ভালোবাসার স্ট্যাটাস & ভালোবাসা

 স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা

রজন ভাইকে সবাই বউ পাগল ডাকে।আমিও মাঝেমধ্যে তাকে বউ ভারুয়া ডাকি।একদিন অফিস শেষে বললাম 


" রজন ভাই,চলেন বসে চা খাই "


উনি মুখ কাচুমাচু করতে লাগলেন।বুঝতে পেরে বললাম " বুঝেছি,আপনাকে তো সন্ধার আগেই বাসায় ফিরতে হয়।এতো বউ পাগল লোক এখনো আছে!আপনাকে না দেখলে জানতেই পারতাম না "


উনি কাঁধে হাত রেখে বললেন " বুঝলেন ভাই,যাদের ঘরে ভালোবাসার আকর্ষন থাকে তারা সন্ধ্যা হলেই বাড়ি ফেরার অস্থিরতায় ভোগে।বাইরে থাকতে ইচ্ছে করেনা "


কথাটা বলে উনি হাটা ধরলেন।পেছন থেকে বললাম " ভাই আপনার বাড়িতে ঘুরতে যাবো একদিন,দেখে আসবো কোন আকর্ষন আপনাকে এতো অস্থির করে তোলে "


" বেশ তো,আজই আসুন "


ওনার সাথে বাড়িতে উপস্থিত হলাম।আসার পথে রজন ভাই একটা চানাচুরের প্যাকেটও কিনলেন।দরজা খুলতেই ৮-৯ বছরের ছেলেটা ওনাকে জরিয়ে ধরে চেঁচিয়ে উঠলো " বাবা এসছে, বাবা এসছে "।


রজন ভাই চানাচুরের প্যাকেটটা ছেলের হাতে দিলেন।বসার ঘরের মেঝেতে ছোট মেয়েটা তার কচি হাতে পেঁয়াজ মরিচ কা"টছে।ছেলেটা বোনের পাশে বসে ভুল ধরতে লাগলো, দিদি পেয়াজ এতো বড় বড় করে কাটলে কেনো?এইটুকু মরিচ?।মেয়েটা চোখমুখ সরু করে বলে,এতোই পারো তাহলে তুমি কাটো।


রান্নাঘর থেকে ওনার স্ত্রী বললেন " ওরা সেই কখন থেকে অপেক্ষা করে আছে।এতো দেরি হলো কেন গো? "


রজন ভাই বললেন " হেঁটে আসলাম তো "


" আচ্ছা, হাত মুখ ধুঁয়ে ওদের সাথে বসে মুড়ি খাও।চা তুলে দিছি।দ্রুত যাও "


রজন ভাইকে বললাম " এটা কি শুধু আজকেই?নাকি..."


আমার পুরো কথা শেষ না হতেই উনি বললেন " এটা রোজকার রুটিন।বাড়ি ফিরে সন্ধায় স্ত্রী ছেলে মেয়ে বসে একসাথে মুড়ি, চা খাই গল্পগুজব করি। "


মুগ্ধ হয়ে তাদের সুখের সংসার দেখছি।বুঝলাম কেন উনি বাড়ি ফিরতে এতো অস্থির হয়ে যান।সত্যিই তো,এখন সুখময় সংসার যার,সে কি সন্ধায় ঘরের বাইরে থাকতে পারে?  

গল্প-সুখময়_সংসার

লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয় 

ভালোবাসার

পরিক্ষা দিচ্ছি।হল গার্ডে যিনি ছিলেন তিনি আমার খাতা হাতে ইতস্তত দাঁড়িয়ে আছেন।সাক্ষর করছেন না।বললাম 


" স্যার,কোনো সমস্যা? "


উনি এলোমেলো স্বরে বললেন " ম্যাডাম,আগে চুলটা বাঁধুন "


এমন কথায় সেদিন হকচকিয়ে উঠেছিলাম।আমাদের প্রথম কথা বলার সুত্রপাত এখানেই।পরিক্ষা শেষে উনি ডেকে আমার বাড়ির ঠিকানাও নিলেন।


আজ দ্বিতীয়বারের মতো আমরা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে।উনি পরিবার নিয়ে আমায় দেখতে এসছেন।বিয়ের সম্বন্ধ।


ছাঁদে আমাদের আলাদা করে কথা বলার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে।উনি প্রথমেই বললেন


" চুলগুলো বাঁধুন প্লিজ "


ভ্রু কুঁচকে বললাম " আমার খোলা চুলে আপনার এতো সমস্যা কিসের? "


" আপনাকে খোলা চুলে দেখলে আমার বু"ক ব্যথা শুরু হয়।দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনা,মনে হয় গাছভর্তি কৃষ্ণচূড়া ফুটেছে "


ওনার কথায় দারুণ লজ্জা পেয়েছিলাম।সবশেষে বিয়েটা হলো।বিয়ের পর উনি প্রায় সময়ই চুল বাঁধতে দেননি।খোলা চুলে উনি কি যে মায়া খুঁজে পেলেন কে জানে!পাগল লোক একটা।


গল্প-মায়া

লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয় 

ভালোবাসা

তনুর ইদানীং ভিষণ মন খারাপ থাকে।বিষয়টা বুঝতে পেরে তনুর বাবা জিগ্যেস করলো


" আমার মিষ্টি মা,তোমার মন খারাপ?এখন সবসময় চুপচাপ থাকো কেনো? "


তনুর সহপাঠীরা যারা আছে সবাই কত রকমের গল্প জানে।সোনার কাঠি,রুপোর কাঠি,রাজার গল্প,ঘোড়ার গল্প,ভূতের গল্প।শুধু সে কোনো গল্প জানেনা।


বিষয়টা নিয়ে তনুর মন খারাপ দিনদিন বাড়তেই লাগলো।সে এবার ক্লাস ফোরে উঠেছে।মেয়ের মন খারাপ দেখে বাবা আবার বললো


" কি হলো মা?বলো কেন মন খারাপ তোমার? "


তনু মন খারাপ নিয়ে বললো " বাবা তুমি আমার সাথে গল্প করবে? "


" মা আমি তো অফিস করি।গল্প করার সময় কোথায়? "


" মা ও গল্প বলে না।আমার বান্ধবীরা কতকিছুর গল্প জানে।আমি কোনো গল্প জানিনা "


" আচ্ছা,আজ আসার সময় তোমার জন্য অনেকগুলা গল্পের বই কিনে আনবো।ঠিক আছে?"


" না।ওসব গল্প আমার ভালোলাগেনা "


তনুর গল্প শুনতে চাওয়ার ইচ্ছে থেকেই তনুর বাবার পুরনো দিনের কথা মনে পড়লো।সেইসব রাত চোখের সামনে স্পষ্ট ভেসে উঠলো যখন মা তাকে আর ভাইদের বু'কে জ"রিয়ে নিয়ে গল্প বলে ঘুম পাড়াতো।


তনুর বাবা বৃদ্ধাশ্রম থেকে তার বৃদ্ধা মাকে বাড়িতে আনলেন।তনুর একমাত্র গল্পকথার সঙ্গী।তিনি সারাদিন খুব আগ্রহ এবং ভালোবাসা নিয়ে তনুকে গল্প শোনান।রাজার গল্প,শেয়ালের গল্প,কচ্ছপের গল্প আরো কত কি! 


বার্ষিক প্রতিযোগিতায় গল্পকার প্রতিযোগিতায় তনু দিদার বলা একটা গল্প উপস্থাপন করলো।সেটাই স্কুলের সেরা গল্প হিসেবে নির্বাচিত হলো।এখন তনুর সহপাঠীরা তনুর কাছে গল্প শুনতে আসে।

গল্প-গল্পকার

লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয় 

সত্যিকারের ভালোবাসা নিয়ে স্ট্যাটাস

ভাবলাম নারী দিবসে মা,বোন আর কাজের বুয়াকে উপহার দিবো।তিনজনের ভিন্ন ভিন্ন কালারের শাড়ি কিনলাম।


ছুটিতে বাড়ি ফিরে সন্ধায় সবাইকে ডেকে কাপড়গুলো সামনে রাখলাম।মা,বোন নিজেদেরটা বেঁছে নিলো।বললাম 


" এবার টাকা বেশি হাতে ছিলো না।কম দামী কাপড় নিয়ে এসছি! "


তাদের মুখ দেখে তেমন খুশী হয়েছে বলে মনে হলো না।মুখ ভার।হয়তো দাম কম শুনে তাদের পছন্দও কমে গেছে।মেয়েদের পছন্দ নির্ভর করে দামের উপর।


দামের কথাটা মিথ্যা বললাম।শাড়ী গুলো মোটেও কম দামি না।মা আর বোনের হাতের শাড়ি দুইটা মোট ১৩,২০০ টাকা।


বোন চোখ মুখ কুঁচকে বললো " কালারটা কেমন যেন,আর অন্য প্রিন্ট ছিলো না? "


" ছিলো,এটা পছন্দ হলো,তাই নিলাম।তোর পছন্দ হয়নি?না হলে বল অন্য প্রিন্টের নিয়ে আসবো! "


বোন ভাবলেশহীন তাকিয়ে বললো " বাদ দাও,কম দামী শাড়ি চর পাল্টে আনতে হবে না।এসব শাড়ি এখন কেউ পড়ে নাকি! " 


শাড়ি পেয়ে সবথেকে বেশি খুশি হলো কাজের বুয়া।আনন্দের ঝলকানি তার সারা মুখমন্ডলে ফুটে উঠেছে।অথচ তার হাতের শাড়িটার দাম সবচেয়ে কম।মাত্র চারশত টাকা।

গল্প-উপহারের_গুরুত্ব

লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয় 

ভালোবাসার রোমান্টিক স্ট্যাটাস

ছোট বোনকে পড়াতে আসা মেয়েটাকে ভালোবাসি।লজ্জায় কখনো বলতে পারিনি।মেয়েটা আমায় দুঃখ দাদা বলে ডাকে।কি অদ্ভুত ডাক! 


আমায় দুঃখ দাদা ডাকার অর্থ জানতে চাইলে মেয়েটা মিষ্টি করে হেসে বলে " আপনাকে তো হাসতেই দেখিনা।তাই এই নাম "


" হাসি না কে বললো?তুমি তো সবসময় আমার সাথে থাকো না,সাথে থাকলে কখন হাসতাম দেখতে পারতে "


" তাও ঠিক "


মেয়েটার বিয়ের আলাপ চলছে।একদিন পড়ানো শেষে যাওয়ার সময় রাস্তায় আমার সাথে দেখা।বললো 


" এইযে দুঃখ দাদা,ব্যস্ত? "


" না,কিছু বলবে? "


" বলবো তো,নীরবতার শহরে নিয়ে চলুন তারপর "


রেল স্টেশনের কাছে গেলাম।ওইদিকটায় কোনো কোলাহল নেই।মেয়েটা জানালো তার বিয়ে ঠিক হয়েছে।বললাম 


" ছেলে তোমার পছন্দ? "


" হু "


কষ্ট হলেও স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে বললাম " বিয়ে করছো তাহলে! "


" হু।ভেবেছি বিয়েটা হলে ওনার নাম সুখ রাখবো "


খুব কান্না পাচ্ছে।আর কিছুক্ষণ মেয়েটার সাথে থাকলে হয়তো চোখের জল লুকাতে পারবো না।বিদায় জানিয়ে চলে আসতেই মেয়েটা ডাকলো।পেছন ফিরলাম।বললো 


" সুখটা শুধু বাইরের আবরণ,ভেতরে ভেতরে আমরা দুঃখকেই লালন করি।আমিও দুঃখকে ভালোবাসি।এই মনে তারই বসবাস "


মেয়েটার কথায় থমকে দাঁড়িয়ে রইলাম।ভাবছি!এটাকে কি প্রেম নিবেদন বলে?হয়তো বলে,নইলে ও কাঁদছে কেনো?


গল্প-প্রেম_নিবেদন

লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয় 

মন ছুঁয়ে যাওয়া অসাধারন গল্প পড়ুন...