হায়রে মানুষ, টাকা চিনলি – আপন মানুষ চিনলি না!
টাকা নিয়ে গল্প
মানুষ সামাজিক জীব, ভালোবাসা আর সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ। কিন্তু বর্তমান সময়ে টাকা-পয়সা, সম্পদ আর স্বার্থই যেন সবকিছুর মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্পর্কের মূল্যায়ন এখন আর ভালোবাসা, বিশ্বাস বা আত্মার টান দিয়ে হয় না; বরং ব্যাংক ব্যালেন্স, সম্পদের পরিমাণ আর ক্ষমতার দম্ভ দিয়েই নির্ধারিত হয়।
যখন টাকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, তখন...
একসময় যাদের সাথে হাসিখুশি দিন কেটেছে, যারা একসাথে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করেছে, তারা হঠাৎ করেই বদলে যায়। যখন কারও হাতে টাকা থাকে, তখন চারপাশে মানুষ ভিড় করে, ভালোবাসা দেখায়, যত্ন নেয়। কিন্তু যখন সেই টাকাটা শেষ হয়ে যায়, তখনই ধীরে ধীরে মানুষগুলো দূরে সরে যেতে থাকে।
অনেক সময় দেখা যায়, নিজের পরিবার, আপনজন, এমনকি ভাই-বোনও স্বার্থের জন্য পর হয়ে যায়। মা-বাবা সারাজীবন সন্তানকে বড় করেন, কিন্তু টাকা থাকলেই অনেকে মা-বাবাকে বোঝা মনে করে। আবার বন্ধুত্বেও স্বার্থ ঢুকে পড়ে—বন্ধু তখনই বন্ধু, যখন পকেটে টাকা থাকে।
টাকা কী সত্যিই সবকিছু?
না, টাকা কখনোই ভালোবাসা, বিশ্বাস বা আত্মীয়তার জায়গা নিতে পারে না। টাকা শুধু জীবনযাত্রার জন্য প্রয়োজন, কিন্তু যদি সম্পর্ককে টাকার ওপর নির্ভর করতে হয়, তাহলে সেই সম্পর্ক আর সম্পর্ক থাকে না—তা হয়ে যায় কেবল স্বার্থের হিসাব-নিকাশ।
জীবনের আসল সুখ টাকা দিয়ে নয়, বরং ভালো মানুষ দিয়ে পাওয়া যায়। টাকা চলে গেলে সত্যিকারের মানুষ পাশে থাকে, আর স্বার্থপররা দূরে চলে যায়। তাই যারা সত্যিকার আপন, তারা টাকার জন্য আসেনি, আসবে না; আর যারা স্বার্থপর, তারা কখনো আপন ছিল না, হবেও না।
শেষ কথা
টাকা জীবনের অংশ, কিন্তু টাকা কখনো আপন মানুষের জায়গা নিতে পারে না। তাই টাকা নয়, সত্যিকারের সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করাই শ্রেয়। কারণ, একদিন টাকা ফুরিয়ে যাবে, কিন্তু যদি ভালো মানুষকে জীবনে ধরে রাখা যায়, তাহলে প্রকৃত সুখ কখনোই হারিয়ে যাবে না।
হায়রে মানুষ, টাকা চিনলি – আপন মানুষ চিনলি না!