বাবাকে মিস করা নিয়ে স্ট্যাটাস & বাবা মানে

 বাবা নিয়ে স্ট্যাটাস

বাবা নিয়ে স্ট্যাটাস

একমাত্র ছেলে তার বাবাকে প্রথম বারের মতো বৃদ্ধাশ্রমে রেখে ফিরছিল। রাস্তার মাঝে ফোন এলো। তার বউ ফোন করে বলছে:-  তুমি আর একবার বৃদ্ধাশ্রমে ফিরে যাও একটা কথা বলতে ভুল হয়ে গেছে। বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে তুমি তোমার বাবা কে ভালোভাবে বুঝিয়ে এসো, পূজো-পার্বন এমনকি তোমার জন্মদিনেও তোমার বাবা যেন কষ্ট করে ওই বৃদ্ধাশ্রমে থেকে যায়। আমাদের বাড়িতে যেন না আসে। বাধ্য হয়ে বউ এর কথা মতো আবার ওই বৃদ্ধাশ্রমে ফিরে গেল। সেখানে গিয়ে সে একটা অদ্ভুত  দৃশ্য দেখতে পেল। তার বৃদ্ধ বাবা ওই বৃদ্ধাশ্রমের বৃদ্ধ মালিকের সাথে খুব হেসে হেসে কথা বলছে। এটা দেখে ছেলের মনে সন্দেহ হলো। সে মনে মনে ভাবলো বাবা কি তাহলে আগে থেকেই এই বৃদ্ধাশ্রমের মালিককে চিনতো? কে জানে হয়তো বা! তারপর অপেক্ষা করতে লাগলো। কিছুক্ষন পর বাবা উনার নির্দিষ্ট কামরায় চলে যাবার পর ছেলে ওই বৃদ্ধাশ্রমের মালিকের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলো, স্যার একটা কথা জিজ্ঞাসা করছি কিছু মনে করবেন না! 

বলছি যে একটু আগে আপনি বাবার সাথে যেভাবে কথা বলছিলেন তাতে আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আপনারা পূর্ব পরিচিত, সত্যিই কি তাই?অনাথ আশ্রমের মালিক বললেন হ্যাঁ। উনাকে আমি প্রায় ৪০ বছর আগে থেকে ভালো করেই চিনি এবং জানি। আমি জানি না কোন পরিস্থিতিতে উনি আজ এই বৃদ্ধাশ্রমে এসেছেন।তবে মনের দিক থেকে আপনার বাবা একজন বড় মনের মানুষ। ছেলে বললো আমি তো সেটাই জানতে চাইছি। বাবাকে কিভাবে চিনলেন?

বৃদ্ধ মালিক বললেন,,,, 

৪০ বছর আগে আমার আন্ডারে থাকা একটা অনাথ আশ্রম থেকে উনি একটি অনাথ শিশুকে দত্তক নিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলেন এবং আমার অনুমান যদি  ভুল না হয় তাহলে ৪০ বছর আগে দত্তক নেওয়া সেই  অনাথ শিশুটি এখন আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।

এই কথা শোনার পর ছেলেটির আর বুঝতে বাকি রইলো না। ৪০ বছর আগের সেই অনাথ শিশুটিই যে উনি। ছেলেটির চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু ঝরতে লাগলো। ছেলেটি হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো। আর দেরি না করে দৌড়ে তার বাবার কক্ষে গিয়ে ওনার পা ধরে কান্না করতে লাগলো। বৃদ্ধ বাবার পা ধরে বলতে লাগলো আমাকে মাফ করে দাও। আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি। 

২দিনের ভালোবাসার জন্য ৪০ বছরের ভালোবাসাকে আমি ভুলে গেছি। ছেলের এই করুন দৃশ্য দেখে বাবাও কেঁদে ফেললেন। তিনি ছেলেকে পা থেকে তুলে বুকে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলেন ধুর বোকা ছেলে, এর জন্য কান্না করতে আছে। আমি তো তোকে মাফ করেই দিয়েছি।এবার ছেলেটি কান্না থামিয়ে বাবাকে সেই বৃদ্ধাশ্রম থেকে নিয়ে বাড়ির  দিকে ফিরে গেল।


পৃথিবীর সকল বাবার প্রতি রইলো আমার প্রনাম,, শ্রদ্ধা  ও ভালোবাসা।

বাবা নিয়ে উক্তি

যে ছেলে মেয়েটির বাবা বা মা নেই, সে ছেলে / মেয়েটির কাছে এতিম শব্দটি খুবই আপন একটি শব্দ । এই শব্দটি যতবার সে শুনবে, তখনই তার মনে পড়ে আমার তো বাবা নেই, আমার তো মা নেই । কতোটি অসহায় একটি শব্দ যেটি সোনার সাথে সাথে তার মস্তিষ্কে কাজ করে। আমি খুবই একা, আমার তো কেউ নাই। 

সেই সন্তান গুলো বাবা না থাকলে, তার দাদার বাড়ির সকল আদর মোহাব্বত থেকে বঞ্চিত হয় । মা না থাকলে নানার বাড়ির সকল আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়. আমরা শুধু বইয়ে পড়ি, যে মামার বাড়ি রসের হাড়ি কিন্তু সত্যি কার অর্থে কি আসলেই তাই, আমার তো মনে হয় না। যে ছেলে বা মেয়ের মা নাই এক কথায় তার কাছে নানার বাড়িই নাই । কেউ মানুক আর না মানুক এটাই সত্যি 


বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, তেল মাথায় সবাই তেল দিতে আসে বা এই ভাবে ও বলা যায়৷ যে গাছের পাতা আছে, সে গাছের নিচে সবাই ছায়া নিতে আসে । বাবা হলো একটি বৃক্ষের মতো যার বাবা নাই, তার কোন বৃক্ষ নেই সে খুবই একা। তখন তার আত্মীয়-স্বজন ভুলে যায় তার খুজ খবর নিতে, হয়তো ভুলেই যায় ছেলেটি তাদের আত্মীয় । হয়তো তখন প্রয়োজন মনে করে না তাদের খুজ খবর নিতে, হয়তো প্রয়োজন মনে করে না, কেমন আছে জিজ্ঞেস করতে। আসলেই যেই ছেলেটি এতিম সেই ছেলেটিই জানে পৃথিবীটা কতো কষ্টের । প্রতিটি মূর্হতে সে অনুভব করে, তার বাবার অভাব। যদি দিন শেষে সে নিজেকে এটা বলে সান্ত্বনা দেয় আমার তো আল্লাহ আছে। 


এতিম ছেলে বা মেয়েটি বড় হওয়ার আগে বুঝতে শিখে, তার আবদার করার মতো কেউ নেই। তার শখ পূরণ করার মতো কেউ নেই । সে চাইলেও অন্য কোন ছেলে মেয়ের মতো তার শখ পূরণ করতে পারে না। সে প্রতিটি মূর্হতে এই সমাজ এর সাথে লড়াই করে টিকে থাকে। 

এতিম ছেলে বা মেয়েটি একটু বড় হলে পরিবারে দায়িত্ব নিজের কাধে তুলে নিতে শিখে যায়। তখন আর তার শখ বলতে কিছু থাকে না। 


সে উচু গলায় কারো সাথে কথা বলতে পারে না। তার ভিতর এই অনুভূতি কাজ করে, আমার তো বাবা নেই আমার পিছনে দাড়িয়ে কথা বলার মতো কেউ নেই । 


বাবা ছাড়া ছেলে গুলোই জানে জীবন কতটা কষ্টের হয়৷ তাদের কাছের জীবন এর মানে ভিন্ন থাকে, তাদের কাছে জীবনের লক্ষ্য ভিন্ন থাকে। 


দিনশেষে ছেলে গুলোই জানে তারা খুবই একা

এতিম

--- কাজী মতিউর রহমান মুন্না

বাবা মায়ের গল্প পড়ুন...