাকে এক্সপ্লয়েট করতে নাই, সুযোগ বুঝে ফায়দা তুলতে নাই। সেই দূর্বলতাকে পুঁজি করে ফায়দা তুলতে গেলে একসময় বিষয়টা হবে, সোনার ডিম পাড়া হাঁসের গল্পের মত, আম ছালা সবই যাবে। কাজটা কখনো করবেন না। 


কারণ, যার ভালোবাসাকে আপনি দূর্বলতা ভেবে সুযোগ নিচ্ছেন, সে একদিন আপনার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে পাথরের মত শক্ত এবং পাহাড়ের মত অটল হয়ে যাবে। আপনি তার সামনে তড়পাতে তড়পাতে মারা গেলেও সে ফিরে তাকাবে না। আপনার থাকা না থাকায় তার কিছুই যাবে আসবে না। 


নিজেকে প্রশ্ন করেন, বিষয়টা কি ওর্থ ইট?

বাস্তব জীবনের গল্প।