ভালোবাসার গল্প
বিয়ের পনেরো দিনের মাথায় জানতে পারলাম,
আমার বর বেস্ট ফ্রেন্ড বলে যাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল,
বিয়ের সময়ও যে সব সময় পাশে পাশে ছিল।
আমাদের বিয়ের অধিকাংশ ছবিতে যে মুখটি দেখা যায়
সে আসলে আমার বরের দীর্ঘ বছরের প্রেমিকা।
.
মূহুর্তেই আমার পায়ের নিচে থেকে যেন মাটি সরে গেল।
নতুন দেখা স্বপ্নগুলো দুঃস্বপ্ন হয়ে গেল মুহূর্তেই।
ওর অফিসের বেশি ছুটি না থাকায় বিয়ের দশ দিন পর আমরা ঢাকায় চলে আসি।
শুনেছি চাকুরি পাওয়ার পর থেকে সে একলা এই বাসাটা নিয়েই থাকতো।
সে নিজেই রান্না করতে পছন্দ করে তাই নিজেই রান্না করতো।
এর বেশি আর কিছু জানিনা আমি।
অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ হওয়ায় তার বিষয়ে আর কিছু জানা হয়নি এখনও আমার।
.
এই বাসার এসেছি চার দিন হয়ে গেছে।
টুকটাক করে বাসার সব নিজের মতো করে গুছিয়ে নিয়েছি।
আমার বর স্বভাবে একটু শান্ত তবে হাসিখুশি।
আমি তো এই অল্প দিনেই তার উপর মুগ্ধ হয়ে গেছি।
অফিস থেকে আসার সময় কাল এক গোছা কদম ফুল এনেছিল আমার জন্য,
আমি প্রেমে পড়েছি।
.
.
সেদিন তার টেবিলটা গোছাতে গিয়ে একটা চিঠি পেলাম।
চিঠিটি ছিল,
"বিলাস যাকে স্ত্রীর সম্মান দিয়ে এনেছো মনে রেখো,
সেই তোমার প্রথম ভালবাসার দাবিদার,
তোমার সাথে কাটানো এতো গুলো বছরের স্মৃতি, ভালবাসা আর তোমার আদর যত্ন আমার কাছে কম কিছু না।
অনামিকারে নিয়ে ভাল থেকো প্রিয়।"
.
চিঠিটা পড়ে বুঝতে পারলাম এই চিঠি যে লেখেছে তার সাথে আমার বিলাসের দীর্ঘ যাবত সম্পর্ক ছিল।
আদর যত্নও কম কিছু হয়নি তাদের।
আমি স্তব্ধ হয়ে যাই।
নিজেকে নিজে কিছু বোঝানোর ক্ষমতাও থাকেনা আমার।
হালকা কিছু রান্না করে তেমন করে শুয়ে থাকি।
কিছুই ভালো লাগে না। বিকালে বিলাস বাসায় আসে।
অনেক সামলে চলার চেষ্টা করি কিন্তু পারিনা,
আমাকে দেখে সে জিজ্ঞাসা করে,
--কি হয়েছে তোমার অনামিকা?
--কিছু হয়নি একটু শরীর খারাপ।
চলো তোমাকে খাবার দেই।
--আচ্ছা দেও।
আমি খাবার নিয়ে এলে সে আমাকে খাইয়ে দেয়।
আমি জিজ্ঞাসা করে ফেলি,
--তুমি বুঝলে কেমন করে আমি খাইনি?
--তোমার মুখ দেখলেই বোঝা যাচ্ছে অনামিকা, তুমি বিষন্ন।
বিষ বৃক্ষের মতো সে বিষন্নতা তোমার সমস্ত আনাচে কানাচে।
আর তোমার এতো বিষন্ন রূপ এতো কাছে থেকেও আমি বুঝবো না? সেকি হয়?
--কাছে থাকলেই কি শুধু ভেতরের খোঁজ পাওয়া যায়?
--না যায়না অনামিকা,
ভেতরের খোঁজ পেতে অনুভূতিরও অনুশীলন করতে হয়।
--যে অনুভূতি নিজের জন্য না,
তার খোঁজ ও কি অনুশীলনে লাভ করা যায়?
--সে খাইয়ে দিতে দিতে বলল,
অনামিকা কি হয়েছে তোমার বলতো?
এতো বিষাদের রূপ কেন এই অবেলাতে?
আমি হেসে পড়ি।
.
তার কথায় আর ব্যবহারে আমি সর্বদা মুগ্ধ হয়ে যাই।
কিছুতেই বুঝতে পারি না এই মানুষটা আমাকে কিংবা চিঠির ঐ মেয়েটিকে কেন ঠকালো।
পরের দিন কিছুই ভাললাগেনা।
ঢাকায় প্রীতি নামে আমার একটা বান্ধবী থাকে,
গল্প গুজব করলে খানিকটা হালকা হবো তাই ভেবে প্রীতিকে বাসায় আসতে বলি।
প্রীতি বলে আমার বাসার পাশে বিকেলে তার একটা টিউশনি পড়ানো আছে,
সেটা সেরে এই পথে আসবে।
গড়িমসি করে সারাটা দিন কেটে যায়।
কিছুই ভাল লাগেনা আমার।
খুব জানতে ইচ্ছে করে চিঠির ঐ মেয়েটি কে?
কিন্তু জানা হয়না।
.
সন্ধ্যা হয়ে যায় বিলাস ও বাসায় ফেরেনি আজ।
কিছু পরেই প্রীতি আসে।
ও এসেই বলে,
--দুলাভাই কোথায় রে?
--সে আজ এখনো আসেনি রে।
--কি বলিস আমি যখন টিউশন পড়াতে আসি সেই বিকেলেই তো দেখেছি একগাদা কাঁচা বাজার হাতে নিয়ে দুলাভাই তোদের গলিতেই ঢুকলো।
.
শুনে আমি মুহূর্তেই চুপসে যাই।
কালো মেঘ আমার পুরো পৃথিবী আধার করে দেয়।
কাল সে বাসার বাজার এনেছে,
আজ তো আমাদের বাসায় বাজারের কোন প্রয়োজন নাই।
আর ঢাকাতে তার কোন আত্মীয় নাই যে বাজার করে দেবে।
এদিকে প্রীতি বলে উঠল,
--ফোন দেতো ভাইয়াকে যদিও গলিতে ঢুকতে দেখেছিলাম,
তবুও এখনো পৌঁছাইনি কোন বিপদ কিনা!
.
আমি তখন হাজার সামলানোর চেষ্টা করার পরও চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ে।
হালকা চিনচিনে ব্যাথা অনুভব হয়,
প্রীতিকে কিছু বুঝতে না দিয়ে তাকে ফোন করি।
বিলাস দ্বিতীয় বারে ফোনটা কেটে দেয় আর মেসেজ করে,
"আমি একটু বাহিরে আছি, ফিরতে কিছু দেরী হবে।
তুমি খেয়ে নিও অনামিকা।"
.
প্রীতিকে কিছু বুঝতে না দিয়ে বলি ফোন বন্ধ আছে।
গল্প আর হয়ে ওঠেনা।
সেও টেনশন করতে করতে চলে যায় খানিক বাদে।
.
আমি একলা ঘরে গলা ফাটিয়ে ক্রন্দনের শব্দকে বারবার প্রতিঘাত করি।
আমার ভেতর ফেটে চৌচির হয়ে শুধু জানতে ইচ্ছে করে,
কার কাছে আছে এই অবেলাতে আমার বিলাস?
মাঝে মাঝে তাকে 'আমার বিলাস' বলতে ইচ্ছে হয়না আর।
আবার মনে হয়,
সে মানুষটা আমার ভালবাসার তো কোন কমতি রাখেনি,
আমার মন খারাপের খোঁজও তো সে রেখেছে।
থাকতেই তো পারে তার কোন বিষন্ন অতীত,
ভালোবাসতেই তো পারে সেই বিষন্নতাকে সে!
কিন্তু অভিমান আমার এখানেই,
সেই বিষন্নতা যদি এতোই মাতাল হয়ে থাকে তাহলে শুধু শুধু কেন আমারে জীবনের তরে বেধে এই প্রহসন করা।
আমি কিছুতেই বুঝে উঠি না বিলাস অন্য কাউকে ভালবাসালে,
অন্য কাউকে ছাড়তে না পারলে আমারে কেন বিবাহ করল।
.
.
কখন যে ঘুমিয়েছি জানিনা।
মধ্যে রাতে বিলাসের কলিংবেলে ঘুম ভাঙে।
ঘরে আসলে অনেক কিছু শুনব বলে ইচ্ছে ছিল।
কিন্তু আমি দরজা খুলে তার মুখে চেয়ে আরো বেশি বিস্মিত হয়ে যাই।
বিষন্নের কালো মেঘ তার সমস্ত মুখ আবছায়া করে রেখেছে।
সে একবারের জন্যও মুখে তুলে তাকালো না।
কাপড় ছাড়তে ছাড়তে শুধু একটা বার বলে,
--অনামিকা তুমি না খেয়ে ঘুমিয়েছিলে যে! যাও খেয়ে নাও।
.
আমি জানি সেও খাইনি।
মুহূর্তেই আমার ভেতর তার এই বিষন্ন রূপে খাঁ খাঁ করে উঠে।
মানুষটিকে ভালবেসেছি বহুবার।
সে হুড়মুড়িয়ে বিছানায় লুটিয়ে পড়ে।
এতো সুন্দর বেদনার রূপ কোন পুরুষে কখনও দেখিনি আগে।
আমি ধীরে ধীরে তার পাশে গিয়ে বসি।
আলতো করে তার চুলে আঙুল গুজে বলি,
--বিলাস তোমার এই বিষাদের কারন আর যাইহোক, সে নিশ্চয়ই কম কিছু নয়।
আমি এই বিষাদের ভাগ পেতে চাই।
সে আমার হাতটি দুমুঠোয় জড়িয়ে ধরে মুখ তুলে বলে........
.
.
.
,
,
-গল্প:-বিষাদের_রুপ
পর্ব_১
-গল্প:-বিষাদের_রুপ
অন্তিম পর্ব
বিলাস হুড়মুড়িয়ে বিছানায় লুটিয়ে পড়ে।
এতো সুন্দর বেদনার রূপ কোন পুরুষে কখনও দেখিনি আগে।
আমি ধীরে ধীরে তার পাশে গিয়ে বসি।
আলতো করে তার চুলে আঙুল গুজে বলি,
--বিলাস তোমার এই বিষাদের কারন আর যাইহোক, সে নিশ্চয়ই কম কিছু নয়।
আমি এই বিষাদের ভাগ পেতে চাই।
সে আমার হাতটি দুমুঠোয় জড়িয়ে ধরে মুখ তুলে বলে,
.
--সুখের ভাগ যে দিতে না পারে,
দুঃখ ভাগ করা কি রূপে তাকে মানায় অনামিকা!
--চিরতরে জীবনের সাথে বেঁধেছো যাকে,
সুখ দুঃখ সে যাই হোক তারে ভাগাভাগি করতে সংকোচ কিসের?
.
তার রক্ত শিরা জেগে ওঠা ঐ চোখের পানে চেয়ে আমি চোখ নামিয়ে নেই।
সাহস হয়না তার যাতনা বাড়িয়ে সেই চোখে চোখ রাখতে।
সে বিছানাতে মাথা গোঁজে আবার।
বিষাদের সে রাত আরো ঘনিভূত হয়।
খাঁ খাঁ নিস্তব্ধতায় আমি অনুভব করতে থাকি,
পাশে থাকা মানুষের বিষন্ন রাত্রির নির্ঘুম নিশ্বাস গুলি।
এই নির্ঘুম নিস্তব্ধতা আমারে আরো বেশি ছাপিয়ে যায়।
আমি গভীর স্নেহে তার বাহুতে হাত রাখি আর বলি,
--বিলাস তোমার দুঃখ ভাগের চেয়ে বোধ হয় এ রাত আমায় বেশি কষ্ট দিচ্ছে!
.
সে আমার হাত আকড়ে ধরে বলে উঠে,
--অসুস্থ অবনিকে আমি একলা রেখে এসেছি,
না জানি এই রাত তাকে কি বিশ্রী যন্ত্রণা দিচ্ছে!
--অবনি মানে তোমার সেই বন্ধু না?
কি হয়েছে তার?
সে প্রতি উত্তরে শুধু বলে,
--আমি তার কাছে বারবারই শুধু হেরেছি অনামিকা,
এই বিশ্রী যন্ত্রণা নিয়েও সে আমায় বিদায় দিলো তুমি একলা থাকবা বলে।
আর আমি?
তাই মেনে নিয়েই ফিরে এলাম,
আমি তার কাছে বারবারই শুধু হেরে যাই অনামিকা!
.
সে আবারও বিছানাতে মুখ গুঁজে।
তার মুঠিতে আমার হাতটি অসাড় হয়ে থাকে।
আমার সমস্ত মান- অভিমান, ঘৃণা- বিষন্নতা মুহূর্তেই গলে যায় আর ভেবে উঠি,
--কি ভয়ঙ্কর ভালো বাসলেই না!!
তার যন্ত্রণাতে বিষাদের এই রূপ জাগে।
আমি ভাবতে পারিনা আর কিছুই।
.
.
খুব সকালে বিলাস বেরিয়ে যায়,
আমার মন লাগেনা কোন কিছুতে।
যার যন্ত্রণায় এতো রূপে ব্যাথা পাওয়া যায়,
তাকে ভালবাসুক তাতে আমার কোন অভিযোগ নাই।
কিন্তু শুধু এটাই জানতে ইচ্ছে হয় যে,
যারে এতো ভালবাসে, যারে মন এতো করে চায়
তারে কেন সামাজিক স্বীকৃতি দিতে পারল না বিলাস?
.
.
আজ শরীরটা সত্যি দারুণ ভাবে খারাপ হয়ে যায়।
ঘুম আচ্ছন্ন চোখে কখন যে বিকেল গড়িয়ে যায়,
বুঝতে পারিনি তার কিছুই।
অবশেষে সন্ধ্যা নামে।
এ সন্ধ্যে আরো বেশি আঁধার আনে জীবনে আমার।
তবুও করো উপর কোন অভিযোগ নেই আমার।
রাত খানিক গড়াতেই বিলাসের মেসেজ আসে,
"অনামিকা, আমি হয়তো আজ ফিরতে পারব না,
তুমি খেয়ে নিও আর বাতি গুলো জ্বালিয়ে ঘুমিও।"
.
.
আমার কোন আক্রশ নাই,
তবুও অধিকার ছেড়ে দিয়েও কোন কোন ক্ষেত্রে চোখের জল আটকানো যায় না।
আজ আমিও তার ব্যতিক্রম নই।
তেমনি ভাবে রাত কেটে যায়।
বাতি গুলো আর জ্বালানো হয় না।
মাঝে মাঝে মনে হয় এই বুঝি বিলাস আসবে।
কিন্তু না সে হয়তো এতক্ষণে অবনির বিছানার সম্মুখে বসে তার যন্ত্রণাতে শান্তি যোগাচ্ছে।
আর আমার ভেতর পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে।
ভোর হয়ে যায়। ভোরের আলো তবু ভাল লাগেনা আমার আর।
কখন বিলাস ফিরবে সেই অপেক্ষায় থাকি।
ভালবাসা চাইনা অধিকারের দাবিও নাই,
তবে সে যদি আমায় না চায় তবে আমার মুক্তি চাই।
আমি ফিরে যেতে চাই।
.
বিকেল গড়িয়ে যায় বিলাসের কোন খোঁজ নাই।
অপেক্ষা আমার আর সয়না।
সে হয়তো ফিরবেনা আর। হয়তো অবনির যন্ত্রণাতেই তার যতো ব্যাথা।
আমি বাসার চাবি পাশের বাসায় রেখে স্টেশনে এসে রাতের টিকিট নেই।
বসে আসি আর কিছুক্ষণ পরেই বাস ছেড়ে দেবে।
ছেড়ে যাব বিলাসের শহর।
.
এর মধ্যে বিলাসের ফোন আসে।
ফোন করেই সে বলে,
--অনামিকা তোমার কাছে যে টাকা গুলো রাখতে দিছিলাম ওগুলো নিয়ে একটু মনসুর আলী মেডিকেলে আসতে পারবে?
--তুমি ঠিক আছো তো?
তোমার কিছু হয়নি তো?
--আমার অবনি খুব অসুস্থ।
টাকা গুলো খুব দরকার তুমি যতো তাড়াতাড়ি পরো একটু আসো অনামিকা।
.
আমি টিকিট টা ছিড়ে ফেলি।
জীবনের কতো রূপ আর ভালোবাসার কতো ছিন্ন ভিন্ন বহিঃপ্রকাশ।
ভেবে আমার হাসি পায়।
আমি বাসায় ফিরে টাকা গুলো নেই আর বিলাসের মেসেজ করে পাঠানো ঠিকানা ধরে হাসপাতালে যাই।
হাসপাতালে গিয়ে বিলাস আর অবনির কিছু বন্ধুদের পাই।
যাদের বিয়ের সময় দেখেছিলাম।
তারা আমার দিকে স্ববিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে,
একজন কেউ জিজ্ঞাসাও করে বসে,
--নিজের স্বামীকে তার প্রেমিকার জন্য এতকিছু করতে দেখে তোমার খারাপ লাগছে না?
উত্তরে শুধু হেসে বলি,
--যারে এ যাবতকাল ভালবেসেছে,
তার দুর্দিনে যদি তার জন্য কিছু না করত তবেই তো আমি জানতাম বিলাস ভালবাসা বোঝেনা।
আমার ভালবাসা তাহলে তারে কি বিশ্বাসে দিতাম?
.
বিলাসরে ও আমি বড্ড ভালবেসে ফেলেছি।
তাকে ভালবাসতে না পারলে আজ-
এই অবনি যেই হোক না কেন তারে আমি সহ্য করতে পারতাম না।
.
অবশেষে তার বন্ধুদের কাছে জানতে পারলাম অবনির ওভারিয়ান সিস্ট হয়েছে এবং সে এখন সিভিয়ার পর্যায়ে আছে।
সে আর মা হতে পারবেনা জেনে বিলাস কে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করিয়ে নিজে দাড়িয়ে আমাদের বিয়ে দেছে।
আমি চশমা নামানোর ছলে চোখের কোণের জল আড়াল করি।
এই প্রথম মনে হয় বিষাদের মতোই ত্যাগের বহু রূপ আছে।
সে ত্যাগ যে কোন প্রকারে তাকেই জিতিয়ে দেয়।
আজ বিলাসের মতোই মনে মনে বলে উঠি,
--অবনি আমি হেরেছি তোমার কাছে।
বিলাস কে তুমি ছাড়া কেউ পাবে না কোন কালে!!
কিন্তু বিলাসের উপর এই প্রথম আমার দারুণ অভিযোগ জন্মে,
--যে প্রতিজ্ঞাই হোক সে সবই তো ভেঙে ফেলা যায় এক অবনিকে পেতে।
আর সন্তান সুখ সে তো আমার বিলাসের উপর স্বার্থপরতার অভিযোগ হবে।
.
অবনিকে এখন ওটিতে নেওয়া হবে।
বিলাস ব্লাড ম্যানেজ করে ছুটে আসে কেবিনে।
এসেই দু'বাহুতে আমায় শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে উঠে,
--আমি আমার শ্রেষ্ঠ সম্পদ হারাতে বসেছি অনামিকা,
আমার অবনিরেই যে আমি ভালবেসেছি আজীবন!!
আমি শুধু মুগ্ধ হয়ে অনুভব করি, বিষাদের রূপে ভালবাসার সৌন্দর্য।
**সমাপ্ত**