ভালোবাসার অনু গল্প & অনুগল্প

 সেরা অনুগল্প

সেরা অনুগল্প

স্বামীর সাথে ঝগড়া করে মিতা বাপের বাড়িতে গেলো।মা কর্কষ স্বরে বলল " স্বামীকে হাতে রাখতে শেখ!শাসনে রাখবি "


বড় ভাই বললো " কোনো ভয় করবি না।আমি আছি "


মিতা হতভম্ব হয়ে বললো " ওনাকে ভয় কেনো পাবো? "


" ভয় পাস জন্যই তো কিছু বলতে পারিস না।ঝগড়া করে চলে আসছিস,আরো শক্ত হতে হবে "


" দাদা,এটাকে ভয় বলে না।আর ভয় পেতেও বা দোষ কোথায়?স্বামীকে ভয় পাওয়া কি খুব লজ্জার?অপমানের? "


মিতার মা বললো " দেবর,ননদকেও মুঠোয় রাখবি।এরা হাতে থাকলে সংসার তোর দখলে "


মিতা দুহাতে কান চেপে চেঁচিয়ে বললো " বন্ধ করো তোমাদের এসবের বিষ ঢালা।কেন আমার সংসার ভাঙার বুদ্ধি দিচ্ছো?এখানে আর এক মুহুর্তও নয় "


কথাটা বলে মিতা ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলো।স্বামীকে ফোন করে বললো এক্ষুনি নিয়ে যেতে।ঝগড়া প্রতিবার মিতাই বাঁধায়,নইলে তাকে এক মুহুর্তের জন্য কোথাও যেতে দিতে তার স্বামী নারাজ।ঝগড়ার দোহাই দিয়ে মিতা দু তিনদিন বাবার বাড়ি ঘুরে যেতো।সিদ্ধান্ত নিলো এখন বাবার বাড়িতেও আসবে না।কুমন্ত্রণা নেওয়ার কোনো মানেই হয় না।এসব কথা সংসার ভাঙ্গনের মূলমন্ত্র।

গল্প-কুমন্ত্রণা

লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয় 

অনুগল্প

ছোট থাকতে মাঝেমধ্যেই শুনতাম বাবার অসুখ।অথচ বাবার জ্বর,মাথা ব্যথা,সর্দি,কাশি কিছুই হতো না,তবুও মা বলতো শরীর খারাপ।


তখন বয়স কম থাকায় কৌতুহলি হয়ে বাবাকে জিগ্যেস করতাম " বাবা তোমার কি হয়েছে? "


" কই কি? কিছু হয়নি তো "


" মা বললো তোমার শরীর খারাপ।দেখি জ্বর আসছে কিনা "


এসব বলে বাবার কপালে হাত রাখতাম।সব ঠিকঠাকই ছিলো,তবুও মা কেন এ কথা বলতো কখনো বুঝতে পারিনি।


বড় হলাম,দায়িত্ব নিলাম।আজ মাস শেষে অফিস থেকে ফিরছি।মানিব্যাগ ফাঁকা।বুঝলাম বাবাদের অসুখ তাদের শরীরে নয়,মানিব্যাগে হয়,শূন্য হাতে হয়।


এখন চিন্তিত হয়ে বাড়ি ফিরলে স্ত্রীও আমার সন্তানকে বলে " মামনি,আজ বাবার সাথে জেদ করবে না।বাবার শরীর খারাপ,বুঝছো? "।

ঠিক যেমনটা মা আমাকে বলতো।বুঝলাম দায়িত্ব।

গল্প-দায়িত্ব

লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয় 

বাংলা অনুগল্প

আজ আমার বিয়ে, আমি কনে সাজে বাসর ঘরে বসে আছি। ঠিক সেই মুহূর্তে আমার বর রোহান চৌধুরী রুমে প্রবেশ করলেন। সাথে কম বয়সী দুইজন শিশু । আমি মাথা তুলে তাকালাম। দেখলাম,,বাচ্চা দুটোর বয়স ৮ ও ৪বছর হবে। বড়টা মেয়ে আর ছোট টা ছেলে। তবে আমি ততটা আশ্চর্য হলাম না। কারণ আমি জানি এই বাচ্চা গুলোর বাবা কে! ওদের বাবা আর কেউ নয়....আমার স্বামী রোহান চৌধুরী। 


যখন আমার বিয়ের প্রস্তাব আসে,,তখন ঘটক পরিষ্কার করে জানিয়ে ছিলেন,, পাত্রের আগের বিয়ে আছে, সাথে তার দুই সন্তানও আছে। তাই আজ চোখে সামনে দেখে আমি এতটা আশ্চর্য হলাম না। 


আমি মিতা, বয়স পঁচিশ । যদিও কম বয়সে আমার একবার বিয়ে হয়েছিল। তখন আমার বয়স সবে মাত্র ১৬বছর। মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। বাড়ির সামনে আসতেই ঘটক চাচা আমার দিকে আড়চোখে তাকালেন। ঘরে ঢুকতেই ভাবিরা বলাবলি করতে লাগলো। আমার নাকি বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। যদিও "আমার বিয়ে" কথা টা শুনা মাত্র আমি লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছিলাম। দৌড়ে নিজের রুরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে বসে রইলাম খানিকক্ষণ। 


তারপর এক শুক্রবার আমার বিয়ে হল। বাবা খুব বড় করে আমার বিয়ের আয়োজন করলেন। আমি স্বামীর সংসারে পা রাখলাম। নতুন মানুষ, নতুন যায়গা দিনগুলো ভাল যাচ্ছিল আমার।কিন্তু হত ভাগার কপালে সুখ সইলো না। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস।মাস খানেক যেতে না যেতে আমার স্বামী গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা যান। অল্প বয়সে আমি বিধবা হই । 

ভেবেছিলাম জীবনে আর বিয়ে করবো না। কিন্তু মা বাবার জোরাজুরিতে অবশেষে দ্বিতীয় বিয়েতে রাজি হতে বাধ্য হলাম।


রোহান চৌধুরী মানে আমার স্বামী বাচ্চা দুটোকে রেখে জরুরি কাজে ঢাকায় চলে গেলেন। মূলত সে ঢাকায় চাকরি করে। বাড়িতে আমার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি,জা,দেবর,ননদী আর এই দুটো সদ্য মা হারা অবুঝ শিশু। বিয়ের মাত্র দুদিন হয়েছে, আমি রীতিমতো এখানে নতুন। বাড়িতে এখনো মেহমান রা গিজগিজ করছে। সবাই একে অন্যের সাথে রঙ তামাসা ও আনন্দ উল্লাসে মেতে আছে। হঠাৎ আমার চোখ পরলো বাড়ির উঠোনের দিকে। বাচ্চাগুলো অন্য বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলা করছে । অথছ সকাল থেকে বাচ্চারা কিছু খায় নি। অন্য বাচ্চাদের মায়েরা এসে নিজেদের বাচ্চাদের ধরে নিয়ে গেলেন খাওয়ানোর জন্য। অথছ আমার শ্বাশুড়ি বয়স্ক মহিলাদের সাথে দিব্বি পান সুপারি খেয়ে যাচ্ছেন, জা তার নিজের স্বামীকে সকালের নাস্তা বিলাতে ব্যস্ত । আর এইদিকে আমার ছোট্ট ননদী মোবাইলে ফেইসবুক ঘেটে যাচ্ছে আপন মনে।


 কিন্তু সকাল থেকে নাওয়া-খাওয়া ছাড়া অবুঝ শিশুদের ব্যাপারে কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই।

আমি বিছানা থেকে উঠে দরজার পাশে গেলাম। বাচ্চা গুলোকে হাতের ইশারায় ডাকলাম কয়েকবার। বাচ্চাগুলোও দেখলাম, আমাকে সায় দিলো। মুহূর্তে দৌড়ে আসলো আমার কাছে। এবার আমি লাজ লজ্জা ভেঙে কিচেনের দিকে চলে গেলাম। হাতের কাছে যা কিছু একটা পেলাম,,বাচ্চা গুলোর জন্য নিয়ে আসলাম। 

এবার আমি ওদের নিজ হাতে খাওয়ে দিলাম। যদিও আমি ওদের আসল মা না। আমি তো সৎ মা। তবুও তো আমি ওদের মা। সন্তান পেটে না ধরলে কি মা হওয়া যায় না?

 পেটে না ধরেও সন্তানের মা হওয়া যায়। আর আমি সেটাই দেখাবো সবাইকে।

-ছোট_গল্প

-সৎ_মা

লেখা- জুবেল আহমদ

অনুগল্প সমগ্র

"বাবার ২য় স্ত্রীর সন্তান আমি, বেশ ভালোবাসে আমাকে। কিন্তু তার প্রথম "স্ত্রী ও সন্তানের 

তেমন খোজ নেয়না ।


'জিঙ্গেস করলাম "বাবা তুমি এমন নিষ্টুর কেনো।


'বাবা আশ্চর্য হয়ে বললো! নিষ্টুর হবো কেনো 

আমি কি তোকে ভালোবাসি না বল।


'হ‍্যা ভালোবাসো।


'তাহলে এমন কথা বলতেছিস বাবাকে।


'আচ্ছা তোমার প্রথম স্ত্রীর সন্তান কয়টা বাবা। তুমি কি তাদের খোজ খবর নেও।


'কথাটী শুনে বাবা একটু বিভ্রান্ত হলো'


'কি হলো বাবা বলো?


'নাহ আমি তাদের খোজ খবর তেমন নেইনা।

তবে কয়েক মাস পর-পর টাকা পাঠাই।

হঠাৎ এমন কথা বললি যে"


'বাবা কেনো জানি মনে হচ্ছে আমরা তাদের 

অনেক ঠগাচ্ছি। 


'কি করবো বল।


'বাবা আমি যেমন তোমার মেয়ে ঠিক তেমনি 

ওরাও তোমার সন্তান। 

তুমি যেমন আমাকে ভালোবাসো আদর করো।

ঠিক তেমনি ওদের ও ভালোবাসা দরকার।

কারন তুমি বাবা।


'যদি তোর মা ঝগড়া করে।

তখন কি হবে।


'মাকে আমি সামলে নিবো। তুমি প্রতিমাসে ওদের 

খোজ খবর নিবা। 

ওদের সঙ্গে সময় কাটাবা। ওদের ও ইচ্ছে হয়

বাবার ভালোবাসা পাওয়ার জন‍্যে।


'মেয়ের এমন কথা শুনে বাবার চোখের 

কোনে অজান্তেই পানি চলে আসলো।


'বাবা কান্না করিওনা। যদি পার তাদের আমাদের 

এখানেই নিয়ে আসিও। এক সঙ্গে সবাই 

মিলে মিশে থাকবো।


'হ‍্যাঁ মা দেখতেছি। 

তুই তোর মাকে একটু সামলাস।


'চিন্তা করিওনা। 


'মারে তোর জন‍্যে আমি দোয়া করি। আল্লাহ্ তোকে

অনেক বড় করুক।


'দোয়া করিও বাবা।


'অবশ‍্যই দোয়া করিরে মা।


'বাবা আজ তোমার অফিস বন্ধ তুমি আমার ওই ভাই 

বোন গুলাকে আজ সময় দিয়ে আসো। 

মাকে আমি সামলিয়ে রাখবো।


'ঠিক আছে মা।

'কথাটি বলেই লোকটি তার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানের 

কাছে চলে যায়। তাদের সময় দেয়ার জন‍্যে।


'সত‍্যি আমাদের সমাজে বতর্মান এমটাই বেশি হচ্ছে।

দুইটা বিয়ে করলে আগের স্ত্রী সন্তানকে ভুলে যাই।

তাদের কোন খোজ নেইনা।


অনুগল্প:-প্রথম_স্ত্রী

কাহিনী ও লেখনীতে :মি_হাসিব 

মন ছুঁয়ে যাওয়া অসাধারন গল্প পড়ুন...