অবহেলা কষ্টের গল্প & অবহেলা কষ্টের স্ট্যাটাস

 খুব কাছের মানুষের অবহেলা

খুব কাছের মানুষের অবহেলা

শাশুড়ী মা মারা যাবার পর থেকে ফাবিহা ভীষন একা হয়ে গিয়েছে।মেয়েকে নিয়ে একা একা ঘর বাইরে ছুটতে গিয়ে নিজেকে ভুলে গিয়েছে একদম।শাশুড়ী মা আগে ঘর সামলাতেন আর ফাবিহা মেয়ের স্কুল,কোচিং অন্য কাজ সামলাতেন।একটা হেল্পিং হ্যান্ড ও নেই ফাবিহার।ভীষন ক্লান্ত হয়ে গিয়েছে ফাবিহা।এর ভিতর তুষ্টির দুস্টামিও দিন দিন বেড়ে চলেছে।স্বামী ইফতি চাকরির বাইরে কিছুই বোঝেনা।সকালে বের হয় আর রাতে ফিরে, মানে শুধু রাতে ঘুমের জন্য বাসায় আসে।


ছুটির দুই দিন ও ইফতি বন্ধুদের সাথে বাইরে কাটায় অথবা বলবে অফিসে এক্সটা কাজ আছে।আজ ছুটির দিন ইফতি বাসায় বসে পেপার পড়ছে ফাবিহা জিজ্ঞাসা করলো

ফাবিহাঃ শোন আজ কি ফ্রি আছো?বাসায় বাজার নেই একটু বাজার দরকার।তাছাড়া ঘরের অনেক কিছু কেনার দরকার একটু এনে দেবে?


ইফতিঃ আমি আজ বাইরে যাবো না সারাদিন রেস্ট নিবো ভাবছিলাম এখন কাজ ধরিয়ে দিচ্ছো! ভাল্লাগে না এই জন্য বাসায় থাকতে ইচ্ছে করে না।ছুটির দিনেও রেস্ট নেই।তুমি গিয়ে আনলেই তো হয়।


ফাবিহাঃ আচ্ছা মেয়ে কে নিয়ে বাসায় থাকো আমাকে টাকা দেও আমি যাচ্ছি।বিরিয়ানি করবো টাকা বেশি দিও।


ইফতিঃ (বালিশের নিচে থেকে মানিব্যাগ বের করে টাকা দিলো) এই নেও টাকা।

ফাবিহাঃ দুই হাজারে কি হবে?

ইফতিঃ মাসের শুরু তে টাকা দিয়েছিলাম তোমাকে লাগলে সেখান থেকে নেও আমার কাছে টাকা নেই।এত টাকা টাকা করে আমার মাথা খেও না তো।


ফাবিহাঃতুমি তো সব খরচের টাকা দিয়ে বাজারের জন্য অল্প টাকা দিয়েছিলে আর বলছিলে লাগলে পরে দেবে,সে টাকা আরো তিন দিন আগে শেষ। 


ইফতিঃ টাকা কি চিবিয়ে খাও?আমি তো তোমাদের সাথে শুধু রাত্রের খাবার খাই,তোমরা দুই জনে কি এমন খাও যে এত খরচ হয়?মেয়ে তো ছোট ও বা কত টুকু খাই?হিসেব করে চলো আমি আর দিতে পারবো না।বিরিয়ানি খেতে হবে না, সবজি খাও। শুধু বাজে খাবার খাওয়ার নেশা।গাছ লাগিয়েছি আমি টাকার।


ফাবিহাঃ মেয়েটা খেতে চেয়েছিলো তাই বলেছিলাম,তুমি বাজারের দ্বায়িত্ব টা নেও আমি আর পারছিনা।বাজারে গেলে বুঝতে কি পরিমান দাম সব কিছুর।মেয়েটার বাড়তি খাবারের খরচ টাও তো দেও না তুমি।


ইফতিঃ (রেগে গিয়ে)না আমি দেই না ওর আর একটা বাপ আছে সে এসে দিয়ে যায়,যত্তসব।সকাল সকাল সকাল মেজাজ টা খারাপ করে দিলে যাও তো এখান থেকে।


ফাবিহা মন খারাপ করে চলে গেলো বাজারে।


বাজার থেকে ফাবিহা ওন্য সব কেনা বাদ দিয়ে চিকেন বিরিয়ানির ব্যবস্থা করে এনেছে,যা একান্ত না হলে নয় তাই কিনে এনেছে শুধু। ভীষন অসহায় লাগে আজ কাল ফাবিহার।মনে হয় একটা যদি ইনকামের উপায় থাকতো ভালো হত আবার ভাবে তাহলে মেয়েকে কে দেখতো!! গত এক মাসে মাত্র একটা মুরগি কিনেছিলো তা আবার দুই ভাগ করে রেখে দুইদিন রান্না করেছিলো।মেয়েটা অনেক কিছু খেতে চায় বাইরে গেলে,কিন্তু কিনে দিতে পারেনা।ফাবিহা রান্না করছে মেয়ে পিছন থেকে এসে জড়িয়ে ধরে বলল


তুষ্টিঃ আম্মু কি রান্না করছো?ভীষন দারুন স্মেল বের হচ্ছে।

ফাবিহাঃ বিরিয়ানি রান্না হচ্ছে আম্মু।তুমি খেতে চেয়েছিলে আমি কি না রান্না করে পারি।


তুষ্টিঃইয়ে কি মজা আজ মজা করে খাওয়া হবে।যায় বাবাকে বলে আসি।


এক দৌড় দিয়ে তুষ্টি তার বাবার কাছে ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো,ইফতি মোবাইল চাপছিলো,মোবাইল টা ছুটে বিছানার উপর পড়লো।


ইফিতিঃ কি হয়েছে এভাবে আসছো কেন?সমস্যা কি তোমার?(ধমকের সুরে)


তুষ্টিঃ ওহ সরি বাবা।বাবা জানো আজ বিরিয়ানি রান্না হচ্ছে।তুমি তো বাসায় থাকো না,আজ বাসায় আছো আমরা একসাথে খাবো মজা হবে বাবা।


ইফতিঃ এইটার জন্য এমন লাফাচ্ছো?বিরিয়ানি কি তুমি আজ প্রথম খাচ্ছো?তোমার কোন কাজ নেই?পড়ালেখা নেই?সকাল থেকে দেখলাম না একবার ও বই নিয়ে বসতে।


তুষ্টিঃ আজ ছুটির দিন বাবা আজ পড়া নেই।


ইফতিঃ মা মেয়ে আছে যে কি আনন্দে,কাজ কাম না থাকলে যা হয় আরকি।যাও এখান থেকে পড়তে বসো।


ফাবিহা রান্নাঘর থেকে মেয়ের সাথে ইফতির সব কথা শুনে দ্বীর্ঘশাস ছাড়লো।


দুপুরে খাবারের আগ অবধি ইফতি ফোন চাপলো,ম্যাসেজিং, ভিডিও কলে কথা, মাঝে মাঝে একা একা চ্যাট করে হাসছে।অথচ বউ বাচ্চার সাথে তার হাসার সময় নেই,কথা বলার সময় নেই।ফাবিহার দিকে আজ কাল ফিরেও তাকায় না ইফতি,সব সময় একটা বিরক্তি ভাব নিয়ে থাকে।


দুপুরে একসাথে খেতে বসেছে তিনজন।খুব মজা হয়েছে বিরিয়ানি ইফতি একাই অর্ধেকের বেশি খেয়ে ফেলেছে।তুষ্টিকে খাইয়ে দিয়ে সামান্য পরিমানে ফাবিহা খেলো আর বাকিটা রেখে দিলো রাতে আবার তুষ্টি কে দেবে।খাওয়া প্রায় শেষ দিকে তুষ্টি বলল 


তুষ্টিঃ বাবা আমাদের একটু বাইরে ঘুরতে নিয়ে যাবে?কত দিন বাইরে যায় না তোমার সাথে।


ইফতিঃ স্কুলে যাওয়ার সময় তো বাইরে যাও প্রতিদিন আজ ছুটির দিন বাইরে যেতে হবেনা বাসায় থেকে রেস্ট নেও।ঘুমাবো আমি চলো তুমিও ঘুমাবে।


তুষ্টির মন খারাপ হয়ে গেলো।ফাবিহা বলল


ফাবিহাঃ তুমি বোঝো না কেন আম্মু বাবা সারা সপ্তাহ কত কাজ করে আজ বাসায় আছে আমাদের সাথে একটু রেস্ট নিতে দেও।


তুষ্টিঃ সব বন্ধুরা তাদের মা বাবার সাথে বাইরে পার্কে,রেস্টুরেন্টে যায়।আমার মন খারাপ লাগে।


ফাবিহাঃ আচ্ছা মন খারাপ করো না আগামী কাল স্কুল থেকে আসার পথে আমরা ঘুরতে যাবো।


এক প্রকার মন খারাপ করে তুষ্টি খাবার টেবিল থেকে চলে গেলো।দুপুরে খাওয়া শেষ করে ঘুমাতে গেলো।তুষ্টি ঘুম,ফাবিহা ও ঘুম প্রায় কিন্তু ইফতি ফোন নিয়ে পড়ে আছে।প্রচন্ড রকমের চ্যাটিং চলছে।


ফাবিহাঃ ঘুমাবে বলে ফোন দেখছো!!কি ফোনে এত তোমার?


ইফতিঃ (আড় চোখে তাকিয়ে) ঘুম আসছেনা।


ফাবিহাঃ মেয়েটা কে বাইরে নিয়ে গেলে কি হত?


ইফতিঃ আবার শুরু হয়েছে ক্যাচাল।তোমাদের জ্বলায় বাসায় থাকা কষ্ট থাকো তোমরা আমি বাইরে যাচ্ছি,বিরক্তিকর (বলে ফোন টা বিছানায় রেখে ওয়াশ রুমে ঢুকলো।


ফাবিহা এই সুযোগে উঠে বসে ইফতির ফোন টা হাতে নিলো।ফোন খুলতেই দুনিয়া অন্ধকার হয়ে গেলো ফাবিহার।সকাল থেকে এই অবধি একটানা চ্যাটিং করছে বন্যার সাথে। বন্যা সম্পর্কে ফাবিহার খালাতো বোন,ইফতির খালাতো শালী।কি মধুর প্রেম চলছে দুইজনের ভিতর!!বন্যা আর ফাবিহা এক বয়সী বন্যার এখনো বিয়ে হয়নি।তাই বলে বোন হয়ে বোনের এমন সর্বনাশ করবে এটা মানতে পারছেনা ফাবিহা।চ্যাটিং এ রয়েছে ফাবিহার নামে অনেক অভিযোগ,আজকাল নাকি ফাবিহাকে ইফতির দেখতে ইচ্ছা করে না,শুধু মেয়েটার জন্য ছাড়তে পারেনা।ইফতি এত রোমান্টিক এই চ্যাটিং না দেখলে ফাবিহা বুঝতেই পারতো না।বন্যার সাথে ঘুরতে বের হবার জন্য কত রিকুয়েষ্ট ইফতির,ছুটির দিন এই যে বাইরে যাবার অযুহাত এগুলা সব বন্যার সাথে সময় কাটানোর জন্য মিথ্যা অভিনয়।এই ইফতিকে খুব অচেনা লাগছে ফাবিহার।

তাদের লাস্ট ম্যাসেজ গুলা ছিলো এরকম


ইফতিঃ এই শোন না, আজ তো দিন টা মাটি করে দিলে এখন বাসায় এই দুই চিড়িয়ার সাথে বসে থেকে বোর হচ্ছি।বাইরে কি বের হওয়া সম্ভব না?


বন্যাঃ ও রে আমার বাবুটা,আজ একটু মানিয়ে থাকো।আমি আজ আম্মুর সাথে শপিংয়ে যাবো।আজ না গেলে প্রয়োজনীয় জিনিস গুলা কেনা হবে না।


ইফতিঃ আমার সাথে বের হও আমি শপিং করে দিবো।তোমার জন্য তো আমার সব।


বন্যাঃ সত্যি শপিং করে দেবে?

ইফতিঃ তিন সত্যি।

বন্যাঃ অনেক খরচ কিন্তু। 

ইফতিঃ সমস্যা নেই টাকা কোন বেপার না শুধু তুমি আমাকে সময় দেও।শপিং করে রাতে ডিনার শেষে বাসার নিচে দিয়ে আসবো।


বন্যাঃ উফ! দাড়াও বাসায় ম্যানেজ করি একটু।


ইফতিঃ তাড়াতাড়ি করো প্লিজ।আমি এই বাসা থেকে এখন বের হতে চাই।দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার।


বন্যাঃ ওকে ডান, বের হও বাবুটা।


চোখের কোনা ভিজে গেলো ফাবিহার, এত কষ্ট হচ্ছে দুনিয়া ভেংগে চুরে আসছে।অথচ বউ বাচ্চাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে সে কখনো যায় না।সকালে বাজারের টাকা চাওয়ার সময় ইফতির ব্যবহার খুব মনে পড়ছে ফাবিহার।খাবারের টাকা দিতে এত কথা শুনিয়েছে আর এখন বন্যাকে শপিং করানোর টাকা দিতে বাধবে না।লাস্ট কবে ফাবিহাকে শপিং করে দিয়েছে ভুলে গিয়েছে।তিনটা ঘরে পরা ড্রেস ঘুরিয়ে পরছে আজ এক বছর ধরে ছিড়ে যাবার উপায়, রঙ জ্বলে গিয়েছে তবু বাসায় পরে।চার দেওয়ালের ভিতর কিভাবে আছে সে খবর তো কেউ রাখেনা তাই ছেড়া কাপড় পরলেও সমস্যা হয়না।মুখে লাগানো ক্রিম ফুরিয়ে গিয়েছে চার মাস হলো,কেনার টাকা মেলেনি।আয়নাতে দাঁড়িয়ে নিজেকে সাজাতে ভুলে গিয়েছে।মেয়েটার কি লাগে সে সব খোজ ও কখনো রাখেনা।কত অভিযোগ ফাবিহার নামে।এত দোষ ফাবিহার এই চ্যাটিং না দেখলে তো বুঝতেই পারতো না।


ফাবিহা কান্নায় ভেংগে পড়লো।


ইফতি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে ফাবিহার হাতে ফোন দেখে ফোনটা কেড়ে নিলো।আর বলল আমার ফোন ধরেছো কোন সাহসে?ফাবিহা কান্না চোখে তাকিয়ে রইলো ইফতির দিকে।

ইফতি ফোন হাতে নিয়ে বুঝলো বন্যা আর তার চ্যাটিং ফাবিহা দেখে কান্না করছে।ও কোন কথা বলল না,অপরাধীর মত খাটের উপর মাথা নিচু করে বসে পড়লো।


ফোনে বন্যার কল আসছে ইফতি কেটে দিচ্ছে বারবার,এক সময় ফোন টা বন্ধ করে দিলো।ফাবিহা পাশ থেকে বলে উঠলো


ফাবিহাঃ কেন এভাবে ঠকালে আমাকে তোমরা?আমার আর আমার মেয়েটার কথা তোমার কি একটুও মনে হলো না?( বলে কান্নায় ভেংগে পড়লো)


ইফতি ফাবিহা কেউ রাতে খেলো না।তুষ্টি কে রাতে খাবার খাইয়ে অন্য ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো। 

বন্যা কে রাতে ফাবিহা ম্যাসেজ দিয়েছে


ফাবিহাঃ আমি আমার সংসার ছেড়ে চলে যাচ্ছি,তুই চলে আসিস।তোদের সংসার এর জন্য শুভ কামনা রইলো।


ম্যাসেজ শুধু সিন হলো।কোন রিপ্লে এলো না।


সারা রাত কষ্টে ফাবিহা ঘুমাতে পারলো না।এই সংসারের সব স্মৃতি, ইফতির সাথে কাটানো মুহুর্ত সব মনে পড়ছে।এই সংসারের পিছনে খাটতে গিয়ে নিজেকে ভুলে যাওয়ার কষ্ট জেগে উঠেছে আজ।আট বছরের একটা সংসার, মায়া সব ছেড়ে চলে যাবে।এই সংসারের প্রতিটা জিনিস তার তিলতিল করে গড়ানো।শাশুড়ী মা কে খুব মনে পড়ছে,আজ উনি বেচে থাকলে হয়তো এরকম হত না।নিজেকে ইফতিকে সময় দিতে পারতো,ইফতি ও অন্য নারীতে আসক্ত হত না।মেয়ে টাকে নিয়ে বাকী জীবন কিভাবে কাটাবে সে চিন্তা ও করছে।অবশ্য ভাবছে মায়ের বাসায় গিয়ে থাকবে।একটা চাকরি ঠিক ম্যানেজ হয়ে যাবে মা মেয়ে চলার মত।ভুগোলে মাস্টার্স করা আছে ফাবিহার।যদিও সে সার্টিফিকেট এর কোন দাম নেই।আলমারিতে বন্দি আছে।চিন্তা করতে করতে ভোর বেলা ঘুমিয়ে গেলো।


সকাল নয়টা বাজে ফাবিহা তুষ্টিকে নাস্তা করিয়ে,রেডি করে, নিজে রেডি হয়ে নিলো।শুধু মাত্র নিজের আর মেয়ের কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া আর কিছুই নিলো না।বের হবার আগে তুষ্টি কে বলল 


ফাবিহাঃ তোমার বাবা ঘুমাচ্ছে উনাকে ডেকে বলে আসো আমরা এ বাসা থেকে চলে যাচ্ছি।


তুষ্টিঃ কোথায় যাচ্ছি?


ফাবিহাঃ নানুর বাসায়।


তুষ্টিঃ কি মজা আমরা নানুর বাসায় যাবো।বাবা যাবে না আমাদের সাথে?


ফাবিহাঃ না তোমার বাবা যাবে না।


তুষ্টি গিয়ে ঘুমানো ইফতি কে ডাকলো


তুষ্টিঃ বাবা ও বাবা তুমি এখনো ঘুমাচ্ছো,এদিকে তোমাকে রেখে আমরা নানুর বাসায় বেড়াতে চলে যাচ্ছি।


ইফতিঃ (ঘুম ঘুম ভাবে উঠে)নানুর বাসায় কেন?( বলতেই মনে পড়লো গতকালের ঘটনা)


খাট ছেড়ে নেমে তুষ্টিকে কোলে নিয়ে ডইং রুমে এসে দেখে ফাবিহা ব্যাগ নিয়ে রেডি।ফাবিহা তুষ্টিকে বলল


ফাবিহাঃ চলো আম্মু আমরা চলে যাচ্ছি তোমার বাবা কে ভালো থাকতে বলো।


ইফতি তুষ্টি কে নামিয়ে দিয়ে ফাবিহার কাছে এসে বলছে,


ইফতিঃ যেওনা প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দেও।আমার ভুল হয়ে গিয়েছে।আমি শয়তানের ধোকায় পড়ে কি থেকে কি করে ফেলেছি।আমাকে ফেলে রেখে যেও না।


ফাবিহাঃ একা ছেড়ে যাচ্ছিনা বন্যা আসবে আমি ওকে আসতে বলেছি।তোমরা নতুন করে সংসার করো।ভালো থাকো।আমি আর আমার মেয়ে তোমার বোরিং জীবন থেকে চলে যাচ্ছি।তুমি তো আমাদের নিয়ে সুখী না।আর কত অভিনয় করবে! হাফিয়ে গিয়েছো তুমি।ভালো থেকো।


ইফতিঃ ক্ষমা করো প্লিজ,আমি তোমাদের সাথে থাকতে চাই।আমি কাল রাতে উপলব্ধি করেছি তুমি আর আমার মেয়ে ছাড়া আমার আর কেউ নেই।এই সংসার শুধুই তোমার।এই সংসারে তুমি ছাড়া অন্য কাউকে মানাবেনা।আমাকে ক্ষমা করে দেও আমি আবার আগের মত হয়ে যাবো।আমার মেয়েকে আমার থেকে আলাদা করোনা প্লিজ।আমি বাচবোনা।


ফাবিহাঃ( অনেক কান্না করছে) তা হয়না।


ইফতিঃ তোমার হাতে ধরি,পায়ে ধরি প্লিজ,যেও না।


ফাবিহাঃ বিষাক্ত বাতাস আমি আর নিতে পারছিনা।


ইফতিঃ আমাকে সুযোগ দেও।(মেয়েকে ধরে কান্না করছে)যেওনা আম্মু আমাকে ছেড়ে।


ফাবিহা মনে কষ্ট চেপে ধরে মেনে নিলো,মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে সংসারে থেকে গেলো।মনে আশা হয়তো সুখ আসবে, হয়তো স্বামী সব ভুলে ভালোবাসবে আবার আগের মত।

সংসার আর বাচ্চাদের মায়ায় অনেক মেয়ে মানিয়ে নিয়ে ভালো থাকতে চাই,সুখী হতে চাই।

প্রচন্ড মায়ার জন্য জীবনের হিসেবে ঠকে গেলেও তারা চুপ থাকে।


সমাপ্ত 


গল্পঃ সংসারের মায়া।

হোসনেয়ারা আরজু সুমি।

সংসার জীবনের গল্প পড়ুন...